হাইফার সড়কে ১৩ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি কিশোর মরে পড়ে আছে। পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে ব্রিটিশ সেনারা।
১৯৪৮ সাল ফিলিস্তিনের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং গভীর তাৎপর্যপূর্ণ সময়। ১৯২০-এর দশক থেকে কার্যকর থাকা ফিলিস্তিনের জন্য ব্রিটিশ ম্যান্ডেট ১৯৪৮ সালের ১৪ মে শেষ হয়।
এ বছরের ১৪ মে, ডেভিড বেন-গুরিয়ন ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। ইসরায়েলের স্বাধীনতার ঘোষণার পর প্রতিবেশী আরব রাষ্ট্রগুলো (মিসর, জর্ডান, সিরিয়া, লেবানন ও ইরাক) প্রতিরোধ করে। শুরু হয় আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ।
এই সময় ফিলিস্তিনি আরব জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে নির্বিচার উচ্ছেদ করা হয়। ৭ লাখের বেশি ফিলিস্তিনিকে তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করা হয়। এ ঘটনা ফিলিস্তিনিদের কাছে ‘নাকবা’ নামে পরিচিত, যার অর্থ ‘বিপর্যয়’। বহু ফিলিস্তিনি গ্রাম ধ্বংস করা হয়।
এই ঘটনাগুলোর পটভূমিতে ছিল ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘের বিভাজন পরিকল্পনা, যা জেরুজালেম আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণের অধীনে রেখে ফিলিস্তিনকে পৃথক আরব এবং ইহুদি রাষ্ট্রে বিভক্ত করার প্রস্তাব।
১৯৪৮ সাল মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র ও রাজনীতি পাল্টে দেয়। এক গভীর পরিবর্তন এবং সংঘাতের বছর ছিল এটি। বলতে এই বছরটিই এই অঞ্চলের জন্য, বিশেষ করে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য এক বিপর্যয়কর পরিণতি বয়ে আনে।
১৯৪৮ সালের ফিলিস্তিনের এই ছবিগুলোর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক। এই ছবিগুলো সেই সময়কার রাজনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক দিকগুলোর একটি চিত্র তুলে ধরে। বেশির ভাগ ছবিই তুলেছেন জন ফিলিপস।
এখানে লাইফ ম্যাগাজিনের এমন ৪৫টি ছবি রয়েছে, যেগুলোর বেশির ভাগই ওই সময় প্রকাশ করা হয়নি।
হাইফার সড়কে ১৩ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি কিশোর মরে পড়ে আছে। পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে ব্রিটিশ সেনারা।
ছাদে বসে পাহারা দিচ্ছে এক ব্রিটিশ সেনা
হাইফায় একটি ডকে ফিলিস্তিনি শরণার্থী।
ছাদে বসে পাহারা দিচ্ছে এক ব্রিটিশ সেনা।
জেরুজালেমের ইহুদি কোয়ার্টারে আরব লিজিয়ন সৈন্য পাহারা দিচ্ছে। আরব লিজিয়ন মূলত তৎকালীন বৃহত্তর জর্ডানের আরবদের নিয়ে গঠিত একটি ব্রিটিশ সেনাবাহিনী। সেখানে ব্রিটিশ ও ফ্রান্সের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি জর্ডানের রাজাকে সুরক্ষা দেওয়া ছিল এই বাহিনীর কাজ। আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে এই বাহিনী পূর্ব জেরুজালেমকে ইহুদি আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। যুদ্ধ শেষে পশ্চিম তীর পুরোপুরি এই বাহিনীর তথা জর্ডানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
দেয়ালের আড়াল থেকে গুলি করছে আরব লিজিয়ন সৈন্যরা।
জেনিন ছেড়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। ছবি: জন ফিলিপস
ব্রিটিশ মেরিনরা হাইফার একটি জনশূন্য ফিলিস্তিনি রাস্তা পাহারা দিচ্ছে। ছবি: জন ফিলিপস
আরব লিজিয়নের দুই সেনার মাঝখানে বসে আছে এক ইহুদি সেনা।
১৯৪৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলকে রাষ্ট্র ঘোষণার আগে হাইফায় ব্রিটিশ সৈন্যদের দ্বারা পরিবেষ্টিত শরণার্থী জাহাজ, যেটিতে আছে আটক হওয়া অবৈধ ইহুদি অভিবাসীরা। ছবি: দিমিত্রি ক্যাসেল
জায়ন গেট দিয়ে পুরোনো শহর ছাড়ছেন ইহুদিরা। ছবি: জন ফিলিপস
জেরুজালেমে আত্মসমর্পণের পর ইহুদি সেনাদের পাহারা দিচ্ছে আরব লিজিয়ন সেনারা। ছবি: জন ফিলিপস
জুন ১৯৪৮ সালে মাউন্ট কার্মেল থেকে হাইফার দৃশ্য। ছবি: ফ্রাঙ্ক শার্শেল
আরব লিজিয়ন সেনাদের সঙ্গে কথা বলছেন দুই রাব্বি (ইহুদি আলেম)। ছবি: জন ফিলিপস
জেরুজালেমের ইহুদি গ্রুপের আত্মসমর্পণের শর্ত নিয়ে আরব লিজিয়ন সৈন্যদের সঙ্গে আলোচনা করছেন সেফার্ডিক র্যাবাই। ছবি: জন ফিলিপস
জেনিন ছেড়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। ছবি: জন ফিলিপস
জেরুজালেমে আরব লিজিয়নের সেনারা। ছবি: জন ফিলিপস
অনুসারীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমির মোহাম্মদ সালেহ। ছবি: জন ফিলিপস
আত্মসমর্পণের পর হাসপাতালে আহত অবস্থায় শুয়ে আছে ইহুদি সেনারা। ছবি: জন ফিলিপস
আরবদের হয়ে নাশকতা চালানোর অভিযোগে পোল্যান্ডের দুই অভিযাত্রিকের চোখ বাঁধছে ইহুদি সেনারা। ছবি: জন ফিলিপস
ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা জন গ্লাব (আরব লিজিয়নের কমান্ডার) এবং তাঁর স্ত্রী পায়রাকে খাবার দিচ্ছেন। ছবি: জন ফিলিপস
রাজা আবদুল্লাহ (সামনের সারিতে বাঁয়ে মাঝখানের ব্যক্তি) এবং তাঁর দল ডোম অব দ্য রকের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। ছবি: জন ফিলিপস
ইহুদি গোত্রের মেয়র ‘মুখতার’ ওয়েইনগার্টেনকে আরব সৈন্যরা আরব লিজিয়ন সদর দপ্তরে নিয়ে যাচ্ছেন। ছবি: জন ফিলিপস
১৯৪৮ সালের এপ্রিলে আমির মোহাম্মদ সালেহের শিবিরের লোকেরা খবর শুনছেন। ছবি: জন ফিলিপস
১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ জাহাজে করে ফিলিস্তিন ছাড়তে তল্পিতল্পা নিয়ে জড়ো হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: জন ফিলিপস
মিসরীয় সীমান্তের কাছে ইহুদি ব্লকপোস্টের দৃশ্য, সামরিক স্থাপনা ও কাঁটাতার দেখা যাচ্ছে। ১৯৪৮ সালে ছবিটি তুলেছেন দিমিত্রি কেসেল
১৯৪৮ সালের মে মাসে জেরুজালেমে আহত আরব লিজিয়ন সদস্যকে বেসামরিক স্বেচ্ছাসেবকেরা বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন।।
নৌকায় করে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের হাইফায় নেওয়া হচ্ছে।
ব্রিটিশ রাজকীয় মেরিনবাহিনীর এক সদস্য এক ফিলিস্তিনির দেহ তল্লাশি করছেন।
হাইফা ছেড়ে যাওয়ার জন্য জাহাজের ডকে অপেক্ষা করছে এক ফিলিস্তিনি শিশু।
রাস্তায় একটি গাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছেন ফিলিস্তিনি প্রহরীরা।
কোনো একটি আরব শহরে আশ্রয়ের জন্য হাইফায় অপেক্ষা করছেন ফিলিস্তিনি শরণার্থীরা।
জেরুজালেমে হলি সেপালচার চার্চে যাচ্ছে ফিলিস্তিনি একটি পরিবার।
জেরুজালেমের আত্মসমর্পণের চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর ড. মুসা হুসাইনি (ডান থেকে ৪র্থ) এবং হাগানাহ বাহিনীর একজন নেতা আরব সৈন্যদের সঙ্গে হাঁটছেন।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘাত প্রতিরোধে জ্যাফারের সড়কে শেষবারের মতো টহল দিচ্ছে ব্রিটিশ ট্যাংক।
হাইফায় নিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় কটে (একধরনের বিশেষ খাট) শুয়ে আছেন আহত ফিলিস্তিনিরা।
আরব সৈন্যদের পাহারায় এক ইহুদি বন্দীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালে আরবদের সরবরাহ করা রুটি গ্রহণ করছেন এক ইহুদি বৃদ্ধা ও এক শিশু।
যুদ্ধবিরতির সময় আয়োজিত এক ভোজসভায় জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ ও তাঁর সঙ্গীরা।
বাদশাহ আব্দুল্লাহ ও তাঁর সঙ্গীরা ডোম অব দ্য রকের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন।
বিমান হামলার সময় তেল আবিবে একটি জলাধারের কাছ থেকে ছুটে পালাচ্ছে মানুষজন।
জেরুজালেমে পাল্টাপাল্টি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত নটর ডেম ঘুরে দেখছেন একজন যাজক।
ইসরায়েলি সেনাদের নির্দেশে সব ফিলিস্তিনি ভিটেমাটি ছেড়ে যাওয়ার পর ফাঁকা হাইফার স্ট্যানটন স্ট্রিট।
পশ্চিম তীরের জেনিন ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা।