Ajker Patrika

আমাদের গালাগাল করা হলো, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ শুনলাম না: শিরীন হক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে শনিবার আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে শনিবার আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক বলেছেন, ‘যেদিন আমরা প্রতিবেদন জমা দিলাম, সেদিন ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, এই প্রতিবেদন নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক হবে, অনেক সমালোচনা হবে। আমরা সবটাকেই স্বাগত জানাই। কারণ আমরা মনে করি, তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়েই অনেক বিষয় নিষ্পত্তি হবে। কিন্তু দেখলাম, আমাদের গালাগাল করা হচ্ছে। সে সময় আমরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে কোনো রকমের প্রতিবাদ শুনলাম না।’

জাতীয় নারীশক্তির উদ্যোগে আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘নারীর কণ্ঠে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শিরীন হক বলেন, ‘গালাগাল আর তর্ক-বিতর্ক এক নয়। তর্ক-বিতর্ক গ্রহণযোগ্য; গালাগাল গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং সেটা একটা দুঃখের বিষয় ছিল। আরও দুঃখের বিষয় ছিল, সে সময় আমরা প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় থেকে কোনো রকমের আওয়াজ শুনলাম না। কোনো রকমের প্রতিবাদ শুনলাম না।’

এই নারী অধিকারকর্মী অভিযোগ করেন, জুলাই সনদের পুরো প্রক্রিয়া ‘নারীবর্জিত’ ছিল। তাই তিনি এবং তাঁর কমিশন এটি গ্রহণ করেন না।

শিরীন হক বলেন, ‘সেদিন (জুলাই সনদ সইয়ের দিন) দক্ষিণ প্লাজায় আমি উপস্থিত ছিলাম। তখনই আমি পোস্ট করেছি, আজ আবারও সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় পুরুষ শাসন কায়েম হলো। কোনো নারীর কথা নেই, কোনো নারীকে রাখা হয়নি, কোনো নারী সংগঠনকে ডাকা হয়নি। এটি শুধু আমাদের ব্যথিতই করেনি; গভীর উদ্বেগও সৃষ্টি করেছে। এ পরিস্থিতি আমাদের কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে আমার ভয় রয়েছে। তাই আপনারা যতই বাস্তবায়নের কথা ভাবুন, আমি এই সনদ গ্রহণ করি না। এ সনদের প্রতি আমার কোনো সম্মান নেই।’

জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের অবদান থাকলেও পরবর্তী সময়ে তাদের ‘বঞ্চিত করা হয়েছে’ বলেও অভিযোগ করেন নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা ও মানবাধিকারকর্মী শিরীন হক। তিনি বলেন, ‘যখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বললেন, “রাজাকারের বাচ্চা”, তখন রোকেয়া হলের মেয়েরা রাত ১২টায় গেট ভেঙে বেরিয়েছিল। মেয়েরা বেরোনোতেই কিন্তু আন্দোলন বেগ পেল। তারপর ছেলেরা বেরিয়েছিল। এই যে মেয়েগুলো বের হলো, গুটিকয়েক মেয়ে ছাড়া তাদেরকে পরে আর দেখলাম না। এই যে এত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, কোনো টেবিলে তো মেয়েরা নেই। পলিসি টেবিলে মেয়েরা নেই। একটার পর একটা অধ্যাদেশ পাস হচ্ছে—কয়টা মেয়ে সেখানে ইনভলভড? আমাদের দেশে তো অনেক নারী আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। আমরা না হয় বাদ গেলাম, তাঁরা তো থাকতে পারতেন। মাঝে মাঝে আমার মনে হয়, আমরা তিন পা এগিয়ে, চার পা পিছিয়ে গেলাম।’

আলোচনা সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা বলেন, রাজনীতির মূল পরিসরে বলা হয়—যোগ্য নারী প্রার্থী কোথায় পাব? যোগ্য নারী জনপ্রতিনিধি নাকি পাওয়া যায় না। ২০২৫ সালে এসেও রাজনীতির মেইনস্ট্রিমে রাজনীতিবিদেরা এ রকম কথা বলছেন।

সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিয়ে তাসনিম জারা বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের একটা প্রস্তাব ছিল, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের একটা প্রস্তাব ছিল। একটা প্রস্তাব ছিল যে, সংরক্ষিত আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত হবে এবং ১০০ আসনে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নারীরা সংসদে যাবে। পদ্ধতি দুইটা কমিশনের দুই রকম ছিল। সেটা জুলাই সনদে এভাবে আসেনি। কারণ রাজনীতিবিদেরা এ জায়গায় একমত হতে পারেননি। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। বিএনপি ২০০১ সালে তাদের ইশতেহারে বলেছিল, সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের কথা। ২০২৫ সালে এসে তারা বলছে, এটা সম্ভব নয়। ২০০১ সালে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া ছিল, তখন যদি সেটার বাস্তবতা থেকে থাকে, ’২৫ সালে তো আরও বেশি বাস্তবতা থাকার কথা।

সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির প্রধান তাসলিমা আখতার, এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এত শক্তি প্রদর্শন আপনাদের মানায় না—অন্তর্বর্তী সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি সালাহউদ্দিনের

মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ডাকাতির চেষ্টা ব্যর্থ, দোকানদার থেকে ২৫ সেকেন্ডে খেলেন ২০টি চড়

ফরিদপুরে বিএনপির সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যুবক, ভিডিও ভাইরাল

মাথায় হেলমেট নেই চালকের, এক লাখের স্কুটারে জরিমানা ২১ লাখ

চালু হলো টিটিপাড়া আন্ডারপাস

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ