নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কয়েক দিন পরেই ঈদ। শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। আজ শুক্রবার থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি কাটাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। বেসরকারি চাকুরেদের অনেকেরও ছুটি সপ্তাহখানেকের মতো। লম্বা এই ছুটি প্রিয়জনের সান্নিধ্যে কাটাতে শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরছে নগরবাসী।
ঈদের আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল শেষ কর্মদিবস। বিকেলের পর থেকে তাই রাজধানীর বাস ও রেলস্টেশন এবং লঞ্চঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। মহাসড়কে বড় যানজট না হলেও, রাজধানী থেকে বের হতে যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।
গতকাল বাস টার্মিনালগুলোতে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে কাউন্টারের সামনে এবং রেলস্টেশনগুলোতেও ছিল অপেক্ষমাণ মানুষদের ভিড়। লঞ্চ টার্মিনালে ভিড় থাকলেও স্বাভাবিকভাবে ছেড়ে গেছে বেশির ভাগ লঞ্চ। রাজধানী ছাড়তে ঝক্কি-ঝামেলা থাকলেও ঈদের আনন্দে বাড়িফেরা মানুষদের মুখে ছিল আনন্দের ছাপ।
রাজধানীর কমলাপুর থেকে গতকাল ৭০টির মতো ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে ৪৩টি আন্তনগর, ২৪টি মেইল কমিউটার। এসব ট্রেনের সঙ্গে দুটি বিশেষ ট্রেনও যুক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহন করছে রেল।
কমলাপুর রেলস্টেশনে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নীলসাগর এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস, রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস এবং নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস ট্রেন এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিলম্বে গন্তব্যে যাত্রা করেছে। এতে এসব ট্রেনের যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী নীলা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ট্রেনটি ছাড়বে বলে বাসা থেকে ভোরে রওনা হয়ে কমলাপুর এসেছি। কিন্তু এসে দেখি ট্রেন সময়মতো ছাড়েনি। এমনিতেই স্টেশনে যাত্রীর চাপ বেশি, তারপর আবার বসে থাকা; এটা একটা কষ্টকর বিষয়।’
রেলস্টেশন ঘুরে আরও দেখা যায়, যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকায় বাড়তি কড়াকড়ি আরোপ করেছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। তিন স্তরের চেকিং শেষে যাত্রীকে স্টেশনে ঢুকতে হচ্ছে। টিকিট ছাড়া কাউকে স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মো. শাহাদাত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শুক্রবার যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে। বিষয়টি মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। টিকিট ছাড়া কোনো যাত্রীকে স্টেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যাত্রীদের আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণের জন্যই বিনা টিকিটের বিষয়টিতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বিকেলের পরে যাত্রীদের চাপ বাড়লেও কেউ যেন ট্রেনের ছাদে উঠতে না পারে, সে বিষয়েও নজর রাখা হচ্ছে। বেশির ভাগ ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে। আশা করি যাত্রীদের ভোগান্তি হবে না।’
মহাসড়কে নেই ভোগান্তি
রাজধানী ছাড়তে বাসের যাত্রীরা গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ভিড় জমিয়েছে। শহর থেকে বের হওয়ার মুখগুলোতে যানজট হওয়ার কারণে টার্মিনাল থেকে গাড়িগুলো বের হতে সময় লাগছে। এতে বাসের কাউন্টারে যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত বাসে ওঠার জন্য।
গতকাল সকালের দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে মদনপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ঢাকায় ট্রাক ঢুকতে না দেওয়ার কারণে এই মহাসড়কে জট তৈরি হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে সব মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে, তবে কোথাও বড় ধরনের যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ঈদযাত্রায় এখনো ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়নি। মহাসড়কে জট না থাকায় অনেকটা স্বস্তিতেই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন যাত্রীরা।
গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেছেন, ‘ঈদে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটবে না। ঈদকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সতর্ক থাকবে। ঈদের ছুটিতে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকা থেকে গ্রামে যাবে। তাদের যাত্রাটা আনন্দদায়ক করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। হাইওয়ে পুলিশ খুব সক্রিয় রয়েছে।’
সড়কপথে ঈদযাত্রার বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন বলেন, ‘সড়কপথে এখন পর্যন্ত ঈদযাত্রা নির্বিঘ্নভাবেই চলছে। আমাদের ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। টার্মিনালগুলোতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটেরা আদালত পরিচালনা করছেন। বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ পেলে জরিমানা করা হচ্ছে। আশা করছি সড়কপথে এবার ঈদযাত্রা ভোগান্তি ছাড়াই শেষ হবে।’
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন আছে। দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামে আমজাদের বাজার পর্যন্ত এই অংশে কোনো রকম যানজট ছাড়াই স্বস্তিতে ঢাকা থেকে বাড়ি যাচ্ছে মানুষ।
ঢাকা থেকে কুমিল্লা আসা নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকার বাসিন্দা আশিকুর রহমান জানান, ঢাকা থেকে কুমিল্লায় দেড় ঘণ্টায় এসেছেন। এত তাড়াতাড়ি ঈদের সময় বাড়ি ফিরতে পেরে খুশি তিনি।
গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরে মহানগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকার শিল্প-কলকারখানার ছুটিতে কর্মজীবী মানুষ গ্রামের বাড়িতে শুরু করেছেন। গতকাল গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ শিল্প-কলকারখানায় বেতন-বোনাস দেওয়া হয়েছে।
গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। দিনভর মহাসড়ক দুটিতে ঘরমুখো মানুষের ভিড় এবং যানবাহনের চাপ থাকলেও কোথাও যানজট দেখা যায়নি। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও যানজটমুক্ত রাখতে মহাসড়কের নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থীরা।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার চৌধুরী যাবের সাদেক জানান, কালিয়াকৈর চন্দ্র এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের যানজট নিরসনের জন্য প্রায় ৬০০ পুলিশ সদস্য নিয়োজিত আছে। এ ছাড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর ও শ্রীপুর এলাকা এবং কাপাসিয়া থানা ও কালীগঞ্জ এলাকায় সড়ক মহাসড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণ ও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে কাজ করছে।
ঈদযাত্রা যাতে শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত স্বস্তিদায়ক থাকে সে জন্য কাজ করছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি)। জিএমপি কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান বলেছেন, গাজীপুর মহানগরের যানজট ও জনজট নিরসনে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যানজট নিরসনে কোনো অবস্থাতেই মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে উঠতে দেওয়া হবে না।
সদরঘাটে ভিড় নেই
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, ঈদের সময় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় থাকলেও এ বছর ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনালে নেই চিরচেনা সেই ভিড়। তবে এবার উপচে পড়া ভিড় না থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করছে যাত্রীরা।
বিআইডব্লিউটিএ ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ৩৩টি যাত্রীবাহী লঞ্চ সদরঘাট টার্মিনাল ছেড়ে বিভিন্ন গন্তব্যে চলে গেছে। অন্য দিকে টার্মিনালে ভিড়েছে ৭৮টি লঞ্চ। এ ছাড়া এ বছর ঈদযাত্রায় প্রায় ১৭৫টি লঞ্চ যাত্রীসেবা দিচ্ছে।
লঞ্চমালিকদের সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল ও যাত্রী পরিবহন (যাপ) সংস্থার সদস্য হামজা লাল শেখ বলেন, টার্মিনালে যাত্রীদের তেমন চাপ নেই। তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমাদের ১৭৫টি লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাত্রীদের উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে বিশেষ লঞ্চের ব্যবস্থা করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোবারক হোসেন বলেন, টার্মিনালে এখনো যাত্রীর চাপ বাড়েনি। তবে যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিতে ইতিমধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কয়েক দিন পরেই ঈদ। শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। আজ শুক্রবার থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি কাটাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। বেসরকারি চাকুরেদের অনেকেরও ছুটি সপ্তাহখানেকের মতো। লম্বা এই ছুটি প্রিয়জনের সান্নিধ্যে কাটাতে শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরছে নগরবাসী।
ঈদের আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল শেষ কর্মদিবস। বিকেলের পর থেকে তাই রাজধানীর বাস ও রেলস্টেশন এবং লঞ্চঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। মহাসড়কে বড় যানজট না হলেও, রাজধানী থেকে বের হতে যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।
গতকাল বাস টার্মিনালগুলোতে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে কাউন্টারের সামনে এবং রেলস্টেশনগুলোতেও ছিল অপেক্ষমাণ মানুষদের ভিড়। লঞ্চ টার্মিনালে ভিড় থাকলেও স্বাভাবিকভাবে ছেড়ে গেছে বেশির ভাগ লঞ্চ। রাজধানী ছাড়তে ঝক্কি-ঝামেলা থাকলেও ঈদের আনন্দে বাড়িফেরা মানুষদের মুখে ছিল আনন্দের ছাপ।
রাজধানীর কমলাপুর থেকে গতকাল ৭০টির মতো ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে ৪৩টি আন্তনগর, ২৪টি মেইল কমিউটার। এসব ট্রেনের সঙ্গে দুটি বিশেষ ট্রেনও যুক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহন করছে রেল।
কমলাপুর রেলস্টেশনে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নীলসাগর এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস, রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস এবং নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস ট্রেন এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিলম্বে গন্তব্যে যাত্রা করেছে। এতে এসব ট্রেনের যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী নীলা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ট্রেনটি ছাড়বে বলে বাসা থেকে ভোরে রওনা হয়ে কমলাপুর এসেছি। কিন্তু এসে দেখি ট্রেন সময়মতো ছাড়েনি। এমনিতেই স্টেশনে যাত্রীর চাপ বেশি, তারপর আবার বসে থাকা; এটা একটা কষ্টকর বিষয়।’
রেলস্টেশন ঘুরে আরও দেখা যায়, যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকায় বাড়তি কড়াকড়ি আরোপ করেছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। তিন স্তরের চেকিং শেষে যাত্রীকে স্টেশনে ঢুকতে হচ্ছে। টিকিট ছাড়া কাউকে স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মো. শাহাদাত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শুক্রবার যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে। বিষয়টি মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। টিকিট ছাড়া কোনো যাত্রীকে স্টেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যাত্রীদের আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণের জন্যই বিনা টিকিটের বিষয়টিতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বিকেলের পরে যাত্রীদের চাপ বাড়লেও কেউ যেন ট্রেনের ছাদে উঠতে না পারে, সে বিষয়েও নজর রাখা হচ্ছে। বেশির ভাগ ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে। আশা করি যাত্রীদের ভোগান্তি হবে না।’
মহাসড়কে নেই ভোগান্তি
রাজধানী ছাড়তে বাসের যাত্রীরা গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ভিড় জমিয়েছে। শহর থেকে বের হওয়ার মুখগুলোতে যানজট হওয়ার কারণে টার্মিনাল থেকে গাড়িগুলো বের হতে সময় লাগছে। এতে বাসের কাউন্টারে যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত বাসে ওঠার জন্য।
গতকাল সকালের দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে মদনপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ঢাকায় ট্রাক ঢুকতে না দেওয়ার কারণে এই মহাসড়কে জট তৈরি হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে সব মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে, তবে কোথাও বড় ধরনের যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ঈদযাত্রায় এখনো ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়নি। মহাসড়কে জট না থাকায় অনেকটা স্বস্তিতেই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন যাত্রীরা।
গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেছেন, ‘ঈদে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটবে না। ঈদকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সতর্ক থাকবে। ঈদের ছুটিতে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকা থেকে গ্রামে যাবে। তাদের যাত্রাটা আনন্দদায়ক করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। হাইওয়ে পুলিশ খুব সক্রিয় রয়েছে।’
সড়কপথে ঈদযাত্রার বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন বলেন, ‘সড়কপথে এখন পর্যন্ত ঈদযাত্রা নির্বিঘ্নভাবেই চলছে। আমাদের ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। টার্মিনালগুলোতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটেরা আদালত পরিচালনা করছেন। বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ পেলে জরিমানা করা হচ্ছে। আশা করছি সড়কপথে এবার ঈদযাত্রা ভোগান্তি ছাড়াই শেষ হবে।’
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন আছে। দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামে আমজাদের বাজার পর্যন্ত এই অংশে কোনো রকম যানজট ছাড়াই স্বস্তিতে ঢাকা থেকে বাড়ি যাচ্ছে মানুষ।
ঢাকা থেকে কুমিল্লা আসা নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকার বাসিন্দা আশিকুর রহমান জানান, ঢাকা থেকে কুমিল্লায় দেড় ঘণ্টায় এসেছেন। এত তাড়াতাড়ি ঈদের সময় বাড়ি ফিরতে পেরে খুশি তিনি।
গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরে মহানগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকার শিল্প-কলকারখানার ছুটিতে কর্মজীবী মানুষ গ্রামের বাড়িতে শুরু করেছেন। গতকাল গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ শিল্প-কলকারখানায় বেতন-বোনাস দেওয়া হয়েছে।
গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। দিনভর মহাসড়ক দুটিতে ঘরমুখো মানুষের ভিড় এবং যানবাহনের চাপ থাকলেও কোথাও যানজট দেখা যায়নি। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও যানজটমুক্ত রাখতে মহাসড়কের নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থীরা।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার চৌধুরী যাবের সাদেক জানান, কালিয়াকৈর চন্দ্র এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের যানজট নিরসনের জন্য প্রায় ৬০০ পুলিশ সদস্য নিয়োজিত আছে। এ ছাড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর ও শ্রীপুর এলাকা এবং কাপাসিয়া থানা ও কালীগঞ্জ এলাকায় সড়ক মহাসড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণ ও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে কাজ করছে।
ঈদযাত্রা যাতে শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত স্বস্তিদায়ক থাকে সে জন্য কাজ করছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি)। জিএমপি কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান বলেছেন, গাজীপুর মহানগরের যানজট ও জনজট নিরসনে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যানজট নিরসনে কোনো অবস্থাতেই মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে উঠতে দেওয়া হবে না।
সদরঘাটে ভিড় নেই
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, ঈদের সময় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় থাকলেও এ বছর ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনালে নেই চিরচেনা সেই ভিড়। তবে এবার উপচে পড়া ভিড় না থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করছে যাত্রীরা।
বিআইডব্লিউটিএ ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ৩৩টি যাত্রীবাহী লঞ্চ সদরঘাট টার্মিনাল ছেড়ে বিভিন্ন গন্তব্যে চলে গেছে। অন্য দিকে টার্মিনালে ভিড়েছে ৭৮টি লঞ্চ। এ ছাড়া এ বছর ঈদযাত্রায় প্রায় ১৭৫টি লঞ্চ যাত্রীসেবা দিচ্ছে।
লঞ্চমালিকদের সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল ও যাত্রী পরিবহন (যাপ) সংস্থার সদস্য হামজা লাল শেখ বলেন, টার্মিনালে যাত্রীদের তেমন চাপ নেই। তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমাদের ১৭৫টি লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাত্রীদের উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে বিশেষ লঞ্চের ব্যবস্থা করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোবারক হোসেন বলেন, টার্মিনালে এখনো যাত্রীর চাপ বাড়েনি। তবে যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিতে ইতিমধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কয়েক দিন পরেই ঈদ। শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। আজ শুক্রবার থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি কাটাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। বেসরকারি চাকুরেদের অনেকেরও ছুটি সপ্তাহখানেকের মতো। লম্বা এই ছুটি প্রিয়জনের সান্নিধ্যে কাটাতে শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরছে নগরবাসী।
ঈদের আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল শেষ কর্মদিবস। বিকেলের পর থেকে তাই রাজধানীর বাস ও রেলস্টেশন এবং লঞ্চঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। মহাসড়কে বড় যানজট না হলেও, রাজধানী থেকে বের হতে যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।
গতকাল বাস টার্মিনালগুলোতে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে কাউন্টারের সামনে এবং রেলস্টেশনগুলোতেও ছিল অপেক্ষমাণ মানুষদের ভিড়। লঞ্চ টার্মিনালে ভিড় থাকলেও স্বাভাবিকভাবে ছেড়ে গেছে বেশির ভাগ লঞ্চ। রাজধানী ছাড়তে ঝক্কি-ঝামেলা থাকলেও ঈদের আনন্দে বাড়িফেরা মানুষদের মুখে ছিল আনন্দের ছাপ।
রাজধানীর কমলাপুর থেকে গতকাল ৭০টির মতো ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে ৪৩টি আন্তনগর, ২৪টি মেইল কমিউটার। এসব ট্রেনের সঙ্গে দুটি বিশেষ ট্রেনও যুক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহন করছে রেল।
কমলাপুর রেলস্টেশনে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নীলসাগর এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস, রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস এবং নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস ট্রেন এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিলম্বে গন্তব্যে যাত্রা করেছে। এতে এসব ট্রেনের যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী নীলা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ট্রেনটি ছাড়বে বলে বাসা থেকে ভোরে রওনা হয়ে কমলাপুর এসেছি। কিন্তু এসে দেখি ট্রেন সময়মতো ছাড়েনি। এমনিতেই স্টেশনে যাত্রীর চাপ বেশি, তারপর আবার বসে থাকা; এটা একটা কষ্টকর বিষয়।’
রেলস্টেশন ঘুরে আরও দেখা যায়, যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকায় বাড়তি কড়াকড়ি আরোপ করেছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। তিন স্তরের চেকিং শেষে যাত্রীকে স্টেশনে ঢুকতে হচ্ছে। টিকিট ছাড়া কাউকে স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মো. শাহাদাত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শুক্রবার যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে। বিষয়টি মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। টিকিট ছাড়া কোনো যাত্রীকে স্টেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যাত্রীদের আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণের জন্যই বিনা টিকিটের বিষয়টিতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বিকেলের পরে যাত্রীদের চাপ বাড়লেও কেউ যেন ট্রেনের ছাদে উঠতে না পারে, সে বিষয়েও নজর রাখা হচ্ছে। বেশির ভাগ ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে। আশা করি যাত্রীদের ভোগান্তি হবে না।’
মহাসড়কে নেই ভোগান্তি
রাজধানী ছাড়তে বাসের যাত্রীরা গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ভিড় জমিয়েছে। শহর থেকে বের হওয়ার মুখগুলোতে যানজট হওয়ার কারণে টার্মিনাল থেকে গাড়িগুলো বের হতে সময় লাগছে। এতে বাসের কাউন্টারে যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত বাসে ওঠার জন্য।
গতকাল সকালের দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে মদনপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ঢাকায় ট্রাক ঢুকতে না দেওয়ার কারণে এই মহাসড়কে জট তৈরি হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে সব মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে, তবে কোথাও বড় ধরনের যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ঈদযাত্রায় এখনো ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়নি। মহাসড়কে জট না থাকায় অনেকটা স্বস্তিতেই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন যাত্রীরা।
গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেছেন, ‘ঈদে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটবে না। ঈদকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সতর্ক থাকবে। ঈদের ছুটিতে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকা থেকে গ্রামে যাবে। তাদের যাত্রাটা আনন্দদায়ক করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। হাইওয়ে পুলিশ খুব সক্রিয় রয়েছে।’
সড়কপথে ঈদযাত্রার বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন বলেন, ‘সড়কপথে এখন পর্যন্ত ঈদযাত্রা নির্বিঘ্নভাবেই চলছে। আমাদের ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। টার্মিনালগুলোতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটেরা আদালত পরিচালনা করছেন। বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ পেলে জরিমানা করা হচ্ছে। আশা করছি সড়কপথে এবার ঈদযাত্রা ভোগান্তি ছাড়াই শেষ হবে।’
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন আছে। দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামে আমজাদের বাজার পর্যন্ত এই অংশে কোনো রকম যানজট ছাড়াই স্বস্তিতে ঢাকা থেকে বাড়ি যাচ্ছে মানুষ।
ঢাকা থেকে কুমিল্লা আসা নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকার বাসিন্দা আশিকুর রহমান জানান, ঢাকা থেকে কুমিল্লায় দেড় ঘণ্টায় এসেছেন। এত তাড়াতাড়ি ঈদের সময় বাড়ি ফিরতে পেরে খুশি তিনি।
গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরে মহানগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকার শিল্প-কলকারখানার ছুটিতে কর্মজীবী মানুষ গ্রামের বাড়িতে শুরু করেছেন। গতকাল গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ শিল্প-কলকারখানায় বেতন-বোনাস দেওয়া হয়েছে।
গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। দিনভর মহাসড়ক দুটিতে ঘরমুখো মানুষের ভিড় এবং যানবাহনের চাপ থাকলেও কোথাও যানজট দেখা যায়নি। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও যানজটমুক্ত রাখতে মহাসড়কের নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থীরা।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার চৌধুরী যাবের সাদেক জানান, কালিয়াকৈর চন্দ্র এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের যানজট নিরসনের জন্য প্রায় ৬০০ পুলিশ সদস্য নিয়োজিত আছে। এ ছাড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর ও শ্রীপুর এলাকা এবং কাপাসিয়া থানা ও কালীগঞ্জ এলাকায় সড়ক মহাসড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণ ও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে কাজ করছে।
ঈদযাত্রা যাতে শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত স্বস্তিদায়ক থাকে সে জন্য কাজ করছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি)। জিএমপি কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান বলেছেন, গাজীপুর মহানগরের যানজট ও জনজট নিরসনে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যানজট নিরসনে কোনো অবস্থাতেই মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে উঠতে দেওয়া হবে না।
সদরঘাটে ভিড় নেই
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, ঈদের সময় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় থাকলেও এ বছর ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনালে নেই চিরচেনা সেই ভিড়। তবে এবার উপচে পড়া ভিড় না থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করছে যাত্রীরা।
বিআইডব্লিউটিএ ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ৩৩টি যাত্রীবাহী লঞ্চ সদরঘাট টার্মিনাল ছেড়ে বিভিন্ন গন্তব্যে চলে গেছে। অন্য দিকে টার্মিনালে ভিড়েছে ৭৮টি লঞ্চ। এ ছাড়া এ বছর ঈদযাত্রায় প্রায় ১৭৫টি লঞ্চ যাত্রীসেবা দিচ্ছে।
লঞ্চমালিকদের সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল ও যাত্রী পরিবহন (যাপ) সংস্থার সদস্য হামজা লাল শেখ বলেন, টার্মিনালে যাত্রীদের তেমন চাপ নেই। তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমাদের ১৭৫টি লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাত্রীদের উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে বিশেষ লঞ্চের ব্যবস্থা করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোবারক হোসেন বলেন, টার্মিনালে এখনো যাত্রীর চাপ বাড়েনি। তবে যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিতে ইতিমধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কয়েক দিন পরেই ঈদ। শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। আজ শুক্রবার থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি কাটাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। বেসরকারি চাকুরেদের অনেকেরও ছুটি সপ্তাহখানেকের মতো। লম্বা এই ছুটি প্রিয়জনের সান্নিধ্যে কাটাতে শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরছে নগরবাসী।
ঈদের আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল শেষ কর্মদিবস। বিকেলের পর থেকে তাই রাজধানীর বাস ও রেলস্টেশন এবং লঞ্চঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। মহাসড়কে বড় যানজট না হলেও, রাজধানী থেকে বের হতে যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।
গতকাল বাস টার্মিনালগুলোতে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে কাউন্টারের সামনে এবং রেলস্টেশনগুলোতেও ছিল অপেক্ষমাণ মানুষদের ভিড়। লঞ্চ টার্মিনালে ভিড় থাকলেও স্বাভাবিকভাবে ছেড়ে গেছে বেশির ভাগ লঞ্চ। রাজধানী ছাড়তে ঝক্কি-ঝামেলা থাকলেও ঈদের আনন্দে বাড়িফেরা মানুষদের মুখে ছিল আনন্দের ছাপ।
রাজধানীর কমলাপুর থেকে গতকাল ৭০টির মতো ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে ৪৩টি আন্তনগর, ২৪টি মেইল কমিউটার। এসব ট্রেনের সঙ্গে দুটি বিশেষ ট্রেনও যুক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহন করছে রেল।
কমলাপুর রেলস্টেশনে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নীলসাগর এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস, রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস এবং নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস ট্রেন এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিলম্বে গন্তব্যে যাত্রা করেছে। এতে এসব ট্রেনের যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী নীলা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ট্রেনটি ছাড়বে বলে বাসা থেকে ভোরে রওনা হয়ে কমলাপুর এসেছি। কিন্তু এসে দেখি ট্রেন সময়মতো ছাড়েনি। এমনিতেই স্টেশনে যাত্রীর চাপ বেশি, তারপর আবার বসে থাকা; এটা একটা কষ্টকর বিষয়।’
রেলস্টেশন ঘুরে আরও দেখা যায়, যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকায় বাড়তি কড়াকড়ি আরোপ করেছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। তিন স্তরের চেকিং শেষে যাত্রীকে স্টেশনে ঢুকতে হচ্ছে। টিকিট ছাড়া কাউকে স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মো. শাহাদাত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শুক্রবার যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে। বিষয়টি মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। টিকিট ছাড়া কোনো যাত্রীকে স্টেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যাত্রীদের আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণের জন্যই বিনা টিকিটের বিষয়টিতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বিকেলের পরে যাত্রীদের চাপ বাড়লেও কেউ যেন ট্রেনের ছাদে উঠতে না পারে, সে বিষয়েও নজর রাখা হচ্ছে। বেশির ভাগ ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে। আশা করি যাত্রীদের ভোগান্তি হবে না।’
মহাসড়কে নেই ভোগান্তি
রাজধানী ছাড়তে বাসের যাত্রীরা গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ভিড় জমিয়েছে। শহর থেকে বের হওয়ার মুখগুলোতে যানজট হওয়ার কারণে টার্মিনাল থেকে গাড়িগুলো বের হতে সময় লাগছে। এতে বাসের কাউন্টারে যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত বাসে ওঠার জন্য।
গতকাল সকালের দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে মদনপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ঢাকায় ট্রাক ঢুকতে না দেওয়ার কারণে এই মহাসড়কে জট তৈরি হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে সব মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে, তবে কোথাও বড় ধরনের যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ঈদযাত্রায় এখনো ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়নি। মহাসড়কে জট না থাকায় অনেকটা স্বস্তিতেই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন যাত্রীরা।
গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেছেন, ‘ঈদে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটবে না। ঈদকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সতর্ক থাকবে। ঈদের ছুটিতে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকা থেকে গ্রামে যাবে। তাদের যাত্রাটা আনন্দদায়ক করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। হাইওয়ে পুলিশ খুব সক্রিয় রয়েছে।’
সড়কপথে ঈদযাত্রার বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন বলেন, ‘সড়কপথে এখন পর্যন্ত ঈদযাত্রা নির্বিঘ্নভাবেই চলছে। আমাদের ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। টার্মিনালগুলোতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটেরা আদালত পরিচালনা করছেন। বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ পেলে জরিমানা করা হচ্ছে। আশা করছি সড়কপথে এবার ঈদযাত্রা ভোগান্তি ছাড়াই শেষ হবে।’
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন আছে। দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামে আমজাদের বাজার পর্যন্ত এই অংশে কোনো রকম যানজট ছাড়াই স্বস্তিতে ঢাকা থেকে বাড়ি যাচ্ছে মানুষ।
ঢাকা থেকে কুমিল্লা আসা নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকার বাসিন্দা আশিকুর রহমান জানান, ঢাকা থেকে কুমিল্লায় দেড় ঘণ্টায় এসেছেন। এত তাড়াতাড়ি ঈদের সময় বাড়ি ফিরতে পেরে খুশি তিনি।
গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরে মহানগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকার শিল্প-কলকারখানার ছুটিতে কর্মজীবী মানুষ গ্রামের বাড়িতে শুরু করেছেন। গতকাল গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ শিল্প-কলকারখানায় বেতন-বোনাস দেওয়া হয়েছে।
গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। দিনভর মহাসড়ক দুটিতে ঘরমুখো মানুষের ভিড় এবং যানবাহনের চাপ থাকলেও কোথাও যানজট দেখা যায়নি। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও যানজটমুক্ত রাখতে মহাসড়কের নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থীরা।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার চৌধুরী যাবের সাদেক জানান, কালিয়াকৈর চন্দ্র এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের যানজট নিরসনের জন্য প্রায় ৬০০ পুলিশ সদস্য নিয়োজিত আছে। এ ছাড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর ও শ্রীপুর এলাকা এবং কাপাসিয়া থানা ও কালীগঞ্জ এলাকায় সড়ক মহাসড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণ ও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে কাজ করছে।
ঈদযাত্রা যাতে শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত স্বস্তিদায়ক থাকে সে জন্য কাজ করছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি)। জিএমপি কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান বলেছেন, গাজীপুর মহানগরের যানজট ও জনজট নিরসনে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যানজট নিরসনে কোনো অবস্থাতেই মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে উঠতে দেওয়া হবে না।
সদরঘাটে ভিড় নেই
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, ঈদের সময় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় থাকলেও এ বছর ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনালে নেই চিরচেনা সেই ভিড়। তবে এবার উপচে পড়া ভিড় না থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করছে যাত্রীরা।
বিআইডব্লিউটিএ ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ৩৩টি যাত্রীবাহী লঞ্চ সদরঘাট টার্মিনাল ছেড়ে বিভিন্ন গন্তব্যে চলে গেছে। অন্য দিকে টার্মিনালে ভিড়েছে ৭৮টি লঞ্চ। এ ছাড়া এ বছর ঈদযাত্রায় প্রায় ১৭৫টি লঞ্চ যাত্রীসেবা দিচ্ছে।
লঞ্চমালিকদের সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল ও যাত্রী পরিবহন (যাপ) সংস্থার সদস্য হামজা লাল শেখ বলেন, টার্মিনালে যাত্রীদের তেমন চাপ নেই। তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমাদের ১৭৫টি লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাত্রীদের উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে বিশেষ লঞ্চের ব্যবস্থা করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোবারক হোসেন বলেন, টার্মিনালে এখনো যাত্রীর চাপ বাড়েনি। তবে যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিতে ইতিমধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
দেশে গত এক যুগে কয়েকটি নতুন সড়ক-মহাসড়ক, সেতু, উড়ালসড়ক, টানেল যোগাযোগে ব্যাপক পরিবর্তন আনলেও সড়ক নিরাপত্তা বাড়েনি। যানবাহনের বেপরোয়া গতি, প্রতিযোগিতা, বিশৃঙ্খল গণপরিবহন, অনিয়ন্ত্রিত ব্যাটারিচালিত ও তিন চাকার যান এবং আইন না মানায় প্রতিদিনই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। হতাহত হচ্ছে মানুষ।
২৭ মিনিট আগেজাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে নির্বাচনকালে প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বলেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক...
২ ঘণ্টা আগেবিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলের নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতম সব ঘটনা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী একেকটি পিলার। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারগুলোতে (স্তম্ভ) ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব ঘটনা।
২ ঘণ্টা আগেজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
৪ ঘণ্টা আগেতৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা
দেশে গত এক যুগে কয়েকটি নতুন সড়ক-মহাসড়ক, সেতু, উড়ালসড়ক, টানেল যোগাযোগে ব্যাপক পরিবর্তন আনলেও সড়ক নিরাপত্তা বাড়েনি। যানবাহনের বেপরোয়া গতি, প্রতিযোগিতা, বিশৃঙ্খল গণপরিবহন, অনিয়ন্ত্রিত ব্যাটারিচালিত ও তিন চাকার যান এবং আইন না মানায় প্রতিদিনই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। হতাহত হচ্ছে মানুষ।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়ক অবকাঠামোর উন্নয়ন হলেও নিরাপত্তা পরিকল্পনা ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ঘাটতি রয়ে গেছে। শুধু সড়ক নির্মাণ নয়, সেই সড়কে নিরাপদ চলাচল ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করাও জরুরি। সড়ক নিরাপত্তার নতুন চ্যালেঞ্জ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৮ হাজার ৭৯২টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৩৮ হাজার ২২৭ জন এবং আহত হয়েছে ৬১ হাজার ৭০ জন। এই সময়ে সারা দেশে ১৩ হাজার ৫৯২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১৩ হাজার ৬৫১ জনের। এই ৫ বছরের দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনা এবং দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা প্রতিবছরই ঊর্ধ্বমুখী। এমন প্রেক্ষাপটে আজ ২২ অক্টোবর পালিত হচ্ছে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস।
জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সড়কের প্রধান সমস্যা হলো বিশৃঙ্খলা। এর কারণ হলো চালক। এর জন্য লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া পরিবর্তন করতে চাচ্ছি। সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হলো মোটরসাইকেল। নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে মানুষকে সচেতন করতে ১০ হাজার হেলমেট দেব।’
গত এক যুগে সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতু, ঢাকা-ভাঙা এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-টাঙ্গাইল, এলেঙ্গা-রংপুরসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলো চার লেন বা ছয় লেনে উন্নীত হয়েছে। চট্টগ্রামে নির্মিত হয়েছে কর্ণফুলী টানেল। ঢাকা-ভাঙা এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক যোগাযোগে নতুন দিগন্ত খুলে দিলেও বেপরোয়া গতি ও বিশৃঙ্খলায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, প্রাণহানি। টানেলেও দুর্ঘটনা ঘটছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে সড়ক নেটওয়ার্কের দৈর্ঘ্য প্রায় ২২ হাজার কিলোমিটার। এর মধ্যে জাতীয় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের বেশির ভাগ অংশই প্রশস্ত করা হয়েছে। প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার সড়ক চার লেন হয়েছে। তবে অনেক জায়গায় মানসম্মত ট্রাফিক সাইন, গতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেই।
সওজের প্রকৌশলীরা বলছেন, নতুন প্রকল্পে এখন রোড সেফটি কম্পোনেন্ট যুক্ত হচ্ছে। তবে শুধু অবকাঠামো দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, এর সঙ্গে মানুষকেও সচেতন হতে হবে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, অবকাঠামো উন্নয়নে দ্রুত এগিয়েছে, কিন্তু নিরাপত্তাকে একইভাবে অগ্রাধিকার দেয়নি। সড়কে নিরাপত্তা উপকরণ, পথচারীর পারাপারের সুযোগ, গতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, ফুটপাত—এসব জায়গায় ঘাটতি রয়ে গেছে।
শৃঙ্খলার বাইরে গণপরিবহন: বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, সড়ক দুর্ঘটনার বড় একটি অংশের কারণ গণপরিবহনের শৃঙ্খলাহীনতা ও নিয়ম না মানা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাস ও ট্রাকচালকদের বেপরোয়া গতি, প্রতিযোগিতা ও নিয়মভঙ্গ সড়ক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে। পরিবহনমালিকদের চাপে সরকার সড়ক থেকে লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন সরাতে পারেনি। রাজনৈতিক প্রভাব ও চাঁদাবাজির সংস্কৃতি গণপরিবহন খাতকে অনিয়মের ঘূর্ণিতে রেখেছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বাসগুলো এখনো প্রতিযোগিতামূলকভাবে চলে, যাত্রী তুলতে যত্রতত্র থামে। পরিবহন খাতে দীর্ঘদিনের অনিয়ম এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। চালকদের প্রশিক্ষণ, কঠোর আইন প্রয়োগ ও কার্যকর তদারকি ছাড়া গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরবে না।
গণপরিবহনের শৃঙ্খলার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন বলেন, গণপরিবহনব্যবস্থা দেখভালের জন্য একটি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ দরকার। এটি ছাড়া শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়।
সড়ক আইন বাস্তবে কার্যকর হয়নি: নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর ২০১৮ সালে সড়ক পরিবহন আইন পাস হয়। ওই আইনে লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চালানো, অতিরিক্ত গতি, ফিটনেসবিহীন যান চলাচল ও ওভারলোডের ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তির বিধান আছে। বাস্তবে আইনটি কার্যকর হয়নি বললেই চলে। উল্টো পরিবহনমালিকেরা আইনের বিভিন্ন ধারা সংশোধনের দাবি তুলেছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন না হওয়ার মূল কারণ হলো রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রশাসনিক দুর্বলতা। আইনটি ভালো হলেও বাস্তবায়নের ইচ্ছা ও সক্ষমতা দুটিই কম। পরিবহন খাত দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের নিয়ন্ত্রণে, তাই আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে বারবার ছাড় দেওয়া হয়। ফলে চালক, মালিক ও যাত্রী—কেউ আইনকে গুরুত্ব দেন না। বাস্তবায়ন ছাড়া কোনো আইনই ফলপ্রসূ হয় না।
সড়ক নিরাপত্তার নতুন চ্যালেঞ্জ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারা দেশে ক্রমবর্ধমান ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এখন সড়ক নিরাপত্তার নতুন চ্যালেঞ্জ। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে এই যান বাড়লে রাজধানীর পুরো পরিবহনব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। প্রশিক্ষণবিহীন চালকদের কারণে এই যান দুর্ঘটনার বড় কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ড. আরমানা সাবিহা হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, এসব অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে না আনলে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো আরও কঠিন হবে। তাই দ্রুত নীতিমালা, নিবন্ধন ও চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি প্রধান সড়কে চলাচল বন্ধ করে নির্দিষ্ট সড়কে চলার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।
সমন্বয়ের অভাব: সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন ও নীতি থাকলেও কার্যকারিতা ব্যাহত হচ্ছে সওজ, বিআরটিএ ও পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সমন্বয়ের অভাবে। এ তিনটি সংস্থা সড়ক, যানবাহন ও আইন প্রয়োগের দায়িত্বে থাকলেও নীতি ও পরিকল্পনায় একযোগে কাজ না করায় দুর্ঘটনা প্রতিরোধে অগ্রগতি হচ্ছে না।
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা উন্নয়নের কাজ চলছে। পুলিশকে যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হচ্ছে, যাতে আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া যায়। ক্ষতিপূরণের হার বাড়ানো ও যত্রতত্র বাস থামা বন্ধে পাইলট প্রকল্পও চালু হচ্ছে। এসব উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদি হলেও আমরা আশা করছি, এতে সড়ক নিরাপত্তায় দৃশ্যমান উন্নতি হবে।’
দেশে গত এক যুগে কয়েকটি নতুন সড়ক-মহাসড়ক, সেতু, উড়ালসড়ক, টানেল যোগাযোগে ব্যাপক পরিবর্তন আনলেও সড়ক নিরাপত্তা বাড়েনি। যানবাহনের বেপরোয়া গতি, প্রতিযোগিতা, বিশৃঙ্খল গণপরিবহন, অনিয়ন্ত্রিত ব্যাটারিচালিত ও তিন চাকার যান এবং আইন না মানায় প্রতিদিনই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। হতাহত হচ্ছে মানুষ।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়ক অবকাঠামোর উন্নয়ন হলেও নিরাপত্তা পরিকল্পনা ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ঘাটতি রয়ে গেছে। শুধু সড়ক নির্মাণ নয়, সেই সড়কে নিরাপদ চলাচল ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করাও জরুরি। সড়ক নিরাপত্তার নতুন চ্যালেঞ্জ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৮ হাজার ৭৯২টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৩৮ হাজার ২২৭ জন এবং আহত হয়েছে ৬১ হাজার ৭০ জন। এই সময়ে সারা দেশে ১৩ হাজার ৫৯২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১৩ হাজার ৬৫১ জনের। এই ৫ বছরের দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনা এবং দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা প্রতিবছরই ঊর্ধ্বমুখী। এমন প্রেক্ষাপটে আজ ২২ অক্টোবর পালিত হচ্ছে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস।
জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সড়কের প্রধান সমস্যা হলো বিশৃঙ্খলা। এর কারণ হলো চালক। এর জন্য লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া পরিবর্তন করতে চাচ্ছি। সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হলো মোটরসাইকেল। নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে মানুষকে সচেতন করতে ১০ হাজার হেলমেট দেব।’
গত এক যুগে সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতু, ঢাকা-ভাঙা এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-টাঙ্গাইল, এলেঙ্গা-রংপুরসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলো চার লেন বা ছয় লেনে উন্নীত হয়েছে। চট্টগ্রামে নির্মিত হয়েছে কর্ণফুলী টানেল। ঢাকা-ভাঙা এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক যোগাযোগে নতুন দিগন্ত খুলে দিলেও বেপরোয়া গতি ও বিশৃঙ্খলায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, প্রাণহানি। টানেলেও দুর্ঘটনা ঘটছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে সড়ক নেটওয়ার্কের দৈর্ঘ্য প্রায় ২২ হাজার কিলোমিটার। এর মধ্যে জাতীয় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের বেশির ভাগ অংশই প্রশস্ত করা হয়েছে। প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার সড়ক চার লেন হয়েছে। তবে অনেক জায়গায় মানসম্মত ট্রাফিক সাইন, গতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেই।
সওজের প্রকৌশলীরা বলছেন, নতুন প্রকল্পে এখন রোড সেফটি কম্পোনেন্ট যুক্ত হচ্ছে। তবে শুধু অবকাঠামো দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, এর সঙ্গে মানুষকেও সচেতন হতে হবে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, অবকাঠামো উন্নয়নে দ্রুত এগিয়েছে, কিন্তু নিরাপত্তাকে একইভাবে অগ্রাধিকার দেয়নি। সড়কে নিরাপত্তা উপকরণ, পথচারীর পারাপারের সুযোগ, গতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, ফুটপাত—এসব জায়গায় ঘাটতি রয়ে গেছে।
শৃঙ্খলার বাইরে গণপরিবহন: বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, সড়ক দুর্ঘটনার বড় একটি অংশের কারণ গণপরিবহনের শৃঙ্খলাহীনতা ও নিয়ম না মানা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাস ও ট্রাকচালকদের বেপরোয়া গতি, প্রতিযোগিতা ও নিয়মভঙ্গ সড়ক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে। পরিবহনমালিকদের চাপে সরকার সড়ক থেকে লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন সরাতে পারেনি। রাজনৈতিক প্রভাব ও চাঁদাবাজির সংস্কৃতি গণপরিবহন খাতকে অনিয়মের ঘূর্ণিতে রেখেছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বাসগুলো এখনো প্রতিযোগিতামূলকভাবে চলে, যাত্রী তুলতে যত্রতত্র থামে। পরিবহন খাতে দীর্ঘদিনের অনিয়ম এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। চালকদের প্রশিক্ষণ, কঠোর আইন প্রয়োগ ও কার্যকর তদারকি ছাড়া গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরবে না।
গণপরিবহনের শৃঙ্খলার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন বলেন, গণপরিবহনব্যবস্থা দেখভালের জন্য একটি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ দরকার। এটি ছাড়া শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়।
সড়ক আইন বাস্তবে কার্যকর হয়নি: নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর ২০১৮ সালে সড়ক পরিবহন আইন পাস হয়। ওই আইনে লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চালানো, অতিরিক্ত গতি, ফিটনেসবিহীন যান চলাচল ও ওভারলোডের ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তির বিধান আছে। বাস্তবে আইনটি কার্যকর হয়নি বললেই চলে। উল্টো পরিবহনমালিকেরা আইনের বিভিন্ন ধারা সংশোধনের দাবি তুলেছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন না হওয়ার মূল কারণ হলো রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রশাসনিক দুর্বলতা। আইনটি ভালো হলেও বাস্তবায়নের ইচ্ছা ও সক্ষমতা দুটিই কম। পরিবহন খাত দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের নিয়ন্ত্রণে, তাই আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে বারবার ছাড় দেওয়া হয়। ফলে চালক, মালিক ও যাত্রী—কেউ আইনকে গুরুত্ব দেন না। বাস্তবায়ন ছাড়া কোনো আইনই ফলপ্রসূ হয় না।
সড়ক নিরাপত্তার নতুন চ্যালেঞ্জ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারা দেশে ক্রমবর্ধমান ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এখন সড়ক নিরাপত্তার নতুন চ্যালেঞ্জ। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে এই যান বাড়লে রাজধানীর পুরো পরিবহনব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। প্রশিক্ষণবিহীন চালকদের কারণে এই যান দুর্ঘটনার বড় কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ড. আরমানা সাবিহা হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, এসব অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে না আনলে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো আরও কঠিন হবে। তাই দ্রুত নীতিমালা, নিবন্ধন ও চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি প্রধান সড়কে চলাচল বন্ধ করে নির্দিষ্ট সড়কে চলার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।
সমন্বয়ের অভাব: সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন ও নীতি থাকলেও কার্যকারিতা ব্যাহত হচ্ছে সওজ, বিআরটিএ ও পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সমন্বয়ের অভাবে। এ তিনটি সংস্থা সড়ক, যানবাহন ও আইন প্রয়োগের দায়িত্বে থাকলেও নীতি ও পরিকল্পনায় একযোগে কাজ না করায় দুর্ঘটনা প্রতিরোধে অগ্রগতি হচ্ছে না।
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা উন্নয়নের কাজ চলছে। পুলিশকে যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হচ্ছে, যাতে আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া যায়। ক্ষতিপূরণের হার বাড়ানো ও যত্রতত্র বাস থামা বন্ধে পাইলট প্রকল্পও চালু হচ্ছে। এসব উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদি হলেও আমরা আশা করছি, এতে সড়ক নিরাপত্তায় দৃশ্যমান উন্নতি হবে।’
কয়েক দিন পরেই ঈদ। শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। আজ শুক্রবার থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি কাটাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। বেসরকারি চাকুরেদের অনেকেরও ছুটি সপ্তাহখানেকের মতো। লম্বা এই ছুটি প্রিয়জনের সান্নিধ্যে কাটাতে শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরছে নগরবাসী।
২৮ মার্চ ২০২৫জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে নির্বাচনকালে প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বলেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক...
২ ঘণ্টা আগেবিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলের নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতম সব ঘটনা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী একেকটি পিলার। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারগুলোতে (স্তম্ভ) ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব ঘটনা।
২ ঘণ্টা আগেজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
৪ ঘণ্টা আগেপ্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে নির্বাচনকালে প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বলেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির নেতারা এসব দাবি জানান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আশ্বাস দেন তাদের।
প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আজকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এসেছিলাম আমাদের কতগুলো রাজনৈতিক কনসার্ন নিয়ে কথা বলার জন্য; বিশেষ করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই নির্বাচনকে অর্থবহ, নিরপেক্ষ, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য এই মুহূর্ত থেকে যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে নিতে হবে। অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকায় তাদের যেতে হবে। সে জন্য প্রথমেই যে বিষয়টির প্রয়োজন হবে, তা হচ্ছে প্রশাসনকে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ একটা জনগণের মধ্যে তৈরি করতে হবে।’
ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করাসহ আরও বেশ কিছু বিষয়ে কথা বলেছেন বিএনপি নেতারা। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে এ সময় সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে তাঁদের।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সরকারকে সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য বলেছি। এটাই ছিল মূলকথা। সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় লোক থেকে থাকেন, তাঁদের অপসারণের জন্য আমরা দাবি জানিয়ে এসেছি।’ এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে কোনো উপদেষ্টার কথা বলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে কিছু বলেননি মির্জা ফখরুল।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘সচিবালয়ে এখনো যাঁরা আছেন, যাঁরা চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট, তাঁদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য বলেছি। আমরা বলেছি যে প্রশাসনে ও জেলা প্রশাসনে; বিশেষ করে, সেখানেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
পুলিশে নিয়োগের বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় বলে জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু কিছু কথা বলে এসেছি। যারা এখনো পুরোনো সরকারের স্বার্থ পূরণ করছে, তাদের অপসারণের কথা বলেছি। পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে; বিশেষ করে নতুন নিয়োগ অথবা পদোন্নতির ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আমরা বলেছি।’
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে বিচার বিভাগে নিরপেক্ষ বিচারক নিয়োগের কথাও বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বলে এসেছি, বিচার বিভাগে; বিশেষ করে উচ্চ আদালতে এখনো যেসব ফ্যাসিস্টের দোসর আছে, তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা বিচার বিভাগের বিষয়, এরপরেও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সবকিছুর দায়িত্বে আছেন। তাঁর কাছে আমাদের কথাটা জানিয়ে এসেছি।’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশ্যে গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে যমুনায় প্রবেশ করে বিএনপির প্রতিনিধিদল। সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে তারা। যমুনায় প্রবেশের আগে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চেয়েছিলাম। সেই অনুযায়ী উনি আজকে সময় দিয়েছেন। আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন, প্রশাসনের কিছু বিষয়সহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলব।’
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই প্রশ্ন উঠেছে বিএনপিতে। দলটির অভিযোগ, প্রশাসন ও ভোটের কাজে একটি বিশেষ দলের লোকজনের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের আগে বিষয়টি উদ্বেগে ফেলেছে বিএনপিকে। এ নিয়ে দলীয় ফোরামে একাধিক বৈঠক করেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। এসব বৈঠক থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। গত সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে নেতারা আলোচনা করেন বলে জানা গেছে।
দলীয় সূত্র বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টার বক্তব্য, তৎপরতা ও কর্মকাণ্ডে সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে মনে করে বিএনপি। দলটির বক্তব্য, প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল ও পদায়ন নিয়ে উপদেষ্টাদের কেউ কেউ পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন; বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে কাজ করছেন। এ ছাড়া নির্বাচন সামনে রেখে মাঠপর্যায়ে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার যে প্যানেল প্রস্তুত করা হচ্ছে, সেখানেও জামায়াতে ইসলামীর লোকজনকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এসব ঘটনায় বিএনপি উদ্বিগ্ন। সরকার এই জায়গা থেকে বের হয়ে নিরপেক্ষতা বজায় না রাখলে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে তাঁদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। এই উদ্বেগের কথা জানাতেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন দলটির নেতারা।
বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। বৈঠকে নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদলে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির নেতারা। প্রধান উপদেষ্টা বিএনপির নেতাদের জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক পদে নিয়োগের জন্য একাধিক ‘ফিট লিস্ট’ থেকে যোগ্য কর্মকর্তাদের বাছাই করে প্রত্যেককে নির্বাচনের আগে যথাযোগ্য স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি নেতাদের আরও বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা। নির্বাচন একটি যুদ্ধক্ষেত্র। এখানে যিনি শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারবেন, সে রকম যোদ্ধাকেই আমরা বেছে নেব। এটা আমার হাতে থাকবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা করব।’
চলমান রাজনৈতিক সংলাপের অংশ হিসেবে আজ বুধবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে নির্বাচনকালে প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বলেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির নেতারা এসব দাবি জানান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আশ্বাস দেন তাদের।
প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আজকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এসেছিলাম আমাদের কতগুলো রাজনৈতিক কনসার্ন নিয়ে কথা বলার জন্য; বিশেষ করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই নির্বাচনকে অর্থবহ, নিরপেক্ষ, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য এই মুহূর্ত থেকে যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে নিতে হবে। অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকায় তাদের যেতে হবে। সে জন্য প্রথমেই যে বিষয়টির প্রয়োজন হবে, তা হচ্ছে প্রশাসনকে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ একটা জনগণের মধ্যে তৈরি করতে হবে।’
ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করাসহ আরও বেশ কিছু বিষয়ে কথা বলেছেন বিএনপি নেতারা। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে এ সময় সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে তাঁদের।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সরকারকে সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য বলেছি। এটাই ছিল মূলকথা। সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় লোক থেকে থাকেন, তাঁদের অপসারণের জন্য আমরা দাবি জানিয়ে এসেছি।’ এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে কোনো উপদেষ্টার কথা বলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে কিছু বলেননি মির্জা ফখরুল।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘সচিবালয়ে এখনো যাঁরা আছেন, যাঁরা চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট, তাঁদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য বলেছি। আমরা বলেছি যে প্রশাসনে ও জেলা প্রশাসনে; বিশেষ করে, সেখানেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
পুলিশে নিয়োগের বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় বলে জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু কিছু কথা বলে এসেছি। যারা এখনো পুরোনো সরকারের স্বার্থ পূরণ করছে, তাদের অপসারণের কথা বলেছি। পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে; বিশেষ করে নতুন নিয়োগ অথবা পদোন্নতির ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আমরা বলেছি।’
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে বিচার বিভাগে নিরপেক্ষ বিচারক নিয়োগের কথাও বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বলে এসেছি, বিচার বিভাগে; বিশেষ করে উচ্চ আদালতে এখনো যেসব ফ্যাসিস্টের দোসর আছে, তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা বিচার বিভাগের বিষয়, এরপরেও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সবকিছুর দায়িত্বে আছেন। তাঁর কাছে আমাদের কথাটা জানিয়ে এসেছি।’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশ্যে গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে যমুনায় প্রবেশ করে বিএনপির প্রতিনিধিদল। সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে তারা। যমুনায় প্রবেশের আগে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চেয়েছিলাম। সেই অনুযায়ী উনি আজকে সময় দিয়েছেন। আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন, প্রশাসনের কিছু বিষয়সহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলব।’
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই প্রশ্ন উঠেছে বিএনপিতে। দলটির অভিযোগ, প্রশাসন ও ভোটের কাজে একটি বিশেষ দলের লোকজনের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের আগে বিষয়টি উদ্বেগে ফেলেছে বিএনপিকে। এ নিয়ে দলীয় ফোরামে একাধিক বৈঠক করেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। এসব বৈঠক থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। গত সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে নেতারা আলোচনা করেন বলে জানা গেছে।
দলীয় সূত্র বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টার বক্তব্য, তৎপরতা ও কর্মকাণ্ডে সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে মনে করে বিএনপি। দলটির বক্তব্য, প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল ও পদায়ন নিয়ে উপদেষ্টাদের কেউ কেউ পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন; বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে কাজ করছেন। এ ছাড়া নির্বাচন সামনে রেখে মাঠপর্যায়ে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার যে প্যানেল প্রস্তুত করা হচ্ছে, সেখানেও জামায়াতে ইসলামীর লোকজনকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এসব ঘটনায় বিএনপি উদ্বিগ্ন। সরকার এই জায়গা থেকে বের হয়ে নিরপেক্ষতা বজায় না রাখলে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে তাঁদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। এই উদ্বেগের কথা জানাতেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন দলটির নেতারা।
বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। বৈঠকে নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদলে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির নেতারা। প্রধান উপদেষ্টা বিএনপির নেতাদের জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক পদে নিয়োগের জন্য একাধিক ‘ফিট লিস্ট’ থেকে যোগ্য কর্মকর্তাদের বাছাই করে প্রত্যেককে নির্বাচনের আগে যথাযোগ্য স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি নেতাদের আরও বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা। নির্বাচন একটি যুদ্ধক্ষেত্র। এখানে যিনি শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারবেন, সে রকম যোদ্ধাকেই আমরা বেছে নেব। এটা আমার হাতে থাকবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা করব।’
চলমান রাজনৈতিক সংলাপের অংশ হিসেবে আজ বুধবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
কয়েক দিন পরেই ঈদ। শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। আজ শুক্রবার থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি কাটাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। বেসরকারি চাকুরেদের অনেকেরও ছুটি সপ্তাহখানেকের মতো। লম্বা এই ছুটি প্রিয়জনের সান্নিধ্যে কাটাতে শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরছে নগরবাসী।
২৮ মার্চ ২০২৫দেশে গত এক যুগে কয়েকটি নতুন সড়ক-মহাসড়ক, সেতু, উড়ালসড়ক, টানেল যোগাযোগে ব্যাপক পরিবর্তন আনলেও সড়ক নিরাপত্তা বাড়েনি। যানবাহনের বেপরোয়া গতি, প্রতিযোগিতা, বিশৃঙ্খল গণপরিবহন, অনিয়ন্ত্রিত ব্যাটারিচালিত ও তিন চাকার যান এবং আইন না মানায় প্রতিদিনই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। হতাহত হচ্ছে মানুষ।
২৭ মিনিট আগেবিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলের নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতম সব ঘটনা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী একেকটি পিলার। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারগুলোতে (স্তম্ভ) ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব ঘটনা।
২ ঘণ্টা আগেজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
৪ ঘণ্টা আগেশরীফ নাসরুল্লাহ, ঢাকা
বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলের নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতম সব ঘটনা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী একেকটি পিলার। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারগুলোতে (স্তম্ভ) ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব ঘটনা।
কারওয়ান বাজার স্টেশনের পিলার দিয়ে এই গ্রাফিতির শুরু। ফার্মগেট পদচারী-সেতুর কাছের পিলার পর্যন্ত উঠে এসেছে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ফ্যাসিস্ট সরকারের গুম, খুন, নির্যাতন ও নিপীড়নের চিত্র। তাতে স্পষ্ট হয়েছে দেশের জনগণকে একটি রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের দিকে ঠেলে দেওয়ার গল্প।
২০২৪ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরের নানা ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে পিলারে পিলারে। নামকরণ করা হয়েছে ‘ফিরে দেখা ফ্যাসিস্ট রেজিম’। একেকটি পিলারে স্থান পেয়েছে প্রতিবছরের কয়েকটি ঘটনা।
কারওয়ান বাজারে ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের চিত্র দিয়ে এর শুরু। একে একে পিলারে ফুটে উঠেছে নিমতলী অগ্নিকাণ্ড, খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল, ফেলানী হত্যাকাণ্ড, শেয়ারবাজারে ধস, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, বিশ্বজিৎ দাস হত্যা প্রভৃতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন ড. আজহারুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘শিল্পকলা প্রতিবাদের একটি মাধ্যম হিসেবে এই অভ্যুত্থানে উপস্থাপিত হয়েছে, এটি নতুন একটি দিক। ছেলে-মেয়েরা গ্রাফিতি এঁকে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এখনো গ্রাফিতি আঁকা চলছে। শিল্পীর মনেও প্রতিবাদ থাকে, শিল্পের মাধ্যমে তিনি তা ফুটিয়ে তোলেন।’
গ্রাফিতিতে ফুটে উঠেছে ইলিয়াস আলীকে গুম করার ঘটনাও। রয়েছে রানা প্লাজা ধস, শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড, তনু ধর্ষণের ঘটনা, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আন্দোলন, নাসিরনগরে হামলা, হলি আর্টিজানে হামলাসহ নানা কিছু। রাতের ভোট, কোটা সংস্কার আন্দোলন, সুবর্ণচরে নারী ধর্ষণ, একরামুল হত্যাকাণ্ড, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, খালেদা জিয়ার কারাবরণ, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডও তুলে ধরা হয়েছে গ্রাফিতিগুলোতে। আছে মেজর সিনহা রাশেদ খান হত্যা, মুজিব বর্ষে বিপুল ব্যয়, কোভিড অব্যবস্থাপনা, বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক হত্যা, লেখক মুশতাক আহমেদ হত্যাকাণ্ড, বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের ওপর হামলার চিত্র। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সংকট, বিদ্যুৎ-বিভ্রাট, জ্বালানি সংকট, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা, লাগামহীন বাজারদরও উঠে এসেছে এতে। আর সবশেষ তুলে ধরা হয়েছে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং ফ্যাসিবাদের পতন।
বর্ণিল এসব চিত্রকর্ম নগরের সৌন্দর্যও বাড়িয়েছে। কারণ শহরের প্রধান প্রধান সড়কসহ অলিগলির সব দেয়াল যেখানে নানা পোস্টারে কদর্য, সেখানে এই গ্রাফিতিগুলো নগরবাসীর চোখে ও মনে স্বস্তি এনে দিচ্ছে। এগুলো এঁকেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীরা।
দেয়ালে এমন চিত্রশিল্পের মাধ্যমে জঘন্য অতীতকে তুলে ধরার বিষয়টি অভিনব লেগেছে নগরবাসী-পথচারীদের কাছেও। বেসরকারি চাকরিজীবী আনিসুর রহমান চা খাচ্ছিলেন কারওয়ান বাজারের একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে। গ্রাফিতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। বললেন, আইডিয়াটা ভালো। হাঁটতে হাঁটতে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলনামা দেখা যায়।
গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস তুলে ধরে ঢাকা মেট্রোরেলের পিলারে গ্রাফিতি আঁকার ধারণাটি ছিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার। বাস্তবায়ন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গত আগস্টে উদ্বোধন করা হয় এই আয়োজনের। তখন উপদেষ্টা বলছিলেন, ‘এই গ্রাফিতিগুলো আওয়ামী স্বৈরশাসনের ভয়াল দিনগুলো এবং জনগণের সাহসী প্রতিরোধের ইতিহাস বারবার আমাদের স্মরণ করিয়ে দেবে। ভবিষ্যতে এ দেশে যেন আর কোনো স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে লক্ষ্যে এসব গ্রাফিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
এ ছাড়া শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর থেকে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সাবেক পিজি হাসপাতাল) পর্যন্ত বাংলাদেশ ও অভ্যুত্থান নিয়ে গ্রাফিতি এঁকেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল। সেগুলোতে দেখা গেছে ছাত্রদের এক দফার কথা, সবার আগে বাংলাদেশ স্লোগান, কোটা সংস্কার আন্দোলন, রক্তে আগুন লেগেছে স্লোগান, পুলিশি নির্যাতন ইত্যাদি। আবার পিজি হাসপাতাল থেকে শুরু হয়েছে ‘চূড়ান্ত লড়াইয়ের দিনগুলো’ শিরোনামে আরেকটি গ্রাফিতি শিল্প। এটি শেষ হয়েছে পরীবাগে। সেখানেও তুলে ধরা হয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকারের নানা অপকর্ম এবং অভ্যুত্থানকালীন বিভিন্ন দৃশ্যপট। রয়েছে রিকশাচালকের দেওয়া সেই জনপ্রিয় স্যালুট, আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা, রিকশায় শহীদ গোলাম নাফিজের লাশ প্রভৃতি। এর বাইরে ফ্লাইওভারের সাত রাস্তা থেকে মগবাজারের দিকের পিলারগুলোও রঙিন হয়েছে নিষ্ঠুর ঘটনার চিত্রে।
বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলের নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতম সব ঘটনা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী একেকটি পিলার। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারগুলোতে (স্তম্ভ) ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব ঘটনা।
কারওয়ান বাজার স্টেশনের পিলার দিয়ে এই গ্রাফিতির শুরু। ফার্মগেট পদচারী-সেতুর কাছের পিলার পর্যন্ত উঠে এসেছে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ফ্যাসিস্ট সরকারের গুম, খুন, নির্যাতন ও নিপীড়নের চিত্র। তাতে স্পষ্ট হয়েছে দেশের জনগণকে একটি রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের দিকে ঠেলে দেওয়ার গল্প।
২০২৪ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরের নানা ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে পিলারে পিলারে। নামকরণ করা হয়েছে ‘ফিরে দেখা ফ্যাসিস্ট রেজিম’। একেকটি পিলারে স্থান পেয়েছে প্রতিবছরের কয়েকটি ঘটনা।
কারওয়ান বাজারে ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের চিত্র দিয়ে এর শুরু। একে একে পিলারে ফুটে উঠেছে নিমতলী অগ্নিকাণ্ড, খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল, ফেলানী হত্যাকাণ্ড, শেয়ারবাজারে ধস, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, বিশ্বজিৎ দাস হত্যা প্রভৃতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন ড. আজহারুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘শিল্পকলা প্রতিবাদের একটি মাধ্যম হিসেবে এই অভ্যুত্থানে উপস্থাপিত হয়েছে, এটি নতুন একটি দিক। ছেলে-মেয়েরা গ্রাফিতি এঁকে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এখনো গ্রাফিতি আঁকা চলছে। শিল্পীর মনেও প্রতিবাদ থাকে, শিল্পের মাধ্যমে তিনি তা ফুটিয়ে তোলেন।’
গ্রাফিতিতে ফুটে উঠেছে ইলিয়াস আলীকে গুম করার ঘটনাও। রয়েছে রানা প্লাজা ধস, শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড, তনু ধর্ষণের ঘটনা, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আন্দোলন, নাসিরনগরে হামলা, হলি আর্টিজানে হামলাসহ নানা কিছু। রাতের ভোট, কোটা সংস্কার আন্দোলন, সুবর্ণচরে নারী ধর্ষণ, একরামুল হত্যাকাণ্ড, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, খালেদা জিয়ার কারাবরণ, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডও তুলে ধরা হয়েছে গ্রাফিতিগুলোতে। আছে মেজর সিনহা রাশেদ খান হত্যা, মুজিব বর্ষে বিপুল ব্যয়, কোভিড অব্যবস্থাপনা, বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক হত্যা, লেখক মুশতাক আহমেদ হত্যাকাণ্ড, বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের ওপর হামলার চিত্র। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সংকট, বিদ্যুৎ-বিভ্রাট, জ্বালানি সংকট, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা, লাগামহীন বাজারদরও উঠে এসেছে এতে। আর সবশেষ তুলে ধরা হয়েছে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং ফ্যাসিবাদের পতন।
বর্ণিল এসব চিত্রকর্ম নগরের সৌন্দর্যও বাড়িয়েছে। কারণ শহরের প্রধান প্রধান সড়কসহ অলিগলির সব দেয়াল যেখানে নানা পোস্টারে কদর্য, সেখানে এই গ্রাফিতিগুলো নগরবাসীর চোখে ও মনে স্বস্তি এনে দিচ্ছে। এগুলো এঁকেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীরা।
দেয়ালে এমন চিত্রশিল্পের মাধ্যমে জঘন্য অতীতকে তুলে ধরার বিষয়টি অভিনব লেগেছে নগরবাসী-পথচারীদের কাছেও। বেসরকারি চাকরিজীবী আনিসুর রহমান চা খাচ্ছিলেন কারওয়ান বাজারের একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে। গ্রাফিতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। বললেন, আইডিয়াটা ভালো। হাঁটতে হাঁটতে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলনামা দেখা যায়।
গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস তুলে ধরে ঢাকা মেট্রোরেলের পিলারে গ্রাফিতি আঁকার ধারণাটি ছিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার। বাস্তবায়ন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গত আগস্টে উদ্বোধন করা হয় এই আয়োজনের। তখন উপদেষ্টা বলছিলেন, ‘এই গ্রাফিতিগুলো আওয়ামী স্বৈরশাসনের ভয়াল দিনগুলো এবং জনগণের সাহসী প্রতিরোধের ইতিহাস বারবার আমাদের স্মরণ করিয়ে দেবে। ভবিষ্যতে এ দেশে যেন আর কোনো স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে লক্ষ্যে এসব গ্রাফিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
এ ছাড়া শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর থেকে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সাবেক পিজি হাসপাতাল) পর্যন্ত বাংলাদেশ ও অভ্যুত্থান নিয়ে গ্রাফিতি এঁকেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল। সেগুলোতে দেখা গেছে ছাত্রদের এক দফার কথা, সবার আগে বাংলাদেশ স্লোগান, কোটা সংস্কার আন্দোলন, রক্তে আগুন লেগেছে স্লোগান, পুলিশি নির্যাতন ইত্যাদি। আবার পিজি হাসপাতাল থেকে শুরু হয়েছে ‘চূড়ান্ত লড়াইয়ের দিনগুলো’ শিরোনামে আরেকটি গ্রাফিতি শিল্প। এটি শেষ হয়েছে পরীবাগে। সেখানেও তুলে ধরা হয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকারের নানা অপকর্ম এবং অভ্যুত্থানকালীন বিভিন্ন দৃশ্যপট। রয়েছে রিকশাচালকের দেওয়া সেই জনপ্রিয় স্যালুট, আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা, রিকশায় শহীদ গোলাম নাফিজের লাশ প্রভৃতি। এর বাইরে ফ্লাইওভারের সাত রাস্তা থেকে মগবাজারের দিকের পিলারগুলোও রঙিন হয়েছে নিষ্ঠুর ঘটনার চিত্রে।
কয়েক দিন পরেই ঈদ। শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। আজ শুক্রবার থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি কাটাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। বেসরকারি চাকুরেদের অনেকেরও ছুটি সপ্তাহখানেকের মতো। লম্বা এই ছুটি প্রিয়জনের সান্নিধ্যে কাটাতে শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরছে নগরবাসী।
২৮ মার্চ ২০২৫দেশে গত এক যুগে কয়েকটি নতুন সড়ক-মহাসড়ক, সেতু, উড়ালসড়ক, টানেল যোগাযোগে ব্যাপক পরিবর্তন আনলেও সড়ক নিরাপত্তা বাড়েনি। যানবাহনের বেপরোয়া গতি, প্রতিযোগিতা, বিশৃঙ্খল গণপরিবহন, অনিয়ন্ত্রিত ব্যাটারিচালিত ও তিন চাকার যান এবং আইন না মানায় প্রতিদিনই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। হতাহত হচ্ছে মানুষ।
২৭ মিনিট আগেজাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে নির্বাচনকালে প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বলেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক...
২ ঘণ্টা আগেজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে বলে বিএনপিকে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে যোগ্য কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।
নির্বাচনে সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিএনপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার সময় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকে শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনে যা কিছু প্রয়োজন, তা করা হবে বলে বিএনপি নেতাদের আশ্বস্ত করেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির নেতারা বলেন, বিতর্কিত কোনো কর্মকর্তা, বিশেষ করে, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ শাসনামলে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন—এমন কর্মকর্তাদের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন থেকে নিবৃত্ত রাখতে হবে।
নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদলে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার আহ্বানের পাশাপাশি পুলিশের নিয়োগ ও বদলিপ্রক্রিয়া নিয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন নেতারা।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা। নির্বাচন একটি মহা আয়োজন। এখানে যিনি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্ষম, সেই ব্যক্তিকেই আমরা বেছে নেব। এটি আমার তত্ত্বাবধানে থাকবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা তা করব।’
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ত করায় এবং ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সফলভাবে আয়োজন করতে পারায় সরকারকে অভিনন্দন জানায় বিএনপি।
এর পাশাপাশি সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থাপনায় একাধিক অগ্নিকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। এসব ঘটনা অন্তর্ঘাতমূলক কি না, এ বিষয়ে অনুসন্ধানেরও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ। সরকারের পক্ষ থেকে ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে বলে বিএনপিকে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে যোগ্য কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।
নির্বাচনে সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিএনপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার সময় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকে শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনে যা কিছু প্রয়োজন, তা করা হবে বলে বিএনপি নেতাদের আশ্বস্ত করেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির নেতারা বলেন, বিতর্কিত কোনো কর্মকর্তা, বিশেষ করে, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ শাসনামলে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন—এমন কর্মকর্তাদের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন থেকে নিবৃত্ত রাখতে হবে।
নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদলে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার আহ্বানের পাশাপাশি পুলিশের নিয়োগ ও বদলিপ্রক্রিয়া নিয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন নেতারা।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা। নির্বাচন একটি মহা আয়োজন। এখানে যিনি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্ষম, সেই ব্যক্তিকেই আমরা বেছে নেব। এটি আমার তত্ত্বাবধানে থাকবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা তা করব।’
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ত করায় এবং ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সফলভাবে আয়োজন করতে পারায় সরকারকে অভিনন্দন জানায় বিএনপি।
এর পাশাপাশি সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থাপনায় একাধিক অগ্নিকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। এসব ঘটনা অন্তর্ঘাতমূলক কি না, এ বিষয়ে অনুসন্ধানেরও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ। সরকারের পক্ষ থেকে ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
কয়েক দিন পরেই ঈদ। শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। আজ শুক্রবার থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি কাটাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। বেসরকারি চাকুরেদের অনেকেরও ছুটি সপ্তাহখানেকের মতো। লম্বা এই ছুটি প্রিয়জনের সান্নিধ্যে কাটাতে শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরছে নগরবাসী।
২৮ মার্চ ২০২৫দেশে গত এক যুগে কয়েকটি নতুন সড়ক-মহাসড়ক, সেতু, উড়ালসড়ক, টানেল যোগাযোগে ব্যাপক পরিবর্তন আনলেও সড়ক নিরাপত্তা বাড়েনি। যানবাহনের বেপরোয়া গতি, প্রতিযোগিতা, বিশৃঙ্খল গণপরিবহন, অনিয়ন্ত্রিত ব্যাটারিচালিত ও তিন চাকার যান এবং আইন না মানায় প্রতিদিনই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। হতাহত হচ্ছে মানুষ।
২৭ মিনিট আগেজাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে নির্বাচনকালে প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বলেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক...
২ ঘণ্টা আগেবিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলের নিষ্ঠুর থেকে নিষ্ঠুরতম সব ঘটনা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী একেকটি পিলার। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারগুলোতে (স্তম্ভ) ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব ঘটনা।
২ ঘণ্টা আগে