Ajker Patrika

পাচার হওয়া বিলিয়ন ডলার ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে যুক্তরাজ্য: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৮: ০৯
Thumbnail image
আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাজ্যর ইন্দো-প্যাসিফিক প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

যুক্তরাজ্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ণ সমর্থন করবে জানিয়ে বাংলাদেশ সফররত দেশটির ইন্দো-প্যাসিফিক প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেছেন, তাঁর সরকার বাংলাদেশকে পূর্ণ সমর্থন দেবে, বিশেষ করে বিদেশে পাচার হওয়া বিলিয়ন ডলার ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায়।

আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এই মন্তব্য করেন। ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ যে আপনাকে জানাই, আমাদের সমর্থন আপনার সঙ্গে রয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৈঠকে ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, প্রায় ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনার শাসনকালে বিদেশে পাচার হওয়া লাখ লাখ ডলার ফিরিয়ে আনার চেষ্টায়ও লন্ডন ঢাকা সরকারকে সহায়তা করবে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাজ্য প্রতিমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ রাজনীতিক, অলিগার্ক এবং আমলাদের দ্বারা পাচার করা অর্থ ফেরানো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শীর্ষ অগ্রাধিকার।’ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি-বিদেশে পাচার হয়।

বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস তাঁর সরকারের সংস্কার উদ্যোগ তুলে ধরেন, যার লক্ষ্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এবং নির্বাচন কমিশনকে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়া। তিনি বলেন, এই সংস্কারগুলোর উদ্দেশ্য হলো দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং আগের শাসনামলে প্রচলিত ভোট জালিয়াতির সংস্কৃতি দূর করা।

ক্যাথরিন ওয়েস্ট সংস্কারগুলোর প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, ব্রিটেন আদালত, সংবিধান এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে প্রাণবন্ত আলোচনা দেখতে চায়। আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বৈঠকে ক্যাথরিনে ওয়েস্ট জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থী, স্থানীয় বাসিন্দা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য যুক্তরাজ্য ১০ দশমিক ৩ মিলিয়ন পাউন্ড অনুদান দেবে।

ড. ইউনূস মিয়ানমারের সহিংসতাপ্রবণ রাখাইনে ‘জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি নিরাপদ অঞ্চল’ তৈরির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন যাতে স্থানীয়রা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য না হয় এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও সহায়তা সংস্থাগুলো প্রয়োজনীয় খাদ্য ও সাহায্য তাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারে।

বৈঠকে ভূরাজনৈতিক ইস্যু, সংখ্যালঘু অধিকার, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের নেপালের সঙ্গে সাম্প্রতিক ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেন। ইউনূস বলেন, তাঁর সরকার দক্ষিণ এশিয়া বিদ্যুৎ গ্রিড তৈরির উদ্যোগকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে যাতে জলবিদ্যুৎ সমৃদ্ধ নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা যায়। তিনি বলেন, যদি বাংলাদেশ এই দুই হিমালয়ান দেশের নবায়নযোগ্য শক্তি আমদানি করতে পারে, তবে এটি জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা হ্রাস করতে পারে। এ বিষয়ে ভারতের সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বৈঠকে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনের সময় গুরুতর আহত শিক্ষার্থী ও অন্য প্রতিবাদকারীদের চিকিৎসার জন্য এই মাসে যুক্তরাজ্যের একটি চিকিৎসা দল দেশে এসেছে। তারা প্রতিদিন তিনটি অস্ত্রোপচার করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত