রেজা করিম ও তানিম আহমেদ, ঢাকা

সংবিধান সংস্কার, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব কমছেই না। প্রধান এই তিন ইস্যুতে বিএনপির বিপরীত অবস্থান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। কোনো পক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়। দলগুলোর এই অনড় অবস্থানে অনৈক্যের জালে জড়িয়ে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, সভা, সমাবেশ, আলোচনায় এই তিন ইস্যুতে দূরত্ব-অনৈক্য বোঝা গেলেও ভেতরে-ভেতরে রয়েছে অন্য হিসাব-নিকাশ। জামায়াত ও এনসিপির একাংশ মনে করছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে বিএনপি পুরো ফায়দা পাবে। বর্তমানে প্রশাসনসহ বড় সব জায়গায় জামায়াত ও এনসিপির মতাদর্শীরা আছেন। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এলে সবকিছু বদলে দেবে। এই আশঙ্কা থেকে দল দুটি সংস্কার, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও পিআর পদ্ধতি নিশ্চিত করতে চাইছে। এতে নির্বাচন বিলম্বিত হলেও সমস্যা নেই। কিন্তু মাঠের পরিস্থিতি বুঝে বিএনপি যেকোনোভাবে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন চায়। বিলম্বের আশঙ্কাকে তারা ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। এই তিন দলের এমন অবস্থানে মাঠে নামতে পারে জাতীয় পার্টির (জাপা) দুই অংশ।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। ইসি আজ বৃহস্পতিবার এই নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করবে। নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতিও সারছে। সব মিলিয়ে নির্বাচনের একটি আবহ তৈরির অবস্থা। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব-অনৈক্য সব সম্ভাবনাকে অনিশ্চয়তার পথে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।
রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্য দূর করার চেষ্টা করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও। তারা দফায় দফায় সংলাপ করেছেন দলগুলোর সঙ্গে। দূরত্ব কমিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় আবারও সংলাপে বসবে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে এক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হোন। আন্দোলন-সংগ্রামে একত্রে থেকেছেন, এটা অব্যাহত রাখুন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমরা একটা অন্তর্বর্তী ব্যবস্থায় আছি। সেটা শুধু সরকার হিসেবে না, সবাই। বাংলাদেশে রাজনীতির একটি অন্তর্বর্তী পরিস্থিতিতে ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহনশীলতার জায়গাটা ধরে রাখা দরকার। কেননা পরাজিত শক্তিরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে, সেটা যেন না নিতে পারে, সে জন্য রাজনীতিবিদদের সজাগ ও সক্রিয় থাকতে হবে।’
জামায়াতের দ্বিধা, সংশয়: জামায়াতে ইসলামী স্পষ্টই বলেছে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং পিআর পদ্ধতির সিদ্ধান্ত না হলে তারা নির্বাচনে যাবে না। দলটি ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির দাবিও জানাচ্ছে। এগুলোসহ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে দলটি মিছিল, সমাবেশও করছে। রাজপথে এসব কর্মসূচির মাধ্যমে তারা নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। পাশাপাশি সরকার, বিএনপিসহ সংশ্লিষ্টদের বার্তা দিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে জামায়াত। প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জামায়াত-সমর্থিত ব্যক্তিরা ভালো অবস্থায় রয়েছেন। ১৬টির মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সমর্থিত ব্যক্তি উপাচার্য হয়েছেন। প্রশাসনের উচ্চপর্যায়েও একই অবস্থা। দলটির আশঙ্কা, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে বিএনপি বেশি আসন পাবে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে তাদের এই ‘শক্তি’ ভেঙে দেবে। অভ্যুত্থানের সব অর্জন নষ্ট করে দেবে। এ কারণে দলটি বুঝে-শুনে নির্বাচনে যেতে চায়।
অবশ্য জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে জামায়াতের আপত্তি নেই। তবে নির্বাচনের বড় প্রস্তুতিমূলক কাজ সংস্কার। সেটিকে চূড়ান্ত করতে হবে, সংস্কারের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি ছিল সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন করার। নির্বাচনের ঘোষণা তিনি দিয়েছেন, তার আগে তো সংস্কার হতে হবে। সেটি এখনো সম্পূর্ণ হয়নি।
এনসিপি সংস্কারের পক্ষে অনড়: সূত্র বলছে, জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের গড়া দল এনসিপি সংস্কারের পক্ষে অনড় অবস্থানে রয়েছে। প্রতিষ্ঠার মাত্র ছয় মাসে দলটি খুব গুছিয়েও উঠতে পারেনি। দলটির বেশির ভাগ নেতাই গণপরিষদ নির্বাচন ছাড়া সংসদ নির্বাচন চান না। তাঁরা পিআর পদ্ধতি ও নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের আইন ভিত্তি দেওয়ার পক্ষে। এসব দাবি পূরণ হলে তাঁরা নির্বাচনে যাওয়ার কথা বলছেন। সব শর্ত পূরণ না হলে নির্বাচনের পর পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এনসিপি এখনো গোছাতে পারেনি। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে এনসিপির মধ্যে একাধিক ধারা রয়েছে। বিভিন্ন দল থেকে আসা নেতাদের একটি অংশ নির্বাচনের পক্ষে। তাঁরা রাজনীতিতে অবস্থান তৈরি করতে নির্বাচনে যেতে চান। তবে দলের বেশির ভাগ নেতাই প্রথমে জাতীয় নির্বাচনের বিপক্ষে।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণপরিষদ নির্বাচন ও নতুন সংবিধান না হলে আমরা নির্বাচনে যাব না। আমাদের দাবি জনগণের দাবি। সেটা নিয়েই জনগণের কাছে যাব। নতুন সংবিধান, সংস্কার ও বিচারের দাবির সঙ্গে মানুষকে সম্পৃক্ত করে একটি বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে আমরা এগিয়ে যাব।’ তিনি বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের নিয়ে যদি কোনো পক্ষ কিংবা সরকারও কোনো চিন্তাভাবনা করে, জনগণ তা রুখে দেবে।
জি এম কাদের ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির দুই অংশের কার্যক্রমকেই সন্দেহের চোখে দেখছে জামায়াত ও এনসিপি। দল দুটি মনে করছে, সংস্কার, জুলাই সনদ ও পিআর পদ্ধতি নিয়ে তাদের অনড় অবস্থানের সুযোগ নিয়ে একটি পক্ষ নিজেদের পাল্লা ভারী করতে জাপার দুই অংশকে মাঠে নামাতে পারে। জাপা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নির্বাচনেও নামতে পারে। কারণ, অতীতে দলটি বিএনপি, জামায়াতসহ অধিকাংশ দলের বর্জন করা নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের আমলের নির্বাচনকে সাংবিধানিক বৈধতা দিয়েছিল।
জামায়াত ও এনসিপির নেতাদের আশঙ্কা, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও তিন ইস্যুতে তাঁরা অনড় থাকলে জাপা আবার তুরুপের তাস হতে পারে। যাতে এবার লাভবান হবে বিএনপি। এ জন্য তাদের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে পর্দার অন্তরালে জাপাকে একটি পক্ষ বানানোর আয়োজন চলছে বলে তাঁরা সন্দেহ ও আশঙ্কা করছেন।
বিএনপির সামনে চাপ: দীর্ঘ দেড় দশকের ক্ষমতার খরা কাটাতে চায় বিএনপি। দলের তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত এ ব্যাপারে চাপ রয়েছে। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা কোনোভাবেই হারাতে চায় না বিএনপি; যে কারণে সাবধানে পা ফেলে অগ্রসর হচ্ছে দলটি। বিএনপি মনে করে, তাদের চাপে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা এসেছে। আজ ওই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে যাচ্ছে ইসি। কিন্তু এরপরও নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না বিএনপিতে। এর কারণ আরেক পক্ষের অনড় অবস্থান।
বিএনপি স্পষ্টই বলছে, তারা পিআর পদ্ধতিতে নেই। উচ্চকক্ষের বিরোধিতা করছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের প্রস্তাবকে সংবিধানবহির্ভূত বলছে। এসব ক্ষেত্রে জামায়াত-এনসিপির অবস্থান বিএনপিকে কঠিন সমীকরণে নিয়ে যাচ্ছে।
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বিএনপির অনিশ্চয়তার কথা এসেছে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যেও। গতকাল বুধবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আজকে কিছুসংখ্যক রাজনৈতিক মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য, নির্বাচনকে ব্যাহত করার জন্য নিত্যনতুন দাবি তুলে চলেছে। এগুলো নিয়ে তারা হুমকি দিচ্ছে, কথা বলছেন, অত্যন্ত জোরেশোরে হুমকি দিচ্ছেন। আমার প্রশ্নটা হচ্ছে, কেন করছেন এটা?’ তিনি বলেন, ‘সরকারের ভেতরে একটা মহল, তারা অত্যন্ত সচেতনভাবে চেষ্টা করছে, যারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, তারা যেন আসতে না পারে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, এখনো সময় আছে। জুলাই সনদ, সংস্কার এসব নিয়ে জটিলতা না বাড়িয়ে সরকার যেন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়; যাতে দলগুলো নির্বাচনমুখী হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হলে বিএনপিকেই এগিয়ে এসে অন্য দলগুলোকে ভরসা দিতে হবে, আস্থায় আনতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, বিএনপির উচিত আন্তরিকতার সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের উদ্বেগ চিহ্নিত করা এবং তাদের আশ্বস্ত করা যে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলে তারা কোনো অবিচার করবে না কিংবা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েম করবে না। দলগুলোকে আস্থা ও নিশ্চয়তা দেওয়া গেলে অন্যরা বিএনপিকে বিশ্বাস করতে পারবে। তবে তিনি বলেন, কিছু দল যদি ভিন্ন উদ্দেশ্যে নির্বাচন ঠেকাতে চায়, সে ক্ষেত্রে বিএনপির পক্ষে সমন্বয় করা সম্ভব নয়। সেটা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।
নির্বাচনের চেষ্টায় সরকার: দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করছে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে। এ জন্য প্রকাশ্য ও অন্তরালে বৈঠক চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার বদলে এখন শর্ত মুখ্য হয়ে উঠেছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানকে কাছাকাছি নিয়ে আসার জন্য কমিশনের বিভিন্ন রকম চেষ্টা ও তৎপরতা চলমান আছে।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, নির্বাচন না হলে শুধু বিএনপি নয়, জামায়াত ও এনসিপিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রাজনৈতিক অচলাবস্থা দীর্ঘ হলে জনগণের মধ্যে হতাশা জন্মাবে।
দলগুলো পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের মাধ্যমে দলীয় অবস্থান তুলে ধরছে বলে মনে করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণের লক্ষ্যে সবাই একমত হয়ে প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করবে; যার মাধ্যমে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সুগম হবে এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ প্রশস্ত হবে।’

সংবিধান সংস্কার, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব কমছেই না। প্রধান এই তিন ইস্যুতে বিএনপির বিপরীত অবস্থান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। কোনো পক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়। দলগুলোর এই অনড় অবস্থানে অনৈক্যের জালে জড়িয়ে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, সভা, সমাবেশ, আলোচনায় এই তিন ইস্যুতে দূরত্ব-অনৈক্য বোঝা গেলেও ভেতরে-ভেতরে রয়েছে অন্য হিসাব-নিকাশ। জামায়াত ও এনসিপির একাংশ মনে করছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে বিএনপি পুরো ফায়দা পাবে। বর্তমানে প্রশাসনসহ বড় সব জায়গায় জামায়াত ও এনসিপির মতাদর্শীরা আছেন। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এলে সবকিছু বদলে দেবে। এই আশঙ্কা থেকে দল দুটি সংস্কার, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও পিআর পদ্ধতি নিশ্চিত করতে চাইছে। এতে নির্বাচন বিলম্বিত হলেও সমস্যা নেই। কিন্তু মাঠের পরিস্থিতি বুঝে বিএনপি যেকোনোভাবে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন চায়। বিলম্বের আশঙ্কাকে তারা ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। এই তিন দলের এমন অবস্থানে মাঠে নামতে পারে জাতীয় পার্টির (জাপা) দুই অংশ।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। ইসি আজ বৃহস্পতিবার এই নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করবে। নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতিও সারছে। সব মিলিয়ে নির্বাচনের একটি আবহ তৈরির অবস্থা। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব-অনৈক্য সব সম্ভাবনাকে অনিশ্চয়তার পথে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।
রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্য দূর করার চেষ্টা করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও। তারা দফায় দফায় সংলাপ করেছেন দলগুলোর সঙ্গে। দূরত্ব কমিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় আবারও সংলাপে বসবে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে এক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হোন। আন্দোলন-সংগ্রামে একত্রে থেকেছেন, এটা অব্যাহত রাখুন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমরা একটা অন্তর্বর্তী ব্যবস্থায় আছি। সেটা শুধু সরকার হিসেবে না, সবাই। বাংলাদেশে রাজনীতির একটি অন্তর্বর্তী পরিস্থিতিতে ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহনশীলতার জায়গাটা ধরে রাখা দরকার। কেননা পরাজিত শক্তিরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে, সেটা যেন না নিতে পারে, সে জন্য রাজনীতিবিদদের সজাগ ও সক্রিয় থাকতে হবে।’
জামায়াতের দ্বিধা, সংশয়: জামায়াতে ইসলামী স্পষ্টই বলেছে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং পিআর পদ্ধতির সিদ্ধান্ত না হলে তারা নির্বাচনে যাবে না। দলটি ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির দাবিও জানাচ্ছে। এগুলোসহ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে দলটি মিছিল, সমাবেশও করছে। রাজপথে এসব কর্মসূচির মাধ্যমে তারা নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। পাশাপাশি সরকার, বিএনপিসহ সংশ্লিষ্টদের বার্তা দিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে জামায়াত। প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জামায়াত-সমর্থিত ব্যক্তিরা ভালো অবস্থায় রয়েছেন। ১৬টির মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সমর্থিত ব্যক্তি উপাচার্য হয়েছেন। প্রশাসনের উচ্চপর্যায়েও একই অবস্থা। দলটির আশঙ্কা, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে বিএনপি বেশি আসন পাবে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে তাদের এই ‘শক্তি’ ভেঙে দেবে। অভ্যুত্থানের সব অর্জন নষ্ট করে দেবে। এ কারণে দলটি বুঝে-শুনে নির্বাচনে যেতে চায়।
অবশ্য জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে জামায়াতের আপত্তি নেই। তবে নির্বাচনের বড় প্রস্তুতিমূলক কাজ সংস্কার। সেটিকে চূড়ান্ত করতে হবে, সংস্কারের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি ছিল সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন করার। নির্বাচনের ঘোষণা তিনি দিয়েছেন, তার আগে তো সংস্কার হতে হবে। সেটি এখনো সম্পূর্ণ হয়নি।
এনসিপি সংস্কারের পক্ষে অনড়: সূত্র বলছে, জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের গড়া দল এনসিপি সংস্কারের পক্ষে অনড় অবস্থানে রয়েছে। প্রতিষ্ঠার মাত্র ছয় মাসে দলটি খুব গুছিয়েও উঠতে পারেনি। দলটির বেশির ভাগ নেতাই গণপরিষদ নির্বাচন ছাড়া সংসদ নির্বাচন চান না। তাঁরা পিআর পদ্ধতি ও নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের আইন ভিত্তি দেওয়ার পক্ষে। এসব দাবি পূরণ হলে তাঁরা নির্বাচনে যাওয়ার কথা বলছেন। সব শর্ত পূরণ না হলে নির্বাচনের পর পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এনসিপি এখনো গোছাতে পারেনি। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে এনসিপির মধ্যে একাধিক ধারা রয়েছে। বিভিন্ন দল থেকে আসা নেতাদের একটি অংশ নির্বাচনের পক্ষে। তাঁরা রাজনীতিতে অবস্থান তৈরি করতে নির্বাচনে যেতে চান। তবে দলের বেশির ভাগ নেতাই প্রথমে জাতীয় নির্বাচনের বিপক্ষে।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণপরিষদ নির্বাচন ও নতুন সংবিধান না হলে আমরা নির্বাচনে যাব না। আমাদের দাবি জনগণের দাবি। সেটা নিয়েই জনগণের কাছে যাব। নতুন সংবিধান, সংস্কার ও বিচারের দাবির সঙ্গে মানুষকে সম্পৃক্ত করে একটি বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে আমরা এগিয়ে যাব।’ তিনি বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের নিয়ে যদি কোনো পক্ষ কিংবা সরকারও কোনো চিন্তাভাবনা করে, জনগণ তা রুখে দেবে।
জি এম কাদের ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির দুই অংশের কার্যক্রমকেই সন্দেহের চোখে দেখছে জামায়াত ও এনসিপি। দল দুটি মনে করছে, সংস্কার, জুলাই সনদ ও পিআর পদ্ধতি নিয়ে তাদের অনড় অবস্থানের সুযোগ নিয়ে একটি পক্ষ নিজেদের পাল্লা ভারী করতে জাপার দুই অংশকে মাঠে নামাতে পারে। জাপা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নির্বাচনেও নামতে পারে। কারণ, অতীতে দলটি বিএনপি, জামায়াতসহ অধিকাংশ দলের বর্জন করা নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের আমলের নির্বাচনকে সাংবিধানিক বৈধতা দিয়েছিল।
জামায়াত ও এনসিপির নেতাদের আশঙ্কা, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও তিন ইস্যুতে তাঁরা অনড় থাকলে জাপা আবার তুরুপের তাস হতে পারে। যাতে এবার লাভবান হবে বিএনপি। এ জন্য তাদের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে পর্দার অন্তরালে জাপাকে একটি পক্ষ বানানোর আয়োজন চলছে বলে তাঁরা সন্দেহ ও আশঙ্কা করছেন।
বিএনপির সামনে চাপ: দীর্ঘ দেড় দশকের ক্ষমতার খরা কাটাতে চায় বিএনপি। দলের তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত এ ব্যাপারে চাপ রয়েছে। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা কোনোভাবেই হারাতে চায় না বিএনপি; যে কারণে সাবধানে পা ফেলে অগ্রসর হচ্ছে দলটি। বিএনপি মনে করে, তাদের চাপে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা এসেছে। আজ ওই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে যাচ্ছে ইসি। কিন্তু এরপরও নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না বিএনপিতে। এর কারণ আরেক পক্ষের অনড় অবস্থান।
বিএনপি স্পষ্টই বলছে, তারা পিআর পদ্ধতিতে নেই। উচ্চকক্ষের বিরোধিতা করছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের প্রস্তাবকে সংবিধানবহির্ভূত বলছে। এসব ক্ষেত্রে জামায়াত-এনসিপির অবস্থান বিএনপিকে কঠিন সমীকরণে নিয়ে যাচ্ছে।
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বিএনপির অনিশ্চয়তার কথা এসেছে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যেও। গতকাল বুধবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আজকে কিছুসংখ্যক রাজনৈতিক মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য, নির্বাচনকে ব্যাহত করার জন্য নিত্যনতুন দাবি তুলে চলেছে। এগুলো নিয়ে তারা হুমকি দিচ্ছে, কথা বলছেন, অত্যন্ত জোরেশোরে হুমকি দিচ্ছেন। আমার প্রশ্নটা হচ্ছে, কেন করছেন এটা?’ তিনি বলেন, ‘সরকারের ভেতরে একটা মহল, তারা অত্যন্ত সচেতনভাবে চেষ্টা করছে, যারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, তারা যেন আসতে না পারে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, এখনো সময় আছে। জুলাই সনদ, সংস্কার এসব নিয়ে জটিলতা না বাড়িয়ে সরকার যেন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়; যাতে দলগুলো নির্বাচনমুখী হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হলে বিএনপিকেই এগিয়ে এসে অন্য দলগুলোকে ভরসা দিতে হবে, আস্থায় আনতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, বিএনপির উচিত আন্তরিকতার সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের উদ্বেগ চিহ্নিত করা এবং তাদের আশ্বস্ত করা যে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলে তারা কোনো অবিচার করবে না কিংবা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েম করবে না। দলগুলোকে আস্থা ও নিশ্চয়তা দেওয়া গেলে অন্যরা বিএনপিকে বিশ্বাস করতে পারবে। তবে তিনি বলেন, কিছু দল যদি ভিন্ন উদ্দেশ্যে নির্বাচন ঠেকাতে চায়, সে ক্ষেত্রে বিএনপির পক্ষে সমন্বয় করা সম্ভব নয়। সেটা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।
নির্বাচনের চেষ্টায় সরকার: দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করছে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে। এ জন্য প্রকাশ্য ও অন্তরালে বৈঠক চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার বদলে এখন শর্ত মুখ্য হয়ে উঠেছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানকে কাছাকাছি নিয়ে আসার জন্য কমিশনের বিভিন্ন রকম চেষ্টা ও তৎপরতা চলমান আছে।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, নির্বাচন না হলে শুধু বিএনপি নয়, জামায়াত ও এনসিপিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রাজনৈতিক অচলাবস্থা দীর্ঘ হলে জনগণের মধ্যে হতাশা জন্মাবে।
দলগুলো পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের মাধ্যমে দলীয় অবস্থান তুলে ধরছে বলে মনে করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণের লক্ষ্যে সবাই একমত হয়ে প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করবে; যার মাধ্যমে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সুগম হবে এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ প্রশস্ত হবে।’
রেজা করিম ও তানিম আহমেদ, ঢাকা

সংবিধান সংস্কার, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব কমছেই না। প্রধান এই তিন ইস্যুতে বিএনপির বিপরীত অবস্থান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। কোনো পক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়। দলগুলোর এই অনড় অবস্থানে অনৈক্যের জালে জড়িয়ে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, সভা, সমাবেশ, আলোচনায় এই তিন ইস্যুতে দূরত্ব-অনৈক্য বোঝা গেলেও ভেতরে-ভেতরে রয়েছে অন্য হিসাব-নিকাশ। জামায়াত ও এনসিপির একাংশ মনে করছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে বিএনপি পুরো ফায়দা পাবে। বর্তমানে প্রশাসনসহ বড় সব জায়গায় জামায়াত ও এনসিপির মতাদর্শীরা আছেন। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এলে সবকিছু বদলে দেবে। এই আশঙ্কা থেকে দল দুটি সংস্কার, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও পিআর পদ্ধতি নিশ্চিত করতে চাইছে। এতে নির্বাচন বিলম্বিত হলেও সমস্যা নেই। কিন্তু মাঠের পরিস্থিতি বুঝে বিএনপি যেকোনোভাবে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন চায়। বিলম্বের আশঙ্কাকে তারা ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। এই তিন দলের এমন অবস্থানে মাঠে নামতে পারে জাতীয় পার্টির (জাপা) দুই অংশ।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। ইসি আজ বৃহস্পতিবার এই নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করবে। নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতিও সারছে। সব মিলিয়ে নির্বাচনের একটি আবহ তৈরির অবস্থা। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব-অনৈক্য সব সম্ভাবনাকে অনিশ্চয়তার পথে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।
রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্য দূর করার চেষ্টা করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও। তারা দফায় দফায় সংলাপ করেছেন দলগুলোর সঙ্গে। দূরত্ব কমিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় আবারও সংলাপে বসবে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে এক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হোন। আন্দোলন-সংগ্রামে একত্রে থেকেছেন, এটা অব্যাহত রাখুন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমরা একটা অন্তর্বর্তী ব্যবস্থায় আছি। সেটা শুধু সরকার হিসেবে না, সবাই। বাংলাদেশে রাজনীতির একটি অন্তর্বর্তী পরিস্থিতিতে ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহনশীলতার জায়গাটা ধরে রাখা দরকার। কেননা পরাজিত শক্তিরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে, সেটা যেন না নিতে পারে, সে জন্য রাজনীতিবিদদের সজাগ ও সক্রিয় থাকতে হবে।’
জামায়াতের দ্বিধা, সংশয়: জামায়াতে ইসলামী স্পষ্টই বলেছে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং পিআর পদ্ধতির সিদ্ধান্ত না হলে তারা নির্বাচনে যাবে না। দলটি ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির দাবিও জানাচ্ছে। এগুলোসহ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে দলটি মিছিল, সমাবেশও করছে। রাজপথে এসব কর্মসূচির মাধ্যমে তারা নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। পাশাপাশি সরকার, বিএনপিসহ সংশ্লিষ্টদের বার্তা দিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে জামায়াত। প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জামায়াত-সমর্থিত ব্যক্তিরা ভালো অবস্থায় রয়েছেন। ১৬টির মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সমর্থিত ব্যক্তি উপাচার্য হয়েছেন। প্রশাসনের উচ্চপর্যায়েও একই অবস্থা। দলটির আশঙ্কা, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে বিএনপি বেশি আসন পাবে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে তাদের এই ‘শক্তি’ ভেঙে দেবে। অভ্যুত্থানের সব অর্জন নষ্ট করে দেবে। এ কারণে দলটি বুঝে-শুনে নির্বাচনে যেতে চায়।
অবশ্য জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে জামায়াতের আপত্তি নেই। তবে নির্বাচনের বড় প্রস্তুতিমূলক কাজ সংস্কার। সেটিকে চূড়ান্ত করতে হবে, সংস্কারের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি ছিল সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন করার। নির্বাচনের ঘোষণা তিনি দিয়েছেন, তার আগে তো সংস্কার হতে হবে। সেটি এখনো সম্পূর্ণ হয়নি।
এনসিপি সংস্কারের পক্ষে অনড়: সূত্র বলছে, জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের গড়া দল এনসিপি সংস্কারের পক্ষে অনড় অবস্থানে রয়েছে। প্রতিষ্ঠার মাত্র ছয় মাসে দলটি খুব গুছিয়েও উঠতে পারেনি। দলটির বেশির ভাগ নেতাই গণপরিষদ নির্বাচন ছাড়া সংসদ নির্বাচন চান না। তাঁরা পিআর পদ্ধতি ও নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের আইন ভিত্তি দেওয়ার পক্ষে। এসব দাবি পূরণ হলে তাঁরা নির্বাচনে যাওয়ার কথা বলছেন। সব শর্ত পূরণ না হলে নির্বাচনের পর পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এনসিপি এখনো গোছাতে পারেনি। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে এনসিপির মধ্যে একাধিক ধারা রয়েছে। বিভিন্ন দল থেকে আসা নেতাদের একটি অংশ নির্বাচনের পক্ষে। তাঁরা রাজনীতিতে অবস্থান তৈরি করতে নির্বাচনে যেতে চান। তবে দলের বেশির ভাগ নেতাই প্রথমে জাতীয় নির্বাচনের বিপক্ষে।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণপরিষদ নির্বাচন ও নতুন সংবিধান না হলে আমরা নির্বাচনে যাব না। আমাদের দাবি জনগণের দাবি। সেটা নিয়েই জনগণের কাছে যাব। নতুন সংবিধান, সংস্কার ও বিচারের দাবির সঙ্গে মানুষকে সম্পৃক্ত করে একটি বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে আমরা এগিয়ে যাব।’ তিনি বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের নিয়ে যদি কোনো পক্ষ কিংবা সরকারও কোনো চিন্তাভাবনা করে, জনগণ তা রুখে দেবে।
জি এম কাদের ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির দুই অংশের কার্যক্রমকেই সন্দেহের চোখে দেখছে জামায়াত ও এনসিপি। দল দুটি মনে করছে, সংস্কার, জুলাই সনদ ও পিআর পদ্ধতি নিয়ে তাদের অনড় অবস্থানের সুযোগ নিয়ে একটি পক্ষ নিজেদের পাল্লা ভারী করতে জাপার দুই অংশকে মাঠে নামাতে পারে। জাপা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নির্বাচনেও নামতে পারে। কারণ, অতীতে দলটি বিএনপি, জামায়াতসহ অধিকাংশ দলের বর্জন করা নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের আমলের নির্বাচনকে সাংবিধানিক বৈধতা দিয়েছিল।
জামায়াত ও এনসিপির নেতাদের আশঙ্কা, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও তিন ইস্যুতে তাঁরা অনড় থাকলে জাপা আবার তুরুপের তাস হতে পারে। যাতে এবার লাভবান হবে বিএনপি। এ জন্য তাদের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে পর্দার অন্তরালে জাপাকে একটি পক্ষ বানানোর আয়োজন চলছে বলে তাঁরা সন্দেহ ও আশঙ্কা করছেন।
বিএনপির সামনে চাপ: দীর্ঘ দেড় দশকের ক্ষমতার খরা কাটাতে চায় বিএনপি। দলের তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত এ ব্যাপারে চাপ রয়েছে। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা কোনোভাবেই হারাতে চায় না বিএনপি; যে কারণে সাবধানে পা ফেলে অগ্রসর হচ্ছে দলটি। বিএনপি মনে করে, তাদের চাপে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা এসেছে। আজ ওই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে যাচ্ছে ইসি। কিন্তু এরপরও নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না বিএনপিতে। এর কারণ আরেক পক্ষের অনড় অবস্থান।
বিএনপি স্পষ্টই বলছে, তারা পিআর পদ্ধতিতে নেই। উচ্চকক্ষের বিরোধিতা করছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের প্রস্তাবকে সংবিধানবহির্ভূত বলছে। এসব ক্ষেত্রে জামায়াত-এনসিপির অবস্থান বিএনপিকে কঠিন সমীকরণে নিয়ে যাচ্ছে।
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বিএনপির অনিশ্চয়তার কথা এসেছে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যেও। গতকাল বুধবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আজকে কিছুসংখ্যক রাজনৈতিক মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য, নির্বাচনকে ব্যাহত করার জন্য নিত্যনতুন দাবি তুলে চলেছে। এগুলো নিয়ে তারা হুমকি দিচ্ছে, কথা বলছেন, অত্যন্ত জোরেশোরে হুমকি দিচ্ছেন। আমার প্রশ্নটা হচ্ছে, কেন করছেন এটা?’ তিনি বলেন, ‘সরকারের ভেতরে একটা মহল, তারা অত্যন্ত সচেতনভাবে চেষ্টা করছে, যারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, তারা যেন আসতে না পারে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, এখনো সময় আছে। জুলাই সনদ, সংস্কার এসব নিয়ে জটিলতা না বাড়িয়ে সরকার যেন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়; যাতে দলগুলো নির্বাচনমুখী হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হলে বিএনপিকেই এগিয়ে এসে অন্য দলগুলোকে ভরসা দিতে হবে, আস্থায় আনতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, বিএনপির উচিত আন্তরিকতার সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের উদ্বেগ চিহ্নিত করা এবং তাদের আশ্বস্ত করা যে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলে তারা কোনো অবিচার করবে না কিংবা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েম করবে না। দলগুলোকে আস্থা ও নিশ্চয়তা দেওয়া গেলে অন্যরা বিএনপিকে বিশ্বাস করতে পারবে। তবে তিনি বলেন, কিছু দল যদি ভিন্ন উদ্দেশ্যে নির্বাচন ঠেকাতে চায়, সে ক্ষেত্রে বিএনপির পক্ষে সমন্বয় করা সম্ভব নয়। সেটা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।
নির্বাচনের চেষ্টায় সরকার: দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করছে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে। এ জন্য প্রকাশ্য ও অন্তরালে বৈঠক চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার বদলে এখন শর্ত মুখ্য হয়ে উঠেছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানকে কাছাকাছি নিয়ে আসার জন্য কমিশনের বিভিন্ন রকম চেষ্টা ও তৎপরতা চলমান আছে।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, নির্বাচন না হলে শুধু বিএনপি নয়, জামায়াত ও এনসিপিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রাজনৈতিক অচলাবস্থা দীর্ঘ হলে জনগণের মধ্যে হতাশা জন্মাবে।
দলগুলো পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের মাধ্যমে দলীয় অবস্থান তুলে ধরছে বলে মনে করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণের লক্ষ্যে সবাই একমত হয়ে প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করবে; যার মাধ্যমে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সুগম হবে এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ প্রশস্ত হবে।’

সংবিধান সংস্কার, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব কমছেই না। প্রধান এই তিন ইস্যুতে বিএনপির বিপরীত অবস্থান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। কোনো পক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়। দলগুলোর এই অনড় অবস্থানে অনৈক্যের জালে জড়িয়ে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, সভা, সমাবেশ, আলোচনায় এই তিন ইস্যুতে দূরত্ব-অনৈক্য বোঝা গেলেও ভেতরে-ভেতরে রয়েছে অন্য হিসাব-নিকাশ। জামায়াত ও এনসিপির একাংশ মনে করছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে বিএনপি পুরো ফায়দা পাবে। বর্তমানে প্রশাসনসহ বড় সব জায়গায় জামায়াত ও এনসিপির মতাদর্শীরা আছেন। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এলে সবকিছু বদলে দেবে। এই আশঙ্কা থেকে দল দুটি সংস্কার, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও পিআর পদ্ধতি নিশ্চিত করতে চাইছে। এতে নির্বাচন বিলম্বিত হলেও সমস্যা নেই। কিন্তু মাঠের পরিস্থিতি বুঝে বিএনপি যেকোনোভাবে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন চায়। বিলম্বের আশঙ্কাকে তারা ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। এই তিন দলের এমন অবস্থানে মাঠে নামতে পারে জাতীয় পার্টির (জাপা) দুই অংশ।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। ইসি আজ বৃহস্পতিবার এই নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করবে। নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতিও সারছে। সব মিলিয়ে নির্বাচনের একটি আবহ তৈরির অবস্থা। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব-অনৈক্য সব সম্ভাবনাকে অনিশ্চয়তার পথে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।
রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্য দূর করার চেষ্টা করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও। তারা দফায় দফায় সংলাপ করেছেন দলগুলোর সঙ্গে। দূরত্ব কমিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় আবারও সংলাপে বসবে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে এক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হোন। আন্দোলন-সংগ্রামে একত্রে থেকেছেন, এটা অব্যাহত রাখুন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমরা একটা অন্তর্বর্তী ব্যবস্থায় আছি। সেটা শুধু সরকার হিসেবে না, সবাই। বাংলাদেশে রাজনীতির একটি অন্তর্বর্তী পরিস্থিতিতে ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহনশীলতার জায়গাটা ধরে রাখা দরকার। কেননা পরাজিত শক্তিরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে, সেটা যেন না নিতে পারে, সে জন্য রাজনীতিবিদদের সজাগ ও সক্রিয় থাকতে হবে।’
জামায়াতের দ্বিধা, সংশয়: জামায়াতে ইসলামী স্পষ্টই বলেছে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং পিআর পদ্ধতির সিদ্ধান্ত না হলে তারা নির্বাচনে যাবে না। দলটি ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির দাবিও জানাচ্ছে। এগুলোসহ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে দলটি মিছিল, সমাবেশও করছে। রাজপথে এসব কর্মসূচির মাধ্যমে তারা নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। পাশাপাশি সরকার, বিএনপিসহ সংশ্লিষ্টদের বার্তা দিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে জামায়াত। প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জামায়াত-সমর্থিত ব্যক্তিরা ভালো অবস্থায় রয়েছেন। ১৬টির মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সমর্থিত ব্যক্তি উপাচার্য হয়েছেন। প্রশাসনের উচ্চপর্যায়েও একই অবস্থা। দলটির আশঙ্কা, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে বিএনপি বেশি আসন পাবে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে তাদের এই ‘শক্তি’ ভেঙে দেবে। অভ্যুত্থানের সব অর্জন নষ্ট করে দেবে। এ কারণে দলটি বুঝে-শুনে নির্বাচনে যেতে চায়।
অবশ্য জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে জামায়াতের আপত্তি নেই। তবে নির্বাচনের বড় প্রস্তুতিমূলক কাজ সংস্কার। সেটিকে চূড়ান্ত করতে হবে, সংস্কারের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি ছিল সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন করার। নির্বাচনের ঘোষণা তিনি দিয়েছেন, তার আগে তো সংস্কার হতে হবে। সেটি এখনো সম্পূর্ণ হয়নি।
এনসিপি সংস্কারের পক্ষে অনড়: সূত্র বলছে, জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের গড়া দল এনসিপি সংস্কারের পক্ষে অনড় অবস্থানে রয়েছে। প্রতিষ্ঠার মাত্র ছয় মাসে দলটি খুব গুছিয়েও উঠতে পারেনি। দলটির বেশির ভাগ নেতাই গণপরিষদ নির্বাচন ছাড়া সংসদ নির্বাচন চান না। তাঁরা পিআর পদ্ধতি ও নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের আইন ভিত্তি দেওয়ার পক্ষে। এসব দাবি পূরণ হলে তাঁরা নির্বাচনে যাওয়ার কথা বলছেন। সব শর্ত পূরণ না হলে নির্বাচনের পর পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এনসিপি এখনো গোছাতে পারেনি। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে এনসিপির মধ্যে একাধিক ধারা রয়েছে। বিভিন্ন দল থেকে আসা নেতাদের একটি অংশ নির্বাচনের পক্ষে। তাঁরা রাজনীতিতে অবস্থান তৈরি করতে নির্বাচনে যেতে চান। তবে দলের বেশির ভাগ নেতাই প্রথমে জাতীয় নির্বাচনের বিপক্ষে।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণপরিষদ নির্বাচন ও নতুন সংবিধান না হলে আমরা নির্বাচনে যাব না। আমাদের দাবি জনগণের দাবি। সেটা নিয়েই জনগণের কাছে যাব। নতুন সংবিধান, সংস্কার ও বিচারের দাবির সঙ্গে মানুষকে সম্পৃক্ত করে একটি বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে আমরা এগিয়ে যাব।’ তিনি বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের নিয়ে যদি কোনো পক্ষ কিংবা সরকারও কোনো চিন্তাভাবনা করে, জনগণ তা রুখে দেবে।
জি এম কাদের ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির দুই অংশের কার্যক্রমকেই সন্দেহের চোখে দেখছে জামায়াত ও এনসিপি। দল দুটি মনে করছে, সংস্কার, জুলাই সনদ ও পিআর পদ্ধতি নিয়ে তাদের অনড় অবস্থানের সুযোগ নিয়ে একটি পক্ষ নিজেদের পাল্লা ভারী করতে জাপার দুই অংশকে মাঠে নামাতে পারে। জাপা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নির্বাচনেও নামতে পারে। কারণ, অতীতে দলটি বিএনপি, জামায়াতসহ অধিকাংশ দলের বর্জন করা নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের আমলের নির্বাচনকে সাংবিধানিক বৈধতা দিয়েছিল।
জামায়াত ও এনসিপির নেতাদের আশঙ্কা, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও তিন ইস্যুতে তাঁরা অনড় থাকলে জাপা আবার তুরুপের তাস হতে পারে। যাতে এবার লাভবান হবে বিএনপি। এ জন্য তাদের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে পর্দার অন্তরালে জাপাকে একটি পক্ষ বানানোর আয়োজন চলছে বলে তাঁরা সন্দেহ ও আশঙ্কা করছেন।
বিএনপির সামনে চাপ: দীর্ঘ দেড় দশকের ক্ষমতার খরা কাটাতে চায় বিএনপি। দলের তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত এ ব্যাপারে চাপ রয়েছে। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা কোনোভাবেই হারাতে চায় না বিএনপি; যে কারণে সাবধানে পা ফেলে অগ্রসর হচ্ছে দলটি। বিএনপি মনে করে, তাদের চাপে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা এসেছে। আজ ওই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে যাচ্ছে ইসি। কিন্তু এরপরও নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না বিএনপিতে। এর কারণ আরেক পক্ষের অনড় অবস্থান।
বিএনপি স্পষ্টই বলছে, তারা পিআর পদ্ধতিতে নেই। উচ্চকক্ষের বিরোধিতা করছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের প্রস্তাবকে সংবিধানবহির্ভূত বলছে। এসব ক্ষেত্রে জামায়াত-এনসিপির অবস্থান বিএনপিকে কঠিন সমীকরণে নিয়ে যাচ্ছে।
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বিএনপির অনিশ্চয়তার কথা এসেছে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যেও। গতকাল বুধবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আজকে কিছুসংখ্যক রাজনৈতিক মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য, নির্বাচনকে ব্যাহত করার জন্য নিত্যনতুন দাবি তুলে চলেছে। এগুলো নিয়ে তারা হুমকি দিচ্ছে, কথা বলছেন, অত্যন্ত জোরেশোরে হুমকি দিচ্ছেন। আমার প্রশ্নটা হচ্ছে, কেন করছেন এটা?’ তিনি বলেন, ‘সরকারের ভেতরে একটা মহল, তারা অত্যন্ত সচেতনভাবে চেষ্টা করছে, যারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, তারা যেন আসতে না পারে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, এখনো সময় আছে। জুলাই সনদ, সংস্কার এসব নিয়ে জটিলতা না বাড়িয়ে সরকার যেন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়; যাতে দলগুলো নির্বাচনমুখী হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হলে বিএনপিকেই এগিয়ে এসে অন্য দলগুলোকে ভরসা দিতে হবে, আস্থায় আনতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, বিএনপির উচিত আন্তরিকতার সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের উদ্বেগ চিহ্নিত করা এবং তাদের আশ্বস্ত করা যে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলে তারা কোনো অবিচার করবে না কিংবা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েম করবে না। দলগুলোকে আস্থা ও নিশ্চয়তা দেওয়া গেলে অন্যরা বিএনপিকে বিশ্বাস করতে পারবে। তবে তিনি বলেন, কিছু দল যদি ভিন্ন উদ্দেশ্যে নির্বাচন ঠেকাতে চায়, সে ক্ষেত্রে বিএনপির পক্ষে সমন্বয় করা সম্ভব নয়। সেটা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।
নির্বাচনের চেষ্টায় সরকার: দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করছে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে। এ জন্য প্রকাশ্য ও অন্তরালে বৈঠক চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার বদলে এখন শর্ত মুখ্য হয়ে উঠেছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানকে কাছাকাছি নিয়ে আসার জন্য কমিশনের বিভিন্ন রকম চেষ্টা ও তৎপরতা চলমান আছে।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, নির্বাচন না হলে শুধু বিএনপি নয়, জামায়াত ও এনসিপিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রাজনৈতিক অচলাবস্থা দীর্ঘ হলে জনগণের মধ্যে হতাশা জন্মাবে।
দলগুলো পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের মাধ্যমে দলীয় অবস্থান তুলে ধরছে বলে মনে করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণের লক্ষ্যে সবাই একমত হয়ে প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করবে; যার মাধ্যমে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সুগম হবে এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ প্রশস্ত হবে।’

ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা ৮ থেকে কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা কমানো হবে। পুরুষ বাইরে ৮ ঘণ্টা কাজ করলে, নারীদের জন্য তা ৫ ঘণ্টাই ইনসাফ।’
২২ মিনিট আগে
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ গুছিয়ে আনছে বিএনপি। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতি আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থীকে প্রস্তুত করে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
৩৪ মিনিট আগে
সভায় প্রশাসনে দলীয় সমর্থক-কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়া, নির্বাচন কমিশনসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়, যাতে বাংলাদেশের সব মানুষ ভয়-ডরহীনভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন জানাতে পারে।
৫ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বামপন্থী দলগুলো। এ লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই করে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে দলগুলোর মধ্যে। নেতারা বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভিত্তি ধরে নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তাঁরা।
১৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা ৮ থেকে কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা কমানো হবে। পুরুষ বাইরে ৮ ঘণ্টা কাজ করলে, নারীদের জন্য তা ৫ ঘণ্টাই ইনসাফ।’
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাতে কোয়ালিশন অব বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন নামক একটি সংগঠনের উদ্যোগে এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা যদি সুযোগ পাই, মায়েদের বাড়তি আরেকটু সম্মান করব, সেটা হবে তাদের প্রতি ইনসাফ। একজন মা সন্তান জন্ম দিচ্ছেন, লালন-পালন করছেন; আবার ক্ষেত্র বিশেষে তিনি একজন পেশাজীবী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। আমারও ৮ ঘণ্টা, তারও ৮ ঘণ্টা, এটা কি অবিচার নয়?’
তিনি যোগ করেন, ‘আমরা ক্ষমতায় গেলে ইনশা আল্লাহ তাদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেব। মা হিসেবে সন্তানের হক আদায় করার জন্য এবং মা হিসেবে তাকে সম্মান করার জন্য। আমরা যদি ৮ ঘণ্টার জায়গায় ৫ ঘণ্টা করি, তাহলে মায়েরা এতই কমিটেড যে; তারা চিন্তা করবে সরকার যে সম্মান আমাদের দিয়েছে, আমাদের উচিত ৮ ঘণ্টার কাজ ৫ ঘণ্টায় সেরে ফেলা।’
বর্তমান সরকারের কাছে তিনি দাবি জানান, ‘বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা ফেরাতে দৃশ্যমান কয়েকটি রায় দিতে হবে।’ জামায়াত ক্ষমতায় গেলে বিচার অব্যাহত রাখবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো নিরপরাধ মানুষ শাস্তি পাবেন না।’
শুধু রেমিট্যান্স নয়, দেশের উন্নয়নে প্রবাসী মেধাবীদেরও ফিরিয়ে আনতে হবে—প্রবাসীদের প্রতি এমন আহ্বানও জানান জামায়াত আমীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের তরুণেরা বিভিন্ন দেশে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করছে। সে সমাজের উন্নয়নে তারা অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখছে। আমরা এ মানুষগুলোর থেকে একটা অংশ অন্তত বাংলাদেশে ফেরত চাই।’

ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা ৮ থেকে কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা কমানো হবে। পুরুষ বাইরে ৮ ঘণ্টা কাজ করলে, নারীদের জন্য তা ৫ ঘণ্টাই ইনসাফ।’
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাতে কোয়ালিশন অব বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন নামক একটি সংগঠনের উদ্যোগে এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা যদি সুযোগ পাই, মায়েদের বাড়তি আরেকটু সম্মান করব, সেটা হবে তাদের প্রতি ইনসাফ। একজন মা সন্তান জন্ম দিচ্ছেন, লালন-পালন করছেন; আবার ক্ষেত্র বিশেষে তিনি একজন পেশাজীবী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। আমারও ৮ ঘণ্টা, তারও ৮ ঘণ্টা, এটা কি অবিচার নয়?’
তিনি যোগ করেন, ‘আমরা ক্ষমতায় গেলে ইনশা আল্লাহ তাদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেব। মা হিসেবে সন্তানের হক আদায় করার জন্য এবং মা হিসেবে তাকে সম্মান করার জন্য। আমরা যদি ৮ ঘণ্টার জায়গায় ৫ ঘণ্টা করি, তাহলে মায়েরা এতই কমিটেড যে; তারা চিন্তা করবে সরকার যে সম্মান আমাদের দিয়েছে, আমাদের উচিত ৮ ঘণ্টার কাজ ৫ ঘণ্টায় সেরে ফেলা।’
বর্তমান সরকারের কাছে তিনি দাবি জানান, ‘বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা ফেরাতে দৃশ্যমান কয়েকটি রায় দিতে হবে।’ জামায়াত ক্ষমতায় গেলে বিচার অব্যাহত রাখবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো নিরপরাধ মানুষ শাস্তি পাবেন না।’
শুধু রেমিট্যান্স নয়, দেশের উন্নয়নে প্রবাসী মেধাবীদেরও ফিরিয়ে আনতে হবে—প্রবাসীদের প্রতি এমন আহ্বানও জানান জামায়াত আমীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের তরুণেরা বিভিন্ন দেশে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করছে। সে সমাজের উন্নয়নে তারা অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখছে। আমরা এ মানুষগুলোর থেকে একটা অংশ অন্তত বাংলাদেশে ফেরত চাই।’

সংবিধান সংস্কার, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব কমছেই না। প্রধান এই তিন ইস্যুতে বিএনপির বিপরীত অবস্থান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। কোনো পক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়। দলগুলোর এই অনড় অবস্থানে অনৈক্যের জালে
২৮ আগস্ট ২০২৫
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ গুছিয়ে আনছে বিএনপি। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতি আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থীকে প্রস্তুত করে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
৩৪ মিনিট আগে
সভায় প্রশাসনে দলীয় সমর্থক-কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়া, নির্বাচন কমিশনসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়, যাতে বাংলাদেশের সব মানুষ ভয়-ডরহীনভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন জানাতে পারে।
৫ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বামপন্থী দলগুলো। এ লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই করে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে দলগুলোর মধ্যে। নেতারা বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভিত্তি ধরে নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তাঁরা।
১৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ গুছিয়ে আনছে বিএনপি। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতি আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থীকে প্রস্তুত করে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ সোমবার যুবদলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, ‘আমরা সমগ্র বাংলাদেশে আসনভিত্তিক একাধিক যোগ্য প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি।’
এই কৌশলটি ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময়ের মতোই। ওই নির্বাচনে প্রার্থিতা বাতিলের মতো ঘটনা ঘটলে আসন যেন বিএনপিশূন্য না হয়ে পড়ে, সে জন্যই এক আসনে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছিল। আগামী নির্বাচনেও একই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় এই প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।
জানা গেছে, জোটের কারণে কিছু আসন ছাড় দিতে হতে পারে, তা বিবেচনা করেও দুই শতাধিক আসনে ‘ধানের শীষ’-এর প্রার্থী তালিকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির পরবর্তী বৈঠকে চূড়ান্ত হবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, এক আসনে একাধিক প্রার্থী বাছাই করে রাখলেও দল ঐক্যের বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা একটিই মেসেজ দিতে চাই, যাতে আমাদের দলের ভেতরে ঐক্য থাকে, জাতির ভেতরে ঐক্য থাকে। জাতির মধ্যে ঐক্যটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। সেই ঐক্য বজায় রাখার জন্য কেউ যাতে বিভেদের পথে না যায়, সেই মেসেজটা আমরা দিতে চাই।’
এ ছাড়া, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোকে নিয়ে বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট গঠন করা হবে বলেও ঘোষণা করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে নিয়ে গঠন করা হবে বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট।’
দেশের যুব সমাজকে জাতি বিনির্মাণে কাজে লাগানোর বিষয়ে বিএনপির পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে যুবকদের, তরুণদের রাজনৈতিক ভাবনাকে আহরণ করার জন্য আমরা সমগ্র বাংলাদেশে সফর করেছি। আমরা তারুণ্যের রাজনৈতিক ভাবনা গ্রহণ করে সামনের দিনে জাতি বিনির্মাণে কীভাবে আমরা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা কর্মসূচি প্রণয়ন করছি। আশা করি, এই দেশ একটি তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ হবে।’
এ সময় যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ গুছিয়ে আনছে বিএনপি। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতি আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থীকে প্রস্তুত করে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ সোমবার যুবদলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, ‘আমরা সমগ্র বাংলাদেশে আসনভিত্তিক একাধিক যোগ্য প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি।’
এই কৌশলটি ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময়ের মতোই। ওই নির্বাচনে প্রার্থিতা বাতিলের মতো ঘটনা ঘটলে আসন যেন বিএনপিশূন্য না হয়ে পড়ে, সে জন্যই এক আসনে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছিল। আগামী নির্বাচনেও একই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় এই প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।
জানা গেছে, জোটের কারণে কিছু আসন ছাড় দিতে হতে পারে, তা বিবেচনা করেও দুই শতাধিক আসনে ‘ধানের শীষ’-এর প্রার্থী তালিকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির পরবর্তী বৈঠকে চূড়ান্ত হবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, এক আসনে একাধিক প্রার্থী বাছাই করে রাখলেও দল ঐক্যের বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা একটিই মেসেজ দিতে চাই, যাতে আমাদের দলের ভেতরে ঐক্য থাকে, জাতির ভেতরে ঐক্য থাকে। জাতির মধ্যে ঐক্যটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। সেই ঐক্য বজায় রাখার জন্য কেউ যাতে বিভেদের পথে না যায়, সেই মেসেজটা আমরা দিতে চাই।’
এ ছাড়া, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোকে নিয়ে বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট গঠন করা হবে বলেও ঘোষণা করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে নিয়ে গঠন করা হবে বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট।’
দেশের যুব সমাজকে জাতি বিনির্মাণে কাজে লাগানোর বিষয়ে বিএনপির পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে যুবকদের, তরুণদের রাজনৈতিক ভাবনাকে আহরণ করার জন্য আমরা সমগ্র বাংলাদেশে সফর করেছি। আমরা তারুণ্যের রাজনৈতিক ভাবনা গ্রহণ করে সামনের দিনে জাতি বিনির্মাণে কীভাবে আমরা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা কর্মসূচি প্রণয়ন করছি। আশা করি, এই দেশ একটি তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ হবে।’
এ সময় যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবিধান সংস্কার, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব কমছেই না। প্রধান এই তিন ইস্যুতে বিএনপির বিপরীত অবস্থান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। কোনো পক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়। দলগুলোর এই অনড় অবস্থানে অনৈক্যের জালে
২৮ আগস্ট ২০২৫
ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা ৮ থেকে কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা কমানো হবে। পুরুষ বাইরে ৮ ঘণ্টা কাজ করলে, নারীদের জন্য তা ৫ ঘণ্টাই ইনসাফ।’
২২ মিনিট আগে
সভায় প্রশাসনে দলীয় সমর্থক-কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়া, নির্বাচন কমিশনসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়, যাতে বাংলাদেশের সব মানুষ ভয়-ডরহীনভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন জানাতে পারে।
৫ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বামপন্থী দলগুলো। এ লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই করে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে দলগুলোর মধ্যে। নেতারা বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভিত্তি ধরে নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তাঁরা।
১৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় জাতীয় পার্টির একাংশ। তবে অংশ নেওয়ার প্রক্রিয়া বা কৌশল আরও কিছুটা সময় পর জাতির সামনে তুলে ধরবে তারা। গতকাল রোববার রাজধানীর গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে অনুষ্ঠিত সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সভার এই প্রস্তাব রাখা হয়।
আজ সোমবার দলের দপ্তর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কৌশল নির্ধারণে করণীয় ও সারা দেশে সাংগঠনিক কর্মসূচি নিয়ে সূচনা বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।
প্রেসিডিয়াম সভায় বলা হয়, বিগত ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে সমুন্নত রাখার জন্য জাতীয় পার্টি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে আসছে। সেই দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে জাতীয় পার্টি সব সময় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক। আগামী জাতীয় নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করতে চায়। তবে কোন প্রক্রিয়ায় বা কোন কৌশলে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে, সেটি আরও কিছুটা সময় পর জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।
বিজ্ঞাপ্তিতে আরও জানানো হয়, ‘জাতীয় পার্টি প্রত্যাশা করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য ও সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করবে। বিশেষ করে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করে নির্বাচনী মাঠে প্রচারণায় যাতে সকল রাজনৈতিক দল সমান সুযোগ পায়, সে ধরনের একটি ভয়ভীতি ও আতঙ্কহীন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারের সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে বলে বিশ্বাস করতে চায় জাতীয় পার্টি।’
সভায় প্রশাসনে দলীয় সমর্থক-কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়া, নির্বাচন কমিশনসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়, যাতে বাংলাদেশের সব মানুষ ভয়-ডরহীনভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন জানাতে পারে। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহারে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত চলা এই সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম নাসরিন জাহান রতনা, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, আরিফুর রহমান খান, জিয়া উল হক মৃধা, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম মিলন, সরদার শাহজাহান, মোবারক হোসেন আজাদ, ফখরুল আহসান শাহজাদা, মো. বেলাল হোসেন, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় জাতীয় পার্টির একাংশ। তবে অংশ নেওয়ার প্রক্রিয়া বা কৌশল আরও কিছুটা সময় পর জাতির সামনে তুলে ধরবে তারা। গতকাল রোববার রাজধানীর গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে অনুষ্ঠিত সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সভার এই প্রস্তাব রাখা হয়।
আজ সোমবার দলের দপ্তর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কৌশল নির্ধারণে করণীয় ও সারা দেশে সাংগঠনিক কর্মসূচি নিয়ে সূচনা বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।
প্রেসিডিয়াম সভায় বলা হয়, বিগত ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে সমুন্নত রাখার জন্য জাতীয় পার্টি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে আসছে। সেই দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে জাতীয় পার্টি সব সময় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক। আগামী জাতীয় নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করতে চায়। তবে কোন প্রক্রিয়ায় বা কোন কৌশলে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে, সেটি আরও কিছুটা সময় পর জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।
বিজ্ঞাপ্তিতে আরও জানানো হয়, ‘জাতীয় পার্টি প্রত্যাশা করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য ও সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করবে। বিশেষ করে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করে নির্বাচনী মাঠে প্রচারণায় যাতে সকল রাজনৈতিক দল সমান সুযোগ পায়, সে ধরনের একটি ভয়ভীতি ও আতঙ্কহীন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারের সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে বলে বিশ্বাস করতে চায় জাতীয় পার্টি।’
সভায় প্রশাসনে দলীয় সমর্থক-কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়া, নির্বাচন কমিশনসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়, যাতে বাংলাদেশের সব মানুষ ভয়-ডরহীনভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন জানাতে পারে। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহারে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত চলা এই সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম নাসরিন জাহান রতনা, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, আরিফুর রহমান খান, জিয়া উল হক মৃধা, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম মিলন, সরদার শাহজাহান, মোবারক হোসেন আজাদ, ফখরুল আহসান শাহজাদা, মো. বেলাল হোসেন, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক।

সংবিধান সংস্কার, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব কমছেই না। প্রধান এই তিন ইস্যুতে বিএনপির বিপরীত অবস্থান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। কোনো পক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়। দলগুলোর এই অনড় অবস্থানে অনৈক্যের জালে
২৮ আগস্ট ২০২৫
ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা ৮ থেকে কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা কমানো হবে। পুরুষ বাইরে ৮ ঘণ্টা কাজ করলে, নারীদের জন্য তা ৫ ঘণ্টাই ইনসাফ।’
২২ মিনিট আগে
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ গুছিয়ে আনছে বিএনপি। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতি আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থীকে প্রস্তুত করে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
৩৪ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বামপন্থী দলগুলো। এ লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই করে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে দলগুলোর মধ্যে। নেতারা বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভিত্তি ধরে নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তাঁরা।
১৪ ঘণ্টা আগেসাখাওয়াত ফাহাদ, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বামপন্থী দলগুলো। এ লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই করে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে দলগুলোর মধ্যে। নেতারা বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভিত্তি ধরে নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তাঁরা।
বাম দলগুলো বলেছে, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রার্থী ঘোষণা করা হতে পারে। দলীয় প্রার্থীদের বাইরেও প্রগতিশীল, মুক্তমনা মানুষ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সদস্যদেরও নির্বাচনে সমর্থন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
দেশের নিবন্ধিত বামপন্থী দলগুলোর অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের অংশ হওয়ায় ৫ আগস্টের পর বামপন্থী রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নেতৃত্বাধীন ৬ দলের সমন্বয়ে গড়া বাম গণতান্ত্রিক জোট। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই জোটের পাশাপাশি অন্য ৭টি বামপন্থী দলের জোট ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা’, বাংলাদেশ জাসদ, ঐক্য ন্যাপ এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও গণসংগঠনের সমন্বয়ে বড় বামবলয় তৈরির চেষ্টা করছেন দলগুলোর শীর্ষ নেতারা।
বাম দলগুলোর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারা দেশের প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক, বামপন্থী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো এবং ব্যক্তিদের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। প্রার্থী বাছাইসহ সার্বিক নির্বাচনী পরিকল্পনার পেছনের অন্যতম ভিত্তি হতে যাচ্ছে দেশের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতাযুদ্ধে সরাসরি অংশ নেওয়া অনেক মুক্তিযোদ্ধাও এ বলয়ের আওতায় প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
সিপিবির ঘনিষ্ঠ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, দেড় শর বেশি আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি।
অন্যদিকে বাসদের নেতারা জানিয়েছেন, তাঁরা ইতিমধ্যে ১১০ জন প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা করেছেন। অন্যান্য বাম দল, সংগঠন, জোটের নেতারাও প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
নেতাদের কাছ থেকে জানা গেছে, দলগুলোর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা সমন্বয়ের লক্ষ্যে আগামী ৩১ অক্টোবর তাঁরা বৈঠকে বসতে পারেন। সে বিবেচনায় ৩০ অক্টোবরের মধ্যেই সব প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শেষ হবে। এরপর আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই প্রাথমিকভাবে কিছু আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দলগুলো বলছে, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার, শ্রমিক-কৃষকসহ শ্রমজীবী মানুষের অধিকার রক্ষায় ভূমিকা, দুর্নীতিমুক্ত ও জনসম্পৃক্ত রাজনীতির পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং এলাকায় গ্রহণযোগ্যতার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ৩০০ আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করব। প্রার্থীরা সবাই দলীয় না-ও হতে পারেন। তাঁদের মধ্যে স্থানীয় সমাজের পরিচিত বা প্রগতিশীল ব্যক্তিরাও থাকতে পারেন। মুক্তিযুদ্ধকে আমাদের নির্বাচনী পরিকল্পনার ভিত্তি বিবেচনা করা হয়েছে। কেউ কেউ ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানকে মুক্তিযুদ্ধের বিকল্প হিসেবে দেখাতে চায়। আমরা মনে করি, এটি অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষার পরিণতি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়িত হয়নি বলেই ’২৪ ঘটেছে।’
একাত্তরে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশ নেওয়া একাধিক মুক্তিযোদ্ধাও বামবলয়ের প্রার্থী তালিকায় থাকবেন বলে জানিয়েছেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সব সময় আমরা প্রাধান্য দেই। আর মুক্তিযুদ্ধকে বাদ দিয়ে গণতন্ত্রের সংগ্রাম কল্পনা করা যায় না।’ ’২৪ হলো মুক্তিযুদ্ধের অপরিণত আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ।’
জুলাই জাতীয় সনদে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-সংক্রান্ত সংবিধানের মূলনীতি অক্ষুণ্ন রাখার প্রশ্নে জোরালো অবস্থান নিয়েছে সিপিবি, বাসদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ। সংবিধানের চার মূলনীতিসহ ৭টি বিষয়ে সমাধান না হলে জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলগুলো। তাদের অভিযোগ, জুলাই সনদের মাধ্যমে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বিদ্যমান সংবিধানের চার মূলনীতি বাদ দেওয়াসহ মুক্তিযুদ্ধকে অপ্রাসঙ্গিক করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ কাফি রতনও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে দৃঢ় অবস্থানের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘দেশের সংবিধানের দার্শনিক ভিত্তি রচিত হয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ববর্তী ২৩ বছরের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। তা-ই প্রতিফলিত হয়েছে ১৯৭১-এর ১০ এপ্রিল গৃহীত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে। সংবিধানের প্রায়োগিক বিষয় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বহু বিষয়ে সংস্কার আনায় ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সংবিধানের দার্শনিক ভিত্তি এর চার মূলনীতি প্রশ্নে আপস করার কোনো সুযোগ নেই।’
প্রার্থী বাছাই প্রসঙ্গে সিপিবি সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকে মানে এমন দেশপ্রেমিক ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তিকে নিয়ে একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক ফ্রন্ট গঠনের চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক দল ছাড়াও থাকবে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, ছাত্র, শ্রমিক, খেতমজুর ও কৃষক সংগঠন, দলিত সম্প্রদায়, পাহাড়-সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ইত্যাদি। স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য নির্দলীয় ব্যক্তিদেরও প্রার্থী হিসেবে আমরা সমর্থন দেব।’
মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে অনুপ্রাণিত গণতন্ত্রমনা এই জোট গঠনের লক্ষ্যে বামপন্থী দল ও সংগঠনগুলোর যৌথ উদ্যোগে আগামী ১৪ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘জাতীয় সমাবেশ’ আয়োজনের কথা জানিয়েছেন বাম নেতারা। এ ছাড়াও আগামী ৩১ অক্টোবর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক কনভেনশন, ২৮ নভেম্বর গ্রাম ও শহরের শ্রমজীবী মানুষের কনভেনশন, ৫ ডিসেম্বর নারীসমাজের কনভেনশন এবং ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের আয়োজন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বামপন্থী দলগুলো। এ লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই করে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে দলগুলোর মধ্যে। নেতারা বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভিত্তি ধরে নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তাঁরা।
বাম দলগুলো বলেছে, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রার্থী ঘোষণা করা হতে পারে। দলীয় প্রার্থীদের বাইরেও প্রগতিশীল, মুক্তমনা মানুষ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সদস্যদেরও নির্বাচনে সমর্থন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
দেশের নিবন্ধিত বামপন্থী দলগুলোর অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের অংশ হওয়ায় ৫ আগস্টের পর বামপন্থী রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নেতৃত্বাধীন ৬ দলের সমন্বয়ে গড়া বাম গণতান্ত্রিক জোট। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই জোটের পাশাপাশি অন্য ৭টি বামপন্থী দলের জোট ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা’, বাংলাদেশ জাসদ, ঐক্য ন্যাপ এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও গণসংগঠনের সমন্বয়ে বড় বামবলয় তৈরির চেষ্টা করছেন দলগুলোর শীর্ষ নেতারা।
বাম দলগুলোর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারা দেশের প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক, বামপন্থী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো এবং ব্যক্তিদের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। প্রার্থী বাছাইসহ সার্বিক নির্বাচনী পরিকল্পনার পেছনের অন্যতম ভিত্তি হতে যাচ্ছে দেশের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতাযুদ্ধে সরাসরি অংশ নেওয়া অনেক মুক্তিযোদ্ধাও এ বলয়ের আওতায় প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
সিপিবির ঘনিষ্ঠ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, দেড় শর বেশি আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি।
অন্যদিকে বাসদের নেতারা জানিয়েছেন, তাঁরা ইতিমধ্যে ১১০ জন প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা করেছেন। অন্যান্য বাম দল, সংগঠন, জোটের নেতারাও প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
নেতাদের কাছ থেকে জানা গেছে, দলগুলোর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা সমন্বয়ের লক্ষ্যে আগামী ৩১ অক্টোবর তাঁরা বৈঠকে বসতে পারেন। সে বিবেচনায় ৩০ অক্টোবরের মধ্যেই সব প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শেষ হবে। এরপর আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই প্রাথমিকভাবে কিছু আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দলগুলো বলছে, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার, শ্রমিক-কৃষকসহ শ্রমজীবী মানুষের অধিকার রক্ষায় ভূমিকা, দুর্নীতিমুক্ত ও জনসম্পৃক্ত রাজনীতির পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং এলাকায় গ্রহণযোগ্যতার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ৩০০ আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করব। প্রার্থীরা সবাই দলীয় না-ও হতে পারেন। তাঁদের মধ্যে স্থানীয় সমাজের পরিচিত বা প্রগতিশীল ব্যক্তিরাও থাকতে পারেন। মুক্তিযুদ্ধকে আমাদের নির্বাচনী পরিকল্পনার ভিত্তি বিবেচনা করা হয়েছে। কেউ কেউ ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানকে মুক্তিযুদ্ধের বিকল্প হিসেবে দেখাতে চায়। আমরা মনে করি, এটি অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষার পরিণতি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়িত হয়নি বলেই ’২৪ ঘটেছে।’
একাত্তরে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশ নেওয়া একাধিক মুক্তিযোদ্ধাও বামবলয়ের প্রার্থী তালিকায় থাকবেন বলে জানিয়েছেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সব সময় আমরা প্রাধান্য দেই। আর মুক্তিযুদ্ধকে বাদ দিয়ে গণতন্ত্রের সংগ্রাম কল্পনা করা যায় না।’ ’২৪ হলো মুক্তিযুদ্ধের অপরিণত আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ।’
জুলাই জাতীয় সনদে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-সংক্রান্ত সংবিধানের মূলনীতি অক্ষুণ্ন রাখার প্রশ্নে জোরালো অবস্থান নিয়েছে সিপিবি, বাসদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ। সংবিধানের চার মূলনীতিসহ ৭টি বিষয়ে সমাধান না হলে জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলগুলো। তাদের অভিযোগ, জুলাই সনদের মাধ্যমে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বিদ্যমান সংবিধানের চার মূলনীতি বাদ দেওয়াসহ মুক্তিযুদ্ধকে অপ্রাসঙ্গিক করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ কাফি রতনও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে দৃঢ় অবস্থানের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘দেশের সংবিধানের দার্শনিক ভিত্তি রচিত হয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ববর্তী ২৩ বছরের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। তা-ই প্রতিফলিত হয়েছে ১৯৭১-এর ১০ এপ্রিল গৃহীত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে। সংবিধানের প্রায়োগিক বিষয় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বহু বিষয়ে সংস্কার আনায় ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সংবিধানের দার্শনিক ভিত্তি এর চার মূলনীতি প্রশ্নে আপস করার কোনো সুযোগ নেই।’
প্রার্থী বাছাই প্রসঙ্গে সিপিবি সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকে মানে এমন দেশপ্রেমিক ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তিকে নিয়ে একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক ফ্রন্ট গঠনের চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক দল ছাড়াও থাকবে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, ছাত্র, শ্রমিক, খেতমজুর ও কৃষক সংগঠন, দলিত সম্প্রদায়, পাহাড়-সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ইত্যাদি। স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য নির্দলীয় ব্যক্তিদেরও প্রার্থী হিসেবে আমরা সমর্থন দেব।’
মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে অনুপ্রাণিত গণতন্ত্রমনা এই জোট গঠনের লক্ষ্যে বামপন্থী দল ও সংগঠনগুলোর যৌথ উদ্যোগে আগামী ১৪ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘জাতীয় সমাবেশ’ আয়োজনের কথা জানিয়েছেন বাম নেতারা। এ ছাড়াও আগামী ৩১ অক্টোবর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক কনভেনশন, ২৮ নভেম্বর গ্রাম ও শহরের শ্রমজীবী মানুষের কনভেনশন, ৫ ডিসেম্বর নারীসমাজের কনভেনশন এবং ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের আয়োজন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

সংবিধান সংস্কার, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব কমছেই না। প্রধান এই তিন ইস্যুতে বিএনপির বিপরীত অবস্থান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। কোনো পক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়। দলগুলোর এই অনড় অবস্থানে অনৈক্যের জালে
২৮ আগস্ট ২০২৫
ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা ৮ থেকে কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা কমানো হবে। পুরুষ বাইরে ৮ ঘণ্টা কাজ করলে, নারীদের জন্য তা ৫ ঘণ্টাই ইনসাফ।’
২২ মিনিট আগে
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ গুছিয়ে আনছে বিএনপি। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতি আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থীকে প্রস্তুত করে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
৩৪ মিনিট আগে
সভায় প্রশাসনে দলীয় সমর্থক-কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়া, নির্বাচন কমিশনসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়, যাতে বাংলাদেশের সব মানুষ ভয়-ডরহীনভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন জানাতে পারে।
৫ ঘণ্টা আগে