Ajker Patrika

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সহকর্মীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুজ্জামান আশার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন এক নারী। আজ সোমবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এ মামলার আবেদন এক সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী।

বিচারক সাবেরা সুলতানা খানম বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। তবে আদেশ অপেক্ষমাণ রেখেছেন।

ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, এই মামলায় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুজ্জামানের স্ত্রী ও বোনকেও আসামি করা হয়েছে।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীর স্বামী কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে জেলে যাওয়ার পর তিনি ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বসবাস করতে থাকেন। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুজ্জামান দায়িত্বে থাকাকালীন তাঁকে আশ্বস্ত করেন যে, তিনি নিরাপদে থাকতে পারবেন। কিন্তু গত ৭ জুন রাত আনুমানিক ৮টায় আশরাফুজ্জামান তাঁর বাসায় গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন। ভুক্তভোগীর মেয়ে এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী।

গত ১০ জুন আসামি আশরাফুজ্জামান ভুক্তভোগীকে কৌশলে কাজী অফিসে নিয়ে গিয়ে স্বামীকে ডিভোর্স দিতে বাধ্য করেন। পরদিন ১১ জুন ভয়ভীতি দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে করেন। এর কিছুদিন পর ভুক্তভোগী শারীরিকভাবে দুর্বল অনুভব করলে প্রেগনেন্সি কিট ব্যবহার করে জানতে পারেন তিনি গর্ভবতী। বিষয়টি তিনি আশরাফকে জানান।

গত ৬ জুলাই আশরাফুজ্জামান, তাঁর স্ত্রী ও বোন পরিকল্পিতভাবে ভুক্তভোগীকে গর্ভপাত করানোর চেষ্টা করেন এবং শারীরিক নির্যাতন চালান। ‎এরপর একাধিকবার আশরাফুজ্জামান ও তাঁর সহযোগীরা ভুক্তভোগীকে বাসা ছাড়তে হুমকি দেন এবং প্রাণনাশের ভয় দেখান।

গত ২৪ জুলাই ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসক ভুক্তভোগীর ৬ সপ্তাহের গর্ভাবস্থা নিশ্চিত করেন। কিন্তু শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে পরদিন ২৫ জুলাই তাঁর গর্ভপাত ঘটে।

পরে ১০ আগস্ট আসামি আশরাফ ভুক্তভোগীর বাসায় গিয়ে তাঁকে ও তার মেয়েকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন এবং বাসা ছাড়তে হুমকি দেন। ১৭ আগস্ট ভুক্তভোগী ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে আদালতে যেতে বলেন। ‎

উল্লেখ্য, সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুজ্জামান আশার বিরুদ্ধে ওঠা নারী নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে সেনাবাহিনী একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত বোর্ড গঠন করেছে।

গত ১৫ আগস্ট এক প্রবাসী সাংবাদিক ফেসবুক ও ইউটিউব পোস্টে দাবি করেন, এক মেজরকে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠিয়ে তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশা। কোরবানির ঈদের রাতে ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।

এরপর সেদিন বেলা সাড়ে ৩টায় আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ প্রকাশের আগেই সেনাবাহিনী বিষয়টি অবগত ছিল এবং সেনা আইন অনুযায়ী সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। অভিযোগের সংবেদনশীলতা ও নারীর সামাজিক মর্যাদা বিবেচনায় প্রক্রিয়াটি গোপন রাখা হয়েছিল।

আইএসপিআর আরও জানায়, অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে ইতিমধ্যে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত বোর্ড প্রকৃত সত্য উদ্‌ঘাটনে কাজ করছে। অভিযোগকারী নারী একজন প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তার প্রাক্তন স্ত্রী। ওই প্রাক্তন কর্মকর্তা একটি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হন এবং বর্তমানে কারাদণ্ড ভোগ করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত