Ajker Patrika

বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, যাত্রীরা অসহায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, যাত্রীরা অসহায়

সরকার বাস ও মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু নগরীতে চলাচলরত ৯৬ শতাংশ বাস-মিনিবাস অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সঙ্গে জড়িত। তারা সরকার নির্ধারিত ভাড়া বা সর্বনিম্ন ভাড়া কিছুই মানে না। নামমাত্র কিছু বাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা থাকলেও তা অনুসরণ করা হয় না। বিভিন্ন বাস কোম্পানির ভিন্ন ভিন্ন ভাড়ার তালিকা অনুসরণ করে ভাড়া আদায় করা হয় বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে যাত্রী অধিকার দিবস উপলক্ষে যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে আলোচনায় বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি এ অভিযোগ করে। বলা হয়, গাড়ির গায়ে সিটিং সার্ভিস লিখে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। অথচ এই সিটিং বাসে বাদুড়ঝোলা করে যাত্রীও বহন করা হচ্ছে। সিটিং বাসে দাঁড়িয়ে যাত্রী বহনের কারণে যাত্রী, চালক ও পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে মারামারির ঘটনাও ঘটছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যাত্রীদের কিছু করার থাকে না। তা ছাড়া, ঢাকা মহানগরীতে চলাচলরত ৮৭ শতাংশ বাস-মিনিবাস লক্কড়-ঝক্কড়।

বাসে ভাড়া কি বেশি রাখা হয়–জানতে চাইলে রিয়াজুল ইসলাম নামের এক যাত্রী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পল্টন থেকে বাড্ডার ভাড়া নেওয়া হয় ২৫-৩০ টাকা। এই রুটের বেশির ভাগ বাস সিটিং সার্ভিস নামে পরিচিত। সিটিং সার্ভিস মানে দাঁড়িয়ে কোনো যাত্রী থাকবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, সব সিটে যাত্রী থাকার পরও দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। তাহলে সেটা সিটিং সার্ভিস কীভাবে হয়?’

বাড়তি ভাড়ার অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শুভংকর ঘোষ রাকেশ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভাড়ার বিষয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির কোনো ধারণা নেই, মনগড়া একটা কথা বলে দেয়। আমরা বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দূরপাল্লার বাসে কম ভাড়া রাখি। সিটি বাসের ক্ষেত্রেও বেশি ভাড়া নেওয়া হয় না।’

আলোচনা সভায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘সড়কে যেমন নিরাপত্তা নেই, তেমনি সড়কে কী ধরনের নৈরাজ্য চলছে, সেটা আমরা সবাই জানি। অন্যান্য দেশের তুলনায় সড়কে মৃত্যু বেশি হয় বাংলাদেশে। লন্ডনের চেয়েও আমাদের রাস্তা অনেক প্রশস্ত; কিন্তু তারপরও আমাদের এখানে যানজট লেগে থাকছে অব্যবস্থাপনার কারণে। রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’

গোষ্ঠীস্বার্থের কাছে যাত্রীস্বার্থ জিম্মি হয়ে আছে উল্লেখ করে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যাত্রী অধিকারের জন্য ছয়টি বিষয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেগুলো মানতে হবে–ন্যায্য ভাড়া, চালক-হেলপার ও কাউন্টারে দুর্ব্যবহারের অবসান করতে হবে, নারী যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, বাসে ওঠানামায় শৃঙ্খলা আনতে হবে, পর্যাপ্ত সড়কবাতি ও যাত্রী ছাউনির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার সড়ক পরিবহন আইন করেছে। সেটার পূর্ণাঙ্গ কার্যকারিতা আমরা দেখতে পাই না। বরং কিছু ধারা আরও দুর্বল করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’

এখনো মানবিক পরিবহনব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়নি জানিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের কাছে এখনো জিম্মি যাত্রীরা। যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তাদের পক্ষ নেন পরিবহন মালিকেরা। ফলে যাত্রীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

মির্জা ফখরুলের কাছে অভিযোগ, ১৬ দিনের মাথায় ঠাকুরগাঁও থানার ওসি বদলি

এক ফ্যাসিস্ট নেত্রীর পাল্লায় পড়ে পুলিশ খারাপ হয়েছিল: এসপি

বিএনপি নেতা নাছিরের দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ দুই সৎভাইয়ের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত