সেঁজুতি মুমু
রাষ্ট্র সংস্কারের কথা চলছে অনেক আগে থেকে। শোনা যাচ্ছে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের কথা। সবকিছু সংস্কার ও বিনির্মাণ করা হবে। কিন্তু সংস্কার কি শুধু রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই প্রয়োজন? ব্যক্তির সংস্কার প্রয়োজন নেই?
রাষ্ট্রের অন্যতম অংশ তার নাগরিক তথা মানুষ। তাই নাগরিকের সংস্কার হওয়াটাও জরুরি। কিন্তু নাগরিক তো বস্তু নয় যে জোর করে তাদের বিনির্মাণ বা সংস্কার করা যায়। হয়তো আইন প্রয়োগ করে বা কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে দুর্নীতি দমানো সম্ভব। কিন্তু অন্তরে যে বিষ রয়ে যায়, তাকে কীভাবে বের করা হবে? তা একমাত্র তখনই সম্ভব, যখন আমরা মন থেকে দেশকে ভালোবেসে দেশের কল্যাণ চাইব। একটা কথা আছে, ‘নিজে ভালো তো জগৎ ভালো’। অর্থাৎ নিজে ঠিক থাকলেই হলো। যদি এক শ জনে পাঁচজনও নিজেকে সংস্কারের কথা ভাবে, তাহলে দেশের অনেকটা পরিবর্তন কি অসম্ভব? এই পরিবর্তনের ভিত্তি ধর্মীয় হতে পারে, নৈতিকতা হতে পারে আবার দেশপ্রেমও হতে পারে। তবে যাই হোক, যদি ব্যক্তি হিসেবে কেউ নিজেকে সংস্কার করতে একবার আগ্রহী হন, তবে তাঁর দ্বারা দেশের উন্নয়ন সম্ভব বলে বিশ্বাস করি। ব্যক্তির সংস্কার রাষ্ট্র সংস্কারে কীভাবে সাহায্য করে—এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। ধরা যাক, আজ থেকে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলাম যে আর কোনো দিন রাস্তাঘাটে যেখানে-সেখানে আবর্জনা, চিপস-চকলেটের প্যাকেট ফেলব না, শুধু নির্দিষ্ট ডাস্টবিনেই ফেলব। এ রকম আরও পাঁচজন করল। তাহলে কি আমাদের রাস্তাঘাট পরিষ্কার থাকবে না? আমরা একটি সুস্থ পরিবেশ পাব না? এভাবে ব্যক্তির সংস্কার বা নিজেকে পরিবর্তনের ছোট ছোট ধাপ দিয়ে আমরা রাষ্ট্র সংস্কারেও বড় ভূমিকা রাখতে পারি।
কখনো ডাস্টবিন ছাড়া যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলব না। জনসমাগমপূর্ণ এলাকায়, বিশেষ করে শিশুদের সামনে ধূমপান করব না। নিজের কাজকে অবহেলা করব না, হোক তা পড়াশোনা বা চাকরি অথবা ব্যক্তিগত কোনো কাজ। কখনো রাস্তায় চলাচলের সময় ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করব না। চুরি বা ছিনতাই হতে দেখলে বা অন্যায় হতে দেখলে প্রতিরোধ করব, অপরাধীকে পুলিশের হাতে তুলে দেব। কাউকে ধর্মীয় উসকানিমূলক কোনো কথা বলব না। কাউকে এ রকম কথা বলতে শুনলে বা এ রকম বিভেদ সৃষ্টিমূলক কাজ করতে দেখলে প্রতিবাদ করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের জুনিয়র শিক্ষার্থীদের তথাকথিত ম্যানারস শেখানোর নামে অত্যাচার করব না ইত্যাদি। এতে দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ক্ষেত্রেও আমাদের লাভ ছাড়া ক্ষতি হবে না। আমরা যদি নিজেরা ট্রাফিক আইন মেনে চলি এবং কোনো পরিস্থিতিতেই তা ভঙ্গ না করি, তাহলে রোড অ্যাক্সিডেন্ট কমানো সম্ভব! আমরা যদি নিজেদের কাজগুলোয় অবহেলা না করি, যেমন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় অবহেলা না করে কর্তব্য পালন করলে শিক্ষিতের হার বেড়ে যাবে। যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষাকারী ব্যক্তি যদি নিজে ঠিক থাকেন, তাহলে রোড অ্যাক্সিডেন্টের ঝুঁকি কমতে বাধ্য।
এভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা দেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারি। তরুণেরাই তো জাতির কর্ণধার। তাই আসুন, আমরা তথা যুবসমাজ রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে ব্যক্তির সংস্কারে অঙ্গীকারবদ্ধ হই। তরুণদের কয়েকজন এ রকম পরিবর্তন শুরু করলেই অন্যরা তা দেখে অনুপ্রাণিত হবেন, এগিয়ে আসবেন। এভাবে আমরা প্রত্যেকে নিজের অবস্থান থেকে দেশ ও জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হব। নতুন করে এখন এই অঙ্গীকার করি—দেশের জন্য, জাতির জন্য, নিজের জন্য নিজেকে সংস্কার করতে আমরা পিছপা হব না।
লেখক: শিক্ষার্থী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
রাষ্ট্র সংস্কারের কথা চলছে অনেক আগে থেকে। শোনা যাচ্ছে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের কথা। সবকিছু সংস্কার ও বিনির্মাণ করা হবে। কিন্তু সংস্কার কি শুধু রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই প্রয়োজন? ব্যক্তির সংস্কার প্রয়োজন নেই?
রাষ্ট্রের অন্যতম অংশ তার নাগরিক তথা মানুষ। তাই নাগরিকের সংস্কার হওয়াটাও জরুরি। কিন্তু নাগরিক তো বস্তু নয় যে জোর করে তাদের বিনির্মাণ বা সংস্কার করা যায়। হয়তো আইন প্রয়োগ করে বা কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে দুর্নীতি দমানো সম্ভব। কিন্তু অন্তরে যে বিষ রয়ে যায়, তাকে কীভাবে বের করা হবে? তা একমাত্র তখনই সম্ভব, যখন আমরা মন থেকে দেশকে ভালোবেসে দেশের কল্যাণ চাইব। একটা কথা আছে, ‘নিজে ভালো তো জগৎ ভালো’। অর্থাৎ নিজে ঠিক থাকলেই হলো। যদি এক শ জনে পাঁচজনও নিজেকে সংস্কারের কথা ভাবে, তাহলে দেশের অনেকটা পরিবর্তন কি অসম্ভব? এই পরিবর্তনের ভিত্তি ধর্মীয় হতে পারে, নৈতিকতা হতে পারে আবার দেশপ্রেমও হতে পারে। তবে যাই হোক, যদি ব্যক্তি হিসেবে কেউ নিজেকে সংস্কার করতে একবার আগ্রহী হন, তবে তাঁর দ্বারা দেশের উন্নয়ন সম্ভব বলে বিশ্বাস করি। ব্যক্তির সংস্কার রাষ্ট্র সংস্কারে কীভাবে সাহায্য করে—এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। ধরা যাক, আজ থেকে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলাম যে আর কোনো দিন রাস্তাঘাটে যেখানে-সেখানে আবর্জনা, চিপস-চকলেটের প্যাকেট ফেলব না, শুধু নির্দিষ্ট ডাস্টবিনেই ফেলব। এ রকম আরও পাঁচজন করল। তাহলে কি আমাদের রাস্তাঘাট পরিষ্কার থাকবে না? আমরা একটি সুস্থ পরিবেশ পাব না? এভাবে ব্যক্তির সংস্কার বা নিজেকে পরিবর্তনের ছোট ছোট ধাপ দিয়ে আমরা রাষ্ট্র সংস্কারেও বড় ভূমিকা রাখতে পারি।
কখনো ডাস্টবিন ছাড়া যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলব না। জনসমাগমপূর্ণ এলাকায়, বিশেষ করে শিশুদের সামনে ধূমপান করব না। নিজের কাজকে অবহেলা করব না, হোক তা পড়াশোনা বা চাকরি অথবা ব্যক্তিগত কোনো কাজ। কখনো রাস্তায় চলাচলের সময় ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করব না। চুরি বা ছিনতাই হতে দেখলে বা অন্যায় হতে দেখলে প্রতিরোধ করব, অপরাধীকে পুলিশের হাতে তুলে দেব। কাউকে ধর্মীয় উসকানিমূলক কোনো কথা বলব না। কাউকে এ রকম কথা বলতে শুনলে বা এ রকম বিভেদ সৃষ্টিমূলক কাজ করতে দেখলে প্রতিবাদ করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের জুনিয়র শিক্ষার্থীদের তথাকথিত ম্যানারস শেখানোর নামে অত্যাচার করব না ইত্যাদি। এতে দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ক্ষেত্রেও আমাদের লাভ ছাড়া ক্ষতি হবে না। আমরা যদি নিজেরা ট্রাফিক আইন মেনে চলি এবং কোনো পরিস্থিতিতেই তা ভঙ্গ না করি, তাহলে রোড অ্যাক্সিডেন্ট কমানো সম্ভব! আমরা যদি নিজেদের কাজগুলোয় অবহেলা না করি, যেমন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় অবহেলা না করে কর্তব্য পালন করলে শিক্ষিতের হার বেড়ে যাবে। যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষাকারী ব্যক্তি যদি নিজে ঠিক থাকেন, তাহলে রোড অ্যাক্সিডেন্টের ঝুঁকি কমতে বাধ্য।
এভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা দেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারি। তরুণেরাই তো জাতির কর্ণধার। তাই আসুন, আমরা তথা যুবসমাজ রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে ব্যক্তির সংস্কারে অঙ্গীকারবদ্ধ হই। তরুণদের কয়েকজন এ রকম পরিবর্তন শুরু করলেই অন্যরা তা দেখে অনুপ্রাণিত হবেন, এগিয়ে আসবেন। এভাবে আমরা প্রত্যেকে নিজের অবস্থান থেকে দেশ ও জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হব। নতুন করে এখন এই অঙ্গীকার করি—দেশের জন্য, জাতির জন্য, নিজের জন্য নিজেকে সংস্কার করতে আমরা পিছপা হব না।
লেখক: শিক্ষার্থী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হিন্দু-মুসলমান বিরোধ প্রসঙ্গে গালাগালিকে গলাগলিতে রূপান্তরিত করতে বলেছিলেন একদা। তাঁর এই পরামর্শ কতটা কাজে লেগেছে, তা নিয়ে আর মন্তব্য না করাই ভালো। ন্যূনতম সহনশীলতারও মৃত্যু হয়েছে কি না, তা নিয়েও ভাবছে মানুষ। রাজনীতির মাঠে প্রতিপক্ষকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি...
১৩ ঘণ্টা আগেআগামী বছর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে, পবিত্র রমজানের আগে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত বলেই ধরে নেওয়া যায়। যদিও দেশে-বিদেশে নির্বাচন নিয়ে ভিন্নতর জল্পনাও আছে। বিশেষ করে প্রবাসী কয়েকজন ইউটিউবার নানাভাবে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে নিশ্চিত নির্বাচনের বিষয়ে জনপরিসরে একটি সংশয় সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন।
১৩ ঘণ্টা আগেপৃথিবীর বহু দেশে শিক্ষকের অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা উচ্চতর হলেও, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ চিত্র ভালো নয়। বিশেষ করে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এ চিত্র বেশ হতাশাজনক ও বেদনাদায়ক। দুঃখজনক হলেও সত্য যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান এ দুরবস্থা দূরীকরণে কোনো সরকারই কোনো আন্তরিকতা দেখায়নি।
১৩ ঘণ্টা আগেসমাজের অলিগলি, শহর থেকে প্রান্তরে আজ যেন একটিই মন্ত্র উচ্চারিত হচ্ছে—‘জিপিএ-৫ পেলেই জীবন সফল’। অভিভাবকের চোখে সন্তানের সফলতা মাপা হয় সেই একটিমাত্র অঙ্কে। কিন্তু প্রশ্ন, একটি ফলাফল, একটি সংখ্যাই কি সত্যিই নির্ধারণ করতে পারে একজন মানুষের মেধা, মানসিকতা কিংবা ভবিষ্যৎ? মানুষের জীবনের গল্প কখনোই...
১৩ ঘণ্টা আগে