Ajker Patrika

ইন্দোনেশিয়ায় প্রশিক্ষণের নামে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণে রাজস্বের বেলাল, দুদকের মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য (মুসক বাস্তবায়ন ও আইটি) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরীর নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া, বেনাপোল কাস্টম হাউসে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে এক রাজস্ব কর্মকর্তা ও তাঁর সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে সংস্থাটি।

আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুদকের উপপরিচালক মো. সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।

দুদক জানায়, বেলালের বৈধ আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণভাবে অর্জিত মোট ৪ কোটি ৯৭ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৬ টাকার সম্পদের তথ্য তিনি গোপন করেছেন। এসব সম্পদের মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকায় জমি, ফ্ল্যাট, প্লট ও শেয়ার রয়েছে।

তদন্তে দেখা গেছে, তিনি সম্পদ বিবরণীতে ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬ (২), ২৭ (১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫ (২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এর আগে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

অন্যদিকে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরকারি আদেশ (জিও) অপব্যবহারের অভিযোগও তদন্তাধীন। অভিযোগ রয়েছে, ইন্দোনেশিয়ায় প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার কথা বলে তিনি জিও নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ভ্রমণ করেছেন।

এ বিষয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ তাঁর কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চায় এবং সাত কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলে। ৬ অক্টোবর তিনি লিখিত জবাবে জানান, তিনি ১৯ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ায় প্রশিক্ষণে অংশ নিতে গিয়েছিলেন এবং সিডনি বিমানবন্দরে ১৭ ঘণ্টা ট্রানজিট অবস্থান করেন।

ঘুষ গ্রহণ, দুদকের অভিযানে কাস্টমস কর্মকর্তাসহ দুজন গ্রেপ্তার

বেনাপোল কাস্টম হাউসে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে কাস্টমসের এক রাজস্ব কর্মকর্তা ও তাঁর সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে দুদক। গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন প্রক্রিয়ায় তাঁর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়মিত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করতেন। এই কাজে তাঁকে সহায়তা করতেন স্থানীয় এক এনজিওকর্মী হাসিবুর রহমান।

৬ অক্টোবর বিকেলে দুদকের একটি দল ছদ্মবেশে বেনাপোল কাস্টম হাউসের আশপাশে অভিযান চালায়। অভিযানের সময় তথ্য আসে যে শামীমা আক্তারের পক্ষে হাসিবুর রহমান ঘুষের টাকা সংগ্রহ করে স্থানীয় একটি বিকাশের দোকানে জমা রাখতেন, পরে তা কর্মকর্তা শামীমা আক্তারের কাছে পৌঁছে দিতেন।

অভিযানকালে বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে কাস্টম হাউসের গেটের কাছে ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকার ঘুষের অর্থসহ হাসিবুর রহমানকে হাতেনাতে আটক করে দুদকের দল। পরে তাঁকে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে শামীমা আক্তার স্বীকার করেন, হাসিবুর রহমানের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে এবং তিনি নিজেই তাঁকে টাকা অফিসে আনতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। দুদক উদ্ধারকৃত টাকা জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করে।

গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১, ১৬২, ১৬৩, ১৬৪, ১৬৫ (ক) ও ১০৯ ধারায় এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫ (২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত