উবায়দুল্লাহ বাদল, ঢাকা
রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে বলছে, ‘কি মাম্মা কই যাও, ভালাচ্ছ তুমি! আইজকাল তো দেহি কুনো খুঁজ টুঁজ নাও না।’ বন্ধুর জবাব, ‘প্যানায় আছি মাম্মু! জিএফ’রে নিইয়্যা আছি দৌরের উপ্রে।’ বাস্তবের মতোই প্রায় অভিন্ন চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও। ম্যাসেঞ্জারে দুই বন্ধু রনি-লিমনের কথোপকথন চলছে। রনি, ‘আরে মাম্মা কোত্তে আইলি? তোরে তো সারসাইতে সারসাইতে (সার্চ-খোঁজা) আর অব্যস্থা খ্রাপ। ফুনটাও অফ মারছোস। তোরে না পাইয়্যা তোর জিএফ’রেও (গার্লফ্রেন্ড) ফোন দিছি। ও কইলো তুই মাম্মা ওর সাথেও ছিলি না। কই আছিলি ক’ তো?’ লিমনের জবাব, ‘আর কইস না মাম্মা! এই জিএফটারে লইয়্যা ব্যাফক প্যানার মইদ্যে আছি। মাঝে মইদ্যে মুঞ্চায় ব্রেকাপ কইরা ফালাই।’
তরণ প্রজন্মের ক্যাম্পাস ও সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে রনি ও লিমনের মতো হাজারো তরুণ-তরুণী এভাবেই বিকৃতি উচ্চারণে লেখালেখি করছে। ভাষা সংক্ষিপ্তকরণ, উচ্চারণের বিকৃতি ও বিদেশি শব্দের মিশ্রণে এ চেহারা দাঁড়িয়েছে। বন্ধুকে এখনকার ‘জনপ্রিয়’ সম্বোধন ‘মাম্মা’ অর্থাৎ মামা। প্রেমিকাকে সংক্ষেপে বলা হয় জিএফ (গার্লফ্রেন্ড), প্যানা অর্থ বিরক্ত বা জ্বালাতন, মুঞ্চায় অর্থ মন চায়, দৌরের উপ্রে অর্থ দৌড়ের ওপর (চাপ, অতি ব্যস্ততা)। নতুন প্রজন্মের সৃষ্টি এমন হাজারো বিকৃত শব্দের বিস্তৃতি ঘটছে এক মুখ থেকে অন্য মুখে। আভিধানিকভাবে এসব ভাষা বা শব্দ স্বীকৃত না হলেও তার প্রভাব দেখা যায় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এমন বিকৃত বাংলা শব্দ আর বাক্যের ব্যবহার হচ্ছে হরহামেশাই। খারাপ হয়েছে খ্রাপ, হবের বদলে হপ্পে। মজার ছলে এসব নয়া শব্দের ব্যবহার হলেও, একরকম অভ্যাসে পরিণত হয়েছে অনেকের। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মাঝে। ফলে ভাষার এমন যাচ্ছেতাই চর্চা দূষণ ঘটাচ্ছে মূল বাংলা ভাষার।
ভাষার এমন বিকৃতিকে ‘খুবই দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলা ফন্ট সফটওয়্যারের জনক সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা হলেও আমরা রাষ্ট্রের সর্বত্র বাংলা প্রচলন করতে পারিনি। মাতৃভাষা রক্ষায় আমাদের রক্ত দিতে হয়েছে, তা তরুণ প্রজন্মের কাছে আমরা ঠিকমতো পৌঁছাতে পারিনি। পারলে এই অবস্থার সৃষ্টি হতো না। বর্তমানে সরকারি দপ্তরগুলোতে বাংলার প্রচলন কিছুটা থাকলেও বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বাংলার ‘ব’ও নেই। অথচ এ ভাষাকে ২০১০ সালে ইউনেসকো সবচেয়ে মধুর ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তারপরও যতই ষড়যন্ত্র হোক, বাংলা ভাষা তার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখবে এবং দিন দিন সমৃদ্ধ হবে।’
বর্তমান বিশ্বের প্রায় ৮০০ কোটি মানুষের মধ্যে বাংলা ভাষায় কথা বলে অন্তত ৩৫ কোটি মানুষ। মাতৃভাষার দিকে বাংলা ভাষা পঞ্চম। বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় এখন বাংলা ভাষার একচ্ছত্র আধিপত্য। এই ভাষার জন্য ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ হয়েছেন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার, শফিউরসহ নাম না জানা অনেক যুবক। সেই বাংলাদেশে ফেসবুকীয় অভিধানে এখন যুক্ত হয়েছে ‘জোস’, ‘অস্থির’, ‘চরম’, ‘কুল’, ‘অসাম’, ‘রকস’, ‘লোল’ এমন নানা শব্দ। ভার্চুয়াল জগৎ থেকে যেন ‘ছ’ নামের বর্ণটি হারাতে বসেছে। ‘বলছে’ হচ্ছে ‘বলসে’, ‘খাচ্ছে’ কে ‘খাইতাসে’, ‘আসছে’-কে ‘আইসে’, ‘যাচ্ছে’ কে ‘যাইতাসে’। এরপর রয়েছে শব্দের সংক্ষিপ্তকরণ করতে গিয়ে বিকৃতি। ‘মন চায়’ লেখা হয় ‘মুঞ্চায়’। পাত্তা না দিতে চাইলে মনের ভাব প্রকাশ করেন ‘বেইল নাই’, ‘গুনলাম না’ কিংবা ‘অফ যা’ শব্দগুলো দিয়ে। বাংলা ভাষার এ ধরনের বিকৃত উচ্চারণকে অনেকে স্মার্ট ভাবছে। এসব কোড বা সংক্ষিপ্ত ভাষা যদি কেউ না বোঝে, তাহলে সে অন্যদের কাছে হয় ‘ক্ষ্যাত’, না হয় ‘আঁতেল’।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলা ব্যাকরণ জানলে তো মানবে। ফেসবুকের মতো উন্মুক্ত জায়গায় যা খুশি তাই লেখা যাচ্ছে, আইনি কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। এ কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলা ভাষাকে কতটুকু গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা কেউ জানে! এসব দেখভালের দায়িত্ব রাষ্ট্রের-প্রশাসনের।’
রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে বলছে, ‘কি মাম্মা কই যাও, ভালাচ্ছ তুমি! আইজকাল তো দেহি কুনো খুঁজ টুঁজ নাও না।’ বন্ধুর জবাব, ‘প্যানায় আছি মাম্মু! জিএফ’রে নিইয়্যা আছি দৌরের উপ্রে।’ বাস্তবের মতোই প্রায় অভিন্ন চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও। ম্যাসেঞ্জারে দুই বন্ধু রনি-লিমনের কথোপকথন চলছে। রনি, ‘আরে মাম্মা কোত্তে আইলি? তোরে তো সারসাইতে সারসাইতে (সার্চ-খোঁজা) আর অব্যস্থা খ্রাপ। ফুনটাও অফ মারছোস। তোরে না পাইয়্যা তোর জিএফ’রেও (গার্লফ্রেন্ড) ফোন দিছি। ও কইলো তুই মাম্মা ওর সাথেও ছিলি না। কই আছিলি ক’ তো?’ লিমনের জবাব, ‘আর কইস না মাম্মা! এই জিএফটারে লইয়্যা ব্যাফক প্যানার মইদ্যে আছি। মাঝে মইদ্যে মুঞ্চায় ব্রেকাপ কইরা ফালাই।’
তরণ প্রজন্মের ক্যাম্পাস ও সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে রনি ও লিমনের মতো হাজারো তরুণ-তরুণী এভাবেই বিকৃতি উচ্চারণে লেখালেখি করছে। ভাষা সংক্ষিপ্তকরণ, উচ্চারণের বিকৃতি ও বিদেশি শব্দের মিশ্রণে এ চেহারা দাঁড়িয়েছে। বন্ধুকে এখনকার ‘জনপ্রিয়’ সম্বোধন ‘মাম্মা’ অর্থাৎ মামা। প্রেমিকাকে সংক্ষেপে বলা হয় জিএফ (গার্লফ্রেন্ড), প্যানা অর্থ বিরক্ত বা জ্বালাতন, মুঞ্চায় অর্থ মন চায়, দৌরের উপ্রে অর্থ দৌড়ের ওপর (চাপ, অতি ব্যস্ততা)। নতুন প্রজন্মের সৃষ্টি এমন হাজারো বিকৃত শব্দের বিস্তৃতি ঘটছে এক মুখ থেকে অন্য মুখে। আভিধানিকভাবে এসব ভাষা বা শব্দ স্বীকৃত না হলেও তার প্রভাব দেখা যায় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এমন বিকৃত বাংলা শব্দ আর বাক্যের ব্যবহার হচ্ছে হরহামেশাই। খারাপ হয়েছে খ্রাপ, হবের বদলে হপ্পে। মজার ছলে এসব নয়া শব্দের ব্যবহার হলেও, একরকম অভ্যাসে পরিণত হয়েছে অনেকের। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মাঝে। ফলে ভাষার এমন যাচ্ছেতাই চর্চা দূষণ ঘটাচ্ছে মূল বাংলা ভাষার।
ভাষার এমন বিকৃতিকে ‘খুবই দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলা ফন্ট সফটওয়্যারের জনক সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা হলেও আমরা রাষ্ট্রের সর্বত্র বাংলা প্রচলন করতে পারিনি। মাতৃভাষা রক্ষায় আমাদের রক্ত দিতে হয়েছে, তা তরুণ প্রজন্মের কাছে আমরা ঠিকমতো পৌঁছাতে পারিনি। পারলে এই অবস্থার সৃষ্টি হতো না। বর্তমানে সরকারি দপ্তরগুলোতে বাংলার প্রচলন কিছুটা থাকলেও বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বাংলার ‘ব’ও নেই। অথচ এ ভাষাকে ২০১০ সালে ইউনেসকো সবচেয়ে মধুর ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তারপরও যতই ষড়যন্ত্র হোক, বাংলা ভাষা তার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখবে এবং দিন দিন সমৃদ্ধ হবে।’
বর্তমান বিশ্বের প্রায় ৮০০ কোটি মানুষের মধ্যে বাংলা ভাষায় কথা বলে অন্তত ৩৫ কোটি মানুষ। মাতৃভাষার দিকে বাংলা ভাষা পঞ্চম। বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় এখন বাংলা ভাষার একচ্ছত্র আধিপত্য। এই ভাষার জন্য ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ হয়েছেন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার, শফিউরসহ নাম না জানা অনেক যুবক। সেই বাংলাদেশে ফেসবুকীয় অভিধানে এখন যুক্ত হয়েছে ‘জোস’, ‘অস্থির’, ‘চরম’, ‘কুল’, ‘অসাম’, ‘রকস’, ‘লোল’ এমন নানা শব্দ। ভার্চুয়াল জগৎ থেকে যেন ‘ছ’ নামের বর্ণটি হারাতে বসেছে। ‘বলছে’ হচ্ছে ‘বলসে’, ‘খাচ্ছে’ কে ‘খাইতাসে’, ‘আসছে’-কে ‘আইসে’, ‘যাচ্ছে’ কে ‘যাইতাসে’। এরপর রয়েছে শব্দের সংক্ষিপ্তকরণ করতে গিয়ে বিকৃতি। ‘মন চায়’ লেখা হয় ‘মুঞ্চায়’। পাত্তা না দিতে চাইলে মনের ভাব প্রকাশ করেন ‘বেইল নাই’, ‘গুনলাম না’ কিংবা ‘অফ যা’ শব্দগুলো দিয়ে। বাংলা ভাষার এ ধরনের বিকৃত উচ্চারণকে অনেকে স্মার্ট ভাবছে। এসব কোড বা সংক্ষিপ্ত ভাষা যদি কেউ না বোঝে, তাহলে সে অন্যদের কাছে হয় ‘ক্ষ্যাত’, না হয় ‘আঁতেল’।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলা ব্যাকরণ জানলে তো মানবে। ফেসবুকের মতো উন্মুক্ত জায়গায় যা খুশি তাই লেখা যাচ্ছে, আইনি কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। এ কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলা ভাষাকে কতটুকু গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা কেউ জানে! এসব দেখভালের দায়িত্ব রাষ্ট্রের-প্রশাসনের।’
প্রচুর বৈঠক, অধিবেশন ও গবেষণা করে জাতিসংঘ। এই রাষ্ট্র সংঘের অধীন প্রায় আড়াইশ সংস্থা প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করে। সারা বিশ্বে বিপুলসংখ্যক মানুষ এসব প্রতিবেদন তৈরির সঙ্গে যুক্ত থাকেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এসব প্রতিবেদনকে কেউ গুরুত্ব দেয় না বললেই চলে! প্রতিবেদনগুলো পড়ে খুব নগণ্য সংখ্য
৪১ মিনিট আগেজুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আজ রোববার থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ হবে। প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্যের পরই সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে।
২ ঘণ্টা আগেঅনিশ্চয়তা-সংশয় কাটিয়ে নির্ধারিত সময়েই ঘোষিত হচ্ছে জুলাই ঘোষণাপত্র। সরকারের পক্ষ থেকে গতকাল শনিবার জানানো হয়েছে, স্বৈরাচার পতনের বর্ষপূর্তির দিন ৫ আগস্ট মঙ্গলবার সব পক্ষের উপস্থিতিতেই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করা হবে।
৯ ঘণ্টা আগেঅটিজম একাডেমির জন্য দক্ষ জনবল তৈরির অংশ হিসেবে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে খরচ হয়েছে ২৮ কোটি টাকার বেশি। তবে অটিজম একাডেমি তৈরির অসমাপ্ত প্রকল্প সমাপ্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ অটিজম একাডেমি না করেই প্রকল্পটির ইতি টানতে চায় মন্ত্রণালয়।
৯ ঘণ্টা আগে