Ajker Patrika

গুম থেকে সুরক্ষার জাতিসংঘ সনদে অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১৩: ৫৭
গুম থেকে সুরক্ষার জাতিসংঘ সনদে অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ

গুম থেকে সব নাগরিকের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সনদে অন্তর্ভুক্তির চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে গুম প্রতিরোধে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের ওপর আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা তৈরি হলো। 

আজ বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রটেকশন অব অল পারসনস ফ্রম ফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’ শীর্ষক সনদটিতে সই করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক উপলক্ষ। আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসের এক দিন আগে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের দীর্ঘ স্বৈরাচারী শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা জোরপূর্বক প্রতিটি গুমের ঘটনার তদন্তের জন্য একটি কমিশন গঠন করবে অন্তর্বর্তী সরকার।

বিশ্বজুড়ে গুম প্রতিরোধে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রটেকশন অব অল পারসনস ফ্রম ফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’ পাস করে। পরের বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে সনদটি

স্বাক্ষরের জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ২০১০ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে সনদটি কার্যকর হয়েছে। এ সনদে ৯৮টি রাষ্ট্র স্বাক্ষর করেছে। অনুসমর্থন জানিয়েছে ৭৫টি রাষ্ট্র। জাতিসংঘের তরফ থেকে বাংলাদেশকে এই সনদে স্বাক্ষরের অনুরোধ জানানো হলেও এত দিন তা করেনি সরকার। সে হিসেবে এই সনদে স্বাক্ষরকারী এখন পর্যন্ত সর্বশেষ রাষ্ট্র হলো বাংলাদেশ।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার গেটে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকেই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। আর যেন কেউ কখনো নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে কোনো বাহিনীকে দিয়ে, কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে, সরকার বিরোধিতা করা হচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে, জাতীয় স্বার্থের বাইরে কাজ করা হচ্ছে, এসব বলে গুম করতে না পারে। তার জন্য এ কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছি। সরকার এ নিয়ে প্রয়োজনীয় আইন সংস্কার করবে।’ তিনি জানান, এ কনভেনশনে অনুস্বাক্ষরের কাগজ জমা পড়ার পর থেকে এটি কার্যকর হবে।

মানবাধিকার নিয়ে শক্ত ভিত্তি তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, গুম বাংলাদেশে অহরহ ঘটেছে। যেটা এযাবৎকাল অস্বীকার করা হচ্ছিল। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাঁরা গুমের শিকার হয়েছেন তাঁরা একটা সুরক্ষা পাবেন। সরকারি পর্যায় থেকে ফ্যাসিবাদ কায়েম রাখার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে বিরুদ্ধমত দমন করার জন্য গুম করে ফেলা হতো। সেটাতেও একটা শক্ত বার্তা গেল যে এসব আর হবে না। গুম তো করার কথা না। সরকারি বাহিনীর গুম করার লাইসেন্স নেই। তার আইনগত এখতিয়ার নেই। এটা বন্ধ থাকা উচিত ছিল।

যেসব বাহিনীর বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে কি না–এমন প্রশ্নে রিজওয়ানা হাসান বলেন, আগের গুমের ঘটনা নিয়ে একটা কমিশন হয়েছে। সেখানে কার্যপরিধি বলে দেওয়া হয়েছে। কাউকে কোথাও বাদ দেওয়া হয়নি। কত মানুষ গুম হয়েছে সে তালিকা সরকার প্রকাশ করবে কি না–এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কমিশনের কার্যপরিধি অনুযায়ী একটা তালিকা চূড়ান্তভাবে করতে হবে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ধরে নেওয়ার পর লাশ উদ্ধার বা গুমের ঘটনা আলোচনায় ছিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণের পরই গুমের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠনের কথা বলে আসছে অন্তর্বর্তী সরকার। জাতিসংঘের গুমবিষয়ক কনভেনশনে পক্ষভুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথাও জানানো হয়।

গত সোমবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাবসহ সরকারি বাহিনীর যে সদস্যরা ‘গুম, খুন, নির্যাতনের’ মতো অপরাধে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হবে।’ এর পরদিনই শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ‘গুমের’ ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে ওই কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস এবং মানবাধিকার কর্মী সাজ্জাদ হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক

গ্রাহকপ্রতি সিম কার্ডের সংখ্যা ১০টিতে নামছে এ মাসেই, নির্বাচনের আগে আরও কমানোর চিন্তা

  • বৈঠকে নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা।
  • ৩০ অক্টোবর থেকে এক এনআইডির বিপরীতে সিম রাখা যাবে ১০ টি।
  • নির্বাচনের আগে ব্যক্তিপর্যায়ে সিম সংখ্যা আরও কমানোর চেষ্টা হবে।
  • স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ ও পদায়ন করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৫তম সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: পিআইডি
আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৫তম সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: পিআইডি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার গ্রাহকপ্রতি মোবাইল সিম কার্ডের সংখ্যা কমিয়ে আনার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার দুপুরে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। বৈঠকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী একজন গ্রাহক তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে সর্বোচ্চ ১৫টি মোবাইল সিম নিবন্ধন করতে পারেন। ৩০ অক্টোবরের পর একটি এনআইডির বিপরীতে সিম নিবন্ধনের সংখ্যা ১০ টিতে নামিয়ে আনা হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গ্রাহকপ্রতি সিমের সংখ্যা আরও কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।

তিনি বলেন, কোনো ঘটনা ঘটার পর দেখা যায় সিমটি সেই ব্যক্তির নামে নিবন্ধন করা নয়। একজনের নামের সিম কার্ড অন্যজন ব্যবহার করে অপরাধ করে। এতে প্রকৃত দোষী ব্যক্তি অনেক সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। এ জন্য নির্বাচনের আগে ব্যক্তিপর্যায়ে নিবন্ধন করা সিম কার্ড কমিয়ে আনা হবে।

নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আপত্তি আসেনি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আগেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোতে নিয়োগ ও পদায়নের ক্ষেত্রে কোনো পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি। কারও বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ ও পদায়ন করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি নির্বাচন সুষ্ঠু ও ভালোভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির এই বৈঠকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয় উঠেছে। দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতকারীদের কর্মকাণ্ড রোধ, জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলার রেকর্ড, তদন্ত অগ্রগতি, দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী উসকানিমূলক সাইবার প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।

এ ছাড়া মাদকের অপব্যবহার রোধ, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিন-পরবর্তী সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও প্রতিরোধ, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনগুলোর অপতৎপরতা রোধ, পোশাক কারখানা–ওষুধ শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির তৎপরতা রোধ, অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান, সীমান্ত ও পার্বত্যাঞ্চল পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ নিয়েও আলোচনা হয়।

ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীর্ষ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ৩০ অক্টোবর ইসির মতবিনিময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নির্বাচন কমিশন। ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচন কমিশন। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ মতবিনিময় ও প্রস্তুতিমূলক সভা ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বেলা ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।

আজ রোববার সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো সভার চিঠি থেকে জানা যায়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সভাটি অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত থাকবেন।

চিঠিতে বলা হয়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় ও প্রাক-প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হবে।

ইসির চিঠি অনুযায়ী, অন্তত ৩১ জন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাকে সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রিত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন—মন্ত্রিপরিষদসচিব; স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, নৌপরিবহন, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব; পররাষ্ট্র, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (সমন্বয় ও সংস্কার), অর্থ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবেরা। এর পাশাপাশি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিবকেও বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর নির্বাহী পরিচালক বা উপযুক্ত কোনো কর্মকর্তাকে সভায় পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ডাক অধিদপ্তর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এবং কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস), ঢাকাকেও সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

এর আগে ২০ অক্টোবর ইসি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেছে।

কমিশন গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে। এর অংশ হিসেবে ২৮ সেপ্টেম্বর নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয় এবং একই দিন শিক্ষকদের সঙ্গেও আলোচনা করে ইসি। সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গেও আরও সংলাপ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছে কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ড. ইউনূসের সঙ্গে পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যানের সৌজন্য সাক্ষাৎ

বাসস, ঢাকা  
পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যান (সিজেসিসি) জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা গতকাল শনিবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

সাক্ষাৎকালে তাঁরা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

দুই দেশের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও জনগণের পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করে জেনারেল মির্জা পাকিস্তানের পক্ষ থেকে নানা খাতে সহযোগিতা আরও জোরদার করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য, যোগাযোগ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।

‘আমাদের দুই দেশ একে অপরকে সহায়তা করব’—বলেন জেনারেল মির্জা।

তিনি জানান, করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে দুইমুখী নৌপথ এরই মধ্যে চালু হয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা-করাচি আকাশ পথও চালু হবে।

দুই পক্ষ মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে উত্তেজনা প্রশমনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি ভুয়া তথ্য এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের মাধ্যমে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার প্রবণতার চ্যালেঞ্জ নিয়েও মতবিনিময় হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিকর তথ্য এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এই বিপদের বিরুদ্ধে বৈশ্বিকভাবে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

সাক্ষাৎকালে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, জ্যেষ্ঠ সচিব ও এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নবম গ্রেডের কাছাকাছি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা মাহফুজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ২৮
রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে কথা বলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: ফোকাস বাংলা
রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে কথা বলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: ফোকাস বাংলা

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের আশু করণীয় ২৩টি প্রস্তাবের মধ্যে ১৩টি আগামী নভেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেছেন, ‘সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন যাতে অন্তত নবম গ্রেডের কাছাকাছি হয়, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমি গণমাধ্যমের সক্ষমতা বাড়াতে পত্রিকার প্রচারসংখ্যা কমিয়ে বিজ্ঞাপনের হার বাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে।’

আজ রোববার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রণালয়ে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব আছে। মোট ২৩টি প্রস্তাব ছিল আশু করণীয়, যেটা এই সরকারের যে সময়সীমা, এর মধ্যে করা সম্ভব। মন্ত্রণালয়ের আমলা ও কর্মকর্তারা পর্যালোচনা করে ১৩টি প্রস্তাব বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। খুব শীঘ্রই আপনারা দেখতে পাবেন।’

তিনি বলেন, ‘এগুলো খুব বড় কিছু, এ রকম না। কিন্তু আমাদের সময়সীমা আগে ছিল তিন মাস, এখন আছে এক মাস। এই জিনিসগুলো কেবিনেটেই করতে হবে অথবা নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। যেগুলো নভেম্বরের পরে আর করতে পারব না। কারণ, নভেম্বরে কেবিনেট মিটিং ক্লোজ হয়ে যাবে। এরপরে নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেবে। আইন প্রণয়নের যে জায়গাগুলো আছে, সেগুলো আগামী মাসের মধ্যে সমাধান করতে চাই। আর যেগুলো আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনার মাধ্যমে করা সম্ভব, সেগুলো আমরা করে ফেলব।’

সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন প্রসঙ্গে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্তত নবম গ্রেডের কাছাকাছি যেন বেতন হয়, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমি গণমাধ্যমের সক্ষমতা বাড়াতে প্রচারসংখ্যা কমিয়ে বিজ্ঞাপনের হার বাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে। কিন্তু প্রচারসংখ্যার সঠিক তথ্যটা আসতে হবে। স্থানীয় পত্রিকার প্রচারসংখ্যা, ইংরেজি পত্রিকার প্রচারসংখ্যা কমিয়ে দেব। কেন আমরা এগুলো করব? আমরা সাংবাদিকদের একটা বেসিক সেলারি প্রস্তাব করে যেতে চাই। যারা সুবিধা দিতে পারবে না, তারা এসব সুবিধা পাবে না।’

নবম ওয়েজ বোর্ড নিয়ে নোয়াব (নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) ও পত্রিকার মালিকদের সঙ্গে গত এক বছরে তিনবার বসে চেষ্টা করেছেন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি। মালিকেরা রাজি না হলে বিজ্ঞাপনের হার কমিয়ে দেব। যারা প্রতিযোগিতায় মাঠে থাকতে পারবে না, তারা চলে যাবে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকেও একটা নীতিমালার অধীনে নিয়ে আসা হবে।

মাহফুজ আলম বলেন, ‘ওয়ান হাউস, ওয়ান মিডিয়া পলিসি, সাংবাদিক সুরক্ষা আইন অচিরেই কেবিনেটে তুলতে পারব। অনলাইন পোর্টালের জন্য নীতিমালা করে রেখে যাব। যেসব পত্রিকা ছাপা হয় না, ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

বেসরকারি টেলিভিশন নিয়ে কোনো আইন নেই—স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, টিভির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্ট গ্রুপ অব কোম্পানির মালিকদের। তাঁরা এখনো এগুলোর মালিক হিসেবে আছে। বিদেশে বসে বসে লাভের হিসাব গুনছে।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘একটা বেসিক সেলারি যাতে সব সাংবাদিক পায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। ভালো জার্নালিজম যাতে করা হয়, সে ব্যবস্থাও করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ, ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত