Ajker Patrika

সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে মতানৈক্য দলগুলোর

  • এনসিপি চায় গণপরিষদ নির্বাচন। বিএনপির মত জাতীয় সংসদেই সংবিধানের ব্যাপক পরিবর্তন সম্ভব
  • দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের পক্ষে জামায়াত
  • ’৭২-এর সংবিধানকে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রের বিরুদ্ধে মনে করে এনসিপি। সিপিবি বলেছে, ’৭২-এর সংবিধানের চার মূলনীতি ঠিক রাখতে হবে
তানিম আহমেদ, ঢাকা 
সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে মতানৈক্য দলগুলোর

রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ ২৪টি রাজনৈতিক দল। এসব সুপারিশ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সংবিধান সংস্কার ও নির্বাচন-সংক্রান্ত বিষয়ে বড় ধরনের মতানৈক্য রয়েছে বড় দলগুলোর মধ্যে।

দলগুলোর মতপার্থক্য ভবিষ্যতে বড় জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, এমনটি মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তবে তাঁরা মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ বলেন, রাজনীতিতে মতপার্থক্য থাকবেই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মতপার্থক্য থাকা স্বাভাবিক। সংবিধান বিষয়ে এনসিপি যেভাবে দেখে, সেভাবে বিএনপি দেখে না। বিএনপি যেভাবে দেখে, সেভাবে জামায়াত দেখে না। তারা এক থাকবে, নাকি বিচ্ছিন্ন থাকবে—এটা তো তারা আগে থেকে নির্ধারণ করেনি। নির্বাচন পর্যন্ত এভাবে চলবে। তবে জাতীয় ঐকমত্য হওয়ার সুযোগ এখনো আছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে বিএনপি যে মতামত দিয়েছে, তাতে গণপরিষদ নির্বাচনের বিরোধিতা করেছে দলটি। বিএনপি মনে করে, নির্বাচিত জাতীয় সংসদে বৃহত্তর ঐকমত্যের ভিত্তিতে ব্যাপক সংশোধিত সংবিধান পাওয়া যাবে।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে বলে মনে করে বিএনপি। সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের ক্ষমতা, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা ইসির হাতে থাকা উচিত বলে মনে করে দলটি। নির্বাচন কমিশনকে দায়বদ্ধ করার জন্য সংসদীয় কমিটির হাতে ক্ষমতা দেওয়ার যে প্রস্তাব করা হয়েছে, বিএনপি তার সঙ্গেও একমত নয়। তাদের মতে, নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে দায়বদ্ধ হতে পারে।

বিএনপি মনে করে, সাংবিধানিক কাউন্সিলের মাধ্যমে অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের ক্ষমতা বাড়বে। এ ছাড়া সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে একাত্তর ও চব্বিশকে এক কাতারে আনা হয়েছে জানিয়ে, এটি অনুচিত বলে মনে করে বিএনপি।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে বলা আছে, কোনো ব্যক্তি একাদিক্রমে অথবা অন্য যেকোনো উপায়ে দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হতে পারবেন না। প্রস্তাবটিতে একমত পোষণ না করে বিএনপি বলেছে, প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ-সংক্রান্ত বিষয়ে ‘কোনো ব্যক্তি একাদিক্রমে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ লাভের যোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইবেন না’ এরূপ বিধান করাই যথেষ্ট।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএনপি চিন্তাভাবনা করেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মতামত দিয়েছে। দেশের জন্য যা হওয়া উচিত, সেগুলো আমরা তুলে ধরেছি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের অনেক প্রস্তাবে অনেকেই একমত আছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে দ্বিমত আছে। সেগুলো আলোচনা সাপেক্ষে ঠিক হবে। আমরা আশা করছি, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।’

রাষ্ট্র সংস্কারে সরকার উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকেই জামায়াতে ইসলামী বলে আসছে, নির্বাচন নিয়ে সরকারকে কোনো সময় বেঁধে দিতে চায় না তারা। দলটি প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের পক্ষে। এখনো একই অবস্থানে আছে তারা। বিএনপির মতো জামায়াতও মনে করে গণপরিষদ নয়, নির্বাচিত সংসদে সংবিধান সংশোধন সম্ভব। তবে দলটি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের পক্ষে। এ দাবিটি বেশির ভাগ ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলেরই রয়েছে বলে জানা গেছে।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ঐকমত্যে আসার জন্য সরকার এই কমিশন করেছে, তারা চেষ্টা করবে, আমরা সহযোগিতা করব। মাত্র তো আলোচনা শুরু হয়েছে। আমাদের সঙ্গে আলোচনা হবে, তখন কথা বলব, পরামর্শ দেব।’

গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনে করে, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্র হলো দেশের প্রথম সংবিধান। কিন্তু ১৯৭২ সালে আওয়ামী লীগ দলীয় মূলনীতি সংবিধানে নিয়ে আসে, যা মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রের বিরুদ্ধে ছিল। এটিকে সাংবিধানিক ক্যু বলেও দাবি করে এনসিপি। এ জন্য বিদ্যমান সংবিধান বাতিল করে গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের দাবি তাদের।

আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সবাই সবার জায়গা থেকে কিছু কিছু ছাড় দেবে বা জাতীয় স্বার্থকে প্রধান করে তুলবে। তুষার বলেন, ‘সব দলই সংস্কারের পক্ষে কথা বলছে, কিন্তু প্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিমত আছে। আলোচনার মাধ্যমে সেটা সমাধানে আসা সম্ভব।’

সংবিধান এবং অন্যান্য গুরুতর বিষয়ে ঐকমত্য না হওয়ার আশঙ্কা বেশি, এমনটি মনে করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘কমিশন চায় দেশের নাম পরিবর্তন করতে, সেখানে আমি আগেই বলে দিয়েছি দ্বিমতের কথা। তারা রাষ্ট্রের চার মূলনীতি পরিবর্তন করতে চায়, সে বিষয়েও আমাদের দ্বিমত রয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনা করে তো সমাধান হবে না। আমরা বলেছি, গণপরিষদের প্রয়োজন নেই, এটা নিয়ে আলোচনা করে কী হবে?’ রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘যেগুলোর বিষয়ে সামান্য দ্বিমত আছে, তা নিয়ে আলোচনা করলে ঐকমত্য হবে। বাকিগুলোতে ঐকমত্য হবে না। তা নিয়ে আলোচনা করে সময় নষ্টের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। সংস্কারের দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচিত সরকারের।’

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলে মতপার্থক্য থাকেই বলে জানান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম। তিনি বলেন, দলগুলোর মধ্যে কিছু মতানৈক্য দেখা দিয়েছে, সেটি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানও সম্ভব। দলগুলো একটি শক্তিকে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করেছে, সেটাকে সংহত করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য মতৈক্য প্রয়োজন হবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী মতের পরও ঐকমত্যের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব রাখেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম। তিনি বলেন, ‘সব বিষয় তো সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। কমিশন ঠিকমতো সংলাপ করতে পারলে বিরোধিতার পরও অনেক দূর জায়গা থাকবে, যাতে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য তৈরি এবং সেটা বাস্তবায়নের পরিস্থিতি তৈরি সম্ভব হবে।’

সংলাপ ও সংস্কারে সব দলই সহযোগিতা করছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কতগুলো মতপার্থক্য রয়েছে পদ্ধতি নিয়ে। কোনো দল বলছে সংসদের মাধ্যমে সংস্কার, কেউ বলছে গণপরিষদের মাধ্যমে, কেউ বলছে অধ্যাদেশের মাধ্যমে। আবার কিছু কিছু আংশিক মতপার্থক্য রয়েছে। আশা করছি, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য দূর করা যাবে। আর সংলাপে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে নমনীয়তা দেখেছি। তাই আমরা আশাবাদী।’

৬ মার্চ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে সংবিধান, নির্বাচনী ব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন, বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার-সংক্রান্ত ১৬৬টি সুপারিশ পাঠায়। ১৩ মার্চের মধ্যে মতামত দেওয়ার অনুরোধ করা হলেও নির্ধারিত সময়ের পর বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, সিপিবিসহ বেশ কয়েকটি দল মতামত দেয়। এখনো ১৪টি দল ও জোট মতামত জমা দেয়নি। কমিশনের আশা, ঈদের পর তারা সব দলের মতামত পাবে।

সংস্কার প্রতিবেদন নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এলডিপি, খেলাফত মজলিস, লেবার পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ঈদের পর এবি পার্টি এবং নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে সংলাপের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কমিশন প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করবে। ঐকমত্য তৈরিতে দলগুলোর সঙ্গে প্রয়োজনে একাধিক সংলাপের চিন্তাও রয়েছে কমিশনের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

আজকের রাশিফল: মুখটা সামলে রাখুন, শত্রুরা ফেসবুক পোস্টে প্রচুর হা হা দেবে

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।’ আজ সোমবার সকালে রাজধানী ঢাকায় পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ‘হল অব প্রাইডে’ বাংলাদেশ পুলিশ আয়োজিত বিশেষ অপরাধ পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এ দেশের আপামর জনগণ, রাজনৈতিক দলসহ সর্বমহলের প্রত্যাশা পূরণের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব পুলিশের কাঁধে। সবার প্রত্যাশা—বাংলাদেশ পুলিশ সামনের জাতীয় নির্বাচনে এমন এক মানদণ্ড স্থাপন করবে, যা শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রশংসিত হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ সহ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘আইনের প্রয়োগ শুধু শক্তি দিয়ে নয়, ন্যায়, নিষ্ঠা ও মানবিকতা দিয়েও প্রতিষ্ঠিত হয়।’ পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী মাঠে আপনারা কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী নন; আপনারা জনগণের নিরাপত্তা, আস্থা ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার প্রতীক।’

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পুলিশের বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও জেলার পুলিশ সুপারগণ অংশগ্রহণ করেন। এ সময় পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

আজকের রাশিফল: মুখটা সামলে রাখুন, শত্রুরা ফেসবুক পোস্টে প্রচুর হা হা দেবে

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক বিকেলে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ০২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন কমিশনের সদস্যরা। আজ সোমবার বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

কমিশন সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশন সভাপতির সঙ্গে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে তৈরি করা সুপারিশের ড্রাফটের বিষয়ে আলোচনা হবে এই বৈঠকে। সভাপতির মতামতের ভিত্তিতে সুপারিশের খসড়ায় সংযোজন-বিয়োজন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায়ের পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ তৈরি করে পরে সরকারের কাছে জমা দেবে। অন্যদিকে খসড়ায় নতুন করে সংশোধনী না থাকলে আজই সেটি সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।

কমিশনের এক সদস্য বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তো কমিশনেরও সভাপতি। আমরা একটি সুপারিশ তৈরি করছি। সেখানে তো তাঁরও মতামত থাকবে। সে জন্য আজকে কমিশন সভাপতির সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।’

কমিশন সূত্র জানায়, সনদ বাস্তবায়নে কমিশন সুপারিশের যে রূপরেখা ঠিক করেছে, তাতে প্রথমে একটি আদেশ জারি করা হবে। গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ’ নামে এই আদেশ জারি করা হবে। তার অধীনে জারি হবে গণভোট-বিষয়ক একটি অধ্যাদেশ। এর ভিত্তিতেই হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যেই সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে। বাস্তবায়নের পুরো প্রক্রিয়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে উল্লেখ থাকবে।

আদেশ জারির পর এর কিছু অংশ তাৎক্ষণিক এবং কিছু কিছু বিষয় পরবর্তীকালে কার্যকর হবে। আদেশের কোন ধারা কবে কার্যকর হবে তা উল্লেখ থাকবে।

জুলাই সনদের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব আদেশের পরিশিষ্টে উল্লেখ থাকবে। তবে সেখানে কোনো দলের ভিন্নমতের বিষয় উল্লেখ থাকবে না। শুধু কমিশনের ৮৪টি প্রস্তাব অথবা সিদ্ধান্তের উল্লেখ থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

আজকের রাশিফল: মুখটা সামলে রাখুন, শত্রুরা ফেসবুক পোস্টে প্রচুর হা হা দেবে

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তথ্য উপদেষ্টার মন্তব্যে ‘বিভ্রান্তি দূর করতে’ অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ৫৬
তথ্য উপদেষ্টার মন্তব্যে ‘বিভ্রান্তি দূর করতে’ অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা পর্যন্ত উপদেষ্টা পরিষদ দায়িত্ব পালন করে যাবে এবং তাদের বৈঠকও নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে সরকারের দায়িত্ব পালনের মেয়াদ স্পষ্ট করা হয়।

গতকাল রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভা নভেম্বরেই শেষ হয়ে যাবে—বলে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মন্তব্য নিয়ে ‘বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ায়’ সরকার এই বিবৃতি দিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে দেওয়া তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জনাব মাহফুজ আলম উপদেষ্টা পরিষদের কার্যক্রম নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘বস্তুত, সরকারের গৃহীত সংস্কার ও নীতিমালা প্রণয়নের কাজ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে এটা সঠিক নয়, বরং সংস্কার কার্যক্রম পূর্ণোদ্যমে চলমান থাকবে। এ ছাড়া, উপদেষ্টা পরিষদ নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর না করা পর্যন্ত নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে যাবে এবং উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকও নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবে।’

এর আগে, গতকাল তথ্য উপদেষ্টা ডিআরইউতে বলেছিলেন, ‘সংস্কার কমিশন থেকে ২৩টি আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাব তোলা হয়েছে। মন্ত্রণালয় পর্যালোচনা করে ১৩টি প্রস্তাব বাস্তবায়ন করছে। নভেম্বরে কেবিনেট ক্লোজ হয়ে যাবে, যা করার আগামী মাসের মধ্যে করতে চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

আজকের রাশিফল: মুখটা সামলে রাখুন, শত্রুরা ফেসবুক পোস্টে প্রচুর হা হা দেবে

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: চূড়ান্ত ৪২৭৬১ ভোটকেন্দ্র, কক্ষ ২৪৪৬৪৯টি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ১৭
নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মোট ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব কেন্দ্রে মোট ভোটকক্ষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯। এর মধ্যে পুরুষের জন্য ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৭টি এবং নারীর জন্য ১ লাখ ২৯ হাজার ৬০২টি কক্ষ।

আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

সচিব আরও জানান, অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে ১৪টি এবং প্রায় ১২ হাজার অস্থায়ী ভোটকক্ষ থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

আজকের রাশিফল: মুখটা সামলে রাখুন, শত্রুরা ফেসবুক পোস্টে প্রচুর হা হা দেবে

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত