কয়েক ছত্র
মাসুমা হক প্রিয়াংকা
বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে প্রতিবছর উদ্যাপনের যেমন উদ্যোগ-আয়োজন দেখা যায়, এবার তেমন দেখা যায়নি। আমার কাছে অন্তত তা-ই মনে হয়েছে। গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পালাবদল কি সত্যি আমাদের চিন্তাচেতনায় বড় পরিবর্তন এনেছে? গণতন্ত্রের ঢং দেখিয়ে টানা ক্ষমতায় থাকা শাসকগোষ্ঠীকে পরাভূত করা নিশ্চয়ই গৌরবের। কিন্তু সে গৌরব কি একাত্তরের বিজয়কে কোনোভাবে ম্লান করতে পারে?
১৬ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের বিজয় দিবস। এটি শুধু একটি দিন নয়, এটি আমাদের আত্মমর্যাদা, সংগ্রাম এবং দেশপ্রেমের এক অনন্য প্রতীক। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে, ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে, চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নের স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র অর্জন সম্ভব হয়।
একাত্তরের বিজয়ের ৫৩ বছর পর, আমার মতো যাঁরা একাত্তর না-দেখা প্রজন্ম, আমরা এই দিনটিকে কীভাবে অনুভব করি, সে প্রশ্নটি এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, কিন্তু আমরা তো ওই গৌরবের ইতিহাসেরই উত্তরসূরি, সাক্ষী। আমাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের গল্পগুলো শুধু শোনা নয়, অনুভব করার ব্যাপার।
আমাদের সামনে নতুন দিগন্তের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। দেশের অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি হলেও সমাজে বৈষম্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মূল্যবোধের অবক্ষয় এখনো বিরাজমান। বিজয়ের প্রকৃত অর্থ কেবল ভূখণ্ডের স্বাধীনতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি ন্যায্য সমাজ প্রতিষ্ঠারও সংগ্রাম ছিল। স্বাধীনতার স্থপতি বলেছিলেন, স্বাধীনতার সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। আমরা স্বাধীন হয়েছি কিন্তু মুক্তি পাইনি। মুক্তি পাইনি বৈষম্য থেকে, অবিচার থেকে, দুঃশাসন থেকে।
যে সমতা ও ন্যায্যতার জন্য স্বাধীনতার জন্য রক্ত দেওয়ার প্রতিযোগিতা হয়েছিল একাত্তরে, জকের বাংলাদেশে আমরা সেই সামাজিক ন্যায় ও সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। শহীদদের ত্যাগের প্রকৃত মূল্যায়ন আমরা কি করতে পেরেছি? আজ, যখন দেশ প্রযুক্তি ও অর্থনীতির দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, তখনো সমাজে নানা ধরনের বৈষম্য এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা আমাদের সামনে রয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে, বিজয় দিবসে আমরা কীভাবে অতীতের গৌরবকে ধরে রেখে বর্তমানের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারি?
এখনকার সময়ের রাজনৈতিক বিভাজন এবং সামাজিক অস্থিরতার মধ্যে আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা। মুক্তিযুদ্ধের সময়, বাঙালিরা ধর্ম, বর্ণ এবং রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে এক হয়ে লড়েছিল। এই ঐক্যের চেতনা আজ আমাদের সমাজে প্রয়োজন। তবে দুঃখজনকভাবে আমরা আজও অনেক ক্ষেত্রে বিভক্ত। আমাদের প্রতিদিনের রাজনীতি, সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিভাজন। এই বিভেদ আমাদের অগ্রগতির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমাদের বুঝতে হবে, স্বাধীনতাযুদ্ধে যেভাবে আমরা এক হয়ে লড়েছি, সেভাবে আজও একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে, মতের পার্থক্য ভুলে একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হবে।
বিজয় দিবসের গুরুত্ব শুধু ইতিহাসের পাতায় নয়, বরং বর্তমানের বাস্তবতাও অপরিসীম। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের মুক্তি ছিল একটি দেশের স্বাধীনতা, কিন্তু এখন সেই স্বাধীনতার প্রকৃত মানে হচ্ছে মানুষের মুক্তি। একটি মুক্ত দেশের অর্থ কেবল স্বায়ত্তশাসন নয়, এটি মানুষের মৌলিক অধিকার, ন্যায্যতা এবং সম্মান প্রতিষ্ঠিত করাও। আজকের বাংলাদেশের সত্যিকারের বিজয় হবে যখন আমরা জাতি হিসেবে একে অপরকে মূল্য দিতে পারব; যখন একজন নারীর, একজন শ্রমিকের, একজন কৃষকের অধিকার পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হবে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে আমরা অবশ্যই আমাদের গৌরবের ইতিহাস মনে রাখতে পারি, তবে তা যেন আমাদের আত্মতুষ্টিতে পরিণত না হয়।
লেখক: সমাজকর্মী ও শিক্ষার্থী
বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে প্রতিবছর উদ্যাপনের যেমন উদ্যোগ-আয়োজন দেখা যায়, এবার তেমন দেখা যায়নি। আমার কাছে অন্তত তা-ই মনে হয়েছে। গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পালাবদল কি সত্যি আমাদের চিন্তাচেতনায় বড় পরিবর্তন এনেছে? গণতন্ত্রের ঢং দেখিয়ে টানা ক্ষমতায় থাকা শাসকগোষ্ঠীকে পরাভূত করা নিশ্চয়ই গৌরবের। কিন্তু সে গৌরব কি একাত্তরের বিজয়কে কোনোভাবে ম্লান করতে পারে?
১৬ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের বিজয় দিবস। এটি শুধু একটি দিন নয়, এটি আমাদের আত্মমর্যাদা, সংগ্রাম এবং দেশপ্রেমের এক অনন্য প্রতীক। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে, ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে, চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নের স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র অর্জন সম্ভব হয়।
একাত্তরের বিজয়ের ৫৩ বছর পর, আমার মতো যাঁরা একাত্তর না-দেখা প্রজন্ম, আমরা এই দিনটিকে কীভাবে অনুভব করি, সে প্রশ্নটি এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, কিন্তু আমরা তো ওই গৌরবের ইতিহাসেরই উত্তরসূরি, সাক্ষী। আমাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের গল্পগুলো শুধু শোনা নয়, অনুভব করার ব্যাপার।
আমাদের সামনে নতুন দিগন্তের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। দেশের অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি হলেও সমাজে বৈষম্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মূল্যবোধের অবক্ষয় এখনো বিরাজমান। বিজয়ের প্রকৃত অর্থ কেবল ভূখণ্ডের স্বাধীনতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি ন্যায্য সমাজ প্রতিষ্ঠারও সংগ্রাম ছিল। স্বাধীনতার স্থপতি বলেছিলেন, স্বাধীনতার সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। আমরা স্বাধীন হয়েছি কিন্তু মুক্তি পাইনি। মুক্তি পাইনি বৈষম্য থেকে, অবিচার থেকে, দুঃশাসন থেকে।
যে সমতা ও ন্যায্যতার জন্য স্বাধীনতার জন্য রক্ত দেওয়ার প্রতিযোগিতা হয়েছিল একাত্তরে, জকের বাংলাদেশে আমরা সেই সামাজিক ন্যায় ও সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। শহীদদের ত্যাগের প্রকৃত মূল্যায়ন আমরা কি করতে পেরেছি? আজ, যখন দেশ প্রযুক্তি ও অর্থনীতির দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, তখনো সমাজে নানা ধরনের বৈষম্য এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা আমাদের সামনে রয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে, বিজয় দিবসে আমরা কীভাবে অতীতের গৌরবকে ধরে রেখে বর্তমানের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারি?
এখনকার সময়ের রাজনৈতিক বিভাজন এবং সামাজিক অস্থিরতার মধ্যে আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা। মুক্তিযুদ্ধের সময়, বাঙালিরা ধর্ম, বর্ণ এবং রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে এক হয়ে লড়েছিল। এই ঐক্যের চেতনা আজ আমাদের সমাজে প্রয়োজন। তবে দুঃখজনকভাবে আমরা আজও অনেক ক্ষেত্রে বিভক্ত। আমাদের প্রতিদিনের রাজনীতি, সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিভাজন। এই বিভেদ আমাদের অগ্রগতির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমাদের বুঝতে হবে, স্বাধীনতাযুদ্ধে যেভাবে আমরা এক হয়ে লড়েছি, সেভাবে আজও একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে, মতের পার্থক্য ভুলে একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হবে।
বিজয় দিবসের গুরুত্ব শুধু ইতিহাসের পাতায় নয়, বরং বর্তমানের বাস্তবতাও অপরিসীম। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের মুক্তি ছিল একটি দেশের স্বাধীনতা, কিন্তু এখন সেই স্বাধীনতার প্রকৃত মানে হচ্ছে মানুষের মুক্তি। একটি মুক্ত দেশের অর্থ কেবল স্বায়ত্তশাসন নয়, এটি মানুষের মৌলিক অধিকার, ন্যায্যতা এবং সম্মান প্রতিষ্ঠিত করাও। আজকের বাংলাদেশের সত্যিকারের বিজয় হবে যখন আমরা জাতি হিসেবে একে অপরকে মূল্য দিতে পারব; যখন একজন নারীর, একজন শ্রমিকের, একজন কৃষকের অধিকার পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হবে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে আমরা অবশ্যই আমাদের গৌরবের ইতিহাস মনে রাখতে পারি, তবে তা যেন আমাদের আত্মতুষ্টিতে পরিণত না হয়।
লেখক: সমাজকর্মী ও শিক্ষার্থী
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা-সংশয় যা-ই বলি, এত দিন সে বিষয়টির পরিসর সীমিত ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্য এবং সাধারণত নির্বাক থাকা দেশের আমজনতার মনোজগতে। কিন্তু এখন যখন সরকারপ্রধান নিজেই সেই শঙ্কার কথা ব্যক্ত করছেন, তখন বিষয়টি যে মোটেই অমূলক নয়, তা স্বীকার করতে কোনো দ্বিধা থাকতে পারে না
২ ঘণ্টা আগেআজ থেকে খুব বেশি দিন না, এই ধরেন, বারো-সাড়ে বারো শ বছর আগের কথা। হীরকরাজ্যে তখনো জ্ঞান-বিজ্ঞান, বিদ্যা-শিক্ষার চর্চা হতো। রীতিমতো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। ৩০০ বছর ধরে শুধু উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, বরং চীন, তিব্বত, ব্রহ্মদেশ (মিয়ানমার), শ্যামদেশ (থাইল্যান্ড), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়াসহ
২ ঘণ্টা আগে৭ সেপ্টেম্বর বদরুদ্দীন উমরের জীবনের প্রস্থান হয়েছে। তাঁর এই প্রস্থানের মধ্য দিয়ে তিন পুরুষের রাজনৈতিক ধারারও সমাপ্তি ঘটেছে। তাঁর দাদা আবুল কাসেম ছিলেন তৎকালীন জাতীয় কংগ্রেসের পার্লামেন্টারিয়ান বোর্ডের সদস্য। বাবা আবুল হাশিম ছিলেন মুসলিম লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আর তিনি ছিলেন কমিউনিস্ট ধারার নেতা।
২ ঘণ্টা আগেশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পড়াশোনার জায়গা নয়, এটি শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশেরও জায়গা। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড একটি শিশুর পূর্ণাঙ্গ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধানের ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে এই মৌলিক অধিকার বিঘ্নিত হয়, তখন তা
২ ঘণ্টা আগে