বিবিসি বাংলায় সাক্ষাৎকার
ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায় সাত মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সংস্কার ও নির্বাচন, ছাত্র নেতৃত্বের নতুন দল গঠনসহ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়েও কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি প্রসঙ্গও।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর প্রথম চেষ্টা ছিল দেশের ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা। এরপর আস্তে আস্তে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করা। তাঁর প্রথম চিন্তাই ছিল সংস্কার।
তিনি বলেন, এর কারণ হলো, যে কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে, ফ্যাসিবাদী সরকার চলতে পেরেছে। ১৬ বছর ধরে চলতে পেরেছে, আমরা কিছুই করতে পারি নাই। তিন-তিনটা নির্বাচন হয়ে গেল, ভোটারের কোনো দেখা নাই। এই যে অসংখ্য রকমের দুর্নীতি এবং ব্যর্থতা, মিস রুল ইত্যাদি—সেখান থেকে আমরা কীভাবে টেনে বের করে আনব। টেনে বের করে আনতে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো করতে হবে।
সংস্কার প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার তো এখনো শুরু করিনি...। গত ছয় মাসে বহু পরিবর্তন এসেছে। যে ধ্বংসাবশেষ থেকে এসেছিলাম, তার নতুন চেহারা আসছে। ভেসে উঠছে যে আমরা অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটা তো পরিষ্কার—সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। এটা কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না যে আমি অমুক দেশের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। যে দেশেই বলুন, তারা আমাদের ওপর আস্থা স্থাপন করেছে। তারা বলছে, আমরা অতীতে যা করি নাই, তার চেয়ে বেশি করব এখন, যেহেতু আমরা দেখছি যে সুন্দরভাবে সরকার চলছে এখন। অবিশ্বাস্য রকমের সহায়তা দিয়েছে তারা।
ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা একটা অপরিচিত জগৎ, আমরা এসেছি। আমরা কোনো এক্সপার্ট এখানে এসে বসি নাই। আমরা এসেছি যার যার জগৎ থেকে, নিজের মতো করে চেষ্টা করছি কীভাবে করতে পারি। তার মধ্যে ভুলভ্রান্তি হতে পারে। কিছু ভালো করেছে, কিছু ভালো করতে পারেনি। এটা হতে পারে। এটা আমি তো অস্বীকার করছি না।’
এ পর্যন্ত আত্মতৃপ্তি পাওয়ার মতো কোনো কাজ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনোটাই ভালো হয়নি সে অর্থে। যত ইচ্ছা আমাদের—আমাদের ইচ্ছা তো অনেক। রাতারাতি দেশ পরিবর্তন করতে চাই। সেটা তো আমরা পারি নাই। সময় লাগবে। আমরা চেয়েছিলাম যে এখনই আমরা সংলাপটা শুরু করব। এটাও পারি নাই। সংলাপ শুরু হতে হতেও দেরি হয়ে যাচ্ছে। এগুলো আর কী। যেগুলো সময়মতো আমরা করতে চেয়েছি, ওই সময়ে করতে পারিনি।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অবনতিটা কোন পয়েন্ট থেকে হয়েছে? এটা বলতে হবে তো আমাকে। আপনি বলছেন, অবনতি হয়েছে। কোন রেফারেন্স পয়েন্ট থেকে অবনতিটা হয়েছে? সেটা না দিলে তো আমরা বুঝতে পারব না।’ তিনি দাবি করেন, ‘অপরাধের পরিমাণ মোটেই বাড়েনি। আগের মতোই রয়েছে।’
পুলিশ বাহিনীকে কার্যকর করতে সময় লেগেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চেষ্টা করছি আমরা। সমস্যা আপনিও জানেন, আমিও জানি। প্রথম দিকে সমস্যা ছিল যে পুলিশ বাহিনী যাকে দিয়ে আমরা কাজ করাচ্ছিলাম, তারা ভয়ে রাস্তায় নামছিল না। দুই দিন আগে তারা এদেরকে গুলি করেছে। কাজেই মানুষ দেখলেই সে ভয় পায়। কাজেই তাকে ঠিক করতে করতেই আমাদের কয়েক মাস চলে গেছে। এখন মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে। এখন আবার নিয়ম-শৃঙ্খলার দিকে আমরা রওনা হয়েছি। কাজ করতে থাকব।’
তবে প্রধান উপদেষ্টা স্বীকার করেন যে পুলিশকে এখনো সেভাবে সক্রিয় করা সম্ভব হয়নি। তবে অনেক উন্নতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক এবং জাতীয় ঐক্য প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার তো অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। কেউ আমাকে অসমর্থন করছে, এ রকম কোনো খবর তো আমি পাই নাই এখনো। সবাই সমর্থন করছে, সবাই চাচ্ছে যে সুন্দরভাবে দেশ চলুক, তাদের সবার মধ্যে ঐক্য আছে। রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে অনেক তফাত আছে। কিন্তু তার মানে এই নয়, ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরেছে। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে নাই।’
ছাত্রদের রাজনৈতিক দল ও গঠন তাদের কার্যক্রমে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ আসছে কিছু মহল থেকে, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার কোনো সহায়তা করে না। যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?’
‘সরকার হিসেবে আমাদের কোনো পজিশন নাই। রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ মোটেও সঠিক নয়’ বলেও জানিয়ে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
সেনাবাহিনীও সর্বাত্মকভাবে এই সরকারকে সহযোগিতা করছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
‘সবাই একসঙ্গে কাজ করতে না পারলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে বা বিপন্ন হতে পারে।’ সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা ওনার বক্তব্য উনি বলবেন। আমার ওনাকে এনডোর্স করা না করার তো বিষয় না।’
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না? সরকারপ্রধান হিসেবে কী মনে করেন? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা তো সব সময় থাকে। একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে এটাকে আনসেটেল করার জন্য। এটা তো সব সময় থ্রেট আছেই। প্রতিক্ষণেই আছে, প্রতি জায়গাতেই আছে। কাজেই এটা তো সব সময় থাকবে।’
হুমকিটা কি আপনি বলছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ থেকে আসছে? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘অবশ্যই। এটা তো অবভিয়াস। তারা মাঝে মাঝেই ঘোষণা করছে। বক্তৃতা দিচ্ছে। অ্যাড্রেস করছে। আপনি-আমরা সবাই শুনছি। মানুষ উত্তেজিত হচ্ছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একেবারে প্রত্যেকটা সুপারিশ দেব। সুপারিশের সঙ্গে কথা থাকবে যে আপনার রাজনৈতিক দল এটা কি সমর্থন করে? এটাতে রাজি আছেন? রাজি থাকলে বলেন, রাজি না থাকলে বলেন। বা এই যে সুপারিশটা আছে, সেটার মধ্যে যদি কোনো একটা সংশোধনী এনে রাজি হবেন, সেটা বলেন। এটা কি নির্বাচনের আগে সংশোধন করা ঠিক হবে নাকি নির্বাচনের পরে—সব প্রশ্নের এখানেই সমাবেশ আছে।
‘রাজনৈতিক দলকে শুধু বলতে হবে কোনটা? সবকিছু মেলালে আমরা এটা ঠিক করব কোন সুপারিশে সবাই একমত হয়েছে। সেটা আলাদা করব যে এটাতে সবাই একমত হয়েছে। এ রকম যে সমস্ত সুপারিশে তারা একমত হয়েছে, সেগুলো আমরা আলাদা একটা কাগজে নিয়ে আসব যে এই সব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। তবে এটাকে আমরা বলব একটা চার্টার–জুলাই চার্টার।
‘সবাইকে আহ্বান জানাব, আপনারা সবাই যেহেতু একমত হয়েছেন এটাতে সই করে দেন। জুলাই চার্টারের মতোই আমরা চলব। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচনটা হবে। নির্বাচনের আগে যেটা বলেছেন সেটা নির্বাচনের আগে হবে, যেটা নির্বাচনের পরে বলেছেন, সেটা নির্বাচনের পরে হবে। এটা আপনাদের বিষয়। কিন্তু আপনারা একমত হয়েছেন। সেই ঐকমত্যই আমরা গঠন করার চেষ্টা করছি।’
নির্বাচনটা এ বছরের মধ্যেই হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো সেটা ঘোষণা করে দিয়েছি। আবার নতুন করে বলার তো কিছু নাই।’
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘(সম্পর্ক) খুবই ভালো। আমাদের সম্পর্কের কোনো অবনতি হয় নাই। আমি যেভাবে ব্যাখ্যা করে এসেছি, আমাদের সম্পর্ক সব সময় ভালো থাকবে। এখনো ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই। আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আমাদের পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা এত বেশি এবং ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে আমাদের এত ক্লোজ সম্পর্ক, সেটা থেকে আমরা বিচ্যুত হতে পারব না। তবে মাঝখানে কিছু কিছু দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, আমি বলেছি মেঘ দেখা দিয়েছে। এই মেঘগুলো মোটামুটি এসেছে অপপ্রচার থেকে। অপপ্রচারের সূত্র কারা, সেটা অন্যরা বিচার করবে। কিন্তু এই অপপ্রচারের ফলে আমাদের সঙ্গে একটা ভুল-বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। সেই ভুল-বোঝাবুঝি থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি।’ ভারত সরকারের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ইলন মাস্কের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলাপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা মূলত ছিল স্টারলিংক নিয়ে। এটা ব্যবসায়িক একটা সম্পর্কের বিষয় ছিল। সে বিষয়ে আমরা আলাপ করছি যে স্টারলিংকের কানেকশনটা আমরা নিতে চাই।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি অত ডিটেইলসে যাচ্ছি না। আমার বরাবরই পজিশন হলো যে আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। আমাদের এই দেশের ওপরে সমান অধিকার। আমরা সব ভাই ভাই। আমাদের এই দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। কাজেই যে মত-দল করবে, তার মতো করে, সবকিছু করবে। এই দেশ থেকে কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো উপায় নাই। কিন্তু যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিত, তার বিচার হতে হবে। এটুকুই শুধু।’
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার যোগাযোগ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘যখনই প্রয়োজন হয়। শুধু শুধু তো গিয়ে ওনার সময় নষ্ট করার দরকার নাই। যখনই দরকার হয়, আমি তো তাঁর কাছে যাই।’
সবশেষ রাজনীতি করার কোনো আকাঙ্ক্ষা আছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘প্রথম কথা, আমি রাজনৈতিক দল গঠন করি নাই। গঠন করার কথা বলেছিলাম। এবং দশ সপ্তাহ যাবৎ এই কথা জারি ছিল। দশ সপ্তাহ পর আমি বলেছি—না, আমি রাজনীতিতে যাব না। আমি বলেছি যে পলিটিকস ইজ নট মাই কাপ অব টি। এবং ওটা ওখানেই সমাপ্ত। এরপর আমাকে রাজনীতির কাছে কেউ টানতে পারেনি। সবাই চেষ্টা করেছে দেশের নেতৃত্ব নেন, আপনি প্রধানমন্ত্রী হন। সবাই চেষ্টা করেছে। আমি ওটা চাই নাই। আমি বলেছি, ওই চ্যাপটার শেষ। এই দশ সপ্তাহ-দ্যাটস এনাফ। কাজেই ওইভাবেই আছি এখন। এখানে আমি রাজনীতিতে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। রাজনীতি করিও না।’
ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায় সাত মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সংস্কার ও নির্বাচন, ছাত্র নেতৃত্বের নতুন দল গঠনসহ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়েও কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি প্রসঙ্গও।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর প্রথম চেষ্টা ছিল দেশের ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা। এরপর আস্তে আস্তে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করা। তাঁর প্রথম চিন্তাই ছিল সংস্কার।
তিনি বলেন, এর কারণ হলো, যে কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে, ফ্যাসিবাদী সরকার চলতে পেরেছে। ১৬ বছর ধরে চলতে পেরেছে, আমরা কিছুই করতে পারি নাই। তিন-তিনটা নির্বাচন হয়ে গেল, ভোটারের কোনো দেখা নাই। এই যে অসংখ্য রকমের দুর্নীতি এবং ব্যর্থতা, মিস রুল ইত্যাদি—সেখান থেকে আমরা কীভাবে টেনে বের করে আনব। টেনে বের করে আনতে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো করতে হবে।
সংস্কার প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার তো এখনো শুরু করিনি...। গত ছয় মাসে বহু পরিবর্তন এসেছে। যে ধ্বংসাবশেষ থেকে এসেছিলাম, তার নতুন চেহারা আসছে। ভেসে উঠছে যে আমরা অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটা তো পরিষ্কার—সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। এটা কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না যে আমি অমুক দেশের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। যে দেশেই বলুন, তারা আমাদের ওপর আস্থা স্থাপন করেছে। তারা বলছে, আমরা অতীতে যা করি নাই, তার চেয়ে বেশি করব এখন, যেহেতু আমরা দেখছি যে সুন্দরভাবে সরকার চলছে এখন। অবিশ্বাস্য রকমের সহায়তা দিয়েছে তারা।
ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা একটা অপরিচিত জগৎ, আমরা এসেছি। আমরা কোনো এক্সপার্ট এখানে এসে বসি নাই। আমরা এসেছি যার যার জগৎ থেকে, নিজের মতো করে চেষ্টা করছি কীভাবে করতে পারি। তার মধ্যে ভুলভ্রান্তি হতে পারে। কিছু ভালো করেছে, কিছু ভালো করতে পারেনি। এটা হতে পারে। এটা আমি তো অস্বীকার করছি না।’
এ পর্যন্ত আত্মতৃপ্তি পাওয়ার মতো কোনো কাজ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনোটাই ভালো হয়নি সে অর্থে। যত ইচ্ছা আমাদের—আমাদের ইচ্ছা তো অনেক। রাতারাতি দেশ পরিবর্তন করতে চাই। সেটা তো আমরা পারি নাই। সময় লাগবে। আমরা চেয়েছিলাম যে এখনই আমরা সংলাপটা শুরু করব। এটাও পারি নাই। সংলাপ শুরু হতে হতেও দেরি হয়ে যাচ্ছে। এগুলো আর কী। যেগুলো সময়মতো আমরা করতে চেয়েছি, ওই সময়ে করতে পারিনি।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অবনতিটা কোন পয়েন্ট থেকে হয়েছে? এটা বলতে হবে তো আমাকে। আপনি বলছেন, অবনতি হয়েছে। কোন রেফারেন্স পয়েন্ট থেকে অবনতিটা হয়েছে? সেটা না দিলে তো আমরা বুঝতে পারব না।’ তিনি দাবি করেন, ‘অপরাধের পরিমাণ মোটেই বাড়েনি। আগের মতোই রয়েছে।’
পুলিশ বাহিনীকে কার্যকর করতে সময় লেগেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চেষ্টা করছি আমরা। সমস্যা আপনিও জানেন, আমিও জানি। প্রথম দিকে সমস্যা ছিল যে পুলিশ বাহিনী যাকে দিয়ে আমরা কাজ করাচ্ছিলাম, তারা ভয়ে রাস্তায় নামছিল না। দুই দিন আগে তারা এদেরকে গুলি করেছে। কাজেই মানুষ দেখলেই সে ভয় পায়। কাজেই তাকে ঠিক করতে করতেই আমাদের কয়েক মাস চলে গেছে। এখন মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে। এখন আবার নিয়ম-শৃঙ্খলার দিকে আমরা রওনা হয়েছি। কাজ করতে থাকব।’
তবে প্রধান উপদেষ্টা স্বীকার করেন যে পুলিশকে এখনো সেভাবে সক্রিয় করা সম্ভব হয়নি। তবে অনেক উন্নতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক এবং জাতীয় ঐক্য প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার তো অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। কেউ আমাকে অসমর্থন করছে, এ রকম কোনো খবর তো আমি পাই নাই এখনো। সবাই সমর্থন করছে, সবাই চাচ্ছে যে সুন্দরভাবে দেশ চলুক, তাদের সবার মধ্যে ঐক্য আছে। রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে অনেক তফাত আছে। কিন্তু তার মানে এই নয়, ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরেছে। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে নাই।’
ছাত্রদের রাজনৈতিক দল ও গঠন তাদের কার্যক্রমে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ আসছে কিছু মহল থেকে, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার কোনো সহায়তা করে না। যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?’
‘সরকার হিসেবে আমাদের কোনো পজিশন নাই। রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ মোটেও সঠিক নয়’ বলেও জানিয়ে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
সেনাবাহিনীও সর্বাত্মকভাবে এই সরকারকে সহযোগিতা করছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
‘সবাই একসঙ্গে কাজ করতে না পারলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে বা বিপন্ন হতে পারে।’ সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা ওনার বক্তব্য উনি বলবেন। আমার ওনাকে এনডোর্স করা না করার তো বিষয় না।’
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না? সরকারপ্রধান হিসেবে কী মনে করেন? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা তো সব সময় থাকে। একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে এটাকে আনসেটেল করার জন্য। এটা তো সব সময় থ্রেট আছেই। প্রতিক্ষণেই আছে, প্রতি জায়গাতেই আছে। কাজেই এটা তো সব সময় থাকবে।’
হুমকিটা কি আপনি বলছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ থেকে আসছে? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘অবশ্যই। এটা তো অবভিয়াস। তারা মাঝে মাঝেই ঘোষণা করছে। বক্তৃতা দিচ্ছে। অ্যাড্রেস করছে। আপনি-আমরা সবাই শুনছি। মানুষ উত্তেজিত হচ্ছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একেবারে প্রত্যেকটা সুপারিশ দেব। সুপারিশের সঙ্গে কথা থাকবে যে আপনার রাজনৈতিক দল এটা কি সমর্থন করে? এটাতে রাজি আছেন? রাজি থাকলে বলেন, রাজি না থাকলে বলেন। বা এই যে সুপারিশটা আছে, সেটার মধ্যে যদি কোনো একটা সংশোধনী এনে রাজি হবেন, সেটা বলেন। এটা কি নির্বাচনের আগে সংশোধন করা ঠিক হবে নাকি নির্বাচনের পরে—সব প্রশ্নের এখানেই সমাবেশ আছে।
‘রাজনৈতিক দলকে শুধু বলতে হবে কোনটা? সবকিছু মেলালে আমরা এটা ঠিক করব কোন সুপারিশে সবাই একমত হয়েছে। সেটা আলাদা করব যে এটাতে সবাই একমত হয়েছে। এ রকম যে সমস্ত সুপারিশে তারা একমত হয়েছে, সেগুলো আমরা আলাদা একটা কাগজে নিয়ে আসব যে এই সব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। তবে এটাকে আমরা বলব একটা চার্টার–জুলাই চার্টার।
‘সবাইকে আহ্বান জানাব, আপনারা সবাই যেহেতু একমত হয়েছেন এটাতে সই করে দেন। জুলাই চার্টারের মতোই আমরা চলব। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচনটা হবে। নির্বাচনের আগে যেটা বলেছেন সেটা নির্বাচনের আগে হবে, যেটা নির্বাচনের পরে বলেছেন, সেটা নির্বাচনের পরে হবে। এটা আপনাদের বিষয়। কিন্তু আপনারা একমত হয়েছেন। সেই ঐকমত্যই আমরা গঠন করার চেষ্টা করছি।’
নির্বাচনটা এ বছরের মধ্যেই হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো সেটা ঘোষণা করে দিয়েছি। আবার নতুন করে বলার তো কিছু নাই।’
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘(সম্পর্ক) খুবই ভালো। আমাদের সম্পর্কের কোনো অবনতি হয় নাই। আমি যেভাবে ব্যাখ্যা করে এসেছি, আমাদের সম্পর্ক সব সময় ভালো থাকবে। এখনো ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই। আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আমাদের পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা এত বেশি এবং ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে আমাদের এত ক্লোজ সম্পর্ক, সেটা থেকে আমরা বিচ্যুত হতে পারব না। তবে মাঝখানে কিছু কিছু দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, আমি বলেছি মেঘ দেখা দিয়েছে। এই মেঘগুলো মোটামুটি এসেছে অপপ্রচার থেকে। অপপ্রচারের সূত্র কারা, সেটা অন্যরা বিচার করবে। কিন্তু এই অপপ্রচারের ফলে আমাদের সঙ্গে একটা ভুল-বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। সেই ভুল-বোঝাবুঝি থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি।’ ভারত সরকারের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ইলন মাস্কের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলাপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা মূলত ছিল স্টারলিংক নিয়ে। এটা ব্যবসায়িক একটা সম্পর্কের বিষয় ছিল। সে বিষয়ে আমরা আলাপ করছি যে স্টারলিংকের কানেকশনটা আমরা নিতে চাই।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি অত ডিটেইলসে যাচ্ছি না। আমার বরাবরই পজিশন হলো যে আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। আমাদের এই দেশের ওপরে সমান অধিকার। আমরা সব ভাই ভাই। আমাদের এই দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। কাজেই যে মত-দল করবে, তার মতো করে, সবকিছু করবে। এই দেশ থেকে কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো উপায় নাই। কিন্তু যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিত, তার বিচার হতে হবে। এটুকুই শুধু।’
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার যোগাযোগ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘যখনই প্রয়োজন হয়। শুধু শুধু তো গিয়ে ওনার সময় নষ্ট করার দরকার নাই। যখনই দরকার হয়, আমি তো তাঁর কাছে যাই।’
সবশেষ রাজনীতি করার কোনো আকাঙ্ক্ষা আছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘প্রথম কথা, আমি রাজনৈতিক দল গঠন করি নাই। গঠন করার কথা বলেছিলাম। এবং দশ সপ্তাহ যাবৎ এই কথা জারি ছিল। দশ সপ্তাহ পর আমি বলেছি—না, আমি রাজনীতিতে যাব না। আমি বলেছি যে পলিটিকস ইজ নট মাই কাপ অব টি। এবং ওটা ওখানেই সমাপ্ত। এরপর আমাকে রাজনীতির কাছে কেউ টানতে পারেনি। সবাই চেষ্টা করেছে দেশের নেতৃত্ব নেন, আপনি প্রধানমন্ত্রী হন। সবাই চেষ্টা করেছে। আমি ওটা চাই নাই। আমি বলেছি, ওই চ্যাপটার শেষ। এই দশ সপ্তাহ-দ্যাটস এনাফ। কাজেই ওইভাবেই আছি এখন। এখানে আমি রাজনীতিতে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। রাজনীতি করিও না।’
বিবিসি বাংলায় সাক্ষাৎকার
ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায় সাত মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সংস্কার ও নির্বাচন, ছাত্র নেতৃত্বের নতুন দল গঠনসহ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়েও কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি প্রসঙ্গও।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর প্রথম চেষ্টা ছিল দেশের ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা। এরপর আস্তে আস্তে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করা। তাঁর প্রথম চিন্তাই ছিল সংস্কার।
তিনি বলেন, এর কারণ হলো, যে কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে, ফ্যাসিবাদী সরকার চলতে পেরেছে। ১৬ বছর ধরে চলতে পেরেছে, আমরা কিছুই করতে পারি নাই। তিন-তিনটা নির্বাচন হয়ে গেল, ভোটারের কোনো দেখা নাই। এই যে অসংখ্য রকমের দুর্নীতি এবং ব্যর্থতা, মিস রুল ইত্যাদি—সেখান থেকে আমরা কীভাবে টেনে বের করে আনব। টেনে বের করে আনতে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো করতে হবে।
সংস্কার প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার তো এখনো শুরু করিনি...। গত ছয় মাসে বহু পরিবর্তন এসেছে। যে ধ্বংসাবশেষ থেকে এসেছিলাম, তার নতুন চেহারা আসছে। ভেসে উঠছে যে আমরা অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটা তো পরিষ্কার—সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। এটা কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না যে আমি অমুক দেশের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। যে দেশেই বলুন, তারা আমাদের ওপর আস্থা স্থাপন করেছে। তারা বলছে, আমরা অতীতে যা করি নাই, তার চেয়ে বেশি করব এখন, যেহেতু আমরা দেখছি যে সুন্দরভাবে সরকার চলছে এখন। অবিশ্বাস্য রকমের সহায়তা দিয়েছে তারা।
ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা একটা অপরিচিত জগৎ, আমরা এসেছি। আমরা কোনো এক্সপার্ট এখানে এসে বসি নাই। আমরা এসেছি যার যার জগৎ থেকে, নিজের মতো করে চেষ্টা করছি কীভাবে করতে পারি। তার মধ্যে ভুলভ্রান্তি হতে পারে। কিছু ভালো করেছে, কিছু ভালো করতে পারেনি। এটা হতে পারে। এটা আমি তো অস্বীকার করছি না।’
এ পর্যন্ত আত্মতৃপ্তি পাওয়ার মতো কোনো কাজ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনোটাই ভালো হয়নি সে অর্থে। যত ইচ্ছা আমাদের—আমাদের ইচ্ছা তো অনেক। রাতারাতি দেশ পরিবর্তন করতে চাই। সেটা তো আমরা পারি নাই। সময় লাগবে। আমরা চেয়েছিলাম যে এখনই আমরা সংলাপটা শুরু করব। এটাও পারি নাই। সংলাপ শুরু হতে হতেও দেরি হয়ে যাচ্ছে। এগুলো আর কী। যেগুলো সময়মতো আমরা করতে চেয়েছি, ওই সময়ে করতে পারিনি।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অবনতিটা কোন পয়েন্ট থেকে হয়েছে? এটা বলতে হবে তো আমাকে। আপনি বলছেন, অবনতি হয়েছে। কোন রেফারেন্স পয়েন্ট থেকে অবনতিটা হয়েছে? সেটা না দিলে তো আমরা বুঝতে পারব না।’ তিনি দাবি করেন, ‘অপরাধের পরিমাণ মোটেই বাড়েনি। আগের মতোই রয়েছে।’
পুলিশ বাহিনীকে কার্যকর করতে সময় লেগেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চেষ্টা করছি আমরা। সমস্যা আপনিও জানেন, আমিও জানি। প্রথম দিকে সমস্যা ছিল যে পুলিশ বাহিনী যাকে দিয়ে আমরা কাজ করাচ্ছিলাম, তারা ভয়ে রাস্তায় নামছিল না। দুই দিন আগে তারা এদেরকে গুলি করেছে। কাজেই মানুষ দেখলেই সে ভয় পায়। কাজেই তাকে ঠিক করতে করতেই আমাদের কয়েক মাস চলে গেছে। এখন মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে। এখন আবার নিয়ম-শৃঙ্খলার দিকে আমরা রওনা হয়েছি। কাজ করতে থাকব।’
তবে প্রধান উপদেষ্টা স্বীকার করেন যে পুলিশকে এখনো সেভাবে সক্রিয় করা সম্ভব হয়নি। তবে অনেক উন্নতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক এবং জাতীয় ঐক্য প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার তো অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। কেউ আমাকে অসমর্থন করছে, এ রকম কোনো খবর তো আমি পাই নাই এখনো। সবাই সমর্থন করছে, সবাই চাচ্ছে যে সুন্দরভাবে দেশ চলুক, তাদের সবার মধ্যে ঐক্য আছে। রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে অনেক তফাত আছে। কিন্তু তার মানে এই নয়, ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরেছে। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে নাই।’
ছাত্রদের রাজনৈতিক দল ও গঠন তাদের কার্যক্রমে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ আসছে কিছু মহল থেকে, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার কোনো সহায়তা করে না। যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?’
‘সরকার হিসেবে আমাদের কোনো পজিশন নাই। রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ মোটেও সঠিক নয়’ বলেও জানিয়ে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
সেনাবাহিনীও সর্বাত্মকভাবে এই সরকারকে সহযোগিতা করছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
‘সবাই একসঙ্গে কাজ করতে না পারলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে বা বিপন্ন হতে পারে।’ সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা ওনার বক্তব্য উনি বলবেন। আমার ওনাকে এনডোর্স করা না করার তো বিষয় না।’
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না? সরকারপ্রধান হিসেবে কী মনে করেন? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা তো সব সময় থাকে। একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে এটাকে আনসেটেল করার জন্য। এটা তো সব সময় থ্রেট আছেই। প্রতিক্ষণেই আছে, প্রতি জায়গাতেই আছে। কাজেই এটা তো সব সময় থাকবে।’
হুমকিটা কি আপনি বলছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ থেকে আসছে? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘অবশ্যই। এটা তো অবভিয়াস। তারা মাঝে মাঝেই ঘোষণা করছে। বক্তৃতা দিচ্ছে। অ্যাড্রেস করছে। আপনি-আমরা সবাই শুনছি। মানুষ উত্তেজিত হচ্ছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একেবারে প্রত্যেকটা সুপারিশ দেব। সুপারিশের সঙ্গে কথা থাকবে যে আপনার রাজনৈতিক দল এটা কি সমর্থন করে? এটাতে রাজি আছেন? রাজি থাকলে বলেন, রাজি না থাকলে বলেন। বা এই যে সুপারিশটা আছে, সেটার মধ্যে যদি কোনো একটা সংশোধনী এনে রাজি হবেন, সেটা বলেন। এটা কি নির্বাচনের আগে সংশোধন করা ঠিক হবে নাকি নির্বাচনের পরে—সব প্রশ্নের এখানেই সমাবেশ আছে।
‘রাজনৈতিক দলকে শুধু বলতে হবে কোনটা? সবকিছু মেলালে আমরা এটা ঠিক করব কোন সুপারিশে সবাই একমত হয়েছে। সেটা আলাদা করব যে এটাতে সবাই একমত হয়েছে। এ রকম যে সমস্ত সুপারিশে তারা একমত হয়েছে, সেগুলো আমরা আলাদা একটা কাগজে নিয়ে আসব যে এই সব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। তবে এটাকে আমরা বলব একটা চার্টার–জুলাই চার্টার।
‘সবাইকে আহ্বান জানাব, আপনারা সবাই যেহেতু একমত হয়েছেন এটাতে সই করে দেন। জুলাই চার্টারের মতোই আমরা চলব। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচনটা হবে। নির্বাচনের আগে যেটা বলেছেন সেটা নির্বাচনের আগে হবে, যেটা নির্বাচনের পরে বলেছেন, সেটা নির্বাচনের পরে হবে। এটা আপনাদের বিষয়। কিন্তু আপনারা একমত হয়েছেন। সেই ঐকমত্যই আমরা গঠন করার চেষ্টা করছি।’
নির্বাচনটা এ বছরের মধ্যেই হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো সেটা ঘোষণা করে দিয়েছি। আবার নতুন করে বলার তো কিছু নাই।’
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘(সম্পর্ক) খুবই ভালো। আমাদের সম্পর্কের কোনো অবনতি হয় নাই। আমি যেভাবে ব্যাখ্যা করে এসেছি, আমাদের সম্পর্ক সব সময় ভালো থাকবে। এখনো ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই। আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আমাদের পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা এত বেশি এবং ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে আমাদের এত ক্লোজ সম্পর্ক, সেটা থেকে আমরা বিচ্যুত হতে পারব না। তবে মাঝখানে কিছু কিছু দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, আমি বলেছি মেঘ দেখা দিয়েছে। এই মেঘগুলো মোটামুটি এসেছে অপপ্রচার থেকে। অপপ্রচারের সূত্র কারা, সেটা অন্যরা বিচার করবে। কিন্তু এই অপপ্রচারের ফলে আমাদের সঙ্গে একটা ভুল-বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। সেই ভুল-বোঝাবুঝি থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি।’ ভারত সরকারের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ইলন মাস্কের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলাপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা মূলত ছিল স্টারলিংক নিয়ে। এটা ব্যবসায়িক একটা সম্পর্কের বিষয় ছিল। সে বিষয়ে আমরা আলাপ করছি যে স্টারলিংকের কানেকশনটা আমরা নিতে চাই।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি অত ডিটেইলসে যাচ্ছি না। আমার বরাবরই পজিশন হলো যে আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। আমাদের এই দেশের ওপরে সমান অধিকার। আমরা সব ভাই ভাই। আমাদের এই দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। কাজেই যে মত-দল করবে, তার মতো করে, সবকিছু করবে। এই দেশ থেকে কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো উপায় নাই। কিন্তু যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিত, তার বিচার হতে হবে। এটুকুই শুধু।’
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার যোগাযোগ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘যখনই প্রয়োজন হয়। শুধু শুধু তো গিয়ে ওনার সময় নষ্ট করার দরকার নাই। যখনই দরকার হয়, আমি তো তাঁর কাছে যাই।’
সবশেষ রাজনীতি করার কোনো আকাঙ্ক্ষা আছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘প্রথম কথা, আমি রাজনৈতিক দল গঠন করি নাই। গঠন করার কথা বলেছিলাম। এবং দশ সপ্তাহ যাবৎ এই কথা জারি ছিল। দশ সপ্তাহ পর আমি বলেছি—না, আমি রাজনীতিতে যাব না। আমি বলেছি যে পলিটিকস ইজ নট মাই কাপ অব টি। এবং ওটা ওখানেই সমাপ্ত। এরপর আমাকে রাজনীতির কাছে কেউ টানতে পারেনি। সবাই চেষ্টা করেছে দেশের নেতৃত্ব নেন, আপনি প্রধানমন্ত্রী হন। সবাই চেষ্টা করেছে। আমি ওটা চাই নাই। আমি বলেছি, ওই চ্যাপটার শেষ। এই দশ সপ্তাহ-দ্যাটস এনাফ। কাজেই ওইভাবেই আছি এখন। এখানে আমি রাজনীতিতে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। রাজনীতি করিও না।’
ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায় সাত মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সংস্কার ও নির্বাচন, ছাত্র নেতৃত্বের নতুন দল গঠনসহ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়েও কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি প্রসঙ্গও।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর প্রথম চেষ্টা ছিল দেশের ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা। এরপর আস্তে আস্তে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করা। তাঁর প্রথম চিন্তাই ছিল সংস্কার।
তিনি বলেন, এর কারণ হলো, যে কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে, ফ্যাসিবাদী সরকার চলতে পেরেছে। ১৬ বছর ধরে চলতে পেরেছে, আমরা কিছুই করতে পারি নাই। তিন-তিনটা নির্বাচন হয়ে গেল, ভোটারের কোনো দেখা নাই। এই যে অসংখ্য রকমের দুর্নীতি এবং ব্যর্থতা, মিস রুল ইত্যাদি—সেখান থেকে আমরা কীভাবে টেনে বের করে আনব। টেনে বের করে আনতে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো করতে হবে।
সংস্কার প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার তো এখনো শুরু করিনি...। গত ছয় মাসে বহু পরিবর্তন এসেছে। যে ধ্বংসাবশেষ থেকে এসেছিলাম, তার নতুন চেহারা আসছে। ভেসে উঠছে যে আমরা অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটা তো পরিষ্কার—সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। এটা কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না যে আমি অমুক দেশের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। যে দেশেই বলুন, তারা আমাদের ওপর আস্থা স্থাপন করেছে। তারা বলছে, আমরা অতীতে যা করি নাই, তার চেয়ে বেশি করব এখন, যেহেতু আমরা দেখছি যে সুন্দরভাবে সরকার চলছে এখন। অবিশ্বাস্য রকমের সহায়তা দিয়েছে তারা।
ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা একটা অপরিচিত জগৎ, আমরা এসেছি। আমরা কোনো এক্সপার্ট এখানে এসে বসি নাই। আমরা এসেছি যার যার জগৎ থেকে, নিজের মতো করে চেষ্টা করছি কীভাবে করতে পারি। তার মধ্যে ভুলভ্রান্তি হতে পারে। কিছু ভালো করেছে, কিছু ভালো করতে পারেনি। এটা হতে পারে। এটা আমি তো অস্বীকার করছি না।’
এ পর্যন্ত আত্মতৃপ্তি পাওয়ার মতো কোনো কাজ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনোটাই ভালো হয়নি সে অর্থে। যত ইচ্ছা আমাদের—আমাদের ইচ্ছা তো অনেক। রাতারাতি দেশ পরিবর্তন করতে চাই। সেটা তো আমরা পারি নাই। সময় লাগবে। আমরা চেয়েছিলাম যে এখনই আমরা সংলাপটা শুরু করব। এটাও পারি নাই। সংলাপ শুরু হতে হতেও দেরি হয়ে যাচ্ছে। এগুলো আর কী। যেগুলো সময়মতো আমরা করতে চেয়েছি, ওই সময়ে করতে পারিনি।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অবনতিটা কোন পয়েন্ট থেকে হয়েছে? এটা বলতে হবে তো আমাকে। আপনি বলছেন, অবনতি হয়েছে। কোন রেফারেন্স পয়েন্ট থেকে অবনতিটা হয়েছে? সেটা না দিলে তো আমরা বুঝতে পারব না।’ তিনি দাবি করেন, ‘অপরাধের পরিমাণ মোটেই বাড়েনি। আগের মতোই রয়েছে।’
পুলিশ বাহিনীকে কার্যকর করতে সময় লেগেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চেষ্টা করছি আমরা। সমস্যা আপনিও জানেন, আমিও জানি। প্রথম দিকে সমস্যা ছিল যে পুলিশ বাহিনী যাকে দিয়ে আমরা কাজ করাচ্ছিলাম, তারা ভয়ে রাস্তায় নামছিল না। দুই দিন আগে তারা এদেরকে গুলি করেছে। কাজেই মানুষ দেখলেই সে ভয় পায়। কাজেই তাকে ঠিক করতে করতেই আমাদের কয়েক মাস চলে গেছে। এখন মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে। এখন আবার নিয়ম-শৃঙ্খলার দিকে আমরা রওনা হয়েছি। কাজ করতে থাকব।’
তবে প্রধান উপদেষ্টা স্বীকার করেন যে পুলিশকে এখনো সেভাবে সক্রিয় করা সম্ভব হয়নি। তবে অনেক উন্নতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক এবং জাতীয় ঐক্য প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার তো অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। কেউ আমাকে অসমর্থন করছে, এ রকম কোনো খবর তো আমি পাই নাই এখনো। সবাই সমর্থন করছে, সবাই চাচ্ছে যে সুন্দরভাবে দেশ চলুক, তাদের সবার মধ্যে ঐক্য আছে। রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে অনেক তফাত আছে। কিন্তু তার মানে এই নয়, ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরেছে। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে নাই।’
ছাত্রদের রাজনৈতিক দল ও গঠন তাদের কার্যক্রমে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ আসছে কিছু মহল থেকে, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার কোনো সহায়তা করে না। যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?’
‘সরকার হিসেবে আমাদের কোনো পজিশন নাই। রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ মোটেও সঠিক নয়’ বলেও জানিয়ে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
সেনাবাহিনীও সর্বাত্মকভাবে এই সরকারকে সহযোগিতা করছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
‘সবাই একসঙ্গে কাজ করতে না পারলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে বা বিপন্ন হতে পারে।’ সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা ওনার বক্তব্য উনি বলবেন। আমার ওনাকে এনডোর্স করা না করার তো বিষয় না।’
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না? সরকারপ্রধান হিসেবে কী মনে করেন? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা তো সব সময় থাকে। একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে এটাকে আনসেটেল করার জন্য। এটা তো সব সময় থ্রেট আছেই। প্রতিক্ষণেই আছে, প্রতি জায়গাতেই আছে। কাজেই এটা তো সব সময় থাকবে।’
হুমকিটা কি আপনি বলছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ থেকে আসছে? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘অবশ্যই। এটা তো অবভিয়াস। তারা মাঝে মাঝেই ঘোষণা করছে। বক্তৃতা দিচ্ছে। অ্যাড্রেস করছে। আপনি-আমরা সবাই শুনছি। মানুষ উত্তেজিত হচ্ছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একেবারে প্রত্যেকটা সুপারিশ দেব। সুপারিশের সঙ্গে কথা থাকবে যে আপনার রাজনৈতিক দল এটা কি সমর্থন করে? এটাতে রাজি আছেন? রাজি থাকলে বলেন, রাজি না থাকলে বলেন। বা এই যে সুপারিশটা আছে, সেটার মধ্যে যদি কোনো একটা সংশোধনী এনে রাজি হবেন, সেটা বলেন। এটা কি নির্বাচনের আগে সংশোধন করা ঠিক হবে নাকি নির্বাচনের পরে—সব প্রশ্নের এখানেই সমাবেশ আছে।
‘রাজনৈতিক দলকে শুধু বলতে হবে কোনটা? সবকিছু মেলালে আমরা এটা ঠিক করব কোন সুপারিশে সবাই একমত হয়েছে। সেটা আলাদা করব যে এটাতে সবাই একমত হয়েছে। এ রকম যে সমস্ত সুপারিশে তারা একমত হয়েছে, সেগুলো আমরা আলাদা একটা কাগজে নিয়ে আসব যে এই সব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। তবে এটাকে আমরা বলব একটা চার্টার–জুলাই চার্টার।
‘সবাইকে আহ্বান জানাব, আপনারা সবাই যেহেতু একমত হয়েছেন এটাতে সই করে দেন। জুলাই চার্টারের মতোই আমরা চলব। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচনটা হবে। নির্বাচনের আগে যেটা বলেছেন সেটা নির্বাচনের আগে হবে, যেটা নির্বাচনের পরে বলেছেন, সেটা নির্বাচনের পরে হবে। এটা আপনাদের বিষয়। কিন্তু আপনারা একমত হয়েছেন। সেই ঐকমত্যই আমরা গঠন করার চেষ্টা করছি।’
নির্বাচনটা এ বছরের মধ্যেই হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো সেটা ঘোষণা করে দিয়েছি। আবার নতুন করে বলার তো কিছু নাই।’
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘(সম্পর্ক) খুবই ভালো। আমাদের সম্পর্কের কোনো অবনতি হয় নাই। আমি যেভাবে ব্যাখ্যা করে এসেছি, আমাদের সম্পর্ক সব সময় ভালো থাকবে। এখনো ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই। আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আমাদের পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা এত বেশি এবং ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে আমাদের এত ক্লোজ সম্পর্ক, সেটা থেকে আমরা বিচ্যুত হতে পারব না। তবে মাঝখানে কিছু কিছু দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, আমি বলেছি মেঘ দেখা দিয়েছে। এই মেঘগুলো মোটামুটি এসেছে অপপ্রচার থেকে। অপপ্রচারের সূত্র কারা, সেটা অন্যরা বিচার করবে। কিন্তু এই অপপ্রচারের ফলে আমাদের সঙ্গে একটা ভুল-বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। সেই ভুল-বোঝাবুঝি থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি।’ ভারত সরকারের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ইলন মাস্কের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলাপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা মূলত ছিল স্টারলিংক নিয়ে। এটা ব্যবসায়িক একটা সম্পর্কের বিষয় ছিল। সে বিষয়ে আমরা আলাপ করছি যে স্টারলিংকের কানেকশনটা আমরা নিতে চাই।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি অত ডিটেইলসে যাচ্ছি না। আমার বরাবরই পজিশন হলো যে আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। আমাদের এই দেশের ওপরে সমান অধিকার। আমরা সব ভাই ভাই। আমাদের এই দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। কাজেই যে মত-দল করবে, তার মতো করে, সবকিছু করবে। এই দেশ থেকে কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো উপায় নাই। কিন্তু যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিত, তার বিচার হতে হবে। এটুকুই শুধু।’
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার যোগাযোগ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘যখনই প্রয়োজন হয়। শুধু শুধু তো গিয়ে ওনার সময় নষ্ট করার দরকার নাই। যখনই দরকার হয়, আমি তো তাঁর কাছে যাই।’
সবশেষ রাজনীতি করার কোনো আকাঙ্ক্ষা আছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘প্রথম কথা, আমি রাজনৈতিক দল গঠন করি নাই। গঠন করার কথা বলেছিলাম। এবং দশ সপ্তাহ যাবৎ এই কথা জারি ছিল। দশ সপ্তাহ পর আমি বলেছি—না, আমি রাজনীতিতে যাব না। আমি বলেছি যে পলিটিকস ইজ নট মাই কাপ অব টি। এবং ওটা ওখানেই সমাপ্ত। এরপর আমাকে রাজনীতির কাছে কেউ টানতে পারেনি। সবাই চেষ্টা করেছে দেশের নেতৃত্ব নেন, আপনি প্রধানমন্ত্রী হন। সবাই চেষ্টা করেছে। আমি ওটা চাই নাই। আমি বলেছি, ওই চ্যাপটার শেষ। এই দশ সপ্তাহ-দ্যাটস এনাফ। কাজেই ওইভাবেই আছি এখন। এখানে আমি রাজনীতিতে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। রাজনীতি করিও না।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
১ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন।
২ ঘণ্টা আগেভারতীয় ঋণচুক্তির আওতায় আলোচিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে শুধু একটি বাতিল করা হয়েছে এবং বাকিগুলির কোনটির কী অবস্থা তা বিস্তারিত জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপদেষ্টা ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিলের তালিকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।
২ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আগামীকাল বুধবার বৈঠক করবে জামায়াতে ইসলামী। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে বলে বিএনপিকে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে যোগ্য কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।
নির্বাচনে সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিএনপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার সময় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকে শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনে যা কিছু প্রয়োজন, তা করা হবে বলে বিএনপি নেতাদের আশ্বস্ত করেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির নেতারা বলেন, বিতর্কিত কোনো কর্মকর্তা, বিশেষ করে, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ শাসনামলে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন—এমন কর্মকর্তাদের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন থেকে নিবৃত্ত রাখতে হবে।
নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদলে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার আহ্বানের পাশাপাশি পুলিশের নিয়োগ ও বদলিপ্রক্রিয়া নিয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন নেতারা।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা। নির্বাচন একটি মহা আয়োজন। এখানে যিনি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্ষম, সেই ব্যক্তিকেই আমরা বেছে নেব। এটি আমার তত্ত্বাবধানে থাকবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা তা করব।’
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ত করায় এবং ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সফলভাবে আয়োজন করতে পারায় সরকারকে অভিনন্দন জানায় বিএনপি।
এর পাশাপাশি সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থাপনায় একাধিক অগ্নিকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। এসব ঘটনা অন্তর্ঘাতমূলক কি না, এ বিষয়ে অনুসন্ধানেরও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ। সরকারের পক্ষ থেকে ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে বলে বিএনপিকে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে যোগ্য কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।
নির্বাচনে সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিএনপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার সময় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকে শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনে যা কিছু প্রয়োজন, তা করা হবে বলে বিএনপি নেতাদের আশ্বস্ত করেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির নেতারা বলেন, বিতর্কিত কোনো কর্মকর্তা, বিশেষ করে, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ শাসনামলে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন—এমন কর্মকর্তাদের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন থেকে নিবৃত্ত রাখতে হবে।
নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদলে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার আহ্বানের পাশাপাশি পুলিশের নিয়োগ ও বদলিপ্রক্রিয়া নিয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন নেতারা।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা। নির্বাচন একটি মহা আয়োজন। এখানে যিনি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্ষম, সেই ব্যক্তিকেই আমরা বেছে নেব। এটি আমার তত্ত্বাবধানে থাকবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা তা করব।’
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ত করায় এবং ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সফলভাবে আয়োজন করতে পারায় সরকারকে অভিনন্দন জানায় বিএনপি।
এর পাশাপাশি সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থাপনায় একাধিক অগ্নিকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। এসব ঘটনা অন্তর্ঘাতমূলক কি না, এ বিষয়ে অনুসন্ধানেরও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ। সরকারের পক্ষ থেকে ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।...
০৩ মার্চ ২০২৫জুলাই অভ্যুত্থানে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন।
২ ঘণ্টা আগেভারতীয় ঋণচুক্তির আওতায় আলোচিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে শুধু একটি বাতিল করা হয়েছে এবং বাকিগুলির কোনটির কী অবস্থা তা বিস্তারিত জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপদেষ্টা ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিলের তালিকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।
২ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আগামীকাল বুধবার বৈঠক করবে জামায়াতে ইসলামী। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জুলাই অভ্যুত্থানে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দেননি। কল রেকর্ড অন্য কাউকে দিয়ে ক্রস চেক করালে ভালো হতো।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছে। এই মামলার অপর আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন।
যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা আন্দোলন প্রতিহত করতে বলেছেন। ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দেননি। ডিএমপি কমিশনারকে ওয়্যারলেস বার্তায় বলতে শোনা গেছে, পরিস্থিতি তৈরি হলে হাঁটু গেড়ে বসে গুলি করতে। যদি কোনো পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে গুলি করে হত্যা করে থাকেন, তাহলে সে দায় তাঁর ব্যক্তিগত। কারোর ব্যক্তিগত দায় শেখ হাসিনা নেবেন না। ড্রোন ব্যবহার করে হত্যা করলে হাজার হাজার মানুষ মারা যেত। সেটা তো হয়নি। তবে আন্দোলন দমন করতে গিয়ে কিছু মারা গেছে এটা সত্য। ড্রোন ব্যবহার করে ছাত্র-জনতাকে মারার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। হেলিকপ্টার থেকে গুলিতে কেউ মারা গেছে, এটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, সাক্ষী বলেছেন ওপর থেকে গুলি করেছে। শিশু ঘরে থেকে মারা গেছে। আমির হোসেন বলেন, ১০ তলা থেকেও তো কেউ গুলি করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী তো বলেননি অমুক শিশুকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করো। ট্রাইব্যুনাল বলেন, লেথাল উইপেন ব্যবহার করতে নির্দেশ দেওয়ার কল রেকর্ড ফরেনসিক করে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমির হোসেন বলেন, এই কল রেকর্ড আরও একটি সমপর্যায়ের পরীক্ষা করা উচিত ছিল। ট্রাইব্যুনাল বলেন, সেটি প্রয়োজন না হলে কেন করবে? রিপোর্ট ঠিক নেই তা আপনি কীভাবে প্রমাণ করবেন? আমির হোসেন বলেন, অন্য কাউকে দিয়ে ক্রস চেক করালে ভালো হতো। ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনি যদি বলেন যন্ত্রপাতি ঠিক ছিল না, তাহলে আমরা দেখব।
শুনানির একপর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল আমির হোসেনের কাছে জানতে চান, লেথাল উইপেন ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন কি না? আমির হোসেন জবাবে বলেন, তিনি ওই অডিও সন্দেহের ঊর্ধ্বে মনে করেন না। আবু সাঈদের মৃত্যুর বিষয়ে যা বলা হয়েছে তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রসিকিউশন অভিযোগ করেছে, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের প্ররোচনায় পুলিশ গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। অথচ ট্রাইব্যুনালে কোনো সাক্ষীর বর্ণনায় এমন কোনো বক্তব্য আসেনি। ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনার যে অভিযোগ, তা সঠিক নয়।
আমির হোসেন আরও বলেন, প্রসিকিউশন বলেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় প্রতি রাতে কোর কমিটির বৈঠকে হয়েছে। আমার বক্তব্য হচ্ছে, কোর কমিটির বৈঠক হওয়া কোনো অপরাধ নয়। দেশে সৃষ্ট হওয়া অস্থিতিশীল পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সে বিষয়ে কোর কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া একটি বৈধ প্রক্রিয়া ছিল।
জুলাই অভ্যুত্থানে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দেননি। কল রেকর্ড অন্য কাউকে দিয়ে ক্রস চেক করালে ভালো হতো।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছে। এই মামলার অপর আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন।
যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা আন্দোলন প্রতিহত করতে বলেছেন। ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দেননি। ডিএমপি কমিশনারকে ওয়্যারলেস বার্তায় বলতে শোনা গেছে, পরিস্থিতি তৈরি হলে হাঁটু গেড়ে বসে গুলি করতে। যদি কোনো পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে গুলি করে হত্যা করে থাকেন, তাহলে সে দায় তাঁর ব্যক্তিগত। কারোর ব্যক্তিগত দায় শেখ হাসিনা নেবেন না। ড্রোন ব্যবহার করে হত্যা করলে হাজার হাজার মানুষ মারা যেত। সেটা তো হয়নি। তবে আন্দোলন দমন করতে গিয়ে কিছু মারা গেছে এটা সত্য। ড্রোন ব্যবহার করে ছাত্র-জনতাকে মারার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। হেলিকপ্টার থেকে গুলিতে কেউ মারা গেছে, এটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, সাক্ষী বলেছেন ওপর থেকে গুলি করেছে। শিশু ঘরে থেকে মারা গেছে। আমির হোসেন বলেন, ১০ তলা থেকেও তো কেউ গুলি করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী তো বলেননি অমুক শিশুকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করো। ট্রাইব্যুনাল বলেন, লেথাল উইপেন ব্যবহার করতে নির্দেশ দেওয়ার কল রেকর্ড ফরেনসিক করে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমির হোসেন বলেন, এই কল রেকর্ড আরও একটি সমপর্যায়ের পরীক্ষা করা উচিত ছিল। ট্রাইব্যুনাল বলেন, সেটি প্রয়োজন না হলে কেন করবে? রিপোর্ট ঠিক নেই তা আপনি কীভাবে প্রমাণ করবেন? আমির হোসেন বলেন, অন্য কাউকে দিয়ে ক্রস চেক করালে ভালো হতো। ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনি যদি বলেন যন্ত্রপাতি ঠিক ছিল না, তাহলে আমরা দেখব।
শুনানির একপর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল আমির হোসেনের কাছে জানতে চান, লেথাল উইপেন ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন কি না? আমির হোসেন জবাবে বলেন, তিনি ওই অডিও সন্দেহের ঊর্ধ্বে মনে করেন না। আবু সাঈদের মৃত্যুর বিষয়ে যা বলা হয়েছে তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রসিকিউশন অভিযোগ করেছে, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের প্ররোচনায় পুলিশ গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। অথচ ট্রাইব্যুনালে কোনো সাক্ষীর বর্ণনায় এমন কোনো বক্তব্য আসেনি। ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনার যে অভিযোগ, তা সঠিক নয়।
আমির হোসেন আরও বলেন, প্রসিকিউশন বলেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় প্রতি রাতে কোর কমিটির বৈঠকে হয়েছে। আমার বক্তব্য হচ্ছে, কোর কমিটির বৈঠক হওয়া কোনো অপরাধ নয়। দেশে সৃষ্ট হওয়া অস্থিতিশীল পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সে বিষয়ে কোর কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া একটি বৈধ প্রক্রিয়া ছিল।
ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।...
০৩ মার্চ ২০২৫জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
১ ঘণ্টা আগেভারতীয় ঋণচুক্তির আওতায় আলোচিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে শুধু একটি বাতিল করা হয়েছে এবং বাকিগুলির কোনটির কী অবস্থা তা বিস্তারিত জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপদেষ্টা ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিলের তালিকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।
২ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আগামীকাল বুধবার বৈঠক করবে জামায়াতে ইসলামী। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
ভারতীয় ঋণচুক্তির আওতায় আলোচিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে শুধু একটি বাতিল করা হয়েছে এবং বাকিগুলির কোনটির কী অবস্থা তা বিস্তারিত জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপদেষ্টা ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিলের তালিকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান। আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিল করা হয়েছে বলে যে তালিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে, সেটা সঠিক নয়। ওই তালিকার অনেকগুলোর অস্তিত্ব নেই। শুধু গার্ডেন রিচের সঙ্গে করা একটি চুক্তি অনেক আগেই বাতিল করা হয়েছে। বাকিগুলোর কয়েকটি বিভিন্ন পর্যায়ে আছে। তালিকার সঙ্গে সেগুলোর নাম ও বিবরণের সামঞ্জস্য নেই।
তিনি জানান, ত্রিপুরা-চট্টগ্রাম রেলসংযোগ প্রকল্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল বলে উল্লেখ করা হলেও এ রকম কোনো প্রকল্প নেই। অভয়পুর-আখাউড়া রেলপথ সম্প্রসারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল উল্লেখ করা হলেও এ রকম কোনো প্রকল্প নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আশুগঞ্জ-আগরতলা করিডোর বাতিল উল্লেখ করা হলেও হুবহু এ নামের কোনো প্রকল্প নেই। তবে ‘আশুগঞ্জ-সরাইল-ধারখার প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প চলমান আছে। ওই প্রকল্পের আওতায় কেবল একটি প্যাকেজ বাতিল হয়েছে (প্যাকেজ ৩: ধারখার থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর)।
তৌহিদ হোসেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া তালিকায় ফেনী নদীর পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাতিল উল্লেখ করা হয়েছে। আদতে এ নামের কোনো প্রকল্প নেই। তবে ত্রিপুরার সাবরুম শহরে পানীয় জল সরবরাহে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহারের জন্য ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। ওই সমঝোতা স্মারক বাতিল হয়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া তালিকায় স্থগিত হিসেবে উল্লেখিত ‘কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন প্রকল্পের’ও কোনো অস্তিত্ব নেই জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন নদী কুশিয়ারা থেকে পানি প্রত্যাহারের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০২২ সালে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। সেটিও স্থগিত হয়নি।
তিনি বলেন, ‘বন্দরের ব্যবহার সংক্রান্ত সড়ক ও নৌপথ উন্নয়ন চুক্তি’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল উল্লেখ করা হলেও হুবহু এ নামের কোনো চুক্তি নেই। তবে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৮ সালে চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তিটি বলবৎ আছে।
তৌহিদ হোসেন জানান, ফারাক্কা বাঁধসংক্রান্ত প্রকল্পে বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতা প্রস্তাব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল হিসেবে উল্লেখ করা হলেও এ রকম কোনো প্রস্তাবের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অবগত নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিলেট-শিলচর সংযোগ প্রকল্প বাতিল হিসেবে উল্লেখ করা হলেও এ রকম কোনো প্রকল্প নেই।
তিনি আরো বলেন, পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন সম্প্রসারণ চুক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল উল্লেখ করা হলেও ভারতের সঙ্গে এ ধরনের কোনো চুক্তি হয়নি। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইনের আওতায় ভারতের নুমালীগড় থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত যে পাইপলাইন আছে, তা সম্প্রসারণের জন্য ভারতের সঙ্গে একবার প্রাথমিক আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি।
উপদেষ্টা জানান, ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্প (মিরসরাই ও মোংলা) বাতিল বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতীয় ঋণচুক্তির (এলওসি) আওতায় ওই প্রকল্পগুলোতে অর্থায়নের বিষয়টি বাতিলের প্রক্রিয়া চলমান।
এছাড়া আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুনর্বিবেচনার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, চুক্তিটি পুনর্বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে।
আর গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তিকে (১৯৯৬) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘নবায়ন/পুনর্বিবেচনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও ২০২৬ সালে চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হবে। চুক্তি নবায়নের জন্য আলোচনা হবে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি (খসড়া) (২০১১) বাস্তবায়নের জন্য আলোচনায় বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১০-২০১১ সালে খসড়া হওয়া তিস্তা চুক্তিটি এখনো স্বাক্ষরিত হয়নি।
ভারতীয় ঋণচুক্তির আওতায় আলোচিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে শুধু একটি বাতিল করা হয়েছে এবং বাকিগুলির কোনটির কী অবস্থা তা বিস্তারিত জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপদেষ্টা ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিলের তালিকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান। আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিল করা হয়েছে বলে যে তালিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে, সেটা সঠিক নয়। ওই তালিকার অনেকগুলোর অস্তিত্ব নেই। শুধু গার্ডেন রিচের সঙ্গে করা একটি চুক্তি অনেক আগেই বাতিল করা হয়েছে। বাকিগুলোর কয়েকটি বিভিন্ন পর্যায়ে আছে। তালিকার সঙ্গে সেগুলোর নাম ও বিবরণের সামঞ্জস্য নেই।
তিনি জানান, ত্রিপুরা-চট্টগ্রাম রেলসংযোগ প্রকল্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল বলে উল্লেখ করা হলেও এ রকম কোনো প্রকল্প নেই। অভয়পুর-আখাউড়া রেলপথ সম্প্রসারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল উল্লেখ করা হলেও এ রকম কোনো প্রকল্প নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আশুগঞ্জ-আগরতলা করিডোর বাতিল উল্লেখ করা হলেও হুবহু এ নামের কোনো প্রকল্প নেই। তবে ‘আশুগঞ্জ-সরাইল-ধারখার প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প চলমান আছে। ওই প্রকল্পের আওতায় কেবল একটি প্যাকেজ বাতিল হয়েছে (প্যাকেজ ৩: ধারখার থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর)।
তৌহিদ হোসেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া তালিকায় ফেনী নদীর পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাতিল উল্লেখ করা হয়েছে। আদতে এ নামের কোনো প্রকল্প নেই। তবে ত্রিপুরার সাবরুম শহরে পানীয় জল সরবরাহে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহারের জন্য ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। ওই সমঝোতা স্মারক বাতিল হয়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া তালিকায় স্থগিত হিসেবে উল্লেখিত ‘কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন প্রকল্পের’ও কোনো অস্তিত্ব নেই জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন নদী কুশিয়ারা থেকে পানি প্রত্যাহারের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০২২ সালে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। সেটিও স্থগিত হয়নি।
তিনি বলেন, ‘বন্দরের ব্যবহার সংক্রান্ত সড়ক ও নৌপথ উন্নয়ন চুক্তি’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল উল্লেখ করা হলেও হুবহু এ নামের কোনো চুক্তি নেই। তবে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৮ সালে চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তিটি বলবৎ আছে।
তৌহিদ হোসেন জানান, ফারাক্কা বাঁধসংক্রান্ত প্রকল্পে বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতা প্রস্তাব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল হিসেবে উল্লেখ করা হলেও এ রকম কোনো প্রস্তাবের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অবগত নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিলেট-শিলচর সংযোগ প্রকল্প বাতিল হিসেবে উল্লেখ করা হলেও এ রকম কোনো প্রকল্প নেই।
তিনি আরো বলেন, পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন সম্প্রসারণ চুক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল উল্লেখ করা হলেও ভারতের সঙ্গে এ ধরনের কোনো চুক্তি হয়নি। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইনের আওতায় ভারতের নুমালীগড় থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত যে পাইপলাইন আছে, তা সম্প্রসারণের জন্য ভারতের সঙ্গে একবার প্রাথমিক আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি।
উপদেষ্টা জানান, ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্প (মিরসরাই ও মোংলা) বাতিল বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতীয় ঋণচুক্তির (এলওসি) আওতায় ওই প্রকল্পগুলোতে অর্থায়নের বিষয়টি বাতিলের প্রক্রিয়া চলমান।
এছাড়া আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুনর্বিবেচনার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, চুক্তিটি পুনর্বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে।
আর গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তিকে (১৯৯৬) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘নবায়ন/পুনর্বিবেচনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও ২০২৬ সালে চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হবে। চুক্তি নবায়নের জন্য আলোচনা হবে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি (খসড়া) (২০১১) বাস্তবায়নের জন্য আলোচনায় বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১০-২০১১ সালে খসড়া হওয়া তিস্তা চুক্তিটি এখনো স্বাক্ষরিত হয়নি।
ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।...
০৩ মার্চ ২০২৫জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
১ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন।
২ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আগামীকাল বুধবার বৈঠক করবে জামায়াতে ইসলামী। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আগামীকাল বুধবার বৈঠক করবে জামায়াতে ইসলামী। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, চলমান রাজনৈতিক সংলাপের অংশ হিসেবে আগামীকাল বুধবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আগামীকাল বুধবার বৈঠক করবে জামায়াতে ইসলামী। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, চলমান রাজনৈতিক সংলাপের অংশ হিসেবে আগামীকাল বুধবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ।
ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।...
০৩ মার্চ ২০২৫জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের যাবতীয় রদবদল সরাসরি তাঁর তত্ত্বাবধানে হবে। নির্বাচনের আগে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের বাছাই করে জেলা প্রশাসক পদে যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া হবে।
১ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন।
২ ঘণ্টা আগেভারতীয় ঋণচুক্তির আওতায় আলোচিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে শুধু একটি বাতিল করা হয়েছে এবং বাকিগুলির কোনটির কী অবস্থা তা বিস্তারিত জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপদেষ্টা ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিলের তালিকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।
২ ঘণ্টা আগে