Ajker Patrika

বিদিশায় সরগরম জাপা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২১, ১৩: ৫৭
বিদিশায়  সরগরম  জাপা

না মাঠে, না কাজে—কোনো দিক দিয়ে আলোচনায় না এলেও পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিককে ঘিরে ঝড় উঠেছে জাতীয় পার্টিতে (জাপা)। জি এম কাদেরের সমালোচনায় সব সময়ই মুখর বিদিশা। সুযোগ পেলেই নানা কথা বলে আলোচনায় আসেন। তবে বিদিশাকে নিয়ে কথাই বলতে চান না জাপার চেয়ারম্যান ও প্রয়াত এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের।

সম্প্রতি পুরোনো বিরোধ ভুলে রওশন এরশাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছিলেন এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা। এ ঘটনার রেশ কাটতে না–কাটতেই সন্তান এরিকের পরিচয় নিয়ে পাল্টা অভিযোগ এসেছে তাঁর বিরুদ্ধেও। সব মিলিয়ে বিদিশাকে ঘিরে বর্তমানে বেশ সরগরম রয়েছে জাপা।

২০১৯ সালের ১৪ জুলাই রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাপার প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদ। তাঁর মৃত্যুর পরে জাপার চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে দুই পক্ষের টানাটানি শুরু হয়। ওই সময় এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদকে পার্টির চেয়ারম্যান করতে তৎপর হন তাঁর সমর্থকেরা। পরে কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে পার্টির চেয়ারম্যান হন এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের। দলকে সুসংহত রাখতে রওশনকে পার্টির ‘চিফ প্যাট্রন’ করা হয়। পাশাপাশি রওশনবলয়ের নেতাদের পদপদবি দিয়ে ভাঙনের হাত থেকে দলকে বাঁচান জি এম কাদের। 

এ ঘটনার পরে পার্টিতে মোটামুটি একটা স্থিতাবস্থা ফিরলেও সময়ে সময়ে জি এম কাদেরের নেতৃত্ব নিয়ে নানা কথা বলে আসছিলেন বিদিশা সিদ্দিক। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘রওশন এরশাদ যেন আজীবন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, আমি সেটাই চাই।’

বিদিশার এই বক্তব্যের পরে কয়েক দিন ধরে দলে ও দলের বাইরে নানা কথা চাউর হচ্ছে। দলেও উঠেছে নানা প্রশ্ন। পুরোনো দ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে হঠাৎ কেন বিদিশা রওশনের পক্ষে অবস্থান নিলেন? এ নিয়ে আলোচনার মাঝেই এরশাদের ছেলে শাহাতা জারাব এরশাদ এরিকের জন্মপরিচয় নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন। গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন এরিক।

রাজধানীর বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কে এরশাদ ট্রাস্ট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাপার চেয়ারম্যান ও তাঁর চাচা জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এরিক। তিনি বলেন, ‘আমার ও আমার মা বিদিশার যদি কোনো ক্ষতি হয়, তাহলে দায়ী থাকবেন চাচা জি এম কাদের।’ তাঁদের বিরুদ্ধে জি এম কাদের কিছু মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ করাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন এরিক।

সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশীদ জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, জাতীয় পার্টির অফিশিয়াল পেজে এরিক ও বিদিশার নিউজ শেয়ার করা হচ্ছে। সব ষড়যন্ত্রের জন্য জি এম কাদের দায়ী। এরিককে সরাতে পারলে তিনি সম্পদ দখল করতে পারবেন। তিনি বলেন, জি এম কাদের এরশাদ পরিবারকে ধ্বংস করার যড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। এরশাদের জীবদ্দশায় এরিকের জন্ম নিয়ে কোনো প্রশ্ন না করলেও এখন অসৎ উদ্দেশ্যে এগুলো করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর।

এরশাদের ব্যবসার অংশীদার ও তাঁর পরিবারের ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত সাতক্ষীরা-৪ আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ ও হুইপ এইচ এম গোলাম রেজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এরশাদের সম্পত্তি বাগিয়ে নিতে বিদিশা সন্তান নিয়ে নাটক করছেন। এরিক এরশাদের ছেলে হতে পারে না। প্রমাণ করতে চাইলে তিনি (বিদিশা) আদালতে আসতে পারেন।’

এরিক ও এরশাদ ট্রাস্টের অভিযোগ বিষয়ে পাল্টা অভিযোগ করেছেন জাপার অনেক নেতা। তাঁদের অভিযোগ, এরশাদের জীবদ্দশায় বিদিশা এরিকের কোনো খোঁজখবর রাখতেন না। বিদিশার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পরে আরও অনেক দিন এরশাদ বেঁচে ছিলেন। এই সময়ে বিদিশা এরিকের কোনো খোঁজখবর রাখেননি। হাতে গোনা মাত্র কয়েকটা দিন নিকেতনের বাসায় এরিক তাঁর মায়ের কাছে থেকেছেন। বাকি সময়টা প্রেসিডেন্ট পার্কে এরশাদের কাছেই ছিলেন। এরশাদ মারা গেলে হঠাৎ করেই প্রেসিডেন্ট পার্কে উঠলেন বিদিশা। এরপর থেকেই এরিকের প্রতি অতিমাত্রায় মনোযোগী হন বিদিশা।

ট্রাস্টের বিষয়েও অভিযোগ করে তাঁরা বলেন, ‘এরশাদ তাঁর সম্পত্তি ট্রাস্টে দিয়ে গেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, এরিকের ভরণপোষণ এই ট্রাস্ট থেকেই নির্বাহ করা হবে। বাকি টাকা জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করার কথা বলে গেছেন এরশাদ। বিদিশা এখন সেই ট্রাস্টকে তাঁর নিজের লোকদের নিয়ে ইচ্ছেমতো সাজিয়েছেন, যেখানে এরশাদ পরিবারেরও কেউ নেই। সব ভুঁইফোড় লোকজন। আসলে সম্পত্তি বাগিয়ে নিতেই বিদিশা তৎপর রয়েছেন বলে অভিযোগ তাঁদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় এক নেতা বলেন, ‘এরশাদ সাহেবের বিশাল সম্পত্তি। এগুলো ভোগদখলের ব্যাপার-স্যাপার আছে। সন্তানের নামটা না দিলে তো এটা হয় না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির ভাইয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ, সর্বোচ্চ সহযোগিতার নিশ্চয়তা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৩৭
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আজ রাত ৯টার দিকে এই টেলিফোন কলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় উপদেষ্টা পরিষদ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও ব্যথিত।’

সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার নিশ্চয়তা দিয়ে ওসমান হাদির ভাইকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি কয়েকজন উপদেষ্টাসহ পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি জরুরি বৈঠক করেছি। হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার করতে বৈঠক থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, হাদির চিকিৎসার সকল ব্যয় সরকার বহন করবে। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় দেশে-বিদেশে যেখানে প্রয়োজন হয়, সেখানেই সর্বোত্তম চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে সরকার।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘হাদি আমাদের সবার অতি আপন ও স্নেহের মানুষ। আমরা তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। আমরা তার জন্য দোয়া করছি, আশা করি তিনি দ্রুতই আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসির সম্মতি ছাড়া নির্বাচন কর্মকর্তাদের বদলি না করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে ডিও লেটার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সম্মতি ছাড়া অন্যত্র বদলি না করতে সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে এ অনুরোধ জানিয়ে আধা সরকারিপত্র (ডিও লেটার) দিয়েছেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

এতে তফসিল ঘোষণা থেকে ভোটের পর ১৫ দিন পর্যন্ত আইন অনুযায়ী এ নির্দেশনা অনুসরণ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন গতকাল বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১২ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণ হবে। নির্বাচনে দুজন বিভাগীয় কমিশনার, ৬৪ জন জেলা প্রশাসক ও তিনজন ইসির আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইসির কর্মকর্তারা হয়েছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা।

চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ তথা সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস/প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য থেকে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেসরকারি অফিস/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। গণভোট ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আইন ও বিধিমোতাবেক নিরপেক্ষভাবে পালনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দেবেন।

এ লক্ষ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পূর্বালোচনা ছাড়া কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি বা ছুটি প্রদান না করা হয় অথবা নির্বাচনী দায়িত্ব ব্যাহত হতে পারে—এমন কোনো কাজে নিয়োজিত না করা হয় তার নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ তথা সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বা প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিতে অনুরোধ করেছে ইসি সচিবালয়। চিঠিতে সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ৫ ও ৪৪ (ঙ) অনুচ্ছেদকে উদ্ধৃত করা হয়।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, এই ডিও লেটারের ফলে এখন সব মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিব, পুলিশের আইজিসহ মাঠ প্রশাসন, পুলিশের দায়িত্বশীলদের কাছে এ-সংক্রান্ত পরিপত্র দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ বলেন, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের রদবদল চলমান প্রক্রিয়া। তফসিল ঘোষণার পর ইসি প্রয়োজন হলে যখন যা দরকার ব্যবস্থা নেবে। সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি নিশ্চিত করবে নির্বাচন কমিশন। এ জন্য বেশ কিছু পরিপত্র ও চিঠি জারি করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পলাতক আসামিরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আদালত কাউকে পলাতক আসামি হিসেবে ঘোষণা করলে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়র এবং জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা পদে থেকে প্রার্থী হতে পারবেন না। এ ছাড়া সরকারি কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের লাভজনক পদে থাকা ব্যক্তিরাও পদত্যাগ না করে ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা প্রথম পরিপত্রে এ কথা বলা হয়েছে।

ইসির পরিপত্রে বলা হয়, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনটি আসনে প্রার্থী হতে পারবেন। কেউ তিনটির বেশি আসনে প্রার্থী হলে তাঁর সব কটি মনোনয়নপত্রই বাতিল হবে। নির্বাচনে যাঁরা প্রার্থী হবেন, তাঁদের নিজে অথবা তাঁর প্রস্তাবক বা সমর্থককে সশরীরে রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, তফসিল ঘোষণার পর নিয়ম অনুযায়ী পরিপত্র জারি করা হয়। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা সহজ করতে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের আইনের বিধান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৯ ডিসেম্বর। একাধিক রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত তাঁরা মনোনয়নপত্র পাননি। তাঁদের সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে মনোনয়নপত্র সরবরাহ করা হবে বলে ইসি জানিয়েছে।

পরিপত্রে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভোট গ্রহণ প্যানেলে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় ব্যাংক, বিমা ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা-কর্মচারী পাওয়া না গেলে বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।

পরিপত্রে সংবিধানের ৬৬ (১) (২) ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আরপিওর ১২ (১) অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, কোনো আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক ঘোষিত ব্যক্তিরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।

এ ছাড়া বিধান অনুযায়ী প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য অন্যদের মধ্যে রয়েছে উপযুক্ত আদালত থেকে অপ্রকৃতিস্থ (মানসিক ভারসাম্যহীন) বা দেউলিয়া ঘোষিত ব্যক্তি, কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন বা আনুগত্য ঘোষণাকারী ব্যক্তি এবং নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে অন্তত দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তি যার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর পার হয়নি।

১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীন কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত ব্যক্তিরাও প্রার্থী হতে পারবেন না। সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা অবসরে যাওয়ার পর তিন বছর পার না হলে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন। এ ছাড়া দুর্নীতির কারণে প্রজাতন্ত্রের বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অপসারিত বা বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার পর পাঁচ বছর পার না হলে এবং ব্যাংক ঋণ এবং টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ সরকারের বিভিন্ন সেবার বিল খেলাপিরাও প্রার্থী হতে পারবেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনের ছুটিতে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে চলবে ট্যুরিস্ট স্পেশাল ট্রেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ১০
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বড়দিন উপলক্ষে ২৫ ডিসেম্বর সরকারি ছুটি থাকায় ঢাকা-কক্সবাজার রুটে অতিরিক্ত যাত্রী চাপের সম্ভাবনা রয়েছে। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ২৪ ও ২৭ ডিসেম্বর এক জোড়া বিরতিহীন ‘ট্যুরিস্ট স্পেশাল’ ট্রেন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

এ বিষয়ে রেলওয়ের মহাপরিচালকের কার্যালয়ের ট্রাফিক ট্রান্সপোর্টেশন শাখা থেকে একটি আদেশ জারি করা হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, ট্যুরিস্ট স্পেশাল ট্রেনগুলো অতিরিক্ত কোচ নিয়ে চলবে। এতে দিনে ৮৩৪টি এবং রাতে ৭৮৯টি আসন থাকবে। ট্রেনের ক্যাটারিং সেবা পরিচালনা করবে বিআরটিসি আর স্টুয়ার্ড/অ্যাটেনডেন্ট নিয়োগসহ অন্য আনুষঙ্গিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলকে। স্পেশাল ট্রেনগুলোর ওয়াশ পিট সম্পন্ন হবে কক্সবাজার রেলস্টেশনে।

এদিকে ২৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম স্পেশাল ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে রাত ৮টায় ঢাকা পৌঁছাবে। একই দিনে ট্যুরিস্ট স্পেশাল ট্রেনটি ঢাকা থেকে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে পরদিন সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে কক্সবাজার পৌঁছাবে।

২৭ ডিসেম্বর ট্যুরিস্ট স্পেশাল ট্রেন কক্সবাজার থেকে সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে রাত ৮টায় ঢাকা পৌঁছাবে। আর চট্টগ্রাম স্পেশাল ট্রেনটি সেদিন ঢাকা থেকে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে পরদিন ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রামে পৌঁছাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত