Ajker Patrika

বাংলাদেশ রেলওয়ে

চীনা ঋণে ৯২৭ কোটি টাকায় কোচ কেনার প্রকল্প বাতিল, নতুন প্রস্তাব ৩২৮ কোটিতে

  • শর্তের কারণে চীনের ঋণে ২০০ মিটারগেজ যাত্রী কোচ কেনার প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্ত।
  • ২০১৬ সালে নেওয়া প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয় ৯২৭ কোটি টাকা, খরচ ১ কোটি ১৬ লাখ।
  • ২০০ কোচ কেনার নতুন প্রস্তাবে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৮ কোটি ১৫ লাখ, অর্থায়ন এডিবির।
তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ১০
যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

৯২৭ কোটি টাকায় ২০০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ কেনার একটি প্রকল্প ৯ বছর পর বাতিল করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। চীনের একটি কোম্পানি থেকে কোচগুলো কেনার এই প্রকল্প বাতিল হয়েছে ঋণের শর্ত অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায়।

ঋণের শর্তের কারণে চুক্তি না হওয়ায় কয়েক দফা এই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রকল্পে সরকারি তহবিল থেকে খরচ হয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। রেলওয়ে বলেছে, সহজ ঋণের আওতায় ২০০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ কেনার নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এডিবির অর্থায়নে এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৮ কোটি ১৫ লাখ ১৬ হাজার টাকা।

প্রকল্প সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১৬ সালের জুলাইয়ে চীনের একটি কোম্পানি থেকে ৯২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ (বগি) কেনার একটি প্রকল্প নেয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিল টেন্ডারার্স ফাইন্যান্সিং বা সাপ্লায়ার্স ক্রেডিটের আওতায়, যেখানে চীন মূলত অর্থায়ন করত। কিন্তু ঋণের সুদহার নির্ধারণ করা হয় ছয় মাস মেয়াদি ইউরো আন্তব্যাংক অফার রেটে। পাশাপাশি ২৫% কমিটমেন্ট ফি, ১.৩% অ্যারেঞ্জমেন্ট ফি এবং ১৫ বছর মেয়াদি ঋণের বিপরীতে মাত্র ৩ বছরের গ্রেস পিরিয়ড রাখা হয়। এতে বাংলাদেশের ওপর ঋণের চাপ বাড়ত।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আফজাল হোসেন গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঋণের কিছু শর্তে ঝামেলা থাকায় এবং দীর্ঘ দিনেও চুক্তি না হওয়াতে প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে। কঠিন শর্তের কারণে কেউ এই চুক্তি করতে রাজি হয়নি। এর পরিবর্তে সহজ ঋণের আওতায় মিটারগেজের ২০০টি যাত্রীবাহী কোচ কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ফলে আগের প্রকল্প বাতিল হলেও খুব একটা সমস্যা নেই।

সূত্র জানায়, গত বছরের নভেম্বরে প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটির (পিএসসি) সভায় ২০০ যাত্রীবাহী কোচ কেনার প্রকল্পটি অসমাপ্ত রেখে সমাপ্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রকল্প অসমাপ্ত রেখে সমাপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেল মন্ত্রণালয়ে ১৮ আগস্ট বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) তাদের মতামতসহ প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেলওয়ের জন্য ২০০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ প্রকল্পটি টেন্ডারার্স ফাইন্যান্সিংয়ের আওতায় অনুমোদিত হয়েছিল। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর চীনের সিআরআরসি সাইফাং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তিও হয়। শর্ত অনুযায়ী সরবরাহকারীর সক্ষমতা ও পণ্যের মান যাচাইয়ের জন্য প্রতিনিধিদল পাঠানোর কথা থাকলেও কোভিড-১৯-এর কারণে সম্ভব হয়নি। পরে ২০২২ সালের আগস্টে ঋণবিষয়ক স্থায়ী কমিটি অনুমোদন বাতিল করে এবং ঋণচুক্তির প্রক্রিয়া বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটি বাণিজ্যিক চুক্তিও বাতিল করে। পরে বিকল্প অর্থায়নের বিষয়টি বিবেচনা করা হলেও গত নভেম্বরে প্রকল্পটি অসমাপ্ত রেখেই সমাপ্ত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়। এ সময়ে সরকারি তহবিল (জিওবি) থেকে ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।

আইএমইডির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, টেন্ডারার্স ফাইন্যান্সিংয়ের ঋণের শর্ত অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় চুক্তি সম্পাদন সম্ভব হয়নি। সূত্র জানায়, এই প্রকল্প বাতিলের প্রস্তাব জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন হলে প্রকল্পটি চূড়ান্তভাবে বাতিল হবে।

ভবিষ্যতে ঋণ চূড়ান্ত হওয়ার আগে যেন সরকারি অর্থ খরচ না হয়, সে বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে সতর্ক থাকতে হবে বলে আইএমইডির প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগে নেওয়া কিছু প্রকল্পে ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থ জড়িত থাকতে পারে। তাই কোনো প্রকল্প বাতিলের পেছনে নিশ্চয়ই যুক্তি রয়েছে। শর্তে জটিলতা থাকলে চুক্তি না করাই ভালো। এ সিদ্ধান্ত সরকার সঠিকভাবে নিয়েছে।

সূত্র বলেছে, এই প্রকল্পে কাজ না হলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, যানবাহনের জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণ, অফিস আসবাব, স্টেশনারি ও অন্যান্য খাতে সরকারি তহবিল থেকে মোট ১ কোটি ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রকল্পটি ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদের জন্য একনেকে অনুমোদিত হয়। পরে কোনো ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ একবার ২০২১ পর্যন্ত এবং পরে ২০২৪ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তৃতীয় দফায় ২০২৫ পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

২০০ কোচ কেনার নতুন পরিকল্পনা

রেলওয়ের পরিকল্পনা বিভাগের সূত্র জানায়, চীনের ঋণে কোচ কেনার এই প্রকল্প বাতিল হলেও রেলওয়ে ২০০ মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ কেনার নতুন করে একটি প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৮ কোটি ১৫ লাখ ১৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারের অংশ ৯১ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং এডিবির সহায়তা ২৩৬ কোটি ৫৯ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ হবে ১ জুলাই ২০২৫ থেকে ৩০ জুন ২০২৯ সাল পর্যন্ত।

এই প্রকল্পের আওতায় ২টি মিটারগেজ ও ২টি ব্রডগেজ রিলিফ ক্রেন, ৪টি আন্ডারফ্লোর হুইল লেদ মেশিনও কেনা হবে।

এ বিষয়ে বুয়েটের অধ্যাপক ড. শামসুল হক আজকের পত্রিকা'কে বলেন, উইন্ডো শপিংয়ের মতো বিভিন্ন দেশ বা প্রতিষ্ঠান থেকে কোচ-ইঞ্জিন কেনার বদলে নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি (২০-৩০ বছরের) চুক্তি করে রেলের জন্য প্রয়োজনীয় কোচ ও ইঞ্জিন সংগ্রহ করলে রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্যান্য জটিলতা এড়ানো যাবে। এতে রেলের লাভ হবে, সেবার মানও বাড়বে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এমন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যমুনা অভিমুখী চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের পদযাত্রায় আবারও পুলিশের বাধা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভুখা মিছিল বের করেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা। ফাইল ছবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভুখা মিছিল বের করেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা। ফাইল ছবি

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো, বিশেষ নিয়োগব্যবস্থা, স্বতন্ত্র কোটা সংরক্ষণসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ শুক্রবার আবারও যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। তবে গতকাল বৃহস্পতিবারের মতো আজও তাঁদের পদযাত্রা শাহবাগ থানার সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে আজ বেলা ৩টার দিকে ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ’-এর ব্যানারে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

এর আগে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজু ভাস্কর্য থেকে যমুনা অভিমুখে থালাবাটি নিয়ে ভুখা মিছিল করেন প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েটরা। শাহবাগ থানার সামনে মিছিলটি পুলিশ আটকে দিলে সেখানেই বিক্ষোভ করেন তাঁরা। একপর্যায়ে সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়।

গত রোববার থেকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করা চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের ভাষ্য, শিক্ষিত, যোগ্য ও কর্মক্ষম যুব প্রতিবন্ধীরা দীর্ঘদিন ধরে কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত। ২০১৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ন্যায্য অধিকারের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। তবে এখনো কর্মসংস্থানে অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী কোটা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি।

চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদের সদস্যসচিব আলিফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ দফা দাবিতে গত রোববার শাহবাগে অবস্থান করে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করা হয়। সেদিন পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। এরপর সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের দাবি জানানো হয়। তাঁর কাছ থেকে কোনো সমাধান না পেয়ে আমরা বেশ কয়েকবার যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করি, কিন্তু পুলিশ আমাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখে।’

আলিফ হোসেন আরও বলেন, ‘আজও শাহবাগ থানার সামনে আমাদের পদযাত্রা আটকে দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকজনকে পুলিশ মারধরও করেছে।’

‎‎এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ করা নিষেধ। তাই চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা দাবিদাওয়া নিয়ে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করায় তাঁদের আটকে দেওয়া হয়েছে।

চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—

১. প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী বেকার, শিক্ষিত প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে বিশেষ নিয়োগ দিতে হবে।

‎‎ ২. প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ শতাংশ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ শতাংশ স্বতন্ত্র প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

‎ ৩. দৃষ্টি বা শারীরিক প্রতিবন্ধীরা নিজেদের পছন্দমতো শ্রুতিলেখক (বিকল্প সহকারী) মনোনয়নের স্বাধীনতা পাবেন—এমনভাবে নীতিমালা হালনাগাদ করতে হবে।

৪. সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্ট পদসংখ্যায় নিশ্চিত নিয়োগ দিতে হবে।

‎৫. প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করতে হবে। সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩৫ হলে তা ৩৭ বছর করতে হবে।

‎‎

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ‘আন্তর্জাতিক’ ঘোষণা স্থগিত

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ২০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে সরকার। ফলে আপাতত কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হচ্ছে না।

আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক বিমান উড্ডয়ন কমিটির সভাপতি ও বিমানবন্দর পরিচালক এয়ার কমোডর মো. নুর-ই-আজম।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা করার প্রজ্ঞাপন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আগের মতোই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা চলবে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়।

বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামোগত ও প্রশাসনিক কিছু প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না হওয়ায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতের সঙ্গে সরাসরি আকাশপথে সংযোগের পরিকল্পনাও ছিল সরকারের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পশ্চিম তীরে ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেওয়ার নিন্দা বাংলাদেশের

বাসস, ঢাকা  
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ২৭
পশ্চিম তীরে ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেওয়ার নিন্দা বাংলাদেশের

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করতে সম্প্রতি খসড়া আইন অনুমোদন দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেট।

তথাকথিত ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ আরোপের নামে এই আইনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।

আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে, পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েল পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে বেআইনি দখলদারি চালিয়ে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব, বিশেষ করে রেজল্যুশন ২৩৩৪-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।

২২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া অ্যাডভাইজরি ওপিনিয়ন বা পরামর্শমূলক মতামতকে স্বাগত জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ওই মতামতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে ইসরায়েলের বাধ্যবাধকতাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাধারণ জনগণকে, ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।

বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার, তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানার ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিন এজেন্সির প্রতারণার শিকার ১৭ ওমরাহযাত্রী

আয়নাল হোসেন, ঢাকা 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ওমরাহ হজ পালন করতে গিয়ে এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়েছেন ১৭ জন যাত্রী। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। অন্য একটি এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, প্রতারণার শিকার ওমরাহযাত্রীরা প্রতিকার চেয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। গত বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুনানি শেষে দুটি এজেন্সি টাকা ফেরত দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। আর একটি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে ত্রুটিগুলো লিখিতভাবে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে।

প্রতারণার অভিযোগ ওঠা তিন এজেন্সির একটি হলো দেশ ও বিদেশ হজ এজেন্সি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা ওমরাহ যাত্রীরা হলেন আজহারুল ইসলাম, খোরশেদ আলম, নূর মোহাম্মদ, মো. খোরশেদ আলম, খোদেজা আলম, কোহিনুর আক্তার, রহিমা আক্তার, সারোয়ার আলম চৌধুরী ফরিদা ইয়াসমিন লাভলী, শফিকুল আলম ও শাহেনা আকতার। এজেন্সির বিরুদ্ধে তাঁদের দেওয়া অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ওমরাহ পালনকালে জেদ্দা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সুনির্দিষ্ট হোটেল বুকিং না থাকা, নিজ উদ্যোগে হোটেলে লাগেজ বহন, হোটেল ব্যবস্থাপনায় চরম ভোগান্তি, সংকীর্ণ আবাসস্থল, অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, হজের পাঁচ দিন বাস সার্ভিসে চরম অব্যবস্থাপনা এবং নিম্নমানের খাবার পরিবেশন।

জানতে চাইলে দেশ ও বিদেশ এজেন্সির মালিক এহসানুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওমরাহ যাত্রীরা মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। কয়েকজন টাকা বকেয়া রেখেই ওমরাহ পালনে যান। এ-সংক্রান্ত সব কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে।

মো. শামীম হোসেন নামের একজন অভিযোগ করেন ড. মুফতি এম এ আজিজ হজ অ্যান্ড ট্যুরস এজেন্সির কাছে। তিনজনে ওমরা পালনের জন্য গত ১০ ফেব্রুয়ারি ৩ লাখ টাকা জমা দেন। অফিসে গিয়ে সেটি তালাবদ্ধ দেখেন। এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ড. মুফতি এম এ আজিজ হজ অ্যান্ড ট্যুরস প্রতিষ্ঠানের কাছে ধর্ম মন্ত্রণালয় নোটিশ পাঠায়। এতে বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের কক্ষে শুনানির জন্য ডাকা হয়। শুনানিতে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হলে ধরে নেওয়া হবে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য দিতে ইচ্ছুক নয়। পরে জমা দেওয়া টাকার মধ্যে২ লাখ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

শাহনেওয়াজ নামের অন্য একটি ব্যক্তি লাইম স্টোন রিসোর্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, জনপ্রতি ১ লাখ ৭০ হাজার করে তিনজনের জন্য ৫ লাখ ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ওমরাহ পালনে যান তাঁরা। মদিনায় ৪ দিন ও মক্কায় ১০ দিন রাখার শর্তে টাকা দেওয়া হয়। এজেন্সি মদিনায় ফ্লাইট না দিয়ে জেদ্দায় ফ্লাইট দেয়। এরপর জেদ্দা-মদিনায় যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত ৩০০ রিয়াল করে আদায় করে। মদিনায় হোটেল নিম্নমানের দেওয়া হয়। একই কক্ষে নারী-পুরুষকে রাখা হয়। মক্কায়ও নিম্নমানের হোটেল দেওয়া হয়। সেখানেও নারী-পুরুষকে একত্রে রাখা হয়। মক্কা থেকে ফ্লাইট না দিয়ে মদিনা থেকে ঢাকায় ফ্লাইট দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত