সৌগত বসু, ঢাকা

রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ২০১৩ সালে ৫০টি ‘আর্টিকুলেটেড’ বাস কিনেছিল। বলা হয়েছিল, ভারতীয় ঋণের আওতায় কেনা এ বাসগুলো ঢাকার গণপরিবহনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। কিন্তু মাত্র সাত বছরের মধ্যেই ৪৩টি বাস অকেজো হয়ে পড়ে, যা অনেককে মনে করিয়ে দিতে পারে আড়াই দশক আগে সুইডেন থেকে কেনা বিশ্বখ্যাত ভলভো বাসের অভিজ্ঞতার কথা।
রাষ্ট্রীয় সম্পদের প্রতি অযত্ন-অবহেলা সরকারি এ প্রতিষ্ঠানে জেঁকে থাকা গাফিলতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির একটি দিক মাত্র। গত কয়েক বছর আগের অনিয়ম-দুর্নীতির জের বিআরটিসি এখনো টেনে চলেছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে তার মূল লক্ষ্য—যাত্রীসেবা।
আর্টিকুলেটেডে ভলভোর ছায়া
প্রচলিত বাসের প্রায় দ্বিগুণ দৈর্ঘ্যের ‘আর্টিকুলেটেড’ বাসের কাঠামোর জন্য বিদেশে জনসাধারণের কাছে বেন্ডি, স্ট্রেচ, স্লিংকি ইত্যাদি নামে পরিচিত।
বৈধ দৈর্ঘ্যের মধ্যে থেকে এই বাসে তুলনামূলকভাবে বেশি যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হওয়ায় এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তুলনামূলক সরু রাস্তায় চালানো কিছুটা সমস্যা হওয়ায় অবশ্য বিশ্বের অনেক শহর থেকে দুটি অংশ জুড়ে তৈরি করা এ বাস তুলে দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালে কেনা ৫০টি আর্টিকুলেটেড বাসের মধ্যে বিআরটিসি ২০২২ সালে ২৭টি আবার চালু করে। বাকি বাসগুলো এখনো ডিপোতে পড়ে রয়েছে। এসব নিয়ে গত ১৫ বছরে সংস্থাটির বহরে যুক্ত হয়েছে মোট ১ হাজার ৫৫৮টি বাস। এর মধ্যে কাগজে-কলমেই চালু আছে ১ হাজার ২৪৪টি। আর চারটি প্রকল্পে এসব বাস কেনায় খরচ হয়েছে প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা। এ সময়ে অনেক বাস নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় কিছু ‘ভাঙারি’ হিসেবে কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে। যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বা সময়মতো মেরামত না করায় গাড়ি অচল পড়ে থাকায় যাত্রীসেবা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বিআরটিসির আয়ে প্রভাব পড়েছে। দায়দেনা শোধে অসুবিধা ও কর্মীদের বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়াসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত সংস্থাটি।
বিআরটিসিসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এখন আরও ৮টি আর্টিকুলেটেড বাস সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব বাসের দুটি অংশের মাঝখানে থাকা রাবারের সংযোগটি জার্মানিতে তৈরি।
চাহিদা নিতান্ত সীমিত বলে এগুলো স্থানীয় বাজারে সাধারণত পাওয়া যায় না। প্রতিটি বাসের নতুন সংযোগের মূল্য ৩৩ লাখ টাকার বেশি। তবে দেশি প্রযুক্তিতে মাত্র ৪০ হাজার টাকায় পুরোনোগুলো মেরামত করা হচ্ছে।
বিআরটিসি অনেক ঘটা করে ২০০১-০২ সালে সুইডেনের বিশ্বখ্যাত ভলভো কোম্পানির ৫০টি আধুনিক দোতলা বাস ঢাকার রাস্তায় নামিয়েছিল। অত্যাধুনিক বাসগুলোয় যাত্রা বেশ আরামদায়ক হওয়ায় তা প্রশংসিত হয়েছিল। তবে ইজারা ব্যবস্থাপনার ত্রুটি এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই বাসগুলো একে একে অকেজো হয়ে পড়ে।
দামি বা বিশেষ কোম্পানির গাড়ি ছাড়াও সাধারণভাবেই রাষ্ট্রীয় এ কোম্পানির গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারে অবহেলার অভিযোগ পুরোনো। সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক কয়েক বছরে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, মতিঝিল, কল্যাণপুর, মিরপুর, জোয়ারসাহারা, গাজীপুরসহ বিভিন্ন ডিপোতে ১৩৯টি বাস অকেজো হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে পড়ে ছিল। এ বাসগুলোর অনেক যন্ত্রাংশ মেরামতযোগ্য হলেও পড়ে থেকে বাইরের অংশ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সরকারি সম্পদের অপচয় হয়েছে।
তিন অর্থবছরের অনিয়ম ভোগাচ্ছে
পরিবহন নিরীক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীর তেজগাঁওসহ বিআরটিসির বিভিন্ন বাস ডিপোর ব্যবস্থাপক ও কর্মকর্তারা ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ সাল পর্যন্ত তিন অর্থবছরে ৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। চালক, কন্ডাক্টর ও লিজগ্রহণকারী বাইরের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব যথাযথভাবে ব্যাংকে জমা না করায় এই আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, কেবল ওই তিন অর্থবছরে বিআরটিসির মোট দুর্নীতির অঙ্ক ২৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার বেশি। মামলা-মোকদ্দমার কারণে প্রাপ্য আদায়েও বিআরটিসি সমস্যায় পড়ছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, কল্যাণপুর বাস ডিপোর ৩৭টি দোকানের বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ব্যবসার ধরন পরিবর্তনের ফি না জমা হয়নি। ফুলবাড়িয়া সিবিএস-২ মার্কেটের বকেয়া ভাড়া আদায়ে জটিলতা রয়েছে। এসব ব্যর্থতার পেছনে বিআরটিসির প্রধান কার্যালয়ের এস্টেট বিভাগের কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। মতিঝিল, কল্যাণপুর, জোয়ারসাহারা, বরিশাল, খুলনা, বগুড়া বাস ডিপো ও প্রধান কার্যালয় ইজারা বাবদ ৬ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে বিআরটিসি। আন্তর্জাতিক রুটে শ্যামলী পরিবহন, রয়েল কোচ ও এন আর ট্রাভেলস তিন বছরে ২৪ লাখ ৬১ হাজার টাকার রয়্যালটি ফি বকেয়া রেখেছে, যা করোনার কারণ দেখিয়ে পরিশোধ করা হয়নি।
সংস্থাটির সূত্র বলছে, সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভুঁইয়া ও মো. এহসান এলাহীর সময়ের এসব দুর্নীতির দায় এখনো টানতে হচ্ছে বিআরটিসিকে। বর্তমান চেয়ারম্যানের ঠিক আগে পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করা এই দুজনের সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিআরটিসির দেনা দাঁড়িয়েছিল ১০১ কোটি টাকা। গত চার বছরে তা থেকে ৯২ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
দেনা মেটাতে বাসভাড়া
রাজধানীর অনেক সাধারণ বাসযাত্রীর অভিযোগ, ঢাকার পথে এই সরকারি সংস্থার গাড়ি খুব বেশি রুটে দেখা যায় না। আবার হুটহাট রুট পরিবর্তনেরও নজির আছে। বিআরটিসির সূত্র বলছে, দেনা শোধের চাপের কারণে যাত্রীসেবায় কিছুটা কম গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে বাসভাড়া দেওয়া হচ্ছে। রাজধানীর পথে এখন তাদের ৫৫০টি গাড়ি যাত্রী পরিবহন করে। তবে এসব গাড়ি থেকে বেশি আয় হয় না। ১৭২টি গাড়ি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম গত সোমবার আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে ১৭২টি বাসভাড়া দেওয়ার বিষয়টি সত্যি বলে নিশ্চিত করেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছরে যে পরিমাণ দেনা হয়েছে, তা শোধ করতে অর্থ দরকার। সরকারি প্রতিষ্ঠানে বাসভাড়া দিয়ে ভালো আয় হচ্ছে। গত মাসে ১২ কোটি টাকা বেতন দেওয়া হয়েছে। প্রায় আড়াই কোটি টাকা লাভ হয়েছে।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, সাবেক কর্মকর্তাদের অনিয়মে বিআরটিসিতে বড় অঙ্কের বকেয়া ছিল। ২০২১ সাল থেকে তা এখন পর্যন্ত ৯ কোটিতে নামানো হয়েছে। বিভাগীয় মামলা ও চাপ প্রয়োগে পুরোনো বকেয়া আদায়ের চেষ্টা চলছে, তবে পুরোটা আদায় কঠিন। এস্টেট ডিপার্টমেন্টের জটিলতা ও অনিয়ম চরমে পৌঁছেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটি ঠিক করার চেষ্টা চলছে।
লিজ আর দেওয়া হবে না
সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়ার বাইরে বর্তমানে বেসরকারি কোম্পানির হাতেও ১৯টি বিআরটিসির বাস লিজ দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি দেখেন, নিয়ম ভেঙে বিআরটিসির বাস বেসরকারি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ লিজ প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে বন্ধ করা হবে। মেয়াদ শেষ হলে আর নবায়ন করা হবে না। এসব লিজ মালিক বছরের পর বছর রাজস্ব না দিয়ে বিআরটিসিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যুক্ত বাসগুলোও অবহেলায় ভাঙারিতে পরিণত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক যোগাযোগ ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত তিন অর্থবছরে বিআরটিসির পরিচালনা কমিটি সংকট নিরসনে বড় ভূমিকা রেখেছে। তবে বিআরটিসি যতই লাভজনক প্রতিষ্ঠান হোক না কেন, তাদের প্রধান কাজ জনগণকে সেবা দেওয়া। সেখানে তাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ইজারা দিয়ে লাভ করা মুখ্য লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়।
অধ্যাপক হাদিউজ্জামান আরও বলেন, বিআরটিসির যে কাঠামোগত সক্ষমতা আছে, তা দেশের অন্য কোনো বাস কোম্পানির নেই। সেটা কাজে লাগাতে হবে। বিআরটিসির একটা প্রবণতা আছে, রুট সংখ্যা বাড়ানো। কিন্তু অনেক রুটে দরকার মতো বাস থাকে না। এদিকে নজর দিতে হবে।

রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ২০১৩ সালে ৫০টি ‘আর্টিকুলেটেড’ বাস কিনেছিল। বলা হয়েছিল, ভারতীয় ঋণের আওতায় কেনা এ বাসগুলো ঢাকার গণপরিবহনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। কিন্তু মাত্র সাত বছরের মধ্যেই ৪৩টি বাস অকেজো হয়ে পড়ে, যা অনেককে মনে করিয়ে দিতে পারে আড়াই দশক আগে সুইডেন থেকে কেনা বিশ্বখ্যাত ভলভো বাসের অভিজ্ঞতার কথা।
রাষ্ট্রীয় সম্পদের প্রতি অযত্ন-অবহেলা সরকারি এ প্রতিষ্ঠানে জেঁকে থাকা গাফিলতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির একটি দিক মাত্র। গত কয়েক বছর আগের অনিয়ম-দুর্নীতির জের বিআরটিসি এখনো টেনে চলেছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে তার মূল লক্ষ্য—যাত্রীসেবা।
আর্টিকুলেটেডে ভলভোর ছায়া
প্রচলিত বাসের প্রায় দ্বিগুণ দৈর্ঘ্যের ‘আর্টিকুলেটেড’ বাসের কাঠামোর জন্য বিদেশে জনসাধারণের কাছে বেন্ডি, স্ট্রেচ, স্লিংকি ইত্যাদি নামে পরিচিত।
বৈধ দৈর্ঘ্যের মধ্যে থেকে এই বাসে তুলনামূলকভাবে বেশি যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হওয়ায় এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তুলনামূলক সরু রাস্তায় চালানো কিছুটা সমস্যা হওয়ায় অবশ্য বিশ্বের অনেক শহর থেকে দুটি অংশ জুড়ে তৈরি করা এ বাস তুলে দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালে কেনা ৫০টি আর্টিকুলেটেড বাসের মধ্যে বিআরটিসি ২০২২ সালে ২৭টি আবার চালু করে। বাকি বাসগুলো এখনো ডিপোতে পড়ে রয়েছে। এসব নিয়ে গত ১৫ বছরে সংস্থাটির বহরে যুক্ত হয়েছে মোট ১ হাজার ৫৫৮টি বাস। এর মধ্যে কাগজে-কলমেই চালু আছে ১ হাজার ২৪৪টি। আর চারটি প্রকল্পে এসব বাস কেনায় খরচ হয়েছে প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা। এ সময়ে অনেক বাস নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় কিছু ‘ভাঙারি’ হিসেবে কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে। যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বা সময়মতো মেরামত না করায় গাড়ি অচল পড়ে থাকায় যাত্রীসেবা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বিআরটিসির আয়ে প্রভাব পড়েছে। দায়দেনা শোধে অসুবিধা ও কর্মীদের বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়াসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত সংস্থাটি।
বিআরটিসিসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এখন আরও ৮টি আর্টিকুলেটেড বাস সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব বাসের দুটি অংশের মাঝখানে থাকা রাবারের সংযোগটি জার্মানিতে তৈরি।
চাহিদা নিতান্ত সীমিত বলে এগুলো স্থানীয় বাজারে সাধারণত পাওয়া যায় না। প্রতিটি বাসের নতুন সংযোগের মূল্য ৩৩ লাখ টাকার বেশি। তবে দেশি প্রযুক্তিতে মাত্র ৪০ হাজার টাকায় পুরোনোগুলো মেরামত করা হচ্ছে।
বিআরটিসি অনেক ঘটা করে ২০০১-০২ সালে সুইডেনের বিশ্বখ্যাত ভলভো কোম্পানির ৫০টি আধুনিক দোতলা বাস ঢাকার রাস্তায় নামিয়েছিল। অত্যাধুনিক বাসগুলোয় যাত্রা বেশ আরামদায়ক হওয়ায় তা প্রশংসিত হয়েছিল। তবে ইজারা ব্যবস্থাপনার ত্রুটি এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই বাসগুলো একে একে অকেজো হয়ে পড়ে।
দামি বা বিশেষ কোম্পানির গাড়ি ছাড়াও সাধারণভাবেই রাষ্ট্রীয় এ কোম্পানির গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারে অবহেলার অভিযোগ পুরোনো। সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক কয়েক বছরে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, মতিঝিল, কল্যাণপুর, মিরপুর, জোয়ারসাহারা, গাজীপুরসহ বিভিন্ন ডিপোতে ১৩৯টি বাস অকেজো হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে পড়ে ছিল। এ বাসগুলোর অনেক যন্ত্রাংশ মেরামতযোগ্য হলেও পড়ে থেকে বাইরের অংশ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সরকারি সম্পদের অপচয় হয়েছে।
তিন অর্থবছরের অনিয়ম ভোগাচ্ছে
পরিবহন নিরীক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীর তেজগাঁওসহ বিআরটিসির বিভিন্ন বাস ডিপোর ব্যবস্থাপক ও কর্মকর্তারা ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ সাল পর্যন্ত তিন অর্থবছরে ৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। চালক, কন্ডাক্টর ও লিজগ্রহণকারী বাইরের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব যথাযথভাবে ব্যাংকে জমা না করায় এই আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, কেবল ওই তিন অর্থবছরে বিআরটিসির মোট দুর্নীতির অঙ্ক ২৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার বেশি। মামলা-মোকদ্দমার কারণে প্রাপ্য আদায়েও বিআরটিসি সমস্যায় পড়ছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, কল্যাণপুর বাস ডিপোর ৩৭টি দোকানের বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ব্যবসার ধরন পরিবর্তনের ফি না জমা হয়নি। ফুলবাড়িয়া সিবিএস-২ মার্কেটের বকেয়া ভাড়া আদায়ে জটিলতা রয়েছে। এসব ব্যর্থতার পেছনে বিআরটিসির প্রধান কার্যালয়ের এস্টেট বিভাগের কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। মতিঝিল, কল্যাণপুর, জোয়ারসাহারা, বরিশাল, খুলনা, বগুড়া বাস ডিপো ও প্রধান কার্যালয় ইজারা বাবদ ৬ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে বিআরটিসি। আন্তর্জাতিক রুটে শ্যামলী পরিবহন, রয়েল কোচ ও এন আর ট্রাভেলস তিন বছরে ২৪ লাখ ৬১ হাজার টাকার রয়্যালটি ফি বকেয়া রেখেছে, যা করোনার কারণ দেখিয়ে পরিশোধ করা হয়নি।
সংস্থাটির সূত্র বলছে, সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভুঁইয়া ও মো. এহসান এলাহীর সময়ের এসব দুর্নীতির দায় এখনো টানতে হচ্ছে বিআরটিসিকে। বর্তমান চেয়ারম্যানের ঠিক আগে পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করা এই দুজনের সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিআরটিসির দেনা দাঁড়িয়েছিল ১০১ কোটি টাকা। গত চার বছরে তা থেকে ৯২ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
দেনা মেটাতে বাসভাড়া
রাজধানীর অনেক সাধারণ বাসযাত্রীর অভিযোগ, ঢাকার পথে এই সরকারি সংস্থার গাড়ি খুব বেশি রুটে দেখা যায় না। আবার হুটহাট রুট পরিবর্তনেরও নজির আছে। বিআরটিসির সূত্র বলছে, দেনা শোধের চাপের কারণে যাত্রীসেবায় কিছুটা কম গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে বাসভাড়া দেওয়া হচ্ছে। রাজধানীর পথে এখন তাদের ৫৫০টি গাড়ি যাত্রী পরিবহন করে। তবে এসব গাড়ি থেকে বেশি আয় হয় না। ১৭২টি গাড়ি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম গত সোমবার আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে ১৭২টি বাসভাড়া দেওয়ার বিষয়টি সত্যি বলে নিশ্চিত করেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছরে যে পরিমাণ দেনা হয়েছে, তা শোধ করতে অর্থ দরকার। সরকারি প্রতিষ্ঠানে বাসভাড়া দিয়ে ভালো আয় হচ্ছে। গত মাসে ১২ কোটি টাকা বেতন দেওয়া হয়েছে। প্রায় আড়াই কোটি টাকা লাভ হয়েছে।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, সাবেক কর্মকর্তাদের অনিয়মে বিআরটিসিতে বড় অঙ্কের বকেয়া ছিল। ২০২১ সাল থেকে তা এখন পর্যন্ত ৯ কোটিতে নামানো হয়েছে। বিভাগীয় মামলা ও চাপ প্রয়োগে পুরোনো বকেয়া আদায়ের চেষ্টা চলছে, তবে পুরোটা আদায় কঠিন। এস্টেট ডিপার্টমেন্টের জটিলতা ও অনিয়ম চরমে পৌঁছেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটি ঠিক করার চেষ্টা চলছে।
লিজ আর দেওয়া হবে না
সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়ার বাইরে বর্তমানে বেসরকারি কোম্পানির হাতেও ১৯টি বিআরটিসির বাস লিজ দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি দেখেন, নিয়ম ভেঙে বিআরটিসির বাস বেসরকারি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ লিজ প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে বন্ধ করা হবে। মেয়াদ শেষ হলে আর নবায়ন করা হবে না। এসব লিজ মালিক বছরের পর বছর রাজস্ব না দিয়ে বিআরটিসিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যুক্ত বাসগুলোও অবহেলায় ভাঙারিতে পরিণত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক যোগাযোগ ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত তিন অর্থবছরে বিআরটিসির পরিচালনা কমিটি সংকট নিরসনে বড় ভূমিকা রেখেছে। তবে বিআরটিসি যতই লাভজনক প্রতিষ্ঠান হোক না কেন, তাদের প্রধান কাজ জনগণকে সেবা দেওয়া। সেখানে তাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ইজারা দিয়ে লাভ করা মুখ্য লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়।
অধ্যাপক হাদিউজ্জামান আরও বলেন, বিআরটিসির যে কাঠামোগত সক্ষমতা আছে, তা দেশের অন্য কোনো বাস কোম্পানির নেই। সেটা কাজে লাগাতে হবে। বিআরটিসির একটা প্রবণতা আছে, রুট সংখ্যা বাড়ানো। কিন্তু অনেক রুটে দরকার মতো বাস থাকে না। এদিকে নজর দিতে হবে।
সৌগত বসু, ঢাকা

রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ২০১৩ সালে ৫০টি ‘আর্টিকুলেটেড’ বাস কিনেছিল। বলা হয়েছিল, ভারতীয় ঋণের আওতায় কেনা এ বাসগুলো ঢাকার গণপরিবহনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। কিন্তু মাত্র সাত বছরের মধ্যেই ৪৩টি বাস অকেজো হয়ে পড়ে, যা অনেককে মনে করিয়ে দিতে পারে আড়াই দশক আগে সুইডেন থেকে কেনা বিশ্বখ্যাত ভলভো বাসের অভিজ্ঞতার কথা।
রাষ্ট্রীয় সম্পদের প্রতি অযত্ন-অবহেলা সরকারি এ প্রতিষ্ঠানে জেঁকে থাকা গাফিলতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির একটি দিক মাত্র। গত কয়েক বছর আগের অনিয়ম-দুর্নীতির জের বিআরটিসি এখনো টেনে চলেছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে তার মূল লক্ষ্য—যাত্রীসেবা।
আর্টিকুলেটেডে ভলভোর ছায়া
প্রচলিত বাসের প্রায় দ্বিগুণ দৈর্ঘ্যের ‘আর্টিকুলেটেড’ বাসের কাঠামোর জন্য বিদেশে জনসাধারণের কাছে বেন্ডি, স্ট্রেচ, স্লিংকি ইত্যাদি নামে পরিচিত।
বৈধ দৈর্ঘ্যের মধ্যে থেকে এই বাসে তুলনামূলকভাবে বেশি যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হওয়ায় এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তুলনামূলক সরু রাস্তায় চালানো কিছুটা সমস্যা হওয়ায় অবশ্য বিশ্বের অনেক শহর থেকে দুটি অংশ জুড়ে তৈরি করা এ বাস তুলে দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালে কেনা ৫০টি আর্টিকুলেটেড বাসের মধ্যে বিআরটিসি ২০২২ সালে ২৭টি আবার চালু করে। বাকি বাসগুলো এখনো ডিপোতে পড়ে রয়েছে। এসব নিয়ে গত ১৫ বছরে সংস্থাটির বহরে যুক্ত হয়েছে মোট ১ হাজার ৫৫৮টি বাস। এর মধ্যে কাগজে-কলমেই চালু আছে ১ হাজার ২৪৪টি। আর চারটি প্রকল্পে এসব বাস কেনায় খরচ হয়েছে প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা। এ সময়ে অনেক বাস নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় কিছু ‘ভাঙারি’ হিসেবে কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে। যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বা সময়মতো মেরামত না করায় গাড়ি অচল পড়ে থাকায় যাত্রীসেবা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বিআরটিসির আয়ে প্রভাব পড়েছে। দায়দেনা শোধে অসুবিধা ও কর্মীদের বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়াসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত সংস্থাটি।
বিআরটিসিসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এখন আরও ৮টি আর্টিকুলেটেড বাস সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব বাসের দুটি অংশের মাঝখানে থাকা রাবারের সংযোগটি জার্মানিতে তৈরি।
চাহিদা নিতান্ত সীমিত বলে এগুলো স্থানীয় বাজারে সাধারণত পাওয়া যায় না। প্রতিটি বাসের নতুন সংযোগের মূল্য ৩৩ লাখ টাকার বেশি। তবে দেশি প্রযুক্তিতে মাত্র ৪০ হাজার টাকায় পুরোনোগুলো মেরামত করা হচ্ছে।
বিআরটিসি অনেক ঘটা করে ২০০১-০২ সালে সুইডেনের বিশ্বখ্যাত ভলভো কোম্পানির ৫০টি আধুনিক দোতলা বাস ঢাকার রাস্তায় নামিয়েছিল। অত্যাধুনিক বাসগুলোয় যাত্রা বেশ আরামদায়ক হওয়ায় তা প্রশংসিত হয়েছিল। তবে ইজারা ব্যবস্থাপনার ত্রুটি এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই বাসগুলো একে একে অকেজো হয়ে পড়ে।
দামি বা বিশেষ কোম্পানির গাড়ি ছাড়াও সাধারণভাবেই রাষ্ট্রীয় এ কোম্পানির গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারে অবহেলার অভিযোগ পুরোনো। সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক কয়েক বছরে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, মতিঝিল, কল্যাণপুর, মিরপুর, জোয়ারসাহারা, গাজীপুরসহ বিভিন্ন ডিপোতে ১৩৯টি বাস অকেজো হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে পড়ে ছিল। এ বাসগুলোর অনেক যন্ত্রাংশ মেরামতযোগ্য হলেও পড়ে থেকে বাইরের অংশ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সরকারি সম্পদের অপচয় হয়েছে।
তিন অর্থবছরের অনিয়ম ভোগাচ্ছে
পরিবহন নিরীক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীর তেজগাঁওসহ বিআরটিসির বিভিন্ন বাস ডিপোর ব্যবস্থাপক ও কর্মকর্তারা ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ সাল পর্যন্ত তিন অর্থবছরে ৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। চালক, কন্ডাক্টর ও লিজগ্রহণকারী বাইরের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব যথাযথভাবে ব্যাংকে জমা না করায় এই আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, কেবল ওই তিন অর্থবছরে বিআরটিসির মোট দুর্নীতির অঙ্ক ২৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার বেশি। মামলা-মোকদ্দমার কারণে প্রাপ্য আদায়েও বিআরটিসি সমস্যায় পড়ছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, কল্যাণপুর বাস ডিপোর ৩৭টি দোকানের বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ব্যবসার ধরন পরিবর্তনের ফি না জমা হয়নি। ফুলবাড়িয়া সিবিএস-২ মার্কেটের বকেয়া ভাড়া আদায়ে জটিলতা রয়েছে। এসব ব্যর্থতার পেছনে বিআরটিসির প্রধান কার্যালয়ের এস্টেট বিভাগের কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। মতিঝিল, কল্যাণপুর, জোয়ারসাহারা, বরিশাল, খুলনা, বগুড়া বাস ডিপো ও প্রধান কার্যালয় ইজারা বাবদ ৬ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে বিআরটিসি। আন্তর্জাতিক রুটে শ্যামলী পরিবহন, রয়েল কোচ ও এন আর ট্রাভেলস তিন বছরে ২৪ লাখ ৬১ হাজার টাকার রয়্যালটি ফি বকেয়া রেখেছে, যা করোনার কারণ দেখিয়ে পরিশোধ করা হয়নি।
সংস্থাটির সূত্র বলছে, সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভুঁইয়া ও মো. এহসান এলাহীর সময়ের এসব দুর্নীতির দায় এখনো টানতে হচ্ছে বিআরটিসিকে। বর্তমান চেয়ারম্যানের ঠিক আগে পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করা এই দুজনের সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিআরটিসির দেনা দাঁড়িয়েছিল ১০১ কোটি টাকা। গত চার বছরে তা থেকে ৯২ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
দেনা মেটাতে বাসভাড়া
রাজধানীর অনেক সাধারণ বাসযাত্রীর অভিযোগ, ঢাকার পথে এই সরকারি সংস্থার গাড়ি খুব বেশি রুটে দেখা যায় না। আবার হুটহাট রুট পরিবর্তনেরও নজির আছে। বিআরটিসির সূত্র বলছে, দেনা শোধের চাপের কারণে যাত্রীসেবায় কিছুটা কম গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে বাসভাড়া দেওয়া হচ্ছে। রাজধানীর পথে এখন তাদের ৫৫০টি গাড়ি যাত্রী পরিবহন করে। তবে এসব গাড়ি থেকে বেশি আয় হয় না। ১৭২টি গাড়ি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম গত সোমবার আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে ১৭২টি বাসভাড়া দেওয়ার বিষয়টি সত্যি বলে নিশ্চিত করেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছরে যে পরিমাণ দেনা হয়েছে, তা শোধ করতে অর্থ দরকার। সরকারি প্রতিষ্ঠানে বাসভাড়া দিয়ে ভালো আয় হচ্ছে। গত মাসে ১২ কোটি টাকা বেতন দেওয়া হয়েছে। প্রায় আড়াই কোটি টাকা লাভ হয়েছে।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, সাবেক কর্মকর্তাদের অনিয়মে বিআরটিসিতে বড় অঙ্কের বকেয়া ছিল। ২০২১ সাল থেকে তা এখন পর্যন্ত ৯ কোটিতে নামানো হয়েছে। বিভাগীয় মামলা ও চাপ প্রয়োগে পুরোনো বকেয়া আদায়ের চেষ্টা চলছে, তবে পুরোটা আদায় কঠিন। এস্টেট ডিপার্টমেন্টের জটিলতা ও অনিয়ম চরমে পৌঁছেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটি ঠিক করার চেষ্টা চলছে।
লিজ আর দেওয়া হবে না
সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়ার বাইরে বর্তমানে বেসরকারি কোম্পানির হাতেও ১৯টি বিআরটিসির বাস লিজ দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি দেখেন, নিয়ম ভেঙে বিআরটিসির বাস বেসরকারি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ লিজ প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে বন্ধ করা হবে। মেয়াদ শেষ হলে আর নবায়ন করা হবে না। এসব লিজ মালিক বছরের পর বছর রাজস্ব না দিয়ে বিআরটিসিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যুক্ত বাসগুলোও অবহেলায় ভাঙারিতে পরিণত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক যোগাযোগ ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত তিন অর্থবছরে বিআরটিসির পরিচালনা কমিটি সংকট নিরসনে বড় ভূমিকা রেখেছে। তবে বিআরটিসি যতই লাভজনক প্রতিষ্ঠান হোক না কেন, তাদের প্রধান কাজ জনগণকে সেবা দেওয়া। সেখানে তাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ইজারা দিয়ে লাভ করা মুখ্য লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়।
অধ্যাপক হাদিউজ্জামান আরও বলেন, বিআরটিসির যে কাঠামোগত সক্ষমতা আছে, তা দেশের অন্য কোনো বাস কোম্পানির নেই। সেটা কাজে লাগাতে হবে। বিআরটিসির একটা প্রবণতা আছে, রুট সংখ্যা বাড়ানো। কিন্তু অনেক রুটে দরকার মতো বাস থাকে না। এদিকে নজর দিতে হবে।

রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ২০১৩ সালে ৫০টি ‘আর্টিকুলেটেড’ বাস কিনেছিল। বলা হয়েছিল, ভারতীয় ঋণের আওতায় কেনা এ বাসগুলো ঢাকার গণপরিবহনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। কিন্তু মাত্র সাত বছরের মধ্যেই ৪৩টি বাস অকেজো হয়ে পড়ে, যা অনেককে মনে করিয়ে দিতে পারে আড়াই দশক আগে সুইডেন থেকে কেনা বিশ্বখ্যাত ভলভো বাসের অভিজ্ঞতার কথা।
রাষ্ট্রীয় সম্পদের প্রতি অযত্ন-অবহেলা সরকারি এ প্রতিষ্ঠানে জেঁকে থাকা গাফিলতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির একটি দিক মাত্র। গত কয়েক বছর আগের অনিয়ম-দুর্নীতির জের বিআরটিসি এখনো টেনে চলেছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে তার মূল লক্ষ্য—যাত্রীসেবা।
আর্টিকুলেটেডে ভলভোর ছায়া
প্রচলিত বাসের প্রায় দ্বিগুণ দৈর্ঘ্যের ‘আর্টিকুলেটেড’ বাসের কাঠামোর জন্য বিদেশে জনসাধারণের কাছে বেন্ডি, স্ট্রেচ, স্লিংকি ইত্যাদি নামে পরিচিত।
বৈধ দৈর্ঘ্যের মধ্যে থেকে এই বাসে তুলনামূলকভাবে বেশি যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হওয়ায় এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তুলনামূলক সরু রাস্তায় চালানো কিছুটা সমস্যা হওয়ায় অবশ্য বিশ্বের অনেক শহর থেকে দুটি অংশ জুড়ে তৈরি করা এ বাস তুলে দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালে কেনা ৫০টি আর্টিকুলেটেড বাসের মধ্যে বিআরটিসি ২০২২ সালে ২৭টি আবার চালু করে। বাকি বাসগুলো এখনো ডিপোতে পড়ে রয়েছে। এসব নিয়ে গত ১৫ বছরে সংস্থাটির বহরে যুক্ত হয়েছে মোট ১ হাজার ৫৫৮টি বাস। এর মধ্যে কাগজে-কলমেই চালু আছে ১ হাজার ২৪৪টি। আর চারটি প্রকল্পে এসব বাস কেনায় খরচ হয়েছে প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা। এ সময়ে অনেক বাস নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় কিছু ‘ভাঙারি’ হিসেবে কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে। যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বা সময়মতো মেরামত না করায় গাড়ি অচল পড়ে থাকায় যাত্রীসেবা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বিআরটিসির আয়ে প্রভাব পড়েছে। দায়দেনা শোধে অসুবিধা ও কর্মীদের বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়াসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত সংস্থাটি।
বিআরটিসিসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এখন আরও ৮টি আর্টিকুলেটেড বাস সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব বাসের দুটি অংশের মাঝখানে থাকা রাবারের সংযোগটি জার্মানিতে তৈরি।
চাহিদা নিতান্ত সীমিত বলে এগুলো স্থানীয় বাজারে সাধারণত পাওয়া যায় না। প্রতিটি বাসের নতুন সংযোগের মূল্য ৩৩ লাখ টাকার বেশি। তবে দেশি প্রযুক্তিতে মাত্র ৪০ হাজার টাকায় পুরোনোগুলো মেরামত করা হচ্ছে।
বিআরটিসি অনেক ঘটা করে ২০০১-০২ সালে সুইডেনের বিশ্বখ্যাত ভলভো কোম্পানির ৫০টি আধুনিক দোতলা বাস ঢাকার রাস্তায় নামিয়েছিল। অত্যাধুনিক বাসগুলোয় যাত্রা বেশ আরামদায়ক হওয়ায় তা প্রশংসিত হয়েছিল। তবে ইজারা ব্যবস্থাপনার ত্রুটি এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই বাসগুলো একে একে অকেজো হয়ে পড়ে।
দামি বা বিশেষ কোম্পানির গাড়ি ছাড়াও সাধারণভাবেই রাষ্ট্রীয় এ কোম্পানির গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারে অবহেলার অভিযোগ পুরোনো। সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক কয়েক বছরে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, মতিঝিল, কল্যাণপুর, মিরপুর, জোয়ারসাহারা, গাজীপুরসহ বিভিন্ন ডিপোতে ১৩৯টি বাস অকেজো হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে পড়ে ছিল। এ বাসগুলোর অনেক যন্ত্রাংশ মেরামতযোগ্য হলেও পড়ে থেকে বাইরের অংশ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সরকারি সম্পদের অপচয় হয়েছে।
তিন অর্থবছরের অনিয়ম ভোগাচ্ছে
পরিবহন নিরীক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীর তেজগাঁওসহ বিআরটিসির বিভিন্ন বাস ডিপোর ব্যবস্থাপক ও কর্মকর্তারা ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ সাল পর্যন্ত তিন অর্থবছরে ৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। চালক, কন্ডাক্টর ও লিজগ্রহণকারী বাইরের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব যথাযথভাবে ব্যাংকে জমা না করায় এই আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, কেবল ওই তিন অর্থবছরে বিআরটিসির মোট দুর্নীতির অঙ্ক ২৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার বেশি। মামলা-মোকদ্দমার কারণে প্রাপ্য আদায়েও বিআরটিসি সমস্যায় পড়ছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, কল্যাণপুর বাস ডিপোর ৩৭টি দোকানের বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ব্যবসার ধরন পরিবর্তনের ফি না জমা হয়নি। ফুলবাড়িয়া সিবিএস-২ মার্কেটের বকেয়া ভাড়া আদায়ে জটিলতা রয়েছে। এসব ব্যর্থতার পেছনে বিআরটিসির প্রধান কার্যালয়ের এস্টেট বিভাগের কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। মতিঝিল, কল্যাণপুর, জোয়ারসাহারা, বরিশাল, খুলনা, বগুড়া বাস ডিপো ও প্রধান কার্যালয় ইজারা বাবদ ৬ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে বিআরটিসি। আন্তর্জাতিক রুটে শ্যামলী পরিবহন, রয়েল কোচ ও এন আর ট্রাভেলস তিন বছরে ২৪ লাখ ৬১ হাজার টাকার রয়্যালটি ফি বকেয়া রেখেছে, যা করোনার কারণ দেখিয়ে পরিশোধ করা হয়নি।
সংস্থাটির সূত্র বলছে, সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভুঁইয়া ও মো. এহসান এলাহীর সময়ের এসব দুর্নীতির দায় এখনো টানতে হচ্ছে বিআরটিসিকে। বর্তমান চেয়ারম্যানের ঠিক আগে পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করা এই দুজনের সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিআরটিসির দেনা দাঁড়িয়েছিল ১০১ কোটি টাকা। গত চার বছরে তা থেকে ৯২ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
দেনা মেটাতে বাসভাড়া
রাজধানীর অনেক সাধারণ বাসযাত্রীর অভিযোগ, ঢাকার পথে এই সরকারি সংস্থার গাড়ি খুব বেশি রুটে দেখা যায় না। আবার হুটহাট রুট পরিবর্তনেরও নজির আছে। বিআরটিসির সূত্র বলছে, দেনা শোধের চাপের কারণে যাত্রীসেবায় কিছুটা কম গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে বাসভাড়া দেওয়া হচ্ছে। রাজধানীর পথে এখন তাদের ৫৫০টি গাড়ি যাত্রী পরিবহন করে। তবে এসব গাড়ি থেকে বেশি আয় হয় না। ১৭২টি গাড়ি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম গত সোমবার আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে ১৭২টি বাসভাড়া দেওয়ার বিষয়টি সত্যি বলে নিশ্চিত করেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছরে যে পরিমাণ দেনা হয়েছে, তা শোধ করতে অর্থ দরকার। সরকারি প্রতিষ্ঠানে বাসভাড়া দিয়ে ভালো আয় হচ্ছে। গত মাসে ১২ কোটি টাকা বেতন দেওয়া হয়েছে। প্রায় আড়াই কোটি টাকা লাভ হয়েছে।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, সাবেক কর্মকর্তাদের অনিয়মে বিআরটিসিতে বড় অঙ্কের বকেয়া ছিল। ২০২১ সাল থেকে তা এখন পর্যন্ত ৯ কোটিতে নামানো হয়েছে। বিভাগীয় মামলা ও চাপ প্রয়োগে পুরোনো বকেয়া আদায়ের চেষ্টা চলছে, তবে পুরোটা আদায় কঠিন। এস্টেট ডিপার্টমেন্টের জটিলতা ও অনিয়ম চরমে পৌঁছেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটি ঠিক করার চেষ্টা চলছে।
লিজ আর দেওয়া হবে না
সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়ার বাইরে বর্তমানে বেসরকারি কোম্পানির হাতেও ১৯টি বিআরটিসির বাস লিজ দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি দেখেন, নিয়ম ভেঙে বিআরটিসির বাস বেসরকারি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ লিজ প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে বন্ধ করা হবে। মেয়াদ শেষ হলে আর নবায়ন করা হবে না। এসব লিজ মালিক বছরের পর বছর রাজস্ব না দিয়ে বিআরটিসিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যুক্ত বাসগুলোও অবহেলায় ভাঙারিতে পরিণত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক যোগাযোগ ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত তিন অর্থবছরে বিআরটিসির পরিচালনা কমিটি সংকট নিরসনে বড় ভূমিকা রেখেছে। তবে বিআরটিসি যতই লাভজনক প্রতিষ্ঠান হোক না কেন, তাদের প্রধান কাজ জনগণকে সেবা দেওয়া। সেখানে তাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ইজারা দিয়ে লাভ করা মুখ্য লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়।
অধ্যাপক হাদিউজ্জামান আরও বলেন, বিআরটিসির যে কাঠামোগত সক্ষমতা আছে, তা দেশের অন্য কোনো বাস কোম্পানির নেই। সেটা কাজে লাগাতে হবে। বিআরটিসির একটা প্রবণতা আছে, রুট সংখ্যা বাড়ানো। কিন্তু অনেক রুটে দরকার মতো বাস থাকে না। এদিকে নজর দিতে হবে।

আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবারের পর ঐকমত্য কমিশন গতকালও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক করলেও কোনো সমাধান মেলেনি। এমন প্রেক্ষাপটে আজ রোববার কমিশন আবার নিজেরা বৈঠক করবে এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবার বসবে।
ঐকমত্য কমিশনের জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকটি বেলা দেড়টার পর শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টার পরে শেষ হয়। প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠকেও সংবিধান নিয়ে সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করার উপায় বের হয়নি।
সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কমিশনের সিদ্ধান্ত হলো, গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। তার অধীনে জারি হবে গণভোট-বিষয়ক একটি অধ্যাদেশ। এর ভিত্তিতেই হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যেই সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে। প্রসঙ্গত, একই সময় এ পরিষদ নিয়মিত সংসদ হিসেবেও কাজ করবে। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায়ই সংবিধান সংস্কার হবে।
গতকালের আলোচনা বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা ২৭০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন না করলে সনদে থাকা বিষয়গুলো কী হবে—সেখানেই আটকে যাচ্ছে আলোচনা। কারণ আমরা তেমন সমাধান দিতে পারছি না। দেশে অতীতে এ-সংক্রান্ত কোনো উদাহরণ নেই। দেশের বাইরেও এ ধরনের উদাহরণ পাইনি।’
কোনো দল আগামী নির্বাচনে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সংবিধান সংস্কার কীভাবে হবে, এ প্রশ্নও আছে। বিষয়টি তখন মূলত নির্ভর করবে বেশি আসন পাওয়া কয়েকটি দলের সদিচ্ছার ওপর। কিন্তু কমিশন চাইছে এ অনিশ্চয়তার অবকাশ না রেখে এমন কোনো বিধান করা, যা সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেবে।
গতকালের বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা একাধিক মত দিয়ে বলেছেন, সেগুলো আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না তাঁ। একটি মত হলো,নির্ধারিত সময়ে সংস্কার বাস্তবায়ন করা না হলে সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এটি আইনগতভাবে ঠিক হলেও রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সংসদ এভাবে বিলুপ্ত হলে নতুন সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন তাঁরা।
আরও যে কয়েকটি মত গতকাল এসেছে তার মধ্যে রয়েছে, প্রথমত, পরিষদে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সনদের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাওয়া এবং দ্বিতীয়ত, আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বৈঠকে বসে সনদের সংযুক্তি বাস্তবায়ন করবে এবং তারপর সংসদ বসবে। কিন্তু এগুলোও কার্যকর বা বাস্তবসম্মত মনে করেননি বিশেষজ্ঞদের সবাই।
একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, সময়সীমার মধ্যে না সম্পন্ন করলে আপনা থেকেই সংবিধানে বিষয়গুলো যুক্ত হওয়ার ধারণা বাস্তবসম্মত না। কারণ বিলগুলোর খসড়া তৈরি করা নেই। এটা করা বিশেষজ্ঞদের কাজ না। সংসদে আলোচনা করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই এ সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি আরও বলেন, সনদের একটি বিধান হচ্ছে, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ করা হবে। কিন্তু কোন মৌলিক অধিকারটি সম্প্রসারণ করা হবে, তা বলা নেই। সংসদ সদস্যদের আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এসব কারণে আমরা সিদ্ধান্ত দিতে পারিনি। কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বৈঠক করবেন, প্রয়োজনে আমাদের সহযোগিতা নেবেন।’
গতকালের বৈঠকে আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বসে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করার যে প্রস্তাব আসে তার পক্ষে বলা হয়, এতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা দ্রুত সনদ বাস্তবায়নে কাজ করবেন। কারণ তাঁরা বিলম্ব না করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে চাইবেন। একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা হলেও বেশির ভাগের মত, এটিও বাস্তবসম্মত নয়। কারণ জনপ্রতিনিধিদের শপথের মাধ্যমে সংসদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্বে থেকে যেতে হবে। এটা প্রধান উপদেষ্টাই মানবেন না।
এ অবস্থায় সমাধান কী হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমরা আদৌ কোনো বাধ্যবাধকতা তৈরি করে দিতে পারব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ এমন আইনি ও রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্য সমাধান পাইনি। তাই বিষয়টি আমাদের সুপারিশে না-ও থাকতে পারে।’
সনদ-বিষয়ক আদেশের খুঁটিনাটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। গণভোটের দিনক্ষণ সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কমিশন সূত্র জানায়, আজ সকালে নিজেরা বৈঠক করার পর প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও আবার বৈঠক করা হবে। ৩১ অক্টোবরের মেয়াদের মধ্যেই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন।
এনসিপির সঙ্গে বৈঠক
গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার আগে কমিশনের সদস্যরা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠক করেন। ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হলেও দলটি সই করেনি। এনসিপি বলেছিল, বাস্তবায়নের আদেশের চূড়ান্ত খসড়া না দেখে তারা স্বাক্ষর করবে না।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, গতকালের বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধিরা ‘স্পষ্টভাবে’ জানিয়েছেন যে তাঁরা স্বাক্ষর করতে চান। তাঁরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন, যা কমিশন আইনি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়েছে। এনসিপির প্রস্তাবে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই দিকই আছে। সেই বিষয়গুলো বিবেচনা করে কমিশন এগোচ্ছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে, যেন সবাই স্বাক্ষরের দিকে আসে।
বিশেষজ্ঞ হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন।
আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবারের পর ঐকমত্য কমিশন গতকালও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক করলেও কোনো সমাধান মেলেনি। এমন প্রেক্ষাপটে আজ রোববার কমিশন আবার নিজেরা বৈঠক করবে এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবার বসবে।
ঐকমত্য কমিশনের জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকটি বেলা দেড়টার পর শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টার পরে শেষ হয়। প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠকেও সংবিধান নিয়ে সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করার উপায় বের হয়নি।
সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কমিশনের সিদ্ধান্ত হলো, গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। তার অধীনে জারি হবে গণভোট-বিষয়ক একটি অধ্যাদেশ। এর ভিত্তিতেই হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যেই সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে। প্রসঙ্গত, একই সময় এ পরিষদ নিয়মিত সংসদ হিসেবেও কাজ করবে। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায়ই সংবিধান সংস্কার হবে।
গতকালের আলোচনা বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা ২৭০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন না করলে সনদে থাকা বিষয়গুলো কী হবে—সেখানেই আটকে যাচ্ছে আলোচনা। কারণ আমরা তেমন সমাধান দিতে পারছি না। দেশে অতীতে এ-সংক্রান্ত কোনো উদাহরণ নেই। দেশের বাইরেও এ ধরনের উদাহরণ পাইনি।’
কোনো দল আগামী নির্বাচনে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সংবিধান সংস্কার কীভাবে হবে, এ প্রশ্নও আছে। বিষয়টি তখন মূলত নির্ভর করবে বেশি আসন পাওয়া কয়েকটি দলের সদিচ্ছার ওপর। কিন্তু কমিশন চাইছে এ অনিশ্চয়তার অবকাশ না রেখে এমন কোনো বিধান করা, যা সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেবে।
গতকালের বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা একাধিক মত দিয়ে বলেছেন, সেগুলো আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না তাঁ। একটি মত হলো,নির্ধারিত সময়ে সংস্কার বাস্তবায়ন করা না হলে সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এটি আইনগতভাবে ঠিক হলেও রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সংসদ এভাবে বিলুপ্ত হলে নতুন সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন তাঁরা।
আরও যে কয়েকটি মত গতকাল এসেছে তার মধ্যে রয়েছে, প্রথমত, পরিষদে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সনদের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাওয়া এবং দ্বিতীয়ত, আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বৈঠকে বসে সনদের সংযুক্তি বাস্তবায়ন করবে এবং তারপর সংসদ বসবে। কিন্তু এগুলোও কার্যকর বা বাস্তবসম্মত মনে করেননি বিশেষজ্ঞদের সবাই।
একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, সময়সীমার মধ্যে না সম্পন্ন করলে আপনা থেকেই সংবিধানে বিষয়গুলো যুক্ত হওয়ার ধারণা বাস্তবসম্মত না। কারণ বিলগুলোর খসড়া তৈরি করা নেই। এটা করা বিশেষজ্ঞদের কাজ না। সংসদে আলোচনা করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই এ সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি আরও বলেন, সনদের একটি বিধান হচ্ছে, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ করা হবে। কিন্তু কোন মৌলিক অধিকারটি সম্প্রসারণ করা হবে, তা বলা নেই। সংসদ সদস্যদের আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এসব কারণে আমরা সিদ্ধান্ত দিতে পারিনি। কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বৈঠক করবেন, প্রয়োজনে আমাদের সহযোগিতা নেবেন।’
গতকালের বৈঠকে আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বসে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করার যে প্রস্তাব আসে তার পক্ষে বলা হয়, এতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা দ্রুত সনদ বাস্তবায়নে কাজ করবেন। কারণ তাঁরা বিলম্ব না করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে চাইবেন। একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা হলেও বেশির ভাগের মত, এটিও বাস্তবসম্মত নয়। কারণ জনপ্রতিনিধিদের শপথের মাধ্যমে সংসদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্বে থেকে যেতে হবে। এটা প্রধান উপদেষ্টাই মানবেন না।
এ অবস্থায় সমাধান কী হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমরা আদৌ কোনো বাধ্যবাধকতা তৈরি করে দিতে পারব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ এমন আইনি ও রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্য সমাধান পাইনি। তাই বিষয়টি আমাদের সুপারিশে না-ও থাকতে পারে।’
সনদ-বিষয়ক আদেশের খুঁটিনাটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। গণভোটের দিনক্ষণ সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কমিশন সূত্র জানায়, আজ সকালে নিজেরা বৈঠক করার পর প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও আবার বৈঠক করা হবে। ৩১ অক্টোবরের মেয়াদের মধ্যেই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন।
এনসিপির সঙ্গে বৈঠক
গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার আগে কমিশনের সদস্যরা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠক করেন। ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হলেও দলটি সই করেনি। এনসিপি বলেছিল, বাস্তবায়নের আদেশের চূড়ান্ত খসড়া না দেখে তারা স্বাক্ষর করবে না।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, গতকালের বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধিরা ‘স্পষ্টভাবে’ জানিয়েছেন যে তাঁরা স্বাক্ষর করতে চান। তাঁরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন, যা কমিশন আইনি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়েছে। এনসিপির প্রস্তাবে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই দিকই আছে। সেই বিষয়গুলো বিবেচনা করে কমিশন এগোচ্ছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে, যেন সবাই স্বাক্ষরের দিকে আসে।
বিশেষজ্ঞ হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন।
আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ২০১৩ সালে ৫০টি ‘আর্টিকুলেটেড’ বাস কিনেছিল। বলা হয়েছিল, ভারতীয় ঋণের আওতায় কেনা এ বাসগুলো ঢাকার গণপরিবহনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। কিন্তু মাত্র সাত বছরের মধ্যেই ৪৩টি বাস অকেজো হয়ে পড়ে, যা অনেককে মনে করিয়ে দিতে পারে আড়াই দশক আগে সুইডেন থেকে কেনা বিশ
৩০ নভেম্বর ২০২৪
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে নতুন বিধান, আবার কিছু কিছু বিধান আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইভিএম ব্যবহার বাতিল, ‘না ভোট’ পুনর্বহাল, প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয় ও সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশের বাধ্যবাধকতা এবং পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা।
সংশোধিত আরপিওর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:
আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে তাঁকে না ভোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। নির্বাচনে না ভোট বেশি হলে সেখানে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন হবে। তবে দ্বিতীয়বারও একক প্রার্থী হলে সেই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার বিধানটিও যুক্ত করা হয়েছে। তবে ভোট গণনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী তথা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলাভিত্তিক নির্বাচন অফিসগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রার্থীদের দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আয় ও সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করা হবে।
আগে দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে জোটের যেকোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করতে পারত। সেটি সংশোধন করা হয়েছে। জোটভুক্ত হলেও প্রার্থীকে নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ভোটের সময় অনেকে জোটভুক্ত হলে জনপ্রিয় বা বড় দলের মার্কায় ভোট করতেন। এখন আর সে সুযোগ থাকছে না।
প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের বিধানটি আরপিওতে যুক্ত করা হয়েছে। এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের পাশাপাশি আইনি হেফাজতে থাকা, সরকারি কর্মকর্তা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা ভোট দিতে পারবেন।
প্রার্থীর জামানত বাড়ানো হয়েছে। আগে ২০ হাজার টাকা ছিল, তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো রাজনৈতিক দলকে ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান দিতে চাইলে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। যিনি অনুদান দেবেন, তাঁর ট্যাক্স রিটার্নও দিতে হবে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন পুরো আসনের ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা কমিয়েছিল। সংশোধিত আরপিওতে শুধু ভোটকেন্দ্র নয়, অনিয়ম হলে ইসি পুরো আসনের ভোট বন্ধ করতে পারবে, সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থীর হলফনামায় আগে শুধু দেশের সম্পদের হিসাব দেওয়া হতো। সংশোধিত আরপিওতে শুধু দেশের নয়, বিদেশের আয়ের উৎস, সম্পত্তির বিবরণ দিতে হবে।
এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-সংক্রান্ত বিধানটি সংশোধিত আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে নতুন বিধান, আবার কিছু কিছু বিধান আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইভিএম ব্যবহার বাতিল, ‘না ভোট’ পুনর্বহাল, প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয় ও সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশের বাধ্যবাধকতা এবং পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা।
সংশোধিত আরপিওর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:
আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে তাঁকে না ভোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। নির্বাচনে না ভোট বেশি হলে সেখানে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন হবে। তবে দ্বিতীয়বারও একক প্রার্থী হলে সেই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার বিধানটিও যুক্ত করা হয়েছে। তবে ভোট গণনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী তথা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলাভিত্তিক নির্বাচন অফিসগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রার্থীদের দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আয় ও সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করা হবে।
আগে দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে জোটের যেকোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করতে পারত। সেটি সংশোধন করা হয়েছে। জোটভুক্ত হলেও প্রার্থীকে নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ভোটের সময় অনেকে জোটভুক্ত হলে জনপ্রিয় বা বড় দলের মার্কায় ভোট করতেন। এখন আর সে সুযোগ থাকছে না।
প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের বিধানটি আরপিওতে যুক্ত করা হয়েছে। এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের পাশাপাশি আইনি হেফাজতে থাকা, সরকারি কর্মকর্তা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা ভোট দিতে পারবেন।
প্রার্থীর জামানত বাড়ানো হয়েছে। আগে ২০ হাজার টাকা ছিল, তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো রাজনৈতিক দলকে ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান দিতে চাইলে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। যিনি অনুদান দেবেন, তাঁর ট্যাক্স রিটার্নও দিতে হবে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন পুরো আসনের ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা কমিয়েছিল। সংশোধিত আরপিওতে শুধু ভোটকেন্দ্র নয়, অনিয়ম হলে ইসি পুরো আসনের ভোট বন্ধ করতে পারবে, সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থীর হলফনামায় আগে শুধু দেশের সম্পদের হিসাব দেওয়া হতো। সংশোধিত আরপিওতে শুধু দেশের নয়, বিদেশের আয়ের উৎস, সম্পত্তির বিবরণ দিতে হবে।
এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-সংক্রান্ত বিধানটি সংশোধিত আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ২০১৩ সালে ৫০টি ‘আর্টিকুলেটেড’ বাস কিনেছিল। বলা হয়েছিল, ভারতীয় ঋণের আওতায় কেনা এ বাসগুলো ঢাকার গণপরিবহনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। কিন্তু মাত্র সাত বছরের মধ্যেই ৪৩টি বাস অকেজো হয়ে পড়ে, যা অনেককে মনে করিয়ে দিতে পারে আড়াই দশক আগে সুইডেন থেকে কেনা বিশ
৩০ নভেম্বর ২০২৪
আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
১ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রায় লেখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকেরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাঁদের শিল্পকর্মই তাঁদের রায়।
তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন এরই মধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রায় লেখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকেরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাঁদের শিল্পকর্মই তাঁদের রায়।
তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন এরই মধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।

রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ২০১৩ সালে ৫০টি ‘আর্টিকুলেটেড’ বাস কিনেছিল। বলা হয়েছিল, ভারতীয় ঋণের আওতায় কেনা এ বাসগুলো ঢাকার গণপরিবহনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। কিন্তু মাত্র সাত বছরের মধ্যেই ৪৩টি বাস অকেজো হয়ে পড়ে, যা অনেককে মনে করিয়ে দিতে পারে আড়াই দশক আগে সুইডেন থেকে কেনা বিশ
৩০ নভেম্বর ২০২৪
আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
৮ ঘণ্টা আগেসিনেটে শুনানিতে ট্রাম্প–মনোনীত রাষ্ট্রদূত
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা বলেন ক্রিস্টেনসেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মমোনীত এই কূটনীতিক বলেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে সামরিক সহযোগিতা, সামুদ্রিক কর্মকাণ্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে সম্পৃক্ততাসহ চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরবনে। পাশাপাশি সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারত্ব ঘনিষ্ঠ করার জন্য কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দেন ক্রিস্টেনসেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন। সিনেট কমিটির অনুমোদনের পরই তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত হবে। এই মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে চার রাষ্ট্রদূত প্রার্থী লিখিত বিবৃতি তুলে ধরেন। পরে তাঁরা সিনেট সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরে নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস শুনানিতে বলেন, ‘আমরা এখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মুখে। বাংলাদেশ ও চীনের সামরিক সহযোগিতা দ্রুত বাড়ছে। যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন রাখার জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি কৌশলগত সাবমেরিন ঘাঁটি আধুনিকায়ন করেছে চীন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার চীনের তৈরি ২০টি জে-১০ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নতুন সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ও দূরপাল্লার রাডার কেনার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ পেলে চীনা সামরিক সরঞ্জামের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে বাংলাদেশের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে ক্রিস্টেনসেন কীভাবে কাজ করবেন, তা জানতে চান সিনেটর রিকেটস।

জবাবে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব নিয়ে আপনাদের মতো উদ্বেগ আমারও। রাষ্ট্রদূত নিয়োগ আমি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থেকে চীনের কার্যক্রমের ঝুঁকি ব্যাখ্যা করব। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা তুলে ধরব, যা দুই দেশের সামরিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।’
এ সময় সিনেটর রিকেটস বলেন, ‘এই শুনানির আগের দিনই সিনেট পররাষ্ট্র কমিটি সর্বসম্মতভাবে ‘থিংক টোয়াইস অ্যাক্ট’ পাস করেছে। এই আইন যুক্তরাষ্ট্রকে পূর্ণাঙ্গ কৌশল নিতে বাধ্য করবে, যাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশকে চীনা অস্ত্র কেনা থেকে বিরত রাখা যায়। আমরা আশা করি, আপনিও এই আইনের সহায়তা নিয়ে কাজ করবেন। তাহলে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধ সম্ভব হবে।’
তাঁর এই মন্তব্যের সূত্র ধরে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘সামরিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চমূল্যের সামরিক সরঞ্জামের বিকল্প হিসেবে মিত্রদেশগুলোর তৈরি সাশ্রয়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা বাংলাদেশকে জানাতে পারি। পাশাপাশি যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্ল্যাটফর্মগুলোকে অন্যান্য মিত্র বাহিনীর সঙ্গে আরও সমন্বিত ও কার্যকর করতে পারি।’
শুনানির শুরুতে লিখিত বিবৃতিতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে যে গণআন্দোলন হয়েছিল, তা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সরকারকে পতন ঘটায়। আগামী বছর বাংলাদেশের জনগণ ভোটে যাবে, যা দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের যাত্রায় পাশে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অনেক সময় তাঁর প্রাপ্য মনোযোগ পায় না, বড় প্রতিবেশীদের আড়ালে গুরুত্ব হারিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রসেবায় আমার দুই দশকের অভিজ্ঞতা, যার মধ্যে ঢাকার কর্মকালও রয়েছে। তাই, আমি বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থান বাংলাদেশকে উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার করে তুলেছে।’

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা বলেন ক্রিস্টেনসেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মমোনীত এই কূটনীতিক বলেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে সামরিক সহযোগিতা, সামুদ্রিক কর্মকাণ্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে সম্পৃক্ততাসহ চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরবনে। পাশাপাশি সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারত্ব ঘনিষ্ঠ করার জন্য কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দেন ক্রিস্টেনসেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন। সিনেট কমিটির অনুমোদনের পরই তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত হবে। এই মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে চার রাষ্ট্রদূত প্রার্থী লিখিত বিবৃতি তুলে ধরেন। পরে তাঁরা সিনেট সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরে নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস শুনানিতে বলেন, ‘আমরা এখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মুখে। বাংলাদেশ ও চীনের সামরিক সহযোগিতা দ্রুত বাড়ছে। যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন রাখার জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি কৌশলগত সাবমেরিন ঘাঁটি আধুনিকায়ন করেছে চীন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার চীনের তৈরি ২০টি জে-১০ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নতুন সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ও দূরপাল্লার রাডার কেনার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ পেলে চীনা সামরিক সরঞ্জামের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে বাংলাদেশের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে ক্রিস্টেনসেন কীভাবে কাজ করবেন, তা জানতে চান সিনেটর রিকেটস।

জবাবে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব নিয়ে আপনাদের মতো উদ্বেগ আমারও। রাষ্ট্রদূত নিয়োগ আমি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থেকে চীনের কার্যক্রমের ঝুঁকি ব্যাখ্যা করব। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা তুলে ধরব, যা দুই দেশের সামরিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।’
এ সময় সিনেটর রিকেটস বলেন, ‘এই শুনানির আগের দিনই সিনেট পররাষ্ট্র কমিটি সর্বসম্মতভাবে ‘থিংক টোয়াইস অ্যাক্ট’ পাস করেছে। এই আইন যুক্তরাষ্ট্রকে পূর্ণাঙ্গ কৌশল নিতে বাধ্য করবে, যাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশকে চীনা অস্ত্র কেনা থেকে বিরত রাখা যায়। আমরা আশা করি, আপনিও এই আইনের সহায়তা নিয়ে কাজ করবেন। তাহলে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধ সম্ভব হবে।’
তাঁর এই মন্তব্যের সূত্র ধরে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘সামরিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চমূল্যের সামরিক সরঞ্জামের বিকল্প হিসেবে মিত্রদেশগুলোর তৈরি সাশ্রয়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা বাংলাদেশকে জানাতে পারি। পাশাপাশি যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্ল্যাটফর্মগুলোকে অন্যান্য মিত্র বাহিনীর সঙ্গে আরও সমন্বিত ও কার্যকর করতে পারি।’
শুনানির শুরুতে লিখিত বিবৃতিতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে যে গণআন্দোলন হয়েছিল, তা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সরকারকে পতন ঘটায়। আগামী বছর বাংলাদেশের জনগণ ভোটে যাবে, যা দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের যাত্রায় পাশে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অনেক সময় তাঁর প্রাপ্য মনোযোগ পায় না, বড় প্রতিবেশীদের আড়ালে গুরুত্ব হারিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রসেবায় আমার দুই দশকের অভিজ্ঞতা, যার মধ্যে ঢাকার কর্মকালও রয়েছে। তাই, আমি বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থান বাংলাদেশকে উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার করে তুলেছে।’

রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ২০১৩ সালে ৫০টি ‘আর্টিকুলেটেড’ বাস কিনেছিল। বলা হয়েছিল, ভারতীয় ঋণের আওতায় কেনা এ বাসগুলো ঢাকার গণপরিবহনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। কিন্তু মাত্র সাত বছরের মধ্যেই ৪৩টি বাস অকেজো হয়ে পড়ে, যা অনেককে মনে করিয়ে দিতে পারে আড়াই দশক আগে সুইডেন থেকে কেনা বিশ
৩০ নভেম্বর ২০২৪
আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
৭ ঘণ্টা আগে