তানভীর অপু
অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার যাত্রা শুরু হলো। নাইরোবির কোলাহলমুখর শহরের ব্যস্ততা পেছনে ফেলে আমরা এগোলাম উত্তরের দিকে—রহস্যময় লেক তুরকানার উদ্দেশে। কেনিয়ার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের কাউন্টি তুরকানা। লোড়ওয়ার সেই কাউন্টি বা রাজ্যের সদর দপ্তর, মরুভূমির শেষ প্রহরী ও লেক তুরকানার প্রবেশপথ। তুরকানায় আমাদের এ যাত্রা দুই হাজার কিলোমিটারের বেশি।
কত দিন ধরে বুকের ভেতর জমে থাকা স্বপ্ন, মানচিত্রে আঙুল রেখে কল্পনায় যাকে স্পর্শ করেছি, বইয়ের পাতায় যার রূপকথার মতো উপস্থিতি অনুভব করেছি, এবার সেটিই বাস্তবে রূপ নিচ্ছে! জীবনের সব স্বপ্ন হয়তো পূর্ণ হয় না, তবে কিছু স্বপ্ন এভাবে একদিন আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায়, যেন নিয়তির অদৃশ্য আঙুলে লেখা ছিল সেই মুহূর্ত।
তুরকানা, আফ্রিকার হৃদয়ে লুকিয়ে থাকা এক রহস্য কাব্য। মরুভূমি আর হ্রদের সংযোগস্থলে প্রকৃতি যেন নিজস্ব রঙে এঁকেছে এক আশ্চর্য চিত্রপট। পান্না রং জলের লেক তুরকানা পরিচিত ‘দ্য জেড সি’ নামে, মরুভূমির তপ্ত বুকের মাঝে শীতলতার এক অবিরাম স্রোত। পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমির হ্রদ এটি। এখানে পৌঁছাতে শত শত কিলোমিটার নির্জন ও ধূসর ভূমি পাড়ি দিতে হয়। প্রকৃতির কাছে এটি মানুষের ধৈর্য, সহনশীলতা আর সাহসের এক চরম পরীক্ষা।
এই অভিযানে উগান্ডা থেকে আমাদের সঙ্গী হয়েছেন মুজাহিদুল ইসলাম জাহিদ—আমাদের বড় ভাই ও বন্ধু। তাঁর গাড়ি নিয়েই আমাদের এবারের যাত্রা। নাইরোবি থেকে যোগ দিয়েছেন শামস ভাই, বাংলাদেশের ভ্রমণ যুবরাজ তারেক অণু এবং আমাদের ড্রাইভার উগান্ডার ইব্রাহিম। আমরা যেন এক অভিযাত্রী দল; যারা জানে, সামনে আছে ক্লান্তি, কষ্ট, অনিশ্চয়তা। কিন্তু সেই সঙ্গে আছে আবিষ্কারের আনন্দ এবং অজানা দিগন্তের প্রতি অগাধ কৌতূহল।
নাইরোবি থেকে যাত্রা শুরু হতেই চোখে পড়ল নতুন দৃশ্যপট। প্রথমে পৌঁছালাম নাকুরুতে। লেক নাকুরুর তীরে গোলাপি ফ্লেমিঙ্গোর ঝাঁক যেন রঙের কারুকাজে সাজিয়ে রেখেছিল পুরো অঞ্চল। শুষ্ক মরুভূমি ও নীলাভ জলরাশির মাঝে এই রঙের ছোঁয়া যেন প্রাণের এক প্রত্যাশা জাগিয়ে তুলল। এরপর এগোলাম মারিগাটের দিকে, যেখানে প্রকৃতির রূপ ক্রমেই পাল্টে যেতে যেতে সবুজও মিলিয়ে গেল ধূসর মরুভূমির সঙ্গে। বাতাস শুষ্ক; ধুলা উড়ছে, মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে দিগন্তের দিকে নীরব মিছিল করতে করতে এগিয়ে যাওয়া উটের সারি।
পথে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে আমরা পা রাখলাম বিশ্বের অন্যতম ভূতাত্ত্বিক বিস্ময়, গ্রেট রিফট ভ্যালিতে। হাজার হাজার বছর আগে সৃষ্টি হওয়া পৃথিবীর বিশাল ফাটল এটি, যা আজও ধীরে ধীরে প্রসারিত হচ্ছে। এই ভ্যালি শুধু প্রকৃতির ক্ষতচিহ্ন নয়, মানবজাতির ইতিহাসের জন্মভূমি। গবেষকেরা জানিয়েছেন, এখানেই আমাদের প্রাচীন পূর্বপুরুষ অস্ট্রালোপিথেকাস বা হোমো হাবিলিসের অস্তিত্ব মিলেছে। তাই এই অঞ্চল কেবল ভ্রমণের জন্য নয়, মানবসভ্যতার শিকড় স্পর্শ করার অনন্য অভিজ্ঞতা।
উত্তরে যতই এগোচ্ছি, ততই বদলে যাচ্ছে প্রকৃতির রং ও রূপ। পাহাড়ি সবুজ ক্রমেই মিলিয়ে যাচ্ছে শুষ্ক মরুভূমির ধূসর রঙের সঙ্গে। সূর্যের তীব্র তাপ আমাদের সহনশীলতার পরীক্ষা নিচ্ছে। এসব দেখতে দেখতে সামনে খুলে গেল এক অনন্ত ধূসর মরুভূমি। ধূলিঝড়, পাথুরে প্রান্তর এবং অসহনীয় রোদ মিলিয়ে তৈরি করল এমন এক দৃশ্য, যেন পৃথিবীর অন্য কোনো গ্রহে এসে পড়েছি। অথচ এই কঠিন পরিবেশেও মানুষ টিকে আছে, তাদের জীবনযাত্রার শক্তি, দৃঢ়তা আর ধৈর্য চোখে পড়ার মতো।
তুরকানা জনগোষ্ঠী এখানে দীর্ঘ প্রজন্ম ধরে জীবনযাপন করছে মাছ ধরা, পশুপালন এবং হ্রদের সঙ্গে জীবনকে সংযুক্ত করে। তাদের চোখে জ্বলজ্বল করে টিকে থাকার শক্তি। তাদের গান ও নাচে প্রতিধ্বনিত হয় প্রাচীন আফ্রিকার সুর। জীবন যেখানে কঠিন, সেখানে তাদের সংস্কৃতি হয়ে উঠেছে শক্তির এক উদাহরণ।
অবশেষে মরুভূমি পেরিয়ে আমরা যখন সামনে দেখলাম লেক তুরকানার বিস্তৃতি, মনে হলো, মরুভূমির বুক ফুঁড়ে এক অলৌকিক স্বর্গের মুখোমুখি আমরা। আগ্নেয়গিরির কালো পাহাড় ও ধূসর মাটির মাঝে পান্না রঙের জলরাশিতে চোখ আটকে গেল।
এ যেন শব্দে ব্যাখ্যা না করতে পারে প্রকৃতির এক অদ্ভুত সৃষ্টি! এই লেককে বলা হয় ক্রেডেল অব হিউম্যানিটি—মানবজাতির জন্মভূমি। এখানে আবিষ্কৃত হয়েছে বহু প্রাচীন মানবজাতির নিদর্শন। আধুনিকতার ছোঁয়া এই অঞ্চলে পুরোপুরি পৌঁছায়নি, মনে হয় আমরা প্রাগৈতিহাসিক যুগের জীবন্ত জাদুঘরে প্রবেশ করেছি।
আমাদের প্রথম স্টপ ছিল মারিগাট। ছোট অথচ প্রাণবন্ত এই শহর মরুভূমির কঠিনতার মাঝেও আলাদা সৌন্দর্য ছড়িয়ে রেখেছে। স্থানীয়দের জীবিকা মূলত মাছ ধরা। লেকের তীরে আধুনিক মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রকে ভিত্তি করে এরা স্থানীয় অর্থনীতি সচল রাখে। আবহাওয়া কঠিন, প্রচণ্ড গরম, তীব্র বাতাস ও ধূলিময় পরিবেশ। গবাদিপশুও এখানে টিকে থাকতে হিমশিম খায়। তবু মানুষের চোখে হতাশার ছায়া নেই, আছে দৃঢ়তা এবং বেঁচে থাকার প্রাণশক্তি।
মারিগাটের বিকেলের আলো আমাদের মনে গেঁথে গেল। লেকের জলে সূর্যের শেষ রশ্মি পড়তেই মনে হলো, মরুভূমির বুকেও একটুকরা নীল স্বপ্ন লুকিয়ে আছে। এখানেই আমরা প্রকৃতির কঠোরতার ভেতরে এক অচেনা মায়ার ছোঁয়া পেলাম।
এর পরের গন্তব্য কালোকল। লেক তুরকানার পশ্চিম তীরে অবস্থিত এই শহর তুরকানা কাউন্টির কালোকল ডিভিশনের প্রশাসনিক সদর দপ্তর। এখানে এসে অনুভব করলাম, আমরা আরও গভীরভাবে প্রবেশ করেছি আফ্রিকার রহস্যময় জগতে—চারপাশে বিস্তৃত মরুভূমি, সীমিত পশুপালন, তার মাঝেই টিকে থাকার সংগ্রাম।
দুই হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ ঘুরে আমরা ধীরে ধীরে ফিরে এলাম লোড়ওয়ার শহরে, যেখান থেকে শুরু হয়েছিল আমাদের অভিযাত্রা। মরুভূমির দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার পর নতুন জীবনের দরজা খুলে গেল সামনে! পথে আমরা দেখেছি ধুলা ওড়ানো প্রান্তর, রোদ্দুরে জ্বলতে থাকা ধূসর ভূমি এবং বাতাসে বালুকণার সংগীত। মনে হচ্ছিল যেন পৃথিবী থেকে জল, সবুজ, আর্দ্রতা—সবকিছু কেড়ে রেখেছে শুধু আগুনের আভা আর বালুর গন্ধ।
লোড়ওয়ারই আমাদের যাত্রার শেষ নয়। এখান থেকে শুরু হবে লেক তুরকানার পথে নতুন অধ্যায়, যাকে বলা হয় মরুভূমির বুকের সমুদ্র। নীলাভ ঢেউ শতাব্দী ধরে টেনে নিয়েছে অভিযাত্রী ও স্বপ্নবাজদের।
অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার যাত্রা শুরু হলো। নাইরোবির কোলাহলমুখর শহরের ব্যস্ততা পেছনে ফেলে আমরা এগোলাম উত্তরের দিকে—রহস্যময় লেক তুরকানার উদ্দেশে। কেনিয়ার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের কাউন্টি তুরকানা। লোড়ওয়ার সেই কাউন্টি বা রাজ্যের সদর দপ্তর, মরুভূমির শেষ প্রহরী ও লেক তুরকানার প্রবেশপথ। তুরকানায় আমাদের এ যাত্রা দুই হাজার কিলোমিটারের বেশি।
কত দিন ধরে বুকের ভেতর জমে থাকা স্বপ্ন, মানচিত্রে আঙুল রেখে কল্পনায় যাকে স্পর্শ করেছি, বইয়ের পাতায় যার রূপকথার মতো উপস্থিতি অনুভব করেছি, এবার সেটিই বাস্তবে রূপ নিচ্ছে! জীবনের সব স্বপ্ন হয়তো পূর্ণ হয় না, তবে কিছু স্বপ্ন এভাবে একদিন আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায়, যেন নিয়তির অদৃশ্য আঙুলে লেখা ছিল সেই মুহূর্ত।
তুরকানা, আফ্রিকার হৃদয়ে লুকিয়ে থাকা এক রহস্য কাব্য। মরুভূমি আর হ্রদের সংযোগস্থলে প্রকৃতি যেন নিজস্ব রঙে এঁকেছে এক আশ্চর্য চিত্রপট। পান্না রং জলের লেক তুরকানা পরিচিত ‘দ্য জেড সি’ নামে, মরুভূমির তপ্ত বুকের মাঝে শীতলতার এক অবিরাম স্রোত। পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমির হ্রদ এটি। এখানে পৌঁছাতে শত শত কিলোমিটার নির্জন ও ধূসর ভূমি পাড়ি দিতে হয়। প্রকৃতির কাছে এটি মানুষের ধৈর্য, সহনশীলতা আর সাহসের এক চরম পরীক্ষা।
এই অভিযানে উগান্ডা থেকে আমাদের সঙ্গী হয়েছেন মুজাহিদুল ইসলাম জাহিদ—আমাদের বড় ভাই ও বন্ধু। তাঁর গাড়ি নিয়েই আমাদের এবারের যাত্রা। নাইরোবি থেকে যোগ দিয়েছেন শামস ভাই, বাংলাদেশের ভ্রমণ যুবরাজ তারেক অণু এবং আমাদের ড্রাইভার উগান্ডার ইব্রাহিম। আমরা যেন এক অভিযাত্রী দল; যারা জানে, সামনে আছে ক্লান্তি, কষ্ট, অনিশ্চয়তা। কিন্তু সেই সঙ্গে আছে আবিষ্কারের আনন্দ এবং অজানা দিগন্তের প্রতি অগাধ কৌতূহল।
নাইরোবি থেকে যাত্রা শুরু হতেই চোখে পড়ল নতুন দৃশ্যপট। প্রথমে পৌঁছালাম নাকুরুতে। লেক নাকুরুর তীরে গোলাপি ফ্লেমিঙ্গোর ঝাঁক যেন রঙের কারুকাজে সাজিয়ে রেখেছিল পুরো অঞ্চল। শুষ্ক মরুভূমি ও নীলাভ জলরাশির মাঝে এই রঙের ছোঁয়া যেন প্রাণের এক প্রত্যাশা জাগিয়ে তুলল। এরপর এগোলাম মারিগাটের দিকে, যেখানে প্রকৃতির রূপ ক্রমেই পাল্টে যেতে যেতে সবুজও মিলিয়ে গেল ধূসর মরুভূমির সঙ্গে। বাতাস শুষ্ক; ধুলা উড়ছে, মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে দিগন্তের দিকে নীরব মিছিল করতে করতে এগিয়ে যাওয়া উটের সারি।
পথে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে আমরা পা রাখলাম বিশ্বের অন্যতম ভূতাত্ত্বিক বিস্ময়, গ্রেট রিফট ভ্যালিতে। হাজার হাজার বছর আগে সৃষ্টি হওয়া পৃথিবীর বিশাল ফাটল এটি, যা আজও ধীরে ধীরে প্রসারিত হচ্ছে। এই ভ্যালি শুধু প্রকৃতির ক্ষতচিহ্ন নয়, মানবজাতির ইতিহাসের জন্মভূমি। গবেষকেরা জানিয়েছেন, এখানেই আমাদের প্রাচীন পূর্বপুরুষ অস্ট্রালোপিথেকাস বা হোমো হাবিলিসের অস্তিত্ব মিলেছে। তাই এই অঞ্চল কেবল ভ্রমণের জন্য নয়, মানবসভ্যতার শিকড় স্পর্শ করার অনন্য অভিজ্ঞতা।
উত্তরে যতই এগোচ্ছি, ততই বদলে যাচ্ছে প্রকৃতির রং ও রূপ। পাহাড়ি সবুজ ক্রমেই মিলিয়ে যাচ্ছে শুষ্ক মরুভূমির ধূসর রঙের সঙ্গে। সূর্যের তীব্র তাপ আমাদের সহনশীলতার পরীক্ষা নিচ্ছে। এসব দেখতে দেখতে সামনে খুলে গেল এক অনন্ত ধূসর মরুভূমি। ধূলিঝড়, পাথুরে প্রান্তর এবং অসহনীয় রোদ মিলিয়ে তৈরি করল এমন এক দৃশ্য, যেন পৃথিবীর অন্য কোনো গ্রহে এসে পড়েছি। অথচ এই কঠিন পরিবেশেও মানুষ টিকে আছে, তাদের জীবনযাত্রার শক্তি, দৃঢ়তা আর ধৈর্য চোখে পড়ার মতো।
তুরকানা জনগোষ্ঠী এখানে দীর্ঘ প্রজন্ম ধরে জীবনযাপন করছে মাছ ধরা, পশুপালন এবং হ্রদের সঙ্গে জীবনকে সংযুক্ত করে। তাদের চোখে জ্বলজ্বল করে টিকে থাকার শক্তি। তাদের গান ও নাচে প্রতিধ্বনিত হয় প্রাচীন আফ্রিকার সুর। জীবন যেখানে কঠিন, সেখানে তাদের সংস্কৃতি হয়ে উঠেছে শক্তির এক উদাহরণ।
অবশেষে মরুভূমি পেরিয়ে আমরা যখন সামনে দেখলাম লেক তুরকানার বিস্তৃতি, মনে হলো, মরুভূমির বুক ফুঁড়ে এক অলৌকিক স্বর্গের মুখোমুখি আমরা। আগ্নেয়গিরির কালো পাহাড় ও ধূসর মাটির মাঝে পান্না রঙের জলরাশিতে চোখ আটকে গেল।
এ যেন শব্দে ব্যাখ্যা না করতে পারে প্রকৃতির এক অদ্ভুত সৃষ্টি! এই লেককে বলা হয় ক্রেডেল অব হিউম্যানিটি—মানবজাতির জন্মভূমি। এখানে আবিষ্কৃত হয়েছে বহু প্রাচীন মানবজাতির নিদর্শন। আধুনিকতার ছোঁয়া এই অঞ্চলে পুরোপুরি পৌঁছায়নি, মনে হয় আমরা প্রাগৈতিহাসিক যুগের জীবন্ত জাদুঘরে প্রবেশ করেছি।
আমাদের প্রথম স্টপ ছিল মারিগাট। ছোট অথচ প্রাণবন্ত এই শহর মরুভূমির কঠিনতার মাঝেও আলাদা সৌন্দর্য ছড়িয়ে রেখেছে। স্থানীয়দের জীবিকা মূলত মাছ ধরা। লেকের তীরে আধুনিক মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রকে ভিত্তি করে এরা স্থানীয় অর্থনীতি সচল রাখে। আবহাওয়া কঠিন, প্রচণ্ড গরম, তীব্র বাতাস ও ধূলিময় পরিবেশ। গবাদিপশুও এখানে টিকে থাকতে হিমশিম খায়। তবু মানুষের চোখে হতাশার ছায়া নেই, আছে দৃঢ়তা এবং বেঁচে থাকার প্রাণশক্তি।
মারিগাটের বিকেলের আলো আমাদের মনে গেঁথে গেল। লেকের জলে সূর্যের শেষ রশ্মি পড়তেই মনে হলো, মরুভূমির বুকেও একটুকরা নীল স্বপ্ন লুকিয়ে আছে। এখানেই আমরা প্রকৃতির কঠোরতার ভেতরে এক অচেনা মায়ার ছোঁয়া পেলাম।
এর পরের গন্তব্য কালোকল। লেক তুরকানার পশ্চিম তীরে অবস্থিত এই শহর তুরকানা কাউন্টির কালোকল ডিভিশনের প্রশাসনিক সদর দপ্তর। এখানে এসে অনুভব করলাম, আমরা আরও গভীরভাবে প্রবেশ করেছি আফ্রিকার রহস্যময় জগতে—চারপাশে বিস্তৃত মরুভূমি, সীমিত পশুপালন, তার মাঝেই টিকে থাকার সংগ্রাম।
দুই হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ ঘুরে আমরা ধীরে ধীরে ফিরে এলাম লোড়ওয়ার শহরে, যেখান থেকে শুরু হয়েছিল আমাদের অভিযাত্রা। মরুভূমির দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার পর নতুন জীবনের দরজা খুলে গেল সামনে! পথে আমরা দেখেছি ধুলা ওড়ানো প্রান্তর, রোদ্দুরে জ্বলতে থাকা ধূসর ভূমি এবং বাতাসে বালুকণার সংগীত। মনে হচ্ছিল যেন পৃথিবী থেকে জল, সবুজ, আর্দ্রতা—সবকিছু কেড়ে রেখেছে শুধু আগুনের আভা আর বালুর গন্ধ।
লোড়ওয়ারই আমাদের যাত্রার শেষ নয়। এখান থেকে শুরু হবে লেক তুরকানার পথে নতুন অধ্যায়, যাকে বলা হয় মরুভূমির বুকের সমুদ্র। নীলাভ ঢেউ শতাব্দী ধরে টেনে নিয়েছে অভিযাত্রী ও স্বপ্নবাজদের।
প্রতিদিনের ছোট ছোট ভুল অভ্যাস আমাদের দীর্ঘ মেয়াদে স্বাস্থ্যহানির কারণ হতে পারে। আমরা অনেক সময় বুঝতে পারি না, নিয়মিত খাওয়ার সময়ে কত রকম অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে উঠেছে। সেই সাধারণ ভুলগুলো জানা থাকলে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করুন। আর জানা না থাকলে জেনে নিয়ে তারপর বাদ দিন।
৩৪ মিনিট আগে‘মেধা’ শুধু আইকিউ বা ডিগ্রির মাপকাঠিতে সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি জাতির সংস্কৃতি, উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা, গবেষণার প্রতি নিষ্ঠা এবং শিক্ষার প্রতি প্রতিশ্রুতির সম্মিলিত প্রকাশ। সম্প্রতি ‘ওয়ার্ল্ড অব কার্ড গেমস’ বিশ্বে উল্লেখযোগ্য মেধাবী ১০টি দেশের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।
৩ ঘণ্টা আগেদুবাই পৌরসভা সম্প্রতি উদ্বোধন করেছে ইকুয়েস্ট্রিয়ান ট্র্যাক। এটি দুবাইয়ের হাট্টা অঞ্চলে তৈরি এ রকম প্রথম ট্রাক। মরুভূমির বালুতে ঘোড়দৌড়ের ট্র্যাককে বলে ইকুয়েস্ট্রিয়ান ট্র্যাক। পর্যটকদের মরুভূমিতে ঘোড়দৌড়ের অসাধারণ অনুভূতি দিতে এটি তৈরি করা হয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগেসুন্দর সমুদ্রসৈকত, বিলাসবহুল রিসোর্ট এবং ব্যতিক্রমী আতিথেয়তা। এই তিন সুবিধার জন্য ভ্রমণের তালিকায় প্রথমেই আসত থাইল্যান্ডের নাম। দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম সেরা গন্তব্য ছিল থাইল্যান্ড। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির এই অবস্থানকে চ্যালেঞ্জে ফেলে দিয়েছে পাশের দেশ ভিয়েতনাম।
১০ ঘণ্টা আগে