Ajker Patrika

টাকা দিলে ছেড়ে দিবে, না হলে একে একে মেরে ফেলবে, নাবিকের অডিও বার্তা

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৪, ১৫: ৪০
টাকা দিলে ছেড়ে দিবে, না হলে একে একে মেরে ফেলবে, নাবিকের অডিও বার্তা

আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর এক কর্মী জানিয়েছেন, জাহাজটিকে সোমালিয়ান দস্যুরা তাদের আস্তানায় নিয়ে যাচ্ছে।

কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আমিন শরীফের ছেলে জাহাজের নূর উদ্দিনের (জিএস) পাঠানো এক অডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘কারও সাথে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। পাইরেটসরা আমাদের মোবাইলসহ সব যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে যাচ্ছে। এখানে টাকা না দিলে, আমাদেরকে একজন-একজন করে সবাইকে মেরে ফেলবে বলতেছে। এদেরকে যত তাড়াতাড়ি টাকা দিবে, তত তাড়াতাড়ি ছাড়ি দিবে বলতেছে। সবাই দয়া করে আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

জাহাজটি সোমালিয়ান জলদস্যুরা দখলে নিয়েছে বলে ধারণা জাহাজটির মালিক কর্তৃপক্ষের। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে সমুদ্র উপকূল থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটির অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।

জিম্মিদের মধ্যে রয়েছেন—কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আমিন শরীফের ছেলে নূর উদ্দিন (জিএস),  আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের উত্তর বন্দর এলাকার মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে মোহাম্মদ সামসুদ্দিন শিমুল (ওয়েলার), একই এলাকার গাজু মিয়ার ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (এবি), বৈরাগ ইউনিয়নের উত্তর বন্দর মেরিন একাডেমি এলাকার মোহাম্মদ আখতার হোসেনের ছেলে আসিফুর রহমান (এবি)। তিনি ৫ মাস আগে চাকরিতে যোগদান করেছেন।

জিম্মি জাহাজের নাবিকরা। ছবি: সংগৃহীত জাহাজের ওয়েলার আনোয়ারার মোহাম্মদ সামসুদ্দিন শিমুলের মা সাগেরা বেগম বলেন, ‘সন্ধ্যার সময় ফোন করে বলে আমাদের ডাকাত দলে জিম্মি করে রেখেছে। একটুপর মোবাইল ফোনও নিয়ে নিবে, আমাদের জন্য দোয়া করিও। এটাই কলিজার আমার কলিজার টুকরার সঙ্গে শেষ কথা। জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছে অনুরোধ করছি, আমার কলিজার টুকরাকে ফিরায়ে আনতে।’

শিমুলের স্ত্রী ফারজানা আকতার বলেন, ‘জাহাজ কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে তাদের অফিসে ডেকেছেন। জিম্মি সকল নাবিককে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে আমাদের জানিয়েছেন।’

আসিফুর রহমানের (এবি) বাবা মোহাম্মদ আখতার হোসেন বলেন, ‘ছেলেটা নিয়ে অনেক স্বপ্ন। ৫ মাস হলো নতুন চাকরিতে ঢুকেছে, এর মধ্যে এই দুঃসংবাদ। আমাদের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। ডাকাতরা কাউকে কোনো ধরনের ক্ষতি করেনি বলে জানিয়েছে। তাদের দাবি দাওয়া দিয়ে দিলে নাকি ছেড়ে দিবে। না দিলে নাকি একজন-একজন করে মেরে ফেলবে। আমি আমার সন্তানকে সুস্থ অবস্থায় চাই।’

জিম্মি জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রুপের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি নৌপথে পণ্য পরিবহন করে। জাহাজের ক্যাপ্টেনের নাম আবদুর রশিদ। জাহাজটির চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান এবং সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। জাহাজের ক্রুদের থেকে পাওয়া মেসেজ ও ই-মেইলের মাধ্যমে জাহাজটি জলদস্যু কবলিত হওয়ার সংবাদ পান কেএসআরএম কর্মকর্তারা।

১৪ বছর আগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ ‘জাহান মণি’। নিকেল ভর্তি ওই জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়েছিল।

দীর্ঘ চেষ্টার পর ১০০ দিনের মাথায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তাঁরা। পরে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। মুক্তিপণ বাবদ জলদস্যুদের অনেক টাকা দিতে হয়েছিলে বলে জানায় কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত