মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দরপত্রের জটিলতার সুরাহা না হওয়ায় দেশে সরকারিভাবে বিতরণের জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের সংকট প্রকট হয়েছে। এতে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তাদের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের মাত্র তিন মাসের মজুত আছে।
জন্মবিরতিকরণ বড়ি (খাওয়ার বড়ি) কিনতে প্রায় দেড় বছর আগে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আহ্বান করা ২১৬ কোটি টাকার দরপত্র নিয়ে জটিলতা এখনো কাটেনি। ফলে কোনো জন্মবিরতিকরণ বড়ি কেনা যায়নি। সরবরাহ কমে যাওয়ায় গ্রামীণ ও প্রান্তিক দম্পতিরা উপকরণ পাচ্ছেন না। এতে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ, অল্প বয়সে মাতৃত্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাতের ঘটনা বাড়ছে। সূত্র বলছে, সংকট কাটাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নতুন করে দরপত্র আহ্বানের কথা ভাবছে।
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) তথ্য অনুযায়ী, দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এক-তৃতীয়াংশের (৩৭ শতাংশ) বেশি আসে সরকারি খাত থেকে। বাকিটুকু আসে বেসরকারি খাত (৫৭ শতাংশ), বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও (৩ শতাংশ) এবং অন্যান্য উৎস (৪ শতাংশ) থেকে। মোট সাত ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে পাঁচটি সরকারিভাবে দেওয়া হয়। এগুলো হলো—জন্মবিরতিকরণ বড়ি (খাওয়ার বড়ি), ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডি।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারিভাবে সাধারণত প্রতি মাসে ৬০ থেকে ৭০ লাখ পাতা (প্রতি পাতায় ২৮ বড়ি) খাওয়ার বড়ি বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া ইনজেক্টেবল ৭ থেকে ১০ লাখ, কনডম ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি, ইমপ্ল্যান্ট ৩০ থেকে ৬০ হাজার এবং আইইউডি ১০ থেকে ১৪ হাজার বিতরণ করা হয়। তবে সরবরাহের সংকটে এসব উপকরণ বিতরণ কমেছে।
অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, ৪ কোটি ৫০ লাখ মাসিক চক্রের (এক মাসিক চক্রে ২৮টি বড়ি থাকে) জন্মবিরতিকরণ বড়ি কিনতে ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি পাঁচটি লটে ২১৬ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। সাতটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিলেও শর্ত পূরণ করে তিনটি প্রতিষ্ঠান। ১, ২ ও ৩ লটে দরপত্র জমা দেয় বেসরকারি ওষুধ কোম্পানি রেনেটা লিমিটেড ও টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। ৪ ও ৫ নম্বর লটের জন্য পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ওই বছরের ১৩ মার্চ দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কার্যকর প্রতিযোগিতার অভাবে এই পাঁচটি লট বাতিল করে দেয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ সূত্র জানায়, দরপত্র বাতিলের পর ওই তিনটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটিতে (বিপিপিএ) আপিল করে। বিপিপিএর রিভিউ প্যানেল ৪ ও ৫ নম্বর লটের আপিল খারিজ করে। তবে রিভিউ প্যানেলের রায় যায় ১, ২ ও ৩ নম্বর লটের পক্ষে। এতে পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস হাইকোর্টে রিট করে পক্ষে রায় পায়। এর বিরুদ্ধে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর আপিল বিভাগে আবেদন করলে ‘নো অর্ডার’ মর্মে রায় দেন।
এই দরপত্রের বৈধতার মেয়াদ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর শেষ হয়। বৈধতার মেয়াদ বাড়াতে টেকনো ড্রাগস লিমিটেড (লট-১, ২ ও ৩) এবং পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস (লট-৪ ও ৫) হাইকোর্টে রিট করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত প্যাকেজের মেয়াদ বা প্যাকেজের আওতায় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত বৈধতা বৃদ্ধি করে রায় দেন। এসব উল্লেখ করে ৭ আগস্ট স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে বিপিপিএর প্রধান নির্বাহীর কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। উপসচিব কামরুন নাহার সুমির সই করা ওই চিঠিতে দরপত্র নিয়ে যে অচলাবস্থা রয়েছে, তা সমাধান করে নতুন ক্রয়প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে মতামত দিতে অনুরোধ জানানো হয়।
সূত্র বলছে, নতুন করে কেনা না হওয়ায় জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সংকট শুরু হয়। বর্তমানে চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। কোনো কোনো অঞ্চলে সরবরাহ শূন্যের কোঠায়। গত বছরের জানুয়ারিতে খাওয়ার বড়ি সরবরাহ করা হয়েছিল ৬১ লাখ, গত জুলাইয়ে তা নেমে আসে ১২ লাখে। একইভাবে ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডির সরবরাহও কমেছে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, দেশের ৪৯৪টি উপজেলার মধ্যে এখন খাওয়ার বড়ি নেই ১৩৪টিতে। শিগগির মজুত শেষ হবে ১১৪টিতে এবং ৫৯টিতে চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। ১৫৪টি উপজেলায় কনডম এবং ৩৩৪টি উপজেলায় আইইউডির মজুত নেই। অন্যান্য পদ্ধতির উপকরণের ক্ষেত্রেও একই রকম চিত্র।
এই অধিদপ্তরের পরিচালক (উপকরণ ও সরবরাহ) মো. আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকা'কে বলেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এমন সংকট আগে কখনো দেখা যায়নি। রাজস্ব খাত থেকে কিছু উপকরণ কেনা হয়েছে। তাতে আগামী তিন মাসের মতো চলতে পারে। গত বছর কোনো উপকরণ কেনা হয়নি। মাঠপর্যায়ে তিন মাসের বিতরণ সামগ্রী থাকার পরও ২৩টি ওয়্যারহাউসে আরও তিন মাসের মজুত থাকার কথা। এখন সব মিলিয়ে তিন মাসের মজুত রয়েছে। নিয়মিত বড় ধরনের ক্রয় না থাকায় সংকট তৈরি হয়েছে।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সরকারিভাবে উপকরণ না পাওয়ায় অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণের আশঙ্কা বাড়ছে। অল্প বয়সে মাতৃত্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাতের ঘটনাও বাড়তে পারে। এতে মাতৃমৃত্যু ও নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। একই সঙ্গে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিও হোচট খাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক বছরে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে রাখা হয়নি। দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে সক্ষম দম্পতিদের বড় একটি অংশ কোনো উপকরণ পাচ্ছে না। ফলে অনেকে অপ্রত্যাশিত সন্তান ধারণ করছেন বা গর্ভপাত করাচ্ছেন।’
তিনি জানান, ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশে টিএফআর বা টোটাল ফার্টিলিটি রেট (নারীপ্রতি মোট প্রজনন হার) ছিল ৩ দশমিক ৩। ২০০০ সালেও একই অবস্থা ছিল। ২০০৪ ও ২০০৭ সালে কিছুটা কমেছে। তবে ২০২১ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আবার ২ দশমিক ৩ হয়েছে। টিএফআর কমাতে সরকারের পদক্ষেপের অভাব রয়েছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, ‘দরপত্র আমরা বাতিল করেছিলাম। পরে প্রতিষ্ঠানগুলো আদালতে গিয়ে আদেশ এনেছে। আমরা আপিল করেছিলাম। সরকার শেষপর্যন্ত জিততে পারেনি। এখন বিষয়টি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা নিয়ে আমরা বিপিপিএর কাছে মতামত চেয়েছি। তাদের মতামতের আলোকে আমরা পদক্ষেপ নেব।’ তিনি বলেন, উন্নয়ন বাজেটে যে অপারেশন প্ল্যান ছিল, তা বাস্তবায়ন হলে উপকরণগুলো কেনা হতো। কিন্তু অপারেশন প্ল্যান না থাকায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। তবে নিয়মিত চাহিদা সামাল দিতে বিশেষ বরাদ্দ এনে কিছু উপকরণ কেনা হয়েছিল।

দরপত্রের জটিলতার সুরাহা না হওয়ায় দেশে সরকারিভাবে বিতরণের জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের সংকট প্রকট হয়েছে। এতে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তাদের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের মাত্র তিন মাসের মজুত আছে।
জন্মবিরতিকরণ বড়ি (খাওয়ার বড়ি) কিনতে প্রায় দেড় বছর আগে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আহ্বান করা ২১৬ কোটি টাকার দরপত্র নিয়ে জটিলতা এখনো কাটেনি। ফলে কোনো জন্মবিরতিকরণ বড়ি কেনা যায়নি। সরবরাহ কমে যাওয়ায় গ্রামীণ ও প্রান্তিক দম্পতিরা উপকরণ পাচ্ছেন না। এতে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ, অল্প বয়সে মাতৃত্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাতের ঘটনা বাড়ছে। সূত্র বলছে, সংকট কাটাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নতুন করে দরপত্র আহ্বানের কথা ভাবছে।
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) তথ্য অনুযায়ী, দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এক-তৃতীয়াংশের (৩৭ শতাংশ) বেশি আসে সরকারি খাত থেকে। বাকিটুকু আসে বেসরকারি খাত (৫৭ শতাংশ), বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও (৩ শতাংশ) এবং অন্যান্য উৎস (৪ শতাংশ) থেকে। মোট সাত ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে পাঁচটি সরকারিভাবে দেওয়া হয়। এগুলো হলো—জন্মবিরতিকরণ বড়ি (খাওয়ার বড়ি), ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডি।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারিভাবে সাধারণত প্রতি মাসে ৬০ থেকে ৭০ লাখ পাতা (প্রতি পাতায় ২৮ বড়ি) খাওয়ার বড়ি বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া ইনজেক্টেবল ৭ থেকে ১০ লাখ, কনডম ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি, ইমপ্ল্যান্ট ৩০ থেকে ৬০ হাজার এবং আইইউডি ১০ থেকে ১৪ হাজার বিতরণ করা হয়। তবে সরবরাহের সংকটে এসব উপকরণ বিতরণ কমেছে।
অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, ৪ কোটি ৫০ লাখ মাসিক চক্রের (এক মাসিক চক্রে ২৮টি বড়ি থাকে) জন্মবিরতিকরণ বড়ি কিনতে ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি পাঁচটি লটে ২১৬ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। সাতটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিলেও শর্ত পূরণ করে তিনটি প্রতিষ্ঠান। ১, ২ ও ৩ লটে দরপত্র জমা দেয় বেসরকারি ওষুধ কোম্পানি রেনেটা লিমিটেড ও টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। ৪ ও ৫ নম্বর লটের জন্য পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ওই বছরের ১৩ মার্চ দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কার্যকর প্রতিযোগিতার অভাবে এই পাঁচটি লট বাতিল করে দেয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ সূত্র জানায়, দরপত্র বাতিলের পর ওই তিনটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটিতে (বিপিপিএ) আপিল করে। বিপিপিএর রিভিউ প্যানেল ৪ ও ৫ নম্বর লটের আপিল খারিজ করে। তবে রিভিউ প্যানেলের রায় যায় ১, ২ ও ৩ নম্বর লটের পক্ষে। এতে পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস হাইকোর্টে রিট করে পক্ষে রায় পায়। এর বিরুদ্ধে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর আপিল বিভাগে আবেদন করলে ‘নো অর্ডার’ মর্মে রায় দেন।
এই দরপত্রের বৈধতার মেয়াদ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর শেষ হয়। বৈধতার মেয়াদ বাড়াতে টেকনো ড্রাগস লিমিটেড (লট-১, ২ ও ৩) এবং পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস (লট-৪ ও ৫) হাইকোর্টে রিট করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত প্যাকেজের মেয়াদ বা প্যাকেজের আওতায় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত বৈধতা বৃদ্ধি করে রায় দেন। এসব উল্লেখ করে ৭ আগস্ট স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে বিপিপিএর প্রধান নির্বাহীর কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। উপসচিব কামরুন নাহার সুমির সই করা ওই চিঠিতে দরপত্র নিয়ে যে অচলাবস্থা রয়েছে, তা সমাধান করে নতুন ক্রয়প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে মতামত দিতে অনুরোধ জানানো হয়।
সূত্র বলছে, নতুন করে কেনা না হওয়ায় জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সংকট শুরু হয়। বর্তমানে চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। কোনো কোনো অঞ্চলে সরবরাহ শূন্যের কোঠায়। গত বছরের জানুয়ারিতে খাওয়ার বড়ি সরবরাহ করা হয়েছিল ৬১ লাখ, গত জুলাইয়ে তা নেমে আসে ১২ লাখে। একইভাবে ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডির সরবরাহও কমেছে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, দেশের ৪৯৪টি উপজেলার মধ্যে এখন খাওয়ার বড়ি নেই ১৩৪টিতে। শিগগির মজুত শেষ হবে ১১৪টিতে এবং ৫৯টিতে চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। ১৫৪টি উপজেলায় কনডম এবং ৩৩৪টি উপজেলায় আইইউডির মজুত নেই। অন্যান্য পদ্ধতির উপকরণের ক্ষেত্রেও একই রকম চিত্র।
এই অধিদপ্তরের পরিচালক (উপকরণ ও সরবরাহ) মো. আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকা'কে বলেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এমন সংকট আগে কখনো দেখা যায়নি। রাজস্ব খাত থেকে কিছু উপকরণ কেনা হয়েছে। তাতে আগামী তিন মাসের মতো চলতে পারে। গত বছর কোনো উপকরণ কেনা হয়নি। মাঠপর্যায়ে তিন মাসের বিতরণ সামগ্রী থাকার পরও ২৩টি ওয়্যারহাউসে আরও তিন মাসের মজুত থাকার কথা। এখন সব মিলিয়ে তিন মাসের মজুত রয়েছে। নিয়মিত বড় ধরনের ক্রয় না থাকায় সংকট তৈরি হয়েছে।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সরকারিভাবে উপকরণ না পাওয়ায় অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণের আশঙ্কা বাড়ছে। অল্প বয়সে মাতৃত্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাতের ঘটনাও বাড়তে পারে। এতে মাতৃমৃত্যু ও নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। একই সঙ্গে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিও হোচট খাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক বছরে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে রাখা হয়নি। দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে সক্ষম দম্পতিদের বড় একটি অংশ কোনো উপকরণ পাচ্ছে না। ফলে অনেকে অপ্রত্যাশিত সন্তান ধারণ করছেন বা গর্ভপাত করাচ্ছেন।’
তিনি জানান, ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশে টিএফআর বা টোটাল ফার্টিলিটি রেট (নারীপ্রতি মোট প্রজনন হার) ছিল ৩ দশমিক ৩। ২০০০ সালেও একই অবস্থা ছিল। ২০০৪ ও ২০০৭ সালে কিছুটা কমেছে। তবে ২০২১ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আবার ২ দশমিক ৩ হয়েছে। টিএফআর কমাতে সরকারের পদক্ষেপের অভাব রয়েছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, ‘দরপত্র আমরা বাতিল করেছিলাম। পরে প্রতিষ্ঠানগুলো আদালতে গিয়ে আদেশ এনেছে। আমরা আপিল করেছিলাম। সরকার শেষপর্যন্ত জিততে পারেনি। এখন বিষয়টি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা নিয়ে আমরা বিপিপিএর কাছে মতামত চেয়েছি। তাদের মতামতের আলোকে আমরা পদক্ষেপ নেব।’ তিনি বলেন, উন্নয়ন বাজেটে যে অপারেশন প্ল্যান ছিল, তা বাস্তবায়ন হলে উপকরণগুলো কেনা হতো। কিন্তু অপারেশন প্ল্যান না থাকায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। তবে নিয়মিত চাহিদা সামাল দিতে বিশেষ বরাদ্দ এনে কিছু উপকরণ কেনা হয়েছিল।
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দরপত্রের জটিলতার সুরাহা না হওয়ায় দেশে সরকারিভাবে বিতরণের জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের সংকট প্রকট হয়েছে। এতে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তাদের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের মাত্র তিন মাসের মজুত আছে।
জন্মবিরতিকরণ বড়ি (খাওয়ার বড়ি) কিনতে প্রায় দেড় বছর আগে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আহ্বান করা ২১৬ কোটি টাকার দরপত্র নিয়ে জটিলতা এখনো কাটেনি। ফলে কোনো জন্মবিরতিকরণ বড়ি কেনা যায়নি। সরবরাহ কমে যাওয়ায় গ্রামীণ ও প্রান্তিক দম্পতিরা উপকরণ পাচ্ছেন না। এতে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ, অল্প বয়সে মাতৃত্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাতের ঘটনা বাড়ছে। সূত্র বলছে, সংকট কাটাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নতুন করে দরপত্র আহ্বানের কথা ভাবছে।
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) তথ্য অনুযায়ী, দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এক-তৃতীয়াংশের (৩৭ শতাংশ) বেশি আসে সরকারি খাত থেকে। বাকিটুকু আসে বেসরকারি খাত (৫৭ শতাংশ), বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও (৩ শতাংশ) এবং অন্যান্য উৎস (৪ শতাংশ) থেকে। মোট সাত ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে পাঁচটি সরকারিভাবে দেওয়া হয়। এগুলো হলো—জন্মবিরতিকরণ বড়ি (খাওয়ার বড়ি), ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডি।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারিভাবে সাধারণত প্রতি মাসে ৬০ থেকে ৭০ লাখ পাতা (প্রতি পাতায় ২৮ বড়ি) খাওয়ার বড়ি বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া ইনজেক্টেবল ৭ থেকে ১০ লাখ, কনডম ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি, ইমপ্ল্যান্ট ৩০ থেকে ৬০ হাজার এবং আইইউডি ১০ থেকে ১৪ হাজার বিতরণ করা হয়। তবে সরবরাহের সংকটে এসব উপকরণ বিতরণ কমেছে।
অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, ৪ কোটি ৫০ লাখ মাসিক চক্রের (এক মাসিক চক্রে ২৮টি বড়ি থাকে) জন্মবিরতিকরণ বড়ি কিনতে ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি পাঁচটি লটে ২১৬ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। সাতটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিলেও শর্ত পূরণ করে তিনটি প্রতিষ্ঠান। ১, ২ ও ৩ লটে দরপত্র জমা দেয় বেসরকারি ওষুধ কোম্পানি রেনেটা লিমিটেড ও টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। ৪ ও ৫ নম্বর লটের জন্য পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ওই বছরের ১৩ মার্চ দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কার্যকর প্রতিযোগিতার অভাবে এই পাঁচটি লট বাতিল করে দেয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ সূত্র জানায়, দরপত্র বাতিলের পর ওই তিনটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটিতে (বিপিপিএ) আপিল করে। বিপিপিএর রিভিউ প্যানেল ৪ ও ৫ নম্বর লটের আপিল খারিজ করে। তবে রিভিউ প্যানেলের রায় যায় ১, ২ ও ৩ নম্বর লটের পক্ষে। এতে পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস হাইকোর্টে রিট করে পক্ষে রায় পায়। এর বিরুদ্ধে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর আপিল বিভাগে আবেদন করলে ‘নো অর্ডার’ মর্মে রায় দেন।
এই দরপত্রের বৈধতার মেয়াদ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর শেষ হয়। বৈধতার মেয়াদ বাড়াতে টেকনো ড্রাগস লিমিটেড (লট-১, ২ ও ৩) এবং পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস (লট-৪ ও ৫) হাইকোর্টে রিট করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত প্যাকেজের মেয়াদ বা প্যাকেজের আওতায় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত বৈধতা বৃদ্ধি করে রায় দেন। এসব উল্লেখ করে ৭ আগস্ট স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে বিপিপিএর প্রধান নির্বাহীর কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। উপসচিব কামরুন নাহার সুমির সই করা ওই চিঠিতে দরপত্র নিয়ে যে অচলাবস্থা রয়েছে, তা সমাধান করে নতুন ক্রয়প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে মতামত দিতে অনুরোধ জানানো হয়।
সূত্র বলছে, নতুন করে কেনা না হওয়ায় জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সংকট শুরু হয়। বর্তমানে চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। কোনো কোনো অঞ্চলে সরবরাহ শূন্যের কোঠায়। গত বছরের জানুয়ারিতে খাওয়ার বড়ি সরবরাহ করা হয়েছিল ৬১ লাখ, গত জুলাইয়ে তা নেমে আসে ১২ লাখে। একইভাবে ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডির সরবরাহও কমেছে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, দেশের ৪৯৪টি উপজেলার মধ্যে এখন খাওয়ার বড়ি নেই ১৩৪টিতে। শিগগির মজুত শেষ হবে ১১৪টিতে এবং ৫৯টিতে চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। ১৫৪টি উপজেলায় কনডম এবং ৩৩৪টি উপজেলায় আইইউডির মজুত নেই। অন্যান্য পদ্ধতির উপকরণের ক্ষেত্রেও একই রকম চিত্র।
এই অধিদপ্তরের পরিচালক (উপকরণ ও সরবরাহ) মো. আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকা'কে বলেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এমন সংকট আগে কখনো দেখা যায়নি। রাজস্ব খাত থেকে কিছু উপকরণ কেনা হয়েছে। তাতে আগামী তিন মাসের মতো চলতে পারে। গত বছর কোনো উপকরণ কেনা হয়নি। মাঠপর্যায়ে তিন মাসের বিতরণ সামগ্রী থাকার পরও ২৩টি ওয়্যারহাউসে আরও তিন মাসের মজুত থাকার কথা। এখন সব মিলিয়ে তিন মাসের মজুত রয়েছে। নিয়মিত বড় ধরনের ক্রয় না থাকায় সংকট তৈরি হয়েছে।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সরকারিভাবে উপকরণ না পাওয়ায় অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণের আশঙ্কা বাড়ছে। অল্প বয়সে মাতৃত্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাতের ঘটনাও বাড়তে পারে। এতে মাতৃমৃত্যু ও নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। একই সঙ্গে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিও হোচট খাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক বছরে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে রাখা হয়নি। দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে সক্ষম দম্পতিদের বড় একটি অংশ কোনো উপকরণ পাচ্ছে না। ফলে অনেকে অপ্রত্যাশিত সন্তান ধারণ করছেন বা গর্ভপাত করাচ্ছেন।’
তিনি জানান, ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশে টিএফআর বা টোটাল ফার্টিলিটি রেট (নারীপ্রতি মোট প্রজনন হার) ছিল ৩ দশমিক ৩। ২০০০ সালেও একই অবস্থা ছিল। ২০০৪ ও ২০০৭ সালে কিছুটা কমেছে। তবে ২০২১ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আবার ২ দশমিক ৩ হয়েছে। টিএফআর কমাতে সরকারের পদক্ষেপের অভাব রয়েছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, ‘দরপত্র আমরা বাতিল করেছিলাম। পরে প্রতিষ্ঠানগুলো আদালতে গিয়ে আদেশ এনেছে। আমরা আপিল করেছিলাম। সরকার শেষপর্যন্ত জিততে পারেনি। এখন বিষয়টি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা নিয়ে আমরা বিপিপিএর কাছে মতামত চেয়েছি। তাদের মতামতের আলোকে আমরা পদক্ষেপ নেব।’ তিনি বলেন, উন্নয়ন বাজেটে যে অপারেশন প্ল্যান ছিল, তা বাস্তবায়ন হলে উপকরণগুলো কেনা হতো। কিন্তু অপারেশন প্ল্যান না থাকায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। তবে নিয়মিত চাহিদা সামাল দিতে বিশেষ বরাদ্দ এনে কিছু উপকরণ কেনা হয়েছিল।

দরপত্রের জটিলতার সুরাহা না হওয়ায় দেশে সরকারিভাবে বিতরণের জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের সংকট প্রকট হয়েছে। এতে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তাদের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের মাত্র তিন মাসের মজুত আছে।
জন্মবিরতিকরণ বড়ি (খাওয়ার বড়ি) কিনতে প্রায় দেড় বছর আগে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আহ্বান করা ২১৬ কোটি টাকার দরপত্র নিয়ে জটিলতা এখনো কাটেনি। ফলে কোনো জন্মবিরতিকরণ বড়ি কেনা যায়নি। সরবরাহ কমে যাওয়ায় গ্রামীণ ও প্রান্তিক দম্পতিরা উপকরণ পাচ্ছেন না। এতে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ, অল্প বয়সে মাতৃত্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাতের ঘটনা বাড়ছে। সূত্র বলছে, সংকট কাটাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নতুন করে দরপত্র আহ্বানের কথা ভাবছে।
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) তথ্য অনুযায়ী, দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এক-তৃতীয়াংশের (৩৭ শতাংশ) বেশি আসে সরকারি খাত থেকে। বাকিটুকু আসে বেসরকারি খাত (৫৭ শতাংশ), বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও (৩ শতাংশ) এবং অন্যান্য উৎস (৪ শতাংশ) থেকে। মোট সাত ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে পাঁচটি সরকারিভাবে দেওয়া হয়। এগুলো হলো—জন্মবিরতিকরণ বড়ি (খাওয়ার বড়ি), ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডি।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারিভাবে সাধারণত প্রতি মাসে ৬০ থেকে ৭০ লাখ পাতা (প্রতি পাতায় ২৮ বড়ি) খাওয়ার বড়ি বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া ইনজেক্টেবল ৭ থেকে ১০ লাখ, কনডম ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি, ইমপ্ল্যান্ট ৩০ থেকে ৬০ হাজার এবং আইইউডি ১০ থেকে ১৪ হাজার বিতরণ করা হয়। তবে সরবরাহের সংকটে এসব উপকরণ বিতরণ কমেছে।
অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, ৪ কোটি ৫০ লাখ মাসিক চক্রের (এক মাসিক চক্রে ২৮টি বড়ি থাকে) জন্মবিরতিকরণ বড়ি কিনতে ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি পাঁচটি লটে ২১৬ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। সাতটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিলেও শর্ত পূরণ করে তিনটি প্রতিষ্ঠান। ১, ২ ও ৩ লটে দরপত্র জমা দেয় বেসরকারি ওষুধ কোম্পানি রেনেটা লিমিটেড ও টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। ৪ ও ৫ নম্বর লটের জন্য পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ওই বছরের ১৩ মার্চ দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কার্যকর প্রতিযোগিতার অভাবে এই পাঁচটি লট বাতিল করে দেয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ সূত্র জানায়, দরপত্র বাতিলের পর ওই তিনটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটিতে (বিপিপিএ) আপিল করে। বিপিপিএর রিভিউ প্যানেল ৪ ও ৫ নম্বর লটের আপিল খারিজ করে। তবে রিভিউ প্যানেলের রায় যায় ১, ২ ও ৩ নম্বর লটের পক্ষে। এতে পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস হাইকোর্টে রিট করে পক্ষে রায় পায়। এর বিরুদ্ধে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর আপিল বিভাগে আবেদন করলে ‘নো অর্ডার’ মর্মে রায় দেন।
এই দরপত্রের বৈধতার মেয়াদ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর শেষ হয়। বৈধতার মেয়াদ বাড়াতে টেকনো ড্রাগস লিমিটেড (লট-১, ২ ও ৩) এবং পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস (লট-৪ ও ৫) হাইকোর্টে রিট করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত প্যাকেজের মেয়াদ বা প্যাকেজের আওতায় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত বৈধতা বৃদ্ধি করে রায় দেন। এসব উল্লেখ করে ৭ আগস্ট স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ থেকে বিপিপিএর প্রধান নির্বাহীর কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। উপসচিব কামরুন নাহার সুমির সই করা ওই চিঠিতে দরপত্র নিয়ে যে অচলাবস্থা রয়েছে, তা সমাধান করে নতুন ক্রয়প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে মতামত দিতে অনুরোধ জানানো হয়।
সূত্র বলছে, নতুন করে কেনা না হওয়ায় জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সংকট শুরু হয়। বর্তমানে চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ নেমে এসেছে এক-চতুর্থাংশে। কোনো কোনো অঞ্চলে সরবরাহ শূন্যের কোঠায়। গত বছরের জানুয়ারিতে খাওয়ার বড়ি সরবরাহ করা হয়েছিল ৬১ লাখ, গত জুলাইয়ে তা নেমে আসে ১২ লাখে। একইভাবে ইনজেক্টেবল, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ও আইইউডির সরবরাহও কমেছে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, দেশের ৪৯৪টি উপজেলার মধ্যে এখন খাওয়ার বড়ি নেই ১৩৪টিতে। শিগগির মজুত শেষ হবে ১১৪টিতে এবং ৫৯টিতে চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। ১৫৪টি উপজেলায় কনডম এবং ৩৩৪টি উপজেলায় আইইউডির মজুত নেই। অন্যান্য পদ্ধতির উপকরণের ক্ষেত্রেও একই রকম চিত্র।
এই অধিদপ্তরের পরিচালক (উপকরণ ও সরবরাহ) মো. আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকা'কে বলেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের এমন সংকট আগে কখনো দেখা যায়নি। রাজস্ব খাত থেকে কিছু উপকরণ কেনা হয়েছে। তাতে আগামী তিন মাসের মতো চলতে পারে। গত বছর কোনো উপকরণ কেনা হয়নি। মাঠপর্যায়ে তিন মাসের বিতরণ সামগ্রী থাকার পরও ২৩টি ওয়্যারহাউসে আরও তিন মাসের মজুত থাকার কথা। এখন সব মিলিয়ে তিন মাসের মজুত রয়েছে। নিয়মিত বড় ধরনের ক্রয় না থাকায় সংকট তৈরি হয়েছে।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সরকারিভাবে উপকরণ না পাওয়ায় অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণের আশঙ্কা বাড়ছে। অল্প বয়সে মাতৃত্ব ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাতের ঘটনাও বাড়তে পারে। এতে মাতৃমৃত্যু ও নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। একই সঙ্গে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিও হোচট খাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক বছরে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে রাখা হয়নি। দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে সক্ষম দম্পতিদের বড় একটি অংশ কোনো উপকরণ পাচ্ছে না। ফলে অনেকে অপ্রত্যাশিত সন্তান ধারণ করছেন বা গর্ভপাত করাচ্ছেন।’
তিনি জানান, ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশে টিএফআর বা টোটাল ফার্টিলিটি রেট (নারীপ্রতি মোট প্রজনন হার) ছিল ৩ দশমিক ৩। ২০০০ সালেও একই অবস্থা ছিল। ২০০৪ ও ২০০৭ সালে কিছুটা কমেছে। তবে ২০২১ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আবার ২ দশমিক ৩ হয়েছে। টিএফআর কমাতে সরকারের পদক্ষেপের অভাব রয়েছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, ‘দরপত্র আমরা বাতিল করেছিলাম। পরে প্রতিষ্ঠানগুলো আদালতে গিয়ে আদেশ এনেছে। আমরা আপিল করেছিলাম। সরকার শেষপর্যন্ত জিততে পারেনি। এখন বিষয়টি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা নিয়ে আমরা বিপিপিএর কাছে মতামত চেয়েছি। তাদের মতামতের আলোকে আমরা পদক্ষেপ নেব।’ তিনি বলেন, উন্নয়ন বাজেটে যে অপারেশন প্ল্যান ছিল, তা বাস্তবায়ন হলে উপকরণগুলো কেনা হতো। কিন্তু অপারেশন প্ল্যান না থাকায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। তবে নিয়মিত চাহিদা সামাল দিতে বিশেষ বরাদ্দ এনে কিছু উপকরণ কেনা হয়েছিল।

সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, অতিরিক্ত মূল্য বা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই প্রক্রিয়া নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে উল্লেখ করে আজ মঙ্গলবার...
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই জাতীয় সনদ তিন ধাপে বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এগুলো হলো আইনি ভিত্তি দিতে প্রথমে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি, পরে আদেশের প্রশ্নে গণভোট এবং সর্বশেষ আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা (সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ) পালনের ক্ষমতা দেওয়ার মাধ্য
১০ ঘণ্টা আগে
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ পলাতক ২৪ জনের বিরুদ্ধে সাত মাসেও রেড নোটিশ জারি করেনি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)। বাংলাদেশ পুলিশের সূত্র বলেছে, তাঁদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইন্টারপোলের কাছে এ সহায়তা চাওয়া হয়
১০ ঘণ্টা আগে
দেশে ৬-৭ বছর ধরে হজযাত্রীর কোটা পূরণ হচ্ছে না। উড়োজাহাজের ভাড়া বৃদ্ধি, সৌদি আরবে খরচ বেড়ে যাওয়া, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিনিয়োগে ভাটাসহ নানা কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কোন দেশের কতজন হজ করতে পারবেন, তা নির্ধারণ করে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)।
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, অতিরিক্ত মূল্য বা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই প্রক্রিয়া নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে উল্লেখ করে আজ মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় প্রতিবাদ জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের অধীনে জিটুজি পদ্ধতিতে এই আমদানি কার্যক্রম চলছে। প্রথম পর্যায়ে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম প্রতি টন ৩০২ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলারে এবং দ্বিতীয় ধাপে একই পরিমাণ গম প্রতি টন ৩০৮ ডলারে ক্রয়ের চুক্তি সম্পন্ন হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের গমের মূল্যের সঙ্গে রাশিয়ার গমের মূল্যের তুলনা করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ত্রুটিপূর্ণ। খাদ্য মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যায় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের গমের দামে চট্টগ্রাম ও মোংলা খাদ্য অধিদপ্তরের সাইলো পর্যন্ত পরিবহন ব্যয়, বিমা, আনলোডিং ও বন্দরভিত্তিকসহ সব খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে। অন্যদিকে রাশিয়ার গমের মূল্যে শুধু দেশটির বন্দর পর্যন্ত (এফওবি) খরচ হিসাব করা হয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে রাশিয়ার গমের মূল্য প্রতি টন প্রায় ২৩০ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম প্রায় ২৩২ ডলার। অর্থাৎ পার্থক্য মাত্র ২ ডলার।
এ ছাড়া বর্তমানে প্রতি টন রাশিয়ার গমের দাম ২ লাখ ৯৫ হাজার ৩০০ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম ৩ লাখ ৮ হাজার ৩১০ ডলার (সম্ভাব্য চূড়ান্ত মূল্য) বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় আরও উল্লেখ করেছে, মানের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের গম বেশি উন্নত। রাশিয়ার গমে গড়ে ১১ শতাংশ প্রোটিন (আমিষ) থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের গমে প্রোটিনের পরিমাণ ১৩.৫ শতাংশ, যা পুষ্টিগুণ ও মানের দিক থেকে উন্নত। এই উন্নত মান, উচ্চমাত্রার প্রোটিন এবং আন্তর্জাতিক পরিবহন ব্যয় বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম সামান্য বেশি হওয়া যুক্তিসংগত এবং বাজারসম্মত।
মন্ত্রণালয় স্পষ্টভাবে নিশ্চিত করেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে জিটুজি পদ্ধতিতে গম আমদানির পুরো প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা বজায় রেখে, প্রতিযোগিতামূলক উপায়ে এবং সরকার অনুমোদিত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সম্পন্ন হয়েছে।

সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, অতিরিক্ত মূল্য বা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই প্রক্রিয়া নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে উল্লেখ করে আজ মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় প্রতিবাদ জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের অধীনে জিটুজি পদ্ধতিতে এই আমদানি কার্যক্রম চলছে। প্রথম পর্যায়ে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম প্রতি টন ৩০২ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলারে এবং দ্বিতীয় ধাপে একই পরিমাণ গম প্রতি টন ৩০৮ ডলারে ক্রয়ের চুক্তি সম্পন্ন হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের গমের মূল্যের সঙ্গে রাশিয়ার গমের মূল্যের তুলনা করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ত্রুটিপূর্ণ। খাদ্য মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যায় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের গমের দামে চট্টগ্রাম ও মোংলা খাদ্য অধিদপ্তরের সাইলো পর্যন্ত পরিবহন ব্যয়, বিমা, আনলোডিং ও বন্দরভিত্তিকসহ সব খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে। অন্যদিকে রাশিয়ার গমের মূল্যে শুধু দেশটির বন্দর পর্যন্ত (এফওবি) খরচ হিসাব করা হয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে রাশিয়ার গমের মূল্য প্রতি টন প্রায় ২৩০ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম প্রায় ২৩২ ডলার। অর্থাৎ পার্থক্য মাত্র ২ ডলার।
এ ছাড়া বর্তমানে প্রতি টন রাশিয়ার গমের দাম ২ লাখ ৯৫ হাজার ৩০০ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম ৩ লাখ ৮ হাজার ৩১০ ডলার (সম্ভাব্য চূড়ান্ত মূল্য) বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় আরও উল্লেখ করেছে, মানের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের গম বেশি উন্নত। রাশিয়ার গমে গড়ে ১১ শতাংশ প্রোটিন (আমিষ) থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের গমে প্রোটিনের পরিমাণ ১৩.৫ শতাংশ, যা পুষ্টিগুণ ও মানের দিক থেকে উন্নত। এই উন্নত মান, উচ্চমাত্রার প্রোটিন এবং আন্তর্জাতিক পরিবহন ব্যয় বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম সামান্য বেশি হওয়া যুক্তিসংগত এবং বাজারসম্মত।
মন্ত্রণালয় স্পষ্টভাবে নিশ্চিত করেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে জিটুজি পদ্ধতিতে গম আমদানির পুরো প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা বজায় রেখে, প্রতিযোগিতামূলক উপায়ে এবং সরকার অনুমোদিত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সম্পন্ন হয়েছে।

দরপত্রের জটিলতার সুরাহা না হওয়ায় দেশে সরকারিভাবে বিতরণের জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের সংকট প্রকট হয়েছে। এতে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তাদের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের মাত্র তিন মাসের মজুত আছে।
২০ আগস্ট ২০২৫
জুলাই জাতীয় সনদ তিন ধাপে বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এগুলো হলো আইনি ভিত্তি দিতে প্রথমে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি, পরে আদেশের প্রশ্নে গণভোট এবং সর্বশেষ আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা (সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ) পালনের ক্ষমতা দেওয়ার মাধ্য
১০ ঘণ্টা আগে
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ পলাতক ২৪ জনের বিরুদ্ধে সাত মাসেও রেড নোটিশ জারি করেনি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)। বাংলাদেশ পুলিশের সূত্র বলেছে, তাঁদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইন্টারপোলের কাছে এ সহায়তা চাওয়া হয়
১০ ঘণ্টা আগে
দেশে ৬-৭ বছর ধরে হজযাত্রীর কোটা পূরণ হচ্ছে না। উড়োজাহাজের ভাড়া বৃদ্ধি, সৌদি আরবে খরচ বেড়ে যাওয়া, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিনিয়োগে ভাটাসহ নানা কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কোন দেশের কতজন হজ করতে পারবেন, তা নির্ধারণ করে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)।
১০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই জাতীয় সনদ তিন ধাপে বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এগুলো হলো আইনি ভিত্তি দিতে প্রথমে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি, পরে আদেশের প্রশ্নে গণভোট এবং সর্বশেষ আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা (সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ) পালনের ক্ষমতা দেওয়ার মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন।
ঐকমত্য কমিশন আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই সুপারিশ জমা দেবে। আগামী সংসদ সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো অনুমোদন না করলে কী হবে, তা নিয়ে কমিশন একটি বিকল্প প্রস্তাবও সুপারিশ করবে। সেখানে থাকবে বিশেষ আদেশ জারির পর সংবিধানসংক্রান্ত সব প্রস্তাব নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বিল তৈরি, পরে বিলের প্রশ্নে গণভোট এবং সংবিধান সংস্কার পরিষদের মেয়াদে বাস্তবায়িত না হলে বিলে থাকা বিষয়গুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাবে।
গতকাল সোমবার যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য কমিশনের প্রস্তুত করা সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হয়। প্রস্তুত করা সুপারিশের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমিশনের প্রধানকে সুপারিশগুলো আমরা অবহিত করেছি। এ ব্যাপারে তিনি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।’
কমিশন সূত্র জানায়, চূড়ান্ত সুপারিশ অনুযায়ী সনদ বাস্তবায়নে গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। এর অধীনে জারি হবে গণভোট-বিষয়ক একটি অধ্যাদেশ। এর ভিত্তিতেই হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যে সংবিধানসংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে। বাস্তবায়নের পুরো প্রক্রিয়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে উল্লেখ থাকবে। আদেশ জারির পর এর কিছু অংশ তাৎক্ষণিক এবং কিছু কিছু বিষয় পরে কার্যকর হবে। আদেশের কোন ধারা কবে কার্যকর হবে, তা উল্লেখ থাকবে। জুলাই সনদের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব আদেশের পরিশিষ্টে উল্লেখ থাকবে। তবে সেখানে কোনো দলের ভিন্নমতের বিষয় উল্লেখ থাকবে না। শুধু কমিশনের ৮৪টি প্রস্তাব/সিদ্ধান্তের উল্লেখ থাকবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই ধাপের সংলাপের ভিত্তিতে রাষ্ট্রকাঠামোর বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি করা হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ। এগুলোর মধ্যে ৪৭টি প্রস্তাব সংবিধানসম্পর্কিত। মূলত এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা আছে। এই প্রস্তাবগুলোর বেশির ভাগের ক্ষেত্রে কোনো না কোনো দলের ভিন্নমত আছে। এগুলোর মধ্যে ৭টি মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবে ভিন্নমত আছে বিএনপির।
কমিশনের একাধিক সূত্র জানায়, সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে গণভোটে রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) উল্লেখ থাকবে না। সনদের ওপরই গণভোট হবে। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে ঐকমত্য কমিশন যেভাবে সংবিধান সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে, সেভাবেই তা বাস্তবায়িত হবে। ‘গণভোট ও সংবিধান সংস্কার পরিষদে পাস হলে আগামী সংসদেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে আইনসভার উচ্চকক্ষ গঠন করার সুপারিশ করা হতে পারে’; যা আদেশে আলাদা করে উল্লেখ থাকতে পারে।
সংবিধান সংস্কার পরিষদকে সনদের সংবিধানসম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো সমাধানে বাধ্যবাধকতা রাখতে বিকল্প আরেকটি প্রস্তাব কমিশন দেবে বলে সূত্র জানায়। বিকল্প সুপারিশে বলা হতে পারে, সংবিধানসংক্রান্ত সব সুপারিশ বিল আকারে আগামী চার মাসের মধ্যে সরকারকে তৈরি করতে বলা হবে। সে ক্ষেত্রে গণভোটে বিলটি দেওয়া হবে। সংবিধান সংস্কার পরিষদ আলোচনার মাধ্যমে বিলের শব্দ বা বাক্য পরিবর্তন করতে পারবে, তবে স্পিরিট বা মূলভাব পরিবর্তন করা যাবে না। তবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে বিষয়গুলোর সমাধান না হলে ২৭১তম দিনে বিলগুলো সংবিধানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে গণভোটে প্রশ্ন হতে পারে—জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ অনুমোদন করেন কি না এবং গণভোট বিলের প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন চান কি না।
গণভোটের সময় এবং আদেশ জারির সিদ্ধান্ত দেবে সরকার
গণভোটে জুলাই সনদের বৈধতা নেওয়ার প্রশ্নে দলগুলো একমত হলেও গণভোট কবে হবে, এর ভিত্তি কী হবে, ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে—এসব ক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে মতবিরোধ আছে। কমিশন সূত্র জানায়, গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে—এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।
জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে জারি করার দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি। বিএনপি আদেশ জারির পক্ষে নয়। এই অবস্থায় আদেশটি রাষ্ট্রপতি নাকি প্রধান উপদেষ্টা জারি করবেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভারও সরকারের ওপর ছেড়ে দেবে কমিশন।

জুলাই জাতীয় সনদ তিন ধাপে বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এগুলো হলো আইনি ভিত্তি দিতে প্রথমে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি, পরে আদেশের প্রশ্নে গণভোট এবং সর্বশেষ আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা (সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ) পালনের ক্ষমতা দেওয়ার মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন।
ঐকমত্য কমিশন আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই সুপারিশ জমা দেবে। আগামী সংসদ সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো অনুমোদন না করলে কী হবে, তা নিয়ে কমিশন একটি বিকল্প প্রস্তাবও সুপারিশ করবে। সেখানে থাকবে বিশেষ আদেশ জারির পর সংবিধানসংক্রান্ত সব প্রস্তাব নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বিল তৈরি, পরে বিলের প্রশ্নে গণভোট এবং সংবিধান সংস্কার পরিষদের মেয়াদে বাস্তবায়িত না হলে বিলে থাকা বিষয়গুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাবে।
গতকাল সোমবার যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য কমিশনের প্রস্তুত করা সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হয়। প্রস্তুত করা সুপারিশের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমিশনের প্রধানকে সুপারিশগুলো আমরা অবহিত করেছি। এ ব্যাপারে তিনি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।’
কমিশন সূত্র জানায়, চূড়ান্ত সুপারিশ অনুযায়ী সনদ বাস্তবায়নে গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। এর অধীনে জারি হবে গণভোট-বিষয়ক একটি অধ্যাদেশ। এর ভিত্তিতেই হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যে সংবিধানসংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে। বাস্তবায়নের পুরো প্রক্রিয়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে উল্লেখ থাকবে। আদেশ জারির পর এর কিছু অংশ তাৎক্ষণিক এবং কিছু কিছু বিষয় পরে কার্যকর হবে। আদেশের কোন ধারা কবে কার্যকর হবে, তা উল্লেখ থাকবে। জুলাই সনদের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব আদেশের পরিশিষ্টে উল্লেখ থাকবে। তবে সেখানে কোনো দলের ভিন্নমতের বিষয় উল্লেখ থাকবে না। শুধু কমিশনের ৮৪টি প্রস্তাব/সিদ্ধান্তের উল্লেখ থাকবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই ধাপের সংলাপের ভিত্তিতে রাষ্ট্রকাঠামোর বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি করা হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ। এগুলোর মধ্যে ৪৭টি প্রস্তাব সংবিধানসম্পর্কিত। মূলত এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা আছে। এই প্রস্তাবগুলোর বেশির ভাগের ক্ষেত্রে কোনো না কোনো দলের ভিন্নমত আছে। এগুলোর মধ্যে ৭টি মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবে ভিন্নমত আছে বিএনপির।
কমিশনের একাধিক সূত্র জানায়, সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে গণভোটে রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) উল্লেখ থাকবে না। সনদের ওপরই গণভোট হবে। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে ঐকমত্য কমিশন যেভাবে সংবিধান সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে, সেভাবেই তা বাস্তবায়িত হবে। ‘গণভোট ও সংবিধান সংস্কার পরিষদে পাস হলে আগামী সংসদেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে আইনসভার উচ্চকক্ষ গঠন করার সুপারিশ করা হতে পারে’; যা আদেশে আলাদা করে উল্লেখ থাকতে পারে।
সংবিধান সংস্কার পরিষদকে সনদের সংবিধানসম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো সমাধানে বাধ্যবাধকতা রাখতে বিকল্প আরেকটি প্রস্তাব কমিশন দেবে বলে সূত্র জানায়। বিকল্প সুপারিশে বলা হতে পারে, সংবিধানসংক্রান্ত সব সুপারিশ বিল আকারে আগামী চার মাসের মধ্যে সরকারকে তৈরি করতে বলা হবে। সে ক্ষেত্রে গণভোটে বিলটি দেওয়া হবে। সংবিধান সংস্কার পরিষদ আলোচনার মাধ্যমে বিলের শব্দ বা বাক্য পরিবর্তন করতে পারবে, তবে স্পিরিট বা মূলভাব পরিবর্তন করা যাবে না। তবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে বিষয়গুলোর সমাধান না হলে ২৭১তম দিনে বিলগুলো সংবিধানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে গণভোটে প্রশ্ন হতে পারে—জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ অনুমোদন করেন কি না এবং গণভোট বিলের প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন চান কি না।
গণভোটের সময় এবং আদেশ জারির সিদ্ধান্ত দেবে সরকার
গণভোটে জুলাই সনদের বৈধতা নেওয়ার প্রশ্নে দলগুলো একমত হলেও গণভোট কবে হবে, এর ভিত্তি কী হবে, ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে—এসব ক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে মতবিরোধ আছে। কমিশন সূত্র জানায়, গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে—এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।
জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে জারি করার দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি। বিএনপি আদেশ জারির পক্ষে নয়। এই অবস্থায় আদেশটি রাষ্ট্রপতি নাকি প্রধান উপদেষ্টা জারি করবেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভারও সরকারের ওপর ছেড়ে দেবে কমিশন।

দরপত্রের জটিলতার সুরাহা না হওয়ায় দেশে সরকারিভাবে বিতরণের জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের সংকট প্রকট হয়েছে। এতে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তাদের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের মাত্র তিন মাসের মজুত আছে।
২০ আগস্ট ২০২৫
সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, অতিরিক্ত মূল্য বা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই প্রক্রিয়া নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে উল্লেখ করে আজ মঙ্গলবার...
১ ঘণ্টা আগে
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ পলাতক ২৪ জনের বিরুদ্ধে সাত মাসেও রেড নোটিশ জারি করেনি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)। বাংলাদেশ পুলিশের সূত্র বলেছে, তাঁদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইন্টারপোলের কাছে এ সহায়তা চাওয়া হয়
১০ ঘণ্টা আগে
দেশে ৬-৭ বছর ধরে হজযাত্রীর কোটা পূরণ হচ্ছে না। উড়োজাহাজের ভাড়া বৃদ্ধি, সৌদি আরবে খরচ বেড়ে যাওয়া, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিনিয়োগে ভাটাসহ নানা কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কোন দেশের কতজন হজ করতে পারবেন, তা নির্ধারণ করে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)।
১০ ঘণ্টা আগেবিভিন্ন মামলায় পরোয়ানা
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ পলাতক ২৪ জনের বিরুদ্ধে সাত মাসেও রেড নোটিশ জারি করেনি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)। বাংলাদেশ পুলিশের সূত্র বলেছে, তাঁদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইন্টারপোলের কাছে এ সহায়তা চাওয়া হয়।
পলাতক এই ২৪ জনের বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখার সূত্র বলছে, ওই ২৪ জনের বিরুদ্ধে এখনো ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি না হওয়ার কারণ জানা যায়নি। আবেদন পেলে ইন্টারপোল তাদের নিজস্ব নিয়মে আসামির সব নথি ও তথ্য যাচাই-বাছাই করে নোটিশ জারি করে। সাধারণত আবেদনের তিন সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ এর আগে ইন্টারপোলের কাছ থেকে জবাব পেয়েছে।
জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এখনো তারা কিছু ক্ষেত্রে রেড নোটিশ জারি করেনি। হয়তো যাচাই-বাছাই করছে, এটা তাদের প্রক্রিয়া। তারা রেড নোটিশ জারি না করলেও বিচার থেমে থাকবে না। বিচার আসামির অনুপস্থিতিতেই হবে।
তিনি বলেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনতে সব প্রক্রিয়াও চালু রাখতে হবে। ইন্টারপোল এবং রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের কূটনৈতিক ধারাও অব্যাহত রাখতে হবে।
সূত্র জানায়, শেখ হাসিনাসহ পলাতক ২৮ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) ইন্টারপোলে আবেদন করেছে। এখন পর্যন্ত ইন্টারপোল তাঁদের মধ্যে মাত্র চারজনের নামে রেড নোটিশ জারি করেছে। তাঁরা হলেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান হত্যা মামলার আসামি আরিফ সরকার, মহসিন মিয়া ও আওলাদ হোসেন। মহসিন মিয়াকে গত জুলাইয়ে দুবাই থেকে ইন্টারপোলের সহায়তায় দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তবে আবেদন করা হলেও ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে মোস্ট ওয়ান্টেডের বাংলাদেশের তালিকায় বেনজীর আহমেদের ছবি ও নাম এখনো উঠানো হয়নি।
যে ২৪ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল এখনো রেড নোটিশ জারি করেনি তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার ব্যবসায়ী মো. সাইফুল আলম ও তাঁর তিন ভাই এবং কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি), ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা।
চলতি বছরের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও দেশের কয়েকটি আদালতের নির্দেশে তাঁদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন করে পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিবির এক কর্মকর্তা বলেন, আবেদন করলেই ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করে না। সংস্থাটি তাদের নিয়মে আসামির সব নথি ও তথ্য যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়। এনসিবি সাধারণত আবেদন জমা দেওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে ইন্টারপোলের কাছ থেকে জবাব পায়। এত দীর্ঘ সময় ঝুলিয়ে রাখে না। তিনি বলেন, আসামিরা কে কোথায় আছেন, সে বিষয়ে ইন্টারপোল জানে, বাংলাদেশকে তথ্যও দিয়েছে। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। তবে রেড নোটিশের বিষয়ে সংস্থাটি এখনো কিছু জানায়নি।
ইন্টারপোলের সঙ্গে কাজ করা পুলিশের সাবেক এক কর্মকর্তা বলেন, ইন্টারপোল রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার হতে চায় না। বিভিন্ন দেশে সরকার পরিবর্তনের পর সাবেকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। দেশগুলো ইন্টারপোলের সহায়তা চায়। তাই এসব আবেদন ইন্টারপোল খুব সতর্কভাবে দেখে। ইন্টারপোল কোনো আবেদনের বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায় না, নীরবতা পালন করে। যেসব আবেদনে তারা রেড নোটিশ জারি করে, সেগুলো দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে জানিয়ে দেয়।
এনসিবির কর্মকর্তারা বলছেন, ইন্টারপোল দুই ভাবে আবেদন মূল্যায়ন করে, জরুরি ও সাধারণ। কোনো দেশ জরুরি আবেদন করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয় সংস্থাটি। আর কম গুরুত্বপূর্ণ হলে ইন্টারপোলের ফ্রান্সের কমিটি সেটি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় নেয়।
আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম শাহজাহান সাইফ বলেন, আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচারপ্রক্রিয়া চলতে পারে। তবে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারকে উদ্যোগও নিতে হবে।
ইন্টারপোলের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী মোট ৬ হাজার ৫১৭ জন ওয়ান্টেড ব্যক্তির বিরুদ্ধে রেড নোটিশ আছে, যার মধ্যে বাংলাদেশি ৬০ জন।
জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, ‘ইন্টারপোল তাদের নিজস্ব আইনি কাঠামোর মধ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করে। আমরা নিয়মের মধ্যে থেকে তাদের কাছে আবেদন করেছি। তারা রেড নোটিশ জারি করবে কি না, এটা তাদের ব্যাপার। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ পলাতক ২৪ জনের বিরুদ্ধে সাত মাসেও রেড নোটিশ জারি করেনি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)। বাংলাদেশ পুলিশের সূত্র বলেছে, তাঁদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইন্টারপোলের কাছে এ সহায়তা চাওয়া হয়।
পলাতক এই ২৪ জনের বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখার সূত্র বলছে, ওই ২৪ জনের বিরুদ্ধে এখনো ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি না হওয়ার কারণ জানা যায়নি। আবেদন পেলে ইন্টারপোল তাদের নিজস্ব নিয়মে আসামির সব নথি ও তথ্য যাচাই-বাছাই করে নোটিশ জারি করে। সাধারণত আবেদনের তিন সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ এর আগে ইন্টারপোলের কাছ থেকে জবাব পেয়েছে।
জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এখনো তারা কিছু ক্ষেত্রে রেড নোটিশ জারি করেনি। হয়তো যাচাই-বাছাই করছে, এটা তাদের প্রক্রিয়া। তারা রেড নোটিশ জারি না করলেও বিচার থেমে থাকবে না। বিচার আসামির অনুপস্থিতিতেই হবে।
তিনি বলেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনতে সব প্রক্রিয়াও চালু রাখতে হবে। ইন্টারপোল এবং রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের কূটনৈতিক ধারাও অব্যাহত রাখতে হবে।
সূত্র জানায়, শেখ হাসিনাসহ পলাতক ২৮ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) ইন্টারপোলে আবেদন করেছে। এখন পর্যন্ত ইন্টারপোল তাঁদের মধ্যে মাত্র চারজনের নামে রেড নোটিশ জারি করেছে। তাঁরা হলেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান হত্যা মামলার আসামি আরিফ সরকার, মহসিন মিয়া ও আওলাদ হোসেন। মহসিন মিয়াকে গত জুলাইয়ে দুবাই থেকে ইন্টারপোলের সহায়তায় দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তবে আবেদন করা হলেও ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে মোস্ট ওয়ান্টেডের বাংলাদেশের তালিকায় বেনজীর আহমেদের ছবি ও নাম এখনো উঠানো হয়নি।
যে ২৪ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল এখনো রেড নোটিশ জারি করেনি তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার ব্যবসায়ী মো. সাইফুল আলম ও তাঁর তিন ভাই এবং কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি), ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা।
চলতি বছরের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও দেশের কয়েকটি আদালতের নির্দেশে তাঁদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন করে পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিবির এক কর্মকর্তা বলেন, আবেদন করলেই ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করে না। সংস্থাটি তাদের নিয়মে আসামির সব নথি ও তথ্য যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়। এনসিবি সাধারণত আবেদন জমা দেওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে ইন্টারপোলের কাছ থেকে জবাব পায়। এত দীর্ঘ সময় ঝুলিয়ে রাখে না। তিনি বলেন, আসামিরা কে কোথায় আছেন, সে বিষয়ে ইন্টারপোল জানে, বাংলাদেশকে তথ্যও দিয়েছে। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। তবে রেড নোটিশের বিষয়ে সংস্থাটি এখনো কিছু জানায়নি।
ইন্টারপোলের সঙ্গে কাজ করা পুলিশের সাবেক এক কর্মকর্তা বলেন, ইন্টারপোল রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার হতে চায় না। বিভিন্ন দেশে সরকার পরিবর্তনের পর সাবেকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। দেশগুলো ইন্টারপোলের সহায়তা চায়। তাই এসব আবেদন ইন্টারপোল খুব সতর্কভাবে দেখে। ইন্টারপোল কোনো আবেদনের বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায় না, নীরবতা পালন করে। যেসব আবেদনে তারা রেড নোটিশ জারি করে, সেগুলো দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে জানিয়ে দেয়।
এনসিবির কর্মকর্তারা বলছেন, ইন্টারপোল দুই ভাবে আবেদন মূল্যায়ন করে, জরুরি ও সাধারণ। কোনো দেশ জরুরি আবেদন করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয় সংস্থাটি। আর কম গুরুত্বপূর্ণ হলে ইন্টারপোলের ফ্রান্সের কমিটি সেটি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় নেয়।
আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম শাহজাহান সাইফ বলেন, আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচারপ্রক্রিয়া চলতে পারে। তবে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারকে উদ্যোগও নিতে হবে।
ইন্টারপোলের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী মোট ৬ হাজার ৫১৭ জন ওয়ান্টেড ব্যক্তির বিরুদ্ধে রেড নোটিশ আছে, যার মধ্যে বাংলাদেশি ৬০ জন।
জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, ‘ইন্টারপোল তাদের নিজস্ব আইনি কাঠামোর মধ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করে। আমরা নিয়মের মধ্যে থেকে তাদের কাছে আবেদন করেছি। তারা রেড নোটিশ জারি করবে কি না, এটা তাদের ব্যাপার। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’

দরপত্রের জটিলতার সুরাহা না হওয়ায় দেশে সরকারিভাবে বিতরণের জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের সংকট প্রকট হয়েছে। এতে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তাদের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের মাত্র তিন মাসের মজুত আছে।
২০ আগস্ট ২০২৫
সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, অতিরিক্ত মূল্য বা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই প্রক্রিয়া নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে উল্লেখ করে আজ মঙ্গলবার...
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই জাতীয় সনদ তিন ধাপে বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এগুলো হলো আইনি ভিত্তি দিতে প্রথমে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি, পরে আদেশের প্রশ্নে গণভোট এবং সর্বশেষ আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা (সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ) পালনের ক্ষমতা দেওয়ার মাধ্য
১০ ঘণ্টা আগে
দেশে ৬-৭ বছর ধরে হজযাত্রীর কোটা পূরণ হচ্ছে না। উড়োজাহাজের ভাড়া বৃদ্ধি, সৌদি আরবে খরচ বেড়ে যাওয়া, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিনিয়োগে ভাটাসহ নানা কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কোন দেশের কতজন হজ করতে পারবেন, তা নির্ধারণ করে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)।
১০ ঘণ্টা আগেআয়নাল হোসেন, ঢাকা

দেশে ৬-৭ বছর ধরে হজযাত্রীর কোটা পূরণ হচ্ছে না। উড়োজাহাজের ভাড়া বৃদ্ধি, সৌদি আরবে খরচ বেড়ে যাওয়া, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিনিয়োগে ভাটাসহ নানা কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
কোন দেশের কতজন হজ করতে পারবেন, তা নির্ধারণ করে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। ওআইসির তথ্য অনুযায়ী, দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ১ শতাংশ প্রতিবছর হজে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে আসছেন। সে অনুযায়ী ১০ বছর ধরে বাংলাদেশ ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটা পেয়ে আসছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে নিবন্ধিত অনেকে ২০২০ সাল থেকে হজে যেতে পারেননি। করোনা অতিমারির ধাক্কা ২০২২ সাল পর্যন্ত ছিল। ২০২২ সালে হজে গিয়েছিলেন ৫৯ হাজার ৯০৯ জন। ২০২৩ সালে গিয়েছিলেন ১ লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন, ২০২৪ সালে ৮৫ হাজার, ২০২৫ সালে ৮৭ হাজার ২০০ এবং আগামী বছরের (২০২৬ সালে) জন্য হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন ৭৩ হাজার ৪১৬ জন।
মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা যায়, ২০১৯ সালে সরকারি হজ প্যাকেজ ছিল ৩ লাখ ৪৪ হাজার থেকে ৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ থেকে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। ২০২৩ সালে শুধু এক প্যাকেজে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা ছিল।
২০২৪ সালে করা হয় ৫ লাখ ৭৮ হাজার থেকে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৬৬ টাকা, ২০২৫ সালে করা হয় ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৭২০ থেকে ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৭০ টাকা এবং আগামী বছরের জন্য করা হয় ৪ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ থেকে ৬ লাখ ৯০ হাজার ৫৯৭ টাকা।
এদিকে প্রতিবছরই সরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণার পরপরই বেসরকারি হজ এজেন্সির মালিকেরাও বেসরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে আসছেন। তাঁরা বরাবরই উড়োজাহাজের ভাড়া কমানোর পক্ষে বলে আসছেন। তবে বর্তমানে সৌদি আরব অংশে সব ধরনের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মোট খরচ বেড়েছে বলে তাঁরা জানান।
হজযাত্রী কোটা পূরণ হচ্ছে না কেন? জানতে চাইলে এজেন্সিগুলোর প্রতিনিধিরা বলছেন, অনেকেই ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ওমরাহ করছেন। এতে গ্রামগঞ্জের মানুষের ধারণা, তাঁদের হজ পালন হয়ে গেছে। এই কারণে অনেকে নিবন্ধন করার পরও তাঁদের টাকা ফেরত নিয়েছেন। গত বছর কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার তিনজন বাসিন্দা হজ নিবন্ধন করার পরও হজে যাননি। পরে তাঁরা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ওমরাহ পালন করে আসেন বলে জানা গেছে।
জানতে চাওয়া হলে বেসরকারি হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, উড়োজাহাজের ভাড়া অস্বাভাবিক বাড়া, সৌদি আরবে খরচ অনেক বেড়ে যাওয়া, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অনেক ব্যাংক গ্রাহকদের জমাকৃত টাকা পরিশোধ করতে পারছে না, ব্যবসায় মন্দা ও এক বছর ধরে বিনিয়োগ প্রায় বন্ধের কারণে অনেকেই হজে যেতে পারছেন না। ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এলে দেশে বিনিয়োগ স্থিতিশীল হবে এবং বেশি মানুষ হজে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
দেশে হজযাত্রী কোটা পূরণ কেন হচ্ছে না, জানতে চাওয়া হয় ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেনের কাছে। তিনি তাঁর জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দীকের মাধ্যমে জানান, সৌদি রোডম্যাপ অনুসারে হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়সূচি প্রায় দুই মাস এগিয়ে এসেছে। এর ফলে পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় অনেকে নিবন্ধন করতে পারেননি। ক্রমবর্ধমানহারে ওমরাহযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগের চেয়ে বাংলাদেশ থেকে ওমরাহযাত্রীর সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে। এখন বছরে এ দেশ থেকে প্রায় ৪ লাখ মুসলমান ওমরাহ পালন করে থাকেন। এবং কিছু ব্যাংকের তারল্যসংকটের কারণেও হজযাত্রী নিবন্ধন কমে থাকতে পারে।

দেশে ৬-৭ বছর ধরে হজযাত্রীর কোটা পূরণ হচ্ছে না। উড়োজাহাজের ভাড়া বৃদ্ধি, সৌদি আরবে খরচ বেড়ে যাওয়া, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিনিয়োগে ভাটাসহ নানা কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
কোন দেশের কতজন হজ করতে পারবেন, তা নির্ধারণ করে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। ওআইসির তথ্য অনুযায়ী, দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ১ শতাংশ প্রতিবছর হজে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে আসছেন। সে অনুযায়ী ১০ বছর ধরে বাংলাদেশ ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটা পেয়ে আসছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে নিবন্ধিত অনেকে ২০২০ সাল থেকে হজে যেতে পারেননি। করোনা অতিমারির ধাক্কা ২০২২ সাল পর্যন্ত ছিল। ২০২২ সালে হজে গিয়েছিলেন ৫৯ হাজার ৯০৯ জন। ২০২৩ সালে গিয়েছিলেন ১ লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন, ২০২৪ সালে ৮৫ হাজার, ২০২৫ সালে ৮৭ হাজার ২০০ এবং আগামী বছরের (২০২৬ সালে) জন্য হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন ৭৩ হাজার ৪১৬ জন।
মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা যায়, ২০১৯ সালে সরকারি হজ প্যাকেজ ছিল ৩ লাখ ৪৪ হাজার থেকে ৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ থেকে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। ২০২৩ সালে শুধু এক প্যাকেজে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা ছিল।
২০২৪ সালে করা হয় ৫ লাখ ৭৮ হাজার থেকে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৬৬ টাকা, ২০২৫ সালে করা হয় ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৭২০ থেকে ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৭০ টাকা এবং আগামী বছরের জন্য করা হয় ৪ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ থেকে ৬ লাখ ৯০ হাজার ৫৯৭ টাকা।
এদিকে প্রতিবছরই সরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণার পরপরই বেসরকারি হজ এজেন্সির মালিকেরাও বেসরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে আসছেন। তাঁরা বরাবরই উড়োজাহাজের ভাড়া কমানোর পক্ষে বলে আসছেন। তবে বর্তমানে সৌদি আরব অংশে সব ধরনের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মোট খরচ বেড়েছে বলে তাঁরা জানান।
হজযাত্রী কোটা পূরণ হচ্ছে না কেন? জানতে চাইলে এজেন্সিগুলোর প্রতিনিধিরা বলছেন, অনেকেই ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ওমরাহ করছেন। এতে গ্রামগঞ্জের মানুষের ধারণা, তাঁদের হজ পালন হয়ে গেছে। এই কারণে অনেকে নিবন্ধন করার পরও তাঁদের টাকা ফেরত নিয়েছেন। গত বছর কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার তিনজন বাসিন্দা হজ নিবন্ধন করার পরও হজে যাননি। পরে তাঁরা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ওমরাহ পালন করে আসেন বলে জানা গেছে।
জানতে চাওয়া হলে বেসরকারি হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, উড়োজাহাজের ভাড়া অস্বাভাবিক বাড়া, সৌদি আরবে খরচ অনেক বেড়ে যাওয়া, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অনেক ব্যাংক গ্রাহকদের জমাকৃত টাকা পরিশোধ করতে পারছে না, ব্যবসায় মন্দা ও এক বছর ধরে বিনিয়োগ প্রায় বন্ধের কারণে অনেকেই হজে যেতে পারছেন না। ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এলে দেশে বিনিয়োগ স্থিতিশীল হবে এবং বেশি মানুষ হজে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
দেশে হজযাত্রী কোটা পূরণ কেন হচ্ছে না, জানতে চাওয়া হয় ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেনের কাছে। তিনি তাঁর জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দীকের মাধ্যমে জানান, সৌদি রোডম্যাপ অনুসারে হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়সূচি প্রায় দুই মাস এগিয়ে এসেছে। এর ফলে পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় অনেকে নিবন্ধন করতে পারেননি। ক্রমবর্ধমানহারে ওমরাহযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগের চেয়ে বাংলাদেশ থেকে ওমরাহযাত্রীর সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে। এখন বছরে এ দেশ থেকে প্রায় ৪ লাখ মুসলমান ওমরাহ পালন করে থাকেন। এবং কিছু ব্যাংকের তারল্যসংকটের কারণেও হজযাত্রী নিবন্ধন কমে থাকতে পারে।

দরপত্রের জটিলতার সুরাহা না হওয়ায় দেশে সরকারিভাবে বিতরণের জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের সংকট প্রকট হয়েছে। এতে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তাদের কাছে জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণের মাত্র তিন মাসের মজুত আছে।
২০ আগস্ট ২০২৫
সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, অতিরিক্ত মূল্য বা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই প্রক্রিয়া নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে উল্লেখ করে আজ মঙ্গলবার...
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই জাতীয় সনদ তিন ধাপে বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এগুলো হলো আইনি ভিত্তি দিতে প্রথমে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি, পরে আদেশের প্রশ্নে গণভোট এবং সর্বশেষ আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা (সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ) পালনের ক্ষমতা দেওয়ার মাধ্য
১০ ঘণ্টা আগে
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ পলাতক ২৪ জনের বিরুদ্ধে সাত মাসেও রেড নোটিশ জারি করেনি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)। বাংলাদেশ পুলিশের সূত্র বলেছে, তাঁদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইন্টারপোলের কাছে এ সহায়তা চাওয়া হয়
১০ ঘণ্টা আগে