Ajker Patrika

‘মন্ত্রীরা ব্যর্থতা ঢাকতে প্রধানমন্ত্রীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২২, ২৩: ৪১
Thumbnail image

দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ঢাকতে সরকারের মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন বলে মন্তব্য করেছেন সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, সরকার দলীয় শরিক এবং বিএনপির এমপিরা। তাঁরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী মানুষের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে সমবেদনা জানালেও, মন্ত্রীরা ঠাট্টা, মশকরা করছেন।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ সাম্প্রতিক সমস্যায় সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ জাতিকে জানাতে কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধির আওতায় আনা সাধারণ প্রস্তাবের আলোচনায় এমন কথা বলেন তাঁরা। প্রস্তাব উত্থাপন করেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ও দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক। 

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘মন্ত্রীরা ব্যর্থতা ঢাকতে প্রধানমন্ত্রী এবং বঙ্গবন্ধুকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। দেশে অভাব নেই, এটা ঠিক নয়। কিন্তু মন্ত্রীরা এটা স্বীকারই করতে চান না। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়ে গেছে। এর সঙ্গে সরকারের অনেকে জড়িত। তিনি প্রশ্ন রাখেন, যেসব ব্যাংক ডলারের দাম বাড়িয়েছে সেসব ব্যাংকের এমডিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন।’ 

সরকারের জ্বালানি নীতির সমালোচনা করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘শাসনক্ষমতার কেন্দ্রে আছে কিছু ক্ষুদ্র ধনিক ও আমলা গোষ্ঠী। তাদের হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়ে আছে। জ্বালানি তেল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এক কথা বললেন, আর কর্মকর্তারা আরেক কথা বললেন।’ 

রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বৈশ্বিক কারণ আছে এটা ঠিক। কিন্তু নিজেদের দিকে তাকিয়ে দেখা দরকার, নীতি সঠিক কি না। জ্বালানি নীতি মূলত আমদানি নির্ভর। এ কারণে জ্বালানি সংকটের সময় এ খাত মুখ থুবড়ে পড়েছে। জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে, তা হলো গরু মেরে জুতো দান।’ 

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, ‘সত্য স্বীকারে আওয়ামী লীগের ব্যাপক ব্যর্থতা আছে। তাদের উচিত সত্য স্বীকার করে নেওয়া এবং সমাধান বের করা। সংকট মোকাবিলায় সরকারের পরিকল্পনা কী, তা তুলে ধরা।’ তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘বিপিসির টাকা কোথায় গেল? ১০টি ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে। সেসব ব্যাংকে কেন বিপিসির টাকা রাখা হলো?’ হারুন বলেন, ‘মানবাধিকার, মতপ্রকাশের সংকট এগুলো নিয়ে আলোচনা দরকার। ক্ষমতায় থাকার জন্য সরকার গুম, খুনসহ যেসব কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি দিচ্ছে তা এক সময় বুমেরাং হবে।’ 

বিএনপির এ সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘চলমান সংকট থেকে বের হতে হলে দুর্নীতি অপচয় বন্ধ করতে হবে। সরকারকে জবাবদিহির মধ্যে আসতে হবে। কর্তৃত্ববাদী আচরণ পরিহার করতে হবে।’ 

সরকারের মন্ত্রীদের অতিকথনের সমালোচনা করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সমবেদনা প্রকাশ করছেন। ধৈর্য ধরার আহ্বান করছেন। সেখানে মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য দুঃখ কষ্ট নিয়ে সমবেদনার বদলে ঠাট্টা-মশকরা করছেন। এটা মর্মান্তিক ও দুর্ভাগ্যজনক। আমি এর নিন্দা জানাই। দায়িত্ব পালন যারা করতে পারবেন না, তারা দায়িত্ব ছেড়ে দেন। মানুষকে বাঁচান, প্রধানমন্ত্রীকেও বাঁচান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত