নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নানা গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল ও তাঁর পূর্ণাঙ্গ কমিশন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে তিনি তাঁর লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য দিয়ে উঠে চলে যান। এ সময় সাংবাদিকদের কাছে কোনো প্রশ্ন নেননি তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সচিবের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে আমাদের পদত্যাগপত্র পৌঁছে দেওয়া হবে।’
লিখিত বক্তব্যে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘দেশের প্রথম সাংবিধানিক সাধারণ নির্বাচন ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই নির্বাচন নিয়েও বিতর্ক ছিল। ১৯৭৯ ও ১৯৮৭ সালের সাধারণ নির্বাচন সামরিক শাসনামল হয়েছে। ফলাফল নিয়ে বিতর্ক ছিল। ১৯৯১ এর নির্বাচন সম্মত রাজনৈতিক রূপরেখার ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছিল। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচন সাংবিধানিক নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে, সূক্ষ্ম বা স্থূল কারচুপির সীমিত সমালোচনা সত্ত্বেও, সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছিল। ২০০৮ সালের নির্বাচন সেনাসমর্থিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই নির্বাচনে বিএনপি সংসদে মাত্র ২৭টি এবং আওয়ামী লীগ ২৩০টি আসন পেয়েছিল। নির্বাচন বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল না। নিরাপদ প্রস্থান (সেফ এক্সিট) বিষয়ে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে সেনাসমর্থিত অসামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দর–কষাকষির বিষয়টি প্রকাশ্য ছিল। সে প্রশ্নে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের অবস্থানও গোপন ছিল না। ২০১৪,২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচন সংবিধানমতে দলীয় সরকারের অধীনে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ অনেক দলই অংশগ্রহণ করেনি। ফলে সেই নির্বাচনও ২০২৪ সালের অনুরূপ অন্তর্ভুক্তিমূলক ছিল না। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করে। আসন পেয়েছিল মাত্র ৬ টি। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৫৮ টি। মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে বর্তমান কমিশনের অধীনে। ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ২৮টি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও প্রধানতম বিরোধী দল বিএনপি ও সমমনা দলগুলো সেই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে। নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কমিশন একাধিকবার আহ্বান করা সত্ত্বেও, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করার বিষয়টি দলের নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচন স্থগিত বা বাতিল করে দেওয়ার মতো কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি ছিল না। সেই কারণে অনেকেই কমিশনকে দোষারোপ করছেন। নির্বাচন কখন, কী কারণে, কত দিনের জন্য স্থগিত করা যাবে তাও সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। অতীতে কখনোই কোনো কমিশন নির্বাচন বাতিল করে দিয়ে পদত্যাগ করেননি। সম্প্রতি ভেঙে দেওয়া সংসদের ২৯৯টি আসনে নির্বাচন প্রার্থীদের মধ্যে ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে হয়েছে। দলের মধ্যে নয়। ২৯৯ আসনে ১৯৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন নিষ্পন্ন করা অতিশয় কঠিন একটি কর্মযজ্ঞ। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হওয়ার সকল দোষ বা দায়-দায়িত্ব সকল সময় কেবল নির্বাচন কমিশনের ওপর এককভাবে আরোপ করা হয়ে থাকে। একটি কমিশন না হয় সৎ বা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে। কিছু সকল সময় সকল কমিশনই অসৎ বা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে না। কমিশন বিভিন্ন কারণে নির্ভেজাল গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে অক্ষম বা অসমর্থ হতে পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় আমাদের বিশ্বাস-কেবল কমিশনের পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে অবাধ, নিরপেক্ষ, কালো টাকা ও পেশিশক্তি-বিবর্জিত এবং প্রশাসন-পুলিশের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে না। নির্বাচন পদ্ধতিতে দুর্ভেদ্য মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও আচরণে এবং বিশেষত প্রার্থীদের আচরণে পরিবর্তন প্রয়োজন হবে।’
লিখিত বক্তব্যে সিইসি বলেন, ‘১৯৭৩ থেকে হওয়া অতীতের অন্যান্য সকল নির্বাচন ছাড়াও ২০০৮,২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের বিতর্কিত বা সন্দিগ্ধ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে কমিশন পরবর্তী সকল নির্বাচনগুলো সতর্কতার সঙ্গে আয়োজনের চেষ্টা করেছে। জাতীয় এবং স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচনে দিনের বেলায় ব্যালট পেপার প্রেরণ, কতিপয় উপনির্বাচনে ভিডিও পর্যবেক্ষণ, ইভিএম ব্যবহার, দেশের সকল জেলায় একই দিনে তবে প্রতিটি জেলার প্রশাসনিক সীমানার মধ্যে মাঝে ৩-৫ দিন বিরতি দিয়ে ৫-৬টি ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠান, সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যাপকভাবে রদবদল, ইত্যাদি গৃহীত ব্যবস্থা নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুশৃঙ্খল করতে অনেকটাই সহায়ক হয়েছিল। নির্বাচন মূলত একদলীয় হওয়ার কারণে কারচুপি বা সরকারিভাবে প্রভাবিত করার প্রয়োজনও ছিল না। নির্বাচন দলের ভেতরেই হয়েছে। মধ্যে হয়নি। উইথিন হয়েছে নট বিটুইন।’
আরও বলা হয়, ‘কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দু’বছর সময়ে ইউনিয়ন পরিষদের ৯৯২ টি, উপজেলা পরিষদের ৪৯৬ টি, জেলা পরিষদের ৭১ টি, পৌরসভার ৯০টি এবং সিটি করপোরেশনের ১৬টি নির্বাচন করেছে। নির্বাচনগুলোর সততা, সিদ্ধতা, নিরপেক্ষতা অবাধ-হওয়া নিয়ে অতীতের ন্যায় ব্যাপক বিতর্ক বা সমালোচনা হয়নি। উপ-নির্বাচনসহ জাতীয় সংসদের মোট ৩১৮টি আসনে কমিশন নির্বাচন করেছে। দলীয়ভাবে ইনক্লুসিভ না হওয়ার কারণে নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। এটি সঠিক ও যৌক্তিক। কিন্তু বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে কোনো নির্বাচন কমিশন সংবিধান উপেক্ষা করে স্বেচ্ছায় নির্বাচন বাতিল করে দিয়ে পদত্যাগ করেছে এবং সেই কারণে নির্বাচন হয়নি এমন উদাহরণ নেই। সরকার বারবার বলছেন ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। নির্বাচন বারংবার ব্যর্থ হওয়ার প্রকৃত সত্য ও কারণ এই কথাটির মধ্যেই নিহিত।’
সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘কমিশনের সদস্যরা সংবিধান মেনে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। আমাদের কর্মকালে আমরা গণমাধ্যম, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনীসহ আবশ্যক সকলের সহযোগিতা পেয়েছি। কৃতজ্ঞচিত্তে তা স্মরণ করছি।’
বর্তমান সরকারে উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘বর্তমান ও অতীত থেকে আহরিত অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও উপলব্ধি থেকে ভবিষ্যতের জন্য কিছু প্রস্তাবনা সরকারের সদয় বিবেচনার জন্য রেখে যাওয়া কর্তব্য মনে করছি। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সমরূপতার কারণে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (দলীয় ভিত্তিক) নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ আদর্শ ক্ষেত্র হতে পারে। সেই সঙ্গে নির্বাচন চার বা আটটি পর্বে, প্রতিটি পর্বের মাঝে ৩-৫ দিনের বিরতি রেখে, অনুষ্ঠান করা ব্যবস্থাপনার দিক থেকে সহজ ও সহায়ক হতে পারে। আমাদের প্রবর্তিত অনলাইনে নমিনেশন দাখিল অব্যাহত রেখে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহার অপটিমাইজ করতে পারলে উত্তম হবে। অধিকন্তু প্রতিটি সাধারণ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হলে উদ্দেশ্য অর্জন আরও সুনিশ্চিত হতে পারে।’
লিখিত বক্তব্যে শেষ পর্যায়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘পরিশেষে আপনাদের অবহিত করতে চাই-আমিসহ মাননীয় কমিশনারগণ দেশের পরিবর্তিত বিরাজিত অবস্থায় পদত্যাগ করতে মনস্থ করেছি। আমরা অদ্যই পদত্যাগপত্র মহামান্য রাষ্ট্রপতি সমীপে উপস্থাপনের নিমিত্তে কমিশনের সচিব মহোদয়ের হাতে দেব।’
নানা গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল ও তাঁর পূর্ণাঙ্গ কমিশন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে তিনি তাঁর লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য দিয়ে উঠে চলে যান। এ সময় সাংবাদিকদের কাছে কোনো প্রশ্ন নেননি তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সচিবের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে আমাদের পদত্যাগপত্র পৌঁছে দেওয়া হবে।’
লিখিত বক্তব্যে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘দেশের প্রথম সাংবিধানিক সাধারণ নির্বাচন ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই নির্বাচন নিয়েও বিতর্ক ছিল। ১৯৭৯ ও ১৯৮৭ সালের সাধারণ নির্বাচন সামরিক শাসনামল হয়েছে। ফলাফল নিয়ে বিতর্ক ছিল। ১৯৯১ এর নির্বাচন সম্মত রাজনৈতিক রূপরেখার ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছিল। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচন সাংবিধানিক নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে, সূক্ষ্ম বা স্থূল কারচুপির সীমিত সমালোচনা সত্ত্বেও, সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছিল। ২০০৮ সালের নির্বাচন সেনাসমর্থিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই নির্বাচনে বিএনপি সংসদে মাত্র ২৭টি এবং আওয়ামী লীগ ২৩০টি আসন পেয়েছিল। নির্বাচন বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল না। নিরাপদ প্রস্থান (সেফ এক্সিট) বিষয়ে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে সেনাসমর্থিত অসামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দর–কষাকষির বিষয়টি প্রকাশ্য ছিল। সে প্রশ্নে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের অবস্থানও গোপন ছিল না। ২০১৪,২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচন সংবিধানমতে দলীয় সরকারের অধীনে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ অনেক দলই অংশগ্রহণ করেনি। ফলে সেই নির্বাচনও ২০২৪ সালের অনুরূপ অন্তর্ভুক্তিমূলক ছিল না। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করে। আসন পেয়েছিল মাত্র ৬ টি। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৫৮ টি। মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে বর্তমান কমিশনের অধীনে। ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ২৮টি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও প্রধানতম বিরোধী দল বিএনপি ও সমমনা দলগুলো সেই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে। নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কমিশন একাধিকবার আহ্বান করা সত্ত্বেও, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করার বিষয়টি দলের নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচন স্থগিত বা বাতিল করে দেওয়ার মতো কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি ছিল না। সেই কারণে অনেকেই কমিশনকে দোষারোপ করছেন। নির্বাচন কখন, কী কারণে, কত দিনের জন্য স্থগিত করা যাবে তাও সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। অতীতে কখনোই কোনো কমিশন নির্বাচন বাতিল করে দিয়ে পদত্যাগ করেননি। সম্প্রতি ভেঙে দেওয়া সংসদের ২৯৯টি আসনে নির্বাচন প্রার্থীদের মধ্যে ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে হয়েছে। দলের মধ্যে নয়। ২৯৯ আসনে ১৯৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন নিষ্পন্ন করা অতিশয় কঠিন একটি কর্মযজ্ঞ। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হওয়ার সকল দোষ বা দায়-দায়িত্ব সকল সময় কেবল নির্বাচন কমিশনের ওপর এককভাবে আরোপ করা হয়ে থাকে। একটি কমিশন না হয় সৎ বা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে। কিছু সকল সময় সকল কমিশনই অসৎ বা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে না। কমিশন বিভিন্ন কারণে নির্ভেজাল গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে অক্ষম বা অসমর্থ হতে পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় আমাদের বিশ্বাস-কেবল কমিশনের পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে অবাধ, নিরপেক্ষ, কালো টাকা ও পেশিশক্তি-বিবর্জিত এবং প্রশাসন-পুলিশের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে না। নির্বাচন পদ্ধতিতে দুর্ভেদ্য মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও আচরণে এবং বিশেষত প্রার্থীদের আচরণে পরিবর্তন প্রয়োজন হবে।’
লিখিত বক্তব্যে সিইসি বলেন, ‘১৯৭৩ থেকে হওয়া অতীতের অন্যান্য সকল নির্বাচন ছাড়াও ২০০৮,২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের বিতর্কিত বা সন্দিগ্ধ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে কমিশন পরবর্তী সকল নির্বাচনগুলো সতর্কতার সঙ্গে আয়োজনের চেষ্টা করেছে। জাতীয় এবং স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচনে দিনের বেলায় ব্যালট পেপার প্রেরণ, কতিপয় উপনির্বাচনে ভিডিও পর্যবেক্ষণ, ইভিএম ব্যবহার, দেশের সকল জেলায় একই দিনে তবে প্রতিটি জেলার প্রশাসনিক সীমানার মধ্যে মাঝে ৩-৫ দিন বিরতি দিয়ে ৫-৬টি ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠান, সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যাপকভাবে রদবদল, ইত্যাদি গৃহীত ব্যবস্থা নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুশৃঙ্খল করতে অনেকটাই সহায়ক হয়েছিল। নির্বাচন মূলত একদলীয় হওয়ার কারণে কারচুপি বা সরকারিভাবে প্রভাবিত করার প্রয়োজনও ছিল না। নির্বাচন দলের ভেতরেই হয়েছে। মধ্যে হয়নি। উইথিন হয়েছে নট বিটুইন।’
আরও বলা হয়, ‘কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দু’বছর সময়ে ইউনিয়ন পরিষদের ৯৯২ টি, উপজেলা পরিষদের ৪৯৬ টি, জেলা পরিষদের ৭১ টি, পৌরসভার ৯০টি এবং সিটি করপোরেশনের ১৬টি নির্বাচন করেছে। নির্বাচনগুলোর সততা, সিদ্ধতা, নিরপেক্ষতা অবাধ-হওয়া নিয়ে অতীতের ন্যায় ব্যাপক বিতর্ক বা সমালোচনা হয়নি। উপ-নির্বাচনসহ জাতীয় সংসদের মোট ৩১৮টি আসনে কমিশন নির্বাচন করেছে। দলীয়ভাবে ইনক্লুসিভ না হওয়ার কারণে নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। এটি সঠিক ও যৌক্তিক। কিন্তু বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে কোনো নির্বাচন কমিশন সংবিধান উপেক্ষা করে স্বেচ্ছায় নির্বাচন বাতিল করে দিয়ে পদত্যাগ করেছে এবং সেই কারণে নির্বাচন হয়নি এমন উদাহরণ নেই। সরকার বারবার বলছেন ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। নির্বাচন বারংবার ব্যর্থ হওয়ার প্রকৃত সত্য ও কারণ এই কথাটির মধ্যেই নিহিত।’
সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘কমিশনের সদস্যরা সংবিধান মেনে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। আমাদের কর্মকালে আমরা গণমাধ্যম, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনীসহ আবশ্যক সকলের সহযোগিতা পেয়েছি। কৃতজ্ঞচিত্তে তা স্মরণ করছি।’
বর্তমান সরকারে উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘বর্তমান ও অতীত থেকে আহরিত অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও উপলব্ধি থেকে ভবিষ্যতের জন্য কিছু প্রস্তাবনা সরকারের সদয় বিবেচনার জন্য রেখে যাওয়া কর্তব্য মনে করছি। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সমরূপতার কারণে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (দলীয় ভিত্তিক) নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ আদর্শ ক্ষেত্র হতে পারে। সেই সঙ্গে নির্বাচন চার বা আটটি পর্বে, প্রতিটি পর্বের মাঝে ৩-৫ দিনের বিরতি রেখে, অনুষ্ঠান করা ব্যবস্থাপনার দিক থেকে সহজ ও সহায়ক হতে পারে। আমাদের প্রবর্তিত অনলাইনে নমিনেশন দাখিল অব্যাহত রেখে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহার অপটিমাইজ করতে পারলে উত্তম হবে। অধিকন্তু প্রতিটি সাধারণ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হলে উদ্দেশ্য অর্জন আরও সুনিশ্চিত হতে পারে।’
লিখিত বক্তব্যে শেষ পর্যায়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘পরিশেষে আপনাদের অবহিত করতে চাই-আমিসহ মাননীয় কমিশনারগণ দেশের পরিবর্তিত বিরাজিত অবস্থায় পদত্যাগ করতে মনস্থ করেছি। আমরা অদ্যই পদত্যাগপত্র মহামান্য রাষ্ট্রপতি সমীপে উপস্থাপনের নিমিত্তে কমিশনের সচিব মহোদয়ের হাতে দেব।’
জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন টেকসই করতে আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা দেওয়ার সুপারিশ করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত সংসদ নিয়মিত আইনসভার পাশাপাশি ২৭০ দিন (৯ মাস) সংবিধান সংস্কার পরিষদের দায়িত্ব পালন করবে।
১৯ মিনিট আগেআগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ঘোষণার আগে-পরে করণীয় ৩৬টি প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে তফসিল ঘোষণার আগেই আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া ‘মিথ্যা ও গায়েবি মামলা’ প্রত্যাহার এবং মাঠপ্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানিয়েছে দলটি।
১ ঘণ্টা আগেঅধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি, পদায়ন ও শৃঙ্খলাবিষয়ক সব ক্ষমতা আইন মন্ত্রণালয় থেকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে ন্যস্ত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অধ্যাদেশের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষা।
৫ ঘণ্টা আগেআমির হোসেন তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, আন্দোলনের সময় আফতাবনগরে মামা কফিশপ নামের একটি খাবারের দোকানে চাকরি করতেন তিনি। ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর দোকান থেকে বাসায় যাওয়ার পথে রামপুরা খালের সাঁকো পার হয়ে প্রধান সড়কে গেলে দেখতে পান পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা আন্দোলনকারীদের দিকে গুলি চালাচ্ছেন। ভয়ে তিনি পাশের একটি
৭ ঘণ্টা আগেতানিম আহমেদ, ঢাকা
জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন টেকসই করতে আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা দেওয়ার সুপারিশ করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত সংসদ নিয়মিত আইনসভার পাশাপাশি ২৭০ দিন (৯ মাস) সংবিধান সংস্কার পরিষদের দায়িত্ব পালন করবে। এ সময়ের মধ্যে সনদ বাস্তবায়নে সংসদকে বাধ্য করার উপায় খুঁজছে কমিশন।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করতে পরপর দুদিন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ঐকমত্য কমিশন। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে বেলা ২টা থেকে শুরু হওয়া বৈঠক শেষ হয় রাত সাড়ে ৮টার পরে। কিন্তু এ বৈঠকেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। কাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে আবারও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করবে কমিশন। ওই দিন সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করে রোববার সরকারের কাছে জমা দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে তাদের।
বৈঠকের বিষয়ে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘বৃহস্পতিবারের আলোচনায় বড় অগ্রগতি হয়েছে। আমরা আশা করছি, দ্রুতই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায়ের সুপারিশ সরকারের কাছে দিতে পারব।’
জানা গেছে, গত দুই দিনের বৈঠকে সনদ বাস্তবায়নের আদেশের ভিত্তি ও নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। বাস্তবায়ন আদেশের ভূমিকায় থাকবে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানই হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারির ক্ষমতার উৎস।’ এটির নাম হতে পারে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ’। সেটার অধীনে গণভোট নিয়ে একটি অধ্যাদেশ করা হবে। এর ভিত্তিতে হবে গণভোট। সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য আগামী সংসদ দ্বৈত ভূমিকা পালন করবে। সে ক্ষেত্রে সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে, পাশাপাশি নিয়মিত সংসদের কাজও পরিচালনা করবে। সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে আগামী সংসদকে একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে। সেটি হতে পারে সর্বোচ্চ ৯ মাস। এই সময়ে সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে।
সূত্র জানায়, আগামী সংসদকে সনদ বাস্তবায়নে কীভাবে বাধ্য করা হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কমিশন। কিন্তু তারা চায় এটি নিশ্চিত করতে। এটি নিয়ে দুটি মত আছে। একটি হলো নির্ধারিত সময়ে সংস্কার বাস্তবায়ন করা না হলে সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে; আরেকটি হলো সংসদ যদি নির্ধারিত সময়ে সনদ বাস্তবায়ন না করে, তাহলে তা বাস্তবায়িত বলে গণ্য হবে। এটি নিয়ে আরও আলোচনা হবে। বিশেষজ্ঞ কমিটি খসড়া আরও পর্যালোচনা করবে।
বৈঠকে উপস্থিত এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘পরবর্তী সংসদ যদি নির্ধারিত ২৭০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন না করে, তাহলে সনদের কী হবে, তা নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। সমাধান নিয়ে আমরা আরও ভাবছি। কারণ, উদাহরণ আমরা কোথাও পাচ্ছি না। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ বলছে, বাস্তবায়িত না হলে সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে; আবার কেউ কেউ বলছে, বিলুপ্ত করা ঠিক হবে না। আবার একাধিক মত হচ্ছে, ৯ মাসের মধ্যে বাস্তবায়িত না হলে অটোমেটিকভাবে সনদের বিষয়গুলো সংবিধানের অংশ হয়ে যাবে। তবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
নোট অব ডিসেন্টের (আপত্তি) বিষয়ে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হলো, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে কমিশনের প্রস্তাবগুলো থাকবে। সেখানে ভিন্নমতের বিষয় উল্লেখ থাকবে না। আদেশ অনুমোদন করেন কি না এবং সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন চান কি না, এই প্রশ্ন করা হবে। আপত্তির বিষয়ে আরেক বিশেষজ্ঞ বলেন, বেশির ভাগ সদস্যই জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশে নোট অব ডিসেন্ট রাখার পক্ষে নয়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
গণভোট কবে হবে, বিষয়টি রাজনৈতিক বিবেচনা করে সরকারের হাতে ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে বিশেষজ্ঞরা। একই প্রশ্নে গণভোট করার কথা থাকবে আদেশে। সেখানে প্রশ্ন থাকতে পারে, ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ এবং আদেশে সন্নিবেশিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সমর্থন করেন কি না?’ সে বিষয়ে জনগণ হ্যাঁ/না ভোট দেবেন।
গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে জামায়াত ও এনসিপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রাষ্ট্রপতি নয়, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে হবে। রাজনৈতিক বিতর্ক ওঠায় বিষয়টি সরকারের হাতেই ছেড়ে দেওয়ার সুপারিশ বিশেষজ্ঞদের। কমিশনও সে পথে হাঁটছে বলে জানা গেছে।
কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক এবং ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন। এ ছাড়া অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ভার্চুয়ালি এ সভায় অংশ নেন।
আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। এ ছাড়া জাতীয় ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন টেকসই করতে আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা দেওয়ার সুপারিশ করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত সংসদ নিয়মিত আইনসভার পাশাপাশি ২৭০ দিন (৯ মাস) সংবিধান সংস্কার পরিষদের দায়িত্ব পালন করবে। এ সময়ের মধ্যে সনদ বাস্তবায়নে সংসদকে বাধ্য করার উপায় খুঁজছে কমিশন।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করতে পরপর দুদিন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ঐকমত্য কমিশন। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে বেলা ২টা থেকে শুরু হওয়া বৈঠক শেষ হয় রাত সাড়ে ৮টার পরে। কিন্তু এ বৈঠকেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। কাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে আবারও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করবে কমিশন। ওই দিন সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করে রোববার সরকারের কাছে জমা দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে তাদের।
বৈঠকের বিষয়ে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘বৃহস্পতিবারের আলোচনায় বড় অগ্রগতি হয়েছে। আমরা আশা করছি, দ্রুতই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায়ের সুপারিশ সরকারের কাছে দিতে পারব।’
জানা গেছে, গত দুই দিনের বৈঠকে সনদ বাস্তবায়নের আদেশের ভিত্তি ও নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। বাস্তবায়ন আদেশের ভূমিকায় থাকবে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানই হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারির ক্ষমতার উৎস।’ এটির নাম হতে পারে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ’। সেটার অধীনে গণভোট নিয়ে একটি অধ্যাদেশ করা হবে। এর ভিত্তিতে হবে গণভোট। সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য আগামী সংসদ দ্বৈত ভূমিকা পালন করবে। সে ক্ষেত্রে সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে, পাশাপাশি নিয়মিত সংসদের কাজও পরিচালনা করবে। সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে আগামী সংসদকে একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে। সেটি হতে পারে সর্বোচ্চ ৯ মাস। এই সময়ে সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে।
সূত্র জানায়, আগামী সংসদকে সনদ বাস্তবায়নে কীভাবে বাধ্য করা হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কমিশন। কিন্তু তারা চায় এটি নিশ্চিত করতে। এটি নিয়ে দুটি মত আছে। একটি হলো নির্ধারিত সময়ে সংস্কার বাস্তবায়ন করা না হলে সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে; আরেকটি হলো সংসদ যদি নির্ধারিত সময়ে সনদ বাস্তবায়ন না করে, তাহলে তা বাস্তবায়িত বলে গণ্য হবে। এটি নিয়ে আরও আলোচনা হবে। বিশেষজ্ঞ কমিটি খসড়া আরও পর্যালোচনা করবে।
বৈঠকে উপস্থিত এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘পরবর্তী সংসদ যদি নির্ধারিত ২৭০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন না করে, তাহলে সনদের কী হবে, তা নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। সমাধান নিয়ে আমরা আরও ভাবছি। কারণ, উদাহরণ আমরা কোথাও পাচ্ছি না। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ বলছে, বাস্তবায়িত না হলে সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে; আবার কেউ কেউ বলছে, বিলুপ্ত করা ঠিক হবে না। আবার একাধিক মত হচ্ছে, ৯ মাসের মধ্যে বাস্তবায়িত না হলে অটোমেটিকভাবে সনদের বিষয়গুলো সংবিধানের অংশ হয়ে যাবে। তবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
নোট অব ডিসেন্টের (আপত্তি) বিষয়ে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হলো, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে কমিশনের প্রস্তাবগুলো থাকবে। সেখানে ভিন্নমতের বিষয় উল্লেখ থাকবে না। আদেশ অনুমোদন করেন কি না এবং সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন চান কি না, এই প্রশ্ন করা হবে। আপত্তির বিষয়ে আরেক বিশেষজ্ঞ বলেন, বেশির ভাগ সদস্যই জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশে নোট অব ডিসেন্ট রাখার পক্ষে নয়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
গণভোট কবে হবে, বিষয়টি রাজনৈতিক বিবেচনা করে সরকারের হাতে ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে বিশেষজ্ঞরা। একই প্রশ্নে গণভোট করার কথা থাকবে আদেশে। সেখানে প্রশ্ন থাকতে পারে, ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ এবং আদেশে সন্নিবেশিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো সমর্থন করেন কি না?’ সে বিষয়ে জনগণ হ্যাঁ/না ভোট দেবেন।
গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে জামায়াত ও এনসিপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রাষ্ট্রপতি নয়, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে হবে। রাজনৈতিক বিতর্ক ওঠায় বিষয়টি সরকারের হাতেই ছেড়ে দেওয়ার সুপারিশ বিশেষজ্ঞদের। কমিশনও সে পথে হাঁটছে বলে জানা গেছে।
কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরিফ ভূইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক এবং ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন। এ ছাড়া অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ভার্চুয়ালি এ সভায় অংশ নেন।
আলোচনায় কমিশনের পক্ষে অংশ নেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। এ ছাড়া জাতীয় ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
নানা গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল ও তাঁর পূর্ণাঙ্গ কমিশন। আজ দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে তিনি তাঁর লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য দিয়ে উঠে চলে যান। এ সময় সাংবাদিকদের কাছে কোনো প্রশ্ন নেননি তিনি...
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ঘোষণার আগে-পরে করণীয় ৩৬টি প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে তফসিল ঘোষণার আগেই আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া ‘মিথ্যা ও গায়েবি মামলা’ প্রত্যাহার এবং মাঠপ্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানিয়েছে দলটি।
১ ঘণ্টা আগেঅধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি, পদায়ন ও শৃঙ্খলাবিষয়ক সব ক্ষমতা আইন মন্ত্রণালয় থেকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে ন্যস্ত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অধ্যাদেশের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষা।
৫ ঘণ্টা আগেআমির হোসেন তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, আন্দোলনের সময় আফতাবনগরে মামা কফিশপ নামের একটি খাবারের দোকানে চাকরি করতেন তিনি। ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর দোকান থেকে বাসায় যাওয়ার পথে রামপুরা খালের সাঁকো পার হয়ে প্রধান সড়কে গেলে দেখতে পান পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা আন্দোলনকারীদের দিকে গুলি চালাচ্ছেন। ভয়ে তিনি পাশের একটি
৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ঘোষণার আগে-পরে করণীয় ৩৬টি প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে তফসিল ঘোষণার আগেই আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া ‘মিথ্যা ও গায়েবি মামলা’ প্রত্যাহার এবং মাঠপ্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানিয়েছে দলটি। আর ভোটের কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে থেকে ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করতে হবে।
এ ছাড়া বিগত তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা বিতর্কিত ব্যক্তিদের আগামী নির্বাচনে ভোটের প্রক্রিয়ায় না রাখা এবং দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়ার কথাও কমিশনকে বলেছে বিএনপি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক তাদের প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন করেছে। দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং সাবেক সচিব মোহাম্মদ জকরিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, ‘আমরা কোনো প্রস্তাব জমা দেইনি। আলোচনার টকিং পয়েন্ট হিসেবে বেশ কিছু বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে।’ যদিও বিএনপির একটি সূত্র জানায়, লিখিতভাবে ৩৬ দফা প্রস্তাব সামনে রেখে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির প্রতিনিধিদল।
সূত্র জানায়, সিইসির সঙ্গে বৈঠকে তফসিল ঘোষণার আগে স্বৈরাচারী সরকারের আমলে হওয়া মিথ্যা, বানোয়াট ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহার এবং মাঠপ্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলটি বলেছে, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা বিতর্কিত ব্যক্তিদের এবারের ভোটের প্রক্রিয়ায় রাখা যাবে না। এ ছাড়া নির্বাচনের কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে থেকে ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
আর ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইবনে সিনাসহ দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত প্রতিষ্ঠান থেকে যেন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়া হয়।
ভোটে অন্তর্বর্তী সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে এখনই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে এই সরকারের ও ইসির দৃঢ় ভূমিকা চেয়েছে বিএনপি। এ ছাড়া, রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ইসির কর্মকর্তাদের নিয়োগ; নির্বাচনকালীন সব প্রক্রিয়ায় জড়িত বেসামরিক প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব কর্মকর্তার বদলি, পদায়ন, অবস্থান, দায়িত্ব ও তাঁদের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ ইসির এখতিয়ারে নেওয়া; নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন এবং নির্বাচনকে জনগণের কাছে দৃশ্যমান বিশ্বাসযোগ্য করতে বিচার বিভাগীয় ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের পাশাপাশি ইসি কর্মকর্তাদেরও ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া; ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষের কার্যক্রম ছাড়া ভোটকেন্দ্রের অন্যান্য অভ্যন্তরীণ দৃশ্য বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ রাখতে সিসি ক্যামেরা রাখা; প্রতি জেলা, উপজেলা, থানা নির্বাচন অফিসে অভিযোগ নিরসন কেন্দ্র চালুর দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
নির্বাচনসংশ্লিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে বা যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি করে অভিযোগকারীকে লিখিতভাবে জানানো; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি গঠনের নির্দেশনা স্থগিত করা; গণ-অভ্যুত্থান ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের নামে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে করা মিথ্যা, বানোয়াট ও গায়েবি মামলা তফসিল ঘোষণার আগেই প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং তফসিল ঘোষণার আগে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় বিবেচনায় দেওয়া সব অস্ত্র সরকারের কাছে জমা দেওয়া নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
এ ছাড়া নির্বাচনে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ায়—এমন অপপ্রচার রোধ; ভোটারদের প্রভাবিত করে এমন ধর্মীয় প্রলোভন বা ধর্মীয় দণ্ড দেওয়ার ভীতি প্রদর্শন রোধ; যতদূর সম্ভব কমসংখ্যক ভোটার নিয়ে ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ; নির্বাচনী আইন ও বিধি পালনে গাফিলতি করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে বিএনপি।
সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির নেতা আবদুল মঈন খান সাংবাদিকদের বলেন, বিগত তিনটি নির্বাচন হয়েছিল প্রহসনের নির্বাচন। কাদের দ্বারা হয়েছিল? যারা সরকারি কর্মকর্তা হয়েও নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা করেছিল, তাদের কারণে হয়েছিল।
১৫ বছর যাদের চরিত্র হনন করেছিল আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারী, তারা ১৫ মাসে শোধিত হয়ে যাবে এতটা আশা করা বাস্তবতা নয়—এ মন্তব্য করে মঈন খান আরও বলেন, ‘কাজেই নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক থাকতে হবে। বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধরা যেন আগামী নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় কোনোভাবে অংশগ্রহণ করতে না পারে, কোনো প্রভাব ফেলতে না পারে। এটা ছিল আমাদের আলোচনার একটি মূল বিষয়।’
বিএনপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। তবে বিএনপির দাবির বিষয়গুলো নিয়ে কমিশন সভায় আলোচনা হতে পারে বলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ঘোষণার আগে-পরে করণীয় ৩৬টি প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে তফসিল ঘোষণার আগেই আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া ‘মিথ্যা ও গায়েবি মামলা’ প্রত্যাহার এবং মাঠপ্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানিয়েছে দলটি। আর ভোটের কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে থেকে ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করতে হবে।
এ ছাড়া বিগত তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা বিতর্কিত ব্যক্তিদের আগামী নির্বাচনে ভোটের প্রক্রিয়ায় না রাখা এবং দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়ার কথাও কমিশনকে বলেছে বিএনপি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক তাদের প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন করেছে। দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং সাবেক সচিব মোহাম্মদ জকরিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, ‘আমরা কোনো প্রস্তাব জমা দেইনি। আলোচনার টকিং পয়েন্ট হিসেবে বেশ কিছু বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে।’ যদিও বিএনপির একটি সূত্র জানায়, লিখিতভাবে ৩৬ দফা প্রস্তাব সামনে রেখে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির প্রতিনিধিদল।
সূত্র জানায়, সিইসির সঙ্গে বৈঠকে তফসিল ঘোষণার আগে স্বৈরাচারী সরকারের আমলে হওয়া মিথ্যা, বানোয়াট ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহার এবং মাঠপ্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলটি বলেছে, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা বিতর্কিত ব্যক্তিদের এবারের ভোটের প্রক্রিয়ায় রাখা যাবে না। এ ছাড়া নির্বাচনের কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে থেকে ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
আর ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইবনে সিনাসহ দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত প্রতিষ্ঠান থেকে যেন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়া হয়।
ভোটে অন্তর্বর্তী সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে এখনই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে এই সরকারের ও ইসির দৃঢ় ভূমিকা চেয়েছে বিএনপি। এ ছাড়া, রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ইসির কর্মকর্তাদের নিয়োগ; নির্বাচনকালীন সব প্রক্রিয়ায় জড়িত বেসামরিক প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব কর্মকর্তার বদলি, পদায়ন, অবস্থান, দায়িত্ব ও তাঁদের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ ইসির এখতিয়ারে নেওয়া; নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন এবং নির্বাচনকে জনগণের কাছে দৃশ্যমান বিশ্বাসযোগ্য করতে বিচার বিভাগীয় ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের পাশাপাশি ইসি কর্মকর্তাদেরও ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া; ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষের কার্যক্রম ছাড়া ভোটকেন্দ্রের অন্যান্য অভ্যন্তরীণ দৃশ্য বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ রাখতে সিসি ক্যামেরা রাখা; প্রতি জেলা, উপজেলা, থানা নির্বাচন অফিসে অভিযোগ নিরসন কেন্দ্র চালুর দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
নির্বাচনসংশ্লিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে বা যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি করে অভিযোগকারীকে লিখিতভাবে জানানো; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি গঠনের নির্দেশনা স্থগিত করা; গণ-অভ্যুত্থান ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের নামে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে করা মিথ্যা, বানোয়াট ও গায়েবি মামলা তফসিল ঘোষণার আগেই প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং তফসিল ঘোষণার আগে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় বিবেচনায় দেওয়া সব অস্ত্র সরকারের কাছে জমা দেওয়া নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
এ ছাড়া নির্বাচনে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ায়—এমন অপপ্রচার রোধ; ভোটারদের প্রভাবিত করে এমন ধর্মীয় প্রলোভন বা ধর্মীয় দণ্ড দেওয়ার ভীতি প্রদর্শন রোধ; যতদূর সম্ভব কমসংখ্যক ভোটার নিয়ে ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ; নির্বাচনী আইন ও বিধি পালনে গাফিলতি করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে বিএনপি।
সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির নেতা আবদুল মঈন খান সাংবাদিকদের বলেন, বিগত তিনটি নির্বাচন হয়েছিল প্রহসনের নির্বাচন। কাদের দ্বারা হয়েছিল? যারা সরকারি কর্মকর্তা হয়েও নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা করেছিল, তাদের কারণে হয়েছিল।
১৫ বছর যাদের চরিত্র হনন করেছিল আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারী, তারা ১৫ মাসে শোধিত হয়ে যাবে এতটা আশা করা বাস্তবতা নয়—এ মন্তব্য করে মঈন খান আরও বলেন, ‘কাজেই নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক থাকতে হবে। বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধরা যেন আগামী নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় কোনোভাবে অংশগ্রহণ করতে না পারে, কোনো প্রভাব ফেলতে না পারে। এটা ছিল আমাদের আলোচনার একটি মূল বিষয়।’
বিএনপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। তবে বিএনপির দাবির বিষয়গুলো নিয়ে কমিশন সভায় আলোচনা হতে পারে বলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
নানা গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল ও তাঁর পূর্ণাঙ্গ কমিশন। আজ দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে তিনি তাঁর লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য দিয়ে উঠে চলে যান। এ সময় সাংবাদিকদের কাছে কোনো প্রশ্ন নেননি তিনি...
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন টেকসই করতে আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা দেওয়ার সুপারিশ করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত সংসদ নিয়মিত আইনসভার পাশাপাশি ২৭০ দিন (৯ মাস) সংবিধান সংস্কার পরিষদের দায়িত্ব পালন করবে।
১৯ মিনিট আগেঅধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি, পদায়ন ও শৃঙ্খলাবিষয়ক সব ক্ষমতা আইন মন্ত্রণালয় থেকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে ন্যস্ত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অধ্যাদেশের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষা।
৫ ঘণ্টা আগেআমির হোসেন তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, আন্দোলনের সময় আফতাবনগরে মামা কফিশপ নামের একটি খাবারের দোকানে চাকরি করতেন তিনি। ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর দোকান থেকে বাসায় যাওয়ার পথে রামপুরা খালের সাঁকো পার হয়ে প্রধান সড়কে গেলে দেখতে পান পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা আন্দোলনকারীদের দিকে গুলি চালাচ্ছেন। ভয়ে তিনি পাশের একটি
৭ ঘণ্টা আগেসুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি, পদায়ন ও শৃঙ্খলাবিষয়ক সব ক্ষমতা আইন মন্ত্রণালয় থেকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে ন্যস্ত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অধ্যাদেশের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষা।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভা হয়। পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
আসিফ নজরুল বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ-২০২৫ নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। অধ্যাদেশটি যখন চূড়ান্ত অনুমোদন হয়ে যাবে, তখন অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদায়ন, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলাবিষয়ক সবকিছু সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব বাজেট ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা থাকবে; আর্থিক স্বাধীনতা থাকবে।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, তাঁদের কাছে মনে হয়েছে, কিছু বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। যেহেতু আর্থিক সংশ্লেষ রয়েছে, তাই অর্থ উপদেষ্টার মতামতের প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করার প্রয়োজন রয়েছে। সেই আলোচনার পর আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবার উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হবে।
উপদেষ্টা পরিষদ দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়াও অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, এটি হলে বাংলাদেশে যাঁরা থাকবেন, তাঁরা বিদেশি হোন আর দেশি হোন, বাংলাদেশে অবস্থানকালে ভিন্ন দেশে দুর্নীতি করলেও এর তদন্ত দুদকের মাধ্যমে করা যাবে। সংশোধনীতে ‘জ্ঞাত আয়’ বলতে ‘বৈধ আয়’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গণভবনে জাদুঘর নির্মাণের জন্য জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর অধ্যাদেশের খসড়ার অনুমোদন হয়েছে।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট শহরে বাংলাদেশের নতুন কনস্যুলেট জেনারেল অফিস করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি, পদায়ন ও শৃঙ্খলাবিষয়ক সব ক্ষমতা আইন মন্ত্রণালয় থেকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে ন্যস্ত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অধ্যাদেশের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষা।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভা হয়। পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
আসিফ নজরুল বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ-২০২৫ নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। অধ্যাদেশটি যখন চূড়ান্ত অনুমোদন হয়ে যাবে, তখন অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদায়ন, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলাবিষয়ক সবকিছু সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব বাজেট ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা থাকবে; আর্থিক স্বাধীনতা থাকবে।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, তাঁদের কাছে মনে হয়েছে, কিছু বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। যেহেতু আর্থিক সংশ্লেষ রয়েছে, তাই অর্থ উপদেষ্টার মতামতের প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করার প্রয়োজন রয়েছে। সেই আলোচনার পর আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবার উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হবে।
উপদেষ্টা পরিষদ দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়াও অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, এটি হলে বাংলাদেশে যাঁরা থাকবেন, তাঁরা বিদেশি হোন আর দেশি হোন, বাংলাদেশে অবস্থানকালে ভিন্ন দেশে দুর্নীতি করলেও এর তদন্ত দুদকের মাধ্যমে করা যাবে। সংশোধনীতে ‘জ্ঞাত আয়’ বলতে ‘বৈধ আয়’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গণভবনে জাদুঘর নির্মাণের জন্য জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর অধ্যাদেশের খসড়ার অনুমোদন হয়েছে।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট শহরে বাংলাদেশের নতুন কনস্যুলেট জেনারেল অফিস করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নানা গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল ও তাঁর পূর্ণাঙ্গ কমিশন। আজ দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে তিনি তাঁর লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য দিয়ে উঠে চলে যান। এ সময় সাংবাদিকদের কাছে কোনো প্রশ্ন নেননি তিনি...
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন টেকসই করতে আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা দেওয়ার সুপারিশ করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত সংসদ নিয়মিত আইনসভার পাশাপাশি ২৭০ দিন (৯ মাস) সংবিধান সংস্কার পরিষদের দায়িত্ব পালন করবে।
১৯ মিনিট আগেআগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ঘোষণার আগে-পরে করণীয় ৩৬টি প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে তফসিল ঘোষণার আগেই আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া ‘মিথ্যা ও গায়েবি মামলা’ প্রত্যাহার এবং মাঠপ্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানিয়েছে দলটি।
১ ঘণ্টা আগেআমির হোসেন তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, আন্দোলনের সময় আফতাবনগরে মামা কফিশপ নামের একটি খাবারের দোকানে চাকরি করতেন তিনি। ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর দোকান থেকে বাসায় যাওয়ার পথে রামপুরা খালের সাঁকো পার হয়ে প্রধান সড়কে গেলে দেখতে পান পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা আন্দোলনকারীদের দিকে গুলি চালাচ্ছেন। ভয়ে তিনি পাশের একটি
৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদের রডে ঝুলে থাকা অবস্থায় পুলিশ পায়ে ছয়টি গুলি করে বলে জানিয়েছেন আমির হোসেন নামে এক তরুণ।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ সাক্ষ্য দেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রামপুরায় চালানো হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্যের পর প্রথম সাক্ষ্য দেন ১৮ বছরের এই তরুণ।
এই মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক এডিসি মো. রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান, রামপুরা থানার সাবেক এসআই তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে আসামি করা হয়েছে।
এর মধ্যে চঞ্চল চন্দ্র সরকার গ্রেপ্তার হলেও বাকিরা পলাতক।
আমির হোসেন তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, আন্দোলনের সময় আফতাবনগরে মামা কফিশপ নামের একটি খাবারের দোকানে চাকরি করতেন তিনি। ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর দোকান থেকে বাসায় যাওয়ার পথে রামপুরা খালের সাঁকো পার হয়ে প্রধান সড়কে গেলে দেখতে পান পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা আন্দোলনকারীদের দিকে গুলি চালাচ্ছে। ভয়ে তিনি পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনের চারতলার ছাদে উঠে যান। তিনজন পুলিশ সদস্য তখন তাঁর পিছু নিলে তিনি ছাদের একটি রড ধরে ঝুলতে থাকেন।
আমির হোসেন বলেন, সে সময় পুলিশের এক সদস্য তাঁকে নিচে ঝাঁপ দিতে বলেন। তা না করলে তিনি পিস্তল দিয়ে পরপর তিনটি গুলি করেন। তিনটি গুলিই পায়ে বিদ্ধ হয়। এরপর আরেকজন পুলিশ পিস্তল দিয়ে তাঁর দিকে আরও তিনটি গুলি ছোড়েন। সেই গুলিও তাঁর পায়ে লাগে। এরপর জ্ঞান হারান তিনি। জ্ঞান ফিরলে নিজেকে ফেমাস হাসপাতালে পান তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদের রডে ঝুলে থাকা অবস্থায় পুলিশ পায়ে ছয়টি গুলি করে বলে জানিয়েছেন আমির হোসেন নামে এক তরুণ।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ সাক্ষ্য দেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রামপুরায় চালানো হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্যের পর প্রথম সাক্ষ্য দেন ১৮ বছরের এই তরুণ।
এই মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক এডিসি মো. রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান, রামপুরা থানার সাবেক এসআই তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে আসামি করা হয়েছে।
এর মধ্যে চঞ্চল চন্দ্র সরকার গ্রেপ্তার হলেও বাকিরা পলাতক।
আমির হোসেন তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, আন্দোলনের সময় আফতাবনগরে মামা কফিশপ নামের একটি খাবারের দোকানে চাকরি করতেন তিনি। ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর দোকান থেকে বাসায় যাওয়ার পথে রামপুরা খালের সাঁকো পার হয়ে প্রধান সড়কে গেলে দেখতে পান পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা আন্দোলনকারীদের দিকে গুলি চালাচ্ছে। ভয়ে তিনি পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনের চারতলার ছাদে উঠে যান। তিনজন পুলিশ সদস্য তখন তাঁর পিছু নিলে তিনি ছাদের একটি রড ধরে ঝুলতে থাকেন।
আমির হোসেন বলেন, সে সময় পুলিশের এক সদস্য তাঁকে নিচে ঝাঁপ দিতে বলেন। তা না করলে তিনি পিস্তল দিয়ে পরপর তিনটি গুলি করেন। তিনটি গুলিই পায়ে বিদ্ধ হয়। এরপর আরেকজন পুলিশ পিস্তল দিয়ে তাঁর দিকে আরও তিনটি গুলি ছোড়েন। সেই গুলিও তাঁর পায়ে লাগে। এরপর জ্ঞান হারান তিনি। জ্ঞান ফিরলে নিজেকে ফেমাস হাসপাতালে পান তিনি।
নানা গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল ও তাঁর পূর্ণাঙ্গ কমিশন। আজ দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে তিনি তাঁর লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য দিয়ে উঠে চলে যান। এ সময় সাংবাদিকদের কাছে কোনো প্রশ্ন নেননি তিনি...
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন টেকসই করতে আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা দেওয়ার সুপারিশ করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত সংসদ নিয়মিত আইনসভার পাশাপাশি ২৭০ দিন (৯ মাস) সংবিধান সংস্কার পরিষদের দায়িত্ব পালন করবে।
১৯ মিনিট আগেআগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ঘোষণার আগে-পরে করণীয় ৩৬টি প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে তফসিল ঘোষণার আগেই আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া ‘মিথ্যা ও গায়েবি মামলা’ প্রত্যাহার এবং মাঠপ্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানিয়েছে দলটি।
১ ঘণ্টা আগেঅধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি, পদায়ন ও শৃঙ্খলাবিষয়ক সব ক্ষমতা আইন মন্ত্রণালয় থেকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে ন্যস্ত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অধ্যাদেশের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষা।
৫ ঘণ্টা আগে