Ajker Patrika

১৪ কিমি উড়ালসড়ক: ১৫৩ কোটি টাকা ছাড়ের পর বাতিল হচ্ছে প্রকল্প

  • প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ছাড় হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা
  • অফিস, আউটসোর্সিং, বেতন ও যানবাহনে খরচ ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা
  • সাবেক রাষ্ট্রপতির অনুরোধে প্রকল্প গ্রহণ। পরিবেশগত ঝুঁকি বিবেচনায় হচ্ছে বাতিল
তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
আপডেট : ১১ জুন ২০২৫, ১৫: ৩৯
১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়ালসড়ক নির্মাণের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাতিল করেছে সরকার। ছবি: সেতু বিভাগ
১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়ালসড়ক নির্মাণের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাতিল করেছে সরকার। ছবি: সেতু বিভাগ

কিশোরগঞ্জে হাওরের নাকভাঙা থেকে মরিচখালী হয়ে মিঠামইন পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি দৃষ্টিনন্দন উড়ালসড়ক নির্মাণের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাতিল করেছে সরকার। কিন্তু তার আগেই প্রকল্পটির ১৫৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ছাড় হয়ে গেছে। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারিত হয়েছিল ৫ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা।

সেতু বিভাগের অধীনে চলমান, প্রক্রিয়াধীন এবং পরিকল্পনাধীন বৃহৎ প্রকল্পসংক্রান্ত একটি পর্যালোচনা সভা হয়েছে গত ২৭ এপ্রিল। সেই সভায় কিশোরগঞ্জ জেলার এই উড়ালসড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। ওই সভায় সভাপতির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ওই উড়ালসড়ক নির্মাণ প্রকল্প সম্পর্কে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ প্রকল্প গ্রহণের ফলে হাওর অঞ্চলের জলাভূমিতে বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা রয়েছে মর্মে পরিবেশবাদীরা সোচ্চার হয়েছেন বলে জানান তিনি।

প্রকল্প সূত্র বলছে, ২০২৩ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পে গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৩ শতাংশ। এটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত।

সেতু বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রকল্পের অর্থছাড় হয়েছে মোট ১৫৩ কোটি ৪৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য বরাদ্দ ছিল প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। বাকি প্রায় ৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে যানবাহন খরচ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, প্রকল্পের সাইট অফিস ভাড়া, আউটসোর্সিং জনবলের বেতন, আসবাব ও অন্যান্য অফিস সরঞ্জাম বাবদ।

কাজ না হলেও এত অর্থ খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পের ১৫৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে জমি অধিগ্রহণের টাকা আছে। যেহেতু জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়নি, সে জন্য টাকা রয়ে গেছে। ডিসি অফিস থেকে সেই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে, তার জন্য ডিসি অফিসকে আমরা চিঠি দিয়েছি।’

কেন প্রকল্প বাতিল হচ্ছে? এই বিষয়ে সেতুসচিব বলেন, পরিবেশগত ক্ষতির কারণে প্রকল্প বাতিল হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলে হাওরের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হবে। এ ছাড়া প্রকল্পটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ এ অঞ্চলের জন্য, তা বিবেচনায় নিয়ে জনস্বার্থে সরকার তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকল্পটি পুরোপুরি বাতিল করতে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আবদারে লাভজনক দেখিয়ে কিশোরগঞ্জের হাওরে ৫ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে উড়ালসড়ক প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল। যা পুরোপুরি সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।

প্রকল্প গ্রহণের আগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) দিয়ে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সমীক্ষাও করা হয়েছিল। সমীক্ষায় বলা হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সেতু কর্তৃপক্ষের জন্য লাভজনক হবে। ২০৩০ সালে প্রতিদিন ২৫ হাজার ৭০৮ যানবাহন চলাচল করবে। বাস চলবে ১ হাজার ৩৮২টি। মোট ২৬ হাজার যানবাহন চলবে। তবে উদ্বোধনের চার বছর পর অল্প কিছু মোটরসাইকেল, অটোরিকশা চলবে।

বাস্তবতা হলো, লাভ তো দূরে থাক, হাওরের বুক চিরে নির্মিত সড়কটি বন্যা এবং পরিবেশগত সংকট সৃষ্টির কারণ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে প্রকল্পটি অন্তর্বর্তী সরকার বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রকল্পটি বাতিলে সরকারের যুক্তির সঙ্গে পুরোপুরি একমত নন উড়ালসড়কের নকশার পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত থাকা বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান। তিনি আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের সঙ্গে ইটনা ও অষ্টগ্রামকে যুক্ত করতে এলজিইডি সড়ক নির্মাণের কাজ করছে। এতে ওই অঞ্চলে যানবাহনের সংখ্যা বাড়বে, তাই কিশোরগঞ্জের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ দরকার হবে। এই কারণে উড়ালসড়কটি গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর হবে। হাওরের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, তা মাথায় রেখেই পিলারের স্থান নির্ধারণসহ পুরো নকশা করা হয়েছে। আমরা পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছি সম্পূর্ণ টেকনিক্যাল ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। সরকারের প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমরা পুরোপুরি একমত নই, কারণ এটি কোনো এমবেটমেন্ট সড়ক নয়, বরং খুঁটির ওপর নির্মিত একটি উড়ালসড়ক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মানবতাবিরোধী অপরাধ: জয়সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দেওয়া হবে শিগগির

এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা  
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে (গত বছরের জুলাই-আগস্ট) সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ চারজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। প্রসিকিউশন এই প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করে কয়েক দিনের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করবে।

তদন্ত প্রতিবেদনে নাম থাকা অপর তিনজন হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শেখ হাসিনার সাবেক বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

জানতে চাইলে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা চার-পাঁচজনের তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। যাচাই-বাছাই চলছে। আগামী সপ্তাহে এসব আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আকারে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করতে পারব বলে আশা করছি।’

জানা গেছে, ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিলে এর মধ্য দিয়ে মামলার বিচারকাজ শুরু হবে।

ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (বরখাস্ত) জিয়াউল আহসানের বিষয়ে তদন্ত শেষ দিকে রয়েছে। শিগগির তাঁর বিষয়ে প্রতিবেদন জমা হলে যাচাই-বাছাই করে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে।

সূত্র জানায়, আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে গত বছরের জুলাই-আগস্টে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডে উসকানি, সহযোগিতা, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয় ও জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে ইন্টারনেট বন্ধ করা, হতাহতের তথ্য গোপন ও হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হচ্ছে। গুম-খুনের অভিযোগ আনা হচ্ছে জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে।

প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সজীব ওয়াজেদ জয়, জুনাইদ আহমেদ পলক, সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে প্রসিকিউশন। এসব যাচাই-বাছাই চলছে। আগামী সপ্তাহে দাখিল করার আশা করা হচ্ছে। তবে জিয়াউল আহসানের বিষয়টি পরের ধাপে আসবে। সেটিও দ্রুত হাতে পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ে গত ১৭ নভেম্বর শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। অপর আসামি ও পরে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে দুটি ট্রাইব্যুনালে আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানো, চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ড, রংপুরে আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড, রামপুরায় হত্যাকাণ্ড ও কুষ্টিয়ায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। অভিযোগ গঠনের পর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য রয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে করা মামলা।

অভিযোগ গঠনের জন্য রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ সাবেক-বর্তমান বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলা। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে রামপুরায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুই সেনা কর্মকর্তাসহ চারজনের বিরুদ্ধে করা মামলাও অভিযোগ গঠনের জন্য রয়েছে। তদন্ত চলছে শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড, জাহাজবাড়িতে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে হত্যাকাণ্ড, গুম-নির্যাতন, উত্তরায় হত্যাকাণ্ড, গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে হৃদয় হত্যাকাণ্ড, মহাখালী-তেজগাঁওয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলার।

এ ছাড়া কক্সবাজারে কাউন্সিলর একরাম হত্যা, চট্টগ্রামে ওয়াসিম হত্যাসহ রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, রাজশাহী ও লক্ষ্মীপুরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা পৃথক মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলছে বলে ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সেনা কর্মকর্তাদের ভার্চুয়ালি শুনানির আবেদন নামঞ্জুর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রিজন ভ্যানে করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয় সেনা কর্মকর্তাদের। ফাইল ছবি
প্রিজন ভ্যানে করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয় সেনা কর্মকর্তাদের। ফাইল ছবি

গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কর্মকর্তাদের ভার্চুয়ালি শুনানির আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। আজ বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।

শুনানির শুরুতে চিফ প্রসিকিউটর এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তুলে ধরেন এবং অভিযোগ গঠনের আবেদন জানান। পরে আসামিপক্ষ থেকে আসামিদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন শুনানির জন্য সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। অব্যাহতির আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ১৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।

একই সময় সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির না করে ভার্চুয়ালি শুনানি করতে করা আবেদনের বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন আইনজীবী ড. তাবারক হোসেন। তবে শুনানি শেষে দৃশ্যমান বিচারের স্বার্থে আবেদন নামঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল। আদালত বলেন, আইন সবার জন্য সমান।

শেখ হাসিনা, সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ আসামির বিরুদ্ধে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই আবেদন জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ১৭ আসামির মধ্যে আজ শুনানির সময় ১০ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।

তাঁরা হলেন—র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল কে এম আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আলম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খায়রুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল ও সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।

এ ছাড়া এই মামলায় পলাতক রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর-রশিদ এবং সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন।

এর আগে র‍্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশনের (টিএফআই) মাধ্যমে গুম–নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। পরে ওই দিনই তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। আজ আসামিদের সকাল সোয়া ১০টার দিকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রিজন ভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। তাঁদের হাজির উপলক্ষে সকাল থেকে ট্রাইব্যুনাল ও এর আশপাশে নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা। আসামিদের হাজতখানা থেকে এজলাসে তোলা হয় বেলা ১১টা ২০ মিনিটে। আর ট্রাইব্যুনালের বিচারকেরা এজলাসে আসেন দুপুর পৌনে ১২টায়। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ১৪ জনকে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গুম ও নির্যাতনের যে চার অভিযোগ শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
গুম ও নির্যাতনের যে চার অভিযোগ শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা, সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আবেদন জানিয়েছে প্রসিকিউশন। আজ বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই আবেদন জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

এর আগে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি করেন তিনি। অপর দিকে অভিযোগ থেকে আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। পরে অব্যাহতির আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ১৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে পৃথক চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযোগ-১—২০১৬ সালের ২৩ মে থেকে ২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১১ জনকে আটক, অপহরণ ও গুম করে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। র‍্যাবের সদর দপ্তর কার্গো অ্যাডমিন বিল্ডিং ও র‍্যাব-১-এর কম্পাউন্ডে পুরোনো অস্ত্রাগারসংলগ্ন দ্বিতল ভবনে অবস্থিত টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে আটক রেখে এই নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এখানে যাঁদের গুম করে রাখা হয়েছিল, তাঁরা হলেন—তাজুল ইসলাম সুমন, আশিক উল আকবর, মাহমুদুল হাসান, নূরে আলম, মো. শরীয়তউল্ল্যাহ, মো. রাজিবুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাশেম আরমান, সাইফুল ইসলাম তারেক, রিজওয়ান মাহমুদ অনিক, মো. ফয়েজ ও মাসরুর আনোয়ার চৌধুরী।

১ নম্বর অভিযোগে আসামি করা হয়েছে—শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, বেনজীর আহমেদ, আনোয়ার লতিফ খান, মো. জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, মো. মাহাবুব আলম ও মো. সারোয়ার বিন কাশেমকে।

এতে বলা হয়, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে এবং বিরোধী দল ও মত নির্মূল করার লক্ষ্যে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ব্যাপক মাত্রায়, লক্ষ্যভিত্তিক এবং পদ্ধতিগতভাবে অবৈধ আটক, অপহরণ, নির্যাতন, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করেছে। এর অংশ হিসেবে উল্লিখিত ১১ জনকে আসামিরা আটক করে অপহরণপূর্বক র‍্যাব গোয়েন্দা বিভাগের বন্দিশালা টিএফআই সেলে নির্যাতন করেছে।

অভিযোগ-২—২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক, অপহরণ ও গুম করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ। র‍্যাবের সদর দপ্তর কার্গো অ্যাডমিন বিল্ডিং ও র‍্যাব-১-এর কম্পাউন্ডে পুরোনো অস্ত্রাগারসংলগ্ন দ্বিতল ভবনে অবস্থিত টিএফআই সেলে আটক রেখে এই নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এখানে যাঁদের গুম করে রাখা হয়েছিল, তাঁরা হলেন—ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাশেম আরমান, সাইফুল ইসলাম তারেক, সোহেল রানা, মেহেদী হাসান ডলার ও মো. শফিকুল ইসলাম।

২ নম্বর অভিযোগে আসামি করা হয়েছে—শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, তোফায়েল মোস্তফা সারওয়ার, কে এম আজাদ, সারোয়ার বিন কাশেম, মো. খায়রুল ইসলাম ও মো. মশিউর রহমান জুয়েলকে।

অভিযোগ ৩—২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৪ জুন পর্যন্ত দুজনকে আটক, অপহরণ ও গুম করে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। র‍্যাবের সদর দপ্তর কার্গো অ্যাডমিন বিল্ডিং ও র‍্যাব-১-এর কম্পাউন্ডে পুরোনো অস্ত্রাগারসংলগ্ন দ্বিতল ভবনে অবস্থিত টিএফআই সেলে আটক রেখে এই নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এখানে যাঁদের গুম করে রাখা হয়েছিল, তাঁরা হলেন—ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাশেম আরমান ও সোহেল রানা।

৩ নম্বর অভিযোগে আসামি করা হয়েছে—শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, এম খুরশিদ হোসেন, মো. কামরুল হাসান, মো. মাহাবুব আলম, মশিউর রহমান জুয়েল ও সাইফুল ইসলাম সুমনকে।

অভিযোগ ৪—২০২৪ সালের ৫ জুন থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত একজনকে আটক, অপহরণ ও গুম করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ। র‍্যাবের সদর দপ্তর কার্গো অ্যাডমিন বিল্ডিংয়ে ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাশেম আরমানকে আটক রেখে এই নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আসামি করা হয়েছে—শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার হারুন অর-রশিদ, মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ আল মোমেন ও সাইফুল ইসলাম সুমনকে।

এই মামলায় ১৭ আসামির মধ্যে আজ শুনানির সময় ১০ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন—র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল কে এম আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আলম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খায়রুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল ও সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।

এ ছাড়া এই মামলায় পলাতক রয়েছেন—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনার সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর-রশিদ এবং সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন।

এর আগে র‍্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশনের (টিএফআই) মাধ্যমে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। পরে ওই দিনই তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাষ্ট্রের ৯ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি, বিটিআরসির সাবেক ৩ চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাষ্ট্রের ৯ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি, বিটিআরসির সাবেক ৩ চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) দায়িত্ব পালনকালে বেআইনি সিদ্ধান্তের জেরে রাষ্ট্রের ৯ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির অভিযোগে বিটিআরসির সাবেক তিন চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের নামে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সংস্থার মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, অভিযোগের প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে কমিশন মামলার অনুমোদন দিয়েছে। বিটিআরসির সাবেক কর্মকর্তাদের বেআইনি সিদ্ধান্তের কারণে রাষ্ট্রের বিশাল অঙ্কের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। তদন্তে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার পর মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস, শাহজাহান মাহমুদ ও মো. জহুরুল হক; বিটিআরসির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান, বিটিআরসির সাবেক কমিশনার মো. রেজাউল কাদের ও মো. আমিনুল হাসান।

অভিযোগে বলা হয়, ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে থাকাকালে এসব কর্মকর্তা সরকারের অনুমোদন ছাড়া এবং সংশ্লিষ্ট আইন ও গাইডলাইন লঙ্ঘন করে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে (IGW) অপারেটরদের আর্থিকভাবে লাভবান করার উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।

দুদক বলছে, পরীক্ষামূলকভাবে এক বছরের জন্য নির্ধারিত আন্তর্জাতিক ইনকামিং কলের টার্মিনেশন রেট ০.০৩ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে ০.০১৫ ডলার করা হয়। একই সঙ্গে বিটিআরসির রেভিনিউ শেয়ার ৫১ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪০ শতাংশ এবং IGW অপারেটরদের শেয়ার ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়। পরীক্ষামূলক এক বছর পর এই হার বহাল রাখার কোনো অনুমোদন না থাকলেও তা বেআইনিভাবে ২৮ মাস ধরে কার্যকর রাখা হয়।

এই অনিয়মের ফলে রেভিনিউ শেয়ারে ৩৮৩ কোটি ৭৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। কম রেটে কল আনায় ক্ষতি হয়েছে ২ হাজার ৯৪২ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে ৭২ লাখ ১০ হাজার ৯৬৯ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকার বেশি ক্ষতিসহ সব মিলিয়ে রাষ্ট্রের ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ১০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।

রাষ্ট্রের এই বিপুল ক্ষতি, অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪১৮ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭–এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২–এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা করার অনুমোদন দেওয়া হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত