
গুমসংক্রান্ত কমিশনের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত শনিবার জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে এবং র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গুম, নির্যাতন ও খুনের ভয়াবহ বর্ণনা।
প্রতিবেদনে গুমের পদ্ধতি, প্রক্রিয়া এবং যে পদ্ধতিতে এগুলো কার্যকর করা হয়েছে, সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে। কমিশনের মূল্যায়নে দেখা গেছে, বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক গুমের ঘটনা মূলত পুলিশ বিভাগের অধীনে কাজ করা বিভিন্ন ইউনিট দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে চিহ্নিত হয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং সন্ত্রাসবিরোধী ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ (সিটিটিসি) বিভাগ। ভুক্তভোগী, সাক্ষী এবং পরিবারের সদস্যদের মতে, এই বাহিনীগুলো বেশির ভাগ গুমের জন্য প্রধানত দায়ী।
এ ছাড়া, আরও কিছু সংস্থার নাম উঠে এসেছে, যার মধ্যে রয়েছে—ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স (এনএসআই)।
কমিশন ১ হাজার ৬৭৬টি নথিভুক্ত অভিযোগের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৭৫৮টি অভিযোগ পর্যালোচনা করেছে। এই পর্যালোচনার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে:
| বছর | অভিযোগ | বছর | অভিযোগ |
|---|---|---|---|
| ২০০৯ | ৫ | ২০১৭ | ৮৪ |
| ২০১০ | ১৯ | ২০১৮ | ৮৯ |
| ২০১১ | ২৩ | ২০১৯ | ৩৬ |
| ২০১২ | ৩৬ | ২০২০ | ১৮ |
| ২০১৩ | ৭৩ | ২০২১ | ২৫ |
| ২০১৪ | ৪৫ | ২০২২ | ৪২ |
| ২০১৫ | ৭৮ | ২০২৩ | ৩৪ |
| ২০১৬ | ১৩০ | ২০২৪ | ২১ |
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, গুমের এই সংস্কৃতি ১৫ বছরের মধ্যে এমনভাবে পরিকল্পিত ছিল, যাতে তা সহজে শনাক্ত করা না যায়। উদাহরণস্বরূপ, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রায়ই সাদাপোশাকে কাজ করতেন এবং নিজেদের কর্মকাণ্ড অন্য কোনো সংস্থার ওপর চাপিয়ে দিতেন। যেমন—ডিজিএফআই যদি কোনো অভিযান পরিচালনা করত, তারা দাবি করত তারা র্যাব; র্যাব হলে বলত তারা ডিবি।
নিরাপত্তা বাহিনী প্রায়ই ভুক্তভোগীদের নিজেদের মধ্যে হস্তান্তর ও বিনিময় করত। একটি বাহিনী অপহরণ করত, আরেকটি আটক রাখত এবং তৃতীয়টি হয় হত্যা করত বা মুক্তি দিত।
একটি উদাহরণ হলো, এক ভুক্তভোগীর কল রেকর্ডে দেখায় যে, অপহরণের পরপরই তাঁর সিম কার্ড ডিজিএফআইয়ের সদর দপ্তরে সক্রিয় ছিল। প্রথম অবস্থান ডিজিএফআইয়ের একটি গোপন আটক কেন্দ্রে ছিল, পরে তাঁকে র্যাবের বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয় এবং কয়েক মাস পর র্যাব–৭ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায়।
কিছু ক্ষেত্রে একটি বাহিনী এককভাবে গুম কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সেই অপারেশন উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভক্ত করা হতো। অপহরণের জন্য একটি দল, আটক রাখার জন্য আরেকটি দল এবং হত্যা বা মুক্তি দেওয়ার জন্য আরেকটি দল দায়িত্ব পালন করত। ফলে যারা হত্যা কার্যক্রমে সরাসরি জড়িত ছিল, তারাও প্রায়ই জানত না কাকে হত্যা করা হচ্ছে।
বাহিনীর মধ্যে প্রায়শই কাজের এলাকা এবং দায়িত্বের সীমারেখা অস্পষ্ট ছিল। উদাহরণস্বরূপ, র্যাব–২ সহজেই র্যাব–১১–এর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে পারত, যা বাহিনীর অভ্যন্তরে কোনো প্রশ্ন তুলত না।
এই পরিকল্পিত অপারেশনাল জটিলতার কারণে অনুসন্ধানে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে কমিশনকে। তবে, বেঁচে থাকা ভুক্তভোগীদের সাহস এবং তাঁদের তথ্য প্রদানের মাধ্যমেই এই ব্যবস্থা কিছুটা উন্মোচন করতে পেরেছে কমিশন।
অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা এবং মুক্তি
অপহরণ
অনুসন্ধান অনুসারে, অপহরণ সাধারণত রাস্তায় বা বাড়িতে সংঘটিত হতো, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাতে। অপহরণকারীরা প্রায়ই সাদাপোশাক পরিহিত থাকত এবং নিজেদের পরিচয় দিত ‘প্রশাসনের লোক’, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ডিবি অথবা র্যাব হিসেবে। যেসব ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, সেসব ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যরা গভীর মানসিক আঘাত পেয়েছিলেন, কারণ তাঁরা দেখেছিলেন কীভাবে তাঁদের প্রিয়জনদের মারধর করে ও জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে অপহৃতদের আর কখনোই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া, ফেরি, রাস্তার পাশ অথবা অন্যান্য জনবহুল স্থান থেকেও ভুক্তভোগীদের অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণের সময় তাঁদের নাম ধরে ডাকা হতো এবং দ্রুত বড় গাড়িতে তুলে নেওয়া হতো। গাড়ির ভেতরেই ভুক্তভোগীদের চোখ বাঁধা, হাতকড়া পরানো এবং অস্ত্রের মুখে হুমকি দেওয়া হতো। প্রায়শই নির্যাতন যেমন: মারধর বা বৈদ্যুতিক শক দেওয়া, আটকের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যেত।
কিছু অপহরণ জনসমক্ষে ঘটেছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যন্ত স্থানে কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ছাড়াই অপহরণ সংঘটিত হয়েছে, যার ফলে প্রমাণ সংগ্রহ করা অত্যন্ত কঠিন হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, এক ভুক্তভোগী, যিনি বেঁচে ফিরে এসেছিলেন, উল্লেখ করেছেন, ‘আমি তার সঙ্গে চা খেয়েছিলাম এবং সে বাড়ি ফিরছিল। পনেরো মিনিট পরে আমি রাস্তার পাশে তার সাইকেল এবং বই পড়ে থাকতে দেখলাম।’
যাঁরা বেঁচে ফিরেছেন, তাঁদের সাক্ষ্য এবং পরিস্থিতির ভিত্তিতে কিছু অপহরণের ঘটনার বর্ণনা পাওয়া সম্ভব হয়েছে।
আটক
ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন সময়ের জন্য আটক রাখা হতো ৪৮ থেকে ৬০ ঘণ্টা, কয়েক সপ্তাহ বা মাস এবং কিছু ক্ষেত্রে আট বছর পর্যন্ত। সাধারণ ধারণা ছিল যে ভুক্তভোগীদের কেবল গোপন কারাগারে রাখা হয়, কিন্তু বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সাক্ষ্য থেকে জানা গেছে, অনেককে বৈধ বন্দীদের সঙ্গে একই সেলে আটক রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, একই স্থাপনার ভেতরেই তাঁদের অবৈধ সেল থেকে বৈধ সেলে স্থানান্তর করা হতো। এসব স্থানান্তর সাধারণত আদালতে হাজিরার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করা হতো, যেন তাঁদের অবৈধ আটকের বিষয়টি আড়াল করা যায়।
তদন্তে দেখা গেছে, অনেক গোপন আটককেন্দ্র এখনো অক্ষত রয়েছে, যদিও কিছু ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসগুলো পরিদর্শনের সময় এসব কেন্দ্রে আটক ব্যক্তিদের অবস্থান নির্ধারণে ভুক্তভোগীদের বিবরণ কাজে লাগিয়েছে কমিশন।
নির্যাতন
নথিভুক্ত নির্যাতনের বর্ণনা নির্মম এবং পদ্ধতিগত। বেসামরিক বাহিনীর (যেমন: ডিবি বা সিটিটিসি) পরিচালিত কেন্দ্রগুলোতে নির্যাতন তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমের অংশ ছিল। এসব নির্যাতন স্থানীয় অফিসেই ঘটত এবং প্রায়শই বিশেষায়িত সরঞ্জাম ব্যবহার করা হতো।
অন্যদিকে, সামরিক বাহিনী (যেমন র্যাব বা ডিজিএফআই) পরিচালিত কেন্দ্রে নির্যাতনের জন্য বিশেষায়িত অবকাঠামো ছিল। এসব কেন্দ্র প্রায়ই সাউন্ডপ্রুফ কক্ষ এবং বিশেষ যন্ত্রপাতি দিয়ে সজ্জিত ছিল। এগুলো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
এক ভুক্তভোগী উল্লেখ করেছেন, ২০১০ সালে তাঁকে ধানমন্ডি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁকে একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই তার ঠোঁট সেলাই করা হয়েছিল, কোনো অ্যানাস্থেটিক ব্যবহার (অবশ) না করেই। তিনি এই অভিজ্ঞতাকে ‘গরুর চামড়া সেলাই করার মতো’ বলে বর্ণনা করেছেন।
হত্যা
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, গুম হওয়া ব্যক্তিদের হয় হত্যা করা হয়েছে অথবা তাঁদের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে আটকে রাখা হয়েছে। যাঁদের হত্যা করা হয়েছে, তাঁদের মরদেহ সিমেন্টের ব্যাগ বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
কিছু ক্ষেত্রে সামরিক কর্মকর্তা এবং সৈন্যরা সরাসরি এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, এক র্যাব কর্মকর্তা বর্ণনা করেছেন কীভাবে একটি ‘অভিষেক’ সেশনের সময় তাঁর সামনে দুটি ভুক্তভোগীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
মুক্তি
যারা বেঁচে ফিরেছেন, তাঁরা কমিশনের তদন্তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উৎস। তবে মুক্তি পাওয়া ভুক্তভোগীদের ওপর মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করা হয়েছে এবং তাদের নির্যাতনের বিষয়টি ঢাকতে মিডিয়ায় মিথ্যা গল্প প্রচার করা হয়েছে।
বেঁচে ফিরে আসা ব্যক্তিদের সাক্ষ্য অনুসারে, তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে এবং স্থানীয় আইন ও বিচারব্যবস্থার ফাঁদে ফেলে দীর্ঘ সময় ভোগান্তির শিকার করা হয়েছে।

গুমসংক্রান্ত কমিশনের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত শনিবার জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে এবং র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গুম, নির্যাতন ও খুনের ভয়াবহ বর্ণনা।
প্রতিবেদনে গুমের পদ্ধতি, প্রক্রিয়া এবং যে পদ্ধতিতে এগুলো কার্যকর করা হয়েছে, সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে। কমিশনের মূল্যায়নে দেখা গেছে, বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক গুমের ঘটনা মূলত পুলিশ বিভাগের অধীনে কাজ করা বিভিন্ন ইউনিট দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে চিহ্নিত হয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং সন্ত্রাসবিরোধী ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ (সিটিটিসি) বিভাগ। ভুক্তভোগী, সাক্ষী এবং পরিবারের সদস্যদের মতে, এই বাহিনীগুলো বেশির ভাগ গুমের জন্য প্রধানত দায়ী।
এ ছাড়া, আরও কিছু সংস্থার নাম উঠে এসেছে, যার মধ্যে রয়েছে—ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স (এনএসআই)।
কমিশন ১ হাজার ৬৭৬টি নথিভুক্ত অভিযোগের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৭৫৮টি অভিযোগ পর্যালোচনা করেছে। এই পর্যালোচনার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে:
| বছর | অভিযোগ | বছর | অভিযোগ |
|---|---|---|---|
| ২০০৯ | ৫ | ২০১৭ | ৮৪ |
| ২০১০ | ১৯ | ২০১৮ | ৮৯ |
| ২০১১ | ২৩ | ২০১৯ | ৩৬ |
| ২০১২ | ৩৬ | ২০২০ | ১৮ |
| ২০১৩ | ৭৩ | ২০২১ | ২৫ |
| ২০১৪ | ৪৫ | ২০২২ | ৪২ |
| ২০১৫ | ৭৮ | ২০২৩ | ৩৪ |
| ২০১৬ | ১৩০ | ২০২৪ | ২১ |
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, গুমের এই সংস্কৃতি ১৫ বছরের মধ্যে এমনভাবে পরিকল্পিত ছিল, যাতে তা সহজে শনাক্ত করা না যায়। উদাহরণস্বরূপ, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রায়ই সাদাপোশাকে কাজ করতেন এবং নিজেদের কর্মকাণ্ড অন্য কোনো সংস্থার ওপর চাপিয়ে দিতেন। যেমন—ডিজিএফআই যদি কোনো অভিযান পরিচালনা করত, তারা দাবি করত তারা র্যাব; র্যাব হলে বলত তারা ডিবি।
নিরাপত্তা বাহিনী প্রায়ই ভুক্তভোগীদের নিজেদের মধ্যে হস্তান্তর ও বিনিময় করত। একটি বাহিনী অপহরণ করত, আরেকটি আটক রাখত এবং তৃতীয়টি হয় হত্যা করত বা মুক্তি দিত।
একটি উদাহরণ হলো, এক ভুক্তভোগীর কল রেকর্ডে দেখায় যে, অপহরণের পরপরই তাঁর সিম কার্ড ডিজিএফআইয়ের সদর দপ্তরে সক্রিয় ছিল। প্রথম অবস্থান ডিজিএফআইয়ের একটি গোপন আটক কেন্দ্রে ছিল, পরে তাঁকে র্যাবের বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয় এবং কয়েক মাস পর র্যাব–৭ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায়।
কিছু ক্ষেত্রে একটি বাহিনী এককভাবে গুম কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সেই অপারেশন উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভক্ত করা হতো। অপহরণের জন্য একটি দল, আটক রাখার জন্য আরেকটি দল এবং হত্যা বা মুক্তি দেওয়ার জন্য আরেকটি দল দায়িত্ব পালন করত। ফলে যারা হত্যা কার্যক্রমে সরাসরি জড়িত ছিল, তারাও প্রায়ই জানত না কাকে হত্যা করা হচ্ছে।
বাহিনীর মধ্যে প্রায়শই কাজের এলাকা এবং দায়িত্বের সীমারেখা অস্পষ্ট ছিল। উদাহরণস্বরূপ, র্যাব–২ সহজেই র্যাব–১১–এর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে পারত, যা বাহিনীর অভ্যন্তরে কোনো প্রশ্ন তুলত না।
এই পরিকল্পিত অপারেশনাল জটিলতার কারণে অনুসন্ধানে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে কমিশনকে। তবে, বেঁচে থাকা ভুক্তভোগীদের সাহস এবং তাঁদের তথ্য প্রদানের মাধ্যমেই এই ব্যবস্থা কিছুটা উন্মোচন করতে পেরেছে কমিশন।
অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা এবং মুক্তি
অপহরণ
অনুসন্ধান অনুসারে, অপহরণ সাধারণত রাস্তায় বা বাড়িতে সংঘটিত হতো, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাতে। অপহরণকারীরা প্রায়ই সাদাপোশাক পরিহিত থাকত এবং নিজেদের পরিচয় দিত ‘প্রশাসনের লোক’, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ডিবি অথবা র্যাব হিসেবে। যেসব ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, সেসব ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যরা গভীর মানসিক আঘাত পেয়েছিলেন, কারণ তাঁরা দেখেছিলেন কীভাবে তাঁদের প্রিয়জনদের মারধর করে ও জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে অপহৃতদের আর কখনোই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া, ফেরি, রাস্তার পাশ অথবা অন্যান্য জনবহুল স্থান থেকেও ভুক্তভোগীদের অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণের সময় তাঁদের নাম ধরে ডাকা হতো এবং দ্রুত বড় গাড়িতে তুলে নেওয়া হতো। গাড়ির ভেতরেই ভুক্তভোগীদের চোখ বাঁধা, হাতকড়া পরানো এবং অস্ত্রের মুখে হুমকি দেওয়া হতো। প্রায়শই নির্যাতন যেমন: মারধর বা বৈদ্যুতিক শক দেওয়া, আটকের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যেত।
কিছু অপহরণ জনসমক্ষে ঘটেছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যন্ত স্থানে কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ছাড়াই অপহরণ সংঘটিত হয়েছে, যার ফলে প্রমাণ সংগ্রহ করা অত্যন্ত কঠিন হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, এক ভুক্তভোগী, যিনি বেঁচে ফিরে এসেছিলেন, উল্লেখ করেছেন, ‘আমি তার সঙ্গে চা খেয়েছিলাম এবং সে বাড়ি ফিরছিল। পনেরো মিনিট পরে আমি রাস্তার পাশে তার সাইকেল এবং বই পড়ে থাকতে দেখলাম।’
যাঁরা বেঁচে ফিরেছেন, তাঁদের সাক্ষ্য এবং পরিস্থিতির ভিত্তিতে কিছু অপহরণের ঘটনার বর্ণনা পাওয়া সম্ভব হয়েছে।
আটক
ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন সময়ের জন্য আটক রাখা হতো ৪৮ থেকে ৬০ ঘণ্টা, কয়েক সপ্তাহ বা মাস এবং কিছু ক্ষেত্রে আট বছর পর্যন্ত। সাধারণ ধারণা ছিল যে ভুক্তভোগীদের কেবল গোপন কারাগারে রাখা হয়, কিন্তু বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সাক্ষ্য থেকে জানা গেছে, অনেককে বৈধ বন্দীদের সঙ্গে একই সেলে আটক রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, একই স্থাপনার ভেতরেই তাঁদের অবৈধ সেল থেকে বৈধ সেলে স্থানান্তর করা হতো। এসব স্থানান্তর সাধারণত আদালতে হাজিরার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করা হতো, যেন তাঁদের অবৈধ আটকের বিষয়টি আড়াল করা যায়।
তদন্তে দেখা গেছে, অনেক গোপন আটককেন্দ্র এখনো অক্ষত রয়েছে, যদিও কিছু ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসগুলো পরিদর্শনের সময় এসব কেন্দ্রে আটক ব্যক্তিদের অবস্থান নির্ধারণে ভুক্তভোগীদের বিবরণ কাজে লাগিয়েছে কমিশন।
নির্যাতন
নথিভুক্ত নির্যাতনের বর্ণনা নির্মম এবং পদ্ধতিগত। বেসামরিক বাহিনীর (যেমন: ডিবি বা সিটিটিসি) পরিচালিত কেন্দ্রগুলোতে নির্যাতন তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমের অংশ ছিল। এসব নির্যাতন স্থানীয় অফিসেই ঘটত এবং প্রায়শই বিশেষায়িত সরঞ্জাম ব্যবহার করা হতো।
অন্যদিকে, সামরিক বাহিনী (যেমন র্যাব বা ডিজিএফআই) পরিচালিত কেন্দ্রে নির্যাতনের জন্য বিশেষায়িত অবকাঠামো ছিল। এসব কেন্দ্র প্রায়ই সাউন্ডপ্রুফ কক্ষ এবং বিশেষ যন্ত্রপাতি দিয়ে সজ্জিত ছিল। এগুলো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
এক ভুক্তভোগী উল্লেখ করেছেন, ২০১০ সালে তাঁকে ধানমন্ডি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁকে একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই তার ঠোঁট সেলাই করা হয়েছিল, কোনো অ্যানাস্থেটিক ব্যবহার (অবশ) না করেই। তিনি এই অভিজ্ঞতাকে ‘গরুর চামড়া সেলাই করার মতো’ বলে বর্ণনা করেছেন।
হত্যা
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, গুম হওয়া ব্যক্তিদের হয় হত্যা করা হয়েছে অথবা তাঁদের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে আটকে রাখা হয়েছে। যাঁদের হত্যা করা হয়েছে, তাঁদের মরদেহ সিমেন্টের ব্যাগ বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
কিছু ক্ষেত্রে সামরিক কর্মকর্তা এবং সৈন্যরা সরাসরি এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, এক র্যাব কর্মকর্তা বর্ণনা করেছেন কীভাবে একটি ‘অভিষেক’ সেশনের সময় তাঁর সামনে দুটি ভুক্তভোগীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
মুক্তি
যারা বেঁচে ফিরেছেন, তাঁরা কমিশনের তদন্তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উৎস। তবে মুক্তি পাওয়া ভুক্তভোগীদের ওপর মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করা হয়েছে এবং তাদের নির্যাতনের বিষয়টি ঢাকতে মিডিয়ায় মিথ্যা গল্প প্রচার করা হয়েছে।
বেঁচে ফিরে আসা ব্যক্তিদের সাক্ষ্য অনুসারে, তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে এবং স্থানীয় আইন ও বিচারব্যবস্থার ফাঁদে ফেলে দীর্ঘ সময় ভোগান্তির শিকার করা হয়েছে।

গুমসংক্রান্ত কমিশনের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত শনিবার জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে এবং র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গুম, নির্যাতন ও খুনের ভয়াবহ বর্ণনা।
প্রতিবেদনে গুমের পদ্ধতি, প্রক্রিয়া এবং যে পদ্ধতিতে এগুলো কার্যকর করা হয়েছে, সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে। কমিশনের মূল্যায়নে দেখা গেছে, বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক গুমের ঘটনা মূলত পুলিশ বিভাগের অধীনে কাজ করা বিভিন্ন ইউনিট দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে চিহ্নিত হয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং সন্ত্রাসবিরোধী ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ (সিটিটিসি) বিভাগ। ভুক্তভোগী, সাক্ষী এবং পরিবারের সদস্যদের মতে, এই বাহিনীগুলো বেশির ভাগ গুমের জন্য প্রধানত দায়ী।
এ ছাড়া, আরও কিছু সংস্থার নাম উঠে এসেছে, যার মধ্যে রয়েছে—ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স (এনএসআই)।
কমিশন ১ হাজার ৬৭৬টি নথিভুক্ত অভিযোগের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৭৫৮টি অভিযোগ পর্যালোচনা করেছে। এই পর্যালোচনার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে:
| বছর | অভিযোগ | বছর | অভিযোগ |
|---|---|---|---|
| ২০০৯ | ৫ | ২০১৭ | ৮৪ |
| ২০১০ | ১৯ | ২০১৮ | ৮৯ |
| ২০১১ | ২৩ | ২০১৯ | ৩৬ |
| ২০১২ | ৩৬ | ২০২০ | ১৮ |
| ২০১৩ | ৭৩ | ২০২১ | ২৫ |
| ২০১৪ | ৪৫ | ২০২২ | ৪২ |
| ২০১৫ | ৭৮ | ২০২৩ | ৩৪ |
| ২০১৬ | ১৩০ | ২০২৪ | ২১ |
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, গুমের এই সংস্কৃতি ১৫ বছরের মধ্যে এমনভাবে পরিকল্পিত ছিল, যাতে তা সহজে শনাক্ত করা না যায়। উদাহরণস্বরূপ, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রায়ই সাদাপোশাকে কাজ করতেন এবং নিজেদের কর্মকাণ্ড অন্য কোনো সংস্থার ওপর চাপিয়ে দিতেন। যেমন—ডিজিএফআই যদি কোনো অভিযান পরিচালনা করত, তারা দাবি করত তারা র্যাব; র্যাব হলে বলত তারা ডিবি।
নিরাপত্তা বাহিনী প্রায়ই ভুক্তভোগীদের নিজেদের মধ্যে হস্তান্তর ও বিনিময় করত। একটি বাহিনী অপহরণ করত, আরেকটি আটক রাখত এবং তৃতীয়টি হয় হত্যা করত বা মুক্তি দিত।
একটি উদাহরণ হলো, এক ভুক্তভোগীর কল রেকর্ডে দেখায় যে, অপহরণের পরপরই তাঁর সিম কার্ড ডিজিএফআইয়ের সদর দপ্তরে সক্রিয় ছিল। প্রথম অবস্থান ডিজিএফআইয়ের একটি গোপন আটক কেন্দ্রে ছিল, পরে তাঁকে র্যাবের বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয় এবং কয়েক মাস পর র্যাব–৭ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায়।
কিছু ক্ষেত্রে একটি বাহিনী এককভাবে গুম কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সেই অপারেশন উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভক্ত করা হতো। অপহরণের জন্য একটি দল, আটক রাখার জন্য আরেকটি দল এবং হত্যা বা মুক্তি দেওয়ার জন্য আরেকটি দল দায়িত্ব পালন করত। ফলে যারা হত্যা কার্যক্রমে সরাসরি জড়িত ছিল, তারাও প্রায়ই জানত না কাকে হত্যা করা হচ্ছে।
বাহিনীর মধ্যে প্রায়শই কাজের এলাকা এবং দায়িত্বের সীমারেখা অস্পষ্ট ছিল। উদাহরণস্বরূপ, র্যাব–২ সহজেই র্যাব–১১–এর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে পারত, যা বাহিনীর অভ্যন্তরে কোনো প্রশ্ন তুলত না।
এই পরিকল্পিত অপারেশনাল জটিলতার কারণে অনুসন্ধানে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে কমিশনকে। তবে, বেঁচে থাকা ভুক্তভোগীদের সাহস এবং তাঁদের তথ্য প্রদানের মাধ্যমেই এই ব্যবস্থা কিছুটা উন্মোচন করতে পেরেছে কমিশন।
অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা এবং মুক্তি
অপহরণ
অনুসন্ধান অনুসারে, অপহরণ সাধারণত রাস্তায় বা বাড়িতে সংঘটিত হতো, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাতে। অপহরণকারীরা প্রায়ই সাদাপোশাক পরিহিত থাকত এবং নিজেদের পরিচয় দিত ‘প্রশাসনের লোক’, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ডিবি অথবা র্যাব হিসেবে। যেসব ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, সেসব ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যরা গভীর মানসিক আঘাত পেয়েছিলেন, কারণ তাঁরা দেখেছিলেন কীভাবে তাঁদের প্রিয়জনদের মারধর করে ও জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে অপহৃতদের আর কখনোই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া, ফেরি, রাস্তার পাশ অথবা অন্যান্য জনবহুল স্থান থেকেও ভুক্তভোগীদের অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণের সময় তাঁদের নাম ধরে ডাকা হতো এবং দ্রুত বড় গাড়িতে তুলে নেওয়া হতো। গাড়ির ভেতরেই ভুক্তভোগীদের চোখ বাঁধা, হাতকড়া পরানো এবং অস্ত্রের মুখে হুমকি দেওয়া হতো। প্রায়শই নির্যাতন যেমন: মারধর বা বৈদ্যুতিক শক দেওয়া, আটকের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যেত।
কিছু অপহরণ জনসমক্ষে ঘটেছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যন্ত স্থানে কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ছাড়াই অপহরণ সংঘটিত হয়েছে, যার ফলে প্রমাণ সংগ্রহ করা অত্যন্ত কঠিন হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, এক ভুক্তভোগী, যিনি বেঁচে ফিরে এসেছিলেন, উল্লেখ করেছেন, ‘আমি তার সঙ্গে চা খেয়েছিলাম এবং সে বাড়ি ফিরছিল। পনেরো মিনিট পরে আমি রাস্তার পাশে তার সাইকেল এবং বই পড়ে থাকতে দেখলাম।’
যাঁরা বেঁচে ফিরেছেন, তাঁদের সাক্ষ্য এবং পরিস্থিতির ভিত্তিতে কিছু অপহরণের ঘটনার বর্ণনা পাওয়া সম্ভব হয়েছে।
আটক
ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন সময়ের জন্য আটক রাখা হতো ৪৮ থেকে ৬০ ঘণ্টা, কয়েক সপ্তাহ বা মাস এবং কিছু ক্ষেত্রে আট বছর পর্যন্ত। সাধারণ ধারণা ছিল যে ভুক্তভোগীদের কেবল গোপন কারাগারে রাখা হয়, কিন্তু বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সাক্ষ্য থেকে জানা গেছে, অনেককে বৈধ বন্দীদের সঙ্গে একই সেলে আটক রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, একই স্থাপনার ভেতরেই তাঁদের অবৈধ সেল থেকে বৈধ সেলে স্থানান্তর করা হতো। এসব স্থানান্তর সাধারণত আদালতে হাজিরার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করা হতো, যেন তাঁদের অবৈধ আটকের বিষয়টি আড়াল করা যায়।
তদন্তে দেখা গেছে, অনেক গোপন আটককেন্দ্র এখনো অক্ষত রয়েছে, যদিও কিছু ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসগুলো পরিদর্শনের সময় এসব কেন্দ্রে আটক ব্যক্তিদের অবস্থান নির্ধারণে ভুক্তভোগীদের বিবরণ কাজে লাগিয়েছে কমিশন।
নির্যাতন
নথিভুক্ত নির্যাতনের বর্ণনা নির্মম এবং পদ্ধতিগত। বেসামরিক বাহিনীর (যেমন: ডিবি বা সিটিটিসি) পরিচালিত কেন্দ্রগুলোতে নির্যাতন তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমের অংশ ছিল। এসব নির্যাতন স্থানীয় অফিসেই ঘটত এবং প্রায়শই বিশেষায়িত সরঞ্জাম ব্যবহার করা হতো।
অন্যদিকে, সামরিক বাহিনী (যেমন র্যাব বা ডিজিএফআই) পরিচালিত কেন্দ্রে নির্যাতনের জন্য বিশেষায়িত অবকাঠামো ছিল। এসব কেন্দ্র প্রায়ই সাউন্ডপ্রুফ কক্ষ এবং বিশেষ যন্ত্রপাতি দিয়ে সজ্জিত ছিল। এগুলো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
এক ভুক্তভোগী উল্লেখ করেছেন, ২০১০ সালে তাঁকে ধানমন্ডি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁকে একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই তার ঠোঁট সেলাই করা হয়েছিল, কোনো অ্যানাস্থেটিক ব্যবহার (অবশ) না করেই। তিনি এই অভিজ্ঞতাকে ‘গরুর চামড়া সেলাই করার মতো’ বলে বর্ণনা করেছেন।
হত্যা
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, গুম হওয়া ব্যক্তিদের হয় হত্যা করা হয়েছে অথবা তাঁদের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে আটকে রাখা হয়েছে। যাঁদের হত্যা করা হয়েছে, তাঁদের মরদেহ সিমেন্টের ব্যাগ বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
কিছু ক্ষেত্রে সামরিক কর্মকর্তা এবং সৈন্যরা সরাসরি এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, এক র্যাব কর্মকর্তা বর্ণনা করেছেন কীভাবে একটি ‘অভিষেক’ সেশনের সময় তাঁর সামনে দুটি ভুক্তভোগীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
মুক্তি
যারা বেঁচে ফিরেছেন, তাঁরা কমিশনের তদন্তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উৎস। তবে মুক্তি পাওয়া ভুক্তভোগীদের ওপর মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করা হয়েছে এবং তাদের নির্যাতনের বিষয়টি ঢাকতে মিডিয়ায় মিথ্যা গল্প প্রচার করা হয়েছে।
বেঁচে ফিরে আসা ব্যক্তিদের সাক্ষ্য অনুসারে, তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে এবং স্থানীয় আইন ও বিচারব্যবস্থার ফাঁদে ফেলে দীর্ঘ সময় ভোগান্তির শিকার করা হয়েছে।

গুমসংক্রান্ত কমিশনের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত শনিবার জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে এবং র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গুম, নির্যাতন ও খুনের ভয়াবহ বর্ণনা।
প্রতিবেদনে গুমের পদ্ধতি, প্রক্রিয়া এবং যে পদ্ধতিতে এগুলো কার্যকর করা হয়েছে, সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে। কমিশনের মূল্যায়নে দেখা গেছে, বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক গুমের ঘটনা মূলত পুলিশ বিভাগের অধীনে কাজ করা বিভিন্ন ইউনিট দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে চিহ্নিত হয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং সন্ত্রাসবিরোধী ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ (সিটিটিসি) বিভাগ। ভুক্তভোগী, সাক্ষী এবং পরিবারের সদস্যদের মতে, এই বাহিনীগুলো বেশির ভাগ গুমের জন্য প্রধানত দায়ী।
এ ছাড়া, আরও কিছু সংস্থার নাম উঠে এসেছে, যার মধ্যে রয়েছে—ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স (এনএসআই)।
কমিশন ১ হাজার ৬৭৬টি নথিভুক্ত অভিযোগের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৭৫৮টি অভিযোগ পর্যালোচনা করেছে। এই পর্যালোচনার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে:
| বছর | অভিযোগ | বছর | অভিযোগ |
|---|---|---|---|
| ২০০৯ | ৫ | ২০১৭ | ৮৪ |
| ২০১০ | ১৯ | ২০১৮ | ৮৯ |
| ২০১১ | ২৩ | ২০১৯ | ৩৬ |
| ২০১২ | ৩৬ | ২০২০ | ১৮ |
| ২০১৩ | ৭৩ | ২০২১ | ২৫ |
| ২০১৪ | ৪৫ | ২০২২ | ৪২ |
| ২০১৫ | ৭৮ | ২০২৩ | ৩৪ |
| ২০১৬ | ১৩০ | ২০২৪ | ২১ |
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, গুমের এই সংস্কৃতি ১৫ বছরের মধ্যে এমনভাবে পরিকল্পিত ছিল, যাতে তা সহজে শনাক্ত করা না যায়। উদাহরণস্বরূপ, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রায়ই সাদাপোশাকে কাজ করতেন এবং নিজেদের কর্মকাণ্ড অন্য কোনো সংস্থার ওপর চাপিয়ে দিতেন। যেমন—ডিজিএফআই যদি কোনো অভিযান পরিচালনা করত, তারা দাবি করত তারা র্যাব; র্যাব হলে বলত তারা ডিবি।
নিরাপত্তা বাহিনী প্রায়ই ভুক্তভোগীদের নিজেদের মধ্যে হস্তান্তর ও বিনিময় করত। একটি বাহিনী অপহরণ করত, আরেকটি আটক রাখত এবং তৃতীয়টি হয় হত্যা করত বা মুক্তি দিত।
একটি উদাহরণ হলো, এক ভুক্তভোগীর কল রেকর্ডে দেখায় যে, অপহরণের পরপরই তাঁর সিম কার্ড ডিজিএফআইয়ের সদর দপ্তরে সক্রিয় ছিল। প্রথম অবস্থান ডিজিএফআইয়ের একটি গোপন আটক কেন্দ্রে ছিল, পরে তাঁকে র্যাবের বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয় এবং কয়েক মাস পর র্যাব–৭ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায়।
কিছু ক্ষেত্রে একটি বাহিনী এককভাবে গুম কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সেই অপারেশন উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভক্ত করা হতো। অপহরণের জন্য একটি দল, আটক রাখার জন্য আরেকটি দল এবং হত্যা বা মুক্তি দেওয়ার জন্য আরেকটি দল দায়িত্ব পালন করত। ফলে যারা হত্যা কার্যক্রমে সরাসরি জড়িত ছিল, তারাও প্রায়ই জানত না কাকে হত্যা করা হচ্ছে।
বাহিনীর মধ্যে প্রায়শই কাজের এলাকা এবং দায়িত্বের সীমারেখা অস্পষ্ট ছিল। উদাহরণস্বরূপ, র্যাব–২ সহজেই র্যাব–১১–এর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে পারত, যা বাহিনীর অভ্যন্তরে কোনো প্রশ্ন তুলত না।
এই পরিকল্পিত অপারেশনাল জটিলতার কারণে অনুসন্ধানে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে কমিশনকে। তবে, বেঁচে থাকা ভুক্তভোগীদের সাহস এবং তাঁদের তথ্য প্রদানের মাধ্যমেই এই ব্যবস্থা কিছুটা উন্মোচন করতে পেরেছে কমিশন।
অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা এবং মুক্তি
অপহরণ
অনুসন্ধান অনুসারে, অপহরণ সাধারণত রাস্তায় বা বাড়িতে সংঘটিত হতো, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাতে। অপহরণকারীরা প্রায়ই সাদাপোশাক পরিহিত থাকত এবং নিজেদের পরিচয় দিত ‘প্রশাসনের লোক’, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ডিবি অথবা র্যাব হিসেবে। যেসব ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, সেসব ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যরা গভীর মানসিক আঘাত পেয়েছিলেন, কারণ তাঁরা দেখেছিলেন কীভাবে তাঁদের প্রিয়জনদের মারধর করে ও জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে অপহৃতদের আর কখনোই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া, ফেরি, রাস্তার পাশ অথবা অন্যান্য জনবহুল স্থান থেকেও ভুক্তভোগীদের অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণের সময় তাঁদের নাম ধরে ডাকা হতো এবং দ্রুত বড় গাড়িতে তুলে নেওয়া হতো। গাড়ির ভেতরেই ভুক্তভোগীদের চোখ বাঁধা, হাতকড়া পরানো এবং অস্ত্রের মুখে হুমকি দেওয়া হতো। প্রায়শই নির্যাতন যেমন: মারধর বা বৈদ্যুতিক শক দেওয়া, আটকের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যেত।
কিছু অপহরণ জনসমক্ষে ঘটেছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যন্ত স্থানে কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ছাড়াই অপহরণ সংঘটিত হয়েছে, যার ফলে প্রমাণ সংগ্রহ করা অত্যন্ত কঠিন হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, এক ভুক্তভোগী, যিনি বেঁচে ফিরে এসেছিলেন, উল্লেখ করেছেন, ‘আমি তার সঙ্গে চা খেয়েছিলাম এবং সে বাড়ি ফিরছিল। পনেরো মিনিট পরে আমি রাস্তার পাশে তার সাইকেল এবং বই পড়ে থাকতে দেখলাম।’
যাঁরা বেঁচে ফিরেছেন, তাঁদের সাক্ষ্য এবং পরিস্থিতির ভিত্তিতে কিছু অপহরণের ঘটনার বর্ণনা পাওয়া সম্ভব হয়েছে।
আটক
ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন সময়ের জন্য আটক রাখা হতো ৪৮ থেকে ৬০ ঘণ্টা, কয়েক সপ্তাহ বা মাস এবং কিছু ক্ষেত্রে আট বছর পর্যন্ত। সাধারণ ধারণা ছিল যে ভুক্তভোগীদের কেবল গোপন কারাগারে রাখা হয়, কিন্তু বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সাক্ষ্য থেকে জানা গেছে, অনেককে বৈধ বন্দীদের সঙ্গে একই সেলে আটক রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, একই স্থাপনার ভেতরেই তাঁদের অবৈধ সেল থেকে বৈধ সেলে স্থানান্তর করা হতো। এসব স্থানান্তর সাধারণত আদালতে হাজিরার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করা হতো, যেন তাঁদের অবৈধ আটকের বিষয়টি আড়াল করা যায়।
তদন্তে দেখা গেছে, অনেক গোপন আটককেন্দ্র এখনো অক্ষত রয়েছে, যদিও কিছু ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসগুলো পরিদর্শনের সময় এসব কেন্দ্রে আটক ব্যক্তিদের অবস্থান নির্ধারণে ভুক্তভোগীদের বিবরণ কাজে লাগিয়েছে কমিশন।
নির্যাতন
নথিভুক্ত নির্যাতনের বর্ণনা নির্মম এবং পদ্ধতিগত। বেসামরিক বাহিনীর (যেমন: ডিবি বা সিটিটিসি) পরিচালিত কেন্দ্রগুলোতে নির্যাতন তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমের অংশ ছিল। এসব নির্যাতন স্থানীয় অফিসেই ঘটত এবং প্রায়শই বিশেষায়িত সরঞ্জাম ব্যবহার করা হতো।
অন্যদিকে, সামরিক বাহিনী (যেমন র্যাব বা ডিজিএফআই) পরিচালিত কেন্দ্রে নির্যাতনের জন্য বিশেষায়িত অবকাঠামো ছিল। এসব কেন্দ্র প্রায়ই সাউন্ডপ্রুফ কক্ষ এবং বিশেষ যন্ত্রপাতি দিয়ে সজ্জিত ছিল। এগুলো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
এক ভুক্তভোগী উল্লেখ করেছেন, ২০১০ সালে তাঁকে ধানমন্ডি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁকে একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই তার ঠোঁট সেলাই করা হয়েছিল, কোনো অ্যানাস্থেটিক ব্যবহার (অবশ) না করেই। তিনি এই অভিজ্ঞতাকে ‘গরুর চামড়া সেলাই করার মতো’ বলে বর্ণনা করেছেন।
হত্যা
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, গুম হওয়া ব্যক্তিদের হয় হত্যা করা হয়েছে অথবা তাঁদের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে আটকে রাখা হয়েছে। যাঁদের হত্যা করা হয়েছে, তাঁদের মরদেহ সিমেন্টের ব্যাগ বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
কিছু ক্ষেত্রে সামরিক কর্মকর্তা এবং সৈন্যরা সরাসরি এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, এক র্যাব কর্মকর্তা বর্ণনা করেছেন কীভাবে একটি ‘অভিষেক’ সেশনের সময় তাঁর সামনে দুটি ভুক্তভোগীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
মুক্তি
যারা বেঁচে ফিরেছেন, তাঁরা কমিশনের তদন্তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উৎস। তবে মুক্তি পাওয়া ভুক্তভোগীদের ওপর মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করা হয়েছে এবং তাদের নির্যাতনের বিষয়টি ঢাকতে মিডিয়ায় মিথ্যা গল্প প্রচার করা হয়েছে।
বেঁচে ফিরে আসা ব্যক্তিদের সাক্ষ্য অনুসারে, তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে এবং স্থানীয় আইন ও বিচারব্যবস্থার ফাঁদে ফেলে দীর্ঘ সময় ভোগান্তির শিকার করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের সিভিল অ্যাভিয়েশন–১ শাখা থেকে গত ২৭ অক্টোবর (সোমবার) জারি করা এক সরকারি পত্রে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
১ ঘণ্টা আগে
সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’ জারির মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছা ও অভিপ্রায়কে আইনিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাংবিধানিক রূপ দেওয়ার পথ প্রশস্ত হবে।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে করা সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই সুপারিশ হস্তান্তর করেন।
৩ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
৪ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক শিডিউলড ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জরুরি অবতরণ (ইমার্জেন্সি/ডাইভারশন) বা নন-শিডিউলড আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রেও বিমানবন্দরটি ব্যবহার না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সিভিল অ্যাভিয়েশন–১ শাখা থেকে গতকাল (২৭ অক্টোবর) জারি করা এক সরকারি পত্রে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
নির্দেশনায় আরও উল্লেখ করা হয়, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক শিডিউল ফ্লাইটের পাশাপাশি নন-শিডিউল আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ও জরুরি অবতরণের ক্ষেত্রেও ব্যবহার না করার অনুরোধ করা হলো।’
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বিষয়টি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপনটি সরকার স্থগিত করে। এর ফলে বিমানবন্দরটিতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তুতি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কার্যক্রম আপাতত বন্ধ থাকছে।

কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক শিডিউলড ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জরুরি অবতরণ (ইমার্জেন্সি/ডাইভারশন) বা নন-শিডিউলড আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রেও বিমানবন্দরটি ব্যবহার না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সিভিল অ্যাভিয়েশন–১ শাখা থেকে গতকাল (২৭ অক্টোবর) জারি করা এক সরকারি পত্রে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
নির্দেশনায় আরও উল্লেখ করা হয়, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক শিডিউল ফ্লাইটের পাশাপাশি নন-শিডিউল আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ও জরুরি অবতরণের ক্ষেত্রেও ব্যবহার না করার অনুরোধ করা হলো।’
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বিষয়টি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপনটি সরকার স্থগিত করে। এর ফলে বিমানবন্দরটিতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তুতি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কার্যক্রম আপাতত বন্ধ থাকছে।

গুম–সংক্রান্ত কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত শনিবার জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে এবং র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’ জারির মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছা ও অভিপ্রায়কে আইনিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাংবিধানিক রূপ দেওয়ার পথ প্রশস্ত হবে।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে করা সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই সুপারিশ হস্তান্তর করেন।
৩ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
৪ ঘণ্টা আগেজাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর গভীর ও মৌলিক সংস্কার নিশ্চিত করতে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন’ পদ্ধতির চূড়ান্ত সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’ জারির মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছা ও অভিপ্রায়কে আইনিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাংবিধানিক রূপ দেওয়ার পথ প্রশস্ত হবে।
প্রস্তাবিত আদেশের প্রারম্ভিক ঘোষণায় স্পষ্ট করা হয়েছে, এই পদক্ষেপের মূল ভিত্তি হলো ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-শ্রমিক-জনতার সফল গণ-অভ্যুত্থান। এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে।
৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনার পর সংবিধান সংস্কারসহ অন্যান্য সংস্কারের সুপারিশসংবলিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’ প্রণয়ন করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রধান রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো সম্মিলিতভাবে ওই সনদে স্বাক্ষর করে এবং তা দ্রুত বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য জনগণের সর্বোচ্চ অনুমোদন প্রয়োজন। এই অনুমোদনপ্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে: সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী জনগণের অনুমোদন নেওয়ার উদ্দেশ্যে গণভোট অনুষ্ঠান অপরিহার্য। সংবিধান সংস্কারের জন্য সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন ও উক্ত পরিষদ কর্তৃক সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করা অত্যাবশ্যক।
ঐকমত্য কমিশন মনে করে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন সম্পন্ন করার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক আইনি দলিল আবশ্যক ছিল। সে কারণেই সরকার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে এই বাস্তবায়ন আদেশ জারি করবে। আদেশের খসড়ায় যা যা আছে জানতে বিস্তারিত পড়ুন—
জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫
যেহেতু সুদীর্ঘ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-শ্রমিক-জনতার সফল গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের প্রকাশ ঘটিয়াছে; এবং
যেহেতু উক্ত গণঅভ্যুত্থানের ফলে ৫ আগস্ট ২০২৪ (২১ শ্রাবণ ১৪৩১) তারিখে তৎকালীন কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটে, ৬ আগস্ট ২০২৪ (২২ শ্রাবণ ১৪৩১) তারিখে জাতীয় সংসদ ভাঙ্গিয়া দেওয়া হয় এবং ৮ আগস্ট ২০২৪ (২৪ শ্রাবণ ১৪৩১) তারিখে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়, যাহা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্যকারিতা ও স্বীকৃতি লাভ করিয়াছে; এবং
যেহেতু রাষ্ট্রীয় সংস্কার সাধনের মাধ্যমে সুশাসন, গণতন্ত্র ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি রোধ করিবার উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থায় সংস্কারের সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে ৬টি সংস্কার কমিশন গঠন করে এবং উক্ত কমিশনসমূহ স্ব স্ব প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করে; এবং
যেহেতু উপরিউক্ত প্রতিবেদনগুলিতে অন্তর্ভুক্ত সুপারিশসমূহের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (২৯ মাঘ ১৪৩২) তারিখে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে; এবং
যেহেতু জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সহিত আলোচনাক্রমে সংবিধান সংস্কারসহ অন্যান্য সংস্কারের সুপারিশ সংবলিত জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ প্রণয়ন করে এবং রাজনৈতিক দল ও জোট সম্মিলিতভাবে উক্ত সনদে স্বাক্ষর ও তাহা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করে; এবং
যেহেতু সংবিধান সংস্কার বিষয়ে জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের জন্য সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী জনগণের অনুমোদন প্রয়োজন এবং তদুদ্দেশ্যে গণভোট অনুষ্ঠান, সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন ও উক্ত পরিষদ কর্তৃক সংবিধান সংস্কার অপরিহার্য; এবং
যেহেতু উপরে বর্ণিতমতে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়ন সম্পন্ন করিবার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক আদেশ জারি করা একান্ত প্রয়োজন,
সেহেতু সরকার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে এই আদেশ জারি করিল:-
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম।- এই আদেশ জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ নামে অভিহিত হইবে, যাহা অতঃপর “এই আদেশ” বলিয়া উল্লেখিত।
২। আদেশের প্রবর্তন ও কার্যকরতা।- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ফল হিসাবে প্রণীত জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই আদেশ অবিলম্বে সরকারি গেজেটে প্রকাশ করা হইবে, এবং-
(ক) উক্তরূপে গেজেট প্রকাশের তারিখে ইহার ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ১৩ ও ১৬ অনুচ্ছেদ কার্যকর হইবে; এবং
(খ) ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৪ ও ১৫ অনুচ্ছেদ গণভোটের ইতিবাচক ফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখে কার্যকর হইবে।
৩। সংজ্ঞা।- বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কিছু না থাকিলে, এই আদেশে,-
(ক) “গণভোট” অর্থ এই আদেশের অধীনে অনুষ্ঠিত গণভোট;
(খ) “জাতীয় সংসদ” অর্থ সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে গঠিত জাতীয় সংসদ;
(গ) “জুলাই গণঅভ্যুত্থান” অর্থ ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান, যাহার পরিণতিতে ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে তৎকালীন সরকারের পতন ঘটে, ৬ আগস্ট ২০২৪ তারিখে সংসদ ভাঙ্গিয়া দেওয়া হয় এবং ৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়;
(ঘ) “জুলাই জাতীয় সনদ” অর্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহ এবং উক্ত কমিশন কর্তৃক স্বাক্ষরিত জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫;
(ঙ) “নির্বাচন কমিশন” অর্থ সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী গঠিত নির্বাচন কমিশন;
(চ) “নির্বাচিত প্রতিনিধি” অর্থ সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুসারে গঠিত জাতীয় সংসদের সকল সংসদ-সদস্য;
(ছ) “পরিষদ” অর্থ এই আদেশের ৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে গঠিত সংবিধান সংস্কার পরিষদ;
(জ) “সভাপ্রধান” অর্থ এই আদেশের ১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে পরিষদের সভায় সভাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি;
(ঝ) “সংবিধান” অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের বিদ্যমান সংবিধান; এবং
(ঞ) “সংসদ নির্বাচন” অর্থ এই আদেশ জারির অব্যবহিত পরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন।
৪। জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত সংবিধান সংস্কার বিষয়ে গণভোট।- জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের উদ্দেশ্যে এই আদেশ এবং ইহার তফসিল-১ এ সন্নিবেশিত জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত অংশ গণভোটে উপস্থাপন করা হইবে।
৫। গণভোটের ব্যালটে উপস্থাপনীয় প্রশ্ন ।- (১) গণভোটে নিম্নরূপ প্রশ্ন উপস্থাপন করা হইবে -
‘আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং ইহার তফসিল-১ এ সন্নিবেশিত সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবসমূহের প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করিতেছেন?’।
(২) ব্যালটের মাধ্যমে গণভোট অনুষ্ঠিত হইবে এবং নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ব্যালটে প্রত্যেক ভোটার গোপনে ভোটদান করিবেন।
৬। গণভোট অনুষ্ঠান।- এই আদেশ জারির অব্যবহিত পর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে যথোপযুক্ত সময়ে অথবা উক্ত নির্বাচনের দিন এই আদেশ অনুসারে গণভোট অনুষ্ঠান করা হইবে।
৭। গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য আইন প্রণয়ন।- গণভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে যথোপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা হইবে।
৮। সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন ও উহার কার্যাবলি।- (১) গণভোটে উপস্থাপিত প্রশ্নের উত্তরে প্রদত্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ইতিবাচক (হ্যাঁ সূচক) হইলে-
(ক) এই আদেশ জারির অব্যবহিত পর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণের সমন্বয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হইবে, যাহা সংবিধান সংস্কার বিষয়ে গাঠনিক ক্ষমতা (Constituent Power) প্রয়োগ করিতে পারিবে;
(খ) উক্ত নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ একইসাথে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসাবে এবং এই আদেশ অনুসারে সংবিধান সংস্কার পরিষদের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন;
(গ) পরিষদ উহার প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ হইতে ২৭০ পঞ্জিকা দিবসের মধ্যে জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে এই আদেশের তফসিল-১ এ বর্ণিত জুলাই জাতীয় সনদ অনুসারে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করিবে এবং তাহা সম্পন্ন করিবার পর পরিষদের কার্যক্রম সমাপ্ত হইবে।
(২) পরিষদের কার্যধারায় অংশগ্রহণের সময় নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ পরিষদ-সদস্য হিসাবে অভিহিত হইবেন।
(৩) এই আদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পরিষদ ইহার অধিবেশন আহ্বান ও মুলতবি, সংবিধান সংস্কার বিষয়ক প্রস্তাব উত্থাপনের পদ্ধতি, উক্ত প্রস্তাব বিবেচনা ও গ্রহণ এবং অন্য সকল বিষয়ে কার্যপ্রণালি নির্ধারণ করিবে।
(৪) জাতীয় সংসদ সচিবালয় পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবে।
৯। শপথ এবং শপথ-পাঠ পরিচালনা।- (১) নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ সংসদ-সদস্য হিসাবে শপথ গ্রহণের পর একই শপথ অনুষ্ঠানে এই আদেশের তফসিল-২ অনুযায়ী পরিষদ-সদস্য হিসাবে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা (এই অনুচ্ছেদে “শপথ” বলিয়া অভিহিত) করিবেন এবং অনুরূপ শপথপত্রে বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর দান করিবেন।
(২) সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ-সদস্যদের ক্ষেত্রে যিনি শপথ-পাঠ পরিচালনা করিবেন তিনিই এই আদেশের তফসিল-২ এ বিধৃত ফরমে পরিষদ-সদস্যদের শপথ-পাঠ পরিচালনা করিবেন।
১০। পরিষদের সভাপ্রধান, ইত্যাদি।- (১) পরিষদের প্রথম অধিবেশনের প্রথম বৈঠকে পরিষদ-সদস্যগণ ইহার সভাপ্রধান ও উপ-সভাপ্রধান নির্বাচন করিবে; এবং উক্তরূপ নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত পরিষদের বয়োজ্যেষ্ঠ একজন সদস্য বৈঠকে সভাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন।
(২) সভাপ্রধান ও উপ-সভাপ্রধান উভয়ের অনুপস্থিতিতে পরিষদের কার্যপ্রণালী অনুযায়ী কোন পরিষদ-সদস্য সভাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করিবেন।
১১। পরিষদের অধিবেশন আহ্বান, কোরাম, ভোটদান, ইত্যাদি।- (১) সংসদ নির্বাচনের ফল ঘোষিত হইবার ৩০ পঞ্জিকা দিবসের মধ্যে যে পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন আহ্বান করা হইবে অনুরূপ পদ্ধতিতে পরিষদের প্রথম অধিবেশন আহ্বান করা হইবে।
(২) পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ন্যূনতম ৬০ (ষাট) জন পরিষদ-সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন হইবে।
(৩) সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত কোনো প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পরিষদের মোট সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে; এবং অন্যান্য বিষয়ে উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পরিষদে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, সমসংখ্যক ভোটের ক্ষেত্র ব্যতীত সভাপ্রধান ভোটদান করিবেন না এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে তিনি নির্ণায়ক ভোট প্রদান করিবেন।
১২। পরিষদ ও উহার সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি।- পরিষদের কোনো কার্যধারার বৈধতা এবং পরিষদ-সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি জাতীয় সংসদ ও সংসদ-সদস্যদের অনুরূপ হইবে।
১৩। জুলাই জাতীয় সনদ সংবিধানে অন্তর্ভুক্তকরণ।- জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা অনুসারে সংবিধানে জুলাই জাতীয় সনদ অন্তর্ভুক্ত হইবে।
১৪। সংবিধান সংস্কার অবিলম্বে কার্যকর করা।- (১) এই আদেশের ৮ অনুচ্ছেদের উপঅনুচ্ছেদ (১)(গ) অনুসারে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হইবার পর যে সমস্ত সংস্কার অবিলম্বে কার্যকর করা সম্ভব তা অবিলম্বে কার্যকর করা হইবে এবং এক্ষেত্রে সরকার সকল যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
(২) এই অনুচ্ছেদের উপঅনুচ্ছেদ (১) এর সাধারণতা ক্ষুণ্ন না করিয়া [without prejudice to the generality of sub-article (1)] এই আদেশের ৮ অনুচ্ছেদের উপঅনুচ্ছেদ (১)(গ) অনুসারে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হইবার পর ৪৫ পঞ্জিকা দিবসের মধ্যে নিম্নকক্ষের নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (Proportional Representation-PR) পদ্ধতিতে একটি উচ্চকক্ষ গঠন করা হইবে।
(৩) এই অনুচ্ছেদের উপঅনুচ্ছেদ (২) অনুসারে গঠিত উচ্চকক্ষের মেয়াদ শপথ গ্রহণের তারিখ হইতে এই আদেশ জারির অব্যবহিত পরে গঠিত নিম্নকক্ষের (জাতীয় সংসদের) মেয়াদের শেষ দিবস পর্যন্ত হইবে।
(৪) এই আদেশ জারির অব্যবহিত পরে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনের সময় উচ্চকক্ষের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের প্রয়োজন হইবে না।
(৫) এই অনুচ্ছেদের উপঅনুচ্ছেদ (২) অনুসারে উচ্চকক্ষ গঠনের ক্ষেত্রে যেকোনো প্রতিবন্ধকতা দূর করার উদ্দেশ্যে পরিষদ প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং সরকার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করিতে পারিবে।
১৫। পরিষদ কর্তৃক সংবিধান সংস্কার চূড়ান্তকরণ ও প্রকাশ।- (১) সার্বভৌম জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তির ভিত্তিতে পরিষদ গঠিত বিধায় তৎকর্তৃক গৃহীত সংবিধান সংস্কার চূড়ান্ত হইবে এবং উক্তরূপ সংস্কার বিষয়ে অন্য কোনোভাবে অনুমোদন বা সম্মতির প্রয়োজন হইবে না।
(২) পরিষদ কর্তৃক গৃহীত সংবিধান সংস্কারের পূর্ণাঙ্গ পাঠ এবং উক্তরূপে সংস্কারকৃত সংবিধানের পূর্ণাঙ্গ পাঠ অনতিবিলম্বে সরকার সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে।
১৬। সরকার কর্তৃক নির্দেশনা ইত্যাদি জারি।- এই আদেশের বিধানাবলি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করিতে পারিবে।
জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ এর সংবিধান সংস্কার বিষয়ক প্রস্তাবগুলো নিচে দেখুন—

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর গভীর ও মৌলিক সংস্কার নিশ্চিত করতে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন’ পদ্ধতির চূড়ান্ত সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’ জারির মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছা ও অভিপ্রায়কে আইনিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাংবিধানিক রূপ দেওয়ার পথ প্রশস্ত হবে।
প্রস্তাবিত আদেশের প্রারম্ভিক ঘোষণায় স্পষ্ট করা হয়েছে, এই পদক্ষেপের মূল ভিত্তি হলো ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-শ্রমিক-জনতার সফল গণ-অভ্যুত্থান। এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে।
৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনার পর সংবিধান সংস্কারসহ অন্যান্য সংস্কারের সুপারিশসংবলিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’ প্রণয়ন করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রধান রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো সম্মিলিতভাবে ওই সনদে স্বাক্ষর করে এবং তা দ্রুত বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য জনগণের সর্বোচ্চ অনুমোদন প্রয়োজন। এই অনুমোদনপ্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে: সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী জনগণের অনুমোদন নেওয়ার উদ্দেশ্যে গণভোট অনুষ্ঠান অপরিহার্য। সংবিধান সংস্কারের জন্য সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন ও উক্ত পরিষদ কর্তৃক সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করা অত্যাবশ্যক।
ঐকমত্য কমিশন মনে করে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন সম্পন্ন করার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক আইনি দলিল আবশ্যক ছিল। সে কারণেই সরকার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে এই বাস্তবায়ন আদেশ জারি করবে। আদেশের খসড়ায় যা যা আছে জানতে বিস্তারিত পড়ুন—
জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫
যেহেতু সুদীর্ঘ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-শ্রমিক-জনতার সফল গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের প্রকাশ ঘটিয়াছে; এবং
যেহেতু উক্ত গণঅভ্যুত্থানের ফলে ৫ আগস্ট ২০২৪ (২১ শ্রাবণ ১৪৩১) তারিখে তৎকালীন কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটে, ৬ আগস্ট ২০২৪ (২২ শ্রাবণ ১৪৩১) তারিখে জাতীয় সংসদ ভাঙ্গিয়া দেওয়া হয় এবং ৮ আগস্ট ২০২৪ (২৪ শ্রাবণ ১৪৩১) তারিখে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়, যাহা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্যকারিতা ও স্বীকৃতি লাভ করিয়াছে; এবং
যেহেতু রাষ্ট্রীয় সংস্কার সাধনের মাধ্যমে সুশাসন, গণতন্ত্র ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি রোধ করিবার উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থায় সংস্কারের সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে ৬টি সংস্কার কমিশন গঠন করে এবং উক্ত কমিশনসমূহ স্ব স্ব প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করে; এবং
যেহেতু উপরিউক্ত প্রতিবেদনগুলিতে অন্তর্ভুক্ত সুপারিশসমূহের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (২৯ মাঘ ১৪৩২) তারিখে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে; এবং
যেহেতু জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সহিত আলোচনাক্রমে সংবিধান সংস্কারসহ অন্যান্য সংস্কারের সুপারিশ সংবলিত জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ প্রণয়ন করে এবং রাজনৈতিক দল ও জোট সম্মিলিতভাবে উক্ত সনদে স্বাক্ষর ও তাহা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করে; এবং
যেহেতু সংবিধান সংস্কার বিষয়ে জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের জন্য সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী জনগণের অনুমোদন প্রয়োজন এবং তদুদ্দেশ্যে গণভোট অনুষ্ঠান, সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন ও উক্ত পরিষদ কর্তৃক সংবিধান সংস্কার অপরিহার্য; এবং
যেহেতু উপরে বর্ণিতমতে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়ন সম্পন্ন করিবার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক আদেশ জারি করা একান্ত প্রয়োজন,
সেহেতু সরকার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে এই আদেশ জারি করিল:-
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম।- এই আদেশ জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ নামে অভিহিত হইবে, যাহা অতঃপর “এই আদেশ” বলিয়া উল্লেখিত।
২। আদেশের প্রবর্তন ও কার্যকরতা।- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ফল হিসাবে প্রণীত জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই আদেশ অবিলম্বে সরকারি গেজেটে প্রকাশ করা হইবে, এবং-
(ক) উক্তরূপে গেজেট প্রকাশের তারিখে ইহার ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ১৩ ও ১৬ অনুচ্ছেদ কার্যকর হইবে; এবং
(খ) ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৪ ও ১৫ অনুচ্ছেদ গণভোটের ইতিবাচক ফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখে কার্যকর হইবে।
৩। সংজ্ঞা।- বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কিছু না থাকিলে, এই আদেশে,-
(ক) “গণভোট” অর্থ এই আদেশের অধীনে অনুষ্ঠিত গণভোট;
(খ) “জাতীয় সংসদ” অর্থ সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে গঠিত জাতীয় সংসদ;
(গ) “জুলাই গণঅভ্যুত্থান” অর্থ ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান, যাহার পরিণতিতে ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে তৎকালীন সরকারের পতন ঘটে, ৬ আগস্ট ২০২৪ তারিখে সংসদ ভাঙ্গিয়া দেওয়া হয় এবং ৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়;
(ঘ) “জুলাই জাতীয় সনদ” অর্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহ এবং উক্ত কমিশন কর্তৃক স্বাক্ষরিত জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫;
(ঙ) “নির্বাচন কমিশন” অর্থ সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী গঠিত নির্বাচন কমিশন;
(চ) “নির্বাচিত প্রতিনিধি” অর্থ সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুসারে গঠিত জাতীয় সংসদের সকল সংসদ-সদস্য;
(ছ) “পরিষদ” অর্থ এই আদেশের ৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে গঠিত সংবিধান সংস্কার পরিষদ;
(জ) “সভাপ্রধান” অর্থ এই আদেশের ১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে পরিষদের সভায় সভাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি;
(ঝ) “সংবিধান” অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের বিদ্যমান সংবিধান; এবং
(ঞ) “সংসদ নির্বাচন” অর্থ এই আদেশ জারির অব্যবহিত পরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন।
৪। জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত সংবিধান সংস্কার বিষয়ে গণভোট।- জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের উদ্দেশ্যে এই আদেশ এবং ইহার তফসিল-১ এ সন্নিবেশিত জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত অংশ গণভোটে উপস্থাপন করা হইবে।
৫। গণভোটের ব্যালটে উপস্থাপনীয় প্রশ্ন ।- (১) গণভোটে নিম্নরূপ প্রশ্ন উপস্থাপন করা হইবে -
‘আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং ইহার তফসিল-১ এ সন্নিবেশিত সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবসমূহের প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করিতেছেন?’।
(২) ব্যালটের মাধ্যমে গণভোট অনুষ্ঠিত হইবে এবং নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ব্যালটে প্রত্যেক ভোটার গোপনে ভোটদান করিবেন।
৬। গণভোট অনুষ্ঠান।- এই আদেশ জারির অব্যবহিত পর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে যথোপযুক্ত সময়ে অথবা উক্ত নির্বাচনের দিন এই আদেশ অনুসারে গণভোট অনুষ্ঠান করা হইবে।
৭। গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য আইন প্রণয়ন।- গণভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে যথোপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা হইবে।
৮। সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন ও উহার কার্যাবলি।- (১) গণভোটে উপস্থাপিত প্রশ্নের উত্তরে প্রদত্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ইতিবাচক (হ্যাঁ সূচক) হইলে-
(ক) এই আদেশ জারির অব্যবহিত পর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণের সমন্বয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হইবে, যাহা সংবিধান সংস্কার বিষয়ে গাঠনিক ক্ষমতা (Constituent Power) প্রয়োগ করিতে পারিবে;
(খ) উক্ত নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ একইসাথে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসাবে এবং এই আদেশ অনুসারে সংবিধান সংস্কার পরিষদের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন;
(গ) পরিষদ উহার প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ হইতে ২৭০ পঞ্জিকা দিবসের মধ্যে জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে এই আদেশের তফসিল-১ এ বর্ণিত জুলাই জাতীয় সনদ অনুসারে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করিবে এবং তাহা সম্পন্ন করিবার পর পরিষদের কার্যক্রম সমাপ্ত হইবে।
(২) পরিষদের কার্যধারায় অংশগ্রহণের সময় নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ পরিষদ-সদস্য হিসাবে অভিহিত হইবেন।
(৩) এই আদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পরিষদ ইহার অধিবেশন আহ্বান ও মুলতবি, সংবিধান সংস্কার বিষয়ক প্রস্তাব উত্থাপনের পদ্ধতি, উক্ত প্রস্তাব বিবেচনা ও গ্রহণ এবং অন্য সকল বিষয়ে কার্যপ্রণালি নির্ধারণ করিবে।
(৪) জাতীয় সংসদ সচিবালয় পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবে।
৯। শপথ এবং শপথ-পাঠ পরিচালনা।- (১) নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ সংসদ-সদস্য হিসাবে শপথ গ্রহণের পর একই শপথ অনুষ্ঠানে এই আদেশের তফসিল-২ অনুযায়ী পরিষদ-সদস্য হিসাবে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা (এই অনুচ্ছেদে “শপথ” বলিয়া অভিহিত) করিবেন এবং অনুরূপ শপথপত্রে বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর দান করিবেন।
(২) সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ-সদস্যদের ক্ষেত্রে যিনি শপথ-পাঠ পরিচালনা করিবেন তিনিই এই আদেশের তফসিল-২ এ বিধৃত ফরমে পরিষদ-সদস্যদের শপথ-পাঠ পরিচালনা করিবেন।
১০। পরিষদের সভাপ্রধান, ইত্যাদি।- (১) পরিষদের প্রথম অধিবেশনের প্রথম বৈঠকে পরিষদ-সদস্যগণ ইহার সভাপ্রধান ও উপ-সভাপ্রধান নির্বাচন করিবে; এবং উক্তরূপ নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত পরিষদের বয়োজ্যেষ্ঠ একজন সদস্য বৈঠকে সভাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন।
(২) সভাপ্রধান ও উপ-সভাপ্রধান উভয়ের অনুপস্থিতিতে পরিষদের কার্যপ্রণালী অনুযায়ী কোন পরিষদ-সদস্য সভাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করিবেন।
১১। পরিষদের অধিবেশন আহ্বান, কোরাম, ভোটদান, ইত্যাদি।- (১) সংসদ নির্বাচনের ফল ঘোষিত হইবার ৩০ পঞ্জিকা দিবসের মধ্যে যে পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন আহ্বান করা হইবে অনুরূপ পদ্ধতিতে পরিষদের প্রথম অধিবেশন আহ্বান করা হইবে।
(২) পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ন্যূনতম ৬০ (ষাট) জন পরিষদ-সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন হইবে।
(৩) সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত কোনো প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পরিষদের মোট সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে; এবং অন্যান্য বিষয়ে উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পরিষদে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, সমসংখ্যক ভোটের ক্ষেত্র ব্যতীত সভাপ্রধান ভোটদান করিবেন না এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে তিনি নির্ণায়ক ভোট প্রদান করিবেন।
১২। পরিষদ ও উহার সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি।- পরিষদের কোনো কার্যধারার বৈধতা এবং পরিষদ-সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি জাতীয় সংসদ ও সংসদ-সদস্যদের অনুরূপ হইবে।
১৩। জুলাই জাতীয় সনদ সংবিধানে অন্তর্ভুক্তকরণ।- জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা অনুসারে সংবিধানে জুলাই জাতীয় সনদ অন্তর্ভুক্ত হইবে।
১৪। সংবিধান সংস্কার অবিলম্বে কার্যকর করা।- (১) এই আদেশের ৮ অনুচ্ছেদের উপঅনুচ্ছেদ (১)(গ) অনুসারে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হইবার পর যে সমস্ত সংস্কার অবিলম্বে কার্যকর করা সম্ভব তা অবিলম্বে কার্যকর করা হইবে এবং এক্ষেত্রে সরকার সকল যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
(২) এই অনুচ্ছেদের উপঅনুচ্ছেদ (১) এর সাধারণতা ক্ষুণ্ন না করিয়া [without prejudice to the generality of sub-article (1)] এই আদেশের ৮ অনুচ্ছেদের উপঅনুচ্ছেদ (১)(গ) অনুসারে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হইবার পর ৪৫ পঞ্জিকা দিবসের মধ্যে নিম্নকক্ষের নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (Proportional Representation-PR) পদ্ধতিতে একটি উচ্চকক্ষ গঠন করা হইবে।
(৩) এই অনুচ্ছেদের উপঅনুচ্ছেদ (২) অনুসারে গঠিত উচ্চকক্ষের মেয়াদ শপথ গ্রহণের তারিখ হইতে এই আদেশ জারির অব্যবহিত পরে গঠিত নিম্নকক্ষের (জাতীয় সংসদের) মেয়াদের শেষ দিবস পর্যন্ত হইবে।
(৪) এই আদেশ জারির অব্যবহিত পরে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনের সময় উচ্চকক্ষের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের প্রয়োজন হইবে না।
(৫) এই অনুচ্ছেদের উপঅনুচ্ছেদ (২) অনুসারে উচ্চকক্ষ গঠনের ক্ষেত্রে যেকোনো প্রতিবন্ধকতা দূর করার উদ্দেশ্যে পরিষদ প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং সরকার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করিতে পারিবে।
১৫। পরিষদ কর্তৃক সংবিধান সংস্কার চূড়ান্তকরণ ও প্রকাশ।- (১) সার্বভৌম জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তির ভিত্তিতে পরিষদ গঠিত বিধায় তৎকর্তৃক গৃহীত সংবিধান সংস্কার চূড়ান্ত হইবে এবং উক্তরূপ সংস্কার বিষয়ে অন্য কোনোভাবে অনুমোদন বা সম্মতির প্রয়োজন হইবে না।
(২) পরিষদ কর্তৃক গৃহীত সংবিধান সংস্কারের পূর্ণাঙ্গ পাঠ এবং উক্তরূপে সংস্কারকৃত সংবিধানের পূর্ণাঙ্গ পাঠ অনতিবিলম্বে সরকার সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে।
১৬। সরকার কর্তৃক নির্দেশনা ইত্যাদি জারি।- এই আদেশের বিধানাবলি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করিতে পারিবে।
জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ এর সংবিধান সংস্কার বিষয়ক প্রস্তাবগুলো নিচে দেখুন—

গুম–সংক্রান্ত কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত শনিবার জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে এবং র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
মন্ত্রণালয়ের সিভিল অ্যাভিয়েশন–১ শাখা থেকে গত ২৭ অক্টোবর (সোমবার) জারি করা এক সরকারি পত্রে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে করা সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই সুপারিশ হস্তান্তর করেন।
৩ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে করা সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই সুপারিশ হস্তান্তর করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ জমা দেওয়ার পরে বেলা ২টার দিকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
সেখানে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সুপারিশের তিনটি ভাগ আছে। অধ্যাদেশ ও নির্বাহী আদেশের বাস্তবায়ন দ্রুততার সঙ্গে করা সম্ভব। সংবিধান-সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে দুটো বিকল্প প্রস্তাব আমরা দিয়েছি। প্রস্তাবগুলো হচ্ছে—সরকার যেন অবিলম্বে একটি আদেশ জারি করে। এ আদেশের বিষয় হবে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ। আদেশের অধীনে একটি গণভোট হবে।’
আলী রীয়াজ আরও বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ একই সঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদের দায়িত্ব পালন করবে। তারা ২৭০ দিন এমন দায়িত্ব পালন করবে।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে করা সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই সুপারিশ হস্তান্তর করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ জমা দেওয়ার পরে বেলা ২টার দিকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
সেখানে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সুপারিশের তিনটি ভাগ আছে। অধ্যাদেশ ও নির্বাহী আদেশের বাস্তবায়ন দ্রুততার সঙ্গে করা সম্ভব। সংবিধান-সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে দুটো বিকল্প প্রস্তাব আমরা দিয়েছি। প্রস্তাবগুলো হচ্ছে—সরকার যেন অবিলম্বে একটি আদেশ জারি করে। এ আদেশের বিষয় হবে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ। আদেশের অধীনে একটি গণভোট হবে।’
আলী রীয়াজ আরও বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ একই সঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদের দায়িত্ব পালন করবে। তারা ২৭০ দিন এমন দায়িত্ব পালন করবে।

গুম–সংক্রান্ত কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত শনিবার জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে এবং র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
মন্ত্রণালয়ের সিভিল অ্যাভিয়েশন–১ শাখা থেকে গত ২৭ অক্টোবর (সোমবার) জারি করা এক সরকারি পত্রে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
১ ঘণ্টা আগে
সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’ জারির মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছা ও অভিপ্রায়কে আইনিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাংবিধানিক রূপ দেওয়ার পথ প্রশস্ত হবে।
২ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনে আনসারদের অবদান সবচেয়ে বেশি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ১৩ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। এই ১৩ জনের মধ্যে তিনজন থাকবেন অস্ত্রসহ আর বাকি ১০ জন অস্ত্রবিহীন। অস্ত্রবিহীন ১০ জনের মধ্যে ছয়জন পুরুষ আর চারজন থাকবেন নারী। তা ছাড়া এবারই প্রথম প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সঙ্গে অস্ত্রসহ একজন আনসার সদস্য থাকবেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে মোট ৯ দিন আনসার সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। আগামী নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে আনসার সদস্যরা।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি বাহিনী দেশের নিরাপত্তা, শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জাতীয় উন্নয়নের প্রতিটি পর্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। নিজেদের জীবন ও স্বার্থের পরোয়া না করে তারা নিষ্ঠা, দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেমের সঙ্গে জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকে। তাই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের কর্মজীবনের মানোন্নয়ন ও কল্যাণ নিশ্চিত করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব এবং রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকারের অংশ। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের নিজস্ব অর্থায়নে মোট ৩১টি যানবাহন কেনা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ৯টি ট্রুপস ক্যারিয়ার, ১৪টি কাভার্ড ভ্যান, ৪২ আসনবিশিষ্ট চারটি বড় বাস, ২৪ আসনবিশিষ্ট দুটি মিনিবাস এবং দুটি অ্যাম্বুলেন্স।’
দেশের সর্ববৃহৎ এই বাহিনীর সদস্যদের ছুটি, বিনোদন ভ্রমণ এবং অন্য বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রায়ই নানা ধরনের যাতায়াতের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তাঁদের এই ভোগান্তি লাঘব ও সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই আজকের এই ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
উপদেষ্টা এ সময় ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসটি সর্বোচ্চ পেশাদারি ও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালিত হবে এবং বাহিনীর বৈধ পরিচয়পত্রধারী সব সদস্যের জন্য নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাইরে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিদিনই অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। গত পরশুদিনও আটটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এ রকম উদ্ধার হতেই থাকবে এবং নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, অস্ত্র উদ্ধার আরও বাড়তে থাকবে এবং একসময় দেখবেন যে বাইরে আর কোনো অস্ত্র বা হাতিয়ার নেই।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদসহ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনে আনসারদের অবদান সবচেয়ে বেশি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ১৩ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। এই ১৩ জনের মধ্যে তিনজন থাকবেন অস্ত্রসহ আর বাকি ১০ জন অস্ত্রবিহীন। অস্ত্রবিহীন ১০ জনের মধ্যে ছয়জন পুরুষ আর চারজন থাকবেন নারী। তা ছাড়া এবারই প্রথম প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সঙ্গে অস্ত্রসহ একজন আনসার সদস্য থাকবেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে মোট ৯ দিন আনসার সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। আগামী নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে আনসার সদস্যরা।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি বাহিনী দেশের নিরাপত্তা, শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জাতীয় উন্নয়নের প্রতিটি পর্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। নিজেদের জীবন ও স্বার্থের পরোয়া না করে তারা নিষ্ঠা, দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেমের সঙ্গে জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকে। তাই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের কর্মজীবনের মানোন্নয়ন ও কল্যাণ নিশ্চিত করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব এবং রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকারের অংশ। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের নিজস্ব অর্থায়নে মোট ৩১টি যানবাহন কেনা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ৯টি ট্রুপস ক্যারিয়ার, ১৪টি কাভার্ড ভ্যান, ৪২ আসনবিশিষ্ট চারটি বড় বাস, ২৪ আসনবিশিষ্ট দুটি মিনিবাস এবং দুটি অ্যাম্বুলেন্স।’
দেশের সর্ববৃহৎ এই বাহিনীর সদস্যদের ছুটি, বিনোদন ভ্রমণ এবং অন্য বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রায়ই নানা ধরনের যাতায়াতের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তাঁদের এই ভোগান্তি লাঘব ও সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই আজকের এই ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
উপদেষ্টা এ সময় ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসটি সর্বোচ্চ পেশাদারি ও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালিত হবে এবং বাহিনীর বৈধ পরিচয়পত্রধারী সব সদস্যের জন্য নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাইরে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিদিনই অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। গত পরশুদিনও আটটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এ রকম উদ্ধার হতেই থাকবে এবং নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, অস্ত্র উদ্ধার আরও বাড়তে থাকবে এবং একসময় দেখবেন যে বাইরে আর কোনো অস্ত্র বা হাতিয়ার নেই।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদসহ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

গুম–সংক্রান্ত কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত শনিবার জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে এবং র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
মন্ত্রণালয়ের সিভিল অ্যাভিয়েশন–১ শাখা থেকে গত ২৭ অক্টোবর (সোমবার) জারি করা এক সরকারি পত্রে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
১ ঘণ্টা আগে
সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’ জারির মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছা ও অভিপ্রায়কে আইনিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাংবিধানিক রূপ দেওয়ার পথ প্রশস্ত হবে।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে করা সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই সুপারিশ হস্তান্তর করেন।
৩ ঘণ্টা আগে