Ajker Patrika

এক পক্ষের বক্তব্য না শুনেই ৩০ সেকেন্ডে রায় দিয়েছেন দুই বিচারপতি: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১৯: ২৯
এক পক্ষের বক্তব্য না শুনেই ৩০ সেকেন্ডে রায় দিয়েছেন দুই বিচারপতি: রিজভী

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরানোর আদেশকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি জানান, এক পক্ষের বক্তব্য না শুনেই ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের দুই বিচারপতি। 

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এক পক্ষের বক্তব্য না শুনেই ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে বাংলাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের দুজন বিচারপতি যথাক্রমে বিচারপতি খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চ। আদেশে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তারেক রহমানের সাম্প্রতিক দেওয়া সব বক্তব্য অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরাতে হবে। বিচারপতিদের এই আদেশ রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণভাবে হরণ করা।’ 

রিজভী আরও বলেন, ‘হাইকোর্টের বিচারপতিদ্বয় তারেক রহমানের বক্তব্য-বিবৃতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে সরাতে বিটিআরসিকে যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা শেখ হাসিনার মনের ইচ্ছা ও তাকে খুশি করার জন্যই দেওয়া হয়েছে।’ 

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির কাছে এই রিটটি অন্য আদালতে বদলির জন্য আবেদন করা হলেও তা গ্রাহ্য না করে এ ধরনের আদেশ ন্যায়বিচারকে সম্পূর্ণভাবে পদদলিত করার শামিল। একপ্রকার তড়িঘড়ি করেই তাঁরা এই রায়টি দিয়েছেন; তাতে বোঝা যায় তাঁরা কারও খায়েশ মেটানোর জন্য এটা করেছেন।’ 

দেশে আইনের শাসন নেই—উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘যে দেশে ফ্যাসিবাদ সর্বত্র পরিব্যাপ্ত, সেসব দেশ ছাড়া আদালতের এহেন বিবেকহীন পক্ষপাতমূলক রায় প্রদান নজিরবিহীন। আমরা উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের মুখ থেকে শুনতে পেয়েছি—তাঁরা না কি শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ। আজ সকালে হাইকোর্টের দুজন বিচারপতির আদেশেও সেটি নগ্নভাবে ফুটে উঠেছে। তাঁদের চেতনা আর শেখ হাসিনার চেতনার কোনো পার্থক্য নেই। আদালতের বিচারপতিদের চেতনা আর আওয়ামী চেতনা আজ একাকার।’ 

শেখ হাসিনার কাছে তারেক রহমান এখন একটি আতঙ্কের নাম জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘কারণ, তিনি (শেখ হাসিনা) হচ্ছে গণতন্ত্র হত্যাকারী আর তারেক রহমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দিন-রাত লড়াই করছেন। তারেক রহমানের বক্তব্য সরাসরি কোনো সংবাদমাধ্যম প্রচার করছে না। কিন্তু প্রযুক্তির কারণে তাঁর সমস্ত বক্তব্য মানুষ শুনতে পায়। তাঁর বক্তব্য শুনে গণতন্ত্রকামী মানুষ আজ রাজপথে নেমে এসেছে বলেই শেখ হাসিনার এত আতঙ্ক।’ 

সরকার বিরোধী দলের কণ্ঠস্বর চেপে রাখতে চায় জানিয়ে রিজভী বলেন, তারা আদালতকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের রাজনীতিকেই নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। কিন্তু এটি যে ব্যর্থ চাওয়া, তা জনগণ প্রতি ক্ষণে প্রমাণ করছে। আদালত এখন আওয়ামী দুর্বৃত্তদের শেষ আশ্রয় স্থলে পরিণত হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টে আমরা পুলিশ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছি—সিগন্যাল দেওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে হুমকি

১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল

ছুটিতে গেলেন সেই বিচারক

জাতীয়করণের দাবিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশত মাদ্রাসাশিক্ষক আহত

নির্বাচন বানচালের জন্য দেশের ভেতরে–বাইরে অনেক শক্তি কাজ করবে, প্রধান উপদেষ্টার সতর্কতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তুরস্কের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে জামায়াত নেতারা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ বুধবার তুরস্কের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন জামায়াত নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বুধবার তুরস্কের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন জামায়াত নেতারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

তুরস্কের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। আজ বুধবার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তাঁরা যোগ দেন।

এতে ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম প্রমুখ।

তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রমিস সেনসহ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, কূটনীতিক, রাজনৈতিক নেতারা, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জামায়াতের প্রচার বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুষ্ঠানে জামায়াত আমির শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে রিপাবলিক অব তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বরাবর লিখিত একটি শুভেচ্ছাবাণী রাষ্ট্রদূত রমিস সেনের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

জামায়াত আরও জানায়, জামায়াতের প্রতিনিধিদল তুরস্ক ও বাংলাদেশের মাঝে বিরাজমান ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টে আমরা পুলিশ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছি—সিগন্যাল দেওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে হুমকি

১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল

ছুটিতে গেলেন সেই বিচারক

জাতীয়করণের দাবিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশত মাদ্রাসাশিক্ষক আহত

নির্বাচন বানচালের জন্য দেশের ভেতরে–বাইরে অনেক শক্তি কাজ করবে, প্রধান উপদেষ্টার সতর্কতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আহত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের দেখতে ঢামেকে এনসিপির তাসনিম জারা

ঢামেক প্রতিবেদক
আজ বুধবার সন্ধ্যায় আহত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের দেখতে ঢামেকে যান এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বুধবার সন্ধ্যায় আহত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের দেখতে ঢামেকে যান এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর প্রেসক্লাবে পুলিশের জলকামান নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হওয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।

আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তিনি হাসপাতালে আসেন। এ সময় আহত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাঁদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন তিনি।

হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের জারা বলেন, ‘আহতদের অনেকে কানে শুনতে পাচ্ছেন না; অনেকের মাথায় ও হাতে-পায়ে আঘাত আছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করা আমাদের শিক্ষকদের ওপর এভাবে আঘাত করা হয়েছে, এটি খুবই লজ্জাজনক। এটি খুব দ্রুত তদন্ত ও বিচার অবশ্যই করা প্রয়োজন। যেই দাবি ইতিপূর্বে ২৮ জানুয়ারি আদায় করে ফেলেছে, সেই দাবি বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের আবার আন্দোলন করতে হবে, এটি খুবই দুঃখজনক। আমরা চাই না, এমন পুনরাবৃত্তি বাংলাদেশে আর হোক। শিক্ষকদের এভাবে অবহেলা, নির্যাতন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’

এক প্রশ্নের জবাবে তাসনিম জারা বলেন, ‘শিক্ষকদের তো ক্লাশরুমে থাকার কথা, তাঁদের তো মাঠে থাকার কথা ছিল না। যেই প্রতিশ্রুতি সরকার একবার দিয়েছে, সেটি আদায় করতে আবার মাঠে নামতে হচ্ছে, এটি খুবই দুঃখজনক।’

তাসনিম জারা বলেন, ‘এমনকি সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব যেগুলো আছে, সেখানেও বাস্তবায়নের জন্য আলাদা করে কথা বলতে হচ্ছে। আলাদা করে তো কথা বলার কথা না। যেই পরিকল্পনা আমরা চিন্তা করছি বা যেই সংস্কার আসবে, যেটার ঐকমত্য আছে, সেটা আবার বাস্তবায়নের জন্য আলাদা করে আমাদের স্ট্যান্ড নিতে হবে, অথচ বাস্তবায়ন করার জন্যই কমিশন হয়েছে। এই যে ধারাবাহিকতা, যেখানে প্ল্যান হয়, কিন্তু বাস্তবায়নের কোনো রূপরেখা থাকে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টে আমরা পুলিশ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছি—সিগন্যাল দেওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে হুমকি

১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল

ছুটিতে গেলেন সেই বিচারক

জাতীয়করণের দাবিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশত মাদ্রাসাশিক্ষক আহত

নির্বাচন বানচালের জন্য দেশের ভেতরে–বাইরে অনেক শক্তি কাজ করবে, প্রধান উপদেষ্টার সতর্কতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে: মাহবুব উদ্দিন খোকন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সংবিধান, আইন, বিচার ও মানবাধিকারবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের উদ্যোগে বুধবার ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবিধান, আইন, বিচার ও মানবাধিকারবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের উদ্যোগে বুধবার ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর আছে। নির্বাচনের আগে আরও অনেক ঘটনা দেখবেন আপনারা। তারপরও আমি মনে করি, বাংলাদেশের মানুষ চায় একটা সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন।’

আজ বুধবার সংবিধান, আইন, বিচার ও মানবাধিকারবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে বিএনপি আসন ভাগাভাগি করবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, জোট সারা পৃথিবীতে হচ্ছে। বাংলাদেশে হওয়াটা স্বাভাবিক। আর নির্বাচনী জোট করলে শেয়ার তো করতেই হবে।

এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন করেন। এতে সহযোগিতা করে ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল।

এ সময় হাসপাতালের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার হাফিজুর রহমান, ডা. শিশির মন্ডল, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার এইচ এম দুলাল, আব্দুল কুদ্দুস, মোবারক করিম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টে আমরা পুলিশ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছি—সিগন্যাল দেওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে হুমকি

১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল

ছুটিতে গেলেন সেই বিচারক

জাতীয়করণের দাবিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশত মাদ্রাসাশিক্ষক আহত

নির্বাচন বানচালের জন্য দেশের ভেতরে–বাইরে অনেক শক্তি কাজ করবে, প্রধান উপদেষ্টার সতর্কতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রেফারি হয়েও গোল দিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অভিযোগ সালাহউদ্দিনের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ৩৪
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রেফারির ভূমিকায় থেকেও এক পক্ষের হয়ে গোল দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত জুলাই সনদের পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি।সরকার ও দু-তিনটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একই পক্ষে কমিশনের অবস্থান দেখা যাচ্ছে, যা রেফারির নিরপেক্ষ ভূমিকার পরিপন্থী।

আজ বুধবার দুপুরে বিএনপি আয়োজিত একটি গোলটেবিল বৈঠকে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন। ‘ফ্রম রুল বাই পাওয়ার টু রুল অব ল: ট্রানজিশন টু আ ডেমোক্রেটিক বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই বৈঠক রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ যেটা স্বাক্ষরিত হয়েছে সেটা তো গতকালকের সুপারিশের মধ্যে নাই। ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরো দু তিনটি দল তারা বোধহয় একপক্ষ আমি বিপক্ষেই খেলছিলাম মনে হয়। ঐকমত্য কমিশনের এবং সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে আজকে এখানে এসে হতাশা ব্যক্ত করছি।’

তিনি বলেন, ‘কিছু সত্য আবিষ্কার করতে পেরেছি, এতোদিন আমরা মনে করতাম, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রেফারির ভূমিকা পালন করছে বা ফেসিলিটেটরের ভূমিকা পালন করছে। কালকে যে সুপারিশ তারা সরকারের কাছে প্রদান করেছে, তার মধ্যে অবশ্য একজন দস্তখতকারী মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাও বটে, জাতীয় ঐক্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে। সুতরাং সেটা একপক্ষে সরকারেরও একটা এনডোর্সমেন্ট হয়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে তো বটেই। কিন্তু রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি।’

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশের সুপারিশগুলোর মধ্যে মোট সংযুক্তিসহ ৯৪ পৃষ্ঠার দলিলের কথা উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘তার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে চিঠি লেখা হয়েছে, ওখানে প্রধান উপদেষ্টা নিজেই দস্তগত করেছেন ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে। তো বলা যায় সরকার এবং ঐকমত্য কমিশন তো মূলত একই। আর ঐকমত্য কমিশনের সাথে আলোচনা সময় আমার মনে হয়েছে কমিশন, সরকার এবং আরো দু–তিনটি দল তারা বোধহয় একপক্ষ, আমি বিপক্ষেই খেলছিলাম মনে হয়। তো সেই হিসেবে জাতির পক্ষেই আমি দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি।’

কিছু দলের প্রস্তাব এবং ঐকমত্য কমিশনের নিজস্ব চিন্তাভাবনা জাতির উপরে জবরদস্তি করে আরোপ করার প্রচেষ্টা চলছে অভিযোগ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যে দলিলটা গতকাল প্রকাশিত হয়ে, তার মধ্যে ১৭ অক্টোবরের সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় স্বাক্ষরিত দলিলটা হুবহু নেই। শুধু আছে ঐকমত্য্য কমিশনের প্রস্তাব।

তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের খসড়া আদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর সুপারিশ, ঐকমত্যের প্রক্রিয়া ও নোট অব ডিসেন্ট— কোনো কিছুই উল্লেখ করা হয় নাই। আদেশের মধ্যে তফসিল হিসেবে সংবিধানের বিভিন্ন রকমের সংশোধনের প্রস্তাবসহ ৪৮টা দফা সংযুক্ত করে সেগুলোর উপরে গণভোটের প্রস্তাব করা হয়েছে।

তাহলে ১১ মাস বা ১২ মাস ধরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে কেন কসরত করা হলো, সেই প্রশ্ন তুলে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ, ঐকমত্য কমিশন গঠন, ছয়টা গঠন সংস্কার কমিশন গঠন এবং তাদের সঙ্গে এতো আলোচনা, সুপারিশ, জনগণের পক্ষ থেকে প্রস্তাব— সবগুলো মিলে সংকলিত প্রতিবেদন নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সভাপতি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা নিজে বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে সমস্ত বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করবে, সেগুলো সংকলিত করে জুলাই জাতীয় সনদ হবে, সেটা স্বাক্ষরিত হবে এবং সেটা পরবর্তী সংসদে বাস্তবায়ন হবে। এর আগে নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়গুলো সরকার বাস্তবায়ন করে ফেলবে— এই ছিল প্রস্তাব।

৩১ জুলাই দ্বিতীয় দফার আলোচনা শেষে জুলাই সনদ প্রায় পাকাপোক্ত ও ঐকমত্য হওয়ার দিনে হঠাৎ নতুন বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে ইঙ্গিত করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সেইদিন হঠাৎ করে দুয়েকটা দলের পক্ষ থেকে বলা হলো, এটা বাস্তবায়নের জন্য আইনানুগ ভিত্তি চাই, বাস্তবায়নের গ্যারান্টি চাই। আমরা বললাম ঠিক আছে, সনদ প্রণীত হোক, বাস্তবায়নের উপায়, আইনানুগ ভিত্তি, গ্যারান্টির জন্য কী করা যায় সেজন্য আরো আলোচনা হতে পারে। অনেকদিন আলোচনা হলো, আলোচনার পর নির্ধারিত হলো— আমিই প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমাদের দলের পক্ষ থেকে যে, এই জুলাই জাতীয় সনদ প্রণীত হোক, সেটা বাস্তবায়নের জন্য আমরা একটা প্রজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে গেজেট নোটিফিকেশন করতে পারি, তার ভিত্তিতে এগুলো গ্রহণ করার পক্ষে জাতি আছে কি নাই, জুলাই জাতীয় সনদ যেভাবে প্রণীত হয়েছে, সেই একটি প্রশ্নে গণভোট হতে পারে, একই দিনে হতে পারে।’

একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যাখ্যা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একই দিনে কেন হবে সেই যুক্তি আমরা দিয়েছিলাম, যাতে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ে। যেহেতু প্রার্থীরা ভোটারদেরকে নিয়ে আসবে এবং একই দিনে একই খরচায় একই আয়োজন হয়ে যাবে, ছোট্ট একটা ব্যালটের মাধ্যমে। আমরা তখন সে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। দুয়েকটি দল বাদে বাকি সবাই সেই প্রস্তাবে একমত ছিল এবং তারপরেও সেটা নিয়ে পরবর্তীতে আরো আলাপ–আলোচনার জন্য কয়েকটি দল বলল, সরকার সেটা পরে আরো আলাপ আলোচনা করবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের সুপারিশে দুই দিকেই ওপেন রেখে তাদের সুপারিশ দিয়েছে আগে অথবা পরে গণভোট হতে পারে এই ইস্যু উপর।’

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এখন মূল প্রশ্ন সেটা নয়, যার উপরে গণভোট হবে জুলাই জাতীয় সনদ যেটা স্বাক্ষরিত হয়েছে, সেটা তো এই সনদে নাই, সেটা গতকালকের সুপারিশের মধ্যে নাই। আছে হলো যে সমস্ত প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশন এবং দুয়েকটি দল দিয়েছিল, সেই প্রস্তাবগুলো। যেন উনারা সরাসরি ওই আদেশের মধ্যে খসড়া আদেশের মধ্যে তারা অন্তর্ভুক্ত করল তফসিল হিসাবে। বলা হলো এই ৪৮টা দফার উপরে গণভোট হতে হবে। এখন সেই আলাপ তো হয়নি আমাদের সাথে। ঐকমত্য কমিশনে ঐকমত্য হয়েছে ‘উইথ নোট অব ডিসেন্ট সার্টেন পয়েন্টসে’। যে সমস্ত রাজনৈতিক দল ওই সমস্ত নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, সে সমস্ত নোট অব ডিসেন্ট তারা নির্বাচন ইশতেহারে উল্লেখ করবে। সেই ছাপানো বই যেটা আছে সেই ইশতেহারে নোট অব ডিসেন্ট উল্লেখের পরে যদি জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত হয় সেগুলো তারা সেভাবে বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু নোট অব ডিসেন্ট বাদ দেওয়া হয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে হতাশা ব্যক্ত করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘তো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য ছিল ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। এখন এখানে এসে এই অবস্থায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে সমস্ত প্রস্তাব দিয়েছে, সেখানে শুধু জাতিতে বিভক্তি হবে, অনৈক্য হবে এবং এখানে কোনো ঐকমত্য হবে না। এর ভিত্তিতে তারা কী অর্জন করতে চায়, আমরা জানি না।’

এর সঙ্গে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) নিয়ে ‘উদ্দেশ্যমূলক’ আচরণ করা হচ্ছে বলে সমালোচনা করে সালাউদ্দিন বলেন, ‘যে সমস্ত প্রস্তাব নির্বাচন কমিশন থেকেও আরপিওতে এসেছে তাতেও আমরা লক্ষ্য করেছি যে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে নির্বাচন সংস্কার সংক্রান্ত কমিশনের একটি অনালোচিত প্রভিশন আরপিওতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেটা এখন অর্ডিনেন্স হওয়ার অপেক্ষায় আছে। যেমন জোটভুক্ত যে কোনো রাজনৈতিক দলের স্বাধীনতা ছিল নিজস্ব প্রতীকে অথবা জোটের যে কোনো প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে। হঠাৎ করে তারা একটা অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বলে দিল যে, জোটভুক্ত হলেও তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেখলাম, আরেকটি রাজনৈতিক দল তাকে সমর্থন করে যাচ্ছে। তো এটা পক্ষপাতমূলক আচরণ, আমরা আশা করি না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় দেখতে চাই, তারা যেন নিরপেক্ষভাবে আচরণ করে এবং তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ডে যেন জাতি আশ্বস্ত হতে পারে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে, সেভাবেই যেতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টে আমরা পুলিশ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছি—সিগন্যাল দেওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে হুমকি

১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল

ছুটিতে গেলেন সেই বিচারক

জাতীয়করণের দাবিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশত মাদ্রাসাশিক্ষক আহত

নির্বাচন বানচালের জন্য দেশের ভেতরে–বাইরে অনেক শক্তি কাজ করবে, প্রধান উপদেষ্টার সতর্কতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত