Ajker Patrika

অস্ট্রেলিয়ায় ট্যুরিস্ট ভিসায় গিয়ে যা যা করতে পারবেন, আবেদন করবেন যেভাবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২: ৩২
অস্ট্রেলিয়ায় টুরিস্ট ভিসায় ভ্রমণের পাশাপাশি অন্যান্য কাজও করা যায়। ছবি: সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ায় টুরিস্ট ভিসায় ভ্রমণের পাশাপাশি অন্যান্য কাজও করা যায়। ছবি: সংগৃহীত

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আধুনিক শহর, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং ভ্রমণের অফুরন্ত সুযোগের কারণে ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে দীর্ঘদিন ধরেই জনপ্রিয় গন্তব্য অস্ট্রেলিয়া। গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ থেকে শুরু করে সুবিশাল আউটব্যাক এবং সিডনি ও মেলবোর্নের মতো কসমোপলিটন শহর—সবকিছুই এই দেশকে পর্যটকদের জন্য একটি আদর্শ স্থান করে তুলেছে। এর নিরাপত্তা, পরিচ্ছন্নতা এবং ভ্রমণ-বান্ধব পরিবেশ একে বিদেশে ছুটি, পারিবারিক ভ্রমণ বা ক্রুজ ভ্যাকেশনের জন্য একটি শীর্ষ পছন্দ করে তুলেছে।

বাংলাদেশের ভ্রমণকারীদের জন্য অস্ট্রেলিয়া ট্যুরিস্ট ভিসার (সাবক্লাস ৬০০) আবেদন প্রক্রিয়ার একটি বিস্তারিত নির্দেশিকা দেওয়া হলো।

ভিসার ধরন: ভিজিটর ভিসা (সাবক্লাস ৬০০) ট্যুরিস্ট স্ট্রিম

এই ভিসাটি পর্যটকদের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা আপনাকে অস্ট্রেলিয়ায় পর্যটন, পারিবারিক পরিদর্শন বা ক্রুজে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেয়। এই ভিসার প্রধান উদ্দেশ্য হলো স্বল্প সময়ের জন্য ভ্রমণ। আবেদন করার সময়, আপনাকে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে আপনি শুধুমাত্র পর্যটন বা পারিবারিক কারণে দেশটিতে যেতে চান এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের কোনো ইচ্ছা নেই। ভিসা চলাকালীন আপনি কোনো ধরনের বেতনভুক্ত কাজ করতে পারবেন না।

ভিসার মেয়াদ: ১২ মাস পর্যন্ত।

খরচ: প্রতি আবেদনকারীর জন্য আনুমানিক ২০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (প্রায় ১৬ হাজার ২২৪ টাকা)। এই খরচ শুধু ভিসা আবেদনের মূল ফি, যা বিভিন্ন পেমেন্ট পদ্ধতি বা অতিরিক্ত সেবার কারণে পরিবর্তিত হতে পারে।

এই ভিসার মাধ্যমে আপনি যা করতে পারবেন:

পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করা।

ব্যবসা বা চিকিৎসার উদ্দেশ্য ব্যতীত পর্যটন, ক্রুজ বা অন্যান্য ব্যক্তিগত কারণে ভ্রমণ করা।

১. যোগ্যতার মানদণ্ড

ভিসা অনুমোদনের জন্য আবেদনকারীকে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে:

২. স্বাস্থ্যগত যোগ্যতা: আপনাকে অবশ্যই অস্ট্রেলিয়ার কঠোর স্বাস্থ্য মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে মেডিকেল পরীক্ষা, বুকের এক্স-রে এবং রক্ত পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে, যা অবস্থানের সময়কাল এবং আপনার চিকিৎসার ইতিহাসের ওপর নির্ভর করে।

৩. চরিত্রগত যোগ্যতা: আপনার যদি অস্ট্রেলিয়া বা অন্য কোনো দেশে কোনো ফৌজদারি অপরাধের রেকর্ড থাকে, তাহলে আপনার আবেদন বাতিল হতে পারে।

৪. আর্থিক সচ্ছলতা: অস্ট্রেলিয়ায় আপনার অবস্থানকালে নিজের খরচ মেটানোর জন্য আপনার কাছে পর্যাপ্ত তহবিল বা অর্থের উৎস আছে তা প্রমাণ করতে হবে। এর জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট, স্যালারি স্লিপ বা স্পনসরের আর্থিক প্রমাণপত্র জমা দেওয়া যেতে পারে।

৫. যথাযথ পর্যটক: আপনাকে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে আপনি সাময়িকভাবে অস্ট্রেলিয়ায় থাকছেন এবং ভিসা শর্তাবলি মেনে চলবেন। এটি প্রমাণ করার জন্য আপনার নিজ দেশে শক্তিশালী পারিবারিক, কর্মসংস্থান বা শিক্ষাগত সম্পর্ক থাকা জরুরি।

৬. শিশুদের সর্বোত্তম স্বার্থ: ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো আবেদনকারীর জন্য ভিসা মঞ্জুর করা তার সর্বোত্তম স্বার্থে না হলে আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হতে পারে।

ভিসার শর্তাবলি

ভিসা পাওয়ার পর কিছু নিয়মকানুন অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক:

কাজ করার অনুমতি নেই: আপনি অস্ট্রেলিয়ায় কোনো ধরনের বেতনভুক্ত কাজ করতে পারবেন না।

১. সীমিত পড়াশোনা: আপনি তিন মাসের বেশি সময় ধরে কোনো কোর্স বা প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন না।

২. স্বাস্থ্য বিমা: অবস্থানের পুরো সময়ের জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য বিমা বজায় রাখতে হবে।

ভিসা পরিবর্তন নয়

আপনি অস্ট্রেলিয়ায় থাকাকালীন বেশির ভাগ অন্য ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

১. সময়মতো প্রস্থান: আপনার ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অস্ট্রেলিয়া ত্যাগ করতে হবে।

২. অতিরিক্ত অবস্থান নয়: ১৮ মাসের মধ্যে ১২ মাসের বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করা যাবে না।

ভিসা ফি এবং প্রসেসিং সময়

আবেদনকারীদের জন্য ভিসা আবেদনের মূল ফি হলো ২০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার। তবে, পেমেন্টের পদ্ধতি এবং অতিরিক্ত খরচের কারণে মোট ব্যয় ভিন্ন হতে পারে। প্রসেসিং সময় বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে যেমন: আবেদনের সংখ্যা, মৌসুম, এবং আপনার জমা দেওয়া নথির সম্পূর্ণতা। সাধারণত:

১. ৭৫ শতাংশ আবেদন ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে প্রসেস হয়।

২. ৯০ শতাংশ আবেদন ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে প্রসেস হয়।

অসম্পূর্ণ কাগজপত্র, অতিরিক্ত তথ্যের প্রয়োজন অথবা স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিলম্বের কারণে প্রসেসিংয়ে দেরি হতে পারে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ভিসা আবেদনকে ‘ডিসিশন-রেডি’ করতে হলে নিম্নলিখিত মূল কাগজপত্রগুলো অবশ্যই জমা দিতে হবে:

পাসপোর্ট ও ছবি: পাসপোর্টের ব্যক্তিগত তথ্য পৃষ্ঠার একটি স্পষ্ট রঙিন কপি।

ভ্রমণের উদ্দেশ্য: একটি বিস্তারিত ভ্রমণসূচি (Itinerary) যেখানে আপনার ভ্রমণের কারণ, থাকার জায়গা, এবং পরিকল্পিত কার্যক্রম উল্লেখ থাকবে।

আর্থিক প্রমাণ: গত তিন থেকে ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, স্যালারি স্লিপ, অথবা কর্মসংস্থানের চিঠি।

নিজ দেশে সম্পর্কের প্রমাণ: আপনার নিজ দেশে শক্তিশালী সম্পর্কের প্রমাণ যেমন—কর্মক্ষেত্রের ছাড়পত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির সনদ, পারিবারিক সদস্যের জন্মসনদ, বা স্থাবর সম্পত্তির কাগজপত্র।

আমন্ত্রণপত্র: যদি পরিবার বা বন্ধুর কাছে বেড়াতে যান, তবে তাদের কাছ থেকে একটি আমন্ত্রণপত্র এবং তাদের অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র (যেমন, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি)।

আবেদন প্রক্রিয়া

১. আবেদনের আগে: নিশ্চিত করুন যে আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ আছে এবং যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করুন। সমস্ত কাগজপত্র ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।

২. অনলাইনে আবেদন: ইমিঅ্যাকাউন্ট (ImmiAccount) তৈরি করে অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করুন এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করুন।

৩. বায়োমেট্রিক ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা: অধিকাংশ আবেদনকারীকে আবেদন করার পর ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারে (VFS Global) বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ ও ডিজিটাল ছবি) জমা দিতে হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রয়োজন হলে, আপনাকে অনুমোদিত প্যানেল ক্লিনিক থেকে তা সম্পন্ন করতে হবে।

৪. আবেদনের পর: আপনার আবেদন জমা পড়ার পর একটি নিশ্চিতকরণ বার্তা পাবেন। এরপর যদি কোনো অতিরিক্ত তথ্য চাওয়া হয়, তবে তা দ্রুত সরবরাহ করুন।

৫. ভিসার সিদ্ধান্ত: লিখিতভাবে আপনাকে ভিসা অনুমোদনের বিষয়ে জানানো হবে। ভিসা বাতিল হলে তার কারণ ও আপিলের সুযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে।

১৮ বছরের কম বয়সী আবেদনকারীদের আরও নথিপত্র জমা দিতে হবে:

  • পিতামাতার উভয়ের নাম উল্লেখ করে জন্ম সনদ।
  • পিতামাতা বা অভিভাবকের পাসপোর্টের কপি।
  • জৈবিক পিতামাতা না থাকলে অভিভাবকত্বের প্রমাণ।
  • ফর্ম ১২২৯ অথবা একটি আইনগত ঘোষণার মাধ্যমে পিতামাতার সম্মতি।
  • আত্মীয় বা আইনি অভিভাবক ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে থাকলে, মনোনীত ব্যক্তির দ্বারা পূরণ করা ফর্ম ১২৫৭ জমা দিন।

বায়োমেট্রিক ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা

অধিকাংশ বাংলাদেশি আবেদনকারীকে আবেদন করার পর ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারে (VFS Global) বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ ও ডিজিটাল ছবি) জমা দিতে হয়। অবস্থানের সময়কাল, বয়স এবং চিকিৎসার ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে স্বাস্থ্য পরীক্ষাও প্রয়োজন হতে পারে।

আবেদন দ্রুত করার জন্য কিছু টিপস

  • আপনার পাসপোর্টের ব্যক্তিগত তথ্য পৃষ্ঠার একটি স্পষ্ট কপি জমা দিন।
  • আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা (সম্ভব হলে একটি ভ্রমণসূচি) স্পষ্টভাবে উল্লেখ করুন।
  • আপনার নিজ দেশের সঙ্গে আপনার সম্পর্কের প্রমাণপত্র দিন (যেমন, কর্মক্ষেত্রের ছাড়পত্র, আর্থিক বিবৃতি ইত্যাদি)।
  • অস্ট্রেলিয়া থেকে কোনো আমন্ত্রণপত্র থাকলে তা জমা দিন।
  • যেকোনো ধরনের অসম্পূর্ণ কাগজপত্র বা ত্রুটিপূর্ণ তথ্য ভিসা বাতিল হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিমানযাত্রার অলিখিত নিয়মগুলো জেনে নিন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
বিমানে উঠে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে ধন্যবাদ জানানো শুধু ভদ্রতা নয়; পুরো যাত্রার পরিবেশ ইতিবাচক রাখতে তা ভূমিকা রাখে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি
বিমানে উঠে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে ধন্যবাদ জানানো শুধু ভদ্রতা নয়; পুরো যাত্রার পরিবেশ ইতিবাচক রাখতে তা ভূমিকা রাখে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

বিমানের ভেতর সংকীর্ণ জায়গায় বহু মানুষকে একসঙ্গে অনেকটা সময় কাটাতে হয়। তাই ব্যক্তিগত আচরণে সচেতন না থাকলে সামান্য বিষয় থেকেও বড় অস্বস্তি সৃষ্টি হতে পারে। মার্কিন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট এবং ভ্রমণ বিশেষজ্ঞদের মতে, যাত্রীদের কিছু অলিখিত নিয়ম মানলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা এড়ানো সম্ভব।

ভদ্রতা দিয়ে যাত্রা শুরু হোক

ক্যাবিনে প্রবেশের মুহূর্ত থেকে হাসিমুখ ও নরম স্বরের আচরণ যাত্রী ও কর্মীদের সম্পর্ক সহজ করে তোলে। প্রটোকল বিশেষজ্ঞ ডায়ান গটসম্যান বলেন, ‘বিমানে উঠেই যদি ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে ধন্যবাদ জানানো হয়, তা শুধু ভদ্রতা নয়; পুরো যাত্রার পরিবেশ ইতিবাচক রাখতে বড় ভূমিকা রাখে।’ ২২ বছরের অভিজ্ঞ ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট অ্যান্ড্রু হেন্ডারসনের মতে, ‘অনেকেই প্রথম মুহূর্তে সামান্য একটি ‘হ্যালো’ বলেন। অনেকেই বেশ হাসিখুশি মন নিয়ে প্রবেশ করেন। এতেই বোঝা যায় যাত্রীর মনোভাব কেমন হবে।’

বিমানে ভ্রমণের সময় মাঝে মাঝে নয়েজ ক্যানসেলিং হেড ফোন বা ইয়ার প্লাগ খুলে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হোন। ছবি: পেক্সেলস
বিমানে ভ্রমণের সময় মাঝে মাঝে নয়েজ ক্যানসেলিং হেড ফোন বা ইয়ার প্লাগ খুলে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হোন। ছবি: পেক্সেলস

হেডফোনে ডুবে থাকা

নয়েজ ক্যানসেলিং হেডফোন এখন বিমানে জনপ্রিয়। এগুলো যাত্রাকে নিরিবিলি স্বাদ দেয় ঠিকই; কিন্তু কখনো কখনো বিপদ ডেকে আনে। জরুরি ঘোষণা, সেবার ডাক বা বেভারেজ কার্ট আসার সংকেত—এসব মিস হতে পারে এই হেডফোনের জন্য। বিমান পরামর্শক রিচ হেন্ডারসন জানান, অনেক যাত্রী পুরো ফ্লাইটে হেডফোনে ডুবে থাকেন। জরুরি পরিস্থিতি হলেও তাঁরা নড়াচড়া করেন না, যেন বাইরের জগৎ সম্পর্কে তাঁরা সম্পূর্ণ আলাদা। তাই সার্ভিস কার্ট কাছে এলে হেডফোন সামান্য খুলে কর্মীদের দিকে তাকানো এবং প্রস্তুত থাকা ভদ্রতার অংশ।

শিশু নিয়ে বিমানে

ফ্লাইটে শিশু কাঁদলে বিরক্ত হওয়া স্বাভাবিক। তবে অভিভাবকদের দোষারোপ করাটা সঠিক নয় বলে মনে করেন ডায়ান গটসম্যান। তিনি বলেন, ‘কোনো মা-বাবা চান না তাঁদের শিশু অন্যকে বিরক্ত করুক।’ তবে শিশুকে পুরো ক্যাবিনে দৌড়াতে দেওয়া বা সিটে লাথি মারতে দেওয়া একেবারেই অনুচিত। এতে অন্যরা বিরক্ত হন। এ ধরনের অবস্থায় অভিভাবকদের দায়িত্বশীল আচরণ জরুরি। অন্যদিকে, যাত্রীদের প্রতি পরামর্শ হলো, কেউ সিটে লাথি মারলে ঝগড়া না বাড়িয়ে ভদ্রভাবে অনুরোধ করুন।

জানালার পর্দা

দীর্ঘ ফ্লাইটে জানালার পর্দা খোলা বা বন্ধ নিয়ে যাত্রীরা প্রায়ই দ্বিধায় থাকেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, জানালার পাশের যাত্রী সাধারণত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। তবে অ্যান্ড্রু হেন্ডারসন কঠোর হওয়ার বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘আমি সাধারণত পর্দা বন্ধ রাখি। কিন্তু পাশে বসা কেউ খুলতে চাইলে আমরা আলোচনা করি কখন খোলা থাকবে, কখন বন্ধ থাকবে।’

তিন সিটের দ্বন্দ্ব

এ বিষয়টি নিয়ে প্রায় সবাই একমত, মাঝের সিটে বসা যাত্রীর প্রাধান্য বেশি। কারণ তার না রয়েছে জানালার দেয়ালে হেলান দেওয়ার সুবিধা, না রয়েছে পা বাড়ানোর জায়গা। তাই দুই পাশের আর্ম রেস্ট তাকে দিতে হবে, এটিই শিষ্টাচার।

সিট পেছনে হেলানোর আগে

বিমানের সিট পেছনে হেলানো স্বাভাবিক। তাই রিচ হেন্ডারসন মনে করেন, যাত্রীরা এটি ব্যবহার করবেন বটে। তবে বিবেচনায় রাখতে হবে, পেছনে কেউ খাবার খাচ্ছেন কি না, ট্রে টেবিল নামানো রয়েছে কি না। এসব দেখে রিক্লাইন করলে ঝামেলা কম হয়। খাবারের সময় সিট সোজা রাখা ভালো, যাতে পেছনের যাত্রী আরামে খেতে পারেন।

গন্ধ এবং খাবারের রুচি

বিমানের ভেতর মাছ, সেদ্ধ ডিম বা তীব্র গন্ধযুক্ত খাবার অন্যদের জন্য কষ্টদায়ক হতে পারে। একইভাবে অনেকে শক্তিশালী পারফিউম ব্যবহার করেন, যা আরও বিরক্তির কারণ হয়।

অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান

এয়ারপোর্টে বেশি অ্যালকোহল পান করে বিমানে উঠলে যাত্রী নিজের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। তাই বিশেষজ্ঞরা সীমিত পান করার মতো অভ্যাস বজায় রাখতে বলেন। তা না হলে এটি নিজের জন্য এবং অন্যের জন্যও বেশ নেতিবাচক অভিজ্ঞতা হয়ে দেখা দিতে পারে।

বিমান ভ্রমণে গুরুত্বপূর্ণ হলো পারস্পরিক সম্মান। রিচ হেন্ডারসনের কথায়, ‘একটি সংকীর্ণ জায়গায় আমরা সবাই একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। সামান্য সহমর্মিতা এবং সুন্দর আচরণ পুরো যাত্রার অভিজ্ঞতা বদলে দিতে পারে।’

সূত্র: সিএনএন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: দিনটা কাটবে স্বপ্নের মতো, সৃজনশীলতা উপচে পড়বে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৮
আজকের রাশিফল: দিনটা কাটবে স্বপ্নের মতো, সৃজনশীলতা উপচে পড়বে

মেষ

আজ আপনার ভেতরের অ্যাড্রেনালিন আদা-জল খেয়ে জেগে উঠবে। আপনার শক্তি থাকবে তুঙ্গে, কিন্তু মনে রাখবেন, এই শক্তি যেন শেষ পর্যন্ত নেটফ্লিক্স সিরিয়ালের রিমোট কার হাতে থাকবে, এই ছোট ঝগড়ার পেছনে অপচয় না হয়। কর্মক্ষেত্রে এমন একটি সমস্যার সমাধান করবেন, যা কেউ জানতেও পারেনি যে সেটা সমস্যা ছিল। সন্ধ্যায় আপনার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে—সোফার আকর্ষণ কাটিয়ে উঠে রাতের খাবার বানানো। সাবধান, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের বশে ফ্রিজের দরজাটা যেন নিজেই খুলে না যায়!

বৃষ

আজ আপনার বিলাসবহুল আরামের প্রতি টানটা চরমে পৌঁছাবে। কেউ আপনাকে যদি বলে যে ‘পাঁচ মিনিট হাঁটো’, এক সেকেন্ডের জন্য ভাববেন যে, হাঁটাটা কি আপনার প্রিয় কম্বলের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা নয়? আর্থিক দিক থেকে আজ ‘অতিরিক্ত’ খরচ করতে পারেন—বিশেষ করে, কোনো নতুন ধরনের চিজ বা বিরল চকলেট কেনার জন্য। প্রেমের ক্ষেত্রে সঙ্গীর কাছ থেকে শুধু একটাই প্রত্যাশা থাকবে: ‘ডিনারে কী আছে?’

মিথুন

আজ আপনার মস্তিষ্ক যেন একটি অতি দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগের মতো কাজ করবে, যেখানে একসঙ্গে ১০টি ট্যাব খোলা থাকবে। আপনি একাধারে চারটি কথোপকথনে অংশ নেবেন, তিনটি অ্যাপে চ্যাট করবেন এবং হয়তো নিজের সঙ্গেই উচ্চস্বরে কথা বলবেন। আপনার আজকের প্রধান দক্ষতা হবে—কথা বলার মাঝে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি বিষয়ে লাফিয়ে চলে যাওয়া, যাতে অন্যরা কিছুটা বিভ্রান্ত হয়। মনে রাখবেন, সব গোপন কথাই সব বন্ধুকে বলা যায় না; কিছু রহস্য নিজের কাছেও রেখে দিন...পরের সপ্তাহের জন্য!

কর্কট

আজকের দিনটা আবেগতাড়িত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। দিনের বেলায় সামান্য কারণে আপনার চোখে পানি আসতে পারে, যেমন হয়তো দেখলেন একটি মিষ্টি কুকুরছানা পার্কে দৌড়াচ্ছে—সেটা দেখেও আপনার মনে হবে, ‘আহ, জীবন কত সুন্দর, কিন্তু ক্ষণস্থায়ী!’ সন্ধ্যায় চাইবেন প্রিয়জনেরা আপনার জন্য পৃথিবীর সমস্ত আরাম নিয়ে আসুক আর আপনি সেই আরামের মধ্যে শুয়ে শুয়ে ভাবুন যে জীবন কত কঠিন!

সিংহ

আজ নিজেকে লাইমলাইটে রাখার চেষ্টা করবেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, লাইমলাইটটা হয়তো আপনার জুতায় লেগে থাকা কাদার দিকে চলে যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে আপনার দুর্দান্ত আইডিয়া হয়তো সামান্য দেরিতে আসবে, ঠিক যখন বসের মন অন্য দিকে চলে গেছে। প্রেমের ক্ষেত্রে আপনার নাটকীয়তা একটু কমিয়ে আনুন। মনে রাখবেন, পার্টনার আপনার ফ্যান হলেও ‘রোজ রাতে অপেরা শো’ দেখতে সে বাধ্য নয়!

কন্যা

আজ তুচ্ছ বিষয়ের ওপর বিশ্বের সেরা বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠবেন। হয়তো উপলব্ধি করবেন যে, আপনার পেন হোল্ডারের পেনগুলো উচ্চতা অনুসারে সাজানো নেই এবং এ বিষয়ে আপনার গভীর উদ্বেগ তৈরি হবে। আজ ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে এমন জিনিস খুঁজে পাবেন, যা আপনি তিন বছর আগে হারিয়েছেন আর সেটার জন্য পুরো দিন নষ্ট করবেন। রিল্যাক্স! পৃথিবী নিখুঁত না হলেও চলবে এবং আপনার আলমারির ভেতরের জগাখিচুড়ি একমাত্র আপনিই জানেন।

তুলা

আজ আপনি ন্যায়বিচার ও ভারসাম্যের সন্ধানে অস্থির থাকবেন, বিশেষত যখন ডিনার মেনুতে দুটি সমান লোভনীয় বিকল্প থাকবে। সবার মন জয় করতে এত ব্যস্ত থাকবেন যে, শেষে নিজের কাজটি করতেই ভুলে যাবেন। কেউ যদি আপনার কাছে কোনো সমস্যার সমাধান চায়, দুটি বিপরীতধর্মী সমাধান দিয়ে বলবেন, ‘দুটোই ভালো, তুমিই ঠিক করো!’

বৃশ্চিক

আজ আপনার ভেতরের রহস্যময় গোয়েন্দা জেগে উঠবে। বন্ধুর ইনস্টাগ্রাম পোস্টের লাইকের উৎস বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন। প্রেমের ক্ষেত্রে দৃষ্টি আকর্ষণ করার দরকার নেই—আপনার রহস্যময় নীরবতাতেই কাজ হয়ে যাবে। আপনার ব্যক্তিত্বের তীব্রতা আজ এত বেশি হবে যে, সাধারণ হাসির বদলে সামান্য বাঁকা হাসি দিয়েও সবাইকে ভয় পাইয়ে দিতে পারেন।

ধনু

অ্যাডভেঞ্চারের প্রতি আপনার আগ্রহ আজ চরমে, কিন্তু সম্ভবত শুধু রান্নাঘরের ভেতরের অন্ধকার ড্রয়ার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবেন। একটি দুর্দান্ত প্ল্যান করবেন—যেমন পাহাড়ে চড়া বা বিদেশ ভ্রমণ, কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভুলে যাবেন আপনার পাসপোর্ট বা জুতা নিতে। অতিরিক্ত আশাবাদী হওয়া ভালো, তবে চশমাটা পরে নিন।

মকর

আজ মনে হঠাৎ করেই কাজ থেকে বিরতি নেওয়ার একটি মারাত্মক ইচ্ছা জাগবে। হয়তো সোফায় বসে নিজেকে বলবেন, ‘পাঁচ মিনিট আরাম করি,’ আর সেই পাঁচ মিনিট কখন পাঁচ ঘণ্টা হয়ে যাবে, টেরও পাবেন না। এরপর ভেতরের বিবেক আপনাকে অপরাধবোধে ভোগাবে, তাই দ্রুত উঠে একটা অপ্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে আবার বসবেন। নিজেকে মনে করিয়ে দিন—পৃথিবীর সমস্ত কিছু আপনার কাঁধে নেই, সামান্য হাসুন!

কুম্ভ

আজ এমন একটি দার্শনিক ধারণার কথা ভাববেন, যা মানবজাতিকে বদলে দিতে পারত, কিন্তু ধারণাটি বন্ধুর পোষা বিড়ালের সঙ্গে আলোচনা করার পরপরই ভুলে যাবেন। সমাজসংস্কারের চেতনা আজ এতটাই বাড়বে যে, হয়তো ফ্রিজের পুরোনো সবজিগুলোকেও বাঁচানোর চেষ্টা করবেন। অন্যদের কাছে আপনার কথাগুলো আজ ‘খুব বুদ্ধিদীপ্ত’ অথবা ‘পুরোপুরি এলোমেলো’ মনে হতে পারে—মাঝখানে কিছু নেই।

মীন

আজকের দিনটা আপনার জন্য স্বপ্নের মতো। হয়তো পুরো মিটিংটা পার করে দেবেন কল্পনার রাজ্যে, যেখানে আপনি জলপরি অথবা মহাকাশচারী। বাস্তব জীবনে একটু সমস্যা হতে পারে—যেমন লবণ আর চিনি গুলিয়ে ফেলা বা দুদিকে হাঁটার চেষ্টা করা। সৃজনশীলতা আজ উপচে পড়বে, তাই আঁকার উপকরণগুলো হাতের কাছে রাখুন, কারণ, আপনি হয়তো হঠাৎ করেই বসের একটি কার্টুন এঁকে ফেলতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে উলের পোশাকের যত্ন নেবেন যেভাবে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
উলের তৈরি যেকোনো শীতের পোশাকই ধোয়া, শুকানো ও আলমারিতে রাখার ভুলে উজ্জ্বলতা হারাতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক
উলের তৈরি যেকোনো শীতের পোশাকই ধোয়া, শুকানো ও আলমারিতে রাখার ভুলে উজ্জ্বলতা হারাতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক

অগ্রহায়ণ মাস শেষের দিকে। আর কয়েক দিন পরই ক্যালেন্ডারের পাতায় ঘোষণা দিয়ে জাঁকে বসবে শীত। এখনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাপমাত্রা নেমে গেছে বেশ খানিকটা। ভোরে বা সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বের হলে গায়ে গরম কাপড় চাপাতেই হয়। উলের সোয়েটার থেকে শুরু করে উলের নানা ধরনের শীতের পোশাক তাই এখনই আলমারি বা স্টোর থেকে বের করার উপযুক্ত সময়। শীতের পোশাক আমরা বছরের পর বছর পরি। তাই মৌসুম এলে এগুলো শুধু বের করে পরলেই চলে না, যত্নও নিতে হয়। উলের যেকোনো শীতের পোশাকই ধোয়া, শুকানো ও আলমারিতে রাখার ভুলে উজ্জ্বলতা হারাতে পারে। জেনে নিন, উলের কাপড় দীর্ঘদিন ভালো রাখার উপায়।

উলের পোশাক ধোয়ার কারণেই বেশির ভাগ সময় নষ্ট হয়। অনেকেই ভালোভাবে পরিষ্কার করার জন্য গরম পানিতে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে উলের কাপড় ভিজিয়ে রেখে তারপর কেচে ধুয়ে নেন। কিন্তু উলের পোশাক গরম পানিতে ধোয়া উচিত নয়। ডিটারজেন্ট উলের চরম শত্রু। তাই এগুলো পরিষ্কারের জন্য কম ক্ষারের তরল সাবান ব্যবহার করুন। গরম পানির পরিবর্তে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে উলের কাপড় ভিজিয়ে রাখুন। তবে ১৫ মিনিটের বেশি নয়। তার পর সাবধানে অল্প ঘষে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিন। উলের পোশাক ধোয়ার জন্য সাবানের পরিবর্তে শ্যাম্পু ব্যবহার করলে আরও ভালো হয়। এখন বাজারে বিভিন্ন ধরনের কাপড়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পরিষ্কারক পাওয়া যায়। তাই উলের পোশাকের জন্য বিশেষ ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে পারেন।

উলের পোশাক দ্রুত শুকানোর জন্য অনেকেই ধোয়ার পর খুব ভালোভাবে নিংড়ে নেন; কিন্তু এটা অনুচিত। উলের পোশাক ধোয়ার পর তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে অতিরিক্ত পানি অপসারণ করতে হবে। এরপর দরকার হলে ঝাঁঝরিতে রেখে অতিরিক্ত আরও পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।

উলের পোশাকের আকৃতি নষ্ট হয় মূলত শুকাতে দেওয়ার ভুলে। উলের কোনো পোশাকই দড়িতে বা হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে শুকাতে দেবেন না। ছাদে কিংবা বারান্দায়, ভালো রোদ আসে এমন জায়গায় মাটিতে পরিষ্কার পাটি, বেডশিট বা তোয়ালে পেতে শুকাতে দিন।

গরম পানির পরিবর্তে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে উলের কাপড় ধুয়ে ফেলুন। ছবি: পেক্সেলস
গরম পানির পরিবর্তে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে উলের কাপড় ধুয়ে ফেলুন। ছবি: পেক্সেলস

উলের পোশাক ঘন ঘন ধোবেন না। বারবার ধোয়ার ফলে এগুলো কোমলতা আর ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে ফেলে। এ ধরনের পোশাকের কোনো অংশে দাগ লাগলে সেই অংশটুকু ধুয়ে নিন। পুরো পোশাকটি ধোয়ার দরকার নেই। একই পোশাকের ওপর চাপ কমাতে বেশ কয়েকটি উলের পোশাক ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ব্যবহার করুন। এতে পোশাকগুলোর উজ্জ্বলতা থাকবে অনেক দিন।

উলের পোশাকে ঘাম লাগলে তা কড়া রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর গায়ে মাখা সাবান টিস্য়ু পেপারে মুড়ে ওই পোশাকের ভেতর রেখে পোশাকটি ভাঁজ করে তবে আলমারিতে রাখুন। এতে পোশাকে তরতাজা ভাব বজায় থাকবে। পোকামাকড়ও ওই পোশাকের ধারেকাছে ঘেঁষবে না।

এ ধরনের পোশাক ইস্ত্রি করার প্রয়োজন পড়ে না। তবু যদি করতে হয় তাহলে ইস্ত্রি করার আগে উলের জামাকাপড় উল্টো করে নিয়ে তারপর ইস্ত্রি করুন। ইস্ত্রি করার সঙ্গে সঙ্গে ভাঁজ করে রাখবেন না। তাতে কাপড়টি ঘেমে গন্ধ হতে পারে।

আলমারি কাঠের হলে উলের কাপড়ে পোকামাকড়ের আক্রমণের ঝুঁকি থাকে। সে ক্ষেত্রে একটা কাগজে কয়েকটি কর্পূরের দানা আর কয়েকটি আস্ত গোলমরিচ রেখে মুড়ে দিন। সেগুলো আলমারির ফাঁকে ফাঁকে রেখে দিন। এই উপায়ে পোকামাকড়ের হাত থেকে রেহাই পাবে উলের পোশাক।

শীতের এই দুই মাস উলের কাপড়গুলো কয়েক দিন পর পর আলমারি থেকে বের করে ছাদে বা বারান্দায় রোদে উল্টো করে শুকিয়ে নিন। এতে কাপড়ের তরতাজা ভাব বজায় থাকবে, ধুলো ধুলো গন্ধও নাকে আসবে না। বাইরে থেকে ফিরে গা থেকে উলের পোশাক নামিয়ে সম্ভব হলে নরম ব্রাশ দিয়ে ঝেড়ে নিন। এতে কয়েক দিন পরপর ধোয়ার ঝামেলা থাকবে না। পোশাকটিতে ধুলাবালুও কম জমবে।

সূত্র: উলমার্ক ও টেইলর স্টিচ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উজ্জ্বল ত্বক পেতে ঘরেই বানান চকলেট ফেস মাস্ক

ফারিয়া রহমান খান
উজ্জ্বল ত্বক পেতে ঘরেই বানানো যায় চকলেট ফেস মাস্ক। ছবি: ফ্রিপিক
উজ্জ্বল ত্বক পেতে ঘরেই বানানো যায় চকলেট ফেস মাস্ক। ছবি: ফ্রিপিক

অবাক লাগলেও সত্য, চকলেট কেবল মনই ভালো করে না, এটি ত্বকের জন্যও সমান উপকারী। ডার্ক চকলেটে আছে ক্যাটেকিনস, পলিফেনল ও ফ্ল্যাভোনলস। এগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের বড় উৎস। চকলেট সূর্যের ক্ষতিকর আলো থেকে ত্বক রক্ষা করে, ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ায় এবং বলিরেখা কমিয়ে বয়সের ছাপ কমায়। চকলেট ফেস মাস্ক আপনার ত্বকে এনে দিতে পারে উজ্জ্বলতা। তবে এটা করতে সব সময় স্যালনে যেতে হবে, তেমনটা নয়। এটি ঘরেও করা যাবে। ঘরে তৈরি কিছু চকলেট ফেস মাস্ক সম্পর্কে জেনে নিন এখানে।

অ্যান্টি-অ্যাকনে চকলেট মাস্ক

তৈলাক্ত ব্রণপ্রবণ ত্বকের জন্য এই মাস্ক কার্যকর। এটি তৈরি করতে ১ টেবিল চামচ চিনি, ডার্ক কোকো পাউডার, এক চিমটি দারুচিনি পাউডার এবং ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট মুখে ও গলায় লাগিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। মধু ও কোকোর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক শুষ্ক না করেই ব্রণ সৃষ্টিকারী জীবাণু ধ্বংস করে।

কোকো-দই ব্রাইটেনিং মাস্ক

উজ্জ্বল ত্বক পেতে চাইলে মাস্কটি ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য এক কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ কোকো পাউডার, ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি, ২ টেবিল চামচ টক দই, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস এবং ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। লেবুর রস ও টক দই ত্বকের দাগ দূর করে এবং কোকো ও নারকেল তেল ত্বক মসৃণ রাখতে সাহায্য করে।

হাইড্রেটিং কোকো-ক্রিম মাস্ক

১ টেবিল চামচ কোকো পাউডারের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ দুধের সর মিশিয়ে মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। এই মাস্ক ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ২০ থেকে ৩০ মিনিট। পরে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বকে নরম, মসৃণ ও স্নিগ্ধ একটা ভাব এসেছে।

চকলেট সূর্যের ক্ষতিকর আলো থেকে ত্বক রক্ষা করে, ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ায় এবং বলিরেখা কমিয়ে বয়সের ছাপ কমায়। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস
চকলেট সূর্যের ক্ষতিকর আলো থেকে ত্বক রক্ষা করে, ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ায় এবং বলিরেখা কমিয়ে বয়সের ছাপ কমায়। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস

চকলেট-কলা গ্লো প্যাক

উজ্জ্বল ও নরম ত্বক পেতে প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি তৈরি করতে ১ টেবিল চামচ কোকো পাউডার, ১ টেবিল চামচ মধু, আধা কাপ পেস্ট করা পাকা কলা এবং ১ টেবিল চামচ টক দই মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট মতো রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কোকো ও কলা ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং টক দই মসৃণতা বাড়ায়।

ওটমিল-কোকো প্যাক

এটি তৈরি করতে আধা কাপ কোকো পাউডার, ৩ টেবিল চামচ ওটমিল, ১ টেবিল চামচ দুধের সর এবং ১ টেবিল চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট বানান। এটি মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ওটমিল ত্বক মৃদু এক্সফোলিয়েট করে পরিষ্কার করে সতেজ করে তোলে।

ডিমের কুসুম-কোকো হাইড্রেশন মাস্ক

আধা কাপ কোকো পাউডারের সঙ্গে ১টি ডিমের কুসুম এবং ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই পেস্ট মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের রুক্ষতা দূর করে আর্দ্রতা বজায় রাখে।

অ্যাভোকাডো-কোকো ফেস মাস্ক

চেহারায় বলিরেখা ও বার্ধক্যের ছাপ কমাতে মাস্কটি বেশ কার্যকরী। এর জন্য ১ টেবিল চামচ কোকো পাউডার, ১ কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ পেস্ট করা অ্যাভোকাডো, ২ টেবিল চামচ নারকেলের দুধ এবং ২ টেবিল চামচ জলপাই বা তিসির তেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।

বেসন-লেবু চকলেট মাস্ক

১ টেবিল চামচ বেসন, ১ টেবিল চামচ টক দই, আধা কাপ কোকো পাউডার এবং অর্ধেক লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। বেসন ও লেবু ত্বকের দাগ দূর করে এবং টক দই ত্বকে উজ্জ্বলতা আনে।

সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত