Ajker Patrika

দেশি মদও বোতলজাত করার অনুমতি কেরুকে

  • বিদ্যমান বিধি লঙ্ঘনের আশঙ্কা।
  • বিশেষ ভোক্তা শ্রেণি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
  • ‘সিন্ডিকেটের’ তৎপরতার অভিযোগ।
 শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭: ৪১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের একমাত্র অ্যালকোহল উৎপাদনকারী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান চুয়াডাঙায় অবস্থিত কেরু অ্যান্ড কোম্পানিকে দেশি মদ বোতলজাত করে বিক্রির অনুমতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ব্রিটিশ আমল থেকে বিদ্যমান অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা পরিবর্তন ছাড়াই কর্তৃপক্ষ ‘তড়িঘড়ি করে’ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অনেকে বলছেন, কেরু চিঠি দেওয়ার এক মাস পরই তাদের এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা অস্বাভাবিক দ্রুত।

অনুমোদনে ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত কেরু অ্যান্ড কোম্পানি ১ লিটার ও আধা লিটারের বোতলে দেশি মদ বাজারজাত করতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।

দেশি মদের প্রধান ভোক্তা ডোম, মেথর, মুচি ও চা-শ্রমিকদের মতো সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষ। তাঁরা নির্ধারিত বিক্রয়কেন্দ্র থেকে খোলা মদ অল্প পরিমাণে কিনে থাকেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অনুমোদনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এসব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের মতামত যাচাই করা হয়নি।

দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত ব্যবস্থা অনুযায়ী সরকারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দায়িত্বে থাকা পণ্যাগারগুলো দেশি মদ বিক্রয়কেন্দ্রে সরবরাহ করে থাকে। সারা দেশে এমন ১১৪টি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। সেখান থেকে নিম্ন আয়ের ভোক্তারা ১৫০ গ্রাম বা ২৫০ গ্রাম করে দেশি মদ কিনতে পারেন। কিন্তু বোতলজাত করার ফলে দাম বেড়ে গেলে মদ তাঁদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যেতে পারে। এই শ্রেণির মানুষের ব্যক্তিগত বিনোদন বা সামাজিক উদ্‌যাপনের অপরিহার্য অঙ্গ দেশি মদ।

২০১৮ সালের অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালার ৩০ অনুচ্ছেদের ৫ ধারা অনুযায়ী, উৎপাদিত দেশি মদ অধিদপ্তরের পণ্যাগারে পৌঁছানোর পর পানের উপযোগী করতে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ‘গেজিং’ ও ‘প্লাম্বিং’ করা বাধ্যতামূলক। পণ্যাগারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এ কাজ করবেন বলে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। অধিদপ্তরের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বলেছে, কেরু কোম্পানি বোতলজাত দেশি মদ তৈরি করলে বর্তমান বিধিমালার আওতায় কীভাবে পণ্যটি পণ্যাগারে সরবরাহ ও পান করার উপযোগিতা পরীক্ষা করা যাবে, তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।

প্লাস্টিকের বোতলে সরবরাহ করা হলে এর পরিবেশগত দিক নিয়েও কথা উঠতে পারে। এ ছাড়া বোতলের কারণে বাধ্যতামূলক আধা লিটার বা এক লিটার কিনতে হলে নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের জন্য তা বোঝা হতে পারে।

অভিযোগ উঠেছে, অধিদপ্তর ও কেরু অ্যান্ড কোম্পানির কিছু কর্মকর্তার ‘সিন্ডিকেট’ অনেকটা গোপন তৎপরতার মাধ্যমে এই অনুমোদন আদায় করেছে। এতে কেরু কোম্পানি ও সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ লাভবান হলেও অধিদপ্তরের দীর্ঘদিনের বিতরণব্যবস্থা ভেঙে পড়বে এবং ব্যয় বৃদ্ধিসহ বিভিন্নভাবে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভোক্তা শ্রেণির কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেরুর দেশি মদ বোতলজাত করার সিদ্ধান্ত বা এর অনুমোদনের ক্ষেত্রে তাঁদের কোনো সংগঠন বা প্রতিনিধির মতামত নেওয়া হয়নি। এর কারণে দেশি মদের দাম বাড়লে তাঁরা বিকল্প খুঁজতে বাধ্য হতে পারেন। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, এই জনগোষ্ঠী অন্যান্য ক্ষতিকর মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে।

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়ার পর এত দ্রুত দেশি মদ বোতলজাত করার অনুমতি পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাব্বিক হাসানের কাছে। তিনি অনুমতি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করলেও দ্রুতগতিতে অনুমতি পাওয়ার বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।

অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গার সহকারী পরিচালক শিরিন আক্তার এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক উল্লেখ করে বলেন, এতে পানকারীরা ভেজালমুক্ত মদ পাবেন। সাময়িকভাবে কিছুটা অসন্তোষ দেখা দিলেও ভোক্তাদের জন্য এটি ভালো সিদ্ধান্ত।

অধিদপ্তরের অন্য কর্মকর্তারা বলেন, কেরুকে দেওয়া অনুমোদনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিধিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে। কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ নারকোটিকস কন্ট্রোল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনসিএসএ) সভাপতি ও উপপরিচালক আবুল হোসেনের মতে, দেশি মদ বোতলজাত করার সিদ্ধান্তে কেরুর লাভ হলেও ভোক্তাদের জন্য তা কিছুটা অসুবিধাজনক। বিধিমালা পরিবর্তন ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত কীভাবে কার্যকর হবে, তা স্পষ্ট করতে পারেননি তিনি।

জানা গেছে, অধিদপ্তরের অধিকাংশ কর্মকর্তা মনে করেন, কেরুকে সুবিধা দিতে গোপন সিন্ডিকেট এই অনুমোদন আদায় করেছে। এর ফলে কোম্পানিটি লাভবান হলেও অধিদপ্তর তথা সরকার বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে এক পথচারীর মৃত্যুর ঘটনায় বেলা ১২টার দিকে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রায় তিন ঘণ্টা পর বেলা ৩টা থেকে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত আংশিক মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়েছে।

আজ রোববার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড ডিএমটিসিএল পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে দুপুরে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হবে খুব দ্রুততম সময়ে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত আপাতত চালু হচ্ছে না। আজ চালু করা সম্ভব হবে না এই অংশ।’

ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে আজ দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে এক পথচারী মারা যান। এই ঘটনার পর থেকে মেট্রোরেল চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই ব্যক্তি ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। মেট্রোরেল চলাচলের মুহূর্তে ওপর থেকে একটি বিয়ারিং প্যাড তাঁর মাথায় পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত ব্যক্তির সঙ্গে থাকা একটি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। তাতে নাম লেখা আবুল কালাম এবং বাড়ি শরীয়তপুর। জন্মসাল ১৯৯০। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।

তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ডিউটিরত অবস্থায় কাছেই ছিলাম। খবর পেয়ে দ্রুত গিয়ে দেখি, এক ব্যক্তি রাস্তায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন।’

এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে। এর ফলে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। এই ঘটনায় বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হয়। এর মধ্যে দ্বিতীয়বার বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ল।

মেট্রোরেলের লাইনের নিচে উড়ালপথের পিলারের সঙ্গে রাবারের বিয়ারিং প্যাড থাকে। এগুলোর প্রতিটির ওজন ১৪০ বা ১৫০ কেজি। এসব বিয়ারিং প্যাড ছাড়া ট্রেন চালালে উড়ালপথ দেবে যাওয়া কিংবা স্থানচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমটিসিএল সূত্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বইমেলা হবে কোনো সন্দেহ নেই, সময় নির্ধারণ বাংলা একাডেমির ব্যাপার: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘কেমন বই মেলা চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘কেমন বই মেলা চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এবারও বইমেলা যাতে খুব সুন্দর হয়। সময়ের ব্যাপারে আমি জানি না, বাংলা একাডেমি কি একই সময়ে করবে নাকি সময় একটু হেরফের করবে—সেটা বাংলা একাডেমির বিষয়। তবে মেলা হবে—এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।’

আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি আয়োজিত ‘কেমন বই মেলা চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ১৭টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা এমন একটা বইমেলা চাই, যে বইমেলায় আমাদের সব মানুষের বই থাকবে। আমরা যারা বই লিখি, যে যেইটাই লিখুক কেন, যে কোনো ভিন্ন মতের লেখাই থাকুক না কেন, সবার বই যেন বইমেলায় থাকে। পাঠক বেছে নেবেন—উনি যেটা পড়তে চান, যে বই তাঁকে টানে উনি ওই বইটা কিনবেন।’

তিনি যোগ করেন, ‘আমরা চাই এমন একটা মেলা, অবশ্যই সেটা বৈষম্যবিরোধী। কারও প্রতি যেন বৈষম্য না করা হয়। কেউ যেন এসে না বলেন যে না, আমার প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে। আমি যে বইটা প্রকাশ করতে চাচ্ছি বা বিক্রি করতে চাচ্ছি, এটা এখানে করা যাচ্ছে না। এই কথাটা যেন না শোনা হয়।’

প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এমন কোনো বইমেলা চাই না যেখানে ৪০ শতাংশ বই হচ্ছে একটা লোকের ওপরে। এমন একটা বইমেলার সময় গেছে, সামনে আপনি বই দেখবেন, সবই হচ্ছে শেখ পরিবারের বই। উনি টুঙ্গিপাড়ায় পুকুরের পাশে বসে আছেন, সেটা নিয়েও একটা বড় বই কেউ লিখে ফেলেছে। ওই বইগুলো ছিল—কোনোভাবে প্রতারণা করে কিছু টাকা-পয়সা কামানোর জন্য।’

সভায় জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মোহন রায়হান বলেন, ‘বইমেলাকে দলীয় বইমেলা হিসেবে রূপান্তরিত করা হয়েছে। প্রতিটি স্টল, প্যাভেলিয়ন আওয়ামী দালালদের দেওয়া হয়েছিল। প্রকাশকেরা ছিল ফ্যাসিস্টদের দোসর। তবে এবারের বইমেলা হবে সবার।’

নির্বাচনের কারণে বইমেলা বন্ধের কোনো কারণ নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা হোক। নির্বাচনের কয়েক দিন বইমেলা বন্ধ রেখে। তা আবার কয়েক দিন বর্ধিত করা যেতে পারে। তা-ও যাতে ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা বন্ধ না থাকে। এবারের বইমেলা না হলে মনে করা হবে, ফ্যাসিস্ট শক্তির দোসররা এটা জন্য জড়িত। তারাই ষড়যন্ত্র করে বইমেলা বন্ধ করতে চাইছে। সরকারের কাছে আবেদন বইমেলা যাতে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখেই হয়।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাঈদ বারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কবি গাজীউল হাসান খান, ফয়েজ আলম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক ব্যক্তির নামে অনুমোদিত সিমের সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে এক ব্যক্তির নামে অনুমোদিত সিমকার্ডের সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে। আজ রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘একজনের সিমকার্ড ব্যবহার করে অন্যজন অপরাধ করে। এতে করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তি অনেক সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। এ জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে রেজিস্ট্রেশন করা সিমকার্ড কমিয়ে আনা হবে। কোনো ঘটনা ঘটার পর দেখা যায় সিমটি সেই ব্যক্তির নয়। নির্বাচনের আগে সিমকার্ড কমিয়ে আনা হবে। আমরা চেষ্টা করছি জাতীয় নির্বাচনের আগে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ সাতটি সিমকার্ড নিজের এনআইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।’

ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী ও মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ।

গত মে মাসে বিটিআরসি জানায়, একজন গ্রাহক এখন থেকে নিজের নামে সর্বোচ্চ ১০টি সিম নিতে পারবেন। এর আগে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্মনিবন্ধন সনদ ও পাসপোর্ট দিয়ে সব অপারেটর মিলিয়ে ১৫টি সিম নেওয়া যেত।

২০১৭ সালে বিটিআরসি একজন গ্রাহকের নামে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধন করা যাবে বলে নির্দেশনা দেয়। এরপর ২০২২ সালের অক্টোবরে বিটিআরসি আরেক নির্দেশনায় জানিয়েছিল, একজন গ্রাহক জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্মনিবন্ধন সনদ ও পাসপোর্ট দিয়ে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধন করতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে বসছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে বসছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি, সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অভিযান পরিচালনা এবং সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে বৈঠকে বসছে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।

আজ রোববার সকাল ১১টায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৫তম বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই বৈঠকের আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে—

১. দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতিকারীদের কর্মকাণ্ড রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ।

২. জুলাই হত্যাকাণ্ডের শহীদদের মামলার রেকর্ড, তদন্ত ও অগ্রগতি বিষয়ক আলোচনা, দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী উসকানিমূলক সাইবার প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ।

৩. নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা।

৪. মাদকের অপব্যবহার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কিত আলোচনা।

৫. শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিন পরবর্তী সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও প্রতিরোধ, নির্মূল ও নিয়ন্ত্রণ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনসমূহের অপতৎপরতা রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ।

৬. গার্মেন্টস বা শিল্পকারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ নিশ্চিত করা।

৭. গার্মেন্টস কারখানা, ঔষধ শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির তৎপরতা বিষয়ে আলোচনা।

৮. অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনা সংক্রান্ত আলোচনা।

৯. সীমান্ত ও পার্বত্যাঞ্চল পরিস্থিতি বিষয়ক আলোচনা।

১০. রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ক আলোচনা।

১১. মা ইলিশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত আলোচনা।

জানা গেছে, বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, শিল্প-ও গৃহায়ণ মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, খাদ্য ও ভূমি বিষয়ক উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্ট আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত