মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। বর্তমানে ওপি চলমান না থাকায় পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় একরকম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত জুলাইয়ে ‘পঞ্চম স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’ শিরোনামের ওপির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা অনুমোদন পায়নি। ফলে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি বড় কর্মসূচি।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পঞ্চম এইচপিএনএসপির বাস্তবায়ন চলতি বছরের জুলাইতে শুরু হয়ে ২০২৯ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এর ব্যয়ের আকার ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা। চতুর্থ এইচপিএনএসপি চলতি বছরের জুনে শেষ হয়ে গেছে। ফলে দেশে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন, নিয়মিত ব্যবস্থাপনা ও সেবা কার্যক্রমের জন্য কোনো কর্মসূচি দাপ্তরিকভাবে চালু নেই।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, চতুর্থ কর্মসূচি চলার সময় পরবর্তী কর্মসূচির আগাম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের ক্ষেত্রে ঘাটতি ছিল। সেক্টর কর্মসূচির পদ্ধতিগত বিনিয়োগ পরিকল্পনা (এসআইপি) কার্যক্রমে যুক্ত থাকা একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ২০১৭ সালের জুলাইতে শুরু হওয়া চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচির মেয়াদ আসলে ছিল ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। পরে আর্থিক বরাদ্দ ও মেয়াদ বৃদ্ধি করায় ২০২৪ সালের জুনে শেষ হয় ওই কর্মসূচি। চলতি বছর সাধারণ নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠন করা হয়। নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কোথায় কী হচ্ছে, বুঝে নিচ্ছিলেন। এভাবেই জুন চলে আসে। বিভিন্ন ধাপে পঞ্চম সেক্টর কর্মসূচির পরিকল্পনার (পিআইপি) খসড়া প্রণয়নে দেরি হয়।
জনস্বাস্থ্যবিদ ও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা সেক্টর কর্মসূচিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। তাঁরা বলেন, একই কাজ দুবার করা এড়াতে এ উন্নয়ন কর্মসূচির সূচনা করা হয়। আগে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ৩০ থেকে ৩৫টি অপারেশনাল প্ল্যান নিয়ে কাজ করত। এক কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম অন্য কর্তৃপক্ষ জানত না। এখন এক ওপির অধীনে সব কর্মসূচি একসঙ্গে শুরু এবং একসঙ্গে শেষ হয়।
সেক্টর কর্মসূচি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হলেও এর প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন-সম্পর্কিত সার্বিক সমন্বয় করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। কর্মসূচির খসড়া পরিকল্পনা কমিশনের যাচাই কমিটিতে পাঠানো হয়। এরপর অনুমোদনপ্রক্রিয়ার জন্য পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি সংশোধনী দিয়ে সেক্টর কর্মসূচি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ফেরত পাঠায় পরিকল্পনা কমিশন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতাধীন ২৩টি এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের আওতাধীন ১৫টি অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে চতুর্থ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। পঞ্চমটিতে কয়েকটি কর্মসূচি বাড়ানোর প্রস্তাব ওঠায় তা যাচাই করা হচ্ছে।
সেক্টর কর্মসূচির প্রধান কাজগুলো হচ্ছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি), সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি), অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি), স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থাপনা ও ই-হেলথ, হাসপাতাল সেবা ব্যবস্থাপনা, জীবনধারা এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও প্রচার, মাতৃ, শিশু ও কৈশোর স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন, সম্প্রসারিত টিকা কার্যক্রম (ইপিআই), জাতীয় চক্ষুসেবা, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, প্রজননস্বাস্থ্য, পুষ্টি, সচেতনতামূলক কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ বা উচ্চশিক্ষা, ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কর্মশালা বা সেমিনার, তথ্য ব্যবস্থাপনা বা মানবসম্পদ উন্নয়ন, মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন, গবেষণা, ক্রয়, মজুত ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনা, যক্ষ্মা-কুষ্ঠ ও এইডস এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষাসেবা।
চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য অনুযায়ী, দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ কাজই ওপির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে সরকার। দীর্ঘদিন ধরে ওপির আওতায় কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়ে আসায় এর ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে। এখন এটি না থাকায় সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট শাখা বলছে, ওপির মাধ্যমেই দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা করা হয়। এর ওপর সব জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা যন্ত্রাংশ, অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম ও অন্যান্য উপকরণের শতভাগ অর্থায়ন নির্ভরশীল। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর অর্ধেকের বেশি যন্ত্রাংশ দেওয়া হয় ওপির মাধ্যমে। বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল, রিএজেন্ট এবং ওষুধের এক-তৃতীয়াংশ দেওয়া হয়। সরকারি হাসপাতালে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তাকর্মীদের বেতনও এভাবে দেওয়া হয়। ওপি না থাকায় বন্ধ রয়েছে এসব কার্যক্রম।
হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ডা. সুপ্রিয় সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট কর্মসূচির অতি জরুরি বিষয়গুলো অব্যাহত রাখতে রাজস্ব খাত থেকে বরাদ্দ দিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক কার্যক্রম ও যানবাহনের জ্বালানির খরচও রাজস্ব থেকে অনুমোদনের আবেদন করা হয়েছে।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) কার্যক্রম ওপিতে হওয়ায় এতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে ওপি বাস্তবায়ন শুরু না হওয়া পর্যন্ত রাজস্ব খাত থেকে টিকা কেনার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
সারা দেশে তৃণমূলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিচি) নামে কর্মীদের বেতন বন্ধ রয়েছে ছয় মাস ধরে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলা ইউনিয়নের একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি বলেছেন, তাঁরা পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। ওষুধের সরবরাহ না থাকায় তাঁরা সংকটের আশঙ্কা করছেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ কেনা, বেতন দেওয়া এবং সব সেবা চলে ওপির অর্থে। ক্লিনিকগুলোতে মজুত থাকা ওষুধে চলবে জানুয়ারি পর্যন্ত। জরুরি মজুত দিয়ে মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলতে পারে।’ ওপি না থাকায় বন্ধ রয়েছে সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ, এইডস, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মতো কার্যক্রম। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের (আইপিএইচএন) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গর্ভবতী নারী ও কিশোরীদের জন্য জরুরি ফলিক অ্যাডিস ও আয়রনের ট্যাবলেটও দেওয়া হচ্ছে না।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কিছু সংশোধনীসহ পঞ্চম ওপি ফেরত এসেছে। আশা করছি সংশোধনীর কাজ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হবে। টিকা কার্যক্রম চালু রাখতে রাজস্ব খাত থেকে টিকা কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত কমিটি প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার টিকা ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে। হসপিটাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের অত্যাবশ্যকীয় কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তবে অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ। ওপির যেসব প্রকল্পে ফলাফল আসার সম্ভাবনা কম, সেগুলো বাদ দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।’
জনস্বাস্থ্যবিদদের সংগঠন পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যথাসময়ে যেন নতুন সেক্টর শুরু করা যায়, তার জন্য আগের কর্মসূচি চলমান থাকা অবস্থায় অন্তত দেড় বছর আগে থেকে কাজ শুরু করার প্রয়োজন ছিল। এখন দ্রুত একটা গ্রুপ করা উচিত, যারা দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদনের জন্য জরুরি বিষয়গুলো চিহ্নিত করবে। ওপির বিষয়ে গুরুত্ব না দিলে স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিনে অর্জিত অগ্রগতি ভেঙে পড়বে।’

দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। বর্তমানে ওপি চলমান না থাকায় পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় একরকম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত জুলাইয়ে ‘পঞ্চম স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’ শিরোনামের ওপির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা অনুমোদন পায়নি। ফলে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি বড় কর্মসূচি।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পঞ্চম এইচপিএনএসপির বাস্তবায়ন চলতি বছরের জুলাইতে শুরু হয়ে ২০২৯ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এর ব্যয়ের আকার ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা। চতুর্থ এইচপিএনএসপি চলতি বছরের জুনে শেষ হয়ে গেছে। ফলে দেশে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন, নিয়মিত ব্যবস্থাপনা ও সেবা কার্যক্রমের জন্য কোনো কর্মসূচি দাপ্তরিকভাবে চালু নেই।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, চতুর্থ কর্মসূচি চলার সময় পরবর্তী কর্মসূচির আগাম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের ক্ষেত্রে ঘাটতি ছিল। সেক্টর কর্মসূচির পদ্ধতিগত বিনিয়োগ পরিকল্পনা (এসআইপি) কার্যক্রমে যুক্ত থাকা একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ২০১৭ সালের জুলাইতে শুরু হওয়া চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচির মেয়াদ আসলে ছিল ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। পরে আর্থিক বরাদ্দ ও মেয়াদ বৃদ্ধি করায় ২০২৪ সালের জুনে শেষ হয় ওই কর্মসূচি। চলতি বছর সাধারণ নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠন করা হয়। নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কোথায় কী হচ্ছে, বুঝে নিচ্ছিলেন। এভাবেই জুন চলে আসে। বিভিন্ন ধাপে পঞ্চম সেক্টর কর্মসূচির পরিকল্পনার (পিআইপি) খসড়া প্রণয়নে দেরি হয়।
জনস্বাস্থ্যবিদ ও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা সেক্টর কর্মসূচিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। তাঁরা বলেন, একই কাজ দুবার করা এড়াতে এ উন্নয়ন কর্মসূচির সূচনা করা হয়। আগে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ৩০ থেকে ৩৫টি অপারেশনাল প্ল্যান নিয়ে কাজ করত। এক কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম অন্য কর্তৃপক্ষ জানত না। এখন এক ওপির অধীনে সব কর্মসূচি একসঙ্গে শুরু এবং একসঙ্গে শেষ হয়।
সেক্টর কর্মসূচি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হলেও এর প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন-সম্পর্কিত সার্বিক সমন্বয় করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। কর্মসূচির খসড়া পরিকল্পনা কমিশনের যাচাই কমিটিতে পাঠানো হয়। এরপর অনুমোদনপ্রক্রিয়ার জন্য পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি সংশোধনী দিয়ে সেক্টর কর্মসূচি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ফেরত পাঠায় পরিকল্পনা কমিশন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতাধীন ২৩টি এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের আওতাধীন ১৫টি অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে চতুর্থ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। পঞ্চমটিতে কয়েকটি কর্মসূচি বাড়ানোর প্রস্তাব ওঠায় তা যাচাই করা হচ্ছে।
সেক্টর কর্মসূচির প্রধান কাজগুলো হচ্ছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি), সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি), অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি), স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থাপনা ও ই-হেলথ, হাসপাতাল সেবা ব্যবস্থাপনা, জীবনধারা এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও প্রচার, মাতৃ, শিশু ও কৈশোর স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন, সম্প্রসারিত টিকা কার্যক্রম (ইপিআই), জাতীয় চক্ষুসেবা, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, প্রজননস্বাস্থ্য, পুষ্টি, সচেতনতামূলক কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ বা উচ্চশিক্ষা, ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কর্মশালা বা সেমিনার, তথ্য ব্যবস্থাপনা বা মানবসম্পদ উন্নয়ন, মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন, গবেষণা, ক্রয়, মজুত ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনা, যক্ষ্মা-কুষ্ঠ ও এইডস এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষাসেবা।
চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য অনুযায়ী, দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ কাজই ওপির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে সরকার। দীর্ঘদিন ধরে ওপির আওতায় কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়ে আসায় এর ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে। এখন এটি না থাকায় সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট শাখা বলছে, ওপির মাধ্যমেই দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা করা হয়। এর ওপর সব জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা যন্ত্রাংশ, অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম ও অন্যান্য উপকরণের শতভাগ অর্থায়ন নির্ভরশীল। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর অর্ধেকের বেশি যন্ত্রাংশ দেওয়া হয় ওপির মাধ্যমে। বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল, রিএজেন্ট এবং ওষুধের এক-তৃতীয়াংশ দেওয়া হয়। সরকারি হাসপাতালে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তাকর্মীদের বেতনও এভাবে দেওয়া হয়। ওপি না থাকায় বন্ধ রয়েছে এসব কার্যক্রম।
হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ডা. সুপ্রিয় সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট কর্মসূচির অতি জরুরি বিষয়গুলো অব্যাহত রাখতে রাজস্ব খাত থেকে বরাদ্দ দিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক কার্যক্রম ও যানবাহনের জ্বালানির খরচও রাজস্ব থেকে অনুমোদনের আবেদন করা হয়েছে।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) কার্যক্রম ওপিতে হওয়ায় এতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে ওপি বাস্তবায়ন শুরু না হওয়া পর্যন্ত রাজস্ব খাত থেকে টিকা কেনার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
সারা দেশে তৃণমূলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিচি) নামে কর্মীদের বেতন বন্ধ রয়েছে ছয় মাস ধরে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলা ইউনিয়নের একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি বলেছেন, তাঁরা পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। ওষুধের সরবরাহ না থাকায় তাঁরা সংকটের আশঙ্কা করছেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ কেনা, বেতন দেওয়া এবং সব সেবা চলে ওপির অর্থে। ক্লিনিকগুলোতে মজুত থাকা ওষুধে চলবে জানুয়ারি পর্যন্ত। জরুরি মজুত দিয়ে মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলতে পারে।’ ওপি না থাকায় বন্ধ রয়েছে সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ, এইডস, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মতো কার্যক্রম। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের (আইপিএইচএন) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গর্ভবতী নারী ও কিশোরীদের জন্য জরুরি ফলিক অ্যাডিস ও আয়রনের ট্যাবলেটও দেওয়া হচ্ছে না।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কিছু সংশোধনীসহ পঞ্চম ওপি ফেরত এসেছে। আশা করছি সংশোধনীর কাজ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হবে। টিকা কার্যক্রম চালু রাখতে রাজস্ব খাত থেকে টিকা কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত কমিটি প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার টিকা ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে। হসপিটাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের অত্যাবশ্যকীয় কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তবে অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ। ওপির যেসব প্রকল্পে ফলাফল আসার সম্ভাবনা কম, সেগুলো বাদ দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।’
জনস্বাস্থ্যবিদদের সংগঠন পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যথাসময়ে যেন নতুন সেক্টর শুরু করা যায়, তার জন্য আগের কর্মসূচি চলমান থাকা অবস্থায় অন্তত দেড় বছর আগে থেকে কাজ শুরু করার প্রয়োজন ছিল। এখন দ্রুত একটা গ্রুপ করা উচিত, যারা দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদনের জন্য জরুরি বিষয়গুলো চিহ্নিত করবে। ওপির বিষয়ে গুরুত্ব না দিলে স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিনে অর্জিত অগ্রগতি ভেঙে পড়বে।’
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। বর্তমানে ওপি চলমান না থাকায় পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় একরকম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত জুলাইয়ে ‘পঞ্চম স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’ শিরোনামের ওপির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা অনুমোদন পায়নি। ফলে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি বড় কর্মসূচি।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পঞ্চম এইচপিএনএসপির বাস্তবায়ন চলতি বছরের জুলাইতে শুরু হয়ে ২০২৯ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এর ব্যয়ের আকার ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা। চতুর্থ এইচপিএনএসপি চলতি বছরের জুনে শেষ হয়ে গেছে। ফলে দেশে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন, নিয়মিত ব্যবস্থাপনা ও সেবা কার্যক্রমের জন্য কোনো কর্মসূচি দাপ্তরিকভাবে চালু নেই।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, চতুর্থ কর্মসূচি চলার সময় পরবর্তী কর্মসূচির আগাম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের ক্ষেত্রে ঘাটতি ছিল। সেক্টর কর্মসূচির পদ্ধতিগত বিনিয়োগ পরিকল্পনা (এসআইপি) কার্যক্রমে যুক্ত থাকা একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ২০১৭ সালের জুলাইতে শুরু হওয়া চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচির মেয়াদ আসলে ছিল ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। পরে আর্থিক বরাদ্দ ও মেয়াদ বৃদ্ধি করায় ২০২৪ সালের জুনে শেষ হয় ওই কর্মসূচি। চলতি বছর সাধারণ নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠন করা হয়। নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কোথায় কী হচ্ছে, বুঝে নিচ্ছিলেন। এভাবেই জুন চলে আসে। বিভিন্ন ধাপে পঞ্চম সেক্টর কর্মসূচির পরিকল্পনার (পিআইপি) খসড়া প্রণয়নে দেরি হয়।
জনস্বাস্থ্যবিদ ও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা সেক্টর কর্মসূচিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। তাঁরা বলেন, একই কাজ দুবার করা এড়াতে এ উন্নয়ন কর্মসূচির সূচনা করা হয়। আগে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ৩০ থেকে ৩৫টি অপারেশনাল প্ল্যান নিয়ে কাজ করত। এক কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম অন্য কর্তৃপক্ষ জানত না। এখন এক ওপির অধীনে সব কর্মসূচি একসঙ্গে শুরু এবং একসঙ্গে শেষ হয়।
সেক্টর কর্মসূচি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হলেও এর প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন-সম্পর্কিত সার্বিক সমন্বয় করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। কর্মসূচির খসড়া পরিকল্পনা কমিশনের যাচাই কমিটিতে পাঠানো হয়। এরপর অনুমোদনপ্রক্রিয়ার জন্য পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি সংশোধনী দিয়ে সেক্টর কর্মসূচি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ফেরত পাঠায় পরিকল্পনা কমিশন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতাধীন ২৩টি এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের আওতাধীন ১৫টি অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে চতুর্থ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। পঞ্চমটিতে কয়েকটি কর্মসূচি বাড়ানোর প্রস্তাব ওঠায় তা যাচাই করা হচ্ছে।
সেক্টর কর্মসূচির প্রধান কাজগুলো হচ্ছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি), সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি), অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি), স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থাপনা ও ই-হেলথ, হাসপাতাল সেবা ব্যবস্থাপনা, জীবনধারা এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও প্রচার, মাতৃ, শিশু ও কৈশোর স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন, সম্প্রসারিত টিকা কার্যক্রম (ইপিআই), জাতীয় চক্ষুসেবা, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, প্রজননস্বাস্থ্য, পুষ্টি, সচেতনতামূলক কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ বা উচ্চশিক্ষা, ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কর্মশালা বা সেমিনার, তথ্য ব্যবস্থাপনা বা মানবসম্পদ উন্নয়ন, মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন, গবেষণা, ক্রয়, মজুত ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনা, যক্ষ্মা-কুষ্ঠ ও এইডস এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষাসেবা।
চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য অনুযায়ী, দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ কাজই ওপির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে সরকার। দীর্ঘদিন ধরে ওপির আওতায় কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়ে আসায় এর ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে। এখন এটি না থাকায় সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট শাখা বলছে, ওপির মাধ্যমেই দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা করা হয়। এর ওপর সব জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা যন্ত্রাংশ, অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম ও অন্যান্য উপকরণের শতভাগ অর্থায়ন নির্ভরশীল। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর অর্ধেকের বেশি যন্ত্রাংশ দেওয়া হয় ওপির মাধ্যমে। বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল, রিএজেন্ট এবং ওষুধের এক-তৃতীয়াংশ দেওয়া হয়। সরকারি হাসপাতালে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তাকর্মীদের বেতনও এভাবে দেওয়া হয়। ওপি না থাকায় বন্ধ রয়েছে এসব কার্যক্রম।
হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ডা. সুপ্রিয় সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট কর্মসূচির অতি জরুরি বিষয়গুলো অব্যাহত রাখতে রাজস্ব খাত থেকে বরাদ্দ দিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক কার্যক্রম ও যানবাহনের জ্বালানির খরচও রাজস্ব থেকে অনুমোদনের আবেদন করা হয়েছে।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) কার্যক্রম ওপিতে হওয়ায় এতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে ওপি বাস্তবায়ন শুরু না হওয়া পর্যন্ত রাজস্ব খাত থেকে টিকা কেনার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
সারা দেশে তৃণমূলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিচি) নামে কর্মীদের বেতন বন্ধ রয়েছে ছয় মাস ধরে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলা ইউনিয়নের একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি বলেছেন, তাঁরা পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। ওষুধের সরবরাহ না থাকায় তাঁরা সংকটের আশঙ্কা করছেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ কেনা, বেতন দেওয়া এবং সব সেবা চলে ওপির অর্থে। ক্লিনিকগুলোতে মজুত থাকা ওষুধে চলবে জানুয়ারি পর্যন্ত। জরুরি মজুত দিয়ে মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলতে পারে।’ ওপি না থাকায় বন্ধ রয়েছে সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ, এইডস, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মতো কার্যক্রম। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের (আইপিএইচএন) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গর্ভবতী নারী ও কিশোরীদের জন্য জরুরি ফলিক অ্যাডিস ও আয়রনের ট্যাবলেটও দেওয়া হচ্ছে না।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কিছু সংশোধনীসহ পঞ্চম ওপি ফেরত এসেছে। আশা করছি সংশোধনীর কাজ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হবে। টিকা কার্যক্রম চালু রাখতে রাজস্ব খাত থেকে টিকা কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত কমিটি প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার টিকা ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে। হসপিটাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের অত্যাবশ্যকীয় কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তবে অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ। ওপির যেসব প্রকল্পে ফলাফল আসার সম্ভাবনা কম, সেগুলো বাদ দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।’
জনস্বাস্থ্যবিদদের সংগঠন পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যথাসময়ে যেন নতুন সেক্টর শুরু করা যায়, তার জন্য আগের কর্মসূচি চলমান থাকা অবস্থায় অন্তত দেড় বছর আগে থেকে কাজ শুরু করার প্রয়োজন ছিল। এখন দ্রুত একটা গ্রুপ করা উচিত, যারা দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদনের জন্য জরুরি বিষয়গুলো চিহ্নিত করবে। ওপির বিষয়ে গুরুত্ব না দিলে স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিনে অর্জিত অগ্রগতি ভেঙে পড়বে।’

দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। বর্তমানে ওপি চলমান না থাকায় পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় একরকম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত জুলাইয়ে ‘পঞ্চম স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’ শিরোনামের ওপির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা অনুমোদন পায়নি। ফলে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি বড় কর্মসূচি।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পঞ্চম এইচপিএনএসপির বাস্তবায়ন চলতি বছরের জুলাইতে শুরু হয়ে ২০২৯ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এর ব্যয়ের আকার ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা। চতুর্থ এইচপিএনএসপি চলতি বছরের জুনে শেষ হয়ে গেছে। ফলে দেশে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন, নিয়মিত ব্যবস্থাপনা ও সেবা কার্যক্রমের জন্য কোনো কর্মসূচি দাপ্তরিকভাবে চালু নেই।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, চতুর্থ কর্মসূচি চলার সময় পরবর্তী কর্মসূচির আগাম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের ক্ষেত্রে ঘাটতি ছিল। সেক্টর কর্মসূচির পদ্ধতিগত বিনিয়োগ পরিকল্পনা (এসআইপি) কার্যক্রমে যুক্ত থাকা একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ২০১৭ সালের জুলাইতে শুরু হওয়া চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচির মেয়াদ আসলে ছিল ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। পরে আর্থিক বরাদ্দ ও মেয়াদ বৃদ্ধি করায় ২০২৪ সালের জুনে শেষ হয় ওই কর্মসূচি। চলতি বছর সাধারণ নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠন করা হয়। নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কোথায় কী হচ্ছে, বুঝে নিচ্ছিলেন। এভাবেই জুন চলে আসে। বিভিন্ন ধাপে পঞ্চম সেক্টর কর্মসূচির পরিকল্পনার (পিআইপি) খসড়া প্রণয়নে দেরি হয়।
জনস্বাস্থ্যবিদ ও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদেরা সেক্টর কর্মসূচিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। তাঁরা বলেন, একই কাজ দুবার করা এড়াতে এ উন্নয়ন কর্মসূচির সূচনা করা হয়। আগে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ৩০ থেকে ৩৫টি অপারেশনাল প্ল্যান নিয়ে কাজ করত। এক কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম অন্য কর্তৃপক্ষ জানত না। এখন এক ওপির অধীনে সব কর্মসূচি একসঙ্গে শুরু এবং একসঙ্গে শেষ হয়।
সেক্টর কর্মসূচি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হলেও এর প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন-সম্পর্কিত সার্বিক সমন্বয় করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। কর্মসূচির খসড়া পরিকল্পনা কমিশনের যাচাই কমিটিতে পাঠানো হয়। এরপর অনুমোদনপ্রক্রিয়ার জন্য পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি সংশোধনী দিয়ে সেক্টর কর্মসূচি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ফেরত পাঠায় পরিকল্পনা কমিশন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতাধীন ২৩টি এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের আওতাধীন ১৫টি অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে চতুর্থ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। পঞ্চমটিতে কয়েকটি কর্মসূচি বাড়ানোর প্রস্তাব ওঠায় তা যাচাই করা হচ্ছে।
সেক্টর কর্মসূচির প্রধান কাজগুলো হচ্ছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি), সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি), অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি), স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থাপনা ও ই-হেলথ, হাসপাতাল সেবা ব্যবস্থাপনা, জীবনধারা এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও প্রচার, মাতৃ, শিশু ও কৈশোর স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন, সম্প্রসারিত টিকা কার্যক্রম (ইপিআই), জাতীয় চক্ষুসেবা, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, প্রজননস্বাস্থ্য, পুষ্টি, সচেতনতামূলক কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ বা উচ্চশিক্ষা, ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কর্মশালা বা সেমিনার, তথ্য ব্যবস্থাপনা বা মানবসম্পদ উন্নয়ন, মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন, গবেষণা, ক্রয়, মজুত ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনা, যক্ষ্মা-কুষ্ঠ ও এইডস এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষাসেবা।
চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য অনুযায়ী, দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ কাজই ওপির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে সরকার। দীর্ঘদিন ধরে ওপির আওতায় কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়ে আসায় এর ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে। এখন এটি না থাকায় সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট শাখা বলছে, ওপির মাধ্যমেই দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা করা হয়। এর ওপর সব জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা যন্ত্রাংশ, অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম ও অন্যান্য উপকরণের শতভাগ অর্থায়ন নির্ভরশীল। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর অর্ধেকের বেশি যন্ত্রাংশ দেওয়া হয় ওপির মাধ্যমে। বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল, রিএজেন্ট এবং ওষুধের এক-তৃতীয়াংশ দেওয়া হয়। সরকারি হাসপাতালে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তাকর্মীদের বেতনও এভাবে দেওয়া হয়। ওপি না থাকায় বন্ধ রয়েছে এসব কার্যক্রম।
হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ডা. সুপ্রিয় সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট কর্মসূচির অতি জরুরি বিষয়গুলো অব্যাহত রাখতে রাজস্ব খাত থেকে বরাদ্দ দিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক কার্যক্রম ও যানবাহনের জ্বালানির খরচও রাজস্ব থেকে অনুমোদনের আবেদন করা হয়েছে।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) কার্যক্রম ওপিতে হওয়ায় এতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে ওপি বাস্তবায়ন শুরু না হওয়া পর্যন্ত রাজস্ব খাত থেকে টিকা কেনার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
সারা দেশে তৃণমূলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিচি) নামে কর্মীদের বেতন বন্ধ রয়েছে ছয় মাস ধরে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলা ইউনিয়নের একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি বলেছেন, তাঁরা পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। ওষুধের সরবরাহ না থাকায় তাঁরা সংকটের আশঙ্কা করছেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ কেনা, বেতন দেওয়া এবং সব সেবা চলে ওপির অর্থে। ক্লিনিকগুলোতে মজুত থাকা ওষুধে চলবে জানুয়ারি পর্যন্ত। জরুরি মজুত দিয়ে মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলতে পারে।’ ওপি না থাকায় বন্ধ রয়েছে সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ, এইডস, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মতো কার্যক্রম। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের (আইপিএইচএন) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গর্ভবতী নারী ও কিশোরীদের জন্য জরুরি ফলিক অ্যাডিস ও আয়রনের ট্যাবলেটও দেওয়া হচ্ছে না।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কিছু সংশোধনীসহ পঞ্চম ওপি ফেরত এসেছে। আশা করছি সংশোধনীর কাজ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হবে। টিকা কার্যক্রম চালু রাখতে রাজস্ব খাত থেকে টিকা কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত কমিটি প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার টিকা ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে। হসপিটাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের অত্যাবশ্যকীয় কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তবে অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ। ওপির যেসব প্রকল্পে ফলাফল আসার সম্ভাবনা কম, সেগুলো বাদ দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।’
জনস্বাস্থ্যবিদদের সংগঠন পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যথাসময়ে যেন নতুন সেক্টর শুরু করা যায়, তার জন্য আগের কর্মসূচি চলমান থাকা অবস্থায় অন্তত দেড় বছর আগে থেকে কাজ শুরু করার প্রয়োজন ছিল। এখন দ্রুত একটা গ্রুপ করা উচিত, যারা দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদনের জন্য জরুরি বিষয়গুলো চিহ্নিত করবে। ওপির বিষয়ে গুরুত্ব না দিলে স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিনে অর্জিত অগ্রগতি ভেঙে পড়বে।’

আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
৩৮ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবারের পর ঐকমত্য কমিশন গতকালও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক করলেও কোনো সমাধান মেলেনি। এমন প্রেক্ষাপটে আজ রোববার কমিশন আবার নিজেরা বৈঠক করবে এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবার বসবে।
ঐকমত্য কমিশনের জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকটি বেলা দেড়টার পর শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টার পরে শেষ হয়। প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠকেও সংবিধান নিয়ে সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করার উপায় বের হয়নি।
সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কমিশনের সিদ্ধান্ত হলো, গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। তার অধীনে জারি হবে গণভোট-বিষয়ক একটি অধ্যাদেশ। এর ভিত্তিতেই হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যেই সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে। প্রসঙ্গত, একই সময় এ পরিষদ নিয়মিত সংসদ হিসেবেও কাজ করবে। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায়ই সংবিধান সংস্কার হবে।
গতকালের আলোচনা বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা ২৭০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন না করলে সনদে থাকা বিষয়গুলো কী হবে—সেখানেই আটকে যাচ্ছে আলোচনা। কারণ আমরা তেমন সমাধান দিতে পারছি না। দেশে অতীতে এ-সংক্রান্ত কোনো উদাহরণ নেই। দেশের বাইরেও এ ধরনের উদাহরণ পাইনি।’
কোনো দল আগামী নির্বাচনে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সংবিধান সংস্কার কীভাবে হবে, এ প্রশ্নও আছে। বিষয়টি তখন মূলত নির্ভর করবে বেশি আসন পাওয়া কয়েকটি দলের সদিচ্ছার ওপর। কিন্তু কমিশন চাইছে এ অনিশ্চয়তার অবকাশ না রেখে এমন কোনো বিধান করা, যা সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেবে।
গতকালের বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা একাধিক মত দিয়ে বলেছেন, সেগুলো আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না তাঁ। একটি মত হলো,নির্ধারিত সময়ে সংস্কার বাস্তবায়ন করা না হলে সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এটি আইনগতভাবে ঠিক হলেও রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সংসদ এভাবে বিলুপ্ত হলে নতুন সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন তাঁরা।
আরও যে কয়েকটি মত গতকাল এসেছে তার মধ্যে রয়েছে, প্রথমত, পরিষদে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সনদের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাওয়া এবং দ্বিতীয়ত, আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বৈঠকে বসে সনদের সংযুক্তি বাস্তবায়ন করবে এবং তারপর সংসদ বসবে। কিন্তু এগুলোও কার্যকর বা বাস্তবসম্মত মনে করেননি বিশেষজ্ঞদের সবাই।
একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, সময়সীমার মধ্যে না সম্পন্ন করলে আপনা থেকেই সংবিধানে বিষয়গুলো যুক্ত হওয়ার ধারণা বাস্তবসম্মত না। কারণ বিলগুলোর খসড়া তৈরি করা নেই। এটা করা বিশেষজ্ঞদের কাজ না। সংসদে আলোচনা করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই এ সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি আরও বলেন, সনদের একটি বিধান হচ্ছে, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ করা হবে। কিন্তু কোন মৌলিক অধিকারটি সম্প্রসারণ করা হবে, তা বলা নেই। সংসদ সদস্যদের আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এসব কারণে আমরা সিদ্ধান্ত দিতে পারিনি। কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বৈঠক করবেন, প্রয়োজনে আমাদের সহযোগিতা নেবেন।’
গতকালের বৈঠকে আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বসে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করার যে প্রস্তাব আসে তার পক্ষে বলা হয়, এতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা দ্রুত সনদ বাস্তবায়নে কাজ করবেন। কারণ তাঁরা বিলম্ব না করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে চাইবেন। একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা হলেও বেশির ভাগের মত, এটিও বাস্তবসম্মত নয়। কারণ জনপ্রতিনিধিদের শপথের মাধ্যমে সংসদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্বে থেকে যেতে হবে। এটা প্রধান উপদেষ্টাই মানবেন না।
এ অবস্থায় সমাধান কী হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমরা আদৌ কোনো বাধ্যবাধকতা তৈরি করে দিতে পারব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ এমন আইনি ও রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্য সমাধান পাইনি। তাই বিষয়টি আমাদের সুপারিশে না-ও থাকতে পারে।’
সনদ-বিষয়ক আদেশের খুঁটিনাটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। গণভোটের দিনক্ষণ সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কমিশন সূত্র জানায়, আজ সকালে নিজেরা বৈঠক করার পর প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও আবার বৈঠক করা হবে। ৩১ অক্টোবরের মেয়াদের মধ্যেই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন।
এনসিপির সঙ্গে বৈঠক
গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার আগে কমিশনের সদস্যরা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠক করেন। ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হলেও দলটি সই করেনি। এনসিপি বলেছিল, বাস্তবায়নের আদেশের চূড়ান্ত খসড়া না দেখে তারা স্বাক্ষর করবে না।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, গতকালের বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধিরা ‘স্পষ্টভাবে’ জানিয়েছেন যে তাঁরা স্বাক্ষর করতে চান। তাঁরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন, যা কমিশন আইনি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়েছে। এনসিপির প্রস্তাবে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই দিকই আছে। সেই বিষয়গুলো বিবেচনা করে কমিশন এগোচ্ছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে, যেন সবাই স্বাক্ষরের দিকে আসে।
বিশেষজ্ঞ হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন।
আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবারের পর ঐকমত্য কমিশন গতকালও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক করলেও কোনো সমাধান মেলেনি। এমন প্রেক্ষাপটে আজ রোববার কমিশন আবার নিজেরা বৈঠক করবে এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবার বসবে।
ঐকমত্য কমিশনের জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকটি বেলা দেড়টার পর শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টার পরে শেষ হয়। প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠকেও সংবিধান নিয়ে সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করার উপায় বের হয়নি।
সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কমিশনের সিদ্ধান্ত হলো, গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। তার অধীনে জারি হবে গণভোট-বিষয়ক একটি অধ্যাদেশ। এর ভিত্তিতেই হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যেই সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে। প্রসঙ্গত, একই সময় এ পরিষদ নিয়মিত সংসদ হিসেবেও কাজ করবে। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায়ই সংবিধান সংস্কার হবে।
গতকালের আলোচনা বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা ২৭০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন না করলে সনদে থাকা বিষয়গুলো কী হবে—সেখানেই আটকে যাচ্ছে আলোচনা। কারণ আমরা তেমন সমাধান দিতে পারছি না। দেশে অতীতে এ-সংক্রান্ত কোনো উদাহরণ নেই। দেশের বাইরেও এ ধরনের উদাহরণ পাইনি।’
কোনো দল আগামী নির্বাচনে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সংবিধান সংস্কার কীভাবে হবে, এ প্রশ্নও আছে। বিষয়টি তখন মূলত নির্ভর করবে বেশি আসন পাওয়া কয়েকটি দলের সদিচ্ছার ওপর। কিন্তু কমিশন চাইছে এ অনিশ্চয়তার অবকাশ না রেখে এমন কোনো বিধান করা, যা সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেবে।
গতকালের বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা একাধিক মত দিয়ে বলেছেন, সেগুলো আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না তাঁ। একটি মত হলো,নির্ধারিত সময়ে সংস্কার বাস্তবায়ন করা না হলে সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এটি আইনগতভাবে ঠিক হলেও রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সংসদ এভাবে বিলুপ্ত হলে নতুন সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন তাঁরা।
আরও যে কয়েকটি মত গতকাল এসেছে তার মধ্যে রয়েছে, প্রথমত, পরিষদে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সনদের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাওয়া এবং দ্বিতীয়ত, আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বৈঠকে বসে সনদের সংযুক্তি বাস্তবায়ন করবে এবং তারপর সংসদ বসবে। কিন্তু এগুলোও কার্যকর বা বাস্তবসম্মত মনে করেননি বিশেষজ্ঞদের সবাই।
একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, সময়সীমার মধ্যে না সম্পন্ন করলে আপনা থেকেই সংবিধানে বিষয়গুলো যুক্ত হওয়ার ধারণা বাস্তবসম্মত না। কারণ বিলগুলোর খসড়া তৈরি করা নেই। এটা করা বিশেষজ্ঞদের কাজ না। সংসদে আলোচনা করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই এ সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি আরও বলেন, সনদের একটি বিধান হচ্ছে, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ করা হবে। কিন্তু কোন মৌলিক অধিকারটি সম্প্রসারণ করা হবে, তা বলা নেই। সংসদ সদস্যদের আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এসব কারণে আমরা সিদ্ধান্ত দিতে পারিনি। কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বৈঠক করবেন, প্রয়োজনে আমাদের সহযোগিতা নেবেন।’
গতকালের বৈঠকে আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ বসে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করার যে প্রস্তাব আসে তার পক্ষে বলা হয়, এতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা দ্রুত সনদ বাস্তবায়নে কাজ করবেন। কারণ তাঁরা বিলম্ব না করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে চাইবেন। একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা হলেও বেশির ভাগের মত, এটিও বাস্তবসম্মত নয়। কারণ জনপ্রতিনিধিদের শপথের মাধ্যমে সংসদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্বে থেকে যেতে হবে। এটা প্রধান উপদেষ্টাই মানবেন না।
এ অবস্থায় সমাধান কী হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমরা আদৌ কোনো বাধ্যবাধকতা তৈরি করে দিতে পারব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ এমন আইনি ও রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্য সমাধান পাইনি। তাই বিষয়টি আমাদের সুপারিশে না-ও থাকতে পারে।’
সনদ-বিষয়ক আদেশের খুঁটিনাটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। গণভোটের দিনক্ষণ সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কমিশন সূত্র জানায়, আজ সকালে নিজেরা বৈঠক করার পর প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও আবার বৈঠক করা হবে। ৩১ অক্টোবরের মেয়াদের মধ্যেই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন।
এনসিপির সঙ্গে বৈঠক
গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার আগে কমিশনের সদস্যরা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠক করেন। ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হলেও দলটি সই করেনি। এনসিপি বলেছিল, বাস্তবায়নের আদেশের চূড়ান্ত খসড়া না দেখে তারা স্বাক্ষর করবে না।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, গতকালের বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধিরা ‘স্পষ্টভাবে’ জানিয়েছেন যে তাঁরা স্বাক্ষর করতে চান। তাঁরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন, যা কমিশন আইনি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়েছে। এনসিপির প্রস্তাবে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই দিকই আছে। সেই বিষয়গুলো বিবেচনা করে কমিশন এগোচ্ছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে, যেন সবাই স্বাক্ষরের দিকে আসে।
বিশেষজ্ঞ হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন।
আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। বর্তমানে ওপি চলমান না থাকায় পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় একরকম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত জুলাইয়ে ‘পঞ্চম স্বাস্থ্য, জনসংখ্য
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে নতুন বিধান, আবার কিছু কিছু বিধান আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইভিএম ব্যবহার বাতিল, ‘না ভোট’ পুনর্বহাল, প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয় ও সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশের বাধ্যবাধকতা এবং পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা।
সংশোধিত আরপিওর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:
আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে তাঁকে না ভোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। নির্বাচনে না ভোট বেশি হলে সেখানে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন হবে। তবে দ্বিতীয়বারও একক প্রার্থী হলে সেই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার বিধানটিও যুক্ত করা হয়েছে। তবে ভোট গণনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী তথা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলাভিত্তিক নির্বাচন অফিসগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রার্থীদের দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আয় ও সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করা হবে।
আগে দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে জোটের যেকোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করতে পারত। সেটি সংশোধন করা হয়েছে। জোটভুক্ত হলেও প্রার্থীকে নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ভোটের সময় অনেকে জোটভুক্ত হলে জনপ্রিয় বা বড় দলের মার্কায় ভোট করতেন। এখন আর সে সুযোগ থাকছে না।
প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের বিধানটি আরপিওতে যুক্ত করা হয়েছে। এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের পাশাপাশি আইনি হেফাজতে থাকা, সরকারি কর্মকর্তা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা ভোট দিতে পারবেন।
প্রার্থীর জামানত বাড়ানো হয়েছে। আগে ২০ হাজার টাকা ছিল, তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো রাজনৈতিক দলকে ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান দিতে চাইলে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। যিনি অনুদান দেবেন, তাঁর ট্যাক্স রিটার্নও দিতে হবে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন পুরো আসনের ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা কমিয়েছিল। সংশোধিত আরপিওতে শুধু ভোটকেন্দ্র নয়, অনিয়ম হলে ইসি পুরো আসনের ভোট বন্ধ করতে পারবে, সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থীর হলফনামায় আগে শুধু দেশের সম্পদের হিসাব দেওয়া হতো। সংশোধিত আরপিওতে শুধু দেশের নয়, বিদেশের আয়ের উৎস, সম্পত্তির বিবরণ দিতে হবে।
এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-সংক্রান্ত বিধানটি সংশোধিত আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে নতুন বিধান, আবার কিছু কিছু বিধান আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইভিএম ব্যবহার বাতিল, ‘না ভোট’ পুনর্বহাল, প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয় ও সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশের বাধ্যবাধকতা এবং পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা।
সংশোধিত আরপিওর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:
আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে তাঁকে না ভোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। নির্বাচনে না ভোট বেশি হলে সেখানে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন হবে। তবে দ্বিতীয়বারও একক প্রার্থী হলে সেই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার বিধানটিও যুক্ত করা হয়েছে। তবে ভোট গণনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী তথা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলাভিত্তিক নির্বাচন অফিসগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রার্থীদের দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আয় ও সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করা হবে।
আগে দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে জোটের যেকোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করতে পারত। সেটি সংশোধন করা হয়েছে। জোটভুক্ত হলেও প্রার্থীকে নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ভোটের সময় অনেকে জোটভুক্ত হলে জনপ্রিয় বা বড় দলের মার্কায় ভোট করতেন। এখন আর সে সুযোগ থাকছে না।
প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের বিধানটি আরপিওতে যুক্ত করা হয়েছে। এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের পাশাপাশি আইনি হেফাজতে থাকা, সরকারি কর্মকর্তা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা ভোট দিতে পারবেন।
প্রার্থীর জামানত বাড়ানো হয়েছে। আগে ২০ হাজার টাকা ছিল, তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো রাজনৈতিক দলকে ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান দিতে চাইলে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। যিনি অনুদান দেবেন, তাঁর ট্যাক্স রিটার্নও দিতে হবে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন পুরো আসনের ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা কমিয়েছিল। সংশোধিত আরপিওতে শুধু ভোটকেন্দ্র নয়, অনিয়ম হলে ইসি পুরো আসনের ভোট বন্ধ করতে পারবে, সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থীর হলফনামায় আগে শুধু দেশের সম্পদের হিসাব দেওয়া হতো। সংশোধিত আরপিওতে শুধু দেশের নয়, বিদেশের আয়ের উৎস, সম্পত্তির বিবরণ দিতে হবে।
এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-সংক্রান্ত বিধানটি সংশোধিত আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। বর্তমানে ওপি চলমান না থাকায় পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় একরকম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত জুলাইয়ে ‘পঞ্চম স্বাস্থ্য, জনসংখ্য
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
৩৮ মিনিট আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রায় লেখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকেরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাঁদের শিল্পকর্মই তাঁদের রায়।
তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন এরই মধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রায় লেখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকেরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাঁদের শিল্পকর্মই তাঁদের রায়।
তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।
কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন এরই মধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।

দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। বর্তমানে ওপি চলমান না থাকায় পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় একরকম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত জুলাইয়ে ‘পঞ্চম স্বাস্থ্য, জনসংখ্য
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
৩৮ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর
৮ ঘণ্টা আগেসিনেটে শুনানিতে ট্রাম্প–মনোনীত রাষ্ট্রদূত
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা বলেন ক্রিস্টেনসেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মমোনীত এই কূটনীতিক বলেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে সামরিক সহযোগিতা, সামুদ্রিক কর্মকাণ্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে সম্পৃক্ততাসহ চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরবনে। পাশাপাশি সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারত্ব ঘনিষ্ঠ করার জন্য কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দেন ক্রিস্টেনসেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন। সিনেট কমিটির অনুমোদনের পরই তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত হবে। এই মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে চার রাষ্ট্রদূত প্রার্থী লিখিত বিবৃতি তুলে ধরেন। পরে তাঁরা সিনেট সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরে নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস শুনানিতে বলেন, ‘আমরা এখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মুখে। বাংলাদেশ ও চীনের সামরিক সহযোগিতা দ্রুত বাড়ছে। যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন রাখার জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি কৌশলগত সাবমেরিন ঘাঁটি আধুনিকায়ন করেছে চীন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার চীনের তৈরি ২০টি জে-১০ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নতুন সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ও দূরপাল্লার রাডার কেনার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ পেলে চীনা সামরিক সরঞ্জামের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে বাংলাদেশের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে ক্রিস্টেনসেন কীভাবে কাজ করবেন, তা জানতে চান সিনেটর রিকেটস।

জবাবে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব নিয়ে আপনাদের মতো উদ্বেগ আমারও। রাষ্ট্রদূত নিয়োগ আমি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থেকে চীনের কার্যক্রমের ঝুঁকি ব্যাখ্যা করব। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা তুলে ধরব, যা দুই দেশের সামরিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।’
এ সময় সিনেটর রিকেটস বলেন, ‘এই শুনানির আগের দিনই সিনেট পররাষ্ট্র কমিটি সর্বসম্মতভাবে ‘থিংক টোয়াইস অ্যাক্ট’ পাস করেছে। এই আইন যুক্তরাষ্ট্রকে পূর্ণাঙ্গ কৌশল নিতে বাধ্য করবে, যাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশকে চীনা অস্ত্র কেনা থেকে বিরত রাখা যায়। আমরা আশা করি, আপনিও এই আইনের সহায়তা নিয়ে কাজ করবেন। তাহলে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধ সম্ভব হবে।’
তাঁর এই মন্তব্যের সূত্র ধরে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘সামরিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চমূল্যের সামরিক সরঞ্জামের বিকল্প হিসেবে মিত্রদেশগুলোর তৈরি সাশ্রয়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা বাংলাদেশকে জানাতে পারি। পাশাপাশি যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্ল্যাটফর্মগুলোকে অন্যান্য মিত্র বাহিনীর সঙ্গে আরও সমন্বিত ও কার্যকর করতে পারি।’
শুনানির শুরুতে লিখিত বিবৃতিতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে যে গণআন্দোলন হয়েছিল, তা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সরকারকে পতন ঘটায়। আগামী বছর বাংলাদেশের জনগণ ভোটে যাবে, যা দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের যাত্রায় পাশে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অনেক সময় তাঁর প্রাপ্য মনোযোগ পায় না, বড় প্রতিবেশীদের আড়ালে গুরুত্ব হারিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রসেবায় আমার দুই দশকের অভিজ্ঞতা, যার মধ্যে ঢাকার কর্মকালও রয়েছে। তাই, আমি বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থান বাংলাদেশকে উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার করে তুলেছে।’

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা বলেন ক্রিস্টেনসেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মমোনীত এই কূটনীতিক বলেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে সামরিক সহযোগিতা, সামুদ্রিক কর্মকাণ্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে সম্পৃক্ততাসহ চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরবনে। পাশাপাশি সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারত্ব ঘনিষ্ঠ করার জন্য কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দেন ক্রিস্টেনসেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন। সিনেট কমিটির অনুমোদনের পরই তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত হবে। এই মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে চার রাষ্ট্রদূত প্রার্থী লিখিত বিবৃতি তুলে ধরেন। পরে তাঁরা সিনেট সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরে নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস শুনানিতে বলেন, ‘আমরা এখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মুখে। বাংলাদেশ ও চীনের সামরিক সহযোগিতা দ্রুত বাড়ছে। যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন রাখার জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি কৌশলগত সাবমেরিন ঘাঁটি আধুনিকায়ন করেছে চীন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার চীনের তৈরি ২০টি জে-১০ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নতুন সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ও দূরপাল্লার রাডার কেনার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ পেলে চীনা সামরিক সরঞ্জামের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে বাংলাদেশের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে ক্রিস্টেনসেন কীভাবে কাজ করবেন, তা জানতে চান সিনেটর রিকেটস।

জবাবে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব নিয়ে আপনাদের মতো উদ্বেগ আমারও। রাষ্ট্রদূত নিয়োগ আমি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থেকে চীনের কার্যক্রমের ঝুঁকি ব্যাখ্যা করব। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা তুলে ধরব, যা দুই দেশের সামরিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।’
এ সময় সিনেটর রিকেটস বলেন, ‘এই শুনানির আগের দিনই সিনেট পররাষ্ট্র কমিটি সর্বসম্মতভাবে ‘থিংক টোয়াইস অ্যাক্ট’ পাস করেছে। এই আইন যুক্তরাষ্ট্রকে পূর্ণাঙ্গ কৌশল নিতে বাধ্য করবে, যাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশকে চীনা অস্ত্র কেনা থেকে বিরত রাখা যায়। আমরা আশা করি, আপনিও এই আইনের সহায়তা নিয়ে কাজ করবেন। তাহলে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধ সম্ভব হবে।’
তাঁর এই মন্তব্যের সূত্র ধরে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘সামরিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চমূল্যের সামরিক সরঞ্জামের বিকল্প হিসেবে মিত্রদেশগুলোর তৈরি সাশ্রয়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা বাংলাদেশকে জানাতে পারি। পাশাপাশি যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্ল্যাটফর্মগুলোকে অন্যান্য মিত্র বাহিনীর সঙ্গে আরও সমন্বিত ও কার্যকর করতে পারি।’
শুনানির শুরুতে লিখিত বিবৃতিতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে যে গণআন্দোলন হয়েছিল, তা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সরকারকে পতন ঘটায়। আগামী বছর বাংলাদেশের জনগণ ভোটে যাবে, যা দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের যাত্রায় পাশে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অনেক সময় তাঁর প্রাপ্য মনোযোগ পায় না, বড় প্রতিবেশীদের আড়ালে গুরুত্ব হারিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রসেবায় আমার দুই দশকের অভিজ্ঞতা, যার মধ্যে ঢাকার কর্মকালও রয়েছে। তাই, আমি বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থান বাংলাদেশকে উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার করে তুলেছে।’

দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। বর্তমানে ওপি চলমান না থাকায় পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় একরকম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত জুলাইয়ে ‘পঞ্চম স্বাস্থ্য, জনসংখ্য
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
আগামী জাতীয় সংসদ নিয়মিত সংসদের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংবিধানে যুক্ত করবে বলে মতৈক্য হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেনি...
৩৮ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।
৭ ঘণ্টা আগে