Ajker Patrika

ড. ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জন, পরিস্থিতি নিয়ে যা বলছে রাজনৈতিক দল ও উপদেষ্টারা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ মে ২০২৫, ১৬: ০১
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা এখন চরমে। পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। সর্বশেষ সংযোজন হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের কথা ভাবছেন—এমন খবর তোলপাড় তুলেছে। এই গুঞ্জন এমন এক সময়ে উঠল, যখন অন্তর্বর্তী সরকারের ‘বিতর্কিত উপদেষ্টাদের’ অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ আসছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নির্বাচন ও করিডর নিয়ে সেনাপ্রধানের অবস্থান। যদিও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেই সাক্ষাতে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা তিনজনই জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম মুখ। সাক্ষাৎ শেষে নাহিদ ইসলাম গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন, মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন—এমন খবর পেয়েই তিনি দেখা করতে গিয়েছিলেন।

এই গুঞ্জনের পরপরই দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত নানাভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে। সব পক্ষ থেকে দেশের ‘সংকটপূর্ণ পরিস্থিতির’ কথা উল্লেখ করে ঐক্যের ডাক দেওয়া হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার জন্য প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল রাতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীমের আহ্বানে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ পাঁচটি দলের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পাল্টাপাল্টি অপসারণের দাবিতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে

গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু ‘বিতর্কিত উপদেষ্টা’কে সরানোর দাবি তুলেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত কয়েকজন উপদেষ্টা, যাদের বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে, এমন উপদেষ্টাদের সরিয়ে দেওয়ার দাবি আমরা তুলেছিলাম।’ তিনি বিশেষ করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে অভিযোগ করে তাঁকেও অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এর আগে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকার রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। ১৪ মে থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর দাবিতে এই আন্দোলন শুরু হয়। পরে সেই আন্দোলন এই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে রূপ নেয়। ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার আদেশ চ্যালেঞ্জ করে করা রিট উচ্চ আদালত খারিজ করার পর ইশরাক আন্দোলন স্থগিত করেছেন। তবে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি থেকে তিনি সরেননি।

এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একজন শীর্ষ নেতা অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টাকে ‘বিএনপির মুখপাত্র’ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা বিচার বিভাগে বিএনপির হস্তক্ষেপের অভিযোগও তুলেছেন। তাঁরা নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে কর্মসূচিও পালন করেছেন।

উপদেষ্টাদের মন্তব্য ও আত্মপক্ষ সমর্থন

এই ডামাডোলের মধ্যেই স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ গতকাল ফেসবুকে একটি বিস্ফোরক স্ট্যাটাস দেন। তিনি লেখেন, ‘বিএএল, নর্থ ও দিল্লি জোটভুক্ত হয়ে যে কুমির ডেকে আনছেন তা আপনাদেরকেই খাবে।’ বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘নর্থ’ বলতে সাধারণত ক্যান্টনমেন্ট বোঝানো হয়। ‘বিএএল’ হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংক্ষিপ্ত রূপ। আসিফ আরও যোগ করেন, ‘গণতান্ত্রিক রূপান্তর আর এদেশের মানুষের ভাগ্য কোনোটাই ইতিবাচক পথে যাবে না আরকি। স্বপ্ন দেখে স্বপ্নভঙ্গের কষ্টই বোধ হয় এদেশের ভাগ্য।’

অন্যদিকে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগের যেকোনো বিভাজনমূলক বক্তব্য ও শব্দচয়নের কারণে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘ব্যক্তির আদর্শ, সম্মান ও আবেগের চেয়ে দেশ বড় দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য অনিবার্য।’ তিনি অভ্যুত্থানের সব শক্তির প্রতি সম্মান ও সংবেদনশীলতা রেখে কাজ করার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের শত্রুরা ঐক্যবদ্ধ ও আগ্রাসী। সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে।’

অভ্যুত্থানের ঐক্য ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নবগঠিত দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমরা সবাই এক হয়েছিলাম বলে দীর্ঘ দেড় যুগের শক্তিশালী ফ্যাসিবাদকে তছনছ করতে পেরেছিলাম। আমরা খণ্ডবিখণ্ড হলে পতিত ফ্যাসিবাদ ও তার দেশি-বিদেশি দোসরেরা আমাদের তছনছ করার হীন পাঁয়তারা করবে।’ তিনি দেশ ও জাতির স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকার ওপর জোর দেন।

গণ-অভ্যুত্থানের আরেক মুখ বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা আজ ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, ‘দেশ কোনো ধরনের রাজনৈতিক ঐক্যের পথে নাই। এই ঐক্য ভেঙে গেছে গত সেপ্টেম্বর, অক্টোবরের দিকেই। খোলসটা ছিল একরকমভাবে। বর্তমানে খোলসটাও খুলে পড়ছে, তাই অনেকে অবাক হচ্ছে। সব পক্ষ যদি কিছুটা পরিপক্বতা দেখাত, শহীদদের জীবনের কথা ভেবে কিছুটা ছাড় দিত তাহলে অন্তত ইলেকশনের আগপর্যন্ত দেশটা স্ট্যাবল থাকত। দেশটা স্ট্যাবল না হতে দেওয়ার জন্য অনেক ধরনের ফোর্স ভেতরে সক্রিয় আছে। আর জুলাই এর সকল লড়াকু শক্তিই ক্ষমতা প্রশ্নে অস্থির হয়ে গেছে। যেন গোটা দেশটাই একটা খেলামাত্র।’

রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, ধৈর্য ও টেবিলে ঐকমত্যের রাজনীতিই দেশকে একটা গণতান্ত্রিক উত্তরণের দিকে নিতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

উদ্ভূত পরিস্থিতির পুরো দায় অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর দিয়েছেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ করা যাচ্ছে যে জন–আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সরকারের যা করণীয়, তা যথাসময়ে না করে চাপের মুখে করার সংস্কৃতি ইতিমধ্যেই সরকারের সক্ষমতা ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে এবং অন্যদেরও একই প্রক্রিয়ায় দাবি আদায়ের ন্যায্যতা প্রদান করেছে। এই অনভিপ্রেত ও বিব্রতকর পরিস্থিতির দায় পুরোটাই সরকারের।’

খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানান, সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা বিষয়গুলো বিএনপির আগের প্রস্তাব ও পরামর্শের মতো উপেক্ষিত হলে অনিবার্যভাবেই অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে কি না, তা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হবেন তাঁরা।

বিএনপি মনে করছে, মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথের দাবিতে ১৪ থেকে ২২ মে পর্যন্ত ৯ দিন রাজধানীতে কর্মী–সমর্থকদের টানা উপস্থিতির মাধ্যমে মাঠের রাজনীতিতে শক্তি দেখাতে পেরেছে তারা। এর মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও বেশি চাপে ফেলা গেছে। এ ছাড়া ইশরাককে মেয়র পদে শপথের পক্ষে উচ্চ আদালতের রায়কেও ‘জয়’ হিসেবে দেখছেন বিএনপির নেতারা। তাঁরা এবার আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে ঈদুল আজহার পর রাজপথে কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে চান।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন ও উপদেষ্টাদের নিয়ে চলমান বিতর্ক অন্তর্বর্তী সরকারের স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছে। জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত ঐক্যে ফাটল ধরলে তা দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মির্জা ফখরুলের সঙ্গে মিসরের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে আজ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মিসরের রাষ্ট্রদূত ওমর ফাহমি। ছবি: বিএনপির মিডিয়া সেল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে আজ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মিসরের রাষ্ট্রদূত ওমর ফাহমি। ছবি: বিএনপির মিডিয়া সেল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মিসরের রাষ্ট্রদূত ওমর ফাহমি। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আসেন মিসরের রাষ্ট্রদূত। এর পর বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব হুমায়ুন কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ১৩
বিদেশ সফর শেষে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদেশ সফর শেষে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামায়াতে ইসলামী জোটবদ্ধভাবেই আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে উল্লেখ করে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে আমরা, দেশবাসী সবাই নির্বাচন দেখতে চাই।’

আজ মঙ্গলবার সকালে ওমরাহ পালন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও তুরস্ক সফর শেষে ঢাকায় ফিরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।

নিজের সফরের বিষয়ে শফিকুর রহমান জানান, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্কে বিভিন্ন স্তরের সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা এবং ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এ ছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বলে তিনি জানান।

নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপিও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেনি। আমি দেখেছি, ২৩৭টি আসনে তাঁরা তালিকা প্রকাশ করেছেন, আর প্রশ্নোত্তরে বলেছেন, এটি চূড়ান্ত নয়। এর মধ্যেও পরিবর্তন আসতে পারে। আমরা কিন্তু এক বছর আগেই এই তালিকা আঞ্চলিকভাবে জানিয়ে দিয়েছি। চূড়ান্ত তালিকাটা সময়মতো আমরা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ঘোষণা করব। যেহেতু আমরা একা ইলেকশন করব না, আরও অনেককে আমরা ধারণ করব, দেশ এবং জাতির স্বার্থে সব দিক বিবেচনা করেই চূড়ান্তভাবে যথাসময়ে আমরা প্রার্থী ঘোষণা করব।’

প্রবাসীদের ভোটার করার উদ্যোগের জন্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানান ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এই প্রথমবারের মতো ব্যাপকভিত্তিক আমাদের প্রবাসীদের ভোটার করার উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু সেখানে কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। ভোটার হওয়ার জন্য অক্টোবরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এ জন্য যে সফটওয়্যার ইনস্টল করা হয়েছে, তা প্রোপারলি ফাংশন করে নাই, যার কারণে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও অনেকেই ভোটার হতে পারেননি। আমাদের দাবি থাকবে নির্বাচন কমিশনের কাছে কমপক্ষে আরও ১৫ দিন এই সময় বর্ধিত করা হোক এবং যে জটিলতাগুলো রয়েছে, সেগুলো সহজ করে তাদের ভোটার হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হোক।’

দলগুলোর মতানৈক্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াত আমির বলেন, ‘আমাদের মধ্যে মতানৈক্য থাকবে, তবে দোয়া করেন মতবিরোধ যেন না হয়। মতের ভিন্নতা থাকবে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। সব দল তো এক দল নয়। সবগুলো দল ভিন্ন ভিন্ন। তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতেও পার্থক্য থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আমরা সবার মতকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখি। তবে আমরা নিজেরা যে মতটা প্রকাশ করি, আমরা চেষ্টা করি চিন্তাভাবনা করে জাতির স্বার্থেই সে মতগুলো প্রকাশ করার। অতএব মতানৈক্য এটা ডেমোক্রেসির সৌন্দর্য। এটার জন্য এখানে বিরোধ লেগে গেছে অথবা দেশ একেবারে অস্থির হয়ে গেছে, আমরা এইটা চিন্তা করতে রাজি নই।’

শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘সরকার অনুরোধ করেছে, এক সপ্তাহ সময়ের ভেতরে রাজনৈতিক দলগুলা বসে যদি একটা কনসেনসাসে (ঐকমত্যে) পৌঁছাতে পারে, সরকারের জন্য এটা ভালো এবং আমরাই সবার আগে আমাদের নায়েবে আমিরের পক্ষ থেকে আহ্বান জানিয়েছি যে আসুন, আমরা খোলামেলা আলোচনা করে একটা সমাধানে পৌঁছাই দেশ এবং জাতির স্বার্থে। আমরা আশা করি, অন্যরা আমাদের এই আহ্বানে সাড়া দেবেন।’

জামায়াত আমিরকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন দলের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান, আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মা’ছুম, রফিকুল ইসলাম খান, হামিদুর রহমান আযাদ, আবদুল হালিম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫১
সোমবার আসলাম চৌধুরীর অনুসারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সোমবার আসলাম চৌধুরীর অনুসারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণাকে কেন্দ্র করে জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ায় বিএনপির চার নেতাকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, সোমবার সন্ধ্যার পরে দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলাধীন সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কদমরসুল, ভাটিয়ারী বাজার, জলিল গেট এলাকায় সহিংসতা, হানাহানি, রাস্তা অবরোধসহ নানাবিধ জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ায় (আসলাম চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত) সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আলাউদ্দিন মনি, সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বাবর, সীতাকুণ্ড পৌরসভার আহ্বায়ক মামুন, যুবদলের সোনাইছড়ির সাধারণ সম্পাদক মমিন উদ্দিন মিন্টুকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এর আগে চট্টগ্রামের ১৬ আসনের মধ্যে ১০টিতে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন (চেয়ারম্যান), চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার আলমগীর, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড)-এ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী সালাউদ্দিন, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে চট্টগ্রাম বিভাগে বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও) আসনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম-১০ (পাহাড়তলী-হালিশহর) আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ এনামুল হক, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম, চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নাসীরুদ্দীন-জারার নেতৃত্বে এনসিপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও তাসনিম জারা।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও তাসনিম জারা।

মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে প্রধান করে ১০ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। কমিটির সেক্রেটারি করা হয়েছে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারাকে।

সোমবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছে দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম মাহির, খালেদ সাইফুল্লাহ ও এহতেশাম হক; যুগ্ম সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল আমিন, আলাউদ্দীন মোহাম্মদ, অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা ও অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর; যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাইফুল্লাহ হায়দার এবং যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলাম।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে এই কমিটি এনসিপির সার্বিক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা, প্রার্থী বাছাই, মাঠপর্যায়ের সমন্বয়, আইনি ও প্রশাসনিক কার্যক্রম, মিডিয়া ও প্রচারণা এবং প্রশিক্ষণ ও মনিটরিংয়ের কাজ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত