Ajker Patrika

শেখ মুজিবের ত্যাগকে স্বীকার করি, কিন্তু তিনি জাতির পিতা নন: নাহিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ৩১
মো. নাহিদ ইসলাম। ফাইল ছবি
মো. নাহিদ ইসলাম। ফাইল ছবি

মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমানের ত্যাগকে স্বীকার করে নিতে ইচ্ছুক, তবে তাঁকে জাতির পিতা হিসেবে মানতে নারাজ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘শেখ মুজিবের শাসনামলে ঘটে যাওয়া জাতীয় ট্র্যাজেডির কথাও আমরা স্মরণ করি। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতের একটি শাখা রাজ্যে পরিণত হয়।’

আজ শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ইংরেজিতে লেখা এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান জাতির পিতা নন। স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর ভূমিকা ও ত্যাগ আমরা স্বীকার করি। তবে তাঁর শাসনামলে ঘটে যাওয়া জাতীয় ট্র্যাজেডির কথাও আমরা স্মরণ করি। শেখ মুজিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতের একটি শাখা রাজ্যে পরিণত হয়। ১৯৭২ সালের জনবিরোধী সংবিধান চাপিয়ে দেওয়া হয়। লুটপাট, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ও একদলীয় বাকশাল স্বৈরশাসনের ভিত্তি স্থাপন করা হয়।

‘আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির মূলে রয়েছে মুজিব ও মুক্তিযুদ্ধ পূজা, যা জনগণের ওপর অত্যাচার, জাতিকে লুণ্ঠন ও নাগরিকদের প্রথম শ্রেণির ও দ্বিতীয় শ্রেণির মধ্যে বিভক্ত করার জন্য ব্যবহৃত একটি রাজনৈতিক মূর্তিপূজা। এটি গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে আধুনিক জমিদারির চেয়ে কম কিছু ছিল না। তবুও মুক্তিযুদ্ধ ছিল সব মানুষের সংগ্রাম।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, কয়েক দশক ধরে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে তার পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। জবাবদিহি ছাড়াই শাসন করেছে। দুর্নীতি ও দমনের প্রতিটি কাজকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য মুজিবের নাম ব্যবহার করেছে।

২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান এই ‘আধুনিক জমিদারি’ ভেঙে দিয়েছে—এ মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, কোনো ব্যক্তি, কোনো পরিবার, কোনো আদর্শকে আর কখনো নাগরিকদের অধিকার কেড়ে নিতে বা বাংলাদেশের ওপর ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দিতে দেওয়া হবে না। ‘জাতির পিতা’ উপাধিটি ইতিহাস নয়। এটি আওয়ামী লীগ কর্তৃক ভিন্নমতকে দমন করতে ও রাষ্ট্রকে একচেটিয়া করার জন্য তৈরি একটি ফ্যাসিবাদী হাতিয়ার। বাংলাদেশে তার সব নাগরিক সমান এবং কোনো একক ব্যক্তি তার জন্মস্থান বা ভবিষ্যতের মালিকানা দাবি করতে পারে না।

শেখ মুজিব ও মুক্তিযুদ্ধের নামে ‘মুজিববাদ’ একটি ‘ফ্যাসিবাদী মতাদর্শ’ বলে মনে করেন এনসিপির এ নেতা।

নাহিদ ইসলাম বলেন, এনসিপির সংগ্রাম কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়; বরং একটি ফ্যাসিবাদী মতাদর্শের বিরুদ্ধে। ফ্যাসিবাদ ও বিভাজনের একটি মতাদর্শ মুজিববাদ। এর অর্থ জোরপূর্বক গুম, হত্যা, ধর্ষণ ও নিয়মতান্ত্রিক মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর অর্থ জাতির সম্পদ লুট করা এবং বিদেশে তা পাচার করা। এর অর্থ ইসলামভীতি, সাম্প্রদায়িকতা ও সংখ্যালঘুদের জমি দখল করা। এর অর্থ বিদেশি শক্তির কাছে জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিক্রি করা।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ১৬ বছর ধরে মুজিবকে রাজনৈতিকভাবে একটি অস্ত্র হিসেবে জীবিত রাখা হয়েছিল, যখন তাঁর মূর্তির পেছনে অপহরণ, হত্যা, লুণ্ঠন ও গণহত্যা হয়েছিল। মুজিববাদ একটি জীবন্ত বিপদ। এটিকে পরাজিত করার জন্য রাজনৈতিক, আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ প্রয়োজন।

এনসিপির সংগ্রাম নাগরিকদের জন্য একটি সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা; যেখানে কোনো দল, কোনো রাজবংশ ও কোনো নেতা জনগণের ওপরে দাঁড়াবে না। বাংলাদেশ কারও সম্পত্তি নয়, এটি জনগণের প্রজাতন্ত্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

এপিএসের বেতন ১ বছরে বেড়েছে ১৮ বছরের সমান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত