Ajker Patrika

ফিল্ম লোকেশন ট্যুর

কে ড্রামার জনপ্রিয় ৪ দ্বীপ

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
দাদেওহায়ান হেইসাং গুক দ্বীপ। ছবি: সংগৃহীত
দাদেওহায়ান হেইসাং গুক দ্বীপ। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপ। সেখানে সমুদ্রের নারী ডুবুরিদের বলা হয় হ্যানিও। এমনই একজন হ্যানিও কন্যা এ সান। তিনি লেখাপড়া করতে চান এবং নিজের জীবন নিজে গড়তে চান। কিন্তু সমাজের রক্ষণশীলতা, দারিদ্র্য আর নারীদের ওপর চাপ তাঁর পথের বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অন্য দিকে গোয়ান সেক একজন স্বল্পভাষী কৃষক। তিনি নিবিড়ভাবে ভালোবাসেন সেই হ্যানিও কন্যা এ সান–কে। সময়টা ষাটের দশক। সে সময় থেকে এ সান ও গোয়ান সেকের গল্প গড়ে ওঠে ধীরে ধীরে। গল্পটি একদিকে প্রেমের অন্যদিকে সময়, সমাজ ও টিকে থাকার লড়াইয়ের। নেটফ্লিক্সের এই রোমান্টিক কোরিয়ান সিরিজটির নাম ‘হোয়েন লাইফ গিভিস ইউ ট্যাঞ্জেরিন’।

সিরিজটি দর্শকদের নিয়ে যায় জেজু দ্বীপে। এই আগ্নেয়গিরির সৌন্দর্যের পটভূমিতে বেড়ে ওঠা প্রেমের গল্পটি মানুষকে একসঙ্গে অনেকটা সময় দেখিয়ে ফেলে। এই সিরিজটি একই সঙ্গে প্রেমের গল্প, ঋতুর ও নৈসর্গিক দৃশ্য এবং সময়ের পরিবর্তনের কথা তুলে ধরে। ১৬ পর্বের এই সিরিজটি এমন এক দম্পতির কাহিনি তুলে ধরে—যাঁদের ভালোবাসা টিকে থাকে ঝড়, সামাজিক চাপ ও ঋতুর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। এমন অনেক দ্বীপ কোরিয়ান সিরিজগুলোতে দেখা যায়। যেগুলোতে বাড়ছে পর্যটন জনপ্রিয়তা। সোশ্যাল মিডিয়ার অনেকেই কে সিরিজ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ফিল্ম লোকেশন ট্যুর করেন।

তেমনি চারটি দ্বীপের কথা রইল পাঠকদের জন্য।

প্রায় ২০ লাখ বছর আগে লাভা থেকে জন্ম নেয় দক্ষিণ কোরিয়ার বড় দ্বীপ জেজু। ছবি: সংগৃহীত
প্রায় ২০ লাখ বছর আগে লাভা থেকে জন্ম নেয় দক্ষিণ কোরিয়ার বড় দ্বীপ জেজু। ছবি: সংগৃহীত

জেজু

প্রায় ২০ লাখ বছর আগে লাভা থেকে জন্ম নেয় দক্ষিণ কোরিয়ার বড় দ্বীপ জেজু। এর উপকূল ভাগ খাড়া। দ্বীপের কেন্দ্রে আছে ১ হাজার ৯৫০ মিটার উঁচু হল্লাসান পাহাড় আর ইউনেসকো স্বীকৃত লাভা টিউব। এই বুনো দৃশ্যই সিরিজের প্রতিটি দৃশ্যকে গভীর করে তুলেছে, গল্পের উত্তেজনাকে আরও তীব্র করেছে। এখন পর্যটকেরা ‘হোয়েন লাইফ গিভিস ইউ ট্যাঞ্জেরিন’ সিরিজের সেই দ্বীপটির বুনো রোমাঞ্চ উপভোগ করতে ভ্রমণ করেন জেজু দ্বীপ। অনেকে বাস্তবেই সেই জায়গায় গিয়ে অনুভব করতে চান জেজুর হ্যানিও কন্যা এ সানের সময়, তাঁর প্রেমের উচ্ছ্বাস।

‘দ্যা লিজেন্ড অব দ্য ব্লু সি’ সিরিজে দেখানো হয়েছিল এ দ্বীপটি। ছবি: সংগৃহীত
‘দ্যা লিজেন্ড অব দ্য ব্লু সি’ সিরিজে দেখানো হয়েছিল এ দ্বীপটি। ছবি: সংগৃহীত

উল্লেংদো

‘দ্যা লিজেন্ড অব দ্য ব্লু সি’ সিরিজে দেখানো হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার সপ্তম বৃহত্তম দ্বীপ উল্লেংদা। আগ্নেয়গিরিময় এই দ্বীপটির চারপাশে আছে বিভিন্ন আকারের ৪৪টি দ্বীপ। অনেক খাড়া পাহাড়ের কারণে দ্বীপটি শিলা আরোহণের জন্য বেশ বিখ্যাত। সমুদ্র, পাহাড় ও নদীর সমন্বয়ে তৈরি অনেক ট্রেকও রয়েছে সেখানে। পর্যটকেরা উল্লেংদা হাইদাম গিল ধরে হাঁটতে হাঁটতে দ্বীপের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার সুযোগ পায়। দ্বীপের চারপাশে অনেক গুহা আছে। সেগুলো দেখতে গিয়ে হয়ে যায় নৌকায় ভ্রমণ। রাতের নিকষ কালো অন্ধকারে স্কুইড ধরার নৌকার আলো দেখায় জোনাকির মতো। এমন দৃশ্য পর্যটকদের নিয়ে যায় এক গহিন প্রকৃতির কাছে। শুধু দেখা নয়, পর্যটকেরা চাইলে স্থানীয়দের সঙ্গে স্কুইড বা মাছ ধরার অভিজ্ঞতা নিতে পারেন। বসন্তে চেরি ব্লসম আর সবুজ পাহাড়, গ্রীষ্মে প্রশান্ত সাগরের নীল জলরাশি আর হাইকিং, শরতে রঙিন পাতার কার্নিভ্যাল, শীতের নিস্তব্ধতা দ্বীপটিতে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের দেবে এক ভিন্ন মাত্রার অভিজ্ঞতা।

গ্যাপাদো দ্বীপটি দেখানো হয়েছিল ‘আওয়ার ব্লুজ’ সিরিজে। ছবি: সংগৃহীত
গ্যাপাদো দ্বীপটি দেখানো হয়েছিল ‘আওয়ার ব্লুজ’ সিরিজে। ছবি: সংগৃহীত

গ্যাপাদো

কে ড্রামা ‘আওয়ার ব্লুজ’। এ সিরিজটিতে দেখানো হয়েছে একটি ছোট্ট দ্বীপে বসবাসকারী হ্যানিওদের জীবনসংগ্রামের গল্প। সে দ্বীপে এখনো নারী ডুবুরিরা তাদের প্রজন্ম থেকে পাওয়া ডুবুরির কাজ করেন। জেজু দ্বীপ থেকে ২ দশমিক ২ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এই ছোট দ্বীপটি। সেখানকার অধিবাসীরা আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়াই প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সমুদ্র থেকে শৈবাল, অ্যাবেলোন ও শামুক সংগ্রহ করেন। গ্যাপাদো কোরিয়ার প্রথম স্লো সিটি ঘোষিত দ্বীপ। সেখানে সবকিছু ধীরে চলে। বসন্তে, বিশেষ করে এপ্রিল-মে মাসে সেখানে যবের খেত সবুজ হয়ে ওঠে। সমুদ্র ও খেতের মাঝখান দিয়ে চলে যাওয়া পায়ে হাঁটার পথ যেন পোস্টকার্ড থেকে উঠে আসা ছবি। যাঁরা ভ্রমণের মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি খোঁজেন তাঁদের জন্য এই দ্বীপটি দারুণ আকর্ষণ জাগায়। জেজু ঘুরতে গিয়ে এক দিনের জন্য গ্যাপাদো বেড়িয়ে আসা যায়।

২ হাজার ৩৪৪ মাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত দাদেওহায়ান হেইসাং গুক দ্বীপটি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান সামুদ্রিক জাতীয় উদ্যান। ছবি: সংগৃহীত
২ হাজার ৩৪৪ মাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত দাদেওহায়ান হেইসাং গুক দ্বীপটি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান সামুদ্রিক জাতীয় উদ্যান। ছবি: সংগৃহীত

দাদেওহায়ান হেইসাং গুক

কয়েকটি ঐতিহাসিক কে ড্রামায় দেখা গেছে দাদেওহায়ান হেইসাং গুক নামের দ্বীপটি। এর অর্থ দাদোহায়েসাং জাতীয় উদ্যান। ১৯৮১ সালে এ দ্বীপকে দক্ষিণ কোরিয়ার চৌদ্দতম জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়। ২ হাজার ৩৪৪ মাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই দ্বীপটি দেশটির প্রধান সামুদ্রিক জাতীয় উদ্যান। এই এলাকায় বিভিন্ন আকারের প্রায় ১ হাজার ৭০০টি দ্বীপ রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে আছে হংডো, হিউকসান্ডো, জিওমুন্ডো এবং বেকডো দ্বীপপুঞ্জ। এগুলো পাখির অভয়ারণ্য, সামুদ্রিক প্রাণীর আবাসস্থল এবং প্রবাল প্রাচীরসহ নানান জীববৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ। শীত বা শরতে কুয়াশার মধ্যে ছোট ছোট দ্বীপ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। এখানকার হংডো ও হেউকসানডো দ্বীপ পাখি পর্যবেক্ষণের জন্য বিখ্যাত। এই জাতীয় উদ্যানের বেশির ভাগ দ্বীপে পর্যটকের ভিড় কম। জায়গাটি সেই পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় যাঁরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, ঐতিহ্য ও প্রকৃতির সংমিশ্রণ মিলিয়ে ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজহারুলের আপিলে তাজুলের প্রসিকিউশন টিম, স্বার্থের সংঘাত দেখছেন ডেভিড বার্গম্যানও

ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় শুধু একটি দল—প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের যে ব্যাখ্যা দিল প্রেস উইং

মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে লড়েছিলেন বলেই কি জামিন পেলেন না অধ্যাপক আনোয়ারা

হঠাৎ ব্যাংকের ভেতরে সবাই অচেতন

সৌদি আরবে পুরুষের ‘অবাধ্য’ হলে নারীর যে পরিণতি হয়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত