Ajker Patrika

তৈমুরের কবরের পাশে অঝোরে কাঁদলেন মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ২১: ৫৯
তৈমুরের কবরের পাশে অঝোরে কাঁদলেন মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির প্রয়াত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. তৈমুর রহমানের কবর জিয়ারতের সময় কেঁদে ফেলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার বিকেল ৩টায় সদর উপজেলার রুহিয়া সালেহীয়া দারুসুন্নাত ফাজিল মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থানে সদ্য প্রয়াত বিএনপির জেলা সভাপতির কবর জিয়ারত করেন তিনি। 

এ সময় সদ্য প্রয়াত নেতার স্মৃতিচারণ করে ফখরুল বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান ছিলেন একজন গণমানুষের নেতা। তিনি অসহায় নিপীড়িত মানুষের অধিকারের জন্য সব সময় সংগ্রাম করেছেন। এ লড়াই করতে গিয়ে তিনি মারা গেলেন। যখন তিনি অসুস্থ হলেন-সংবাদটি আমি কারাগারে বন্দী অবস্থায় জানতে পারি। তিনি চিকিৎসা নিতে গেলেন ভারতে। এ সময় আমার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন। কিন্তু ফিরে এলেন, তবে লাশ হয়ে।’ এ কথা বলতেই তিনি অঝোরে কেঁদে ফেলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

বিএনপি মহাসচিব দলীয় সভাপতির কবর জিয়ারত শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় বলেন, ‘সারা দেশের মানুষ আজ এক ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছেন। মানুষের অধিকার বলতে কিছু নেই, গণতন্ত্র বলতে কিছু নেই, মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠা করতে লড়াই-সংগ্রাম করছি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে অবশ্যই এ সংগ্রামে দেশের মানুষ জয়ী হবেন।’ 

উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রশাসন আপনাদের নির্যাতন করে। আপনারা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন, এখনো হচ্ছেন। বিভিন্ন মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে হয়। তারপরও আপনারা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন।’ 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দমন-পীড়নকারী এ ফ্যাসিবাদী ক্ষমতাসীনদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এসব নির্যাতনের কারণে মানুষ হয়তো প্রতিরোধ সৃষ্টি করে উঠতে পারছে না, কিন্তু একদিন দেখবেন ঠিকই এ মানুষই দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করে দাঁড়াবেন। পৃথিবীতে কোনো দিন স্বৈরাচারী-ফ্যাসিবাদী সরকার টিকতে পারেনি। হিটলারের মতো ফ্যাসিবাদী ধ্বংস হয়ে গেছে। সে পুরোনো যুগের ফেরাউন, নমরুদ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। মানুষের পক্ষে না দাঁড়ালে, তাঁদের কল্যাণে কাজ না করলে, কেউ কোনো দিন ক্ষমা পায় না। এই স্বৈরাচারী সরকারও কোনো দিন ক্ষমা পাবে না।’ 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন—জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েস প্রমুখ। 

এরপর তিনি বিকেল ৫টায় ঠাকুরগাঁও পৌর কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত ইফতার মাহফিলে যোগ দেন। 

ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল বলেন, ‘চরম ফ্যাসিবাদী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। আজকে যেটা প্রয়োজন, সেটা হলো জাতীয় ঐক্য। সমস্ত জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবে। এটাই আজকে আমাদের মুক্তির একমাত্র পথ। এখানে কোনো ব্যক্তি বা দল বড় কথা নয়। আজকে আমাদের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করাই সবচেয়ে বড় বিষয়।’ 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংবিধানের নিয়মে কোনো কাজ বর্তমানে পালন করা হয় না। সকলে অবশ্যই লক্ষ্য করেছেন-গোটা দেশ এখন দুর্নীতিতে সয়লাব হয়ে গেছে। আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্রগুলোর প্রত্যেকটিকে দলীয়করণ করা হয়েছে। যার ফলে আজকে মানুষ একটা অসহায় অবস্থার মধ্যে আছে। তিনি আইনের শাসন থেকে বঞ্চিত। বিচার ব্যবস্থায় দলীয়করণ করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দলীয়। সার্বিকভাবে সমস্ত রাষ্ট্রকে একটা দলীয় রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। নির্বাচনকে একটা প্রহসনে পরিণত করেছে। নির্বাচনকে সবাই এখন বলে-ডামি নির্বাচন হয়েছে। তারা নিজেরাই এ নির্বাচন করেছে। বিরোধী দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপি নেতা তৈমুরের কবরের পাশে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অঝোরে কাঁদলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকাসংবিধান ও জনগণের অধিকার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৭১ সালের যে স্বাধীনতার চেতনা, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা, সেটা প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সংগ্রাম করেছি, লড়াই করেছি। গত প্রায় ২ যুগ ধরে আমাদের দেশে সংবিধানকে কাটছাঁট করে মানুষের অধিকার, ভোটের অধিকার, অন্নের অধিকার, বস্ত্রের অধিকার, তার বেঁচে থাকার অধিকার এবং মুক্ত পরিবেশে কথা বলার অধিকারকে কেরে নেওয়া হয়েছে। আজকে শাসকগোষ্ঠী এই আওয়ামী লীগ অতীতে যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন সমস্ত দলগুলোকে বন্ধ করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। আজকে আবার একই কায়দায় বাংলাদেশের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে চলেছে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে লড়াই করছি, সংগ্রাম করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, আরপিও সংশোধন অনুমোদন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাপা ও আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না: জি এম কাদের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জি এম কাদের। ফাইল ছবি
জি এম কাদের। ফাইল ছবি

জাতীয় পার্টি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন জি এম কাদের।

আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে বিএনপি-জামায়াতকে নিয়ে এ সরকার নির্বাচন করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘এখন নির্বাচন করতে গেলে কী হবে? কোনো নির্বাচন হবে না। যে নির্বাচনের জন্য আমরা শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ বলি, তাঁর বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নিয়েছিলাম। এই সরকার একই কাজ করছে এবং মনে হয়, একটা ঐকমত্য কমিশন করেছে। যেখানে দেশের অর্ধেক লোককে বাদ দিয়ে ঐক্য করার চেষ্টা চলছে।’

আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বাদ দিতে পারে না বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে বাদ দিতে হলে তাদের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করতে হবে। যারা খারাপ করেছে, তাদেরকে বাদ দিতে পারেন। কিন্তু দলকে কীভাবে বাদ দিতে পারেন বিচার ছাড়া?’

সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বললে জাপাকে নানা রকম ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে দাবি করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, দেশের মানুষ তাদেরকে ক্ষমা করবে না। শেখ হাসিনাকে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান সমর্থন দিয়েছিল। সমস্ত প্রতিষ্ঠান নিজের কবজায় করেও রাখতে পারেনি। দেশের মানুষ তাদেরকে লাথি দিয়ে ফেলে দিয়েছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ না দাবি করে জি এম কাদের বলেন, তাদের একটা দল আছে। এই সরকার দেশে গৃহযুদ্ধ বাধাতে চায় দাবি করে তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে কখনো এত খারাপ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল না।

জাতীয় পার্টির নিষিদ্ধের দাবিতে জামায়াতের চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে কাদের বলেন, তারা বলছে, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি হলো মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। জাতীয় পার্টি থাকলে তো তারা থার্ড পার্টি হতে পারবে না। সেই কারণে জাতীয় পার্টিকে বাদ দেওয়ার কথা বলছে।

বাংলাদেশে আজ গভীর সংকটে দাবি করে জি এম কাদের বলেন, আজকে দেশে কোনো বিনিয়োগ হচ্ছে না। যাঁরা ছোটখাটো ব্যবসা করতেন, সেটাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। লাখ লাখ মানুষ বেকার হচ্ছেন।

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনো এত খারাপ ছিল না বলেও মন্তব্য করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘কোনো কিছুর নিরাপত্তা নেই। মানুষের জীবনের যেমন নিরাপত্তা নেই, তেমনি বাড়িঘর, ব্যবসা-বাণিজ্য কোনো কিছুর নিরাপত্তা নেই। মানুষের বাড়িঘর লুটপাট করে নিচ্ছে। মহিলাদের অসম্মান করা হচ্ছে। আমরা যা খবর পাচ্ছি, প্রতিদিন খুন হচ্ছে মানুষ।’

দেশ দুর্ভিক্ষের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলেও দাবি করেন জাপার এ নেতা। তিনি বলেন, টিসিবির ট্রাকে যতজনের মালামাল থাকে, তারচেয়ে ১০ গুণ বেশি মানুষ সেখানে বসে থাকছেন।

জাপা মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, জাতীয় ঐকমত্যের অভাব দেশে বিভাজন তৈরি করছে। বর্তমান সরকার আগামী নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তাদের দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে শামীম হায়দার পাটোয়ারী আরও বলেন, সুষ্ঠু ভোটের জন্য দরকার নির্দলীয় বা সর্বদলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

এ সময় জাতীয় পার্টিকে ছাড়া নির্বাচনের চেষ্টা করা হলে তা প্রতিহতের ঘোষণা দেন মহাসচিব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, আরপিও সংশোধন অনুমোদন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নাম পাল্টে হলো জাতীয় ছাত্রশক্তি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের (বাগছাস) নাম বদলে ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আদর্শিক ও সহযোগী সংগঠন হিসেবে কাজ করবে ছাত্রশক্তি।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের জাতীয় সমন্বয় সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

ছাত্রসংগঠনটির নতুন নাম ঘোষণা করেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী। সভায় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আখতার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করেছিল। আর যেন কেউ গণরুম-গেস্টরুম বানাতে না পারে, সে জন্য ছাত্রসংসদকে সোচ্চার থাকতে হবে।

এ সময় জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা নিয়ে দলীয় অবস্থানও ব্যাখ্যা করেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পরিপূর্ণ নিশ্চয়তা পেলে তবেই স্বাক্ষর করবে এনসিপি।

আখতার হোসেন বলেন, জুলাই সনদে ‎স্বাক্ষর করার পর দুটা পক্ষ হয়ে গেছে। এক পক্ষ স্বাক্ষর প্রত্যাহার করতে চায়, আরেক পক্ষ কালি দিয়ে গেড়ে দিতে চায়।

আওয়ামী লীগ নানা শক্তির মধ্য দিয়ে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন আখতার।

এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, যে আওয়ামী লীগ চব্বিশে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, গুলি করেছে, ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করে গুম করেছে, আয়নাঘর তৈরি করেছে; তাদের বাংলাদেশে পুনর্বাসনের সুযোগ নেই। কেউ যদি পুনর্বাসনের চেষ্টা করে, জীবন দিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।

সভায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর সংস্কার নিয়ে মানুষের মধ্যে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল, আমাদের কনভেনশনাল (প্রথাগত) রাজনৈতিক দলগুলো সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এখনো সেই কাঙ্ক্ষিত সংস্কার আমরা আনতে পারিনি। সেই সংস্কারকাজকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব এই ছাত্রদের।’

দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম জানান, অল্প সময়ের মধ্যে সারা দেশের জেলা ও মহানগরে এনসিপির আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া শুরু হবে।

এ সময় দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

সারজিস বলেন, যাঁরা লোভ সংবরণ করতে পারেননি, তাঁদের এনসিপির মতো সংগঠনের প্রয়োজন নেই। এনসিপি ‘মাই ম্যানের’ পলিটিকস করবে না। যোগ্য ও পার্টির প্রতি বিশ্বস্তদের নেতৃত্বেই এগিয়ে যাবে দল।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে, যাঁরা স্বাক্ষর করেছেন, তাঁদের অনেকে এখন স্বাক্ষর প্রত্যাহারের চেষ্টা করছেন।’

অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্ররা কেন রাজনৈতিক দল গঠন করল—এর কারণ সম্পর্কে তুষার বলেন, যেহেতু অতীতে ছাত্র আন্দোলনের পর রাজনৈতিক দলগুলো বারবার ‘বিট্রে’ (প্রতারণা) করেছে, সে জন্য ছাত্ররা এখন নিজেরাই রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন।

নাম উল্লেখ না করে তুষার বলেন, ‘বাপ-ছেলে’ নিয়ে সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্য ‘অশ্লীল ও রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত’।

এনসিপির কাছ থেকে তাদের রাজনৈতিক শিষ্টাচার শেখা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

সভায় জাতীয় ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘আট মাসে আহ্বায়ক হিসেবে আমার অনেক ব্যর্থতা থাকতে পারে। কিন্তু আমি এই সময়ে কোনো কম্প্রোমাইজ (আপস) করি নাই। কোনো অপকর্মে থাকি নাই। এনসিপি গঠনের দুদিন আগে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আত্মপ্রকাশ হয়েছিল। ২৬ ফেব্রুয়ারি গঠনের পর আমাদের যেমন সফলতা আছে, তেমনি ব্যর্থতাও আছে। একটা সংগঠন পরিচালনার জন্য নিয়মিত ফান্ডিংয়ের প্রয়োজন হয়। আমি মাথা নিচু করে ক্ষমা চাচ্ছি, আমাদের যেসব জায়গায় কার্যক্রম চলছে, নিয়মিত ফান্ড সেখানে দিতে পারি নাই।’

ছাত্রশক্তি এনসিপির সহযোগী আদর্শিক সংগঠন হিসেবে কাজ করবে জানিয়ে আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘আমরা একটি স্বতন্ত্র সংগঠন হিসেবে কাজ করব। পরবর্তী নেতৃত্বে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা জানানো হবে।’

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।

রাকিব বলেন, ‘ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে আমাদের বিরুদ্ধে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, আমরা নাকি গেস্টরুম বা গণরুম করব। এটা ছিল নিছক মিথ্যাচার। গত এক বছরে একটি সংগঠন এসব মিথ্যাচার করে পার পেয়ে গেছে। আগামী ২০২৬-২৭ সালে আমরা প্রমাণ করব, ছাত্রদল নতুন ধারার ছাত্ররাজনীতির পথ তৈরি করেছে। ছাত্রদল গেস্টরুম বা গণরুম সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না। একদিন অবশ্যই ছাত্রসমাজ এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।’

এ সময় ছাত্রশক্তির নেতাদের উদ্দেশে রাকিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে আপনারা ছাড় দেবেন না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, আরপিও সংশোধন অনুমোদন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে নেদারল্যান্ডসের এনআইএমডি প্রতিনিধিদল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় সফররত নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর মাল্টিপার্টি ডেমোক্রেসির (এনআইএমডি) সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে দলটির যুগ্ম মহাসচিব হুমায়ুন কবির ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বৈঠকে অংশ নেন।

অন্যদিকে এনআইএমডির প্রোগ্রাম ও নলেজ অ্যাডভাইজার তাইউহ নেঙ্গে, হেড অব পজিশনিং হেলিন শ্রোয়েন প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, আরপিও সংশোধন অনুমোদন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ৩৬
ছবি: ফোকাস বাংলা
ছবি: ফোকাস বাংলা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব দেওয়া আবেগতাড়িত। সরকার এখানে শুধু প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে। রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না। সরকারের পক্ষে কেবিনেটের অনুমোদনে সেটা ইন অ্যাবসেন্স অব পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট সে আইনগুলো পাস করে থাকেন।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

গত সেপ্টেম্বরে জুলাই সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাব বাস্তবায়ন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতার মধ্যে বিশেষজ্ঞদের নতুন পরামর্শ প্রস্তাব সামনে এনেছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়, মৌলিক সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার একটি ‘সংবিধান আদেশ’ জারি করতে পারে। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। এরপর ওই আদেশ নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোট করা যেতে পারে।

সে সময় বিএনপিসহ কয়েকটি দল সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাবে দ্বিমত জানিয়েছিল। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী এটিকে সমর্থন করে। আর প্রস্তাবটি নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলেছিল, এ নিয়ে তারা দলের ভেতরে আলোচনা করবে।

আজ আলোচনা সভায় গণভোট নিয়েও কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘গণভোটের প্রস্তাব বিএনপিই দিয়েছে। নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। এই প্রস্তাবে দুটি রাজনৈতিক দল ছাড়া সবাই একমত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েই আমরা সিদ্ধান্ত নেব—জুলাই জাতীয় সনদের প্রজ্ঞাপন বা গেজেট নোটিফিকেশন কীভাবে করা যায়। কারণ, যেভাবেই হোক, সেটি শেষ পর্যন্ত জনগণের গণভোটের মাধ্যমেই আইনি রূপ পাবে।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) একটি রাজনৈতিক দল বলেছে, জনমতের চাপে বিএনপি গণভোট মেনে নিয়েছে। রাজনীতিতে মনে মনে সুখ অনুভব করলে অসুবিধা নেই। আমরা সেটাকেও স্বাগত জানাই। কিন্তু আমরা তো শুরু থেকেই বলে আসছি, জুলাই জাতীয় সনদ প্রণীত হয়েছে, স্বাক্ষরিত হবে এবং ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেটি সম্পন্ন হবে।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নতির পাশাপাশি আমাদের মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন। অন্যান্য সংস্কারের পাশাপাশি মানসিক সংস্কার দরকার। অন্যথায় সংস্কারকে বাস্তবে রূপ দেওয়া যাবে না।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ইউট্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান প্রমুখ।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

আসামিদের কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, আরপিও সংশোধন অনুমোদন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত