Ajker Patrika

তারেক রহমান দেশে আসতে চাইলে এক দিনে ট্রাভেল পাস দেবে সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৭
অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ফাইল ছবি
অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে আসতে চাইলে এক দিনে ট্রাভেল পাস দেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

আজ রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন উপদেষ্টা। ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক‍্যাব) দেশের পররাষ্ট্রনীতি ও পরিবর্তনশীল বিশ্ব নিয়ে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

উপদেষ্টা বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আইনি বা প্রশাসনিক বাধা নেই। তিনি দেশে ফিরতে চাইলে তাঁকে অত্যন্ত দ্রুততম সময়ের মধ্যে, এমনকি এক দিনের ব‍্যবধানে ট্রাভেল পাস দেওয়ার ব‍্যবস্থা করা সম্ভব।

এ সময় সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গও আলোচনায় উঠে আসে। উপদেষ্টা জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি যদি বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে চান, তবে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।

উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান এক ফেসবুক পোস্টে জানান, দেশে ফেরার ব্যাপারটি তাঁর হাতে নেই। মায়ের এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে পাশে থাকার ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে তারেক রহমান বলেন, ‘এমন সংকটকালে মায়ের স্নেহ স্পর্শ পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যেকোনো সন্তানের মতো আমারও রয়েছে।’

দেশে ফেরা নিয়ে রাজনৈতিক বাস্তবতার ইঙ্গিত দিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘কিন্তু অন্য আর সকলের মতো এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। স্পর্শকাতর এই বিষয়টি বিস্তারিত বর্ণনার অবকাশও সীমিত।’

এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফেসবুকে লেখেন, ‘জনাব তারেক রহমানের আজকের বক্তব্য যে এখনই দেশে ফেরার বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ তাঁর জন্য অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়, এটা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জনাব শফিকুল আলমের কাছে জানতে চাওয়া হয় যে তাঁর বাংলাদেশ প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে কোন ধরনের বিধি নিষেধ রয়েছে কিনা।’

পোস্টে উল্লেখ করা হয়, ‘প্রেস সচিব জানান যে, এ ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে কোন বিধিনিষেধ অথবা কোন ধরনের আপত্তি নাই। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ইতিমধ্যে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আইআরআইয়ের জরিপ: ড. ইউনূসের কাজে সন্তুষ্ট ৬৯% মানুষ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি

দেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যক্রম নিয়ে একটি জরিপ চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) সেন্টার ফর রাইটস। এই জরিপে উঠে এসেছে, ৬৯ শতাংশ মানুষ প্রধান উপদেষ্টার কাজে সন্তুষ্ট। আর ৭০ শতাংশ মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারের কাজে সন্তুষ্ট।

গতকাল সোমবার এই নিয়ে একটি প্রতিবেদন আইআরআইয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। আইআরআইয়ের চালানো এই জরিপে আরও বেশ কিছু বিষয় উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য আগ্রহ নিয়ে করছেন। ৬৬ নাগরিক জানিয়েছেন, তাঁরা এই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার বিষয়ে বেশি আগ্রহী। ২৩ শতাংশ নাগরিকের ভোট দেওয়ার খানিকটা আগ্রহ রয়েছে। আর ৮০ শতাংশ মানুষ মনে করছেন, এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।

এ প্রসঙ্গে আইআরআইয়ের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক জোহান্না খাও বলেন, এটা পরিষ্কার যে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাঁর এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা দেশের স্থিতিশীলতা, জবাবদিহি ও সংস্কারের জন্য ব্যাপক আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।

আইআরআই জানিয়েছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত এই জরিপ চালানো হয়েছে। রাঙামাটি বাদে অর্থাৎ ৬৩ জেলায় এই জরিপ চালানো হয়েছে। ৪ হাজার ৯৮৫ জন প্রাপ্তবয়স্ক এই জরিপে অংশ নিয়েছেন। জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে ২ হাজার ৪১০ জন পুরুষ এবং ২ হাজার ৫৭৫ জন নারী। জরিপে শহর ও নগর এলাকার ১ হাজার ৫৭৭ জন এবং প্রান্তিক এলাকার ৩ হাজার ৪০৮ জন অংশ নিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি: ২৮ বছরেও হয়নি পূর্ণ বাস্তবায়ন

  • চুক্তির মূল স্পিরিট ছিল ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ।
  • জেলা পুলিশ ও ভূমি দপ্তর জেলা পরিষদে হস্তান্তর হয়নি।
  • চুক্তি বাস্তবায়নে দেরি হওয়ায় অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন।
হিমেল চাকমা, রাঙামাটি 
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি। সেই চুক্তির বয়স ২৮ বছর হলেও আজও পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি চুক্তিটি। চুক্তি অনুযায়ী রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান জেলা পরিচালিত হবে পার্বত্য চুক্তির আলোকে। চুক্তির আলোকে গঠিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ। সংশোধন করা হয় তিন পার্বত্য (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান) জেলা পরিষদ।

চুক্তিতে উল্লেখ আছে, তিন পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দাদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের একজন করে চেয়ারম্যান এবং ৩৩ জন করে সদস্য। নির্বাচিত জেলা পরিষদের সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের একজন চেয়ারম্যান এবং ২২ জন সদস্য। ২৫ সদস্যের আঞ্চলিক পরিষদে পদাধিকারবলে সদস্য হবেন তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।

পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর সব কার্যক্রম সমন্বয় করে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করবে আঞ্চলিক পরিষদ। জেলা ও আঞ্চলিক পরিষদের পক্ষ হয়ে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করবে পার্বত্য মন্ত্রণালয়। পার্বত্য চুক্তির আলোকে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, সমবায়, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ইত্যাদি ২৮টির বেশি দপ্তর হস্তান্তর করা হয়। যেগুলো আগে জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

পার্বত্য চুক্তিমতে, জেলা পুলিশ এবং ভূমি দপ্তরটি জেলা পরিষদে হস্তান্তরের কথা থাকলেও এখনো তা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করে পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও চুক্তির ২৮ বছরে তা করা হয়নি। যে সরকার আসে, সেই সরকারের মনোনীত ব্যক্তিদের দিয়ে চালানো হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন জেলা পরিষদ। ফলে এসব সদস্যের কাছে সাধারণ মানুষের দাবিদাওয়ার চেয়ে দলীয় দাবিদাওয়া গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়।

রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য হাবিব আজম বলেন, ‘জেলা পরিষদগুলো শক্তিশালী নয়। শক্তিশালী করতে হলে নির্বাচনটা জরুরি। ৩৪ সদস্য কাঠামোর জেলা পরিষদ চলছে মাত্র ১৫ জন দিয়ে। এটি যথেষ্ট নয়। আমরা নির্বাচিত সদস্য না হওয়ায় সিদ্ধান্ত নিতে অনেক কিছু ভাবতে হয়। পাহাড়ের সমস্যা সমাধানে আমাদের ভাবতে হবে।’

পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও গবেষক তনয় দেওয়ান বলেন, ‘শিক্ষিত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্ষমতার দ্বন্দ্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিভিন্ন সংকট বিরাজমান রয়েছে। প্রকৃত বঞ্চিত অংশকে ক্ষমতায়ন করা হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সুফল পাওয়া যাবে। না হলে এই সংকট যুগ যুগ ধরে চলমান থাকবে।’

এদিকে চুক্তি বাস্তবায়নে দেরি হওয়ায় এর অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। পার্বত্য চুক্তির বৈধতার চ্যালেঞ্জ করে ২০০০ সালে মো. বদিউজ্জামান এবং ২০০৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তাজুল ইসলাম পৃথক রিট আবেদন করেন। এ দুটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালে ১২ ও ১৩ এপ্রিল হাইকোর্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন। পরে হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে সরকার ২০১০ সালেই আপিলের জন্য আবেদন করলে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ৩ মার্চ আপিল বিভাগ সরকারের আপিলের অনুমতি গ্রহণ করেন। এরপর থেকে এটি আপিল বিভাগে বিচারাধীন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নিকোলাস চাকমা বলেন, ‘হাইকোর্ট চুক্তিকে বৈধ বলেছেন, অপরদিকে আঞ্চলিক পরিষদকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেছেন। এ রায় আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করেছে। এখন আপিল বিভাগ যেকোনো সময় রায় দিতে পারেন। এটি চুক্তির পক্ষে বা বিপক্ষেও যেতে পারে। এই অবস্থায় ভবিষ্যতে পার্বত্য চুক্তি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটা দেখার বিষয়।’

১৯৯৮ সালে পার্বত্য জেলা পরিষদ ৫ সদস্যবিশিষ্ট থাকলেও ২০১৫ সালে এর পরিধি বাড়িয়ে করা হয় ১৫ সদস্য; যা বর্তমানেও বিদ্যমান রয়েছে।

১৯৭৫ পরবর্তী বিভিন্ন সময় সরকার সমতল অঞ্চল থেকে বাঙালি এনে বসতি নির্মাণের কারণে যে ভূমি বিরোধ সৃষ্টি হয়, তা নিরসনে করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন, ২০০১। পরে ২০১৬ সালে এটি সংশোধন করা হলেও এই কমিশন নিষ্পত্তি করতে পারেনি কোনো ভূমি বিরোধ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ঊষাতন তালুকদার বলেন, ‘চুক্তি পরবর্তী ২টি দলীয় সরকার এবং দুটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব পালন করলেও কোনো সরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিয়ে এগিয়ে আসেনি। এই সরকার এবং আগামী সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে, তারা পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে যেন এগিয়ে আসে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি

সন্ত্রাসীদের সক্রিয়তায় উদ্বেগ পরোয়া করছে না পুলিশ

  • সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর দ্বন্দ্বে একের পর এক খুন। গত রোববার খুলনায় দুজনকে প্রকাশ্যে হত্যা।
  • সীমান্তের বিভিন্ন পথে অবৈধ অস্ত্র-গুলি ঢুকছে। গত শনিবার যশোরে জব্দ অস্ত্র-গুলি।
শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা 
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

শীর্ষ সন্ত্রাসীদের হঠাৎ সক্রিয়তা, অপরাধীদের দ্বন্দ্বের জেরে খুনোখুনি, সীমান্ত পথে আসা অবৈধ অস্ত্র-গুলির কয়েকটি চালান জব্দের ঘটনা সাধারণ মানুষকে নতুন করে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। গত বছরের ৫ আগস্ট দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে পাঁচ শতাধিক অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি। ফলে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

অবশ্য পুলিশ বলছে, নির্বাচনে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা কোনো হুমকি নয়। তারা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছাড়া কিছু করতে পারবে না। তবে পুলিশ সদর দপ্তরের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এক নির্বাচনে ভোটারদের ভয় দেখানো, প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর হামলা এবং ফলাফল প্রভাবিত করতে অপরাধী চক্রগুলোকে ভাড়াটে পেশিশক্তি হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

এদিকে সরকারের সূত্র বলছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই সারা দেশে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলদার, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হবে।

জামিনে মুক্তি পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা নির্বাচনে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম গত শনিবার সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, জামিনে বের হওয়া সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছাড়া আর কিছু করতে পারবে না। পারলে এত দিনে অনেক কিছুই করে ফেলত।

নির্বাচনে তারা কোনো হুমকি নয়। পুলিশ তাদের পরোয়া করে না।

চট্টগ্রামে গত ৫ নভেম্বর বিএনপির প্রার্থীর গণসংযোগে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন বাবলাকে, ১০ নভেম্বর রাজধানীতে আদালতপাড়ার কাছে শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে এবং গতকাল রোববার খুলনায় আদালতের ফটকের বাইরে প্রকাশ্যে দুজনকে হত্যা অপরাধী চক্রের দ্বন্দ্বে খুনোখুনিকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে। বাবলা ও মামুন হত্যাকাণ্ডে অভিযোগের তির প্রতিপক্ষ শীর্ষ সন্ত্রাসীর দিকে। খুলনায় গুলি করে ও কুপিয়ে দুজনকে হত্যাও সন্ত্রাসীদের দ্বন্দ্বের জের।

খুলনায় গতকাল নিহত ফজলে রাব্বি রাজন ও হাসিব হাওলাদারের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ছয়টি করে মামলা ছিল। খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, নিহত দুজনই সন্ত্রাসী পলাশ গ্রুপের সহযোগী ছিলেন এবং আড়াই মাস আগে জামিনে কারাগার থেকে বের হন।

ঢাকার পল্লবীতে ১৭ নভেম্বর থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়াকে দোকানে ঢুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর পেছনেও রয়েছে অপরাধী চক্রের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা। মুন্সিগঞ্জের সদর উপজেলার চরাঞ্চলে বিএনপির দুই পক্ষের সমর্থককে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র বলছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর কারাগার থেকে আলোচিত ১৭৪ জন আসামি মুক্তি পায়। তাদের মধ্যে ১১ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় রয়েছে। জামিনের পর তাঁদের অনেকে লাপাত্তা। জামিনে মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন সুইডেন আসলাম, সানজিদুল ইসলাম ইমন, পিচ্চি হেলাল, আব্বাস আলী, টিটন, ফ্রিডম রাসু। এ ছাড়া বিদেশ থেকে ফেরা কেউ কেউ এলাকা নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি ও পুরোনো অনুসারীদের সক্রিয় করে তুলছে। বড় সন্ত্রাসীদের পাশপাশি তাদের সহযোগীরাও সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

সূত্রগুলো বলছে, সুব্রত বাইন গ্রেপ্তারের পর জিসান গ্রুপ মগবাজার থেকে মহাখালী পর্যন্ত এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। ইমনের সহযোগীরা মোহাম্মদপুর-ধানমন্ডি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে।

চট্টগ্রামের পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী ওরফে বড় সাজ্জাদ বিদেশে বসে অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণ করছেন। গত বছরের আগস্ট থেকে ১০টি হত্যাকাণ্ডে সাজ্জাদ গ্রুপের সংশ্লিষ্টতার তথ্য রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে সরোয়ার বাবলা ও আকবর হত্যাকাণ্ডও রয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সম্প্রতি বলেছেন, জামিনে থাকা কোনো অপরাধী নতুন করে অপরাধ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী দাবি করেছেন, ঢাকার অপরাধ পরিস্থিতি আগের তুলনায় নিয়ন্ত্রণে। ছিনতাই ও দিনেদুপুরে হামলা কমেছে। পুলিশ আইনশৃঙ্খলা বজায় রেখেছে।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সূত্র বলছে, সীমান্তের কমপক্ষে ১৮টি স্থান দিয়ে চোরাচালানের অস্ত্র-গুলি ঢুকছে। এর মধ্যে বেশি আসছে টেকনাফ, বেনাপোল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর ও মেহেরপুর দিয়ে। মাঝে মাঝে অস্ত্রের চালান জব্দও করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সর্বশেষ গত শনিবার যশোরে জব্দ করা হয়েছে ৫টি বিদেশি পিস্তল ও ৫০টি গুলি। সীমান্তপথে আসা এসব অস্ত্র-গুলি জব্দ করেছে যশোরের জেলা ডিবি পুলিশ। সূত্র বলেছে, এগুলোর গন্তব্য ছিল কক্সবাজার।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র বলছে, গত বছরের ১ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত র‍্যাব ২১৯টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে, গ্রেপ্তার করেছে ১১২ জনকে। বিজিবি সদর দপ্তর সূত্র জানায়, বছরের প্রথম ১০ মাসে উদ্ধার হয়েছে ১ হাজার ৩৭৭টি অস্ত্র।

গত বছরের ৫ আগস্ট থানাগুলো থেকে লুট হওয়া পুলিশের পাঁচ শতাধিক অস্ত্রের এখনো খোঁজ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, এগুলোর বড় অংশ অপরাধীদের হাতে রয়েছে।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ওমর ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, জামিনে মুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় আবার অপরাধে ফিরছে। শহরে গুলি করে হত্যা সেটার ইঙ্গিত বহন করছে। চিহ্নিত এই অপরাধীদের এখনই গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধার না করলে নির্বাচনের পরিবেশ শান্ত রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টিউলিপের সাজার খবর যুক্তরাজ্যসহ বিশ্ব গণমাধ্যমে যেভাবে এল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
টিউলিপের সাজার খবর যুক্তরাজ্যসহ বিশ্ব গণমাধ্যমে যেভাবে এল

পূর্বাচলে শেখ রেহানার প্লট দুর্নীতির মামলায় সোমবার ঢাকার আদালত যে রায় দিয়েছে, তা দেশের গণমাধ্যমের পাশাপাশি ছাপা হয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও। এই মামলায় ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকীকেও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর টিউলিপের মা রেহানার ৭ বছর, খালা শেখ হাসিনার ৫ বছর সাজা ঘোষণা করা হয়েছে।

পারিবারিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠার পর যুক্তরাজ্যে প্রতিমন্ত্রীর পদ খোয়ানো টিউলিপের এই সাজার রায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো ‘গুরুত্বের সঙ্গে’ ছেপেছে। তাঁর অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের আদালতে চলা বিচারের বিষয়টি সামনে এনেছে বিবিসি ও রয়টার্সসহ একাধিক সংবাদমাধ্যম।

টিউলিপের বিরুদ্ধে এ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি তাঁর মাকে পূর্বাচলে ১০ কাঠার প্লট পাইয়ে দিতে খালা সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে প্রভাবিত করেছেন। তবে এই অভিযোগসহ পারিবারিক সব দুর্নীতির অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছেন ব্রিটিশ লেবার এমপি টিউলিপ। বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে রায়কে ‘ত্রুটিপূর্ণ ও প্রহসনমূলক’ বলেছেন তিনি।

রায় ঘোষণার পর বিবিসি খবরের শিরোনাম করেছে, ‘টিউলিপ সিদ্দিক এমপি গিভেন জেইল সেনটেন্স ইন বাংলাদেশ আফটার ট্রায়াল ইন হার অ্যাবসেন্স’।

প্রতিবেদনে শুরুতে টিউলিপের অনুপস্থিতির বিষয়টিসহ রায়ের তথ্য লেখা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এরপর মামলার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে টিউলিপ যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি তুলে ধরা হয়েছে।

বিবিসি লিখেছে, ‘লন্ডনে বাস করা টিউলিপ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং তাঁর সাজা খাটার সম্ভাবনাও নেই। এই লেবার এমপি বলেছেন, বিচারপ্রক্রিয়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ ও প্রহসনমূলক।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্স শিরোনাম করেছে ‘ইউকে ল মেকার টিউলিপ সিদ্দিক হ্যান্ডেড জেইল সেনটেন্স ইন অ্যাবসেনশিয়া ইন বাংলাদেশ গ্রাফট কেইস’।

প্রতিবেদনে রায়ের খবর পরই সিদ্দিকীর অভিযোগ অস্বীকারের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। টিউলিপ এক বিবৃতিতে এই বিচারকে ‘ত্রুটিপূর্ণ ও প্রহসনমূলক’ বলেছেন, লিখেছে রয়টার্স। প্রতিবেদনে টিউলিপের বক্তব্যে লেখা হয়েছে, ‘এই ক্যাঙারু কোর্টের ফলাফল যেমন অনুমেয়, তেমনি অযৌক্তিকও।’

লেবার পার্টির একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, ‘যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার সুযোগ পাননি টিউলিপ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর বিস্তারিতও তাঁকে জানানো হয়নি। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলে তাঁকে আইনি প্রতিনিধি নিয়োগের সুযোগ দেওয়া উচিত। এই মামলায় সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমরা এই বিচার মানি না।’ বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের যে অপরাধী প্রত্যাবর্তন চুক্তি নেই, সে কথাও লেখা হয়েছে প্রতিবেদনে।

গার্ডিয়ান শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশ কোর্ট সেনটেন্সেস ইউকে এমপি টিউলিপ সিদ্দিক টু টু ইয়ার্স ইন প্রিজন ইন অ্যাবসেনশিয়া’।

প্রতিবেদনে রায়ের তথ্যের পর গার্ডিয়ান লিখেছে, টিউলিপের অনুপস্থিতিতেই বিচার চলেছে। সোমবার রায় ঘোষণার সময় হাসিনা, টিউলিপ, রেহানা এমনকি পরিবারের এক ডজনের বেশি সদস্যের কেউ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

গার্ডিয়ান লিখেছে, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের অপরাধী প্রত্যাবর্তন চুক্তি নেই এবং টিউলিপের সাজা খাটারও সম্ভাবনা নেই।’ লেবার পার্টি বলছে, টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতি সাজার রায়কে তারা স্বীকৃতি দিচ্ছে না। কারণ এ মামলায় তাঁকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি।

রায়ের পর টিউলিপ গার্ডিয়ানকে বলেন, এ রায়কে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু তিনি দেখছেন না। তিনি বলেন, পুরো প্রক্রিয়াটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ এবং প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ‘ক্যাঙারু কোর্টের’ ফলাফল যেমন অনুমানযোগ্য ছিল, তেমনি এটি অযৌক্তিক।

দ্য টেলিগ্রাফ শিরোনাম করেছে, ‘টিউলিপ সিদ্দিক সেনটেন্সড টু টু ইয়ার্স ইন প্রিজন ওভার করাপশন ইন বাংলাদেশ’।

তাদের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, প্রাক্তন এ লেবার প্রতিমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর মামলায় তাঁর কী দায়, সেটি লেখা হয়েছে। মামলার রায় সম্পর্কে টিউলিপ সিদ্দিকের বক্তব্যও স্পষ্ট করা হয়েছে।

টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, সোমবার রায় ঘোষণার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চিফ সেক্রেটারি ড্যারেন জোনস স্কাই ডটকমকে বলেন, ‘টিউলিপ এটি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। অনিয়মের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘যত দূর জানি, তিনি বাংলাদেশের এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে সফল হননি এবং এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি যতটা না আইনি, তাঁর চেয়ে বেশি রাজনৈতিক।’

এই ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকার টিউলিপকে সমর্থন দিচ্ছে কিনা, এই প্রশ্নে জোনস ‘সম্মতিসূচক মাথা নাড়েন’।

অপরদিকে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস শিরোনাম করেছে, ‘এক্স-ইউকে মিনিস্টির টিউলিপ সিদ্দিক রিসিভস টু-ইয়ার জেইল সেনটেন্স ইন বাংলাদেশ’।

প্রতিবেদনে রায়ের তথ্যের পর লেখা হয়েছে, আসামিদের অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকার ফলে রায় কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

ইনডিপেনডেন্ট তাদের শিরোনাম করেছে, ‘লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিক হ্যান্ডেড টু-ইয়ার প্রিজন সেনটেন্স ফর করাপশন ইন বাংলাদেশ’।

আসামিদের অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণার কথা তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট এমপি টিউলিপ তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর বাংলাদেশের সঙ্গে অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকার ফলে সাজা কার্যকরের সম্ভাবনাও নেই।

ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড শিরোনাম করেছে, টিউলিপ সিদ্দিক হিটস আউট অ্যাট ‘ফ্লড অ্যান্ড ফার্সিক্যাল’ করাপশন ভার্ডিক্ট অ্যাজ সি গেটস জেইল সেনটেন্স ইন বাংলাদেশ।

প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, দুর্নীতির মামলায় টিউলিপের অনুপস্থিতিতে চলা বিচারে তাঁর দুই বছরের সাজা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের আদালত। আদালতের আনা অভিযোগ ও সেটি প্রত্যাখ্যান করে টিউলিপের দেওয়ার বক্তব্যও তুলে ধরা হয়েছে।

ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড লিখেছে, সোমবার সকালে এই ব্রিটিশ এমপিকে তাঁর উত্তর লন্ডনের বাড়িতে দেখা গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার রায়কে ‘বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতি’ বলে বর্ণনা করেন তিনি।

সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এই রায় ঘোষণা করেন।

মামলার অভিযোগ ছিল, ঢাকা শহরে বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরেও ‘সেই তথ্য গোপন করে আইন ভেঙে দুর্নীতির মাধ্যমে’ শেখ রেহানা পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ নেন। শেখ হাসিনা ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করে বোনকে প্লট বরাদ্দে ‘সহায়তা’ করেন এবং টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর মা রেহানাকে প্লট পাইয়ে দিতে খালা শেখ হাসিনাকে ‘প্রভাবিত’ করেন।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে টিউলিপ বলে আসছেন, এগুলো ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর থেকে শেখ হাসিনা ভারতে নির্বাসিত আছেন। তাঁর বোন শেখ রেহানাও সে সময় তাঁর সঙ্গে যান। আর টিউলিপ যুক্তরাজ্যেই থাকেন। তাদের ‘পলাতক’ দেখিয়ে এ মামলার বিচার কাজ চলে। ফলে তাঁদের পক্ষে কোনো আইনজীবী মামলা লড়ার সুযোগ পাননি।

এর আগে গত মাসে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়। সেই রায়ের পর গত সপ্তাহে আরেকটি দুর্নীতির মামলায় তাঁকে আরও ২১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত