Ajker Patrika

গণমাধ্যম সংস্কারে সব পক্ষের সঙ্গে বসা শেষ হয়নি: নাহিদ ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৫: ০৮
গণমাধ্যম সংস্কারে সব পক্ষের সঙ্গে বসা শেষ হয়নি: নাহিদ ইসলাম

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের গঠনের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে বসা শেষ হয়নি বলে জানিয়েছেন তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। মালিক, সাংবাদিক, সম্পাদকসহ অন্যান্য সব পক্ষের সঙ্গে বসে পরামর্শ নিয়ে কমিশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে মিডিয়া সাপোর্ট নেটওয়ার্ক আয়োজিত ‘সংবাদমাধ্যম সংস্কার: কেন? কীভাবে?’ শীর্ষক একটি মুক্ত আলোচনায় তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন। 

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘সম্পাদক পরিষদের সঙ্গেও বসা হয়েছে। আজকের এই আলোচনাটাও এটা এক ধরনের ইনসাইট দেবে। বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বসতে হবে। এখনো সেই বসাটা শেষ হয়নি। সব পক্ষের সঙ্গে বসে তাদের একটা পরামর্শ নিয়ে, আমরা সবাই সংস্কার কমিশনটা ঘোষণা করতে পারব।’ 

তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সব সময় সম্পাদক বা মালিক পক্ষের সঙ্গে বসা হচ্ছে কিন্তু যারা মাঠে কাজ করেন তাদের ভয়েস আমাদের কাছে আসে না। এই অনুষ্ঠান সেই দূরত্ব দূর করতে ভূমিকা পালন করবে। ভবিষ্যতে এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করার চেষ্টা করব।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন মুক্ত গণমাধ্যম বা গণ্যমাধ্যম সংস্কারের কথা বলছি-আজকের আলোচনায় সাংবাদিকতার পেশাদারত্বকেই সেন্ট্রাল পয়েন্ট হিসেবে ধরা হয়েছে। এটা খুবই যুক্তিযুক্ত যে-সাংবাদিকতা যদি একটা পেশা হয়, তাহলে কতটুকু পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে এবং সেই কাজ যদি না করতে পারে, তাহলে তার কারণ ও সমস্যা কী, সেটা থেকে বের করতে হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা জানি যে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নানা আইন কানুন ও বিধিনিষেধ থাকে। সাংবাদিকতাকে এক ধরনের আবদ্ধ করে রাখার চেষ্টা থাকে। অর্থনৈতিকভাবে গণমাধ্যমকে নানা ধরনের বাধা প্রদান করা হয়। সাংবাদিকতাকে যদি পেশাদারত্বের জায়গা থেকে চিন্তা করি, তাহলে সে ধরনের চর্চা আমাদের দেশে অনুপস্থিত। আমাদের মধ্যে মিডিয়া লিটারেসি গড়ে ওঠেনি।’ 

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার খুব অল্প সময়ের দায়িত্বের অভিজ্ঞতায় সাংবাদিকতা নিয়ে আমি যেটি বুঝেছি সেটি হচ্ছে-এখানে নানামুখী স্টেক হোল্ডার ও পরস্পর বিরোধী পক্ষ রয়েছে। যাদের সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে ও ঐকমত্যে আসতে হবে। যখন ওয়েজবোর্ডের কথা আসে, তখন সম্পাদক ও মালিকেরা ওয়েজবোর্ডের বিরোধিতা করে। আবার অনেক সময় বিভিন্ন হাউস থেকে বেতন পরিশোধ করা হয় না। মাঠ পর্যায়ের সাংবাদিকেরা এগুলো নিয়ে অভিযোগ করেন।’ 

তিনি বলেন, ‘এ বেতনের বিষয়টি সুরাহা হওয়া উচিত। এটি যদি একটি পেশা হয়, তাহলে সে পেশাকে মর্যাদা দিতে হবে। এখানে দাসসুলভ আচরণ করার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের এখানে সাংবাদিক সংগঠনগুলো রয়েছে, তাদের সাংবাদিকদের প্রকৃত স্বার্থে কাজ করা উচিত। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম নিয়ে যেসব কথা বলা হয়েছে, আমরা সেগুলোও বিবেচনা করব। সাংবাদিকতার যে বহুমুখী স্টেকহোল্ডার আছেন, তাদের নিয়ে আমাদের একটা ঐকমত্যে যেতে হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা এই আন্দোলনে দেখেছি সাংবাদিকেরা কি ধরনের কাজ করেছে, আবার যারা গণমাধ্যমের স্টেকহোল্ডার আছেন তারা কি করেছেন। সেখানে মালিকদের এক ধরনের ভূমিকা ছিল। সেটা আমাদের জন্য একটা কেস স্টাডি। এটা পর্যবেক্ষণ করা উচিত। আন্দোলনের সময় আমরা দেখেছি-অনেক সাংবাদিক আমাদের কাছ থেকে নিউজ নিতো, কিন্তু সেটি প্রকাশ হতো না। তখন আমরা শুনেছি-একটা হাউস পলিসি আছে কোনটি যাবে আর কোনটি যাবে না। আবার হাউসের ওপরে হাউস আছে, কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার সময় কেউ দায়িত্ব নিচ্ছে না। আমরা আন্দোলনের সময় দেখেছি-ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় আন্দোলনের কোনো তথ্য সেভাবে প্রচার করা হয়নি, যখন শাটডাউন ছিল। আর কি তথ্য প্রচার করা হয়েছে সেটিও দেশের মানুষ দেখেছে।’ 

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘তাহলে এই দায়িত্বটা নেবে কে। যদি দায়িত্বশীলদের বলা হয় তখন তারা বলে-সরকারের পক্ষ থেকে ডিজিএফআই দিয়ে চাপ দেওয়া হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘কাউকে না কাউকে এ দায়িত্ব নিতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এই নীতিগত সংস্কারের কথা বলছি। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের মধ্য থেকেও সেই রেজিস্ট্যান্স প্রয়োজন। আমরা ৯০ এর গণ-অভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের মধ্যে সেটি দেখেছিলাম কিন্তু এই আন্দোলনে সেটি দেখা যায়নি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে। আমরা সামনের দিকে এগোতে চাই, যাতে তরুণেরা এ পেশায় আসতে চায়। কিন্তু তরুণদের মধ্যে এই আগ্রহ কমে যাচ্ছে। এক ধরনের হতাশা কাজ করছে। একটা সময় এই পেশাকে মর্যাদার সঙ্গে দেখা হতো। সেই জায়গাটা এখন কমে এসেছে। সেই জায়গার সমাধানে যাওয়ার চেষ্টা করব।’ 

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয় সংস্কার কমিশন নিয়ে কথা বলেছেন। আমাদের তরফ থেকে আমরা বলতে চাই-প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনূস সম্পাদকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। মিডিয়া ফ্রিডম, প্রেস ফ্রিডম নননিগোশিয়েবল, এই জায়গায় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করব না। আপনারা দেখেছেন প্রায় দুই মাস এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে। কোথাও কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করা হয়েছে? আমি মনে করি, স্বাধীনতার পরে গত দুইটা মাস ছিল গোল্ডেন পিরিয়ড।’ 

তিনি বলেন, ‘কিন্তু কথা হচ্ছে-এটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। আমরা ধরে রাখব কীভাবে। এটাকে একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। আগের সরকারে আমরা যে সমস্যাগুলো ফেস করেছি, পরবর্তীতে একটি রাজনৈতিক সরকার আসলে যেন সেই সমস্যা ফেস না করতে হয়। পরবর্তী যে রাজনৈতিক সরকার আসবে তারা হয়তো আরও ভালো করবেন। কিন্তু আমরা যে ভয়ের সময় কাটিয়েছি, সেটা যে আবার পুনরাবৃত্তি হবে না সেটির কোনো গ্যারান্টি নেই। যতগুলো কালো আইন আছে, সেগুলো নিয়ে আমাদের মিডিয়ার সংস্কার কমিশন কথা বলবেন।’ 

বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমরা সাংবাদিকতাকে বলি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। কিন্তু এই স্তম্ভের খেয়াল তো আমরা করিনি। আমাদের বিচার বিভাগ, আমাদের প্রশাসন সেগুলোর দিকে মনযোগ ছিল। কিন্তু আমরা এমন এক ট্রেন যে, আমরা সবার দিকে লাইট ফেলি কিন্তু নিজের দিকে আমাদের লাইটটা পরে না। আমরা নিজেরা নিজেদেরকে অন্ধকারে রেখেছিলাম। আমরা জনগণের কণ্ঠস্বর, এগুলো আমরা বলি কিন্তু আমরা এর আগে নিজেদেরকে নিয়ে এভাবে কথা বলেছি?’ 

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সাংবাদিকতা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ, আমরা সাংবাদিকেরা এটা পাহারা দেওয়ার জন্য কী ভূমিকা পালন করব?’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের বিগ পাওয়ারহুড এবং বিগ মিডিয়া এটা ছোট করতেই হবে। একজন মালিকের একটার বেশি মিডিয়া থাকতে পারবে না। তারপর কালো টাকার মালিকদের মিডিয়াতে আসা কীভাবে আসা বন্ধ করা যায়। মিডিয়া বন্ধ না করে, কালো টাকার জায়গায় তাঁকে ধরেন। তার যে অর্থনৈতিক অবদান সেখানে তাঁকে ধরেন। গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার অভিযোগ যেন না ওঠে।’ 

এ মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘গার্মেন্টস শ্রমিকের থেকে সাংবাদিকদের বেতন কম। কারণ গার্মেন্টস শ্রমিকেরা রক্ত দিয়েছে। দিয়ে দিয়ে...তারা এখনো দিচ্ছে। আমাদের সব পেশার একটা সুরক্ষা আছে। কিন্তু সাংবাদিকতা পেশার কি সুরক্ষা আছে? আমাদের যে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট, সেটাকে কী আরও শক্তিশালী করতে হবে? আমাদের সবচেয়ে বড় যে হোতা প্রেস কাউন্সিল, সেটাকে সত্যিকারভাবে শক্তিশালী করা এবং তার মধ্য দিয়ে অনেকগুলো কাজ ঠিক করতে হবে। আমাদের যদি কমপিটিশন বাড়ে, তাহলে ভালো সাংবাদিকেরা সামনে আসবে। আর আমাদের আইন যদি সংস্কার হয়, তাহলে সাংবাদিকদের সুরক্ষা হবে।’ 

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইফুল আলম চৌধুরী, সাংবাদিক সেলিম খান, কাওসার মাহমুদ, খাজা মইনউদ্দিন, আহমেদ জুয়েল, অধ্যাপক আর আর রাজী, আসাদুল কিবরিয়া, আরিফুল সাজ্জাদ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কমিশনের বৈঠক

আগামী সংসদে উচ্চকক্ষের সুপারিশ থাকতে পারে

  • সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছে কমিশন।
  • আদেশে ভিন্নমতের উল্লেখ থাকবে না।
  • চূড়ান্ত সুপারিশ আজ প্রধান উপদেষ্টার কাছে যেতে পারে।
তানিম আহমেদ, ঢাকা 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গণভোটের পর সংবিধান সংস্কার পরিষদে বাস্তবায়ন আদেশ পাস হয়ে গেলে আগামী সংসদেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠনের সুপারিশ থাকতে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। নতুন সংসদ নির্ধারিত ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, সে বিষয়েও একটি বিকল্প ভাবা হচ্ছে।

সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশের খসড়া তৈরির কাজ গতকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে। প্রস্তাবিত সময়ের মধ্যে নতুন সংসদ সংস্কার বাস্তবায়ন না করলে করণীয় কী হবে, তা গতকাল রাত বা আজ (সোমবার) সকালের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে। আজ সকালে কমিশনের আবার বৈঠকের মাধ্যমে সুপারিশ চূড়ান্ত করে দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।

সনদ বাস্তবায়নে কমিশন সুপারিশের যে রূপরেখা ঠিক করেছে, তাতে প্রথমে গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। তার অধীনে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে করা হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যেই সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে।

কমিশন সূত্র জানায়, বাস্তবায়নের এই পুরো প্রক্রিয়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে উল্লেখ থাকবে। আদেশ জারির পর এর কিছু অংশ তাৎক্ষণিকভাবে এবং কিছু কিছু বিষয় পরবর্তী সময়ে কার্যকর হবে। আদেশের কোন ধারা কবে কার্যকর হবে, তা উল্লেখ থাকবে। জুলাই সনদের সর্বসম্মত ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব আদেশের পরিশিষ্টে উল্লেখ থাকবে। সেখানে কোনো দলের ভিন্নমতের উল্লেখ থাকবে না।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘আমরা সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছি। কমিশন আশা করছে, আগামীকালের (আজ সোমবার) মধ্যে সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া সম্ভব হবে।’

দ্বিকক্ষের সংসদ নিয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হলেও গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিমত আছে। বিএনপিসহ সমমনা কয়েকটি দল নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনের পক্ষে। অন্যদিকে জামায়াত, এনসিপিসহ সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দল পিআর ভোটের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের দাবি জানিয়েছে। আবার জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ ইসলামপন্থী কয়েকটি দল ‍উভয় কক্ষেই পিআরের ভিত্তিতে ভোট চেয়েছে। একাধিক সূত্র বলছে, বিএনপি পিআরে উচ্চকক্ষ মানলে নিম্নকক্ষের পিআরের দাবি থেকে দলগুলো সরে যাবে। বিষয়টি আদেশে আলাদা করে রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বৈঠক সূত্র জানায়, গণভোটে যদি সনদ বেশি ‘হ্যাঁ’ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়, তাহলে আগামী সংসদে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন বাধ্যতামূলক হবে। সে ক্ষেত্রে বিষয়টি আদেশে আলাদা করে লেখা থাকবে। সংবিধান সংস্কার পরিষদেও সংস্কার প্রস্তাব পাস হলে এর পরের ১৫ দিনের মধ্যে দলগুলো তাদের উচ্চকক্ষের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে।

আগামী সংসদ ২৭০ দিনের মধ্যে সনদ বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, সে বিষয়ে কমিশন নানা বিকল্প নিয়ে আলোচনা করেছে। গতকাল বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন, গণভোটে সংস্কার প্রস্তাবগুলো পাস হলে আগামী সংসদে সেগুলো বাস্তবায়ন করা বাধ্যতামূলক হবে। কমিশন এটিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। এর বাইরে কোনো নিশ্চয়তা বিধান করা যায় কি না, তা-ও কমিশনের বিবেচনায় আছে।

সংসদ বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘জুলাই সনদ যেহেতু রাজনৈতিক দলিল, তাই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। রাজনীতিকদের ওপর আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে হবে।’

কমিশনের পক্ষ থেকে আদেশের সঙ্গে বিকল্প একটি প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে। কমিশন সরকারকে গণভোট নিয়ে একটি আইন তৈরি করতে বলার কথা ভেবেছে। এতে সনদের সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো থাকবে। সে ক্ষেত্রে সব প্রস্তাবের সমন্বয়ে একটি আইন বানাতে হবে। গণভোটে এটা উঠবে। সমন্বিত আইনটি পাস হয়ে গেলে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান পরিষদ পুরো বাস্তবায়ন না করতে পারলেও আইনটি সংবিধানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে যাবে। তবে কমিশনের এই প্রস্তাবে বিশেষজ্ঞদের সায় নেই বলে জানা গেছে।

এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘কমিশনের বিকল্প প্রস্তাবে বিষয়টি থাকবে। তবে আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় আমরা এটা সমর্থন করিনি।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ অনুমোদন করেন কি না’ এবং ‘সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়ন চান কি না’—গণভোটে এ রকম প্রশ্ন রাখার কথা বিবেচনা করছে ঐকমত্য কমিশন। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে ঐকমত্য কমিশন যেভাবে সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে, সেভাবেই বাস্তবায়িত হবে। এখানে কোনো দলের ভিন্নমত গুরুত্ব পাবে না।

গণভোটের বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য থাকলেও গণভোট কবে হবে, এর ভিত্তি কী হবে, ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, এসব ক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে মতবিরোধ আছে। ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, গণভোটের দিন-তারিখ কবে হবে এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ রাষ্ট্রপতি, নাকি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জারি করবেন, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গতকাল তাদের সংসদ ভবনের কার্যালয় থেকে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করে। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যুক্ত হন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন। আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। জাতীয় ঐকমত্য গঠনপ্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও সভায় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সহকারী উপজেলা-থানা ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সহকারী উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সহকারী উপজেলা ও থানা ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সম্প্রতি আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) উপজেলা বা থানা বা সমমান ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আশফাকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

এরপর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গাজীপুর সদর উপজেলার সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলমকে সভাপতি এবং গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শরীফ আল রায়হানকে মহাসচিব করা হয়েছে।

এ ছাড়া কমিটিতে আরও যাঁরা যাঁরা আছেন—

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক

গ্রাহকপ্রতি সিম কার্ডের সংখ্যা ১০টিতে নামছে এ মাসেই, নির্বাচনের আগে আরও কমানোর চিন্তা

  • বৈঠকে নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা।
  • ৩০ অক্টোবর থেকে এক এনআইডির বিপরীতে সিম রাখা যাবে ১০টি।
  • নির্বাচনের আগে ব্যক্তিপর্যায়ে সিমের সংখ্যা আরও কমানোর চেষ্টা হবে।
  • স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ ও পদায়ন করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ৩৯
আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) ঢাকায় আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৫তম সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: পিআইডি
আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) ঢাকায় আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৫তম সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: পিআইডি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার গ্রাহকপ্রতি মোবাইল সিম কার্ডের সংখ্যা কমিয়ে আনার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার দুপুরে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। বৈঠকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী একজন গ্রাহক তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে সর্বোচ্চ ১৫টি মোবাইল সিম নিবন্ধন করতে পারেন। ৩০ অক্টোবরের পর একটি এনআইডির বিপরীতে সিম নিবন্ধনের সংখ্যা ১০টিতে নামিয়ে আনা হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গ্রাহকপ্রতি সিমের সংখ্যা আরও কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, কোনো ঘটনা ঘটার পর দেখা যায়, সিমটি সেই ব্যক্তির নামে নিবন্ধন করা নয়। একজনের নামের সিম কার্ড অন্যজন ব্যবহার করে অপরাধ করে। এতে প্রকৃত দোষী ব্যক্তি অনেক সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। এ জন্য নির্বাচনের আগে ব্যক্তিপর্যায়ে নিবন্ধন করা সিম কার্ড কমিয়ে আনা হবে।

নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আপত্তি আসেনি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আগেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোতে নিয়োগ ও পদায়নের ক্ষেত্রে কোনো পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি। কারও বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ ও পদায়ন করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি নির্বাচন সুষ্ঠু ও ভালোভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির এ বৈঠকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয় উঠেছে। দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতকারীদের কর্মকাণ্ড রোধ, জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলার রেকর্ড, তদন্ত অগ্রগতি, দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী উসকানিমূলক সাইবার প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।

এ ছাড়া মাদকের অপব্যবহার রোধ, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিনপরবর্তী সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও প্রতিরোধ, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনগুলোর অপতৎপরতা রোধ, পোশাক কারখানা–ওষুধশিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির তৎপরতা রোধ, অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান, সীমান্ত ও পার্বত্যাঞ্চল পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ নিয়েও আলোচনা হয়।

ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীর্ষ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ৩০ অক্টোবর ইসির মতবিনিময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নির্বাচন কমিশন। ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচন কমিশন। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ মতবিনিময় ও প্রস্তুতিমূলক সভা ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বেলা ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।

আজ রোববার সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো সভার চিঠি থেকে জানা যায়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সভাটি অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত থাকবেন।

চিঠিতে বলা হয়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় ও প্রাক-প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হবে।

ইসির চিঠি অনুযায়ী, অন্তত ৩১ জন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাকে সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রিত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন—মন্ত্রিপরিষদসচিব; স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, নৌপরিবহন, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব; পররাষ্ট্র, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (সমন্বয় ও সংস্কার), অর্থ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবেরা। এর পাশাপাশি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিবকেও বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর নির্বাহী পরিচালক বা উপযুক্ত কোনো কর্মকর্তাকে সভায় পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ডাক অধিদপ্তর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এবং কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস), ঢাকাকেও সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

এর আগে ২০ অক্টোবর ইসি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেছে।

কমিশন গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে। এর অংশ হিসেবে ২৮ সেপ্টেম্বর নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয় এবং একই দিন শিক্ষকদের সঙ্গেও আলোচনা করে ইসি। সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গেও আরও সংলাপ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছে কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত