Ajker Patrika

যেভাবে আলোচিত রাজনৈতিক মুখ হয়ে উঠলেন হাদি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৭
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি

রাজধানীতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদি। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদিকে গুলি করার ঘটনা ঘটল। সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা ও উত্তাপ ছড়িয়েছে। আজ জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা দুই দুর্বৃত্ত চলন্ত রিকশায় বসা হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়।

গুলিবিদ্ধ হাদিকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানিয়েছেন, ওসমান হাদিকে মাথায় ও বাম কানের নিচে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়।

ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক (আরএস) ডা. মোশকাত আহমেদ নিশ্চিত করেন, গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান বিন হাদি বর্তমানে কোমায় আছেন এবং তাঁর অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর ও আশঙ্কাজনক। প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে তাঁর চিকিৎসায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। হাদির সঙ্গী ও সমর্থকেরা জরুরি ভিত্তিতে ‘বি নেগেটিভ’ রক্তের সন্ধান করছেন।

হাদির ওপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। সরকারপ্রধানের দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টা এই সহিংস হামলাকে ‘নির্বাচনী পরিবেশে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য’ ও ‘দেশের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক অঙ্গনের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি আহত ওসমান হাদির সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে তদারকির নির্দেশ দিয়েছেন।

একই সঙ্গে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ, প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্য গ্রহণ, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা এবং হামলার পেছনে কোনো সংগঠিত পরিকল্পনা থাকলে তা উন্মোচনের জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।

হামলা ও হাদির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড

পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম জানান, জুমার নামাজের পর বেলা ২টা ২৫ মিনিটে বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় তিনটি মোটরসাইকেলে আসা হামলাকারীরা হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়।

হাদির সহকর্মীরা জানান, জুমার নামাজের পর মসজিদে তাদের লিফলেট বিতরণ ও জনসংযোগ কর্মসূচি ছিল। এরপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলোচনার পরিকল্পনা ছিল। এর মধ্যেই হামলার খবর আসে।

উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে হাদি তাঁর ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি ফোন নম্বর থেকে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে হত্যার এবং ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানান। তিনি ওই পোস্টে আওয়ামী লীগের ‘খুনি’ সমর্থকদের নজরদারির অভিযোগ এনেছিলেন।

আলোচিত রাজনৈতিক মুখ ওসমান হাদি

জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনের অন্যতম পরিচিত মুখ ওসমান হাদি। রাজনৈতিক অবস্থান এবং তীব্র ভাষায় বক্তব্যের জন্য তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রায়ই আলোচনায় উঠে আসেন।

শরীফ ওসমান বিন হাদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকার জন্য তিনি পরিচিতি পান।

হাদির গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটিতে। বাবা ছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষক। নেছারাবাদ কামিল মাদ্রাসায় হাদির শিক্ষাজীবন শুরু। পরে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

এক সময় ইংরেজি শেখার কোচিং সেন্টার সাইফুর’স এ শিক্ষকতা করেছেন হাদি। বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব স্কলারস নামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি শিক্ষকতা করেন বলেও জানা যায়।

মাদ্রাসায় পড়ালেখা করায় এবং ভাষা ও পোশাকের কারণে শিবির বা হিজবুত তাহরীরের কর্মী সন্দেহে ক্যাম্পাস, শ্রেণিকক্ষসহ বিভিন্ন স্থানে তাঁকে সন্দেহ ও হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে বলে একাধিকবার বলেছেন হাদি।

তবে তিনি ও তাঁর সহকর্মীদের দাবি, জুলাই অভ্যুত্থানের আগে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না হাদি; তিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কাজ করতেন, একাধিক বইও লিখেছেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ওসমান হাদির হাত ধরে গড়ে ওঠে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘ইনকিলাব মঞ্চ’। ‘সব ধরনের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ’ সংগঠনটির ঘোষিত লক্ষ্য।

এবারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে শিবির নেতৃত্বাধীন প্যানেল থেকে ভোট করে ইনকিলাব মঞ্চের ফাতিমা তাসনিম জুমা মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সোচ্চার ওসমান হাদি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর বলেন, ‘এই রায় পুরো পৃথিবীর জন্য নজির স্থাপন করেছে।’

গত জুলাইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাদি বলেছিলেন, বিএনপি যদি ‘পুরোনো ধারায়’ রাজনীতি করে ক্ষমতায় আসে, তবে তারা দুই বছরও ক্ষমতায় টিকতে পারবে না।

বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনীরও সমালোচনা করেছেন হাদি। এর বাইরে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা, সংস্কার প্রশ্নে সমঝোতামূলক মনোভাব এবং দৃশ্যত পরিবর্তনের ঘাটতির সমালোচনা করে একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব করেছিলেন।

চলতি বছর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ডাকা ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিতে হামলার পর হাদি গোপালগঞ্জ জেলা ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তীব্র ভাষায় বক্তব্য দেন। তাঁর বক্তব্যের ভাষা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। বিতর্কের মুখে তিনি তাঁর শব্দচয়নকে ‘মুক্তির মহাকাব্য’ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে তাঁদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।

গত নভেম্বরে হাদি নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে বলেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি ফোন নম্বর থেকে তাঁকে ফোন এবং মেসেজ পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে, তাঁর বাড়িতে আগুন দেওয়া ও তাঁর মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে।

ওই পোস্টে তিনি লেখেন, আওয়ামী লীগের ‘খুনি’ সমর্থকেরা তাঁকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখছে। ‘জীবননাশের আশঙ্কা’ সত্ত্বেও তিনি ‘ইনসাফের লড়াই’ থেকে পিছিয়ে যাবেন না।

মতিঝিল, শাহজাহানপুর, পল্টন, রমনা ও শাহবাগ থানা এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন হাদি। সম্প্রতি ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় তৎপর হয়েছিলেন তিনি। প্রতি শুক্রবারে জনসংযোগ করতেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফ্যাসিবাদের দোসরেরা নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে: গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফ্যাসিবাদের দোসরেরা নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে: গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট

শরীফ ওসমান হাদীকে গুলিবর্ষণের ঘটনায় তফসিল ঘোষণার পরপরই ফ্যাসিবাদের দোসরেরা নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট।

আজ শুক্রবার জুলাই অভ্যুত্থান ও সংস্কারের আদর্শ ধারণকারী তিন দলীয় গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট—জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও জোটের মুখপাত্র মো. নাহিদ ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু—যৌথ বিবৃতিতে এমন অভিযোগ করেন।

নেতারা বলেন, তফসিল ঘোষণার পরপরই ফ্যাসিবাদের দোসরেরা নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় জুমার নামাজের পর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা ও ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাজনৈতিক ভিন্নমত দমনে হামলা ও সন্ত্রাস কোনো সভ্য সমাজে বরদাশতযোগ্য নয়।

নেতারা আরও বলেন, হাদীর ওপর সশস্ত্র হামলা গণতন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা ও নাগরিক নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আঘাত। এ ঘটনা প্রমাণ করে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়েছে। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের সক্ষমতায় বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের পেছনে শক্তিশালী গডফাদারদের আশ্রয়-প্রশ্রয় থাকায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

তাঁরা হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

নেতারা আরও বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব প্রার্থীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে যেকোনো সহিংসতা এ মুহূর্তে অগ্রহণযোগ্য। জনগণের নিরাপত্তা ও প্রার্থীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত না হলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। দোষীরা যে-ই হোক, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রার্থীর ওপর প্রকাশ্যে গুলি নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে: গোলাম পরওয়ার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ফাইল ছবি
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ফাইল ছবি

ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদীর ওপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, এমপি প্রার্থীর ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানোর ঘটনা নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমনটি জানান তিনি।

বিবৃতিতে গোলাম পরওয়ার বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই একজন অন্যতম জুলাই যোদ্ধা এবং এমপি প্রার্থীর ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানোর ঘটনা নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এটি ভীতি সৃষ্টির সুস্পষ্ট অপচেষ্টা বলেই প্রতীয়মান হয়।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, ‘আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি, হামলাকারীদের অবিলম্বে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে হবে, ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ জরুরিভাবে পর্যালোচনা করতে হবে এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সব প্রার্থী, দলীয় কর্মী ও সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তায় কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।’

হামলাটি পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তির নির্বাচন বানচালের কোনো সুপরিকল্পিত চক্রান্ত কি না, সরকারকে তাও গভীরভাবে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান তিনি।

পরওয়ার বলেন, ‘ওসমান হাদী গত ১৩ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক স্ট্যাটাসে জানান, ৩০টি বিদেশি নম্বর থেকে কল ও টেক্সট করে তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে। দেশবাসীর কাছে এটা পরিষ্কার, প্রশাসন তাঁর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যা নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে গুরুতর অবহেলার শামিল। আমরা প্রশাসনের এ দায় এড়ানোর নিন্দা জানাই।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘এ ধরনের বর্বর হামলা দেশের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিপর্যস্ত করে। আমরা আশা করি, সরকার ও প্রশাসন ঘটনাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করবে। পাশাপাশি আমি হাদীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি এবং তাঁর পরিবার ও সহকর্মীদের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা তারেক রহমানের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫৫
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় তীব্র ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘সারা দেশে গণতন্ত্রের পক্ষে যত মানুষ আছে, আমাদের সবার উচিত হবে, এ ঘটনার তীব্র ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানানো। এই নৃশংস ঘটনার আমি তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাচ্ছি।’

বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রধান শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘পাশাপাশি ছাত্রদলসহ দলের সবার প্রতি আহ্বান করছি, সরকারকে বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করা, যেন তারা সুষ্ঠু তদন্ত করে দুষ্কৃতকারীকে খুঁজে বের করতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদিকে গুলি গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় সরাসরি আঘাত: এনসিপি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ০৫
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি এই হামলাকে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার হওয়া গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার ওপর ‘সরাসরি আঘাত’ বলে মন্তব্য করেছে। গুরুতর আহত শরীফ ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছে এনসিপি।

এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব এবং মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই ন্যক্কারজনক হামলা দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং আসন্ন নির্বাচনী পরিবেশের ভঙ্গুরতা সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে এনসিপি বিশেষ উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, শরিফ ওসমান হাদি হামলার আগেই প্রকাশ্যে হুমকির কথা জানালেও তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টি কার্যালয়ের সামনে বারংবার ককটেল হামলা এবং একজন প্রার্থী হুমকি পাওয়ার পরেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের এই ব্যর্থতাকে ‘দায়িত্বহীনতা, অদক্ষতা ও উদাসীনতার নগ্ন উদাহরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে দলটি।

জাতীয় নাগরিক পার্টি তাদের বিবৃতিতে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগ জনগণের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলেছে, এবং তাদের অবশিষ্ট সন্ত্রাসী বাহিনী এখনো সক্রিয়ভাবে দেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। সরকার যদি অবিলম্বে আওয়ামী লীগের এই সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা না করে, তবে তারা আবারও গণতান্ত্রিক উত্তরণকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং দেশকে সহিংস অরাজকতার দিকে ঠেলে দেবে।

দলটি দৃঢ়ভাবে জানিয়েছে, এখন গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর একে অপরকে দোষারোপ করে রাজনৈতিক লাভ তোলার সময় নয়, বরং প্রকৃত অপরাধী ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করার সময়। তারা সতর্ক করে বলেছে, গণ-অভ্যুত্থানের শক্তি বিভক্ত হলে ‘পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ও দেশবিরোধী চক্র’ সুযোগ নেবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি দেশের সব গণতান্ত্রিক শক্তি ও আপামর জনগণকে সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং যেকোনো হুমকি উপেক্ষা করে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকার ঘোষণা দিয়েছে।

এনসিপি অবিলম্বে এই হামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত, হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, হুমকির উৎস শনাক্ত করা-সহ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান এবং সব প্রার্থী ও নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত