বঙ্গোপসাগর সংলাপ
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরানোর প্রসঙ্গে বঙ্গোপসাগর সংলাপে ভারত ও বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে পরে হাস্যরসের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে উষ্ণতা ছড়িয়েছেন দুপক্ষের আলোচকেরা।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আজ শনিবার ‘ব্রিজিং ডিভাইডস: নেভিগেটিং দ্য কমপ্লেক্সিটিস অব ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ রিলেশন্স’ শিরোনামে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে এই বিশেষ অধিবেশন হয়। এই অধিবেশনটি ‘চ্যাথাম হাউস পলিসি’র আওতায় অনুষ্ঠিত হয়। এর অর্থ হলো নির্দিষ্ট কোনো আলোচকের নাম দিয়ে নির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য বা উদ্ধৃতি প্রকাশ করা যাবে না। সার্বিক আলোচনা প্রকাশ করা যাবে।
সংলাপে বাংলাদেশি আলোচকদের একজন পরামর্শ চান, ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনার বিষয়ে বাংলাদেশের করণীয় কী? ভারতীয় দুজন আলোচক বলেন, বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় এগোনোর পর তা নিয়ে আলোচনা করা যায়। এবিষয় নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। এক পর্যায়ে ভারতীয় এক আলোচকের এই বক্তব্যে সবাই হো হো করে হেসে ওঠেন।
সেই প্রসঙ্গ সংক্ষেপে তুলে ধরতে সংলাপ শেষে এক্স প্ল্যাটফর্মে হাজির হন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর কূটনৈতিক সম্পাদক সুহাসিনী হায়দার। তিনি এক পোস্টে লেখেন, ৫ আগস্টের পর ভারত ও বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক, গবেষক ও সাংবাদিকদের মধ্যে প্রথম সাক্ষাৎ। কিছু উত্তেজিত মুহূর্ত এবং উষ্ণতা।’
Also at @BoBConversation , the first track2 meet of fmr diplomats, academics and journalists between India and Bangladesh post August 5. Some heated moments and much warmth. pic.twitter.com/neDVMQaQLz
— Suhasini Haidar (@suhasinih) November 16, 2024
আলোচনার টেবিলের এক পাশে বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ, নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীর, চাকমা সার্কেলের প্রধান দেবাশীষ রায়, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, যুক্তরাষ্ট্রের কোলগেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক নাভিন মুরশিদ ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআইপিএসএস) গবেষণা ফেলো শাফকাত মুনির।
অপর পাশে ছিলেন ভারতের সাবেক কূটনীতিক ও ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত, মিলেনিয়াল ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, ইন্ডাস্ট্রি ও অ্যাগ্রিকালচারের প্রেসিডেন্ট অনিল ত্রিগুনায়ত, সাবেক সেনা কমান্ডার অরুণ কে সাহনি, ভারতের সাবেক কূটনীতিক অশোক সাজনহর, ভারতের ইনস্টিটিউট অব ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের গবেষণা ফেলো শ্রুতি এস পট্টনায়ক এবং ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর কূটনৈতিক সম্পাদক সুহাসিনী হায়দার।
সংলাপে বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ছয়টি দিক নিয়ে আলোচনা হয়—সীমান্ত হত্যা, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, রোহিঙ্গা সংকট, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও সাম্প্রতিক রাজনীতি এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ। আলোচনা সঞ্চালনা করেন সিজিএসের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো পারভেজ করিম আব্বাসী।
দুই ঘণ্টার মতো সময়ের আলোচনার শেষ দিকে বাংলাদেশি একজন আলোচক ভারতীয়দের কাছে জানতে চান, বাংলাদেশে প্রায় দেড় হাজার মানুষের হত্যার ঘটনার পর শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন। এ হত্যার দায় তাঁর। ভারত তাঁকে আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশের এখন কী করা উচিত?
জবাবে ভারতীয় এক আলোচক কয়েকটি বিষয়ে বললেও শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু বলেননি। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা না হলে অন্য কোনো বিষয়ে কথা হবে না— এই মানসিকতা পরিহার করা দরকার।
এরপরে এক বাংলাদেশি আলোচক বলেন, দুই ঘণ্টার আলোচনায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশি একজন আলোচক শেখ হাসিনার প্রসঙ্গটি তুললেন। কিন্তু ভারতীয় আলোচক জবাব এড়িয়ে গেলেন। তখন ভারতীয় আলোচক বলেন, তিনি প্রশ্ন বোঝেননি।
তাঁর মন্তব্যের পর বাংলাদেশি আলোচক শেখ হাসিনা প্রসঙ্গ নিয়ে আবার কথা বলেন। তিনি বলেন, একজন স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার পর ভারত সরকার কর্মকর্তা পাঠিয়ে তাঁকে রিসিভ (গ্রহণ) করেছে। এমনটি তিনি আগে কখনো দেখেননি।
এ পর্যায়ে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে বিচারের মুখোমুখি করা প্রসঙ্গে ভারতীয় ওই আলোচক বলেন, দ্বিপক্ষীয় বন্দী বিনিময় চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ এখনো শেখ হাসিনাকে ফেরত চায়নি। ফেরত চাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
ভারতীয় আরেকজন আলোচকও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিষয়ে যত কথা এসেছে, তা সংবাদমাধ্যমে, মানুষের আলোচনায়। আদালতে বিচার এখনো শেষ হয়নি। বাংলাদেশ সরকারও ভারতের কাছে তাকে ফেরত চায়নি। ফেরত চাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।
বাংলাদেশি আলোচকদের মধ্যে শুরুতে যিনি শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন, তিনি এ পর্যায়ে বলেন, তিনি কোনো প্রশ্ন করেননি। শুধু পরামর্শ চেয়েছিলেন।
তখন ভারতীয় এক আলোচক বাংলাদেশি আলোচকের উদ্দেশে বলেন, তিনি যদি বাংলাদেশের সরকারে থাকেন, কোনো সময় প্রয়োজন হলে ভারতে আশ্রয় নিতে চান, ভারত তাঁকেও আশ্রয় দেবে। তাঁর এই বক্তব্যের পর সবাই হেসে ওঠেন।
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। তখন থেকে তিনি সেখানেই রয়েছেন।
সীমান্ত হত্যা, পানিবণ্টন ও রোহিঙ্গা সমস্যা
বাংলাদেশি আলোচকেরা সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যাকে একটি বড় সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেন। জবাবে ভারতীয় আলোচকেরা বলেন, সীমান্তে শুধু বাংলাদেশিরা হত্যার শিকার হন না, ভারতীয়রাও হন— এটা দুই দিকের জন্যই সমস্যা। এটা নিয়ে অনেক বছর ধরে কথা হচ্ছে। এখন সমাধান খুঁজতে হবে।
বাংলাদেশি একজন আলোচক প্রশ্ন করেন, ভারতীয় হত্যার কথা কেন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করে না। জবাবে ভারতীয় একজন আলোচক বলেন, বয়ান গণমাধ্যম তৈরি করে না, রাষ্ট্র তৈরি করে। ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ক্ষেত্রেও সেটাই দেখা যায়।
ভারতীয় একজন আলোচক স্বীকার করেন, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনের বিষয়ে ভারতের ‘রিপোর্ট কার্ড’ ভালো নয়। আরেক আলোচক তিস্তার বিষয়ে পানির প্রবাহ ছাড়াও সমাধানের অন্য উপায় খুঁজে দেখার পরামর্শ দেন। তখন বাংলাদেশি একজন আলোচক বলেন, পানিপ্রবাহ যদি সমাধানের উপায় হয়, তাহলে সেটা নিয়ে কেন আলোচনা হবে না।
তিস্তা চুক্তি প্রসঙ্গে ভারতীয় আলোচকেরা বলেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার চাইলেই সবকিছু করতে পারে না। কারণ রাষ্ট্রটি ফেডারেল–ব্যবস্থার, রাজ্য সরকারের ওপর নির্ভর করতে হয়। তিস্তার পানিবণ্টনের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নিজস্ব রাজনীতি রয়েছে। বাংলাদেশি একজন আলোচক বলেন, আস্থার সংকটই এখানে বড় সমস্যা। ভারত ৪০ দিনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর কথা বলে আর বন্ধ করেনি। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বেশ কিছু সময় আলোচনার পর বাংলাদেশ ও ভারতের দুজন আলোচক একমত হন যে মিয়ানমার নাগরিকত্ব না দিলে রোহিঙ্গারা ফিরে যাবে না।
‘বাস্তবতার ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে’
আলোচনার শেষ দিকে বাংলাদেশ ও ভারতের আলোচকেরা যে বক্তব্য দেন, তাতে উঠে আসে যে দুই দেশের মধ্যে চার হাজার কিলোমিটারের বেশি সীমান্ত রয়েছে, বড় বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের যেমন ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখা দরকার, তেমনি ভারতেরও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা প্রয়োজন। ভারতের উচিত রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা, কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নয়। আবেগ নয়, বাস্তবতা বিবেচনা করে দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে। ভারতীয় একজন আলোচক শেষে বলেন, ভারত আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর আস্থা রেখেছিল তার নিরাপত্তার প্রয়োজনে। বাংলাদেশের নতুন সরকার যদি নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দেয়, তাহলে ভবিষ্যতে অনেক ভালো কিছু দেখা যাবে। বাংলাদেশি আলোচকেরা শেষে বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরানোর প্রসঙ্গে বঙ্গোপসাগর সংলাপে ভারত ও বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে পরে হাস্যরসের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে উষ্ণতা ছড়িয়েছেন দুপক্ষের আলোচকেরা।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আজ শনিবার ‘ব্রিজিং ডিভাইডস: নেভিগেটিং দ্য কমপ্লেক্সিটিস অব ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ রিলেশন্স’ শিরোনামে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে এই বিশেষ অধিবেশন হয়। এই অধিবেশনটি ‘চ্যাথাম হাউস পলিসি’র আওতায় অনুষ্ঠিত হয়। এর অর্থ হলো নির্দিষ্ট কোনো আলোচকের নাম দিয়ে নির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য বা উদ্ধৃতি প্রকাশ করা যাবে না। সার্বিক আলোচনা প্রকাশ করা যাবে।
সংলাপে বাংলাদেশি আলোচকদের একজন পরামর্শ চান, ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনার বিষয়ে বাংলাদেশের করণীয় কী? ভারতীয় দুজন আলোচক বলেন, বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় এগোনোর পর তা নিয়ে আলোচনা করা যায়। এবিষয় নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। এক পর্যায়ে ভারতীয় এক আলোচকের এই বক্তব্যে সবাই হো হো করে হেসে ওঠেন।
সেই প্রসঙ্গ সংক্ষেপে তুলে ধরতে সংলাপ শেষে এক্স প্ল্যাটফর্মে হাজির হন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর কূটনৈতিক সম্পাদক সুহাসিনী হায়দার। তিনি এক পোস্টে লেখেন, ৫ আগস্টের পর ভারত ও বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক, গবেষক ও সাংবাদিকদের মধ্যে প্রথম সাক্ষাৎ। কিছু উত্তেজিত মুহূর্ত এবং উষ্ণতা।’
Also at @BoBConversation , the first track2 meet of fmr diplomats, academics and journalists between India and Bangladesh post August 5. Some heated moments and much warmth. pic.twitter.com/neDVMQaQLz
— Suhasini Haidar (@suhasinih) November 16, 2024
আলোচনার টেবিলের এক পাশে বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ, নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীর, চাকমা সার্কেলের প্রধান দেবাশীষ রায়, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, যুক্তরাষ্ট্রের কোলগেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক নাভিন মুরশিদ ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআইপিএসএস) গবেষণা ফেলো শাফকাত মুনির।
অপর পাশে ছিলেন ভারতের সাবেক কূটনীতিক ও ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত, মিলেনিয়াল ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, ইন্ডাস্ট্রি ও অ্যাগ্রিকালচারের প্রেসিডেন্ট অনিল ত্রিগুনায়ত, সাবেক সেনা কমান্ডার অরুণ কে সাহনি, ভারতের সাবেক কূটনীতিক অশোক সাজনহর, ভারতের ইনস্টিটিউট অব ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের গবেষণা ফেলো শ্রুতি এস পট্টনায়ক এবং ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর কূটনৈতিক সম্পাদক সুহাসিনী হায়দার।
সংলাপে বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ছয়টি দিক নিয়ে আলোচনা হয়—সীমান্ত হত্যা, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, রোহিঙ্গা সংকট, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও সাম্প্রতিক রাজনীতি এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ। আলোচনা সঞ্চালনা করেন সিজিএসের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো পারভেজ করিম আব্বাসী।
দুই ঘণ্টার মতো সময়ের আলোচনার শেষ দিকে বাংলাদেশি একজন আলোচক ভারতীয়দের কাছে জানতে চান, বাংলাদেশে প্রায় দেড় হাজার মানুষের হত্যার ঘটনার পর শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন। এ হত্যার দায় তাঁর। ভারত তাঁকে আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশের এখন কী করা উচিত?
জবাবে ভারতীয় এক আলোচক কয়েকটি বিষয়ে বললেও শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু বলেননি। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা না হলে অন্য কোনো বিষয়ে কথা হবে না— এই মানসিকতা পরিহার করা দরকার।
এরপরে এক বাংলাদেশি আলোচক বলেন, দুই ঘণ্টার আলোচনায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশি একজন আলোচক শেখ হাসিনার প্রসঙ্গটি তুললেন। কিন্তু ভারতীয় আলোচক জবাব এড়িয়ে গেলেন। তখন ভারতীয় আলোচক বলেন, তিনি প্রশ্ন বোঝেননি।
তাঁর মন্তব্যের পর বাংলাদেশি আলোচক শেখ হাসিনা প্রসঙ্গ নিয়ে আবার কথা বলেন। তিনি বলেন, একজন স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার পর ভারত সরকার কর্মকর্তা পাঠিয়ে তাঁকে রিসিভ (গ্রহণ) করেছে। এমনটি তিনি আগে কখনো দেখেননি।
এ পর্যায়ে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে বিচারের মুখোমুখি করা প্রসঙ্গে ভারতীয় ওই আলোচক বলেন, দ্বিপক্ষীয় বন্দী বিনিময় চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ এখনো শেখ হাসিনাকে ফেরত চায়নি। ফেরত চাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
ভারতীয় আরেকজন আলোচকও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিষয়ে যত কথা এসেছে, তা সংবাদমাধ্যমে, মানুষের আলোচনায়। আদালতে বিচার এখনো শেষ হয়নি। বাংলাদেশ সরকারও ভারতের কাছে তাকে ফেরত চায়নি। ফেরত চাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।
বাংলাদেশি আলোচকদের মধ্যে শুরুতে যিনি শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন, তিনি এ পর্যায়ে বলেন, তিনি কোনো প্রশ্ন করেননি। শুধু পরামর্শ চেয়েছিলেন।
তখন ভারতীয় এক আলোচক বাংলাদেশি আলোচকের উদ্দেশে বলেন, তিনি যদি বাংলাদেশের সরকারে থাকেন, কোনো সময় প্রয়োজন হলে ভারতে আশ্রয় নিতে চান, ভারত তাঁকেও আশ্রয় দেবে। তাঁর এই বক্তব্যের পর সবাই হেসে ওঠেন।
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। তখন থেকে তিনি সেখানেই রয়েছেন।
সীমান্ত হত্যা, পানিবণ্টন ও রোহিঙ্গা সমস্যা
বাংলাদেশি আলোচকেরা সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যাকে একটি বড় সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেন। জবাবে ভারতীয় আলোচকেরা বলেন, সীমান্তে শুধু বাংলাদেশিরা হত্যার শিকার হন না, ভারতীয়রাও হন— এটা দুই দিকের জন্যই সমস্যা। এটা নিয়ে অনেক বছর ধরে কথা হচ্ছে। এখন সমাধান খুঁজতে হবে।
বাংলাদেশি একজন আলোচক প্রশ্ন করেন, ভারতীয় হত্যার কথা কেন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করে না। জবাবে ভারতীয় একজন আলোচক বলেন, বয়ান গণমাধ্যম তৈরি করে না, রাষ্ট্র তৈরি করে। ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ক্ষেত্রেও সেটাই দেখা যায়।
ভারতীয় একজন আলোচক স্বীকার করেন, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনের বিষয়ে ভারতের ‘রিপোর্ট কার্ড’ ভালো নয়। আরেক আলোচক তিস্তার বিষয়ে পানির প্রবাহ ছাড়াও সমাধানের অন্য উপায় খুঁজে দেখার পরামর্শ দেন। তখন বাংলাদেশি একজন আলোচক বলেন, পানিপ্রবাহ যদি সমাধানের উপায় হয়, তাহলে সেটা নিয়ে কেন আলোচনা হবে না।
তিস্তা চুক্তি প্রসঙ্গে ভারতীয় আলোচকেরা বলেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার চাইলেই সবকিছু করতে পারে না। কারণ রাষ্ট্রটি ফেডারেল–ব্যবস্থার, রাজ্য সরকারের ওপর নির্ভর করতে হয়। তিস্তার পানিবণ্টনের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নিজস্ব রাজনীতি রয়েছে। বাংলাদেশি একজন আলোচক বলেন, আস্থার সংকটই এখানে বড় সমস্যা। ভারত ৪০ দিনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর কথা বলে আর বন্ধ করেনি। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বেশ কিছু সময় আলোচনার পর বাংলাদেশ ও ভারতের দুজন আলোচক একমত হন যে মিয়ানমার নাগরিকত্ব না দিলে রোহিঙ্গারা ফিরে যাবে না।
‘বাস্তবতার ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে’
আলোচনার শেষ দিকে বাংলাদেশ ও ভারতের আলোচকেরা যে বক্তব্য দেন, তাতে উঠে আসে যে দুই দেশের মধ্যে চার হাজার কিলোমিটারের বেশি সীমান্ত রয়েছে, বড় বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের যেমন ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখা দরকার, তেমনি ভারতেরও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা প্রয়োজন। ভারতের উচিত রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা, কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নয়। আবেগ নয়, বাস্তবতা বিবেচনা করে দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে। ভারতীয় একজন আলোচক শেষে বলেন, ভারত আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর আস্থা রেখেছিল তার নিরাপত্তার প্রয়োজনে। বাংলাদেশের নতুন সরকার যদি নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দেয়, তাহলে ভবিষ্যতে অনেক ভালো কিছু দেখা যাবে। বাংলাদেশি আলোচকেরা শেষে বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে।

রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ তৈরি করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। চলতি সপ্তাহের শেষে সরকারের কাছে জমা দিতে চায় তারা। বিষয়টি সামনে এলে রাজনীতিতে নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। সে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের দিক থেকে শক্ত অবস্থান চায় কমিশন।
২৩ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় টার্গেট করে হত্যার তথ্য সত্য নয় বলে ট্রাইব্যুনালে দাবি করেছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলায় আজ
৩ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। তাদের চিঠিটি গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ)
৪ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) থাকা ৯ জন সিনিয়র সচিব ও সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপনে তাঁদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়।
৪ ঘণ্টা আগেজুলাই সনদ বাস্তবায়ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ তৈরি করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। চলতি সপ্তাহের শেষে সরকারের কাছে জমা দিতে চায় তারা। বিষয়টি সামনে এলে রাজনীতিতে নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। সে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের দিক থেকে শক্ত অবস্থান চায় কমিশন।
সূত্র জানায়, কমিশন মনে করছে তারা বাস্তবায়নের যে সুপারিশই দিক না কেন, তা সব দল মানবে না। তা নিয়ে দলগুলোর প্রতিবাদ আসবেই। সব দলকে খুশি করার মতো সুপারিশ তৈরি করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সরকারকে এ বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। সেটা না হলে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। এ ক্ষেত্রে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে নির্বাচন বিলম্বিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।
জানতে চাইলে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক মতামতের ভিত্তিতে সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ তৈরি করব। আমাদের বিবেচনার দিক হচ্ছে, এটাকে বাস্তবায়নে সরকারের দিক থেকে যেন সুনির্দিষ্ট কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়।’
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২৪ অক্টোবরের মধ্যে সনদ বাস্তবায়নের উপায়ের সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দেবে কমিশন। সরকার যাতে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে পারে, সে তাগাদা দেওয়া হবে। কারণ কমিশনের মেয়াদ আগামী ৩১ অক্টোবর শেষ হচ্ছে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ তৈরি করতে কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পাঁচ দিন বৈঠক করেছে। সেখানে দলগুলো একমত হতে পারেনি। এমন অবস্থায় কমিশন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে একটি সুপারিশ তৈরি করছে বলে জানা গেছে। যেখানে জুলাই সনদ নিয়ে বিশেষ আদেশ জারি এবং এর বৈধতা নিতে গণভোট আয়োজনের কথা থাকবে। এ ছাড়া থাকতে পারে পরবর্তী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা দিয়ে সনদের সংবিধানসম্পর্কিত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে খসড়া আদেশটির নাম হতে পারে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ (সংবিধান)। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে আদেশের খসড়া তৈরি করে সরকারের কাছে
জমা দেবে কমিশন। কারণ হিসেবে তারা বলেছে, আদেশ জারি নিয়ে কারসাজি ঠেকাতেই তারা পূর্ণাঙ্গ ড্রাফট সরকারকে দেবে।
সূত্র জানায়, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের মধ্যেই গণভোট কোন প্রশ্নে হবে, তা উল্লেখ থাকবে। সে ক্ষেত্রে এক বা একাধিক ব্যালটে গণভোটের প্রশ্ন হতে পারে। সেখানে সনদ বাস্তবায়ন আদেশ ও সনদ বাস্তবায়ন চান কি না, এ রকম প্রশ্ন রাখা হতে পারে। আরেকটি হতে পারে, ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন চান কি না, এ প্রশ্নে গণভোট। আরেকটি হতে পারে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বে (পিআর) উচ্চকক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং সংবিধান ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি জনগণ মানে কি না। গণভোটের সময় নির্ধারণ সরকারের ওপর ছেড়ে দেবে।
১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন বিএনপি, জামায়াতসহ ২৪টি দল স্বাক্ষর করে। বাস্তবায়ন আদেশের টেক্সট না পাওয়ায় সনদে স্বাক্ষর করেনি এনসিপি। দলটিকে রাজি করাতে সরকার ও কমিশনের পক্ষ থেকে নানাভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে গত রোববারও কমিশনের সঙ্গে এনসিপির তিন নেতার বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে। বাস্তবায়ন আদেশ জারির পরই দলটি সনদে স্বাক্ষর করবে বলে মনে করে কমিশন।

রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ তৈরি করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। চলতি সপ্তাহের শেষে সরকারের কাছে জমা দিতে চায় তারা। বিষয়টি সামনে এলে রাজনীতিতে নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। সে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের দিক থেকে শক্ত অবস্থান চায় কমিশন।
সূত্র জানায়, কমিশন মনে করছে তারা বাস্তবায়নের যে সুপারিশই দিক না কেন, তা সব দল মানবে না। তা নিয়ে দলগুলোর প্রতিবাদ আসবেই। সব দলকে খুশি করার মতো সুপারিশ তৈরি করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সরকারকে এ বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। সেটা না হলে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। এ ক্ষেত্রে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে নির্বাচন বিলম্বিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।
জানতে চাইলে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক মতামতের ভিত্তিতে সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ তৈরি করব। আমাদের বিবেচনার দিক হচ্ছে, এটাকে বাস্তবায়নে সরকারের দিক থেকে যেন সুনির্দিষ্ট কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়।’
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২৪ অক্টোবরের মধ্যে সনদ বাস্তবায়নের উপায়ের সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দেবে কমিশন। সরকার যাতে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে পারে, সে তাগাদা দেওয়া হবে। কারণ কমিশনের মেয়াদ আগামী ৩১ অক্টোবর শেষ হচ্ছে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ তৈরি করতে কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পাঁচ দিন বৈঠক করেছে। সেখানে দলগুলো একমত হতে পারেনি। এমন অবস্থায় কমিশন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে একটি সুপারিশ তৈরি করছে বলে জানা গেছে। যেখানে জুলাই সনদ নিয়ে বিশেষ আদেশ জারি এবং এর বৈধতা নিতে গণভোট আয়োজনের কথা থাকবে। এ ছাড়া থাকতে পারে পরবর্তী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা দিয়ে সনদের সংবিধানসম্পর্কিত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে খসড়া আদেশটির নাম হতে পারে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ (সংবিধান)। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে আদেশের খসড়া তৈরি করে সরকারের কাছে
জমা দেবে কমিশন। কারণ হিসেবে তারা বলেছে, আদেশ জারি নিয়ে কারসাজি ঠেকাতেই তারা পূর্ণাঙ্গ ড্রাফট সরকারকে দেবে।
সূত্র জানায়, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের মধ্যেই গণভোট কোন প্রশ্নে হবে, তা উল্লেখ থাকবে। সে ক্ষেত্রে এক বা একাধিক ব্যালটে গণভোটের প্রশ্ন হতে পারে। সেখানে সনদ বাস্তবায়ন আদেশ ও সনদ বাস্তবায়ন চান কি না, এ রকম প্রশ্ন রাখা হতে পারে। আরেকটি হতে পারে, ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন চান কি না, এ প্রশ্নে গণভোট। আরেকটি হতে পারে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বে (পিআর) উচ্চকক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং সংবিধান ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি জনগণ মানে কি না। গণভোটের সময় নির্ধারণ সরকারের ওপর ছেড়ে দেবে।
১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন বিএনপি, জামায়াতসহ ২৪টি দল স্বাক্ষর করে। বাস্তবায়ন আদেশের টেক্সট না পাওয়ায় সনদে স্বাক্ষর করেনি এনসিপি। দলটিকে রাজি করাতে সরকার ও কমিশনের পক্ষ থেকে নানাভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে গত রোববারও কমিশনের সঙ্গে এনসিপির তিন নেতার বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে। বাস্তবায়ন আদেশ জারির পরই দলটি সনদে স্বাক্ষর করবে বলে মনে করে কমিশন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরানোর প্রসঙ্গে বঙ্গোপসাগর সংলাপে ভারত ও বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে পরে হাস্যরসের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে উষ্ণতা ছড়িয়েছেন দুপক্ষের আলোচকেরা।
১৭ নভেম্বর ২০২৪
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় টার্গেট করে হত্যার তথ্য সত্য নয় বলে ট্রাইব্যুনালে দাবি করেছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলায় আজ
৩ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। তাদের চিঠিটি গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ)
৪ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) থাকা ৯ জন সিনিয়র সচিব ও সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপনে তাঁদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় টার্গেট করে হত্যার তথ্য সত্য নয় বলে ট্রাইব্যুনালে দাবি করেছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলায় আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে তিনি এ দাবি করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা এই মামলায় আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের গতকাল ছিল প্রথম দিন। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই মামলার বিচারকাজ চলছে। এই মামলার অপর আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়েছেন।
যুক্তিতর্কের শুরুতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সীমাবদ্ধতা নিয়ে কথা বলেন আইনজীবী আমির হোসেন। তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আরমানের একটি ভিডিও দেখেছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মীর কাসেম আলীর বিচার চলার সময় আরমানের সাক্ষাৎকারের ভিডিও সেটি। সেখানে আরমান বলেছেন, এ আইনে সাক্ষ্য আইনের সঠিক ব্যবহার না করতে পারাসহ ব্যাপক সীমাবদ্ধতার মধ্যে বিচার হচ্ছে; যা ন্যায়বিচারকে বিঘ্নিত করেছে। তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে তিনিও (আমির হোসেন) একমত পোষণ করেন। এ সময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘সেই বক্তব্য কোন প্রেক্ষাপটে, সেটা আমরা কীভাবে বুঝব?’
আমির হোসেন বলেন, এ আইনে মূল যে এভিডেন্স অ্যাক্ট, সেটা প্রয়োগ করার কোনো সুযোগ নেই। সিআরপিসিও এ আইনে গ্রহণ করা যায় না। এ আইনে এমন একটি বিচার, যেখানে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে আসামিকে বলা হবে সাঁতার কাটার জন্য। ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘এমন কোনো ঘটনা কি ঘটেছে? আপনি দেখান, এই সাক্ষ্যপ্রমাণ ভুল।’
আমির হোসেন বলেন, ‘আমি মনে করি, সিআরপিসি ও এভিডেন্স অ্যাক্ট অ্যাপ্লিকেবল হওয়া উচিত ছিল।’ তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ১ হাজার ৫০০ নিহত ও ২৫ হাজার আহত হয়েছে বলা হচ্ছে। কিন্তু আবু সাঈদ ছাড়া আর কোনো সংগঠক মারা যাননি। চাইলে তো শেখ হাসিনা তাঁর কর্মী বাহিনী দিয়ে, পুলিশ বাহিনী দিয়ে সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, নাহিদ ইসলামদের টার্গেট করে মেরে ফেলতে পারতেন। কিন্তু করেননি। তাই টার্গেট করে মারা হয়েছে, এটা সঠিক নয়।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘টার্গেট করে সবাইকে মেরে ফলতে হবে এমন ধারণা ঠিক নয়। ১৯৭১ সালে আমাদের যে টপ লিডার, তিনি তাদের পকেটে ছিলেন, তাঁকে মেরেছে? আ স ম আবদুর রবকে মারা হয়েছে? আরও যাঁরা নেতা ছিলেন, তাঁদের মারা হয়েছে? কোনো নেতা মরেননি। যারা টার্গেট করে, তাদের স্ট্র্যাটেজি থাকে কাকে মারবে, কতটুকু মারবে, কোথায় মারবে, কখন মারবে। আমির হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালে মারা যাবে কোথায়, নেতারা তো সব ভারতে ছিলেন। আর বৈধ আন্দোলনকেও নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা সরকারের আছে। বেশ কয়েকজনকে টার্গেট করে হত্যা করলেও তো আন্দোলন দুর্বল হয়ে যেত। তা তো করেনি।
পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত এই আইনজীবী বলেন, ‘প্রসিকিউশন বলেছে, ৫২টি জেলায় আন্দোলনের ব্যাপকতা ছিল। অথচ সাক্ষী আনা হয়েছে ১৫-২০টি জেলা থেকে। তাই ব্যাপক মাত্রায় অপরাধ সংগঠনের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি।’ ট্রাইব্যুনাল বলেন, শুধু ঢাকা শহরে হলেও হবে, যাত্রাবাড়ীতে হলেও হবে। ওয়াইডলি। কোনো নির্দিষ্ট গ্রুপকে টার্গেট করলে হবে। আমির হোসেন বলেন, যাত্রাবাড়ীতে কমপক্ষে ২০ হাজার ছাত্র-জনতা ছিল। মারা গেছে কতজন, ২০ জন। আন্দোলন ছিল ভুল প্রক্রিয়ায়। কারণ, কোটাপদ্ধতি শেখ হাসিনা বিলোপ করেছিলেন। পরে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা পুনর্বহাল হয়। নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগের ওপর কোনো রকম প্রভাব ফেলতে পারে না।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, প্রভাব ফেলতে পারে না, কিন্তু নিষ্পত্তির ব্যবস্থা আছে। পরে এক দিনের মধ্যে শুনানির ব্যবস্থা করল কীভাবে? কোর্টকে যদি সহযোগিতা না করেন, সেটাই তো প্রভাব। আমির হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেছেন, এমন কোনো ডকুমেন্ট কি এসেছে?’ ট্রাইব্যুনালে বলেন, ‘সব উপাদান সরকারের হাতে। আমরা এখন যে মামলা করছি, প্রসিকিউশন অফ থাকলে আমরা চালাতে পারব না। তাই উপাদান সব সরকারের হাতে।’ এ সময় আমির হোসেন বলেন, ‘তাহলে কি আমি ধরে নেব, এই বিচার রাষ্ট্র যা চাইবে, তা-ই হবে?’ ট্রাইব্যুনাল বলেন, রাষ্ট্রের হাতে সুইচগুলো আছে। অনেক সুইচ আছে। আমির হোসেন বলেন, ‘তাহলে আমরা ধরে নিতে পারি, এই সরকার কোনো সুইচ চাইলে এই ট্রাইব্যুনালের ক্ষেত্রে ব্যবহারও করতে পারে।’ ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘যদি আমার নিরাপত্তা বন্ধ করে দেয়, আমার গাড়ি বন্ধ করে দেয়, বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়, আমরা কীভাবে চালাব? রাষ্ট্র আপনাকে আটকে রাখলে আপনি কীভাবে আসবেন? রাষ্ট্রের হাতে সে ব্যবস্থা আছে। রায়ের প্রশ্ন যখন আসবে, তখন আমরা সরকারকে কেয়ার করব না। আয়োজন সরকারকে করে দিতে হবে।’
যুক্তিতর্কের একপর্যায়ে আমির হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী দুঃশাসন ও ফ্যাসিবাদের ১৫ বছরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছে প্রসিকিউশন। কিন্তু সুশাসনের কথা বলা হয়নি। আমি মনে করি, আওয়ামী লীগের সময় কোনো দুঃশাসন ছিল না। ১৫ বছর ছিল আওয়ামী লীগের উন্নয়নের মহাসোপান। তাদের সময়ে মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলসহ অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে রাষ্ট্রকে উন্নীত করার যে প্রচেষ্টা, তা বাস্তবায়নে অনেকটা সফল হয়েছেন শেখ হাসিনা। ফ্যাসিবাদ শব্দটি মূলত একতরফা বয়ান।’
ট্রাইব্যুনাল বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, খুন-গুম, বেআইনি আটক, মিথ্যা মামলা, অপহরণ—এই কাজগুলো কী? জবাবে আমির হোসেন বলেন, রাষ্ট্র চালাতে গেলে প্রয়োজনে অনেক সময় কঠোর হতে হয়। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে কিছু ভুলত্রুটি হয়। সব সঠিক না-ও হতে পারে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সম্পর্কে আমির হোসেন বলেন, এই (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) শব্দটির ব্যবহার করেছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা গোলাম আযম। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার আন্দোলন ছিল শেখ হাসিনার। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতেন সর্বশেষ প্রধান বিচারপতি। বিএনপি তাদের সুবিধামতো বিচারপতিকে যাতে প্রধান বিচারপতি করা যায়, সে জন্য বিচারপতিদের বয়স বাড়িয়ে দিল। এই কাজটি না করলে, শেখ হাসিনা যদি বিলোপ করতেন, তাহলে বলা যেত, শেখ হাসিনা ভুল করেছেন। বয়স বাড়িয়ে ডিজাইনের নির্বাচন করার চেষ্টা হয়েছিল। এটা থেকে প্রতীয়মান হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ভালো উদ্যোগ ছিল, যেটাকে বিনষ্ট করার একটা চেষ্টা ছিল। পরবর্তী সময়ে আইনের মাধ্যমে বাতিলের সিদ্ধান্ত আসে। তাই এটি শেখ হাসিনার কোনো কূটচাল ছিল না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় টার্গেট করে হত্যার তথ্য সত্য নয় বলে ট্রাইব্যুনালে দাবি করেছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলায় আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে তিনি এ দাবি করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা এই মামলায় আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের গতকাল ছিল প্রথম দিন। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই মামলার বিচারকাজ চলছে। এই মামলার অপর আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়েছেন।
যুক্তিতর্কের শুরুতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সীমাবদ্ধতা নিয়ে কথা বলেন আইনজীবী আমির হোসেন। তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আরমানের একটি ভিডিও দেখেছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মীর কাসেম আলীর বিচার চলার সময় আরমানের সাক্ষাৎকারের ভিডিও সেটি। সেখানে আরমান বলেছেন, এ আইনে সাক্ষ্য আইনের সঠিক ব্যবহার না করতে পারাসহ ব্যাপক সীমাবদ্ধতার মধ্যে বিচার হচ্ছে; যা ন্যায়বিচারকে বিঘ্নিত করেছে। তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে তিনিও (আমির হোসেন) একমত পোষণ করেন। এ সময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘সেই বক্তব্য কোন প্রেক্ষাপটে, সেটা আমরা কীভাবে বুঝব?’
আমির হোসেন বলেন, এ আইনে মূল যে এভিডেন্স অ্যাক্ট, সেটা প্রয়োগ করার কোনো সুযোগ নেই। সিআরপিসিও এ আইনে গ্রহণ করা যায় না। এ আইনে এমন একটি বিচার, যেখানে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে আসামিকে বলা হবে সাঁতার কাটার জন্য। ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘এমন কোনো ঘটনা কি ঘটেছে? আপনি দেখান, এই সাক্ষ্যপ্রমাণ ভুল।’
আমির হোসেন বলেন, ‘আমি মনে করি, সিআরপিসি ও এভিডেন্স অ্যাক্ট অ্যাপ্লিকেবল হওয়া উচিত ছিল।’ তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ১ হাজার ৫০০ নিহত ও ২৫ হাজার আহত হয়েছে বলা হচ্ছে। কিন্তু আবু সাঈদ ছাড়া আর কোনো সংগঠক মারা যাননি। চাইলে তো শেখ হাসিনা তাঁর কর্মী বাহিনী দিয়ে, পুলিশ বাহিনী দিয়ে সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, নাহিদ ইসলামদের টার্গেট করে মেরে ফেলতে পারতেন। কিন্তু করেননি। তাই টার্গেট করে মারা হয়েছে, এটা সঠিক নয়।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘টার্গেট করে সবাইকে মেরে ফলতে হবে এমন ধারণা ঠিক নয়। ১৯৭১ সালে আমাদের যে টপ লিডার, তিনি তাদের পকেটে ছিলেন, তাঁকে মেরেছে? আ স ম আবদুর রবকে মারা হয়েছে? আরও যাঁরা নেতা ছিলেন, তাঁদের মারা হয়েছে? কোনো নেতা মরেননি। যারা টার্গেট করে, তাদের স্ট্র্যাটেজি থাকে কাকে মারবে, কতটুকু মারবে, কোথায় মারবে, কখন মারবে। আমির হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালে মারা যাবে কোথায়, নেতারা তো সব ভারতে ছিলেন। আর বৈধ আন্দোলনকেও নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা সরকারের আছে। বেশ কয়েকজনকে টার্গেট করে হত্যা করলেও তো আন্দোলন দুর্বল হয়ে যেত। তা তো করেনি।
পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত এই আইনজীবী বলেন, ‘প্রসিকিউশন বলেছে, ৫২টি জেলায় আন্দোলনের ব্যাপকতা ছিল। অথচ সাক্ষী আনা হয়েছে ১৫-২০টি জেলা থেকে। তাই ব্যাপক মাত্রায় অপরাধ সংগঠনের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি।’ ট্রাইব্যুনাল বলেন, শুধু ঢাকা শহরে হলেও হবে, যাত্রাবাড়ীতে হলেও হবে। ওয়াইডলি। কোনো নির্দিষ্ট গ্রুপকে টার্গেট করলে হবে। আমির হোসেন বলেন, যাত্রাবাড়ীতে কমপক্ষে ২০ হাজার ছাত্র-জনতা ছিল। মারা গেছে কতজন, ২০ জন। আন্দোলন ছিল ভুল প্রক্রিয়ায়। কারণ, কোটাপদ্ধতি শেখ হাসিনা বিলোপ করেছিলেন। পরে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা পুনর্বহাল হয়। নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগের ওপর কোনো রকম প্রভাব ফেলতে পারে না।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, প্রভাব ফেলতে পারে না, কিন্তু নিষ্পত্তির ব্যবস্থা আছে। পরে এক দিনের মধ্যে শুনানির ব্যবস্থা করল কীভাবে? কোর্টকে যদি সহযোগিতা না করেন, সেটাই তো প্রভাব। আমির হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেছেন, এমন কোনো ডকুমেন্ট কি এসেছে?’ ট্রাইব্যুনালে বলেন, ‘সব উপাদান সরকারের হাতে। আমরা এখন যে মামলা করছি, প্রসিকিউশন অফ থাকলে আমরা চালাতে পারব না। তাই উপাদান সব সরকারের হাতে।’ এ সময় আমির হোসেন বলেন, ‘তাহলে কি আমি ধরে নেব, এই বিচার রাষ্ট্র যা চাইবে, তা-ই হবে?’ ট্রাইব্যুনাল বলেন, রাষ্ট্রের হাতে সুইচগুলো আছে। অনেক সুইচ আছে। আমির হোসেন বলেন, ‘তাহলে আমরা ধরে নিতে পারি, এই সরকার কোনো সুইচ চাইলে এই ট্রাইব্যুনালের ক্ষেত্রে ব্যবহারও করতে পারে।’ ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘যদি আমার নিরাপত্তা বন্ধ করে দেয়, আমার গাড়ি বন্ধ করে দেয়, বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়, আমরা কীভাবে চালাব? রাষ্ট্র আপনাকে আটকে রাখলে আপনি কীভাবে আসবেন? রাষ্ট্রের হাতে সে ব্যবস্থা আছে। রায়ের প্রশ্ন যখন আসবে, তখন আমরা সরকারকে কেয়ার করব না। আয়োজন সরকারকে করে দিতে হবে।’
যুক্তিতর্কের একপর্যায়ে আমির হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী দুঃশাসন ও ফ্যাসিবাদের ১৫ বছরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছে প্রসিকিউশন। কিন্তু সুশাসনের কথা বলা হয়নি। আমি মনে করি, আওয়ামী লীগের সময় কোনো দুঃশাসন ছিল না। ১৫ বছর ছিল আওয়ামী লীগের উন্নয়নের মহাসোপান। তাদের সময়ে মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলসহ অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে রাষ্ট্রকে উন্নীত করার যে প্রচেষ্টা, তা বাস্তবায়নে অনেকটা সফল হয়েছেন শেখ হাসিনা। ফ্যাসিবাদ শব্দটি মূলত একতরফা বয়ান।’
ট্রাইব্যুনাল বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, খুন-গুম, বেআইনি আটক, মিথ্যা মামলা, অপহরণ—এই কাজগুলো কী? জবাবে আমির হোসেন বলেন, রাষ্ট্র চালাতে গেলে প্রয়োজনে অনেক সময় কঠোর হতে হয়। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে কিছু ভুলত্রুটি হয়। সব সঠিক না-ও হতে পারে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সম্পর্কে আমির হোসেন বলেন, এই (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) শব্দটির ব্যবহার করেছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা গোলাম আযম। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার আন্দোলন ছিল শেখ হাসিনার। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতেন সর্বশেষ প্রধান বিচারপতি। বিএনপি তাদের সুবিধামতো বিচারপতিকে যাতে প্রধান বিচারপতি করা যায়, সে জন্য বিচারপতিদের বয়স বাড়িয়ে দিল। এই কাজটি না করলে, শেখ হাসিনা যদি বিলোপ করতেন, তাহলে বলা যেত, শেখ হাসিনা ভুল করেছেন। বয়স বাড়িয়ে ডিজাইনের নির্বাচন করার চেষ্টা হয়েছিল। এটা থেকে প্রতীয়মান হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ভালো উদ্যোগ ছিল, যেটাকে বিনষ্ট করার একটা চেষ্টা ছিল। পরবর্তী সময়ে আইনের মাধ্যমে বাতিলের সিদ্ধান্ত আসে। তাই এটি শেখ হাসিনার কোনো কূটচাল ছিল না।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরানোর প্রসঙ্গে বঙ্গোপসাগর সংলাপে ভারত ও বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে পরে হাস্যরসের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে উষ্ণতা ছড়িয়েছেন দুপক্ষের আলোচকেরা।
১৭ নভেম্বর ২০২৪
রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ তৈরি করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। চলতি সপ্তাহের শেষে সরকারের কাছে জমা দিতে চায় তারা। বিষয়টি সামনে এলে রাজনীতিতে নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। সে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের দিক থেকে শক্ত অবস্থান চায় কমিশন।
২৩ মিনিট আগে
বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। তাদের চিঠিটি গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ)
৪ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) থাকা ৯ জন সিনিয়র সচিব ও সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপনে তাঁদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়।
৪ ঘণ্টা আগেপ্রধান উপদেষ্টাকে ৬ আন্তর্জাতিক সংগঠনের চিঠি
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। তাদের চিঠিটি গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
সংস্থাগুলো হলো সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে), নাগরিক সমাজের অধিকার রক্ষায় বিশ্ব সংগঠন দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক সংস্থা সিভিকাস, থাইল্যান্ডভিত্তিক রোহিঙ্গা নিয়ে নিয়োজিত মানবাধিকার সংগঠন ফোরটিফাই রাইটস, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস ও টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট।
গত রোববার এইচআরডব্লিউর ওয়েবসাইটে চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছে। মৌলিক স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার, আইনি সংস্কার, গুম এবং অন্যান্য নির্যাতনের ঘটনা তদন্তের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ায় চিঠিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রসংশা করা হয়েছে।
চিঠিতে ১২টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে এবং এর আগের ১৫ বছরে যেসব গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে সেসব ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিতে করে বিচারের আওতায় আনার সুপারিশ অন্যতম।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে কথা বলা হয়েছে চিঠিতে। বাক্স্বাধীনতা এবং অন্যান্য মৌলিক অধিকার যাতে খর্ব না হয় সে জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৪ সালের আগস্টের আগে হওয়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলাগুলো পর্যালোচনা ও বাতিলের কথা বলা হয়েছে সুপারিশে।

বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। তাদের চিঠিটি গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
সংস্থাগুলো হলো সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে), নাগরিক সমাজের অধিকার রক্ষায় বিশ্ব সংগঠন দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক সংস্থা সিভিকাস, থাইল্যান্ডভিত্তিক রোহিঙ্গা নিয়ে নিয়োজিত মানবাধিকার সংগঠন ফোরটিফাই রাইটস, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস ও টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট।
গত রোববার এইচআরডব্লিউর ওয়েবসাইটে চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছে। মৌলিক স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার, আইনি সংস্কার, গুম এবং অন্যান্য নির্যাতনের ঘটনা তদন্তের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ায় চিঠিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রসংশা করা হয়েছে।
চিঠিতে ১২টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে এবং এর আগের ১৫ বছরে যেসব গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে সেসব ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিতে করে বিচারের আওতায় আনার সুপারিশ অন্যতম।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে কথা বলা হয়েছে চিঠিতে। বাক্স্বাধীনতা এবং অন্যান্য মৌলিক অধিকার যাতে খর্ব না হয় সে জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৪ সালের আগস্টের আগে হওয়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলাগুলো পর্যালোচনা ও বাতিলের কথা বলা হয়েছে সুপারিশে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরানোর প্রসঙ্গে বঙ্গোপসাগর সংলাপে ভারত ও বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে পরে হাস্যরসের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে উষ্ণতা ছড়িয়েছেন দুপক্ষের আলোচকেরা।
১৭ নভেম্বর ২০২৪
রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ তৈরি করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। চলতি সপ্তাহের শেষে সরকারের কাছে জমা দিতে চায় তারা। বিষয়টি সামনে এলে রাজনীতিতে নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। সে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের দিক থেকে শক্ত অবস্থান চায় কমিশন।
২৩ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় টার্গেট করে হত্যার তথ্য সত্য নয় বলে ট্রাইব্যুনালে দাবি করেছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলায় আজ
৩ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) থাকা ৯ জন সিনিয়র সচিব ও সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপনে তাঁদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়।
৪ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) থাকা ৯ জন সিনিয়র সচিব ও সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপনে তাঁদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়।
সিনিয়র সচিব ও সচিবদের মধ্যে শফিউল আজিম, ড. এ কে এম মতিউর রহমান, ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, মো. নূরুল আলম, মো. আজিজুর রহমান, মো. মিজানুর রহমান, মো. সামসুল আরেফিন, মো. মশিউর রহমান ও মো. মনজুর হোসেনকে জনস্বার্থে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
সরকারি চাকরি আইনের ৪৫ ধারা অনুযায়ী তাঁদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। ওই ধারা অনুযায়ী কারও চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলে কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া ছাড়াই সরকার বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাতে পারে। তবে এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিতে হয়।
বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো ৯ জন সিনিয়র সচিব ও সচিব অবসরকালীন সুবিধা পাবেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া বেশ কয়েকজন সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর বেশ কয়েকজন সিনিয়র সচিব ও সচিবকে ওএসডি করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) থাকা ৯ জন সিনিয়র সচিব ও সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপনে তাঁদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়।
সিনিয়র সচিব ও সচিবদের মধ্যে শফিউল আজিম, ড. এ কে এম মতিউর রহমান, ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, মো. নূরুল আলম, মো. আজিজুর রহমান, মো. মিজানুর রহমান, মো. সামসুল আরেফিন, মো. মশিউর রহমান ও মো. মনজুর হোসেনকে জনস্বার্থে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
সরকারি চাকরি আইনের ৪৫ ধারা অনুযায়ী তাঁদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। ওই ধারা অনুযায়ী কারও চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলে কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া ছাড়াই সরকার বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাতে পারে। তবে এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিতে হয়।
বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো ৯ জন সিনিয়র সচিব ও সচিব অবসরকালীন সুবিধা পাবেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া বেশ কয়েকজন সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর বেশ কয়েকজন সিনিয়র সচিব ও সচিবকে ওএসডি করা হয়।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরানোর প্রসঙ্গে বঙ্গোপসাগর সংলাপে ভারত ও বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে পরে হাস্যরসের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে উষ্ণতা ছড়িয়েছেন দুপক্ষের আলোচকেরা।
১৭ নভেম্বর ২০২৪
রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ তৈরি করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। চলতি সপ্তাহের শেষে সরকারের কাছে জমা দিতে চায় তারা। বিষয়টি সামনে এলে রাজনীতিতে নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। সে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের দিক থেকে শক্ত অবস্থান চায় কমিশন।
২৩ মিনিট আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় টার্গেট করে হত্যার তথ্য সত্য নয় বলে ট্রাইব্যুনালে দাবি করেছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলায় আজ
৩ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। তাদের চিঠিটি গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ)
৪ ঘণ্টা আগে