Ajker Patrika

ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে কাজ করবে নয়াদিল্লি: ভারতের পররাষ্ট্রসচিব

বাসস, ঢাকা  
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২: ৪৯
বিক্রম মিশ্রি। ছবি: বাসস
বিক্রম মিশ্রি। ছবি: বাসস

নয়াদিল্লি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে এবং দুই প্রতিবেশীর মধ্যকার সম্পর্ক জোরদারে ‘সম্মিলিত ও সমন্বিত প্রচেষ্টা’য় আগ্রহী বলে জানিয়েছেন ঢাকায় সফররত ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি।

আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘সম্পর্ক বাড়ানো ছাড়া দ্বিতীয় কোনো চিন্তা নেই। আমরা এটাকে উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হিসেবে দেখি।’

পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে আলোচনায় বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘আমরা যেখানে ছিলাম, সেখান থেকেই আবার শুরু করতে চাই।’

প্রায় ৪০ মিনিটের ওই বৈঠকে সংখ্যালঘু ইস্যু, অপতথ্য প্রচার, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান, আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থান নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বর্তমান সরকারের সঙ্গে কাজ করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ককে ‘খুবই দৃঢ়’ এবং ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে দুই প্রতিবেশীর সম্পর্কে কিছু মেঘ জমে ছায়া তৈরি করেছে। এই ‘কালো মেঘ’ মুছে ফেলতে ভারতের সাহায্য চেয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস।

আলোচনায় বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গও উঠে আসে।

বিগত ১৫ বছরের নির্মম ও দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরশাসনের বর্ণনা করে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের লোকজন উদ্বিগ্ন। কারণ, তিনি সেখান (ভারত) থেকে অনেক বক্তব্য দিচ্ছেন। এটা উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।’

বিক্রম মিশ্রি জানান, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সময় প্রায় প্রতি ঘণ্টায় তিনি বাংলাদেশের ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা জুলাই-আগস্টে গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শিক্ষার্থী, শ্রমিক ও জনতা কীভাবে এক হয়ে হাসিনার দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনামলের অবসান ঘটিয়েছে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ হলো তরুণদের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখা। এটি একটি নতুন বাংলাদেশ।’ এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের যেসব সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে সেসবের সংক্ষিপ্ত রূপরেখা তুলে ধরেন তিনি।

বিক্রম মিশ্রি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর যেসব বিদেশি নেতা তাঁকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামনের সারিতে আছেন।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে গণমাধ্যমের ন্যারেটিভ এবং ভারত সরকারের ধারণা ভিন্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আপনার সাফল্য কামনা করি।’

‘বাংলাদেশের একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক রয়েছে এমন ধারণা ভুল’ উল্লেখ করে বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কোনো নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে নয়, বরং সকলের সঙ্গে।’

বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বন্যা ও পানি ব্যবস্থাপনায় ঘনিষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা এবং সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ভারতকে তাঁর উদ্যোগে সাড়া দেওয়ার আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আমাদের সবার জন্য একটি সমৃদ্ধ নতুন ভবিষ্যৎ গড়তে চাই।’

বিক্রম মিশ্রি জানান, ভারত সার্কের সঙ্গে কাজ অব্যাহত রেখেছে, যদিও কিছু বাধা রয়েছে।

সংখ্যালঘু ইস্যু সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিটি নাগরিকের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও লিঙ্গ নির্বিশেষে সবার অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, ‘আমরা একটি পরিবার। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ভারত গত মাসে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসার সংখ্যা দ্বিগুণ করেছে এবং আগামী দিনে এই সংখ্যা আরও বাড়াবে।

‘আমরা আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই,’ বলেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের আগেই বের হয়ে যেতে বলা হয় জেলেনস্কিকে

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

সৈয়দ জামিলের অভিযোগের জবাবে যা লিখলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা

বগুড়ায় ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত