Ajker Patrika

বাংলাদেশের সম্মান ধূলিসাৎ করে দেওয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৪, ২২: ৩৮
Thumbnail image

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ঘটিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের সম্মান ধূলিসাৎ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমি দিনরাত পরিশ্রম করে যে বাংলাদেশটাকে সম্মানের স্থানে নিয়ে এসেছিলাম, সেটাকে ধূলিসাৎ করে দিল। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুঃখের। 

আজ সোমবার গণভবনে ছাত্রলীগের নারী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এদিকে বিকেল সাড়ে ৫টার পরে গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জোট নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, `তারা আন্দোলন করে এবং আমাকে খাটো করতে যেয়ে বাংলাদেশটাকে কোথায় টেনে নামাল, সেটা একবার চিন্তা করে না। এদের মধ্যে যদি এতটুকু দেশপ্রেম থাকত, দায়িত্ববোধ থাকত, তাহলে এটা করত না।' 

আন্দোলনকারীদের কারা অর্থ দিয়েছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এরা এত টাকা কোথা থেকে পায়? কোথা থেকে পেল? প্রতিদিনের তাদের আন্দোলনের খরচ কে দিয়েছে?’ 

আন্দোলনের ফসল হচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে দেওয়া জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, `বাংলাদেশের মানুষের যে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করি, সেগুলো নষ্ট করে দেওয়া। সেটাই করা হলো। এই আন্দোলনের ঘাড়ে চেপে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা সুযোগ পেয়ে গেল। তাহলে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, অপরাধটা কী করলাম? মানুষের জীবনমান উন্নত করা? মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা করা? চিকিৎসার ব্যবস্থা করা?' 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, `আমার বাবা-মা সবাইকে হত্যা করেছে। তারপরেও সেই কষ্ট বুকে নিয়ে এসে শুধুমাত্র এই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন, মানুষ একটু ভালো থাকবে। মানুষ উন্নত জীবন পাবে। মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয়ী জাতি হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে আমরা যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারি, সম্মানের সঙ্গে চলতে পারি। সেই সম্মানটা তো আমি এনে দিয়েছি বাংলাদেশকে। এটা তো কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আজকে যেখানে যাবে, বাংলাদেশ শুনলে সমীহ করে এবং মর্যাদার চোখে দেখে।' 

ডিজিটাল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সৃষ্টি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশের ডিজিটাল সিস্টেম আমারই করে দেওয়া। হাতে হাতে মোবাইল ফোন তো আওয়ামী লীগ সরকারই করে দিয়েছে।’ 

যে প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষ ব্যবহার করে সুবিধা পায়, সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যে কাজগুলো সেগুলো একে একে তারা ধ্বংস করে ‍দিল। কার স্বার্থে তারা এটা করেছে, সেটাই প্রশ্ন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেশনজটের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পরবর্তী ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত, এমনকি আমরা সরকারে আসার পর পর্যন্ত প্রতিদিন বোমা, গুলি, মারপিট, লাশ, সেশনজট—এই অবস্থা ছিল। ১৯৯৬ সালের পরে আমরা শিক্ষা কার্যক্রমে যে রিফর্ম নিয়ে আসি, তাতে আমাদের ডিগ্রিগুলো আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে।’ 

সাম্প্রতিক হওয়া আন্দোলন রাজনৈতিক ইস্যুতে হয়নি বলে ১৪ দলের সঙ্গে হওয়া বৈঠকে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। সহিংসতার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ জঙ্গিবাদী কাজ। একেবারে জঙ্গিবাদী কাজ। আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে আনা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি। কোটা কোনো ইস্যু না। বাংলাদেশের যেসব প্রতিষ্ঠান মানুষকে সেবা দেয়, মানুষের জীবনমান উন্নতি করে, সেটাই ধ্বংস করা। অর্থাৎ বাংলাদেশটাকে যেন ধ্বংস করে ফেলা। 

তিনি বলেন, `এখানে শিবির-ছাত্রদল, বিএনপি-জামায়াত...জঙ্গি এরা। জঙ্গিরা আমাদের ওপর নতুন করে থাবা দিয়েছে।'

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত