Ajker Patrika

বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক মাসুদ খানের বিরুদ্ধে গোপন নথি সরানোর অভিযোগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাময়িক বরখাস্ত করা উপমহাব্যবস্থাপক (আইনবিষয়ক) মো. আল মাসুদ খান। ছবি: সংগৃহীত
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাময়িক বরখাস্ত করা উপমহাব্যবস্থাপক (আইনবিষয়ক) মো. আল মাসুদ খান। ছবি: সংগৃহীত

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাময়িক বরখাস্ত করা উপমহাব্যবস্থাপক (আইনবিষয়ক) মো. আল মাসুদ খানের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া অফিসে প্রবেশ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি সরানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তাকে ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ’ দিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, সাময়িক বরখাস্ত থাকা উপমহাব্যবস্থাপক (আইনবিষয়ক) মো. আল মাসুদ খান গত শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ১৪ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রধান কার্যালয় বলাকা ভবনের আইন উপবিভাগে প্রবেশ করেন। প্রায় আধা ঘণ্টা পর ১২টা ৪৭ মিনিটে তিনি একটি ব্যাগ হাতে বেরিয়ে যান।

বিমান কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই সময় অফিসে কোনো কর্মদিবস ছিল না, সেটি ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এ ছাড়া প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় ‘ফেস আইডি’ না দিয়েই ভবনে প্রবেশ করেন তিনি।

১৩ অক্টোবর মো. আল মাসুদ খানকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে স্বাক্ষর করেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ, অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নওসাদ হোসেন।

নোটিশে বলা হয়েছে, আইন উপবিভাগ বিমান বাংলাদেশের একটি অতীব গোপনীয় দপ্তর, যেখানে সংরক্ষিত থাকে সংবেদনশীল দলিল ও মামলাসংক্রান্ত নথি।

বরখাস্ত থাকা অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সেখানে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করে একটি ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে আসেন, যা কর্তৃপক্ষের কাছে সন্দেহজনক বলে মনে হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়েছে, ‘আপনার এহেন কর্মকাণ্ডের জন্য কেন বিভাগীয় ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা অত্র পত্র প্রাপ্তির ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। অন্যথায় বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আল মাসুদ খানকে ৯ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের নির্দেশনায় তাঁকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল যে, তিনি বর্তমান ঠিকানায় অবস্থান করবেন এবং কেবল হাজিরা দেবেন। কিন্তু বরখাস্তকালে তিনি অফিসে প্রবেশ করে বাংলাদেশ বিমান করপোরেশন কর্মচারী (চাকরি) প্রবিধানমালা, ১৯৭৯-এর ৫৫ ধারা অনুযায়ী অসদাচরণ করেছেন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

উল্লেখ্য, ৯ অক্টোবর দুর্নীতি, তথ্য গোপন ও আদালতের নির্দেশনা অমান্যের অভিযোগে বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক মাসুদ খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

সাময়িক বরখাস্তের অফিস আদেশে বলা হয়, ক্যাপ্টেন আলী রুবাইয়াত চৌধুরীর করা রিট পিটিশনের শুনানিতে আদালত বিমান কর্তৃপক্ষকে ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু আল মাসুদ খান কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব না দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে জমা দেননি। এর ফলে আদালত অবমাননার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

এ ছাড়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর অফিস আদেশ অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন অফিসে জমা পড়লেও তিনি ‘দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে’ তা আদালতে জমা দেননি। একই সঙ্গে কন্টেম্প কেস ২৪০/২০২৫-সংক্রান্ত তথ্য গোপন করে প্রতি মাসে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো মামলার তালিকায় এ মামলা অন্তর্ভুক্ত করেননি, যা গুরুতর অসদাচরণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস করপোরেশন কর্মচারী (চাকরি) প্রবিধানমালা, ১৯৭৯-এর ৫৮ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা পাবেন এবং তাঁকে নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদে স্বাক্ষর নিয়ে শেষ মুহূর্তে এসে অনিশ্চয়তা, সন্ধ্যায় ‘অতি জরুরি’ বৈঠক

ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ক্রিপ্টো কেলেঙ্কারি, ১৪ বিলিয়ন ডলারের কয়েন জব্দ

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ ফ্রিজে রাখেন নজরুল: পুলিশ

৬ মাসের সংসার, ৭ দিনের চাকরি—মর্গে নিথর স্বামী-স্ত্রীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত