Ajker Patrika

যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনায় সমস্যার সমাধান করুন: শেখ হাসিনা

রাহুল শর্মা, কক্সবাজার থেকে
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯: ০৬
যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনায় সমস্যার সমাধান করুন: শেখ হাসিনা

যুদ্ধের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে সমঝোতা ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

আজ বুধবার পর্যটননগরী কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকতে ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। এই ফ্লিট রিভিউতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৮টি দেশ অংশগ্রহণ করেছে। আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, সংঘাত নয়, সমঝোতা এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।’ 

সরকারপ্রধান বলেন, ‘যেকোনো যুদ্ধ মানব জাতির জন্য কী ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তা আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতা, বীভৎসতা আপনারা দেখছেন। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।’ 

বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘নিকট অতীতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতি আমরা আমাদের অঙ্গীকারের প্রতিফলন দেখাতে সক্ষম হয়েছি। প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সম্পর্কিত মতপার্থক্য সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সমাধান করেছি। আলোচনার মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে সমস্যা সমাধানের একটা বিরল দৃষ্টান্ত আমরা স্থাপন করেছি।’ 

বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থানকে অগ্রাধিকার দেয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিকনির্দেশনায় আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে, “সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়”।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতি হিসেবে আমরা সর্বদা বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। সেই নীতি মেনেই আমরা সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। নিকট প্রতিবেশী এবং আঞ্চলিক সব দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক বজায় রেখেছি।’ 

বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য শক্তিশালী করা হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করা হচ্ছে যুদ্ধ করার জন্য নয়। আমাদের লক্ষ্য শান্তি এবং সৌহার্দ্য স্থাপন করা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।’ 

 আজ বুধবার পর্যটননগরী কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকতে ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রীসমুদ্রের বিশাল জলরাশি সবাইকে এক করেছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ভৌগোলিক সীমানার মাধ্যমে আমাদের সব দেশ বিভক্ত হলেও বন্ধুত্বের সেতুবন্ধে সমুদ্র উপকূলীয় সব দেশের সঙ্গে আমরা একই সূত্রে গাঁথা। অর্থাৎ বিশাল জলরাশি আমাদের একত্রিত করেছে।’ 

ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউর প্রতিপাদ্য ‘সীমানা ছাড়িয়ে বন্ধুত্ব’-এর প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। 

আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনী আয়োজিত ‘আইএফআর-২০২২’ ইভেন্টটি আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে সক্ষম হবে বলে আমি বিশ্বাস করি, যা সব সামুদ্রিক দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধিতে এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’ 

সমুদ্রের অপার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘সমসাময়িক সময়ে ভারত মহাসাগরের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ হয়ে থাকে সমুদ্রপথে। অবাধ বৈশ্বিক বাণিজ্যের স্বার্থেই সমুদ্রকে নিরাপদ রাখা আবশ্যক। সামুদ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং সমুদ্রসম্পদ আহরণ ও অনুসন্ধানের বিশাল সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে।’

সমুদ্রসম্পদ আহরণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার সমুদ্রসম্পদের এই অপার সম্ভাবনা উপলব্ধি করে বাংলাদেশের সামুদ্রিক খাতের উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তবে সমৃদ্ধ অর্থনীতি কেবল তখনই সম্ভব, যখন আমরা সমুদ্রে একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারব। সেই লক্ষ্যে আমরা আমাদের সমুদ্রসম্পদ রক্ষায় পরিকল্পিত সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গুণগত উন্নয়নমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের নৌবাহিনী আধুনিকায়ন করে যাচ্ছি।’ 

কক্সবাজারের সৌন্দর্যের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশ। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত বিশ্বের সর্ববৃহৎ সোনালি বালুকাময় সৈকত। বাংলাদেশ বিপুল সম্ভাবনার দেশ। আমি আশা করি, আইএফআর ২০২২-এ অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিগণ বাংলাদেশের সমুদ্র, সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে অবকাঠামো উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা, পর্যটন ইত্যাদি সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাবেন।’ 

 পর্যটননগরী কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকতে ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিটবাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৮টি দেশ অংশগ্রহণ করেছেবিশ্বের মোট ২৮টি দেশের নৌবাহিনীর প্রধান/উচ্চপদস্থ নৌ প্রতিনিধিগণ এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীসহ বিশ্বের সাতটি দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক যুদ্ধজাহাজ, মেরিটাইম পেট্রল এয়ারক্রাফট ও হেলিকপ্টার এই আইএফআরে অংশগ্রহণ করেছে। 

আইএফআর ২০২২-এ অংশগ্রহণকারী ২৮টি রাষ্ট্র হলো বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, মিশর, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইতালি, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, নেদারল্যান্ডস, ওমান, প্যালেস্টাইন, সুদান, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, তানজানিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। 

ইনানি সমুদ্রসৈকতের অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল। 

অনুষ্ঠানের শুরুতেই নৌবাহিনীর প্রথা অনুযায়ী ‘শিপস বেল’ বাজিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক এই অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আগত বিভিন্ন দেশের নৌসদস্যদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াড্স কর্তৃক সমুদ্রে একটি বিশেষ মহড়া প্রদর্শিত হয়। 

অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের সম্মানে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে দৃষ্টিনন্দন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপন করা হয়। 

এরপর প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার স্মৃতি অবলম্বনে নির্মিত চিত্র প্রদর্শনী ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ অবলোকন করেন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আইএফআর ২০২২ উপলক্ষে নির্মিত অত্যাধুনিক কজওয়ে ও জেটি উদ্বোধন করেন। 

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, একাধিক সংসদ সদস্য, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নানসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দেশ থেকে আগত সামরিক কর্মকর্তারা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আপিল বিভাগে দ্বিতীয় দিনের শুনানি

আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় সম্ভব কি না—আরও যেসব বিষয়ে যুক্তি দিলেন আইনজীবী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে দ্বিতীয় দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ বুধবার (২২ অক্টোবর)। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ নাগরিকের পক্ষ থেকে আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে এনে ১৪তম জাতীয় নির্বাচন থেকে তা কার্যকর করার আবেদন জানান।

শুনানি শেষে ড. শরীফ ভূঁইয়া আদালতে সাংবাদিকদের বলেন, বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এক রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেছিলেন, তাতে নানা ত্রুটি রয়েছে। তিনি যুক্তি দেন, বিচারপতিরা রায় দিতে গিয়ে সাংবিধানিক সীমা অতিক্রম করেছেন, এমনকি সংসদ ও নির্বাহী বিভাগের এখতিয়ারভুক্ত বিষয়েও সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এর ফলে তাঁরা বিচারিক ক্ষমতার বাইরে গিয়েছিলেন, যা রায়টির একটি মৌলিক ত্রুটি।

শরীফ ভূঁইয়া আরও বলেন, অনেকে মনে করেন, ২০০৬–০৮ সালের রাজনৈতিক সংকট ও সেনাসমর্থিত সরকারের উত্থান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যর্থতা। কিন্তু এটি সঠিক নয়। ওই সংকট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার ত্রুটির কারণে নয়, বরং তৎকালীন রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক বিধান না মেনে নিজেকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কারণে সৃষ্টি হয়েছিল। সংবিধান লঙ্ঘনের ফলে সেই সংকটের জন্ম হয়।

এ সময় আদালতে প্রশ্ন ওঠে—তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল হলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর এর প্রভাব পড়বে কি না। জবাবে শরীফ ভূঁইয়া বলেন, বর্তমান সরকার একটি ভিন্ন সাংবিধানিক বাস্তবতায় গঠিত—এটি সংবিধানের লিখিত অনুচ্ছেদের অধীনে নয়, বরং বিপ্লবপরবর্তী জন-আকাঙ্ক্ষা ও রাষ্ট্রীয় শূন্যতা থেকে উদ্ভূত। জনগণ এই সরকারকে তিনটি ম্যান্ডেট দিয়েছেন—দেশ পরিচালনা, সংস্কার বাস্তবায়ন ও নির্বাচন আয়োজনের পর নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেও বর্তমান সরকারের মেয়াদ বা দায়িত্বে কোনো পরিবর্তন আসবে না।

আদালতে আরও একটি প্রশ্ন ওঠে—যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসে, তাহলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে কি একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে?

ড. শরীফ ভূঁইয়া বলেন, না, সেটা সম্ভব নয়। কারণ, ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিধান অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে সরকার গঠন করতে হয়। বর্তমান সংসদ এক বছরের বেশি আগে বিলুপ্ত হয়েছে, তাই সেই সাংবিধানিক ‘ট্রিগারিং’ সময়সীমা পেরিয়ে গেছে। ফলে ত্রয়োদশ সংশোধনী পুনরুজ্জীবিত হলেও এখনই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা সম্ভব নয়। এটি কেবল পরবর্তী সংসদ ভেঙে গেলে কার্যকর হতে পারে।

শরীফ ভূঁইয়া আরও বলেন, বিচারপতি খায়রুল হকের রায় যদি আপিল বিভাগ বাতিল করেন, তবে ত্রয়োদশ সংশোধনী স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানের অংশ হিসেবে পুনরুজ্জীবিত হবে—এ জন্য নতুন কোনো আইন করতে সংসদের প্রয়োজন হবে না। এটি বাংলাদেশের প্রচলিত আইনব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠিত একটি নীতি।

আদালত গাইডলাইন দিতে পারে কি না—এ প্রশ্নে শরীফ ভূঁইয়া বলেন, আদালত রায়ে উল্লেখ করতে পারেন যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারই আগামী নির্বাচন আয়োজন করবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যকর হবে তার পরের অর্থাৎ চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনে। তবে নির্দেশনা না দিলেও সংবিধানের ৫৮(সি) ধারার বিধান অনুযায়ী এখনই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা সম্ভব নয়।

শরীফ ভূঁইয়া শেষ বক্তব্যে বলেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের দেওয়া দায়িত্ব অনুযায়ী আগামী নির্বাচন সম্পন্ন করবে। সংবিধানের কাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে এখন কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের সুযোগ নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি পদে শুধু সরকারি কর্মকর্তা (নবম গ্রেডের নিচে নয়) বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (পঞ্চম গ্রেডের নিচে নয়) মনোয়নের বিধানসংবলিত প্রজ্ঞাপনের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোকছেদুর রহমানের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি আসিফ হাসানের বেঞ্চ দুই মাসের জন্য প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস এম জাহাঙ্গীর আলম ও রুহুল কাইয়ুম।

এস এম জাহাঙ্গীর আলম জানান, নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা ২০২৪ সংশোধন করে সভাপতি পদ শুধু সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছিল। তার আলোকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নতুন কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদালত ওই প্রজ্ঞাপন দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। একই সঙ্গে আদালত রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, এ বিধান কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না।

শুনানি শেষে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে শুধু সরকারি কর্মকর্তাদের মনোনয়নের বিধানটি বৈষম্যমূলক। এ কারণেই আদালত প্রজ্ঞাপনটির কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন।

গত সেপ্টেম্বর জারি করা ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সরকারি চাকরিজীবী ছাড়া অন্য কেউ হতে পারবেন না। নবম গ্রেড বা তার ওপরের পদে কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সভাপতির প্রার্থীর ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বা সমমান হতে হবে। নবম গ্রেডের নিচে নয় এমন সরকারি কর্মকর্তা, পঞ্চম গ্রেডের নিচে নয় এমন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সভাপতি হতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইসি সানাউল্লাহর সঙ্গে আইআরআইয়ের পর্যবেক্ষক দলের বৈঠক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বুধবার আয়োজিত বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বুধবার আয়োজিত বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) একটি প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল।

আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আইআরআইয়ের বোর্ড অব ডিরেক্টর ক্রিস্টোফার জে ফাসনারের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।

বৈঠকে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইআরআইয়ের প্রতিনিধিদলের সদস্য জন ফ্লুহার্টি জানান, তাঁরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন।

ঢাকা সফর শেষে আইআরআই শিগগির একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলেও জানান তিনি। আইআরআইয়ের পর্যবেক্ষক দলের সাক্ষাতের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আইআরআইয়ের প্রতিনিধিদল ইসির সার্বিক প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং আশা প্রকাশ করেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে আইআরআই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কাস্টম হাউসে ৩ শিফটে ২৪ ঘণ্টা পণ্য খালাসের নির্দেশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর আমদানি, রপ্তানি ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম সচল রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা কাস্টম হাউস। দুর্যোগপরবর্তী সময়ে বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখতে বিমানবন্দরের অধিক্ষেত্রের এয়ারফ্রেইট ইউনিট ও এক্সপ্রেস সার্ভিস ইউনিটে ২৪ ঘণ্টা তিন শিফটে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে। ঢাকা কাস্টম হাউস থেকে জারি করা অফিস আদেশে সই করেছেন যুগ্ম কমিশনার সুমন দাশ।

আদেশে বলা হয়েছে, ঢাকার শুল্কায়ন টিমসমূহ ও এর অধিক্ষেত্রের এয়ারফ্রেইট ইউনিট ও এক্সপ্রেস সার্ভিস ইউনিটে দুর্যোগপরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে আমদানি, রপ্তানি ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম গতিশীল রাখার লক্ষ্যে ২৪-২৫ অক্টোবর (শুক্র ও শনিবার) অফিস খোলা থাকবে। নির্ধারিত তারিখ ও সময় অনুযায়ী সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিসে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। জনস্বার্থে এই আদেশ জারি করা হলো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুগ্ম কমিশনার সুমন দাশ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে আমাদের কার্যক্রম সন্ধ্যা ৭-৮টা পর্যন্ত চলে। তবে আগামী এক সপ্তাহ ২৪ ঘণ্টাই চলবে। এর বাইরে শুক্র ও শনিবার সাধারণত ছুটির দিন, কিন্তু বিশেষভাবে ওই দিনেও কার্যক্রম চলবে।’

ঢাকা কাস্টম হাউসের নির্দেশনায় বলা হয়, সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোতে সহকারী কমিশনার ও উপকমিশনার পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রভাতী, দিবা ও নৈশ—এই তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি পর্যাপ্তসংখ্যক রাজস্ব কর্মকর্তা, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, সাব-ইন্সপেক্টর ও সিপাহি নিয়োজিত রেখে শুল্ক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা কাস্টম হাউসের একটি সূত্র জানায়, ২৪ ঘণ্টা কার্যক্রম চালুর ফলে বিমানবন্দর এলাকায় পণ্য খালাস, পরীক্ষা ও ছাড়পত্রপ্রক্রিয়া আরও সহজ ও দ্রুততর হবে। এতে আমদানিকারক, রপ্তানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের জন্যও বাড়তি সুবিধা তৈরি হবে।

ঢাকা কাস্টম হাউস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম ভূঁইয়া মিঠু বলেন, ‘এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। এতে সবাই উপকৃত হবে এবং পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া আরও গতিশীল হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত