তানিম আহমেদ, ঢাকা
বহুল আলোচিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ’-এর খসড়া প্রণয়ন শেষে তা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সব ঠিক থাকলে আগামীকাল বৃহস্পতিবারই সনদ চূড়ান্ত করার বিষয়ে আশাবাদী কমিশন। রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের যে বিষয়গুলোয় রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে, সেগুলোই অন্তর্ভুক্ত করা হবে জুলাই সনদে। সংস্কার প্রশ্নে মোটামুটি ঐকমত্যে পৌঁছানো গেলেও জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতা এখন বড় এক প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক জট সৃষ্টির।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২১তম দিনের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আশা করছি পরশু দিনের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে সনদের জায়গায় পৌঁছাব।’ তিনি বলেন, ‘৩১ জুলাইয়ের মধ্যে যেভাবে হোক সনদের চূড়ান্ত রূপ; অন্ততপক্ষে, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো স্পষ্ট করতে হবে এবং সনদে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
এর আগে গত সোমবার জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যেটি ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সনদের খসড়া বিশ্লেষণে দেখা যায়, এতে মোট সাতটি অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এসব অঙ্গীকারে একমত হলে স্বাক্ষরিত হতে পারে চূড়ান্ত সনদ। সনদে স্বাক্ষরকারীরা ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন— এই অঙ্গীকার রয়েছে শুরুতেই।
দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া দেওয়ার কথা উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সেগুলোর মন্তব্যের জন্য বুধবার (আজ) পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। আশা করছি, বিভিন্ন মন্তব্যকে সংশ্লিষ্ট করে প্রাথমিক পর্যায়ে যেগুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো আজ বা আগামীকালের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে দিতে পারব। এর সঙ্গে এ পর্যন্ত (দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ) যেগুলো ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো সংযুক্ত করে পরশু দিনের মধ্যে সনদের জায়গায় পৌঁছাব।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যখন সনদ চূড়ান্তের দিকে যাচ্ছে, তখন এর বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা মত লক্ষ করা যাচ্ছে। জুলাই সনদের খসড়া নিয়ে কোনো আপত্তি না থাকলেও এর শব্দচয়ন ও বাক্যগঠনে কিছু সংশোধনের প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে বিএনপি। সনদের খসড়ায় দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা বলা আছে। এ বিষয়ে একমত রয়েছে দলটি। সনদ বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় সংসদকেই উপযুক্ত স্থান হিসেবে মনে করছে বিএনপি। এর বিকল্প আর কিছু দেখছে না দলটি।
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সংস্কার বাস্তবায়নের একমাত্র উপযুক্ত ফোরাম হলো জাতীয় সংসদ। জাতীয় সংসদেই সংবিধান সংশোধনসহ অন্যান্য আইনি সংশোধন করা যাবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন অধ্যাদেশ জারির মধ্য দিয়ে যেসব আইনি সংশোধন আনা হয়েছে, সংসদের প্রয়োজন হয়েছে।’
বিএনপির পাশাপাশি দলটির সমমনা দলগুলোও জাতীয় সংসদে সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠাকে যুক্তিযুক্ত মনে করছে। তবে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কোনো কোনো দল এই অবস্থানের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনের আগেই সনদের আইনি ভিত্তি চায় তারা। প্রকাশিত সনদের খসড়া নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তাদের।
গণভোট অথবা অধ্যাদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চায় জামায়াতে ইসলামী। জুলাই সনদের খসড়াকে অসম্পূর্ণ বলে মনে করছে জামায়াত। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকারকে দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের প্রস্তাবকে ‘বিপজ্জনক’ বলেও মনে করে দলটি। জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘এটি “অসম্পূর্ণ” এবং কিছু অংশ “বিপজ্জনক”। আজকে তারা বলছে, এটা একটা নমুনা মাত্র, ভুল হয়েছে। যদি সেটাই না হয়, তাহলে মন্তব্যের দরকার নেই। তবে যদি সেটাই মূলকথা হয়, তাহলে একে গ্রহণ করা যাবে না।’
গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় ধাপের ২১ দিনের সংলাপের বিরতিতে এসব কথা বলেন আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, ‘জামায়াত নিজস্ব একটি খসড়া সনদ তৈরি করছে এবং কমিশনে জমা দেবে। সংলাপে যেসব বিষয়ে একমত হচ্ছি, সেগুলো বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে।’
জুলাই সনদের খসড়ায় দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা বলা আছে। এটার বিরোধিতা করছে জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি)। দলটি মনে করে, দুই বছর অনেক সময়। এ সময়ে রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতির পরিবর্তন হতে পারে। নির্বাচিত সরকার এসে সনদ বাস্তবায়ন করবে কি না, সে নিয়ে সন্দেহের কথা বলছে দলটি। যে কারণে সনদের আইনি ভিত্তির পাশাপাশি বর্তমান সরকারের কাছেই এর বাস্তবায়নের উদ্যোগ চাচ্ছেন দলটির নেতারা।
জানতে চাইলে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, জুলাই সনদকে বাস্তবায়নযোগ্য করতে একটা আইনি ভিত্তি দিতে হবে। একই সঙ্গে সাংবিধানিক কাঠামোর সঙ্গে যে বিষয়গুলো যুক্ত আছে, সেগুলোর জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হতে হবে।
নির্বাচনের আগে আইনি স্বীকৃতি চাওয়া দলগুলোর দাবি, জুলাই সনদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংবিধানসম্পর্কিত। তা বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান সংশোধন বা সংস্কার করতে হবে। জাতীয় সংসদের মাধ্যমে যদি সংবিধান সংশোধন করা হয়, তাহলে তা যেকোনো সময় আদালতের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জে পড়ে বাতিল হয়ে যেতে পারে। এতে রাজনৈতিক ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো বাতিলের আশঙ্কা রয়েছে।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তা নির্বাচনের আগেই আইনগত ভিত্তি পেতে হবে এবং সেই ভিত্তিতেই পরবর্তী সংসদ নির্বাচন হতে হবে।’ তাঁর অভিযোগ, কমিশন ছয়টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতির কথা বললেও তা নিয়ে আলোচনা না করেই হঠাৎ করে জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ করেছে, যা ‘সঠিক কাজ’ নয়।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনের ধারাবাহিকতা হিসেবে জাতীয় সনদে উল্লেখ না করলে সনদে স্বাক্ষর করবে না গণঅধিকার পরিষদ। দলটির মুখপাত্র ফারুক আহমেদ এমনটিই জানিয়েছেন।
কমিশন সূত্র বলছে, জুলাই সনদের বাস্তবায়নের বিষয়ে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে তেমন আলোচনা হয়নি। কয়েকটি দল নিজেদের কথা বলেছে। সংলাপে অংশ নেওয়া একটি দলের নেতা বলেন, ‘বাস্তবায়ন নিয়ে সংলাপে কথা তুললে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে, যাতে সংলাপে প্রভাব পড়তে পারে। তাই বিষয়টি নিয়ে আমরা সংলাপের শেষ দুই দিনে কথা তুলব। তা নিয়ে কয়েকটি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। কারণ আমরা সনদের আইনি ভিত্তি চাই। সংবিধান সংশোধন করে যাতে পরে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে না হয়।’
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারের একাধিক সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। খসড়া দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের যে কথা বলা আছে, তাও সংশোধন করা হবে।
আরও খবর পড়ুন:
বহুল আলোচিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ’-এর খসড়া প্রণয়ন শেষে তা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সব ঠিক থাকলে আগামীকাল বৃহস্পতিবারই সনদ চূড়ান্ত করার বিষয়ে আশাবাদী কমিশন। রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের যে বিষয়গুলোয় রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে, সেগুলোই অন্তর্ভুক্ত করা হবে জুলাই সনদে। সংস্কার প্রশ্নে মোটামুটি ঐকমত্যে পৌঁছানো গেলেও জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতা এখন বড় এক প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক জট সৃষ্টির।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২১তম দিনের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আশা করছি পরশু দিনের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে সনদের জায়গায় পৌঁছাব।’ তিনি বলেন, ‘৩১ জুলাইয়ের মধ্যে যেভাবে হোক সনদের চূড়ান্ত রূপ; অন্ততপক্ষে, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো স্পষ্ট করতে হবে এবং সনদে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
এর আগে গত সোমবার জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যেটি ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সনদের খসড়া বিশ্লেষণে দেখা যায়, এতে মোট সাতটি অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এসব অঙ্গীকারে একমত হলে স্বাক্ষরিত হতে পারে চূড়ান্ত সনদ। সনদে স্বাক্ষরকারীরা ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন— এই অঙ্গীকার রয়েছে শুরুতেই।
দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া দেওয়ার কথা উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সেগুলোর মন্তব্যের জন্য বুধবার (আজ) পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। আশা করছি, বিভিন্ন মন্তব্যকে সংশ্লিষ্ট করে প্রাথমিক পর্যায়ে যেগুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো আজ বা আগামীকালের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে দিতে পারব। এর সঙ্গে এ পর্যন্ত (দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ) যেগুলো ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো সংযুক্ত করে পরশু দিনের মধ্যে সনদের জায়গায় পৌঁছাব।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যখন সনদ চূড়ান্তের দিকে যাচ্ছে, তখন এর বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা মত লক্ষ করা যাচ্ছে। জুলাই সনদের খসড়া নিয়ে কোনো আপত্তি না থাকলেও এর শব্দচয়ন ও বাক্যগঠনে কিছু সংশোধনের প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে বিএনপি। সনদের খসড়ায় দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা বলা আছে। এ বিষয়ে একমত রয়েছে দলটি। সনদ বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় সংসদকেই উপযুক্ত স্থান হিসেবে মনে করছে বিএনপি। এর বিকল্প আর কিছু দেখছে না দলটি।
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সংস্কার বাস্তবায়নের একমাত্র উপযুক্ত ফোরাম হলো জাতীয় সংসদ। জাতীয় সংসদেই সংবিধান সংশোধনসহ অন্যান্য আইনি সংশোধন করা যাবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন অধ্যাদেশ জারির মধ্য দিয়ে যেসব আইনি সংশোধন আনা হয়েছে, সংসদের প্রয়োজন হয়েছে।’
বিএনপির পাশাপাশি দলটির সমমনা দলগুলোও জাতীয় সংসদে সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠাকে যুক্তিযুক্ত মনে করছে। তবে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কোনো কোনো দল এই অবস্থানের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনের আগেই সনদের আইনি ভিত্তি চায় তারা। প্রকাশিত সনদের খসড়া নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তাদের।
গণভোট অথবা অধ্যাদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চায় জামায়াতে ইসলামী। জুলাই সনদের খসড়াকে অসম্পূর্ণ বলে মনে করছে জামায়াত। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকারকে দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের প্রস্তাবকে ‘বিপজ্জনক’ বলেও মনে করে দলটি। জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘এটি “অসম্পূর্ণ” এবং কিছু অংশ “বিপজ্জনক”। আজকে তারা বলছে, এটা একটা নমুনা মাত্র, ভুল হয়েছে। যদি সেটাই না হয়, তাহলে মন্তব্যের দরকার নেই। তবে যদি সেটাই মূলকথা হয়, তাহলে একে গ্রহণ করা যাবে না।’
গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় ধাপের ২১ দিনের সংলাপের বিরতিতে এসব কথা বলেন আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, ‘জামায়াত নিজস্ব একটি খসড়া সনদ তৈরি করছে এবং কমিশনে জমা দেবে। সংলাপে যেসব বিষয়ে একমত হচ্ছি, সেগুলো বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে।’
জুলাই সনদের খসড়ায় দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা বলা আছে। এটার বিরোধিতা করছে জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি)। দলটি মনে করে, দুই বছর অনেক সময়। এ সময়ে রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতির পরিবর্তন হতে পারে। নির্বাচিত সরকার এসে সনদ বাস্তবায়ন করবে কি না, সে নিয়ে সন্দেহের কথা বলছে দলটি। যে কারণে সনদের আইনি ভিত্তির পাশাপাশি বর্তমান সরকারের কাছেই এর বাস্তবায়নের উদ্যোগ চাচ্ছেন দলটির নেতারা।
জানতে চাইলে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, জুলাই সনদকে বাস্তবায়নযোগ্য করতে একটা আইনি ভিত্তি দিতে হবে। একই সঙ্গে সাংবিধানিক কাঠামোর সঙ্গে যে বিষয়গুলো যুক্ত আছে, সেগুলোর জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হতে হবে।
নির্বাচনের আগে আইনি স্বীকৃতি চাওয়া দলগুলোর দাবি, জুলাই সনদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংবিধানসম্পর্কিত। তা বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান সংশোধন বা সংস্কার করতে হবে। জাতীয় সংসদের মাধ্যমে যদি সংবিধান সংশোধন করা হয়, তাহলে তা যেকোনো সময় আদালতের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জে পড়ে বাতিল হয়ে যেতে পারে। এতে রাজনৈতিক ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো বাতিলের আশঙ্কা রয়েছে।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তা নির্বাচনের আগেই আইনগত ভিত্তি পেতে হবে এবং সেই ভিত্তিতেই পরবর্তী সংসদ নির্বাচন হতে হবে।’ তাঁর অভিযোগ, কমিশন ছয়টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতির কথা বললেও তা নিয়ে আলোচনা না করেই হঠাৎ করে জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ করেছে, যা ‘সঠিক কাজ’ নয়।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনের ধারাবাহিকতা হিসেবে জাতীয় সনদে উল্লেখ না করলে সনদে স্বাক্ষর করবে না গণঅধিকার পরিষদ। দলটির মুখপাত্র ফারুক আহমেদ এমনটিই জানিয়েছেন।
কমিশন সূত্র বলছে, জুলাই সনদের বাস্তবায়নের বিষয়ে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে তেমন আলোচনা হয়নি। কয়েকটি দল নিজেদের কথা বলেছে। সংলাপে অংশ নেওয়া একটি দলের নেতা বলেন, ‘বাস্তবায়ন নিয়ে সংলাপে কথা তুললে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে, যাতে সংলাপে প্রভাব পড়তে পারে। তাই বিষয়টি নিয়ে আমরা সংলাপের শেষ দুই দিনে কথা তুলব। তা নিয়ে কয়েকটি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। কারণ আমরা সনদের আইনি ভিত্তি চাই। সংবিধান সংশোধন করে যাতে পরে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে না হয়।’
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারের একাধিক সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। খসড়া দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের যে কথা বলা আছে, তাও সংশোধন করা হবে।
আরও খবর পড়ুন:
বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০ নারী আসন বহাল রেখে সাত শতাংশ আসনে সরাসরি প্রার্থী করার সংশোধিত প্রস্তাব করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২২তম দিনে সংশোধিত প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হয়।
১ ঘণ্টা আগেসারা দেশের সংসদীয় আসনগুলোর মধ্যে ৩৯টির সীমানায় পরিবর্তন এনে খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত এই খসড়ার বিরুদ্ধে আবেদন করতে পারবেন।
১ ঘণ্টা আগেগণপূর্ত অধিদপ্তরের পাঁচ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের এক স্থপতিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’-এর অভিযোগে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে তাঁদের বরখাস্ত করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
২ ঘণ্টা আগেজাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি জানিয়েছেন, আলোচনা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া, আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য ও সমন্বিত জাতীয় সনদের খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোকে দেওয়ার
২ ঘণ্টা আগে