Ajker Patrika

স্বাধীনতা পুরস্কার: বদরুদ্দীন উমরকে নিয়ে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৫, ১৫: ৪০
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও লেখক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও লেখক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর। ফাইল ছবি

শিক্ষা ও গবেষণায় গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে লেখক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। অবশ্য তিনি এ সম্মাননা নিতে রাজি হননি। কিন্তু তাঁকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দিতে পেরে গর্বিত বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তাঁর (বদরুদ্দীন উমর) সম্মাননা স্মারক আমাদের পরের প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত থাকবে।’

প্রধান উপদেষ্টা স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তদের কথা উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে বলেন, ‘তাঁরা আমাদের জাতিকে মহান উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। পুরস্কার দিয়ে শুধু তাঁদের সম্মানিত করছি না, বরং জাতি হিসেবে নিজেদের সম্মান তাঁদের মাধ্যমে পাচ্ছি। তাঁরা প্রত্যেকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহুল পরিচিত। তাঁরা জাতির জন্য অনেক কিছু দিয়ে গেছেন। তাঁদের কথা জীবদ্দশায় স্মরণ করতে না পারলে অকৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যাব। যাদের এ সম্মান দিতে চাই, যথা সময়ে সেটা যেন দিই।’

স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশিদ বলেন, বদরুদ্দীন উমর পুরস্কার গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করায় তাঁর জন্য পদক তৈরি করা হয়নি। তবে পদকের রেপ্লিকা জাতীয় জাদুঘরের সংরক্ষিত করা হবে।

এর আগে গত ৬ মার্চ রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।

এর আগে ১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমরকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়, তবে তিনি তা তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদের পুরস্কার পান এবং তা প্রত্যাখ্যান করেন।

বদরুদ্দীন উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আবুল হাশিম ও মাতার নাম মাহমুদা আখতার মেহেরবানু বেগম। তাঁর পিতা রাজনীতিবিদ আবুল হাশিম দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলোসফি, পলিটিকস অ্যান্ড ইকোনমিকস (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন।

বদরুদ্দীন উমর প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের যাত্রা শুরু হয় তাঁরই হাত ধরে। ১৯৬৮ সালে পদত্যাগ করেন তিনি।

বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ছিলেন বদরুদ্দীন উমর। বর্তমানে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি এবং বাংলাদেশ লেখক শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

তিনি ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ‘সংস্কৃতি’ নামে একটি রাজনৈতিক সাময়িকী সম্পাদনা করেছেন। ১৯৭৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন। তাঁকে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং ১৯৭৬ সালের মাঝামঝি অনুষ্ঠেয় বিশেষ কংগ্রেসের প্রতিবেদন তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন এবং সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলা করলেন মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের স্ত্রী

জামায়াত আমিরের পাঁচ ঘণ্টার কর্মদিবস আদতে নারীর গায়েবি শিকল

ফেসবুকে জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য, তোপের মুখে ওসি

‘শিক্ষক’ পেশা দিয়ে নিজের পাসপোর্ট বানান পাসপোর্টের শাহিনুর, চাকরিচ্যুতির আগেই চান অব্যাহতি

চট্টগ্রামে ওসি ও যুবদলের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যা মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই জাতীয় সনদ: ৩ ধাপে বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ৩৬
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক। ফাইল ছবি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক। ফাইল ছবি

জুলাই জাতীয় সনদ তিন ধাপে বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এগুলো হলো আইনি ভিত্তি দিতে প্রথমে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি, পরে আদেশের প্রশ্নে গণভোট এবং সর্বশেষ আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা (সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ) পালনের ক্ষমতা দেওয়ার মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন।

ঐকমত্য কমিশন আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই সুপারিশ জমা দেবে। আগামী সংসদ সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো অনুমোদন না করলে কী হবে, তা নিয়ে কমিশন একটি বিকল্প প্রস্তাবও সুপারিশ করবে। সেখানে থাকবে বিশেষ আদেশ জারির পর সংবিধানসংক্রান্ত সব প্রস্তাব নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বিল তৈরি, পরে বিলের প্রশ্নে গণভোট এবং সংবিধান সংস্কার পরিষদের মেয়াদে বাস্তবায়িত না হলে বিলে থাকা বিষয়গুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাবে।

গতকাল সোমবার যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ড. ‍মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য কমিশনের প্রস্তুত করা সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হয়। প্রস্তুত করা সুপারিশের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমিশনের প্রধানকে সুপারিশগুলো আমরা অবহিত করেছি। এ ব্যাপারে তিনি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।’

কমিশন সূত্র জানায়, চূড়ান্ত সুপারিশ অনুযায়ী সনদ বাস্তবায়নে গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। এর অধীনে জারি হবে গণভোট-বিষয়ক একটি অধ্যাদেশ। এর ভিত্তিতেই হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যে সংবিধানসংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে। বাস্তবায়নের পুরো প্রক্রিয়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে উল্লেখ থাকবে। আদেশ জারির পর এর কিছু অংশ তাৎক্ষণিক এবং কিছু কিছু বিষয় পরে কার্যকর হবে। আদেশের কোন ধারা কবে কার্যকর হবে, তা উল্লেখ থাকবে। জুলাই সনদের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব আদেশের পরিশিষ্টে উল্লেখ থাকবে। তবে সেখানে কোনো দলের ভিন্নমতের বিষয় উল্লেখ থাকবে না। শুধু কমিশনের ৮৪টি প্রস্তাব/সিদ্ধান্তের উল্লেখ থাকবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই ধাপের সংলাপের ভিত্তিতে রাষ্ট্রকাঠামোর বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি করা হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ। এগুলোর মধ্যে ৪৭টি প্রস্তাব সংবিধানসম্পর্কিত। মূলত এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা আছে। এই প্রস্তাবগুলোর বেশির ভাগের ক্ষেত্রে কোনো না কোনো দলের ভিন্নমত আছে। এগুলোর মধ্যে ৭টি মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবে ভিন্নমত আছে বিএনপির।

কমিশনের একাধিক সূত্র জানায়, সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে গণভোটে রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) উল্লেখ থাকবে না। সনদের ওপরই গণভোট হবে। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে ঐকমত্য কমিশন যেভাবে সংবিধান সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে, সেভাবেই তা বাস্তবায়িত হবে। ‘গণভোট ও সংবিধান সংস্কার পরিষদে পাস হলে আগামী সংসদেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে আইনসভার উচ্চকক্ষ গঠন করার সুপারিশ করা হতে পারে’; যা আদেশে আলাদা করে উল্লেখ থাকতে পারে।

সংবিধান সংস্কার পরিষদকে সনদের সংবিধানসম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো সমাধানে বাধ্যবাধকতা রাখতে বিকল্প আরেকটি প্রস্তাব কমিশন দেবে বলে সূত্র জানায়। বিকল্প সুপারিশে বলা হতে পারে, সংবিধানসংক্রান্ত সব সুপারিশ বিল আকারে আগামী চার মাসের মধ্যে সরকারকে তৈরি করতে বলা হবে। সে ক্ষেত্রে গণভোটে বিলটি দেওয়া হবে। সংবিধান সংস্কার পরিষদ আলোচনার মাধ্যমে বিলের শব্দ বা বাক্য পরিবর্তন করতে পারবে, তবে স্পিরিট বা মূলভাব পরিবর্তন করা যাবে না। তবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে বিষয়গুলোর সমাধান না হলে ২৭১তম দিনে বিলগুলো সংবিধানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে গণভোটে প্রশ্ন হতে পারে—জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ অনুমোদন করেন কি না এবং গণভোট বিলের প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন চান কি না।

গণভোটের সময় এবং আদেশ জারির সিদ্ধান্ত দেবে সরকার

গণভোটে জুলাই সনদের বৈধতা নেওয়ার প্রশ্নে দলগুলো একমত হলেও গণভোট কবে হবে, এর ভিত্তি কী হবে, ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে—এসব ক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে মতবিরোধ আছে। কমিশন সূত্র জানায়, গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে—এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।

জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে জারি করার দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি। বিএনপি আদেশ জারির পক্ষে নয়। এই অবস্থায় আদেশটি রাষ্ট্রপতি নাকি প্রধান উপদেষ্টা জারি করবেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভারও সরকারের ওপর ছেড়ে দেবে কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলা করলেন মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের স্ত্রী

জামায়াত আমিরের পাঁচ ঘণ্টার কর্মদিবস আদতে নারীর গায়েবি শিকল

ফেসবুকে জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য, তোপের মুখে ওসি

‘শিক্ষক’ পেশা দিয়ে নিজের পাসপোর্ট বানান পাসপোর্টের শাহিনুর, চাকরিচ্যুতির আগেই চান অব্যাহতি

চট্টগ্রামে ওসি ও যুবদলের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যা মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিভিন্ন মামলায় পরোয়ানা

হাসিনাসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে নোটিশ করেনি ইন্টারপোল

  • ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের নির্দেশে রেড নোটিশের আবেদন করে পুলিশ।
  • সাত মাসেও ইন্টারপোল নোটিশ জারি করেনি।
  • সাধারণত আবেদনের তিন সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করে ইন্টারপোল।
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা 
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৩: ০১
শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ পলাতক ২৪ জনের বিরুদ্ধে সাত মাসেও রেড নোটিশ জারি করেনি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)। বাংলাদেশ পুলিশের সূত্র বলেছে, তাঁদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইন্টারপোলের কাছে এ সহায়তা চাওয়া হয়।

পলাতক এই ২৪ জনের বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখার সূত্র বলছে, ওই ২৪ জনের বিরুদ্ধে এখনো ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি না হওয়ার কারণ জানা যায়নি। আবেদন পেলে ইন্টারপোল তাদের নিজস্ব নিয়মে আসামির সব নথি ও তথ্য যাচাই-বাছাই করে নোটিশ জারি করে। সাধারণত আবেদনের তিন সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ এর আগে ইন্টারপোলের কাছ থেকে জবাব পেয়েছে।

জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এখনো তারা কিছু ক্ষেত্রে রেড নোটিশ জারি করেনি। হয়তো যাচাই-বাছাই করছে, এটা তাদের প্রক্রিয়া। তারা রেড নোটিশ জারি না করলেও বিচার থেমে থাকবে না। বিচার আসামির অনুপস্থিতিতেই হবে।

তিনি বলেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনতে সব প্রক্রিয়াও চালু রাখতে হবে। ইন্টারপোল এবং রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের কূটনৈতিক ধারাও অব্যাহত রাখতে হবে।

সূত্র জানায়, শেখ হাসিনাসহ পলাতক ২৮ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) ইন্টারপোলে আবেদন করেছে। এখন পর্যন্ত ইন্টারপোল তাঁদের মধ্যে মাত্র চারজনের নামে রেড নোটিশ জারি করেছে। তাঁরা হলেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান হত্যা মামলার আসামি আরিফ সরকার, মহসিন মিয়া ও আওলাদ হোসেন। মহসিন মিয়াকে গত জুলাইয়ে দুবাই থেকে ইন্টারপোলের সহায়তায় দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তবে আবেদন করা হলেও ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে মোস্ট ওয়ান্টেডের বাংলাদেশের তালিকায় বেনজীর আহমেদের ছবি ও নাম এখনো উঠানো হয়নি।

যে ২৪ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল এখনো রেড নোটিশ জারি করেনি তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার ব্যবসায়ী মো. সাইফুল আলম ও তাঁর তিন ভাই এবং কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি), ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা।

চলতি বছরের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও দেশের কয়েকটি আদালতের নির্দেশে তাঁদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন করে পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিবির এক কর্মকর্তা বলেন, আবেদন করলেই ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করে না। সংস্থাটি তাদের নিয়মে আসামির সব নথি ও তথ্য যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়। এনসিবি সাধারণত আবেদন জমা দেওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে ইন্টারপোলের কাছ থেকে জবাব পায়। এত দীর্ঘ সময় ঝুলিয়ে রাখে না। তিনি বলেন, আসামিরা কে কোথায় আছেন, সে বিষয়ে ইন্টারপোল জানে, বাংলাদেশকে তথ্যও দিয়েছে। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। তবে রেড নোটিশের বিষয়ে সংস্থাটি এখনো কিছু জানায়নি।

ইন্টারপোলের সঙ্গে কাজ করা পুলিশের সাবেক এক কর্মকর্তা বলেন, ইন্টারপোল রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার হতে চায় না। বিভিন্ন দেশে সরকার পরিবর্তনের পর সাবেকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। দেশগুলো ইন্টারপোলের সহায়তা চায়। তাই এসব আবেদন ইন্টারপোল খুব সতর্কভাবে দেখে। ইন্টারপোল কোনো আবেদনের বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায় না, নীরবতা পালন করে। যেসব আবেদনে তারা রেড নোটিশ জারি করে, সেগুলো দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে জানিয়ে দেয়।

এনসিবির কর্মকর্তারা বলছেন, ইন্টারপোল দুই ভাবে আবেদন মূল্যায়ন করে, জরুরি ও সাধারণ। কোনো দেশ জরুরি আবেদন করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয় সংস্থাটি। আর কম গুরুত্বপূর্ণ হলে ইন্টারপোলের ফ্রান্সের কমিটি সেটি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় নেয়।

আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম শাহজাহান সাইফ বলেন, আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচারপ্রক্রিয়া চলতে পারে। তবে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারকে উদ্যোগও নিতে হবে।

ইন্টারপোলের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী মোট ৬ হাজার ৫১৭ জন ওয়ান্টেড ব্যক্তির বিরুদ্ধে রেড নোটিশ আছে, যার মধ্যে বাংলাদেশি ৬০ জন।

জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, ‘ইন্টারপোল তাদের নিজস্ব আইনি কাঠামোর মধ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করে। আমরা নিয়মের মধ্যে থেকে তাদের কাছে আবেদন করেছি। তারা রেড নোটিশ জারি করবে কি না, এটা তাদের ব্যাপার। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলা করলেন মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের স্ত্রী

জামায়াত আমিরের পাঁচ ঘণ্টার কর্মদিবস আদতে নারীর গায়েবি শিকল

ফেসবুকে জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য, তোপের মুখে ওসি

‘শিক্ষক’ পেশা দিয়ে নিজের পাসপোর্ট বানান পাসপোর্টের শাহিনুর, চাকরিচ্যুতির আগেই চান অব্যাহতি

চট্টগ্রামে ওসি ও যুবদলের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যা মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পবিত্র হজ পালন

হজের কোটা পূরণ হচ্ছে না ৭ বছর

  • উড়োজাহাজের ভাড়া বৃদ্ধি, সৌদি আরবে খরচ বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণ।
  • বাংলাদেশ ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটা পেয়ে আসছে।
আয়নাল হোসেন, ঢাকা 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশে ৬-৭ বছর ধরে হজযাত্রীর কোটা পূরণ হচ্ছে না। উড়োজাহাজের ভাড়া বৃদ্ধি, সৌদি আরবে খরচ বেড়ে যাওয়া, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিনিয়োগে ভাটাসহ নানা কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

কোন দেশের কতজন হজ করতে পারবেন, তা নির্ধারণ করে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। ওআইসির তথ্য অনুযায়ী, দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ১ শতাংশ প্রতিবছর হজে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে আসছেন। সে অনুযায়ী ১০ বছর ধরে বাংলাদেশ ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটা পেয়ে আসছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে নিবন্ধিত অনেকে ২০২০ সাল থেকে হজে যেতে পারেননি। করোনা অতিমারির ধাক্কা ২০২২ সাল পর্যন্ত ছিল। ২০২২ সালে হজে গিয়েছিলেন ৫৯ হাজার ৯০৯ জন। ২০২৩ সালে গিয়েছিলেন ১ লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন, ২০২৪ সালে ৮৫ হাজার, ২০২৫ সালে ৮৭ হাজার ২০০ এবং আগামী বছরের (২০২৬ সালে) জন্য হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন ৭৩ হাজার ৪১৬ জন।

মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা যায়, ২০১৯ সালে সরকারি হজ প্যাকেজ ছিল ৩ লাখ ৪৪ হাজার থেকে ৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ থেকে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। ২০২৩ সালে শুধু এক প্যাকেজে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা ছিল।

২০২৪ সালে করা হয় ৫ লাখ ৭৮ হাজার থেকে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৬৬ টাকা, ২০২৫ সালে করা হয় ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৭২০ থেকে ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৭০ টাকা এবং আগামী বছরের জন্য করা হয় ৪ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ থেকে ৬ লাখ ৯০ হাজার ৫৯৭ টাকা।

এদিকে প্রতিবছরই সরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণার পরপরই বেসরকারি হজ এজেন্সির মালিকেরাও বেসরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে আসছেন। তাঁরা বরাবরই উড়োজাহাজের ভাড়া কমানোর পক্ষে বলে আসছেন। তবে বর্তমানে সৌদি আরব অংশে সব ধরনের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মোট খরচ বেড়েছে বলে তাঁরা জানান।

হজযাত্রী কোটা পূরণ হচ্ছে না কেন? জানতে চাইলে এজেন্সিগুলোর প্রতিনিধিরা বলছেন, অনেকেই ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ওমরাহ করছেন। এতে গ্রামগঞ্জের মানুষের ধারণা, তাঁদের হজ পালন হয়ে গেছে। এই কারণে অনেকে নিবন্ধন করার পরও তাঁদের টাকা ফেরত নিয়েছেন। গত বছর কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার তিনজন বাসিন্দা হজ নিবন্ধন করার পরও হজে যাননি। পরে তাঁরা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ওমরাহ পালন করে আসেন বলে জানা গেছে।

জানতে চাওয়া হলে বেসরকারি হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, উড়োজাহাজের ভাড়া অস্বাভাবিক বাড়া, সৌদি আরবে খরচ অনেক বেড়ে যাওয়া, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অনেক ব্যাংক গ্রাহকদের জমাকৃত টাকা পরিশোধ করতে পারছে না, ব্যবসায় মন্দা ও এক বছর ধরে বিনিয়োগ প্রায় বন্ধের কারণে অনেকেই হজে যেতে পারছেন না। ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এলে দেশে বিনিয়োগ স্থিতিশীল হবে এবং বেশি মানুষ হজে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

দেশে হজযাত্রী কোটা পূরণ কেন হচ্ছে না, জানতে চাওয়া হয় ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেনের কাছে। তিনি তাঁর জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দীকের মাধ্যমে জানান, সৌদি রোডম্যাপ অনুসারে হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়সূচি প্রায় দুই মাস এগিয়ে এসেছে। এর ফলে পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় অনেকে নিবন্ধন করতে পারেননি। ক্রমবর্ধমানহারে ওমরাহযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগের চেয়ে বাংলাদেশ থেকে ওমরাহযাত্রীর সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে। এখন বছরে এ দেশ থেকে প্রায় ৪ লাখ মুসলমান ওমরাহ পালন করে থাকেন। এবং কিছু ব্যাংকের তারল্যসংকটের কারণেও হজযাত্রী নিবন্ধন কমে থাকতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলা করলেন মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের স্ত্রী

জামায়াত আমিরের পাঁচ ঘণ্টার কর্মদিবস আদতে নারীর গায়েবি শিকল

ফেসবুকে জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য, তোপের মুখে ওসি

‘শিক্ষক’ পেশা দিয়ে নিজের পাসপোর্ট বানান পাসপোর্টের শাহিনুর, চাকরিচ্যুতির আগেই চান অব্যাহতি

চট্টগ্রামে ওসি ও যুবদলের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যা মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুই দশক পর জেইসি বৈঠক

আকাশ ও নৌপথে সরাসরি সংযোগসহ অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার চায় বাংলাদেশ–পাকিস্তান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশ থেকে পাট ও কৃষিপণ্য আমদানি বাড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। দুই দেশের মধ্যে প্রায় দুই দশক পর অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের নবম (জেইসি) বৈঠক। আজ সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এ বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারে একাধিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন অর্থ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আর পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন দেশটির জ্বালানি (পেট্রোলিয়াম বিভাগ) মন্ত্রী আলী পারভেজ মালিক। বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।

২০০৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সর্বশেষ জেইসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দীর্ঘ দুই দশক পর আবার বৈঠক বসল, যা দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন গতি এনেছে। বিশেষ করে গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক যোগাযোগ উষ্ণ হতে শুরু করেছে।

সভা শেষে সাংবাদিকদের পাকিস্তানের পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী বলেন, ‘দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ এখনো ১ বিলিয়ন ডলারের নিচে, এর পরিমাণ বাড়ানো উচিত। আমরা বাংলাদেশ থেকে পাটসহ কৃষিপণ্য আমদানি বাড়াতে চাই। ২০ বছর পর এই জেইসি বৈঠক হলো। একটি ইতিবাচক আলোচনার ধারা সৃষ্টি হয়েছে। দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ সম্প্রসারণে কোথায় সম্ভাবনা আছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও আলোচনা হবে।’

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আকাশ ও নৌপথে সরাসরি যোগাযোগ আবার চালু, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তিনি বৈঠকটিকে ‘অত্যন্ত সফল’ বলে উল্লেখ করেন।

বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, জ্বালানি, উচ্চশিক্ষা, ব্যাংকিং, পর্যটন, ক্রীড়া ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। উভয় দেশই বন্দর ও লজিস্টিক সুবিধা ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবহন ব্যয় হ্রাস ও আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করে।

একই বৈঠকে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এবং পাকিস্তান হালাল অথরিটির (পিএইচএ) মধ্যে ‘হালাল বাণিজ্য সহযোগিতা’ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এতে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাকসুরা নূর এবং পাকিস্তানের পক্ষে ঢাকায় হাইকমিশনার ইমরান হায়দার।

বৈঠক শেষে উভয় দেশই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার ও অর্থনৈতিক অংশীদারত্বকে নতুন উচ্চতায় নেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে। সিদ্ধান্ত হয়, পরবর্তী (দশম) জেইসি বৈঠক পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলা করলেন মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের স্ত্রী

জামায়াত আমিরের পাঁচ ঘণ্টার কর্মদিবস আদতে নারীর গায়েবি শিকল

ফেসবুকে জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য, তোপের মুখে ওসি

‘শিক্ষক’ পেশা দিয়ে নিজের পাসপোর্ট বানান পাসপোর্টের শাহিনুর, চাকরিচ্যুতির আগেই চান অব্যাহতি

চট্টগ্রামে ওসি ও যুবদলের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যা মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত