Ajker Patrika

কম সংখ্যা দিয়েও পার্লামেন্ট কাঁপানো যায়: চুন্নু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩: ৪৩
কম সংখ্যা দিয়েও পার্লামেন্ট কাঁপানো যায়: চুন্নু

কম সংখ্যা দিয়েও পার্লামেন্ট কাঁপানো যায় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু। আজ রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে দলের সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চুন্নু বলেন, ‘আপনি যদি সংখ্যার দিকটা দেখেন, গত পার্লামেন্টে অপজিশনে অনেকেই ছিল, কিন্তু দিনের পর দিন সংসদ বর্জন করছে, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর বর্জন করেছে। অপজিশন লিডার পাঁচ বছরে মাত্র ১০ দিন পার্লামেন্ট এসেছিলেন। তাই ওই রকম সংখ্যা দিয়ে লাভ কী?’ 

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘১৩ জন যদি আমরা অ্যাক্টিভ থাকি, জনগণের পক্ষে কথা বলি, সোচ্চারভাবে সাহসের সঙ্গে জনগণের মনের কথা বলতে পারি, সংখ্যাটা বড় নয়, কম সংখ্যা দিয়েও জনগণের পক্ষে কথা বলা যায়! পার্লামেন্ট কাঁপানো যায়।’ 
 
তিনি বলেন, ‘নিশ্চয় আপনারা ইতিহাস জানেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যখন সংসদ নেতা ছিলেন, তখন একজন সংসদ সদস্যই মরহুম বাবু সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত সংসদ কাঁপিয়েছিলেন। মনে হয় আমরা বর্তমান পার্লামেন্টে যারা আছি ১১ জন, একজন ছাড়া অন্যরা কয়েকবার সংসদ সদস্য ছিলেন। পার্লামেন্টে কথা বলার মতো ক্যাপাসিটি আছে এবং আমরা আগে বলেছি। আশা করি এ দেশের জনগণের কথা বলা, সরকারের ল্যাকিংসগুলি ধরিয়ে দেওয়া, সরকারের দুঃশাসন, দুর্নীতি উচ্চকণ্ঠে গত পার্লামেন্টে বলেছি, এই পার্লামেন্টে নিশ্চয়ই বলব। এটা আমাদের ওপর জাতি ভরসা রাখতে পারে।’ 

আরেক প্রশ্নের জবাবে মজিবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনি যেটা বলছেন এটা বিএনপির কথা, যারা নির্বাচনে আসেনি। কিন্তু আপনি কি মনে করেন আমরা নির্বাচনে না আসলে, যদি দেশে নির্বাচন না হতো, তাহলে কী হতো? বিষয়টি একটু চিন্তা করলে উত্তর পেয়ে যেতেন।’ 

তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির ইতিহাস হলো নির্বাচন বর্জন নয়। কারণ নির্বাচন ছাড়া পার্লামেন্ট রাজনীতিতে ক্ষমতা অদল-বদলের আর কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশে যদি নির্বাচন না হয়, তাহলে এখানে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি কায়েম হওয়ার সুযোগ ছিল। আমি তো মনে করি আমরা দেশের মানুষের জন্য গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সঠিক কাজ করেছি।’ 

 ৭ তারিখের নির্বাচনে অংশ নিয়ে গণতন্ত্রকে বাঁচিয়েছেন, না কি সরকারকে বাঁচিয়েছেন, নাকি নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচিয়েছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে চুন্নু বলেন, ‘আপনি যেভাবে নেন। আমরা মনে করি গণতন্ত্রকে বাঁচিয়েছি।’ 

তিনি বলেন, ‘বর্তমান জাতীয় সংসদের আইন অনুযায়ী ৫০ জন সংরক্ষিত নারী আসনের মধ্যে হারাহারির (ভাগে) মধ্যে জাতীয় পার্টি দুটি আসন পাই। জাতীয় পার্টি পার্লামেন্টারি বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম ও ঠাকুরগাঁও জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি নুরুন নাহার দলের পরীক্ষিত নিবেদিত পুরোনো কর্মী। তাঁদের এবার দলের পক্ষ থেকে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় দিবসগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা রাখার আহ্বান জামায়াত আমিরের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ডা. শফিকুর রহমান। ফাইল ছবি
ডা. শফিকুর রহমান। ফাইল ছবি

আমাদের জাতীয় জীবনে জাতীয় দিবসগুলো একান্ত গুরুত্বের দাবিদার বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। জাতীয় দিবসের প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধা রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

আজ বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এ আহ্বান জানান।

ফেসবুক পোস্টে জামায়াত আমির বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের প্রিয় জন্মভূমি। জন্মভূমিকে নিয়ে প্রত্যেক নাগরিকই গর্ববোধ করে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সর্বজন স্বীকৃতি পেয়ে থাকে। আমাদের জাতীয় জীবনে জাতীয় দিবসগুলো এমনই একান্ত গুরুত্বের দাবিদার। সকলের উচিত এর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা। এর ব্যতিক্রম কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

ফেসবুকে জামায়াতের আমির নারীদের সম্মানহানি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিন্নমতের প্রতি আক্রমণ, নারীদের সম্মানহানি এবং প্রযুক্তি বা এআই-এর অপব্যবহার করে মানুষকে হেনস্তা করার যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিশেষ করে কেউ যখন ধর্মীয় পরিচয় বহন করে এমন অশালীনতায় লিপ্ত হন, তা আমাদের মূল্যবোধের ওপর বড় আঘাত।

রাজনৈতিক মতপার্থক্য মানেই শত্রুতা নয় উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে—“মুমিন কখনো কটূক্তিকারী বা অভিশাপকারী হতে পারে না” (তিরমিজি)। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’য়ালা নির্দেশ দিয়েছেন মানুষের সঙ্গে উত্তম ভাষায় কথা বলতে এবং একে অপরকে উপহাস না করতে। ভিন্নমতকে যুক্তি ও ভদ্রতার সঙ্গে মোকাবিলা করাই প্রকৃত মুসলিমের বৈশিষ্ট্য। গালিগালাজ বা চরিত্রহনন কোনো মুসলমানের—বা কোনো সভ্য নাগরিকের—হাতিয়ার হতে পারে না।’

তিনি আহ্বান করে বলেন, ‘আসুন, অনলাইনেও আমরা আমাদের ঈমান ও মর্যাদা বজায় রাখি। কারণ প্রতিটি শব্দই মহান আল্লাহর কাছে সংরক্ষিত হচ্ছে।

ঘৃণা নয়—যুক্তি ও শালীনতা দিয়ে সমাজ গড়ি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এনসিপির লক্ষ্য গণভোট, কয়টা আসন পাবে সে হিসাব করছে না: নাহিদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রথম ধাপে ১২৫টি আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে নির্বাচনকে কেবল আসন জেতার লড়াই হিসেবে নয়, বরং এটিকে জনগণের আকাঙ্ক্ষার ওপর একটি ‘গণভোট’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নেতৃত্বে আসা তরুণেরা শাপলা কলি প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে। নাহিদ ইসলাম ঢাকা–১১ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন।

এনসিপির নির্বাচনকালীন কৌশল ব্যাখ্যা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্বাচনে আসন জেতাই যদি তাঁদের মূল লক্ষ্য থাকত, তাহলে তাঁরা অবশ্যই কোনো না কোনো জোটে ভিড়তেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেছি না, এটা খুবই পরিষ্কার। সিট কয়টা পাব কি পাব না, সেটা বিবেচনায় রেখেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেছি না।’

তাঁর মতে, এবারের নির্বাচন হলো ‘গণভোট’, যেখানে ভোটের প্রধান প্রশ্ন হলো ‘হ্যাঁ অথবা না’ (সংস্কারের পক্ষে বা বিপক্ষে)। এই বার্তাটি জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্যই এনসিপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

গণ-অভ্যুত্থানের এই ছাত্রনেতা এনসিপি গঠনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর যদি ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের ও তরুণ প্রজন্মের সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী নিজেদের রাজনীতি পুনর্গঠন করত এবং দলের অভ্যন্তরে সংস্কার আনত, তাহলে এনসিপির জন্মের প্রয়োজন হতো না।’

তিনি অভিযোগ করেন, এনসিপি সাত মাস অপেক্ষা করার পরও বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো কোনো সমঝোতায় আসতে পারেনি। তারা নিজেদের দলাদলি–অন্তর্দ্বন্দ্বে ব্যস্ত ছিল, নিজেদের দলীয় এজেন্ডাকে প্রধান করে তুলেছে। এই ব্যর্থতার কারণেই এনসিপির জন্ম হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের প্রধান এজেন্ডা ছিল সংস্কার ও বিচার। অথচ অন্য রাজনৈতিক দলগুলো গণভোট ও সংস্কারপ্রক্রিয়া বাস্তবায়নের আলোচনা না করে কেবল নিজেদের দলীয় এজেন্ডা নিয়েই প্রচার চালাচ্ছে।’

নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন বলে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন জায়গায় এনসিপির পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। একই সঙ্গে, নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করে পোস্টারিং ও টাকা খরচের মতো অনিয়ম হচ্ছে।

অন্য দলগুলোর মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়েও সমালোচনা করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় মাফিয়াদের নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। ঋণখেলাপিকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে।’ তিনি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) এসব ঋণখেলাপি ও মাফিয়াদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। এ ছাড়া, তিনি বিএনপি–জামায়াত উভয় দলেই ‘অস্ত্রের মহড়া’র মতো সংস্কৃতির অভিযোগ করেন।

অন্যদিকে, নিজেদের প্রার্থী তালিকা নিয়ে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম যে আমাদের এই যে মনোনয়ন তালিকাটা হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক...সেখানে নারী-পুরুষ, সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সবকিছুর সমন্বয় আমরা করব।’ তিনি বলেন, মনোনীত কারও বিরুদ্ধে যদি কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ওঠে, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ন্যায়, নৈতিকতা আর ক্ষমাশীলতার পথই ভবিষ্যৎ গড়ে: তারেক রহমান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

আজ বাংলাদেশের প্রয়োজন একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ, যেখানে সবার জন্য মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব কথা লিখেছেন তিনি।

পোস্টে তারেক রহমান লেখেন, আজ বাংলাদেশের প্রয়োজন রাজনীতির চেয়েও বড় কিছু—একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ, যেখানে সবার জন্য মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে, যেখানে কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে, বিরোধী মত যেখানে হুমকি না হয়ে বরং গণতন্ত্রের অংশ হবে। যেখানে ভিন্ন মতের কারণে কাউকে নিপীড়িত হতে হবে না বা গুম হয়ে যেতে হবে না।

বিএনপি প্রতিশোধের রাজনীতি করে না উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লিখেছেন, বিএনপি আজ প্রতিশোধের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করছে, আমরা সমাধানের পথে বিশ্বাসী। আমরা এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, কোনো বাংলাদেশিকে রাষ্ট্রের ভয়ে বাঁচতে হবে না, তা সে সরকারের সমর্থক হোক বা বিরোধী।

১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়— মানবাধিকারই মানুষের দৈনন্দিন বেঁচে থাকার মৌলিক শর্ত মন্তব্য করে তারেক রহমান পোস্টে লেখেন, আমরা আবরার ফাহাদ, মুশতাক আহমেদ, ইলিয়াস আলী, সাজেদুল ইসলাম সুমন, সাগর-রুনি— আর অসংখ্য শহীদের গল্প মনে রাখি, যেন ভবিষ্যতে এমন নিপীড়ন আর দায়মুক্তি আর কখনো ফিরে না আসে।

১৬টা বছর ধরে বাংলাদেশ যেন একটা কালো মেঘের নিচে চাপা পড়ে ছিল বলে পোস্টে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি লেখেন, কেউ সেই অন্ধকারকে খুব তীব্রভাবে টের পেয়েছে, কেউ চুপচাপ বয়ে বেড়িয়েছে। কিন্তু যাদের রাজনৈতিক অবস্থান তখনকার পতিত সরকারের বিপরীতে ছিল, তাদের জন্য এই অন্ধকার ছিল নিত্যদিনের বাস্তবতা। রাতের বেলা দরজায় কড়া নাড়া, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন, ভয়কে সংস্কৃতি বানিয়ে ফেলা, আর অসংখ্য পরিবার অপেক্ষা করেছে সেই প্রিয়জনদের জন্য, যারা আর কোনো দিন ঘরে ফিরে আসেনি। এই বোঝা বিএনপির চেয়ে বেশি আর কেউ বহন করেনি।

২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানেও সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে বিএনপির ঘরেই জানিয়ে তিনি লেখেন, ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে সবচেয়ে বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, হেফাজতে মৃত্যু, মিথ্যা মামলা— সব জায়গায় বিএনপির নেতা-কর্মীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু অত্যাচারের শিকার শুধু বিএনপি ছিল না; ছাত্র, সাংবাদিক, লেখক, পথচারী, সাধারণ মানুষ— সবাই সেই ভয়ংকর পরিবেশের ক্ষত বয়ে বেড়িয়েছে, ন্যূনতম মানবাধিকার হিসেবে বিবেচিত মর্যাদা, নিরাপত্তা, মত প্রকাশের অধিকারের মতো মৌলিক সব বিষয়গুলো ছিল হুমকির মুখে।

পোস্টে তারেক রহমান তাঁকে ও তাঁর মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৌলিক অধিকার বঞ্চিত করার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি লেখেন, এই বছরগুলোতে আমাকেও কথা বলার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। ২০১৫ সাল থেকে আমার কথা বলার অধিকার সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নেওয়া হয়। দেশের কোনো পত্রিকা, টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়া যেন আমার কোনো বক্তব্য প্রকাশ না করা হয়, এমন নির্দেশনা জারি ছিল। তবুও এই চাপিয়ে দেয়া নীরবতার মধ্যেও আমি অধিকার, গণতন্ত্র আর মানুষের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই চালিয়ে গেছি, কারণ সত্যের স্পিরিটকে আদেশ দিয়ে থামানো যায় না। এই পুরো অন্ধকার সময়টায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ছিলেন আমাদের ধৈর্য ও প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় প্রতীক। মিথ্যা মামলা, কারাবাস, তাঁকে রাজনৈতিকভাবে নিঃশেষ করে দেওয়ার চেষ্টা- এসবই পুরো দেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এক কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিফলন। তবুও তিনি তাঁর গণতান্ত্রিক আদর্শ থেকে কখনো সরে যাননি। তাঁর বিশ্বাস একটাই— অধিকার সবার; ভয় দেখিয়ে দেশকে এগোনো যায় না।

এ প্রসঙ্গে তারেক রহমান আরও লেখেন, আমি ব্যক্তিগতভাবেও সেই দুঃসহ সময়ের সাক্ষী। আমার মা, যিনি দেশনেত্রী, নিজে সহ্য করেছেন তাঁর ছেলেকে জেলে নেওয়া, নির্যাতন করার মানসিক যন্ত্রণা। তাঁর আরেক ছেলেকে আমরা চিরতরে হারিয়েছি। বাংলাদেশের হাজারো পরিবারের মতো আমাদের পরিবারও ছিল লক্ষ্যবস্তু। কিন্তু ইতিহাসের একটা সত্য আছে- কষ্ট মানুষকে সব সময় তিক্ত করে না। কখনো কখনো কষ্ট মানুষকে আরও মহান করে তোলে। দেশনেত্রী, আমার মা- এটাই প্রমাণ করেছেন। তিনি শিখিয়েছেন—যে অন্যায় আমরা সহ্য করেছি, তা যেন আর কারও জীবনে না আসে। দেশকে বদলাতে হলে, ঘৃণার পথ নয়— ন্যায়, নৈতিকতা আর ক্ষমাশীলতার পথই ভবিষ্যৎ গড়ে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১১
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে এনসিপি। ছবি: স্ক্রিনশট
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে এনসিপি। ছবি: স্ক্রিনশট

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১২৫টি আসনের জন্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে জুলাই অভ্যুত্থানের পাটাতনে জন্ম নেওয়া নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

আজ বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ন টাওয়ারে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করে জানান, এটি প্রথম ধাপ। পরবর্তী সময়ে আরও আসনে মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। এ সময় তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হবে।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আলোচিত মুখ ও এনসিপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ঢাকা-১১ আসনে, সদস্যসচিব আখতার হোসেন রংপুর-৪ আসনে, ডা. তাসনিম জারা ঢাকা-৯ আসনে, ডা. তাজনূভা জাবীন ঢাকা-১৭ আসনে, ঢাকা-১৮ আসনে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং নরসিংদী-২ আসনে সারোয়ার তুষার।

এ ছাড়া সারজিস আলম মনোনয়ন পেয়েছেন পঞ্চগড়-১ আসনে। এই আসনে বিএনপির প্রার্থী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির এবং জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ইকবাল হোসেন। হাসনাত আবদুল্লাহ মনোনয়ন পেয়েছেন কুমিল্লা-৪ আসনে। এর বাইরে নোয়াখালী-৬ আসনে আব্দুল হান্নান মাসউদ এবং চট্রগ্রাম-৮ আসনে জোবাইরুল হাসান আরিফ এনসিপির মনোনয়ন পেয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত