Ajker Patrika

জটিল হচ্ছে ক্যাডারের বিরোধ

  • প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান।
  • বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে বৈঠক।
  • আগামীকাল ১ ঘণ্টার কলমবিরতি ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের।
  • আন্তক্যাডার দ্বন্দ্ব উসকে দেওয়ার জন্য কমিশনকে দুষছে সবাই।
শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এর প্রতিবাদে সচিবালয়ের একটি ভবনের সামনে জড়ো হন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। পরে তাঁরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান নেন। গতকাল সচিবালয়ে।	ছবি: আজকের পত্রিকা
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এর প্রতিবাদে সচিবালয়ের একটি ভবনের সামনে জড়ো হন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। পরে তাঁরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান নেন। গতকাল সচিবালয়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপসচিব পুলের কোটা নিয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ভাবনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ক্যাডারের মধ্যে বিরোধ ক্রমেই জটিল হচ্ছে। একত্র হওয়া ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কলমবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণার পাল্টা হিসেবে প্রশাসন ক্যাডারও পুরোদমে মাঠে নেমেছে। গতকাল রোববার প্রশাসন ক্যাডারের কয়েক শ কর্মকর্তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে কয়েক ঘণ্টা অবস্থান করে নিজেদের দাবি জানিয়েছেন।

প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস করার দাবিতে এই অবস্থান করেন। এত কর্মকর্তার এভাবে অবস্থান নেওয়া নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।

এই অবস্থানের পর প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। তবে অন্য ২৫ ক্যাডারের সঙ্গে আর বৈঠক করবে না তারা। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কমিশন সুপারিশ নেবে।

উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফিরোজ মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোন ক্যাডার সার্ভিস কী সুবিধা পাবে বা না পাবে, সে বিষয়ে কথা বলা সংস্কার কমিশনের কাজ নয়। এখতিয়ারের বাইরে কথা বলে কমিশন আন্তক্যাডার বিতর্ককে উসকে দিয়েছে। এতে সরকার বেকায়দায় পড়তে পারে।

প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে অন্য ২৫ ক্যাডারের এ বিরোধ ও পাল্টাপাল্টি অবস্থানের শুরু জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীর এক মন্তব্যের পর। ১৭ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের সঙ্গে কমিশনের মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি জানান, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ৫০ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কোটা রাখার সুপারিশ করবেন তাঁরা। বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর আন্তক্যাডার বিতর্ক নিরসনের দাবিতে কর্মসূচি পালনরত ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা সংস্কার কমিশনের প্রধানের ওই বক্তব্যের পর বক্তৃতা-বিবৃতিতে এর প্রতিবাদ জানান। প্রশাসন ক্যাডারও পাল্টা বক্তব্য-বিবৃতি দেয়। একপর্যায়ে আগামীকাল মঙ্গলবার সব অফিসে ১ ঘণ্টার কলমবিরতি এবং বৃহস্পতিবার নিজ নিজ কর্মস্থলের সামনে মানববন্ধনের কর্মসূচি দেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

এদিকে প্রশাসন ক্যাডারকে আলাদা করে ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। গত দুই দিন তাঁরা ফেসবুকে নিজেদের প্রোফাইল পরিবর্তন করে একই লোগো যুক্ত করেন।

সচিবালয়ে নজিরবিহীন অবস্থান

গতকাল বেলা ১১টার পর সচিবালয় ও আশপাশে কর্মরত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সচিবালয়ের ৩ নম্বর ভবনের সামনে জড়ো হন। একপর্যায়ে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পূর্বঘোষণা

ছাড়াই চার শতাধিক কর্মকর্তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দ্বিতীয় তলায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধানের দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন। অবশ্য গত শনিবার রাতে প্রশাসন ক্যাডারের ব্যাচভিত্তিক গ্রুপগুলোতে এ কর্মসূচি জানানো হয় বলে কয়েকজন কর্মকর্তা জানান।

প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আনোয়ার উল্লাহ এবং ঢাকার জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদসহ ১৫-২০ জন কর্মকর্তা ভবনের তৃতীয় তলায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের দপ্তরে যান। বেলা পৌনে ১টায় তিনি দপ্তরে গেলে তাঁর সঙ্গে আধা ঘণ্টা বৈঠক করেন তাঁরা। বেলা ২টা পর্যন্ত অবস্থান করেন কর্মকর্তারা।

প্রশাসন ক্যাডারের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রধান এবং সদস্যসচিব নিয়মিত চাকরিতে থাকলে এমন সুপারিশ করার চিন্তা করতেন না। তাঁরা দুজনেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়ন করতে চান। এ জন্যই তাঁরা এ বিতর্ক উসকে দিয়েছেন।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা অন্য কোনো ক্যাডারের পদে যাবেন না। তাঁদের পদেও যাতে কেউ না আসতে পারেন, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্যই তাঁরা প্রশাসন ক্যাডারের জন্য বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছেন।

তবে আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা এখন যৌক্তিক কিছু বলছেন না। উপসচিব পদ শুধু প্রশাসন ক্যাডারের পদ নয়, এটি সরকারের সিনিয়র সার্ভিস পুল (এসএসপি)। এ পদে কাউকে পদোন্নতি দেওয়া হয় না, নিয়োগ দেওয়া হয়। আর নতুন করে নিয়োগের সময় আগের পদ ছেড়ে আসতে হয়।

২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়, উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত পদগুলো সরকারের পদ। এসব পদে সব ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়ে থাকেন।

এভাবে অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, কর্মকর্তারা কমিশনের সদস্যসচিবের মুখ থেকে একটা কথা শোনার জন্য ১০ মিনিটের জন্য এসেছেন। সেটা তো আসতেই পারেন। এখানে কোনো অশোভন আচরণ করা হয়নি। তাঁরা বক্তব্য শোনার জন্য এসেছেন। এটাকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করার সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, ‘তাঁরা তো অ্যাসোসিয়েশন। তাঁরা এখানে হয়তো দল বেঁধে এসেছেন। আমার মনে হয়, এ বিষয়ে কীভাবে পজিটিভভাবে এগোনো যায়। আমরা বিভাগে, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নে গেছি। এখন সেন্ট্রালে কমিশনের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব।’

আবার আলোচনায় বসবে কমিশন

প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর জনপ্রশাসন সচিব জানান, কমিশনের সুপারিশ চূড়ান্ত করার আগে চলতি সপ্তাহেই অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনায় বসবে কমিশন। এরপর বিভিন্ন ক্যাডারের মধ্যে আর ভুল-বোঝাবুঝির সুযোগ থাকবে না। তিনি বলেন, ‘কয়েকটি মৌলিক বিষয় নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। সরকারকে স্থিতিশীল রেখে, জনগণের স্বার্থে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যাতে এগোনো যায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন লিখিত প্রস্তাব জমা দিয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘এটি কমিশনে জমা দেব। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যে কেউ কমিশনকে তথ্য ও সুপারিশ দিতে পারবে।’

জনপ্রশাসন সচিবকে গতকাল দেওয়া লিখিত সুপারিশে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, সিভিল প্রশাসন সার্ভিসকে অন্যান্য টেকনিক্যাল ও প্রফেশনাল ক্যাডারের সংমিশ্রণ থেকে আলাদা করে স্বতন্ত্র বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা আবশ্যক। এ জন্য অন্যান্য টেকনিক্যাল, প্রফেশনাল বা বিষয়ভিত্তিক ক্যাডার সার্ভিস থেকে প্রশাসন ক্যাডারকে আলাদা করে এন্ট্রি পদ সহকারী কমিশনার বা সহকারী সচিব থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদগুলোতে (নন-ক্যাডার পদ ছাড়া) বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যায্যভাবে বাদ দেওয়া উপসচিবের ২৫ শতাংশ পদ আবার এই সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। উপসচিব থেকে শুরু করে সরকারের পদগুলোতে কীভাবে কর্মকর্তাদের পদায়ন হবে, এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের রায়ের কপিও জনপ্রশাসন সচিবকে দেয় অ্যাসোসিয়েশন।

এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার উল্লাহ বলেন, ‘আমরা কোনো ক্যাডারকে আন্ডারমাইন্ড করছি না। যার যার অবস্থান বা পদ থেকে ওপরে ওঠার যে সুযোগ রয়েছে, সেটা অবারিত আছে। সেখানে আমরা কখনো কারও বিরুদ্ধাচরণ করছি না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কমিশনের সঙ্গে আরও একবার বসার সুযোগ চাই।’

উপসচিব পুলে কোটা এল যেভাবে

১৯৯২ সালে সচিবালয় ক্যাডারকে প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে একীভূত করে সচিবালয় ক্যাডারের সব পদ প্রশাসন ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৯৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নীতিমালা জারি করে উপসচিব পদে পদোন্নতিতে ২৫ শতাংশ পদ অন্যান্য ক্যাডার সার্ভিসের মধ্যে আনুপাতিকভাবে বণ্টন করে কোটাপদ্ধতি চালু করে।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফিরোজ মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সেবার উন্নতি, দুর্নীতি, হয়রানি ও রাজনীতিকীকরণ বন্ধ, জনসেবার মানোন্নয়ন, সরকারি কর্মচারীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার মতো মূল কাজের বাইরে গিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। কোন ক্যাডারকে কী দেবে না দেবে, সেটি তো কমিশনের বলার কথা নয়। আন্তক্যাডার বৈষম্য দূর করা কী তাদের কাজ? সব পক্ষেরই দাবিদাওয়া আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসনে আলাদা কমিটি করা যেতে পারে। এখন যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, এটা সহজে মিটবে না। এক পক্ষকে যখন সুবিধা দেবে, করপোরেশনসহ অন্যরাও রাস্তায় নেমে গেলে সরকারের কী হবে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংশোধিত আরপিও নিয়ে বিতর্ক, এল যেসব পরিবর্তন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বৃহস্পতিবার সংশোধিত আরপিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যুক্ত করা হয়েছে নতুন বিধান, আবার কিছু কিছু বিধান আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইভিএম ব্যবহার বাতিল, ‘না ভোট’ পুনর্বহাল, প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয় ও সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশের বাধ্যবাধকতা এবং পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা।

সংশোধিত আরপিওর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:

আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক আসামি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে তাঁকে না ভোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। নির্বাচনে না ভোট বেশি হলে সেখানে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন হবে। তবে দ্বিতীয়বারও একক প্রার্থী হলে সেই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।

ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার বিধানটিও যুক্ত করা হয়েছে। তবে ভোট গণনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকতে হবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী তথা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলাভিত্তিক নির্বাচন অফিসগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রার্থীদের দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আয় ও সম্পত্তির বিবরণ হলফনামায় দিতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করা হবে।

আগে দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে জোটের যেকোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করতে পারত। সেটি সংশোধন করা হয়েছে। জোটভুক্ত হলেও প্রার্থীকে নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ভোটের সময় অনেকে জোটভুক্ত হলে জনপ্রিয় বা বড় দলের মার্কায় ভোট করতেন। এখন আর সে সুযোগ থাকছে না।

প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের বিধানটি আরপিওতে যুক্ত করা হয়েছে। এবার আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের পাশাপাশি আইনি হেফাজতে থাকা, সরকারি কর্মকর্তা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা ভোট দিতে পারবেন।

প্রার্থীর জামানত বাড়ানো হয়েছে। আগে ২০ হাজার টাকা ছিল, তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো রাজনৈতিক দলকে ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান দিতে চাইলে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। যিনি অনুদান দেবেন, তাঁর ট্যাক্স রিটার্নও দিতে হবে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন পুরো আসনের ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা কমিয়েছিল। সংশোধিত আরপিওতে শুধু ভোটকেন্দ্র নয়, অনিয়ম হলে ইসি পুরো আসনের ভোট বন্ধ করতে পারবে, সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রার্থীর হলফনামায় আগে শুধু দেশের সম্পদের হিসাব দেওয়া হতো। সংশোধিত আরপিওতে শুধু দেশের নয়, বিদেশের আয়ের উৎস, সম্পত্তির বিবরণ দিতে হবে।

এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-সংক্রান্ত বিধানটি সংশোধিত আরপিও থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত নয়, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও দরকার: আসিফ নজরুল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ৪৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ। গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত সংস্কার নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও।

আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে অনুষ্ঠিত ‘Ensuring Justice: The Role of the Judiciary in Addressing Enforced Disappearances’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গুম-সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির উদ্যোগে এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

কর্মশালায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘অনেক প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ একটি পরিবর্তিত পরিবেশে অবস্থান করছি। এই পরিবর্তন স্থায়ী করতে হলে গুমের বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’

বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গুমের বিচার বাস্তবায়নে বিচারকদের সাহসী ও ন্যায্য ভূমিকা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও দৃঢ় অবস্থানই একদিন বাংলাদেশ থেকে গুমের সংস্কৃতি নির্মূল করবে।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রায় লেখা একটি সৃজনশীল শিল্প। তাই বিচারকেরা হলেন সৃজনশীল শিল্পী। তাঁদের শিল্পকর্মই তাঁদের রায়।

তিনি বলেন, গুম প্রতিরোধে বিচার বিভাগ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মানবাধিকার কাঠামোর মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি গুমের বিচার নিশ্চিতের মূল চাবিকাঠি।

কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বলেন, গুম-সংক্রান্ত মামলাগুলোর কার্যকর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি। কমিশন এরই মধ্যে বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গুম-সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, সাক্ষী সুরক্ষা ও ভুক্তভোগী পরিবারের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রস্তুত করছে।

কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার-বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিনেটে শুনানিতে ট্রাম্প–মনোনীত রাষ্ট্রদূত

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন। ছবি: সংগৃহীত
গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, নিয়োগ পেলে চীনা কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত ঝুঁকিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তাঁর মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা বলেন ক্রিস্টেনসেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মমোনীত এই কূটনীতিক বলেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেলে তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে সামরিক সহযোগিতা, সামুদ্রিক কর্মকাণ্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে সম্পৃক্ততাসহ চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরবনে। পাশাপাশি সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারত্ব ঘনিষ্ঠ করার জন্য কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দেন ক্রিস্টেনসেন।

গত ২ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন। সিনেট কমিটির অনুমোদনের পরই তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত হবে। এই মনোনয়ন নিয়ে শুনানিতে চার রাষ্ট্রদূত প্রার্থী লিখিত বিবৃতি তুলে ধরেন। পরে তাঁরা সিনেট সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরে নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস শুনানিতে বলেন, ‘আমরা এখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মুখে। বাংলাদেশ ও চীনের সামরিক সহযোগিতা দ্রুত বাড়ছে। যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন রাখার জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি কৌশলগত সাবমেরিন ঘাঁটি আধুনিকায়ন করেছে চীন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার চীনের তৈরি ২০টি জে-১০ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নতুন সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ও দূরপাল্লার রাডার কেনার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ পেলে চীনা সামরিক সরঞ্জামের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে বাংলাদেশের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে ক্রিস্টেনসেন কীভাবে কাজ করবেন, তা জানতে চান সিনেটর রিকেটস।

নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস। ছবি: সংগৃহীত
নেব্রাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর জন পিটার রিকেটস। ছবি: সংগৃহীত

জবাবে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব নিয়ে আপনাদের মতো উদ্বেগ আমারও। রাষ্ট্রদূত নিয়োগ আমি বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থেকে চীনের কার্যক্রমের ঝুঁকি ব্যাখ্যা করব। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা তুলে ধরব, যা দুই দেশের সামরিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।’

এ সময় সিনেটর রিকেটস বলেন, ‘এই শুনানির আগের দিনই সিনেট পররাষ্ট্র কমিটি সর্বসম্মতভাবে ‘থিংক টোয়াইস অ্যাক্ট’ পাস করেছে। এই আইন যুক্তরাষ্ট্রকে পূর্ণাঙ্গ কৌশল নিতে বাধ্য করবে, যাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশকে চীনা অস্ত্র কেনা থেকে বিরত রাখা যায়। আমরা আশা করি, আপনিও এই আইনের সহায়তা নিয়ে কাজ করবেন। তাহলে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধ সম্ভব হবে।’

তাঁর এই মন্তব্যের সূত্র ধরে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘সামরিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চমূল্যের সামরিক সরঞ্জামের বিকল্প হিসেবে মিত্রদেশগুলোর তৈরি সাশ্রয়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা বাংলাদেশকে জানাতে পারি। পাশাপাশি যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্ল্যাটফর্মগুলোকে অন্যান্য মিত্র বাহিনীর সঙ্গে আরও সমন্বিত ও কার্যকর করতে পারি।’

শুনানির শুরুতে লিখিত বিবৃতিতে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে যে গণআন্দোলন হয়েছিল, তা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সরকারকে পতন ঘটায়। আগামী বছর বাংলাদেশের জনগণ ভোটে যাবে, যা দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের যাত্রায় পাশে থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অনেক সময় তাঁর প্রাপ্য মনোযোগ পায় না, বড় প্রতিবেশীদের আড়ালে গুরুত্ব হারিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রসেবায় আমার দুই দশকের অভিজ্ঞতা, যার মধ্যে ঢাকার কর্মকালও রয়েছে। তাই, আমি বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থান বাংলাদেশকে উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার করে তুলেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ড তদন্তে চার দেশের বিশেষজ্ঞ আনা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫৩
বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল গেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল গেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন লাগার কারণ ও দায়ীদের খুঁজে বের করতে চারটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ ও ই-গেট পরিদর্শন শেষে বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল গেটে সাংবাদিকদের তিনি এই তথ্য জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অব্যবস্থাপনার বিষয়টি তদন্তের জন্য আমরা চারটি দেশকে ইনভাইট করেছি। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও তুরস্ককে আসতে বলেছি। তাদের স্পেশালিস্ট আমরা আনতে চাচ্ছি। তারা তদন্ত করে কারণটা কী এবং কে দায়ী বের করবে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দরের ভেতরে চারটি ইউনিট আছে। চারটি ইউনিটই কাজ করছে। আমরা আশা করছিলাম তাড়াতাড়ি কন্ট্রোলে আসবে। কন্ট্রোলে আসতে একটু সময় লাগছে। যেহেতু বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থা চিন্তা করতে হয়। যেহেতু দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। অনেক সময় বাতাস থাকলে নেভাতে সময় লাগে।’

কার্গো ভিলেজে বিশেষায়িত ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কেন ছিল না—এই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আগুন নেভানোর জন্য বিমানে যে ইউনিট থাকে, সেটা কার্গো ভিলেজেও কাজ করতে পারে। এটিতে কোনো অসুবিধা নাই।’

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, ‘আগুন নেভাতে কেউ ফেল করেনি। কিন্তু সময় লাগছে। ফেল করলে সব জ্বলে যেত। ওই দিন রাত ৯টার সময় বিমানবন্দর চালু করে দিয়েছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দর অথরিটির চারটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট আছে। সেগুলো ৩০ সেকেন্ডের ভেতরে চলে আসছিল। ফায়ার সার্ভিসের যে ইউনিটগুলো আছে, তার একটি দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের ওখানে, আরেকটি কুর্মিটোলায়। সেগুলো ২০ মিনিটের ভেতরে চলে আসছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘যেখানে আগুন ধরেছে, সেখানে কেমিক্যাল ও গার্মেন্টস ম্যাটেরিয়াল ছিল। দাহ্য পদার্থ খুব বেশি ছিল। যার কারণে আগুনটা ছড়িয়ে গেছে তাড়াতাড়ি। কন্ট্রোল করতে সময় নিয়েছে।’

১৮ অক্টোবর বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট-সংলগ্ন আমদানি কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টায় রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু পুরোপুরি নির্বাপণ হয় ২৬ ঘণ্টা পর ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টার দিকে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬২০ টাকায় গরুর মাংস, মাইকিং করেও মিলছে না ক্রেতা

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলে রাইফেল দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, গ্রেপ্তার ১

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত