Ajker Patrika

বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন অফিসে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসে ভাঙচুর করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসে ভাঙচুর করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসে হামলার অভিযোগ থানায় অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (৫০)। আজ সোমবার তিনি গোপালপুর থানায় এমন অভিযোগ করেন।

অভিযোগে নির্বাচন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ‘গত ৩১ জুলাই থেকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে দায়িত্ব পালন করছি। সোমবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টায় সময় উপজেলা নির্বাচন অফিসে বিবাদী গোপালপুর পৌর বিএনপির সভাপতি খালিদ হাসান উত্থান (৫২), সাধারণ সম্পাদক কাজী লিয়াকত আলী (৫৫), সাংগঠনিক সম্পাদক মো. লিটন মিয়া (৫০), যুগ্ম সম্পাদক মো. মহির উদ্দিন (৫৬), যুবদল নেতা/কর্মী কামরুল ইসলাম (৪২)সহ অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১২০ জন নেতা-কর্মীসহ অফিস কক্ষে যায়। তখন আমি খালিদ হাসানকে কী সেবা দিতে পারি জিজ্ঞাসা করলে তিনি রাগান্বিত কণ্ঠে বলেন, আমি কেন তাদের মূল্যায়ন/মান্য করি না এবং কেন তাদের কথামতো কাজ করি না। আমি সরকারি বিধি মোতাবেক সকল সেবা দিতে সর্বদা প্রস্তুত আছি জানালে উল্লিখিত বিবাদীরাসহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা আমাকে আওয়ামী লীগের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছি মর্মে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। আমি বিবাদীদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করে আওয়ামী লীগের কী অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছি, তার প্রমাণ দিতে বলি। এতে বিবাদীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারপিট করতে উদ্যত হয় এবং আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেন।

‘এই ঘটনা শুরু থেকে স্ক্যানিং অপারেটর মো. সুমন রানা তার মোবাইল ফোনে ভিডিও করতে থাকে। ভিডিও করার বিষয়টি দেখতে পেয়ে খালিদ হাসান অন্যান্য বিবাদীকে হুকুম দিয়ে বলে, ‘শালার ভিডিও করার সাধ মিটাইয়া দে।’ হুকুম পাওয়া মাত্রই ৩-৫ নম্বর বিবাদীসহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা মো. সুমন রানাকে ধরে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।

‘তখন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. আমজাদ হোসেন বিবাদীদের কবল থেকে স্ক্যানিং অপারেটর মো. সুমন রানাকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে ৩ নম্বর বিবাদী তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আমজাদ হোসেনকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং অফিসের সার্ভার রুমের কাচের গ্লাস ভাঙচুর করে। কাচের থাই গ্লাস ভেঙে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেনের বাম পায়ের কনিষ্ঠ আঙুলের একটু ওপরে পড়ে কেটে গুরুতর রক্তাক্ত হয়। আমি স্ক্যানিং অপারেটর ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটরকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে ১ ও ২ নম্বর বিবাদী আমার পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মেরে জখম করে। তখন সহকারী উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. আবু রায়হান বিবাদীদের কবল থেকে আমাকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে তাকেও এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মারা হয়।’

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘ওই সময় অফিস কক্ষে থাকা একজন সেবাগ্রহীতাকে বিবাদীরা একইভাবে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। বিবাদীরা অফিসের অন্যান্য কক্ষের কাচের থাই গ্লাস, বারান্দায় রাখা ফুলের টবসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ও হেল্প ডেস্কে থাকা কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র ছিঁড়ে আনুমানিক ৮০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। আমাকেসহ আমার অফিসের সহকর্মীদের নানা রকম ভয়ভীতি ও খুন জখমের হুমকি দেয়।

‘আমার অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা/কর্মচারী আহত ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার পথে গোপালপুর উপজেলা পরিষদের মূল গেটের সামনে বিবাদী গোপালপুর পৌর ছাত্রদলের সভাপতি মো. তুহিনসহ (২৭) অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা পুনরায় আমজাদ হোসেনকে মারপিট করে হাসপাতালে নিতে বাধা দেয়। সহকারী উপজেলা নির্বাচন অফিসার থানায় সংবাদ দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের সহায়তায় আমজাদ হোসেনকে গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।

‘ঘটনাটি আমি তাৎক্ষণিক গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি। পরবর্তীতে বিবাদীরা আমার ও স্ক্যানিং অপারেটর মো. সুমন রানার কেড়ে নেওয়া মোবাইল ফোন দুটি ইউএনওর মাধ্যমে ফেরত দেয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...