Ajker Patrika

জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ড

ক্ষমা চেয়ে রাজসাক্ষীর জবানবন্দিতে যা যা বললেন সাবেক আইজিপি মামুন

  • ২০১৪ সালের পর পুলিশ বাহিনীতে ব্যাপক রাজনৈতিক মেরুকরণ হয়
  • নির্বাচনের আগের রাতে ৫০ শতাংশ ব্যালট ভর্তি করার পরামর্শ দেন জাবেদ পাটোয়ারী
  • আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় প্রায়ই রাতের বেলায় বৈঠক বসত
  • প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তাদের দুটি গ্রুপ ছিল
  • র‍্যাবের অধীনে অনেকগুলো বন্দিশালা ছিল
  • র‍্যাবের মাধ্যমে কাউকে হত্যার নির্দেশ আসত প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে
  • ডিজিএফআইয়ের প্রস্তাবে সমন্বয়কদের আটক করা হয়
  • ডিবিপ্রধান হারুনকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘জিন’ বলে ডাকতেন
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২: ৩২
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি নেন রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ছবি: আজকের পত্রিকা
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি নেন রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন তিনি। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ তাঁর জবানবন্দি নেওয়া হয়। তাঁকে নিয়ে এ মামলায় ৩৬ জন সাক্ষ্য দিলেন।

জবানবন্দিতে সাবেক আইজিপি বলেন, ‘আমার ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। আমাকে প্রথমে দেড় বছর এবং পরে আরও এক বছর আইজিপি হিসেবে এক্সটেনশন দেওয়া হয়। আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য সিনিয়র অফিসারদের মধ্যে গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক গ্রুপিং ছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর পুনরায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে পুলিশ বাহিনীতে ব্যাপক রাজনৈতিক মেরুকরণ হয় এবং গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক বলয় তৈরি হয়। পুলিশ অফিসারেরা বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে এবং সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে পড়ে। এসব কারণে সিনিয়র অফিসারদের পক্ষে পুলিশকে কন্ট্রোল করার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে।’

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘২০১৮ সালে নির্বাচনের সময় আমি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ছিলাম। তখন আইজিপি ছিলেন জাবেদ পাটোয়ারী। আমি জানতে পারি, তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে ৫০% ব্যালট ভর্তি করে রাখার পরামর্শ দেন। সরকারের পক্ষ থেকে সে মোতাবেক ডিসি, এসপি, ইউএনও, এসিল্যান্ড, ওসি ও দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের সহযোগিতায় তা বাস্তবায়ন করা হয়। আর যেসব পুলিশ কর্মকর্তা এসব নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করে, তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে বিপিএম ও পিপিএম পদক প্রদানের মাধ্যমে পুরস্কৃত করা হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর পুলিশে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও প্রভাব আরও বৃদ্ধি পায়। কিছু কিছু পুলিশ কর্মকর্তা প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তাদের ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্তৃপক্ষ ও রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল।’

চৌধুরী মামুন আরও বলেন, ‘তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় প্রায়ই রাতের বেলায় বৈঠক বসত এবং তা গভীর রাত পর্যন্ত চলত। যেসব পুলিশ কর্মকর্তা ওইসব বৈঠকে অংশগ্রহণ করত, তাদের মধ্যে তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিবির অ্যাডিশনাল কমিশনার হারুন অর রশীদ, এসবির অ্যাডিশনাল আইজিপি মনিরুল ইসলাম, ঢাকার ডিআইজি নুরুল ইসলাম, অ্যাডিশনাল ডিআইজি বিপ্লব কুমার, অ্যাডিশনাল এসপি কাফি, ওসি মাজহার, ওসি ফরমান, ওসি অপূর্ব হাসানসহ আরও বেশ কিছু কর্মকর্তা ছিল। তাদের কারও কারও সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি যোগাযোগ ছিল। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকার কারণে এসব পুলিশ কর্মকর্তা চেইন অব কমান্ড মানত না। কিন্তু আমি চাইতাম যে, তারা পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুক। প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে মূলত দুটি গ্রুপ ছিল। একটি গ্রুপের নেতৃত্বে ছিল তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান এবং অন্য গ্রুপের নেতৃত্বে ছিল তৎকালীন এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলাম। তাঁরা চাইতেন তাঁদের নিজস্ব বলয়ের লোকজন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টিং পাক এবং ঢাকায় থাকুক।’

জবানবন্দিতে র‍্যাব নিয়ে যা বললেন সাবেক আইজিপি

চৌধুরী মামুন বলেন, ‘র‍্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় আমি জানতে পারি যে, র‍্যাবের হেডকোয়ার্টার কর্তৃক পরিচালিত উত্তরাস্থ র‍্যাব-১-এর কমপাউন্ডের ভেতরে টিএফআই সেল (টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন সেল) নামে একটি বন্দিশালা ছিল। অন্যান্য র‍্যাব ইউনিটের অধীনে আরও অনেকগুলো বন্দিশালা ছিল। এসব বন্দিশালায় রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী ও সরকারের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের আটক রেখে নির্যাতন করা হতো। যা একটি কালচারে পরিণত হয়েছিল। অপহরণ, গোপন বন্দিশালায় আটক, নির্যাতন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হত্যার মতো কাজগুলো র‍্যাবের এডিজি ও র‍্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালকেরা সমন্বয় করতেন। র‍্যাব কর্তৃক কোনো ব্যক্তিকে উঠিয়ে আনা, আটক রাখা কিংবা হত্যা করার নির্দেশনাগুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আসত বলে শুনেছি। নির্দেশনাগুলো প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ও সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকের মাধ্যমে আসত বলে জানতে পারি। এ নির্দেশনাগুলো চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করে সরাসরি এডিজি (অপস) ও র‍্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের (র‍্যাব ইন্ট) পরিচালকদের কাছে পাঠানো হতো।’

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আমি র‍্যাবের ডিজি হিসেবে যোগদানের সময় আমার পূর্ববর্তী র‍্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ আমাকে জানান যে, টিএফআই সেলে ব্যারিস্টার আরমান বন্দী আছে। আমি যোগদানের পরে র‍্যাব ইন্টের ডাইরেক্টর লেফটেনেন্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেমও আমাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। র‍্যাবের এডিজি (অপস) ও র‍্যাবের গোয়েন্দা বিভাগ (র‍্যাব ইন্ট) সাধারণত সেনাবাহিনীর অফিসার থেকে নিয়োগ করা হতো। টিএফআই সেলে ব্যারিস্টার আরমানের বন্দী থাকার বিষয়টি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকের নিকট একাধিকবার উপস্থাপন করি এবং এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানতে চাই। তিনি আমাকে পরে জানাবেন বলেন। কিন্তু পরে তিনি আর কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। আমি র‍্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিয়ে আসার সময় পরবর্তী মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেনকে ব্যারিস্টার আরমানের সম্পর্কে অবহিত করি।’

সাবেক আইজিপি আরও বলেন, ‘র‍্যাব কর্মকর্তাদের মধ্যে অ্যাডিশনাল এসপি আলেপ উদ্দিন ও এসপি মহিউদ্দিন ফারুকী নামের দুজন অফিসারকে আমি চিনতাম, যারা বন্দীদের অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার মতো কাজে বিশেষ পারদর্শী ছিল। আলেপ উদ্দিন প্রথমে নারায়ণগঞ্জে ছিল। পরে তাকে র‍্যাব ইন্টেলে পদায়ন করা হয়। আমি র‍্যাব ডিজির দায়িত্ব পালনের সময় র‍্যাবের ডাইরেক্টর ইন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম, লে. কর্নেল খাইরুল ইসলাম ও লে. কর্নেল মশিউর রহমান। এ ছাড়া এডিজি (অপস) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কর্নেল তোফায়েল, কর্নেল আজাদ ও কর্নেল কামরুল। আমার দায়িত্ব পালনকালে যদিও আমি র‍্যাব কর্তৃক মানুষকে বিনা বিচারে আটক, নির্যাতন ও কাউকে কাউকে ক্রসফায়ারে হত্যা করার মতো বিষয়গুলো জানতাম। কিন্তু আমি কোনো তদন্ত করিনি বা এগুলোর ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করিনি। এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্তগুলো বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে আসত এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে চেইন অব কমান্ড মানা হতো না।’

জুলাই আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড

চৌধুরী মামুন বলেন, ‘গত বছর জুলাই আন্দোলন শুরু হওয়ার পর দেশব্যাপী সেনা মোতায়েন হয়। এরপর ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতি রাতেই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির সরকারি বাসায় কোর কমিটির মিটিং হতো। সেখানে আমাদের আন্দোলন দমনসহ সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হতো। কোর কমিটিতে আমিসহ সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক) টিপু সুলতান, অতিরিক্ত সচিব রেজা মোস্তফা, এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, র‍্যাব ডিজি ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসারের ডিজি মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক, এনটিএমসির প্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, ডিজিএফআইয়ের প্রধান ও এনএসআই প্রধানেরা উপস্থিত থাকতেন।’

সাবেক আইজিপি বলেন, ‘কোর কমিটির একটি বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক করার সিদ্ধান্ত হয়। ডিজিএফআই ওই প্রস্তাব দেয়। আমি বিরোধিতা করেছিলাম। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে আমি রাজি হই। ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ডিজিএফআই ও ডিবি তাদের আটক করে ডিবি হেফাজতে নিয়ে আসে। তাদের ডিবি হেফাজতে এনে আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আপস করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তাদের আত্মীয়স্বজনকেও ডিবিতে নিয়ে এসে চাপ দেওয়া হয়। সমন্বয়কদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে টেলিভিশনে বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়। এ ব্যাপারে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ডিবিপ্রধান হারুনকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘‘জিন’’ বলে ডাকতেন। কারণ, সে সরকারের নির্দেশনা পালনে পারদর্শী ছিল। আন্দোলনের একপর্যায়ে হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের নজরদারি, তাদের অবস্থান নির্ণয় ও গুলি করে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করা হয়। হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। যার পরামর্শ দিয়েছিলেন তৎকালীন র‍্যাবের মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ। পরে আন্দোলন দমনে সরাসরি লেথাল উইপন ব্যবহার করে এবং আন্দোলনপ্রবণ এলাকাগুলো ভাগ করে ব্লকরেইড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

মামুন বলেন, ‘১৮ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আমাকে ফোন করে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলন দমনে সরাসরি লেথাল উইপন ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। তখন আমি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে উপস্থিত ছিলাম এবং আমার সামনে অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় জোয়ার্দার উপস্থিত ছিলেন। আমি প্রলয় জোয়ার্দারকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানালে তিনি রুম থেকে বের হয়ে ডিএমপি কমিশনারসহ সারা দেশে এই নির্দেশনা পৌঁছে দেন। ওই দিন থেকে লেথাল উইপন ব্যবহার করা শুরু হয়। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান তাঁর অধীনস্ত কর্মকর্তাদের লেথাল উইপন ব্যবহারের নির্দেশনা দেন। লেথাল উইপন ব্যবহারের বিষয়ে অতি উৎসাহী ছিলেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান এবং ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল, যেকোনো মূল্যে আন্দোলন দমন করতে হবে।’

চৌধুরী মামুন বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানক, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মির্জা আযম, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন প্রধানমন্ত্রীকে মারণাস্ত্র ব্যবহারে প্ররোচিত করতেন। সারা দেশে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে ১৫ জুলাই ওবায়দুল কাদের, নানক মন্তব্য করেন যে, আন্দোলন দমনের জন্য ছাত্রলীগ ও যুবলীগই যথেষ্ট। এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখন পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। ড্রোন, হেলিকপ্টার ও লেথাল উইপন ব্যবহার করে আন্দোলনরত অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে আহত ও নিহত করা হয়। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ক্যাডার বাহিনী ছাড়াও আন্দোলন দমনে সরকারকে উৎসাহিত করে আওয়ামীপন্থী বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও ব্যবসায়ীরা।’

শেখ হাসিনার পদত্যাগ যেভাবে

চৌধুরী মামুন বলেন, ‘৪ আগস্ট বেলা ১১টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নিরাপত্তা সমন্বয় কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তিন বাহিনীর প্রধান, এসবির প্রধান, ডিজিএফআইয়ের প্রধান, এনএসআইয়ের প্রধানসহ মোট ২৭ জন। আমি নিজেও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। ওই বৈঠকে আন্দোলন দমন ও নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পরিস্থিতির রিপোর্ট পেশ করছিল। ইতিমধ্যে চারদিকে পরিবেশ-পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়ায় বৈঠকটি মুলতবি করা হয়। ওই দিন রাতের বেলায় আমাদের আবার গণভবনে ডাকা হয়। সেখানে আমি, আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, র‍্যাবের ডিজি ও লে. জেনারেল মুজিব উপস্থিত ছিলাম। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। ডিজিএফআইয়ের প্রধান ও এসবির প্রধান মনিরুল বাইরে অপেক্ষমাণ ছিলেন। বৈঠকে ৫ আগস্ট আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ‘‘মার্চ টু ঢাকা’’ কর্মসূচি ঠেকানোর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে, পুলিশ ও সেনাবাহিনী সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করবে। এরপর আমরা আর্মির অপারেশন কন্ট্রোল রুমে যাই। সেখানে আমি, আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান, র‍্যাবের ডিজি, লে. জেনারেল মুজিব, ডিজিএফআইয়ের প্রধান ও এসবির প্রধান মনিরুল এবং ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত ছিলাম। সেখানে ঢাকা শহরের প্রবেশমুখগুলোতে ফোর্স মোতায়েন করে কঠোর অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।’

সাবেক আইজিপি বলেন, ‘৪ আগস্ট মিটিং শেষে রাত সাড়ে ১২টায় আমরা আর্মির অপারেশন কন্ট্রোল রুম থেকে চলে আসি। ৫ তারিখ সকালে আমি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে আমার দপ্তরে যাই। ইতিমধ্যে উত্তরা, যাত্রাবাড়ী ও বিভিন্ন পথ দিয়ে স্রোতের মতো ছাত্র-জনতা ঢাকা শহরে প্রবেশ করতে শুরু করে। দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টার দিকে জানতে পারি, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন। ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তিনি কোথায় যাবেন, তা আমরা জানতাম না। এরপর বিকেলবেলা আর্মির হেলিকপ্টার এসে আমাদের পুলিশ হেডাকোয়ার্টার্স থেকে প্রথমে তেজগাঁও বিমানবন্দরের হেলিপ্যাডে এবং সেখান থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের অফিসার্স মেসে নিয়ে যায়। হেলিকপ্টারে আমার সঙ্গে এসবির প্রধান মনিরুল, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও ডিআইজি আমেনা ছিলেন। পরের শিফটে অ্যাডিশনাল ডিআইজি প্রলয়, অ্যাডিশনাল আইজি লুৎফুল কবিরসহ অন্যদের সেখানে নেওয়া হয়। ৬ তারিখ আইজিপি হিসেবে আমার নিয়োগ চুক্তি বাতিল করা হয়। ক্যান্টনমেন্টে অবস্থানকালে ৩ সেপ্টেম্বর আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

চৌধুরী মামুনের ক্ষমাপ্রার্থনা

চৌধুরী মামুন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে সরকারের আদেশে আন্দোলনকারীদের ওপর অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে তাদের আহত ও নিহত করায় আমি পুলিশপ্রধান হিসেবে লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী। জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাসহ ব্যাপক নৃশংসতার জন্য আমি অপরাধবোধে ও বিবেকের তাড়নায় অ্যাপ্রুভার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ট্রাইব্যুনালে এসে স্বজন হারানো ব্যক্তিদের কান্না, আহাজারি, চিকিৎসা প্রদানে বাধা দেওয়া-সংক্রান্ত ডাক্তার ও ভিকটিমদের বক্তব্য, ভিডিওতে নৃশংসতাগুলো দেখে অ্যাপ্রুভার হওয়ার সিদ্ধান্ত আরও যৌক্তিক মনে হয়েছে। বিশেষ করে, হত্যা করার পর লাশগুলো একত্র করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার বীভৎসতা আমাকে ভীষণভাবে মর্মাহত করেছে।’

মামুন আরও বলেন, ‘আমি সাড়ে ৩৬ বছর পুলিশে চাকরি করেছি। পুলিশের চাকরি খুবই ট্রিকি। সব সময় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। চাকরি জীবনে আমার বিরুদ্ধে কখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। আমি সব সময় যথেষ্ট মানবিকতা ও সচেতনার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। চাকরিজীবনের শেষপর্যায়ে এসে এত বড় গণহত্যা আমার দায়িত্বকালে সংঘটিত হয়েছে, তার দায় আমি স্বীকার করছি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে এই গণহত্যা সংঘটিত হয়। আমি গণহত্যার শিকার প্রতিটি পরিবার, আহত ব্যক্তিবর্গ, দেশবাসী ও ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’ এ সময় তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমাকে দয়া করে ক্ষমা করে দিবেন। আমার এই সত্য ও পূর্ণাঙ্গ বর্ণনার মাধ্যমে সত্য উদ্‌ঘাটন হলে আল্লাহ যদি আমাকে আরও হায়াত দান করেন, বাকি জীবন কিছুটা হলেও অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কমিশনের বৈঠক

আগামী সংসদে উচ্চকক্ষের সুপারিশ থাকতে পারে

  • সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছে কমিশন।
  • আদেশে ভিন্নমতের উল্লেখ থাকবে না।
  • চূড়ান্ত সুপারিশ আজ প্রধান উপদেষ্টার কাছে যেতে পারে।
তানিম আহমেদ, ঢাকা 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গণভোটের পর সংবিধান সংস্কার পরিষদে বাস্তবায়ন আদেশ পাস হয়ে গেলে আগামী সংসদেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠনের সুপারিশ থাকতে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। নতুন সংসদ নির্ধারিত ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, সে বিষয়েও একটি বিকল্প ভাবা হচ্ছে।

সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশের খসড়া তৈরির কাজ গতকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে। প্রস্তাবিত সময়ের মধ্যে নতুন সংসদ সংস্কার বাস্তবায়ন না করলে করণীয় কী হবে, তা গতকাল রাত বা আজ (সোমবার) সকালের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে। আজ সকালে কমিশনের আবার বৈঠকের মাধ্যমে সুপারিশ চূড়ান্ত করে দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।

সনদ বাস্তবায়নে কমিশন সুপারিশের যে রূপরেখা ঠিক করেছে, তাতে প্রথমে গণ-অভ্যুত্থানকে ভিত্তি ধরে প্রথমে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন (সংবিধান সংস্কার) আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করা হবে। তার অধীনে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে করা হবে গণভোট। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (২৭০ দিন বা প্রথম ৯ মাস) আগামী সংসদ কাজ করবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে। এ সময়ের মধ্যেই সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংসদে অনুমোদন করা হবে।

কমিশন সূত্র জানায়, বাস্তবায়নের এই পুরো প্রক্রিয়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে উল্লেখ থাকবে। আদেশ জারির পর এর কিছু অংশ তাৎক্ষণিকভাবে এবং কিছু কিছু বিষয় পরবর্তী সময়ে কার্যকর হবে। আদেশের কোন ধারা কবে কার্যকর হবে, তা উল্লেখ থাকবে। জুলাই সনদের সর্বসম্মত ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব আদেশের পরিশিষ্টে উল্লেখ থাকবে। সেখানে কোনো দলের ভিন্নমতের উল্লেখ থাকবে না।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘আমরা সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করেছি। কমিশন আশা করছে, আগামীকালের (আজ সোমবার) মধ্যে সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া সম্ভব হবে।’

দ্বিকক্ষের সংসদ নিয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হলেও গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিমত আছে। বিএনপিসহ সমমনা কয়েকটি দল নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনের পক্ষে। অন্যদিকে জামায়াত, এনসিপিসহ সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দল পিআর ভোটের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের দাবি জানিয়েছে। আবার জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ ইসলামপন্থী কয়েকটি দল ‍উভয় কক্ষেই পিআরের ভিত্তিতে ভোট চেয়েছে। একাধিক সূত্র বলছে, বিএনপি পিআরে উচ্চকক্ষ মানলে নিম্নকক্ষের পিআরের দাবি থেকে দলগুলো সরে যাবে। বিষয়টি আদেশে আলাদা করে রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বৈঠক সূত্র জানায়, গণভোটে যদি সনদ বেশি ‘হ্যাঁ’ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়, তাহলে আগামী সংসদে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন বাধ্যতামূলক হবে। সে ক্ষেত্রে বিষয়টি আদেশে আলাদা করে লেখা থাকবে। সংবিধান সংস্কার পরিষদেও সংস্কার প্রস্তাব পাস হলে এর পরের ১৫ দিনের মধ্যে দলগুলো তাদের উচ্চকক্ষের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে।

আগামী সংসদ ২৭০ দিনের মধ্যে সনদ বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, সে বিষয়ে কমিশন নানা বিকল্প নিয়ে আলোচনা করেছে। গতকাল বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন, গণভোটে সংস্কার প্রস্তাবগুলো পাস হলে আগামী সংসদে সেগুলো বাস্তবায়ন করা বাধ্যতামূলক হবে। কমিশন এটিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। এর বাইরে কোনো নিশ্চয়তা বিধান করা যায় কি না, তা-ও কমিশনের বিবেচনায় আছে।

সংসদ বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘জুলাই সনদ যেহেতু রাজনৈতিক দলিল, তাই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। রাজনীতিকদের ওপর আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে হবে।’

কমিশনের পক্ষ থেকে আদেশের সঙ্গে বিকল্প একটি প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে। কমিশন সরকারকে গণভোট নিয়ে একটি আইন তৈরি করতে বলার কথা ভেবেছে। এতে সনদের সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো থাকবে। সে ক্ষেত্রে সব প্রস্তাবের সমন্বয়ে একটি আইন বানাতে হবে। গণভোটে এটা উঠবে। সমন্বিত আইনটি পাস হয়ে গেলে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান পরিষদ পুরো বাস্তবায়ন না করতে পারলেও আইনটি সংবিধানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে যাবে। তবে কমিশনের এই প্রস্তাবে বিশেষজ্ঞদের সায় নেই বলে জানা গেছে।

এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘কমিশনের বিকল্প প্রস্তাবে বিষয়টি থাকবে। তবে আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় আমরা এটা সমর্থন করিনি।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ অনুমোদন করেন কি না’ এবং ‘সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়ন চান কি না’—গণভোটে এ রকম প্রশ্ন রাখার কথা বিবেচনা করছে ঐকমত্য কমিশন। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে ঐকমত্য কমিশন যেভাবে সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে, সেভাবেই বাস্তবায়িত হবে। এখানে কোনো দলের ভিন্নমত গুরুত্ব পাবে না।

গণভোটের বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য থাকলেও গণভোট কবে হবে, এর ভিত্তি কী হবে, ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, এসব ক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে মতবিরোধ আছে। ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, গণভোটের দিন-তারিখ কবে হবে এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ রাষ্ট্রপতি, নাকি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জারি করবেন, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গতকাল তাদের সংসদ ভবনের কার্যালয় থেকে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করে। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যুক্ত হন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন। আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। জাতীয় ঐকমত্য গঠনপ্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও সভায় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সহকারী উপজেলা-থানা ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সহকারী উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সহকারী উপজেলা ও থানা ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সম্প্রতি আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) উপজেলা বা থানা বা সমমান ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আশফাকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

এরপর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গাজীপুর সদর উপজেলার সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলমকে সভাপতি এবং গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শরীফ আল রায়হানকে মহাসচিব করা হয়েছে।

এ ছাড়া কমিটিতে আরও যাঁরা যাঁরা আছেন—

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক

গ্রাহকপ্রতি সিম কার্ডের সংখ্যা ১০টিতে নামছে এ মাসেই, নির্বাচনের আগে আরও কমানোর চিন্তা

  • বৈঠকে নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা।
  • ৩০ অক্টোবর থেকে এক এনআইডির বিপরীতে সিম রাখা যাবে ১০টি।
  • নির্বাচনের আগে ব্যক্তিপর্যায়ে সিমের সংখ্যা আরও কমানোর চেষ্টা হবে।
  • স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ ও পদায়ন করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ৩৯
আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) ঢাকায় আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৫তম সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: পিআইডি
আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) ঢাকায় আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১৫তম সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: পিআইডি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার গ্রাহকপ্রতি মোবাইল সিম কার্ডের সংখ্যা কমিয়ে আনার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার দুপুরে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। বৈঠকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী একজন গ্রাহক তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে সর্বোচ্চ ১৫টি মোবাইল সিম নিবন্ধন করতে পারেন। ৩০ অক্টোবরের পর একটি এনআইডির বিপরীতে সিম নিবন্ধনের সংখ্যা ১০টিতে নামিয়ে আনা হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গ্রাহকপ্রতি সিমের সংখ্যা আরও কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, কোনো ঘটনা ঘটার পর দেখা যায়, সিমটি সেই ব্যক্তির নামে নিবন্ধন করা নয়। একজনের নামের সিম কার্ড অন্যজন ব্যবহার করে অপরাধ করে। এতে প্রকৃত দোষী ব্যক্তি অনেক সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। এ জন্য নির্বাচনের আগে ব্যক্তিপর্যায়ে নিবন্ধন করা সিম কার্ড কমিয়ে আনা হবে।

নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আপত্তি আসেনি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আগেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোতে নিয়োগ ও পদায়নের ক্ষেত্রে কোনো পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি। কারও বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ ও পদায়ন করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি নির্বাচন সুষ্ঠু ও ভালোভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির এ বৈঠকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয় উঠেছে। দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতকারীদের কর্মকাণ্ড রোধ, জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলার রেকর্ড, তদন্ত অগ্রগতি, দেশে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী উসকানিমূলক সাইবার প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।

এ ছাড়া মাদকের অপব্যবহার রোধ, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিনপরবর্তী সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও প্রতিরোধ, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনগুলোর অপতৎপরতা রোধ, পোশাক কারখানা–ওষুধশিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির তৎপরতা রোধ, অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান, সীমান্ত ও পার্বত্যাঞ্চল পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ নিয়েও আলোচনা হয়।

ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীর্ষ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ৩০ অক্টোবর ইসির মতবিনিময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নির্বাচন কমিশন। ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচন কমিশন। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ মতবিনিময় ও প্রস্তুতিমূলক সভা ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বেলা ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।

আজ রোববার সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো সভার চিঠি থেকে জানা যায়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সভাটি অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত থাকবেন।

চিঠিতে বলা হয়, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় ও প্রাক-প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হবে।

ইসির চিঠি অনুযায়ী, অন্তত ৩১ জন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাকে সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রিত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন—মন্ত্রিপরিষদসচিব; স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, নৌপরিবহন, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব; পররাষ্ট্র, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (সমন্বয় ও সংস্কার), অর্থ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবেরা। এর পাশাপাশি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিবকেও বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর নির্বাহী পরিচালক বা উপযুক্ত কোনো কর্মকর্তাকে সভায় পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ডাক অধিদপ্তর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এবং কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস), ঢাকাকেও সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

এর আগে ২০ অক্টোবর ইসি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেছে।

কমিশন গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে। এর অংশ হিসেবে ২৮ সেপ্টেম্বর নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয় এবং একই দিন শিক্ষকদের সঙ্গেও আলোচনা করে ইসি। সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গেও আরও সংলাপ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছে কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা ফেসবুকে প্রকাশ, বাস্তবেও ঘটল তাই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত