Ajker Patrika

বেনজীর ও মতিউরের বিষয়ে তাড়াহুড়া করবে না দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, এনবিআরের সদ্য সাবেক সদস্য মো. মতিউর রহমানসহ সাবেক ও বর্তমান সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে তাড়াহুড়ো করবে না দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব বিষয়ে আইন ও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক। 

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার বেনজীর আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে রাজধানীর গুলশানে থাকা চারটি ফ্ল্যাটে প্রবেশে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ দিকে মতিউর রহমানের স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। 
 
সাবেক ও বর্তমান পদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের বিষয়ে জানতে চাইলে আজ রোববার দুদকের কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উনারা (অনুসন্ধান কর্মকর্তারা) সঠিকভাবে তদন্তে এগোচ্ছেন। এর জন্য আমরা বিশেষভাবে তাড়াহুড়ো করব, তা ঠিক নয়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘দুদক আইনে ৪৫ দিনে অনুসন্ধান শেষ করার কথা বলা আছে। এ সময়ের মধ্যে শেষ করতে না পারলে অনুসন্ধান কর্মকর্তারা চাইলে আরও ৩০ দিন সময় পাবেন। কারও জন্য দুদক বিশেষ কিছু করবে না।’ 

দুদকের একটি সূত্র জানায়, মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পদের তথ্য চেয়ে এনবিআর, বিএফআইইউ, নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শকের কার্যালয়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, যৌথ মূলধনি কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের প্রধানের কাছে চিঠি দিয়েছে দুদক। পুলিশ, এনবিআরসহ সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ আসছে। 

এসব বিষয়ে জহুরুল হক বলেন, ‘দুদকের বিধি অনুযায়ী যা হয়, তা-ই করা হবে।’ মতিউরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের আগের চারবারের অনুসন্ধানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি তাঁদের (বিগত কমিশন) কাছে জিজ্ঞাসা করেন।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে দুদকের কমিশনার (তদন্ত) বলেন, ‘অভিযুক্তদের সম্পদ দেশে-বিদেশে যেখানেই থাকুক, অনুসন্ধান কর্মকর্তারা অবস্থা বুঝে যা করণীয় করতে পারবেন। কমিশনের কাছে এ বিষয়ে পরামর্শ চাইলে সহযোগিতা করা হবে।’ 

বেনজীরের ফ্ল্যাটে প্রবেশে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের নির্দেশ
গুলশানে সাবেক আইজিপি বেনজীর ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা তালাবদ্ধ চারটি ফ্ল্যাটে প্রবেশে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ চেয়ে রোববার আদালতে আবেদন করে দুদক। পরে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আবেদন মঞ্জুর করেন। 

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ মে ওই চার ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। ৪ জুন ফ্ল্যাটগুলো দেখভালের জন্য তত্ত্বাবধায়ক (রিসিভার) নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেন একই আদালত। তবে চাবি না থাকায় দেখভালে নিয়োজিত দুদকের কর্মকর্তা চারটি ফ্ল্যাটে ঢুকতে পারেননি। এ জন্য গতকাল ওই আবেদন করা হয়। 
 
শুনানি শেষে আদালত ফ্ল্যাটে প্রবেশে একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের নির্দেশ দেন। তাঁর উপস্থিতিতে ফ্ল্যাটে ঢুকবেন দেখভালে নিয়োজিত দুদক কর্মকর্তা। 
 
বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন মতিউরের স্ত্রীর
এ দিকে এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের স্ত্রী ও নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকি তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে রোববার আদালতে আবেদন করেন। বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন ২৭ জুলাই আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেন। 

আবেদনে বলা হয়—বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত লায়লা কয়েকটি দেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। চিকিৎসার জন্য তাঁর আবারও ওই সব দেশে যেতে হবে। 

দুদক ২৩ জুন মতিউরের বিরুদ্ধে ওঠা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। ২৫ জুন তাঁর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব, মুঠোফোনে আর্থিক সেবার (এমএফএস) হিসাব ও শেয়ারবাজারের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় বিএফআইইউ। 

আগের দিন ২৪ জুন আদালত মতিউর, লায়লা কানিজ ও তাঁদের ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত