Ajker Patrika

বিগত তিন নির্বাচন পর্যালোচনার দায়িত্বে থাকা কমিটিকে কমিশনে রূপান্তর

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
বিগত তিন নির্বাচন পর্যালোচনার দায়িত্বে থাকা কমিটিকে কমিশনে রূপান্তর

আওয়ামী লীগের আমলে হওয়া বিতর্কিত তিন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুপারিশ দিতে গঠিত কমিটি বাতিল করে একটি কমিশন গঠন করেছে সরকার।

নতুন এই কমিশন গঠন করে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন পর্যালোচনার জন্য গত ২৬ জুন একটি কমিটি করেছিল সরকার।

আগের কমিটির সদস্যদের নতুন কমিশনে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। তাদের কর্মপরিধিও অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে কমিশনকে প্রতিবেদন দেওয়ার সময় এক মাস বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার।

আগের কমিটিকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছিল। এখন কমিশনকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে এবং এসব নির্বাচনে নানা কৌশলে জনগণের ভোট প্রদানের অধিকার ভূলুন্ঠিত করে সাজানো প্রক্রিয়ায় একটি বিশেষ দলকে নির্বাচিত করার জোরালো অভিযোগ রয়েছে। এ জন্য এই কমিশন গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির মতো কমিশনও পাঁচ সদস্যের। কমিশনে আগের মতোই হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামীম হাসনাইন সভাপতি দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটির সদস্য হলেন— সাবেক অতিরিক্ত সচিব (গ্রেড-১) শামীম আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক (সুপণ), ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরাম হোসাইন ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আব্দুল আলীম, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ।

কমিশনের কার্যপরিধি

২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলোর বিষয়ে নির্বাচন পর্যবেক্ষক, দেশি ও বিদেশি তদারকি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিবেদন এবং গণমাধ্যমে উত্থাপিত অভিযোগ বিশ্লেষণ করতে বলা হয়েছে কমিশনকে। এসব নির্বাচনের বিভিন্ন দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এবং সার্বিকভাবে উল্লিখিত বিষয়গুলোর নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ ও বিশ্লেষণ করবে এই কমিশন।

কমিশনকে বিগত তিন নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ সীমাবদ্ধ করতে ও জনগণের ভোটাধিকার প্রদান বাধাগ্রস্ত করতে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল ও সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা; নির্বাচনে তৎকালীন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার ভূমিকা এবং নির্বাচন কার্যক্রমে আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা বিশ্লেষণ করতে বলা হয়েছে।

তৎকালীন নির্বাচন কমিশনগুলোর বিরুদ্ধে উত্থাপিত আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ যাচাই ও অনুসন্ধান এবং বিশ্লেষণের ভিত্তিতে বিগত তিন নির্বাচনে অনিয়মের দায়-দায়িত্বও কমিশনকে নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া ভবিষ্যতের সব নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও মানসম্পন্ন পর্যায়ে উপনীত করাতে সুচিন্তিত সুপারিশ দিতে হবে কমিশনকে। কমিশন প্রয়োজনে যে কোনো দপ্তরের দলিল দস্তাবেজ তলব করা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। বাংলাদেশের যে কোনো স্থান পরিদর্শন, যে কোনো দপ্তরের দলিল দস্তাবেজ তলব এবং যে কোনো ব্যক্তিকে কমিশনে তলব ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা দেবে এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন লজিস্টিক ও তথ্য সহায়তা দেবে বলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত