শাহ আলম খান ও রোকন উদ্দীন, ঢাকা

দেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সবখানে চেয়ার পরিবর্তনের ধারা চলছে তা থেকে বাদ পড়েনি ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটিও। রাজনৈতিক কারণে সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে গত সেপ্টেম্বরে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ নিয়োগ দেয় সরকার।
শুধু এফবিসিসিআই নয়, একে একে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, চট্টগ্রামের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার, ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাব, তথ্য প্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস)-এ। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি আছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তারা বলছেন, ব্যবসায়ী সংগঠন পরিচালনার দায়িত্ব ব্যবসায়ীদের হাতেই থাকা উচিত। কারণ ব্যবসায়ীর স্বার্থ ব্যবসায়ীরাই ভালো বুঝবে।
একের পর এক নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা করায় পুরো ব্যবসায়িক খাত কার্যত অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এসব ব্যবসায়িক সংগঠনে যাদের প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের দায়িত্ব সীমিত রাখা হয়েছে কেবল রুটিন কাজ চালানোর মধ্যেই। তাদের মূল কাজ হলো সংগঠনের পরবর্তী নেতৃত্ব নির্ধারণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু চলমান অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে খাত সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যা সমাধানে এ প্রশাসকদের কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।
দেশে দীর্ঘদিন ধরে ডলার সরবরাহে ঘাটতি ও দরবৃদ্ধি, শিল্প-কারখানায় গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহে সংকট এবং আমদানি জটিলতা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ক্রেতা ও ভোক্তারা চাপে থাকায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম সংকুচিত হচ্ছে এবং বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে। শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা, বোনাসসহ নানা দাবিতে চলমান আন্দোলনের ফলে অচলাবস্থায় রয়েছে পোশাক খাত। কারখানা বন্ধ হওয়ায় বেকার হচ্ছে হাজার হাজার শ্রমিক। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও প্রায় একশ পণ্যে ভ্যাট ও শুল্ক আরোপ করে সরকার, যা ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে বাণিজ্যিক গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর বিষয়েও আগাম ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এসব নীতি প্রণয়নে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। বিগত সরকারের সময়ও তেমন কোনো আলোচনা হত না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যবসায় রাজনীতির প্রবেশের কারণে ব্যবসায়ীদের ঐক্যে ফাটল ধরেছে। ফলে যখন যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, তারা যখন যা খুশি, সহজেই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারছে। তবে এই একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ কেবল ব্যবসা ও শিল্পের সংকট তৈরি করেনি, ক্রেতা-ভোক্তার জন্য মারাত্মক ভোগান্তির কারণ হয়েছে।
সাধারণত ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় নীতি বা সিদ্ধান্তে সরকারের সঙ্গে এফবিসিসিআইর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। কিন্তু এখন সেই ভূমিকা কার্যত দেখা যাচ্ছে না। এ ছাড়া খাতভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ ও বড় সংগঠন বিজিএমইএর কার্যক্রমও অচল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশ্বের সব দেশেই বেসরকারি খাতের স্বার্থ রক্ষায় ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো গড়ে ওঠে। তবে দেশে গত ১০ বছরে রাজনীতির মতো এসব সংগঠনেও দলীয়করণ প্রবল হয়েছে। এর ফলেই এখন নেতৃত্বের অভাব দেখা দিয়েছে। এই কারণে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় সরকারের নজরে আসছে না।
তিনি দাবি করেন, ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কথা বলতে হলে ব্যবসায়িক সংগঠনে নির্বাচিত প্রতিনিধির প্রয়োজন। তবে বাস্তবতা হলো, সংগঠনগুলোর সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে নতুন নেতৃত্বও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েছে।
সরকারের উচিত দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে একটি সংস্কার কমিটি গঠন করা। এই কমিটি দেশের বাস্তবতা ও আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন অনুসরণ করে একটি সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করবে, যা ভিত্তি হিসেবে সব সংগঠনের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড নির্ধারণ করবে। এমনটি না হলে, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোতে দলীয় আনুগত্যের প্রবণতা থাকবে।
এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঐক্যের অভাব ও রাজনৈতিক বিবাদই প্রশাসক নিয়োগের কারণ। নির্বাচিত নেতৃত্ব থাকলে সরকারের সঙ্গে আলোচনা আরও ভালোভাবে হতে পারত।
গত ৪ ডিসেম্বর বেসিসে প্রশাসক হিসেবে মুহম্মদ মেহেদী হাসান নিয়োগ পান। এর আগে ২০ অক্টোবর বিজিএমইএ-তে প্রশাসক হিসেবে মো. আনোয়ার হোসেনকে নিয়োগ দেয় সরকার। ১২ সেপ্টেম্বর এফবিসিসিআই-তে প্রশাসক হিসেবে মো. হাফিজুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১১ সেপ্টেম্বর ই-ক্যাবের প্রশাসক হিসেবে মুহাম্মদ সাঈদ আলীকে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চেম্বারে প্রশাসক হিসেবে মুহম্মদ আনোয়ার পাশাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব সংগঠনে সাধারণত শেখ হাসিনার সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বা আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্ব ছিল।
এফবিসিসিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ব্যবসায়ী সংগঠনের সংখ্যা ৪৮৫ টি। এক সময় ব্যবসায়ী সংগঠন ছিল অত্যন্ত সুসংগঠিত। তারা নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দাবি আদায়ে সব সময় সোচ্চার ছিল। সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বা চাপিয়ে দেওয়া মনে হলে তার প্রতিবাদ করেছে এবং একই সঙ্গে সেই সমস্যার যৌক্তিক সমাধানের পথও সরকারের সামনে তুলে ধরেছে। এর ফলে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো, তা সব পক্ষের জন্যই গ্রহণযোগ্য ও সহনশীল বিবেচিত হতো।
বিগত সরকারের সময়ে ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোতে অতিরিক্ত রাজনীতি ও দলীয়করণের কারণে তাদের ঐতিহ্য ও কার্যক্রমে বড় পরিবর্তন এসেছে। এতে কিছু গোষ্ঠী অতিরিক্ত সুবিধা ভোগ ও প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পেলেও ভিন্নমতের ব্যবসায়ীরা উপেক্ষিত থেকে গেছে। ফলে তাদের মধ্যে বড় ধরনের অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা সব সময় ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশে সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি করতে তৎপর থাকে। সরকারের ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপের সিদ্ধান্তও সাধারণত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ হয়, যাতে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের স্বার্থ ঠিকভাবে রক্ষা হয়। এ ছাড়া গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যা, ডলার সরবরাহ, আমদানি এলসি ইত্যাদি সমস্যার সমাধানেও তারা সক্রিয় থাকে। তবে এখন এই সংগঠনগুলোর অনেকেই নেতৃত্বহীন, বিশেষ করে অ্যাপেক্স বডি বা মাদার সংগঠনগুলো, যার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে কিছু সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদের মতে, ব্যবসায়িক সংগঠনের প্রশাসকদের প্রধান লক্ষ্য হলো সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা। প্রশাসকেরা ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করেন না, আর সাধারণ সদস্যদের অংশগ্রহণ ছাড়া সংগঠনের পক্ষে কাজ করা কঠিন। এর ফলে অনেক ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকে।
বিজিএমইএর প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা ঠিক ব্যবসায়ীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হলে তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আরও ব্যাপকভাবে দেখবে। তবে নির্বাচনের সময়ও ঘনিয়ে আসছে। এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের জন্য সবাই সহযোগিতা করছে। জানুয়ারির শেষ নাগাদ নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড এবং সংশ্লিষ্ট কমিটি গঠন করা হবে এবং এপ্রিলের শেষ নাগাদ নির্বাচন সম্পন্ন হবে।

দেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সবখানে চেয়ার পরিবর্তনের ধারা চলছে তা থেকে বাদ পড়েনি ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটিও। রাজনৈতিক কারণে সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে গত সেপ্টেম্বরে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ নিয়োগ দেয় সরকার।
শুধু এফবিসিসিআই নয়, একে একে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, চট্টগ্রামের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার, ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাব, তথ্য প্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস)-এ। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি আছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তারা বলছেন, ব্যবসায়ী সংগঠন পরিচালনার দায়িত্ব ব্যবসায়ীদের হাতেই থাকা উচিত। কারণ ব্যবসায়ীর স্বার্থ ব্যবসায়ীরাই ভালো বুঝবে।
একের পর এক নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা করায় পুরো ব্যবসায়িক খাত কার্যত অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এসব ব্যবসায়িক সংগঠনে যাদের প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের দায়িত্ব সীমিত রাখা হয়েছে কেবল রুটিন কাজ চালানোর মধ্যেই। তাদের মূল কাজ হলো সংগঠনের পরবর্তী নেতৃত্ব নির্ধারণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু চলমান অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে খাত সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যা সমাধানে এ প্রশাসকদের কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।
দেশে দীর্ঘদিন ধরে ডলার সরবরাহে ঘাটতি ও দরবৃদ্ধি, শিল্প-কারখানায় গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহে সংকট এবং আমদানি জটিলতা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ক্রেতা ও ভোক্তারা চাপে থাকায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম সংকুচিত হচ্ছে এবং বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে। শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা, বোনাসসহ নানা দাবিতে চলমান আন্দোলনের ফলে অচলাবস্থায় রয়েছে পোশাক খাত। কারখানা বন্ধ হওয়ায় বেকার হচ্ছে হাজার হাজার শ্রমিক। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও প্রায় একশ পণ্যে ভ্যাট ও শুল্ক আরোপ করে সরকার, যা ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে বাণিজ্যিক গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর বিষয়েও আগাম ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এসব নীতি প্রণয়নে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। বিগত সরকারের সময়ও তেমন কোনো আলোচনা হত না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যবসায় রাজনীতির প্রবেশের কারণে ব্যবসায়ীদের ঐক্যে ফাটল ধরেছে। ফলে যখন যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, তারা যখন যা খুশি, সহজেই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারছে। তবে এই একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ কেবল ব্যবসা ও শিল্পের সংকট তৈরি করেনি, ক্রেতা-ভোক্তার জন্য মারাত্মক ভোগান্তির কারণ হয়েছে।
সাধারণত ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় নীতি বা সিদ্ধান্তে সরকারের সঙ্গে এফবিসিসিআইর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। কিন্তু এখন সেই ভূমিকা কার্যত দেখা যাচ্ছে না। এ ছাড়া খাতভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ ও বড় সংগঠন বিজিএমইএর কার্যক্রমও অচল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশ্বের সব দেশেই বেসরকারি খাতের স্বার্থ রক্ষায় ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো গড়ে ওঠে। তবে দেশে গত ১০ বছরে রাজনীতির মতো এসব সংগঠনেও দলীয়করণ প্রবল হয়েছে। এর ফলেই এখন নেতৃত্বের অভাব দেখা দিয়েছে। এই কারণে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় সরকারের নজরে আসছে না।
তিনি দাবি করেন, ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কথা বলতে হলে ব্যবসায়িক সংগঠনে নির্বাচিত প্রতিনিধির প্রয়োজন। তবে বাস্তবতা হলো, সংগঠনগুলোর সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে নতুন নেতৃত্বও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েছে।
সরকারের উচিত দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে একটি সংস্কার কমিটি গঠন করা। এই কমিটি দেশের বাস্তবতা ও আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন অনুসরণ করে একটি সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করবে, যা ভিত্তি হিসেবে সব সংগঠনের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড নির্ধারণ করবে। এমনটি না হলে, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোতে দলীয় আনুগত্যের প্রবণতা থাকবে।
এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঐক্যের অভাব ও রাজনৈতিক বিবাদই প্রশাসক নিয়োগের কারণ। নির্বাচিত নেতৃত্ব থাকলে সরকারের সঙ্গে আলোচনা আরও ভালোভাবে হতে পারত।
গত ৪ ডিসেম্বর বেসিসে প্রশাসক হিসেবে মুহম্মদ মেহেদী হাসান নিয়োগ পান। এর আগে ২০ অক্টোবর বিজিএমইএ-তে প্রশাসক হিসেবে মো. আনোয়ার হোসেনকে নিয়োগ দেয় সরকার। ১২ সেপ্টেম্বর এফবিসিসিআই-তে প্রশাসক হিসেবে মো. হাফিজুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১১ সেপ্টেম্বর ই-ক্যাবের প্রশাসক হিসেবে মুহাম্মদ সাঈদ আলীকে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চেম্বারে প্রশাসক হিসেবে মুহম্মদ আনোয়ার পাশাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব সংগঠনে সাধারণত শেখ হাসিনার সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বা আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্ব ছিল।
এফবিসিসিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ব্যবসায়ী সংগঠনের সংখ্যা ৪৮৫ টি। এক সময় ব্যবসায়ী সংগঠন ছিল অত্যন্ত সুসংগঠিত। তারা নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দাবি আদায়ে সব সময় সোচ্চার ছিল। সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বা চাপিয়ে দেওয়া মনে হলে তার প্রতিবাদ করেছে এবং একই সঙ্গে সেই সমস্যার যৌক্তিক সমাধানের পথও সরকারের সামনে তুলে ধরেছে। এর ফলে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো, তা সব পক্ষের জন্যই গ্রহণযোগ্য ও সহনশীল বিবেচিত হতো।
বিগত সরকারের সময়ে ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোতে অতিরিক্ত রাজনীতি ও দলীয়করণের কারণে তাদের ঐতিহ্য ও কার্যক্রমে বড় পরিবর্তন এসেছে। এতে কিছু গোষ্ঠী অতিরিক্ত সুবিধা ভোগ ও প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পেলেও ভিন্নমতের ব্যবসায়ীরা উপেক্ষিত থেকে গেছে। ফলে তাদের মধ্যে বড় ধরনের অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা সব সময় ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশে সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি করতে তৎপর থাকে। সরকারের ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপের সিদ্ধান্তও সাধারণত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ হয়, যাতে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের স্বার্থ ঠিকভাবে রক্ষা হয়। এ ছাড়া গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যা, ডলার সরবরাহ, আমদানি এলসি ইত্যাদি সমস্যার সমাধানেও তারা সক্রিয় থাকে। তবে এখন এই সংগঠনগুলোর অনেকেই নেতৃত্বহীন, বিশেষ করে অ্যাপেক্স বডি বা মাদার সংগঠনগুলো, যার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে কিছু সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদের মতে, ব্যবসায়িক সংগঠনের প্রশাসকদের প্রধান লক্ষ্য হলো সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা। প্রশাসকেরা ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করেন না, আর সাধারণ সদস্যদের অংশগ্রহণ ছাড়া সংগঠনের পক্ষে কাজ করা কঠিন। এর ফলে অনেক ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকে।
বিজিএমইএর প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা ঠিক ব্যবসায়ীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হলে তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আরও ব্যাপকভাবে দেখবে। তবে নির্বাচনের সময়ও ঘনিয়ে আসছে। এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের জন্য সবাই সহযোগিতা করছে। জানুয়ারির শেষ নাগাদ নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড এবং সংশ্লিষ্ট কমিটি গঠন করা হবে এবং এপ্রিলের শেষ নাগাদ নির্বাচন সম্পন্ন হবে।
শাহ আলম খান ও রোকন উদ্দীন, ঢাকা

দেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সবখানে চেয়ার পরিবর্তনের ধারা চলছে তা থেকে বাদ পড়েনি ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটিও। রাজনৈতিক কারণে সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে গত সেপ্টেম্বরে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ নিয়োগ দেয় সরকার।
শুধু এফবিসিসিআই নয়, একে একে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, চট্টগ্রামের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার, ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাব, তথ্য প্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস)-এ। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি আছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তারা বলছেন, ব্যবসায়ী সংগঠন পরিচালনার দায়িত্ব ব্যবসায়ীদের হাতেই থাকা উচিত। কারণ ব্যবসায়ীর স্বার্থ ব্যবসায়ীরাই ভালো বুঝবে।
একের পর এক নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা করায় পুরো ব্যবসায়িক খাত কার্যত অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এসব ব্যবসায়িক সংগঠনে যাদের প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের দায়িত্ব সীমিত রাখা হয়েছে কেবল রুটিন কাজ চালানোর মধ্যেই। তাদের মূল কাজ হলো সংগঠনের পরবর্তী নেতৃত্ব নির্ধারণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু চলমান অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে খাত সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যা সমাধানে এ প্রশাসকদের কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।
দেশে দীর্ঘদিন ধরে ডলার সরবরাহে ঘাটতি ও দরবৃদ্ধি, শিল্প-কারখানায় গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহে সংকট এবং আমদানি জটিলতা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ক্রেতা ও ভোক্তারা চাপে থাকায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম সংকুচিত হচ্ছে এবং বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে। শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা, বোনাসসহ নানা দাবিতে চলমান আন্দোলনের ফলে অচলাবস্থায় রয়েছে পোশাক খাত। কারখানা বন্ধ হওয়ায় বেকার হচ্ছে হাজার হাজার শ্রমিক। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও প্রায় একশ পণ্যে ভ্যাট ও শুল্ক আরোপ করে সরকার, যা ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে বাণিজ্যিক গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর বিষয়েও আগাম ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এসব নীতি প্রণয়নে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। বিগত সরকারের সময়ও তেমন কোনো আলোচনা হত না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যবসায় রাজনীতির প্রবেশের কারণে ব্যবসায়ীদের ঐক্যে ফাটল ধরেছে। ফলে যখন যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, তারা যখন যা খুশি, সহজেই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারছে। তবে এই একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ কেবল ব্যবসা ও শিল্পের সংকট তৈরি করেনি, ক্রেতা-ভোক্তার জন্য মারাত্মক ভোগান্তির কারণ হয়েছে।
সাধারণত ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় নীতি বা সিদ্ধান্তে সরকারের সঙ্গে এফবিসিসিআইর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। কিন্তু এখন সেই ভূমিকা কার্যত দেখা যাচ্ছে না। এ ছাড়া খাতভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ ও বড় সংগঠন বিজিএমইএর কার্যক্রমও অচল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশ্বের সব দেশেই বেসরকারি খাতের স্বার্থ রক্ষায় ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো গড়ে ওঠে। তবে দেশে গত ১০ বছরে রাজনীতির মতো এসব সংগঠনেও দলীয়করণ প্রবল হয়েছে। এর ফলেই এখন নেতৃত্বের অভাব দেখা দিয়েছে। এই কারণে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় সরকারের নজরে আসছে না।
তিনি দাবি করেন, ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কথা বলতে হলে ব্যবসায়িক সংগঠনে নির্বাচিত প্রতিনিধির প্রয়োজন। তবে বাস্তবতা হলো, সংগঠনগুলোর সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে নতুন নেতৃত্বও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েছে।
সরকারের উচিত দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে একটি সংস্কার কমিটি গঠন করা। এই কমিটি দেশের বাস্তবতা ও আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন অনুসরণ করে একটি সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করবে, যা ভিত্তি হিসেবে সব সংগঠনের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড নির্ধারণ করবে। এমনটি না হলে, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোতে দলীয় আনুগত্যের প্রবণতা থাকবে।
এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঐক্যের অভাব ও রাজনৈতিক বিবাদই প্রশাসক নিয়োগের কারণ। নির্বাচিত নেতৃত্ব থাকলে সরকারের সঙ্গে আলোচনা আরও ভালোভাবে হতে পারত।
গত ৪ ডিসেম্বর বেসিসে প্রশাসক হিসেবে মুহম্মদ মেহেদী হাসান নিয়োগ পান। এর আগে ২০ অক্টোবর বিজিএমইএ-তে প্রশাসক হিসেবে মো. আনোয়ার হোসেনকে নিয়োগ দেয় সরকার। ১২ সেপ্টেম্বর এফবিসিসিআই-তে প্রশাসক হিসেবে মো. হাফিজুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১১ সেপ্টেম্বর ই-ক্যাবের প্রশাসক হিসেবে মুহাম্মদ সাঈদ আলীকে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চেম্বারে প্রশাসক হিসেবে মুহম্মদ আনোয়ার পাশাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব সংগঠনে সাধারণত শেখ হাসিনার সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বা আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্ব ছিল।
এফবিসিসিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ব্যবসায়ী সংগঠনের সংখ্যা ৪৮৫ টি। এক সময় ব্যবসায়ী সংগঠন ছিল অত্যন্ত সুসংগঠিত। তারা নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দাবি আদায়ে সব সময় সোচ্চার ছিল। সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বা চাপিয়ে দেওয়া মনে হলে তার প্রতিবাদ করেছে এবং একই সঙ্গে সেই সমস্যার যৌক্তিক সমাধানের পথও সরকারের সামনে তুলে ধরেছে। এর ফলে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো, তা সব পক্ষের জন্যই গ্রহণযোগ্য ও সহনশীল বিবেচিত হতো।
বিগত সরকারের সময়ে ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোতে অতিরিক্ত রাজনীতি ও দলীয়করণের কারণে তাদের ঐতিহ্য ও কার্যক্রমে বড় পরিবর্তন এসেছে। এতে কিছু গোষ্ঠী অতিরিক্ত সুবিধা ভোগ ও প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পেলেও ভিন্নমতের ব্যবসায়ীরা উপেক্ষিত থেকে গেছে। ফলে তাদের মধ্যে বড় ধরনের অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা সব সময় ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশে সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি করতে তৎপর থাকে। সরকারের ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপের সিদ্ধান্তও সাধারণত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ হয়, যাতে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের স্বার্থ ঠিকভাবে রক্ষা হয়। এ ছাড়া গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যা, ডলার সরবরাহ, আমদানি এলসি ইত্যাদি সমস্যার সমাধানেও তারা সক্রিয় থাকে। তবে এখন এই সংগঠনগুলোর অনেকেই নেতৃত্বহীন, বিশেষ করে অ্যাপেক্স বডি বা মাদার সংগঠনগুলো, যার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে কিছু সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদের মতে, ব্যবসায়িক সংগঠনের প্রশাসকদের প্রধান লক্ষ্য হলো সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা। প্রশাসকেরা ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করেন না, আর সাধারণ সদস্যদের অংশগ্রহণ ছাড়া সংগঠনের পক্ষে কাজ করা কঠিন। এর ফলে অনেক ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকে।
বিজিএমইএর প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা ঠিক ব্যবসায়ীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হলে তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আরও ব্যাপকভাবে দেখবে। তবে নির্বাচনের সময়ও ঘনিয়ে আসছে। এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের জন্য সবাই সহযোগিতা করছে। জানুয়ারির শেষ নাগাদ নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড এবং সংশ্লিষ্ট কমিটি গঠন করা হবে এবং এপ্রিলের শেষ নাগাদ নির্বাচন সম্পন্ন হবে।

দেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সবখানে চেয়ার পরিবর্তনের ধারা চলছে তা থেকে বাদ পড়েনি ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটিও। রাজনৈতিক কারণে সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে গত সেপ্টেম্বরে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ নিয়োগ দেয় সরকার।
শুধু এফবিসিসিআই নয়, একে একে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, চট্টগ্রামের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার, ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাব, তথ্য প্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস)-এ। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি আছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তারা বলছেন, ব্যবসায়ী সংগঠন পরিচালনার দায়িত্ব ব্যবসায়ীদের হাতেই থাকা উচিত। কারণ ব্যবসায়ীর স্বার্থ ব্যবসায়ীরাই ভালো বুঝবে।
একের পর এক নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা করায় পুরো ব্যবসায়িক খাত কার্যত অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এসব ব্যবসায়িক সংগঠনে যাদের প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের দায়িত্ব সীমিত রাখা হয়েছে কেবল রুটিন কাজ চালানোর মধ্যেই। তাদের মূল কাজ হলো সংগঠনের পরবর্তী নেতৃত্ব নির্ধারণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু চলমান অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে খাত সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যা সমাধানে এ প্রশাসকদের কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।
দেশে দীর্ঘদিন ধরে ডলার সরবরাহে ঘাটতি ও দরবৃদ্ধি, শিল্প-কারখানায় গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহে সংকট এবং আমদানি জটিলতা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ক্রেতা ও ভোক্তারা চাপে থাকায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম সংকুচিত হচ্ছে এবং বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে। শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা, বোনাসসহ নানা দাবিতে চলমান আন্দোলনের ফলে অচলাবস্থায় রয়েছে পোশাক খাত। কারখানা বন্ধ হওয়ায় বেকার হচ্ছে হাজার হাজার শ্রমিক। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও প্রায় একশ পণ্যে ভ্যাট ও শুল্ক আরোপ করে সরকার, যা ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে বাণিজ্যিক গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর বিষয়েও আগাম ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এসব নীতি প্রণয়নে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। বিগত সরকারের সময়ও তেমন কোনো আলোচনা হত না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যবসায় রাজনীতির প্রবেশের কারণে ব্যবসায়ীদের ঐক্যে ফাটল ধরেছে। ফলে যখন যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, তারা যখন যা খুশি, সহজেই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারছে। তবে এই একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ কেবল ব্যবসা ও শিল্পের সংকট তৈরি করেনি, ক্রেতা-ভোক্তার জন্য মারাত্মক ভোগান্তির কারণ হয়েছে।
সাধারণত ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় নীতি বা সিদ্ধান্তে সরকারের সঙ্গে এফবিসিসিআইর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। কিন্তু এখন সেই ভূমিকা কার্যত দেখা যাচ্ছে না। এ ছাড়া খাতভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ ও বড় সংগঠন বিজিএমইএর কার্যক্রমও অচল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশ্বের সব দেশেই বেসরকারি খাতের স্বার্থ রক্ষায় ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো গড়ে ওঠে। তবে দেশে গত ১০ বছরে রাজনীতির মতো এসব সংগঠনেও দলীয়করণ প্রবল হয়েছে। এর ফলেই এখন নেতৃত্বের অভাব দেখা দিয়েছে। এই কারণে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় সরকারের নজরে আসছে না।
তিনি দাবি করেন, ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কথা বলতে হলে ব্যবসায়িক সংগঠনে নির্বাচিত প্রতিনিধির প্রয়োজন। তবে বাস্তবতা হলো, সংগঠনগুলোর সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে নতুন নেতৃত্বও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েছে।
সরকারের উচিত দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে একটি সংস্কার কমিটি গঠন করা। এই কমিটি দেশের বাস্তবতা ও আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন অনুসরণ করে একটি সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করবে, যা ভিত্তি হিসেবে সব সংগঠনের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড নির্ধারণ করবে। এমনটি না হলে, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোতে দলীয় আনুগত্যের প্রবণতা থাকবে।
এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঐক্যের অভাব ও রাজনৈতিক বিবাদই প্রশাসক নিয়োগের কারণ। নির্বাচিত নেতৃত্ব থাকলে সরকারের সঙ্গে আলোচনা আরও ভালোভাবে হতে পারত।
গত ৪ ডিসেম্বর বেসিসে প্রশাসক হিসেবে মুহম্মদ মেহেদী হাসান নিয়োগ পান। এর আগে ২০ অক্টোবর বিজিএমইএ-তে প্রশাসক হিসেবে মো. আনোয়ার হোসেনকে নিয়োগ দেয় সরকার। ১২ সেপ্টেম্বর এফবিসিসিআই-তে প্রশাসক হিসেবে মো. হাফিজুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১১ সেপ্টেম্বর ই-ক্যাবের প্রশাসক হিসেবে মুহাম্মদ সাঈদ আলীকে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চেম্বারে প্রশাসক হিসেবে মুহম্মদ আনোয়ার পাশাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব সংগঠনে সাধারণত শেখ হাসিনার সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বা আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্ব ছিল।
এফবিসিসিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ব্যবসায়ী সংগঠনের সংখ্যা ৪৮৫ টি। এক সময় ব্যবসায়ী সংগঠন ছিল অত্যন্ত সুসংগঠিত। তারা নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দাবি আদায়ে সব সময় সোচ্চার ছিল। সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বা চাপিয়ে দেওয়া মনে হলে তার প্রতিবাদ করেছে এবং একই সঙ্গে সেই সমস্যার যৌক্তিক সমাধানের পথও সরকারের সামনে তুলে ধরেছে। এর ফলে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো, তা সব পক্ষের জন্যই গ্রহণযোগ্য ও সহনশীল বিবেচিত হতো।
বিগত সরকারের সময়ে ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোতে অতিরিক্ত রাজনীতি ও দলীয়করণের কারণে তাদের ঐতিহ্য ও কার্যক্রমে বড় পরিবর্তন এসেছে। এতে কিছু গোষ্ঠী অতিরিক্ত সুবিধা ভোগ ও প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পেলেও ভিন্নমতের ব্যবসায়ীরা উপেক্ষিত থেকে গেছে। ফলে তাদের মধ্যে বড় ধরনের অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা সব সময় ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশে সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি করতে তৎপর থাকে। সরকারের ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপের সিদ্ধান্তও সাধারণত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ হয়, যাতে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের স্বার্থ ঠিকভাবে রক্ষা হয়। এ ছাড়া গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যা, ডলার সরবরাহ, আমদানি এলসি ইত্যাদি সমস্যার সমাধানেও তারা সক্রিয় থাকে। তবে এখন এই সংগঠনগুলোর অনেকেই নেতৃত্বহীন, বিশেষ করে অ্যাপেক্স বডি বা মাদার সংগঠনগুলো, যার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে কিছু সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদের মতে, ব্যবসায়িক সংগঠনের প্রশাসকদের প্রধান লক্ষ্য হলো সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা। প্রশাসকেরা ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করেন না, আর সাধারণ সদস্যদের অংশগ্রহণ ছাড়া সংগঠনের পক্ষে কাজ করা কঠিন। এর ফলে অনেক ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকে।
বিজিএমইএর প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা ঠিক ব্যবসায়ীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হলে তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আরও ব্যাপকভাবে দেখবে। তবে নির্বাচনের সময়ও ঘনিয়ে আসছে। এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের জন্য সবাই সহযোগিতা করছে। জানুয়ারির শেষ নাগাদ নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড এবং সংশ্লিষ্ট কমিটি গঠন করা হবে এবং এপ্রিলের শেষ নাগাদ নির্বাচন সম্পন্ন হবে।

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহতের ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ফার্মগেট দুর্ঘটনায়স্থল পরিদর্শন এসে এসব কথা বলেন তিনি।
৪ মিনিট আগে
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে আজ রোববার দুপুরে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি দেশের আধুনিক এই গণপরিবহন ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াল। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে উড়ালপথের পিলার ও ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বসানো একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে। প্রায় ১৪০ থেকে ১৫০ কেজি ওজনের....
৬ মিনিট আগে
ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে আজ রোববার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে এক পথচারী মারা যান। এই ঘটনার পর থেকে মেট্রোরেল চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকে।
১৪ মিনিট আগে
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি আয়োজিত ‘কেমন বই মেলা চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ১৭টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহতের ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ফার্মগেট দুর্ঘটনায়স্থল পরিদর্শন এসে এসব কথা বলেন তিনি।
সড়ক উপদেষ্টা বলেন, মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে একজন পথচারী নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও দুজন পথচারী আহত হয়েছেন। আহত দুজনকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নিহতের মরদেহ ওই হাসপাতালে আছে।
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘নিহত ব্যক্তির সব দায়-দায়িত্ব আমরা গ্রহণ করব। প্রাথমিকভাবে নিহত পরিবারকে ৫ লাখ টাকা সাহায্য দেওয়া হবে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের কেউ কর্মক্ষম থাকলে তাঁকে মেট্রোরেলে চাকরি দেওয়া হবে।’
এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, মেট্রোরেলের সাবেক এমডি ও সেতুসচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ কমিটিতে আরও আছেন বুয়েটের অধ্যাপক এবিএম তৌফিক হাসান, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি)-র সহকারী অধ্যাপক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জাহিদুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব ও সড়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আসফিয়া সুলতানা।
এই কমিটি ২ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেবে বলে জানান উপদেষ্টা।
সড়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা কি নির্মাণ কাজের ত্রুটির জন্য হয়েছে, নাকি নাশকতামূলক কিছু ঘটেছে সেটি খতিয়ে দেখবে এই কমিটি। যারা দায়ী তাদের চিহ্নিত করবে এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য সুপারিশ করবে।’
আজ রোববার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে এক পথচারী মারা যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই ব্যক্তি ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। মেট্রোরেল চলাচলের মুহূর্তে ওপর থেকে একটি বিয়ারিং প্যাড তাঁর মাথায় পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে। তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ডিউটিরত অবস্থায় কাছেই ছিলাম। খবর পেয়ে দ্রুত গিয়ে দেখি, এক ব্যক্তি রাস্তায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন।’
নিহত ব্যক্তির সঙ্গে থাকা একটি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। তাতে নাম লেখা আবুল কালাম এবং বাড়ি শরীয়তপুর। জন্মসাল ১৯৯০।

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহতের ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ফার্মগেট দুর্ঘটনায়স্থল পরিদর্শন এসে এসব কথা বলেন তিনি।
সড়ক উপদেষ্টা বলেন, মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে একজন পথচারী নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও দুজন পথচারী আহত হয়েছেন। আহত দুজনকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নিহতের মরদেহ ওই হাসপাতালে আছে।
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘নিহত ব্যক্তির সব দায়-দায়িত্ব আমরা গ্রহণ করব। প্রাথমিকভাবে নিহত পরিবারকে ৫ লাখ টাকা সাহায্য দেওয়া হবে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের কেউ কর্মক্ষম থাকলে তাঁকে মেট্রোরেলে চাকরি দেওয়া হবে।’
এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, মেট্রোরেলের সাবেক এমডি ও সেতুসচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ কমিটিতে আরও আছেন বুয়েটের অধ্যাপক এবিএম তৌফিক হাসান, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি)-র সহকারী অধ্যাপক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জাহিদুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব ও সড়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আসফিয়া সুলতানা।
এই কমিটি ২ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেবে বলে জানান উপদেষ্টা।
সড়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা কি নির্মাণ কাজের ত্রুটির জন্য হয়েছে, নাকি নাশকতামূলক কিছু ঘটেছে সেটি খতিয়ে দেখবে এই কমিটি। যারা দায়ী তাদের চিহ্নিত করবে এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য সুপারিশ করবে।’
আজ রোববার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে এক পথচারী মারা যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই ব্যক্তি ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। মেট্রোরেল চলাচলের মুহূর্তে ওপর থেকে একটি বিয়ারিং প্যাড তাঁর মাথায় পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে। তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ডিউটিরত অবস্থায় কাছেই ছিলাম। খবর পেয়ে দ্রুত গিয়ে দেখি, এক ব্যক্তি রাস্তায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন।’
নিহত ব্যক্তির সঙ্গে থাকা একটি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। তাতে নাম লেখা আবুল কালাম এবং বাড়ি শরীয়তপুর। জন্মসাল ১৯৯০।

দেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সবখানে চেয়ার পরিবর্তনের ধারা চলছে তা থেকে বাদ পড়েনি ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটিও। রাজনৈতিক কারণে সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে...
২২ জানুয়ারি ২০২৫
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে আজ রোববার দুপুরে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি দেশের আধুনিক এই গণপরিবহন ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াল। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে উড়ালপথের পিলার ও ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বসানো একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে। প্রায় ১৪০ থেকে ১৫০ কেজি ওজনের....
৬ মিনিট আগে
ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে আজ রোববার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে এক পথচারী মারা যান। এই ঘটনার পর থেকে মেট্রোরেল চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকে।
১৪ মিনিট আগে
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি আয়োজিত ‘কেমন বই মেলা চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ১৭টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে আজ রোববার দুপুরে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি দেশের আধুনিক এই গণপরিবহন ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াল। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে উড়ালপথের পিলার ও ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বসানো একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে। প্রায় ১৪০ থেকে ১৫০ কেজি ওজনের এই কাঠামোটি সরাসরি এক পথচারীর মাথায় পড়লে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই দুর্ঘটনার পরপরই জননিরাপত্তা ও কারিগরি দিক বিবেচনা করে মেট্রোরেল চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এই দুর্ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ে দ্বিতীয়বারের মতো ঘটল। এর আগে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়েছিল, যার ফলে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রায় ১১ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। এত অল্প সময়ের ব্যবধানে একই কাঠামোগত উপাদানের পুনরাবৃত্তিমূলক ত্রুটি মেট্রোরেলের মান নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া নিয়ে মারাত্মক প্রশ্ন তুলেছে।
বিয়ারিং প্যাড: কাঠামোর মেরুদণ্ড এবং এর জটিল প্রকৌশল
মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড (Metrorail Bearing Pads) হলো উড়ালপথের স্থায়িত্ব ও সুরক্ষার জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। এটি বিশেষ ধরনের রাবার বা ইলাস্টোমেরিক পদার্থ দিয়ে তৈরি। এটি সেতুর কাঠামোগত উপাদানগুলোর মধ্যে একটি কুশন বা কোমল সংযোগস্থল হিসেবে কাজ করে।
বিয়ারিং প্যাডের মূল কাজগুলো কেবল ভার বহন করা নয়, বরং জটিল প্রকৌশলগত চাপ সামলানো। যেমন:
উল্লম্ব ভার বহন ও বণ্টন: এটি ট্রেন চলাচলের সময় সৃষ্ট বিপুল উল্লম্ব চাপ (Vertical Load) শোষণ করে এবং চাপটিকে সরাসরি কোনো একটি নির্দিষ্ট পিলারে কেন্দ্রীভূত না করে পুরো পিলারের মাধ্যমে সমানভাবে ভিত্তি বা মাটির দিকে ছড়িয়ে দেয়।
অনুভূমিক ও কৌণিক সরণ নিয়ন্ত্রণ: স্থিতিস্থাপকতার গুণে ভায়াডাক্টের অনুভূমিক সরণ (Horizontal Movement) বা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে এটি। তাপমাত্রা পরিবর্তন, ট্রেন চলাচলের গতি বা বাঁকের কারণে ভায়াডাক্টে যে সামান্য প্রসারণ, সংকোচন বা পার্শ্বীয় নড়াচড়া হয়, প্যাড সেই নড়াচড়ার চাপ শোষণ করে।
কম্পন শোষণ (Damping) : বিয়ারিং প্যাড একটি কার্যকর ‘শক অ্যাবজর্ভার’ হিসেবে কাজ করে। এটি মেট্রোরেল চলাচলের স্বাভাবিক কম্পনের বেশিরভাগ অংশ শোষণ করে, যা শুধু কাঠামোর দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করে না, বরং যাত্রীদের ভ্রমণও মসৃণ ও আরামদায়ক করে।
বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ: নকশা ও মান নিয়ন্ত্রণের দুর্বলতা
বুয়েটের ব্যুরো অব রিসার্চ, টেস্টিং অ্যান্ড কনসাল্ট্যান্টের (বিআরটিসি) পরিচালক ড. সামছুল হক প্রথম দুর্ঘটনার সময়ই বলেছিলেন, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’। তাঁর মতে, একটি অত্যাধুনিক অবকাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বারবার খুলে পড়ার অর্থ হলো নকশাগত ত্রুটি অথবা ব্যবহৃত উপাদানের গুণমানে বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে।
গভীরতর ঝুঁকি: বিয়ারিং প্যাড যদি স্থানচ্যুত হয়, তবে ট্রেন চলাচলের গতিশীল চাপ (Dynamic Stress) সরাসরি পিলারের সঙ্গে ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে গিয়ে পড়ে। এই ঘর্ষণ ও অস্বাভাবিক চাপ পিলারে সূক্ষ্ণ-ফাটল (Micro-fractures) তৈরি করতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে গোটা কাঠামোটিকেই ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে ফেলে দেয়। বিশেষত বাঁকযুক্ত স্থানে যেখানে চাপ স্বভাবতই বেশি তৈরি হয়, সেখানে উন্নত প্রযুক্তির অধিক চাপ সহনশীল প্যাড ব্যবহার করা অপরিহার্য।
ফার্মগেটের এই দুর্ঘটনা কেবল একটি প্রযুক্তিগত ব্যর্থতা নয়, বরং এটি নগরবাসীর মধ্যে নিরাপদ যাতায়াত নিয়ে গভীর আস্থা সংকট তৈরি করতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।
বিয়ারিং প্যাডের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল নির্মাণকালেই
২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভায়াডাক্টে ত্রুটির কারণে দীর্ঘ সময় আংশিক বন্ধ ছিল মেট্রোরেল চলাচল। ভায়াডাক্টের বিয়ারিং প্যাড নিয়ে নির্মাণের সময়ই প্রশ্ন উঠেছিল। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে এ ব্যাপারে আপত্তিও জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। কিন্তু তখন অদৃশ্য কারণে কেউ তাতে কর্ণপাত করেনি। শেষ পর্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ বিয়ারিং প্যাডই বসানো হয়।
বুয়েটের ল্যাবে পরীক্ষায় উত্তরা–আগারগাঁও অংশের দুটি প্যাকেজের জন্য আমদানি করা বিয়ারিং প্যাডের মান যথাযথ নয় বলে দেখা যায়। এসব বিয়ারিং প্যাড সরবরাহ করেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতাল–থাই। সে সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছিল, মেট্রোরেল প্রকল্পে নিম্নমানের বিয়ারিং প্যাড সরবরাহের ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তরা–আগারগাঁও অংশের প্যাকেজ ৩ ও ৪–এর নির্মাণকাজে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজটি বাস্তবায়ন করছিল ইতালিয়ান–থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি (ইতাল–থাই)।
মেট্রোরেলের উত্তরা–আগারগাঁও অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ কিলোমিটার। যখন অভিযোগ ওঠে তত দিনে পিয়ার–ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বিয়ারিং প্যাড বসিয়ে প্রায় আট কিলোমিটার উড়ালপথ বসানো হয়ে গেছে। কিন্তু পরে সেগুলো পরিবর্তন করা হয়নি।
বিয়ারিং প্যাডের কারিগরি মান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারার বিষয়টি উঠে আসার পর বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, মেট্রোরেলের গুরুত্বপূর্ণ এ উপকরণ মানহীন হলে তা গোটা অবকাঠামোটিকেই ঝুঁকির মুখে ফেলে দেবে। আজ মেট্রোরেলের দুর্ঘটনা সে কথাই প্রমাণ করল!
বিশেষজ্ঞরা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, বিয়ারিং প্যাড কেবল সেতুর কাঠামোর রক্ষাকবচ নয়, এটি বাংলাদেশের দ্রুত বিকাশমান গণপরিবহন ব্যবস্থার স্থায়িত্ব ও জননিরাপত্তার প্রতীক। এই দুর্ঘটনা প্রমাণ করে, কেবল অবকাঠামো নির্মাণই যথেষ্ট নয়, গুণমান নিশ্চিতকরণ ও কঠোর নজরদারিই আধুনিক ব্যবস্থার সফলতার ভিত্তি।

রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে আজ রোববার দুপুরে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি দেশের আধুনিক এই গণপরিবহন ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াল। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে উড়ালপথের পিলার ও ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বসানো একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে। প্রায় ১৪০ থেকে ১৫০ কেজি ওজনের এই কাঠামোটি সরাসরি এক পথচারীর মাথায় পড়লে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই দুর্ঘটনার পরপরই জননিরাপত্তা ও কারিগরি দিক বিবেচনা করে মেট্রোরেল চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এই দুর্ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ে দ্বিতীয়বারের মতো ঘটল। এর আগে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়েছিল, যার ফলে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রায় ১১ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। এত অল্প সময়ের ব্যবধানে একই কাঠামোগত উপাদানের পুনরাবৃত্তিমূলক ত্রুটি মেট্রোরেলের মান নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া নিয়ে মারাত্মক প্রশ্ন তুলেছে।
বিয়ারিং প্যাড: কাঠামোর মেরুদণ্ড এবং এর জটিল প্রকৌশল
মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড (Metrorail Bearing Pads) হলো উড়ালপথের স্থায়িত্ব ও সুরক্ষার জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। এটি বিশেষ ধরনের রাবার বা ইলাস্টোমেরিক পদার্থ দিয়ে তৈরি। এটি সেতুর কাঠামোগত উপাদানগুলোর মধ্যে একটি কুশন বা কোমল সংযোগস্থল হিসেবে কাজ করে।
বিয়ারিং প্যাডের মূল কাজগুলো কেবল ভার বহন করা নয়, বরং জটিল প্রকৌশলগত চাপ সামলানো। যেমন:
উল্লম্ব ভার বহন ও বণ্টন: এটি ট্রেন চলাচলের সময় সৃষ্ট বিপুল উল্লম্ব চাপ (Vertical Load) শোষণ করে এবং চাপটিকে সরাসরি কোনো একটি নির্দিষ্ট পিলারে কেন্দ্রীভূত না করে পুরো পিলারের মাধ্যমে সমানভাবে ভিত্তি বা মাটির দিকে ছড়িয়ে দেয়।
অনুভূমিক ও কৌণিক সরণ নিয়ন্ত্রণ: স্থিতিস্থাপকতার গুণে ভায়াডাক্টের অনুভূমিক সরণ (Horizontal Movement) বা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে এটি। তাপমাত্রা পরিবর্তন, ট্রেন চলাচলের গতি বা বাঁকের কারণে ভায়াডাক্টে যে সামান্য প্রসারণ, সংকোচন বা পার্শ্বীয় নড়াচড়া হয়, প্যাড সেই নড়াচড়ার চাপ শোষণ করে।
কম্পন শোষণ (Damping) : বিয়ারিং প্যাড একটি কার্যকর ‘শক অ্যাবজর্ভার’ হিসেবে কাজ করে। এটি মেট্রোরেল চলাচলের স্বাভাবিক কম্পনের বেশিরভাগ অংশ শোষণ করে, যা শুধু কাঠামোর দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করে না, বরং যাত্রীদের ভ্রমণও মসৃণ ও আরামদায়ক করে।
বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ: নকশা ও মান নিয়ন্ত্রণের দুর্বলতা
বুয়েটের ব্যুরো অব রিসার্চ, টেস্টিং অ্যান্ড কনসাল্ট্যান্টের (বিআরটিসি) পরিচালক ড. সামছুল হক প্রথম দুর্ঘটনার সময়ই বলেছিলেন, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’। তাঁর মতে, একটি অত্যাধুনিক অবকাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বারবার খুলে পড়ার অর্থ হলো নকশাগত ত্রুটি অথবা ব্যবহৃত উপাদানের গুণমানে বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে।
গভীরতর ঝুঁকি: বিয়ারিং প্যাড যদি স্থানচ্যুত হয়, তবে ট্রেন চলাচলের গতিশীল চাপ (Dynamic Stress) সরাসরি পিলারের সঙ্গে ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে গিয়ে পড়ে। এই ঘর্ষণ ও অস্বাভাবিক চাপ পিলারে সূক্ষ্ণ-ফাটল (Micro-fractures) তৈরি করতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে গোটা কাঠামোটিকেই ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে ফেলে দেয়। বিশেষত বাঁকযুক্ত স্থানে যেখানে চাপ স্বভাবতই বেশি তৈরি হয়, সেখানে উন্নত প্রযুক্তির অধিক চাপ সহনশীল প্যাড ব্যবহার করা অপরিহার্য।
ফার্মগেটের এই দুর্ঘটনা কেবল একটি প্রযুক্তিগত ব্যর্থতা নয়, বরং এটি নগরবাসীর মধ্যে নিরাপদ যাতায়াত নিয়ে গভীর আস্থা সংকট তৈরি করতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।
বিয়ারিং প্যাডের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল নির্মাণকালেই
২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভায়াডাক্টে ত্রুটির কারণে দীর্ঘ সময় আংশিক বন্ধ ছিল মেট্রোরেল চলাচল। ভায়াডাক্টের বিয়ারিং প্যাড নিয়ে নির্মাণের সময়ই প্রশ্ন উঠেছিল। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে এ ব্যাপারে আপত্তিও জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। কিন্তু তখন অদৃশ্য কারণে কেউ তাতে কর্ণপাত করেনি। শেষ পর্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ বিয়ারিং প্যাডই বসানো হয়।
বুয়েটের ল্যাবে পরীক্ষায় উত্তরা–আগারগাঁও অংশের দুটি প্যাকেজের জন্য আমদানি করা বিয়ারিং প্যাডের মান যথাযথ নয় বলে দেখা যায়। এসব বিয়ারিং প্যাড সরবরাহ করেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতাল–থাই। সে সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছিল, মেট্রোরেল প্রকল্পে নিম্নমানের বিয়ারিং প্যাড সরবরাহের ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তরা–আগারগাঁও অংশের প্যাকেজ ৩ ও ৪–এর নির্মাণকাজে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজটি বাস্তবায়ন করছিল ইতালিয়ান–থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি (ইতাল–থাই)।
মেট্রোরেলের উত্তরা–আগারগাঁও অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ কিলোমিটার। যখন অভিযোগ ওঠে তত দিনে পিয়ার–ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বিয়ারিং প্যাড বসিয়ে প্রায় আট কিলোমিটার উড়ালপথ বসানো হয়ে গেছে। কিন্তু পরে সেগুলো পরিবর্তন করা হয়নি।
বিয়ারিং প্যাডের কারিগরি মান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারার বিষয়টি উঠে আসার পর বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, মেট্রোরেলের গুরুত্বপূর্ণ এ উপকরণ মানহীন হলে তা গোটা অবকাঠামোটিকেই ঝুঁকির মুখে ফেলে দেবে। আজ মেট্রোরেলের দুর্ঘটনা সে কথাই প্রমাণ করল!
বিশেষজ্ঞরা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, বিয়ারিং প্যাড কেবল সেতুর কাঠামোর রক্ষাকবচ নয়, এটি বাংলাদেশের দ্রুত বিকাশমান গণপরিবহন ব্যবস্থার স্থায়িত্ব ও জননিরাপত্তার প্রতীক। এই দুর্ঘটনা প্রমাণ করে, কেবল অবকাঠামো নির্মাণই যথেষ্ট নয়, গুণমান নিশ্চিতকরণ ও কঠোর নজরদারিই আধুনিক ব্যবস্থার সফলতার ভিত্তি।

দেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সবখানে চেয়ার পরিবর্তনের ধারা চলছে তা থেকে বাদ পড়েনি ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটিও। রাজনৈতিক কারণে সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে...
২২ জানুয়ারি ২০২৫
মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহতের ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ফার্মগেট দুর্ঘটনায়স্থল পরিদর্শন এসে এসব কথা বলেন তিনি।
৪ মিনিট আগে
ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে আজ রোববার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে এক পথচারী মারা যান। এই ঘটনার পর থেকে মেট্রোরেল চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকে।
১৪ মিনিট আগে
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি আয়োজিত ‘কেমন বই মেলা চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ১৭টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে এক পথচারীর মৃত্যুর ঘটনায় বেলা ১২টার দিকে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রায় তিন ঘণ্টা পর বেলা ৩টা থেকে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত আংশিক মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়েছে।
আজ রোববার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড ডিএমটিসিএল পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে দুপুরে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হবে খুব দ্রুততম সময়ে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত আপাতত চালু হচ্ছে না। আজ চালু করা সম্ভব হবে না এই অংশ।’
ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে আজ দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে এক পথচারী মারা যান। এই ঘটনার পর থেকে মেট্রোরেল চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই ব্যক্তি ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। মেট্রোরেল চলাচলের মুহূর্তে ওপর থেকে একটি বিয়ারিং প্যাড তাঁর মাথায় পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত ব্যক্তির সঙ্গে থাকা একটি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। তাতে নাম লেখা আবুল কালাম এবং বাড়ি শরীয়তপুর। জন্মসাল ১৯৯০। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।
তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ডিউটিরত অবস্থায় কাছেই ছিলাম। খবর পেয়ে দ্রুত গিয়ে দেখি, এক ব্যক্তি রাস্তায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন।’
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে। এর ফলে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। এই ঘটনায় বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হয়। এর মধ্যে দ্বিতীয়বার বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ল।
মেট্রোরেলের লাইনের নিচে উড়ালপথের পিলারের সঙ্গে রাবারের বিয়ারিং প্যাড থাকে। এগুলোর প্রতিটির ওজন ১৪০ বা ১৫০ কেজি। এসব বিয়ারিং প্যাড ছাড়া ট্রেন চালালে উড়ালপথ দেবে যাওয়া কিংবা স্থানচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমটিসিএল সূত্র।

রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে এক পথচারীর মৃত্যুর ঘটনায় বেলা ১২টার দিকে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রায় তিন ঘণ্টা পর বেলা ৩টা থেকে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত আংশিক মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়েছে।
আজ রোববার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড ডিএমটিসিএল পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে দুপুরে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হবে খুব দ্রুততম সময়ে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত আপাতত চালু হচ্ছে না। আজ চালু করা সম্ভব হবে না এই অংশ।’
ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে আজ দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে এক পথচারী মারা যান। এই ঘটনার পর থেকে মেট্রোরেল চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই ব্যক্তি ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। মেট্রোরেল চলাচলের মুহূর্তে ওপর থেকে একটি বিয়ারিং প্যাড তাঁর মাথায় পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত ব্যক্তির সঙ্গে থাকা একটি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। তাতে নাম লেখা আবুল কালাম এবং বাড়ি শরীয়তপুর। জন্মসাল ১৯৯০। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।
তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ডিউটিরত অবস্থায় কাছেই ছিলাম। খবর পেয়ে দ্রুত গিয়ে দেখি, এক ব্যক্তি রাস্তায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন।’
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে। এর ফলে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। এই ঘটনায় বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হয়। এর মধ্যে দ্বিতীয়বার বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ল।
মেট্রোরেলের লাইনের নিচে উড়ালপথের পিলারের সঙ্গে রাবারের বিয়ারিং প্যাড থাকে। এগুলোর প্রতিটির ওজন ১৪০ বা ১৫০ কেজি। এসব বিয়ারিং প্যাড ছাড়া ট্রেন চালালে উড়ালপথ দেবে যাওয়া কিংবা স্থানচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমটিসিএল সূত্র।

দেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সবখানে চেয়ার পরিবর্তনের ধারা চলছে তা থেকে বাদ পড়েনি ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটিও। রাজনৈতিক কারণে সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে...
২২ জানুয়ারি ২০২৫
মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহতের ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ফার্মগেট দুর্ঘটনায়স্থল পরিদর্শন এসে এসব কথা বলেন তিনি।
৪ মিনিট আগে
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে আজ রোববার দুপুরে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি দেশের আধুনিক এই গণপরিবহন ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াল। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে উড়ালপথের পিলার ও ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বসানো একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে। প্রায় ১৪০ থেকে ১৫০ কেজি ওজনের....
৬ মিনিট আগে
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি আয়োজিত ‘কেমন বই মেলা চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ১৭টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এবারও বইমেলা যাতে খুব সুন্দর হয়। সময়ের ব্যাপারে আমি জানি না, বাংলা একাডেমি কি একই সময়ে করবে নাকি সময় একটু হেরফের করবে—সেটা বাংলা একাডেমির বিষয়। তবে মেলা হবে—এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।’
আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি আয়োজিত ‘কেমন বই মেলা চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ১৭টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা এমন একটা বইমেলা চাই, যে বইমেলায় আমাদের সব মানুষের বই থাকবে। আমরা যারা বই লিখি, যে যেইটাই লিখুক কেন, যে কোনো ভিন্ন মতের লেখাই থাকুক না কেন, সবার বই যেন বইমেলায় থাকে। পাঠক বেছে নেবেন—উনি যেটা পড়তে চান, যে বই তাঁকে টানে উনি ওই বইটা কিনবেন।’
তিনি যোগ করেন, ‘আমরা চাই এমন একটা মেলা, অবশ্যই সেটা বৈষম্যবিরোধী। কারও প্রতি যেন বৈষম্য না করা হয়। কেউ যেন এসে না বলেন যে না, আমার প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে। আমি যে বইটা প্রকাশ করতে চাচ্ছি বা বিক্রি করতে চাচ্ছি, এটা এখানে করা যাচ্ছে না। এই কথাটা যেন না শোনা হয়।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এমন কোনো বইমেলা চাই না যেখানে ৪০ শতাংশ বই হচ্ছে একটা লোকের ওপরে। এমন একটা বইমেলার সময় গেছে, সামনে আপনি বই দেখবেন, সবই হচ্ছে শেখ পরিবারের বই। উনি টুঙ্গিপাড়ায় পুকুরের পাশে বসে আছেন, সেটা নিয়েও একটা বড় বই কেউ লিখে ফেলেছে। ওই বইগুলো ছিল—কোনোভাবে প্রতারণা করে কিছু টাকা-পয়সা কামানোর জন্য।’
সভায় জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মোহন রায়হান বলেন, ‘বইমেলাকে দলীয় বইমেলা হিসেবে রূপান্তরিত করা হয়েছে। প্রতিটি স্টল, প্যাভেলিয়ন আওয়ামী দালালদের দেওয়া হয়েছিল। প্রকাশকেরা ছিল ফ্যাসিস্টদের দোসর। তবে এবারের বইমেলা হবে সবার।’
নির্বাচনের কারণে বইমেলা বন্ধের কোনো কারণ নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা হোক। নির্বাচনের কয়েক দিন বইমেলা বন্ধ রেখে। তা আবার কয়েক দিন বর্ধিত করা যেতে পারে। তা-ও যাতে ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা বন্ধ না থাকে। এবারের বইমেলা না হলে মনে করা হবে, ফ্যাসিস্ট শক্তির দোসররা এটা জন্য জড়িত। তারাই ষড়যন্ত্র করে বইমেলা বন্ধ করতে চাইছে। সরকারের কাছে আবেদন বইমেলা যাতে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখেই হয়।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাঈদ বারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কবি গাজীউল হাসান খান, ফয়েজ আলম।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এবারও বইমেলা যাতে খুব সুন্দর হয়। সময়ের ব্যাপারে আমি জানি না, বাংলা একাডেমি কি একই সময়ে করবে নাকি সময় একটু হেরফের করবে—সেটা বাংলা একাডেমির বিষয়। তবে মেলা হবে—এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।’
আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি আয়োজিত ‘কেমন বই মেলা চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ১৭টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা এমন একটা বইমেলা চাই, যে বইমেলায় আমাদের সব মানুষের বই থাকবে। আমরা যারা বই লিখি, যে যেইটাই লিখুক কেন, যে কোনো ভিন্ন মতের লেখাই থাকুক না কেন, সবার বই যেন বইমেলায় থাকে। পাঠক বেছে নেবেন—উনি যেটা পড়তে চান, যে বই তাঁকে টানে উনি ওই বইটা কিনবেন।’
তিনি যোগ করেন, ‘আমরা চাই এমন একটা মেলা, অবশ্যই সেটা বৈষম্যবিরোধী। কারও প্রতি যেন বৈষম্য না করা হয়। কেউ যেন এসে না বলেন যে না, আমার প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে। আমি যে বইটা প্রকাশ করতে চাচ্ছি বা বিক্রি করতে চাচ্ছি, এটা এখানে করা যাচ্ছে না। এই কথাটা যেন না শোনা হয়।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এমন কোনো বইমেলা চাই না যেখানে ৪০ শতাংশ বই হচ্ছে একটা লোকের ওপরে। এমন একটা বইমেলার সময় গেছে, সামনে আপনি বই দেখবেন, সবই হচ্ছে শেখ পরিবারের বই। উনি টুঙ্গিপাড়ায় পুকুরের পাশে বসে আছেন, সেটা নিয়েও একটা বড় বই কেউ লিখে ফেলেছে। ওই বইগুলো ছিল—কোনোভাবে প্রতারণা করে কিছু টাকা-পয়সা কামানোর জন্য।’
সভায় জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মোহন রায়হান বলেন, ‘বইমেলাকে দলীয় বইমেলা হিসেবে রূপান্তরিত করা হয়েছে। প্রতিটি স্টল, প্যাভেলিয়ন আওয়ামী দালালদের দেওয়া হয়েছিল। প্রকাশকেরা ছিল ফ্যাসিস্টদের দোসর। তবে এবারের বইমেলা হবে সবার।’
নির্বাচনের কারণে বইমেলা বন্ধের কোনো কারণ নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা হোক। নির্বাচনের কয়েক দিন বইমেলা বন্ধ রেখে। তা আবার কয়েক দিন বর্ধিত করা যেতে পারে। তা-ও যাতে ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা বন্ধ না থাকে। এবারের বইমেলা না হলে মনে করা হবে, ফ্যাসিস্ট শক্তির দোসররা এটা জন্য জড়িত। তারাই ষড়যন্ত্র করে বইমেলা বন্ধ করতে চাইছে। সরকারের কাছে আবেদন বইমেলা যাতে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখেই হয়।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাঈদ বারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কবি গাজীউল হাসান খান, ফয়েজ আলম।

দেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সবখানে চেয়ার পরিবর্তনের ধারা চলছে তা থেকে বাদ পড়েনি ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটিও। রাজনৈতিক কারণে সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে...
২২ জানুয়ারি ২০২৫
মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহতের ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ফার্মগেট দুর্ঘটনায়স্থল পরিদর্শন এসে এসব কথা বলেন তিনি।
৪ মিনিট আগে
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে আজ রোববার দুপুরে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি দেশের আধুনিক এই গণপরিবহন ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াল। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে উড়ালপথের পিলার ও ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বসানো একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে। প্রায় ১৪০ থেকে ১৫০ কেজি ওজনের....
৬ মিনিট আগে
ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে আজ রোববার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে এক পথচারী মারা যান। এই ঘটনার পর থেকে মেট্রোরেল চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকে।
১৪ মিনিট আগে