Ajker Patrika

সমন্বয়ক! এদের সামলান

সম্পাদকীয়
সমন্বয়ক! এদের সামলান

আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে চাঁদাবাজির কী সম্পর্ক? এখন যাঁরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করে চলেছেন, তাঁদের ব্যাপারে এই সরকারের মনোভাব কী? সবকিছুই যখন লেজেগোবরে হয়ে গেছে, তখন আন্দোলনের পিঠে কারা ছুরি মারছে, সেটা কি ভেঙে বলে দিতে হবে? আন্দোলনের উদ্দেশ্যের মধ্যে এক মাস্তানকে হটিয়ে অন্য মাস্তানকে জায়গা করে দেওয়ার অভিপ্রায় নিশ্চয়ই ছিল না। কিন্তু বাস্তবে কী দেখা যাচ্ছে? চাঁদাবাজি, পেশিশক্তির প্রকাশ ঘটাচ্ছেন তাঁরাই, যাঁরা একসময় রাজপথে ইতিহাস গড়েছিলেন।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হলেই তাঁকে চাঁদাবাজির শিকার হতে হবে কেন? আওয়ামী লীগ করা কোনো অপরাধ হতে পারে না। অপরাধ করলে তাঁর সাজা হবে—এটাই নিয়ম। সাজা হয় বিচারালয়ে। আইনের মাধ্যমে আদালতে বিচারের পরেই অপরাধীর সাজা হয়। কিন্তু এ কেমন সাজার ব্যবস্থা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কতিপয় নেতা?

এরই মধ্যে আন্দোলনের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে আন্দোলনে ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, নির্দিষ্ট কিছু মানুষ আন্দোলনের নেতৃত্ব হাইজ্যাক করেছেন। অন্যদের অবদান স্বীকার করছেন না। আন্দোলনে অংশ নেওয়া বামপন্থীদের তো একেবারে ছুড়ে ফেলা হয়েছে। যাঁরা সরকারের অংশ হয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তাঁদের অবস্থান নিয়েও সাধারণ জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। এদের কেউ কেউ একাত্তর আর চব্বিশকে একই স্থানে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন, যা প্রবল জনমতের চাপে বানচাল হয়ে গেছে।

সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে কোনো রাজনৈতিক দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা না হলে আন্দোলনকারীর পরিচয় দিয়ে আন্দোলনের মূল স্পিরিট-বিরোধী কার্যক্রম থামবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয় দিয়ে যখন ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়, তখন সে টাকা কোথায় যাবে, সে প্রশ্নও জাগে জনগণের মনে। এই টাকা নিশ্চয়ই রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার মহান উদ্দেশ্যে সংগ্রহ করার কথা তাঁরা ভাবেননি। তারচেয়ে বড় কথা, আওয়ামী লীগ করলেই তাঁকে চাঁদা দিতে হবে কেন? ইতিমধ্যেই ওই সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপির গুলশানের বাড়ি থেকে যে ১০ লাখ টাকা গায়েব করে দেওয়ার অভিযোগ আছে এই সমন্বয়ক গংয়ের বিরুদ্ধে, সেই টাকার হদিস কে করবে? এমনতর চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নিতে হবে, যা দৃশ্যমান হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিজেই অন্যায়কারী হয়ে গেলে অন্যায়ই প্রতিষ্ঠিত হবে সমাজে, দেশে।

ভয়ের কথা হলো, একেক সমন্বয়ক একেক রকম অপরাধ করবেন আর তারপর তাঁদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে—এই নীতি মেনে চলার বিপদ অনেক। যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সব শাখা ও উপকমিটির কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। তবু বিপদ কাটবে কি না, তার নিশ্চয়তা নেই।

বড় বিপদ হলো, লোভ যদি পোক্ত হয়, তাহলে বহিষ্কার হওয়ার আগে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ কামানো নিশ্চিত করতে পারলেই তো কেল্লা ফতে! অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই এদের সামলান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি শাহজালালের আগুন, ফ্লাইট ওঠানামা স্থগিত

৪৫ বছর ছদ্মবেশে বিলাসী জীবন, অবশেষে বিচারের মুখে গুম-খুনের হোতা গোয়েন্দাপ্রধান

আজকের রাশিফল: প্রেমের সম্পর্কে গভীরতা বাড়বে, পকেটে আসবে টাকা

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার

মা-বাবাকে খুন করে জেলে রাজু, অনিশ্চিত স্ত্রী ও ৯ মাসের শিশুকন্যার ভবিষ্যৎ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত